মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ
-আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম*

(১১তম কিস্তি)

আক্বীদা-৭ : তাকবীন বা আল্লাহর সৃষ্টি

মাতুরীদীদের নিকট তাকবীন হল অস্তিত্বহীন থেকে অস্তিত্বে আনার জন্য কোন কিছু আবিস্কারের সূচনা করা। তারা বলে, ‘তাকবীন’ হল আল্লাহ সত্তার সাথে স্থায়ী ছিফাত। আল্লাহর কর্মগত প্রত্যেক ছিফাত তাকবীনের সাথে সম্পৃক্ত এবং সেটা বাস্তব ছিফাত নয়।[১]

পর্যালোচনা

মাতুরীদীরা আল্লাহর ‘তাকবীন’ অর্থাৎ আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী সৃষ্টি করাকে অস্বীকার করে। অথচ আল্লাহ তা‘আলার যা সৃষ্টি করার ইচ্ছা করেন, সাথে সাথে তা সৃষ্টি হয়ে যায়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, اِنَّمَاۤ  اَمۡرُہٗۤ   اِذَاۤ   اَرَادَ  شَیۡئًا اَنۡ یَّقُوۡلَ  لَہٗ کُنۡ فَیَکُوۡنُ ‘আল্লাহ তা‘আলা যখন কোন কিছুর ইচ্ছা করেন তখন তিনি শুধু বলেন যে, হয়ে যাও। সাথে সাথেই তা হয়ে যায়’ (সূরা ইয়াসীন : ৮২)।

আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী সৃষ্টি করাকে অনেকেই অস্বীকার করে।  যেমন মু‘তাযিলারা বলে, ‘মানুষ নিজেই নিজের ভাল-মন্দ কর্মের ¯্রষ্টা এবং ক্ষমতাবান। তার কর্মের কারণে সে আখেরাতে নেকি এবং শাস্তির জন্য বিবেচিত হবে। আল্লাহ তা‘আলা মন্দ ও জুলুম হতে মুক্ত এবং আল্লাহকে মন্দ ও যুল্মের দিকে সম্পৃক্তও করা যাবে না। এই কাজ কুফর এবং অবাধ্যতা। কেননা যে যুল্ম সৃষ্টি করবে, সে যালিম। যেমনভাবে আদল সৃষ্টিকারীকে আদিল বা ন্যায়পরায়ন বলা হয়। তারা ঐকমত্য পোষণ করেছে যে, আল্লাহ তা‘আলা কল্যাণ এবং মঙ্গলজনক কাজ ছাড়া অন্য কিছু (মন্দ) নির্ধারণ করেন না।[২]

অথচ ভাল-মন্দ সকল কর্ম আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি এবং তাঁর ইচ্ছার সাথে সম্পৃক্ত। আল্লাহর ইচ্ছার ক্ষেত্রে জাবরীয়া ও কাদরীয়া সম্প্রদায় পথভ্রষ্ট হয়েছে। ‘জাবরীয়ারা’ বলে থাকে ভাল-মন্দ সবকিছুই আল্লাহর একটিমাত্র ইচ্ছা তথা সৃষ্টিগত ইচ্ছাতেই সংঘটিত হয় এবং আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে শুধু তাঁর এই একটি ইচ্ছারই বাস্তবায়ন হয়। এমনকি বান্দার কর্মে সে স্বাধীনও নয়। তারা মনে করে এতে বান্দার ইচ্ছা ও স্বাধীনতা সম্পূর্ণরূপে খর্ব করা হয়েছে।

আর ‘কাদরীয়া’ তথা মু‘তাযিলাদের মতে আল্লাহর জন্য শুধু ইরাদায়ে শারঈয়া সাব্যস্ত। অর্থাৎ আল্লাহ শুধু তার বান্দাদেরকে ভাল কাজ করার আদেশ দিয়েছেন। আর বান্দারা তাদের কাজ-কর্মের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন। অন্য কথায় তারাই তাদের কর্মের ¯্রষ্টা ও ইচ্ছা পোষণকারী। এমনকি বান্দার দ্বারা কাজ সংঘটিত হওয়ার পূর্বে আল্লাহ সে সম্পর্কে জানেনও না (নাউযুবিল্লাহ)। উভয়টিই বাতিল আক্বীদা এবং তাওহীদ বিরোধী কথা।

কর্ম সৃষ্টি আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছার সাথে সম্পৃক্ত। কারণ আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কিছুই হয় না। ইমাম ত্বাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) (২৩৯-৩২১ হি.) বলেন, ولا يكون إلا ما يريد ‘আল্লাহ তা‘আলা যা ইচ্ছা করেন, তা ছাড়া অন্য কিছু হয় না’।[৩] এটা আল্লাহ তা‘আলার ক্ষমতাগত ইচ্ছা (إراداة كونية قدرية)। আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত আল্লাহ তা‘আলার জন্য ইচ্ছা বিশেষণ সাব্যস্ত করে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ لَوۡ لَاۤ  اِذۡ  دَخَلۡتَ جَنَّتَکَ قُلۡتَ مَا شَآءَ  اللّٰہُ ۙ لَا قُوَّۃَ اِلَّا بِاللّٰہِ ‘তুমি যখন তোমার বাগানে প্রবেশ করলে তখন মাশা-আল্লাহ (আল্লাহ যা চেয়েছেন তাই হয়েছে) বললে না কেন? আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত কোন শক্তি নেই’ (সূরা আল-কাহাফ : ৩৯)। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

وَ لَوۡ شَآءَ اللّٰہُ مَا اقۡتَتَلَ الَّذِیۡنَ مِنۡۢ بَعۡدِہِمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَتۡہُمُ الۡبَیِّنٰتُ وَ لٰکِنِ اخۡتَلَفُوۡا فَمِنۡہُمۡ مَّنۡ اٰمَنَ وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ  کَفَرَ ؕ وَ لَوۡ شَآءَ اللّٰہُ  مَا اقۡتَتَلُوۡا ۟ وَ لٰکِنَّ اللّٰہَ یَفۡعَلُ  مَا یُرِیۡدُ .

‘আল্লাহ যদি ইচ্ছা করতেন তাহলে রাসূলদের আগমণের পর এবং তাদের কাছে উজ্জ্বল নিদর্শনসমূহ আসার পর তারা কখনো পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত হতো না। কিন্তু তারা পরস্পর মতবিরোধ করল, তারপর তাদের মধ্যে থেকে কেউ ঈমান আনল আর কেউ কুফরীর পথ অবলম্বন করল। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তারা কখনো যুদ্ধে লিপ্ত হতো না, কিন্তু আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন, তাই করেন’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৫৩)। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

اُحِلَّتۡ لَکُمۡ بَہِیۡمَۃُ الۡاَنۡعَامِ  اِلَّا مَا یُتۡلٰی عَلَیۡکُمۡ غَیۡرَ مُحِلِّی الصَّیۡدِ وَ اَنۡتُمۡ حُرُمٌ  اِنَّ اللّٰہَ  یَحۡکُمُ مَا یُرِیۡدُ.

‘তোমাদের জন্য গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু (উট, গরু, ছাগল ও দুম্বা) হালাল করা হয়েছে। তবে যেগুলো হারাম হওয়া সম্পর্কে তোমাদের উপর পবিত্র কুরআনের আয়াতগুলো অবতীর্ণ হয়েছে সেগুলো এবং ইহরাম বাঁধা অবস্থায় তোমাদের শিকার করা জন্তুগুলো হালাল নয়। নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর ইচ্ছামত হুকুম করে থাকেন’ (সূরা আল-মায়িদা : ১)। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

فَمَنۡ یُّرِدِ اللّٰہُ اَنۡ یَّہۡدِیَہٗ یَشۡرَحۡ صَدۡرَہٗ لِلۡاِسۡلَامِ ۚ وَ مَنۡ یُّرِدۡ  اَنۡ یُّضِلَّہٗ یَجۡعَلۡ صَدۡرَہٗ ضَیِّقًا حَرَجًا کَاَنَّمَا یَصَّعَّدُ فِی السَّمَآءِ.

‘আল্লাহ যাকে সত্যপথ দেখাবার ইচ্ছা করেন তার বক্ষদেশ ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। আর যাকে তিনি গোমরাহীতে নিক্ষেপ করার ইচ্ছা করেন, তার বক্ষদেশ খুব সংকীর্ণ করে দেন। যাতে মনে হয় সে কষ্ট করে আকাশের দিকে উঠার চেষ্টা করছে’ (সূরা আল-আনআম : ১২৫)।

ইরাদাহ (إرادة)-এর প্রকারভেদ

আল্লাহ তা‘আলার (إرادة) ইরাদাহ বা ইচ্ছা দুই প্রকার : ১. ক্ষমতাগত ইচ্ছা (إراداة كونية قدرية) ২. শরী‘আতগত ইচ্ছা (إراداة دينية شرعية)।[৪]

১. ক্ষমতাগত ইচ্ছা (إراداة كونية قدرية) : ক্ষমতাগত ইচ্ছা (ইরাদায়ে কাওনীয়া কাদারীয়া) হল- ভাল-মন্দ এমনকি পৃথিবীর সবকিছুই আল্লাহর ইচ্ছা অনুপাতেই সৃৃষ্টি এবং নির্ধারিত হয়েছে। এই প্রকার ইরাদাহ (إرادة) এবং মাশীআহ (المشيئة) একই জিনিস।[৫] উভয়টি সমার্থবোধক। সেই হিসাবে  أراد الله(আল্লাহ ইচ্ছা করেছেন) এবং شاء الله (আল্লাহ চেয়েছেন)-এর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। এই প্রকার ইরাদার ব্যাপারে দু’টি কথা বিদ্যমান।[৬]

প্রথম কথা : যেসব বিষয় ও কাজ আল্লাহ ভালোবাসেন এবং যেগুলোকে আল্লাহ তা‘আলা পছন্দ করেন না, তার সব ক্ষেত্রেই এই প্রকার ইরাদায় বিদ্যমান থাকে। এর উপর ভিত্তি করে কেউ যদি প্রশ্ন করে, আল্লাহ তা‘আলা কি কুফরীর ইচ্ছা করেন? তাহলে উত্তরে আসবে, হ্যাঁ; আল্লাহ তা‘আলার ইরাদায়ে কাওনীয়া অর্থাৎ সৃষ্টিগত ইচ্ছার অধীনে কুফরীও সংঘটিত হয়।[৭]

দ্বিতীয় কথা :  ইরাদায়ে কাওনীয়ার দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা যা ইচ্ছা করেন, তা অবশ্যই সংঘটিত হয়। অন্য কথায় আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন, তা অবশ্যই হয় এবং তা না হওয়ার প্রশ্নই আসে না।[৮]

আল্লাহ তা‘আল বলেন, وَ اِذَاۤ  اَرَدۡنَاۤ  اَنۡ نُّہۡلِکَ قَرۡیَۃً  اَمَرۡنَا مُتۡرَفِیۡہَا فَفَسَقُوۡا فِیۡہَا فَحَقَّ عَلَیۡہَا الۡقَوۡلُ  فَدَمَّرۡنٰہَا  تَدۡمِیۡرًا ‘যখন আমরা কোন জনপদকে ধ্বংস করার ইচ্ছা করি তখন ওর সমৃদ্ধশালী ব্যক্তিদেরকে (সৎকর্ম করতে) আদেশ করি; কিন্তু তারা সেথায় অসৎকর্ম করে; অতঃপর ওর প্রতি দন্ডাজ্ঞা ন্যায়সঙ্গত হয়ে যায় এবং ওটাকে সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত করি’ (সূরা বানী ইসরাঈল : ১৬)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ  اِذَاۤ   اَرَادَ  اللّٰہُ بِقَوۡمٍ سُوۡٓءًا فَلَا مَرَدَّ  لَہٗ ۚ وَ مَا لَہُمۡ  مِّنۡ  دُوۡنِہٖ مِنۡ  وَّالٍ ‘কোন সম্প্রদায়ের সম্পর্কে যদি আল্লাহ অশুভ কিছু ইচ্ছা করেন তবে তা রদ করার কেউ নেই এবং তিনি ছাড়া তাদের কোন অভিভাবক নেই’ (সূরা রা’দ : ১১)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

فَمَنۡ یُّرِدِ اللّٰہُ اَنۡ یَّہۡدِیَہٗ یَشۡرَحۡ صَدۡرَہٗ لِلۡاِسۡلَامِ ۚ وَ مَنۡ یُّرِدۡ  اَنۡ یُّضِلَّہٗ یَجۡعَلۡ صَدۡرَہٗ ضَیِّقًا حَرَجًا.

‘অতএব আল্লাহ যাকে হেদায়াত করতে চান, ইসলামের জন্য তার অন্তঃকরণ খুলে দেন, আর যাকে পথভ্রষ্ট করার ইচ্ছা করেন, তার অন্তঃকরণ খুব সংকুচিত করে দেন’ (সূরা আল-আন‘আম : ১২৫)।

২. শরী‘আতগত ইচ্ছা (إراداة دينية شرعية) : শরী‘আতগত ইচ্ছা (ইরাদায়ে দ্বীনিয়া শারঈয়া) অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলার শরী‘আতগত ইচ্ছার মাধ্যমেই তিনি তাঁর বান্দাদের উপর শরী‘আতের সকল হুকুম-আহকাম বিধিবদ্ধ করেছেন।[৯] এটি المحبة (ভালোবাসা)-এর সমার্থক। এই প্রকার ইরাদায় أراد الله (আল্লাহ ইচ্ছা করেছেন)-এর অর্থ হলأحب الله  (আল্লাহ ভালোবাসেন ও পছন্দ করেন)। এই প্রকার ইরাদার ব্যাপারে দু’টি কথা বিদ্যমান।[১০]

প্রথম কথা : প্রথম কথা হচ্ছে এটি আল্লাহর ভালোবাসা ও পছন্দের সাথে খাস। সুতরাং তিনি ইরাদায়ে শারঈয়ার মাধ্যমে কুফরী ও পাপাচার পছন্দ করেন না।[১১]

দ্বিতীয় কথা : দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, তাতে উদ্দিষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়ন হওয়া যরূরী নয়। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা কোন জিনিস হওয়া পছন্দ করেন, কিন্তু কখনো তা হয় আবার কখনো হয় না। আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা করেছেন যে, বান্দারা তাঁর ইবাদত করুক। কিন্তু যরূরী হিসাবে সকল সৃষ্টির পক্ষ থেকে এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হয় না। কিছু সংখ্যক মানুষ তার ইবাদত করে আর অন্যরা তাঁর ইবাদত করে না। কিন্তু ইরাদায়ে কাওনীয়া এর বিপরীত। সেখানে আল্লাহর ইচ্ছা বাস্তবায়ন হবেই হবে।[১২] সুতরাং দু’দিক থেকে দুই প্রকার ইরাদার মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হচ্ছে।[১৩] 

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ اللّٰہُ یُرِیۡدُ اَنۡ یَّتُوۡبَ عَلَیۡکُمۡ ‘আল্লাহ তোমাদের তওবা কবুল করার ইচ্ছা করেন’ (সূরা আন-নিসা : ২৭)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, مَا یُرِیۡدُ اللّٰہُ لِیَجۡعَلَ عَلَیۡکُمۡ مِّنۡ حَرَجٍ وَّ لٰکِنۡ یُّرِیۡدُ لِیُطَہِّرَکُمۡ ‘আল্লাহ তোমাদের উপর সংকীর্ণতা চাপিয়ে দেয়ার ইচ্ছা করেন না। কিন্তু তিনি ইচ্ছা করেন তোমাদেরকে পাক-পবিত্র করতে’ (সূরা আল-মায়িদা : ৬)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, اِنَّمَا یُرِیۡدُ اللّٰہُ  لِیُذۡہِبَ عَنۡکُمُ الرِّجۡسَ اَہۡلَ الۡبَیۡتِ  ‘আল্লাহ ইচ্ছা করেন তোমাদের নবী পরিবার থেকে ময়লা দূর করতে’ (সূরা আহযাব : ৩৩)।

আক্বীদা-৮ : আল্লাহর দর্শন

মাতুরীদীরা আল্লাহকে স্বচক্ষে দর্শনকে অস্বীকার করে। তারা বলে আল্লাহকে দেখার অর্থ হল অন্তরের মাধ্যমে আল্লাহকে জানা।[১৪] তারা আল্লাহর দর্শনের দাবি করে। কিন্তু তারা অসম্ভব শর্ত নির্ধারণ করে। যেমন তারা বলে, بلا كيف ‘(আল্লাহকে) কোন পদ্ধতি ছাড়াই দেখা যাবে’।[১৫] আর এ কারণে তাদের জ্ঞানি ব্যক্তিরা বলে, আমাদের এবং মু‘তাযিলাদের মধ্যে আল্লাহর দর্শনের ব্যাপারে কোন বিরোধ নেই। বরং আমরা বলি, আল্লাহর দর্শন হল জ্ঞানসম্বন্ধীয়, দৃষ্টি-সম্বন্ধীয় নয়।[১৬]

পর্যালোচনা

মুমিনগণ ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহকে স্বচক্ষে দেখবে। আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘তের আক্বীদা হল, ‘ক্বিয়ামতের দিন মুমিনগণ আল্লাহকে সেরকমই দেখতে পাবে, যেমন পরিস্কার আকাশে দিনের বেলায় সূর্য এবং রাতের বেলায় পূর্ণিমার চাঁদকে দেখা যায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وُجُوۡہٌ   یَّوۡمَئِذٍ  نَّاضِرَۃٌ . اِلٰی رَبِّہَا نَاظِرَۃٌ .

‘সে দিন অনেক মুখ-মন্ডল উজ্জ্বল হবে। তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে’ (সূরা আল-ক্বিয়ামাহ : ২২-২৩)। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, عَلَی الۡاَرَآئِکِ ۙ یَنۡظُرُوۡنَ ‘উঁচু আসনে বসে তারা দেখতে থাকবে’ (সূরা আল-মুতাফফিফীন : ৩৫)। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, لِلَّذِیۡنَ اَحۡسَنُوا الۡحُسۡنٰی وَ زِیَادَۃٌ ‘যারা নেক কাজ করেছে (ঈমানের সাথে) তাদের জন্যে উত্তম বস্তÍ (জান্নাত) রয়েছে; এবং আরো অতিরিক্ত জিনিস (আল্লাহর দর্শন)’ (সূরা ইউনুস : ২৬)। হাদীছে এসেছে,

ছুহায়ব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি নবী করীম (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন, নবী করীম (ﷺ) বলেন, জান্নাতবাসীগণ যখন জান্নাতে প্রবেশ করবে, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে লক্ষ্য করে বলবেন,

تُرِيْدُوْنَ شَيْئًا أَزِيْدُكُمْ؟ فَيَقُوْلُوْنَ أَلَمْ تُبَيِّضْ وُجُوْهَنَا؟ أَلَمْ تُدْخِلْنَا الْجَنَّةَ وَتُنَجِّنَا مِنَ النَّارِ؟ قَالَ فَيُرْفَعُ الْحِجَابُ فَيَنْظُرُوْنَ إِلَى وَجْهِ اللهِ فَمَا أُعْطُوْا شَيْئًا أَحَبَّ إِلَيْهِمْ مِنَ النَّظَرِ إِلَى رَبِّهِمْ ثُمَّ تَلَا (لِلَّذِیۡنَ اَحۡسَنُوا الۡحُسۡنٰی وَ زِیَادَۃٌ).

‘তোমরা কি আরও কিছু চাও, যা আমি তোমাদেরকে অতিরিক্ত প্রদান করব? তারা বলবে, আপনি কি আমাদের মুখমগুলকে উজ্জ্বল করেননি? আপনি কি আমাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাননি এবং আপনি কি আমাদেরকে জাহান্নাম হতে মুক্তি দেননি? আপনার এত বড় বড় নে‘মতের পর আর কী অবশিষ্ট আছে, যা আমরা চাইব? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা ও জান্নাতীদের মধ্যে হতে হিজাব বা পর্দা তুলে ফেলা হবে, ফলে তারা আল্লাহ তা‘আলার দীদার বা দর্শন লাভ করবে। তখন তারা বুঝতে পারবে বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলার দর্শনলাভ ও তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকা অপেক্ষা অধিকতর প্রিয় কোন বস্তুই এ যাবৎ তাদেরকে প্রদান করা হয়নি। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কুরআনের এই আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন, لِلَّذِیۡنَ اَحۡسَنُوا الۡحُسۡنٰی وَ زِیَادَۃٌ ‘যারা নেক কাজ করেছে তাদের জন্যে উত্তম বস্তÍ (জান্নাত) রয়েছে; এবং আরো অতিরিক্ত জিনিস’ (সূরা ইউনুস : ২৬)।[১৭]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, لَہُمۡ  مَّا یَشَآءُوۡنَ  فِیۡہَا وَلَدَیۡنَا مَزِیۡدٌ ‘সেখানে তারা যা কামনা করবে তাদের জন্য তাই প্রস্তুত থাকবে। আর আমাদের কাছে আরো কিছু অতিরিক্ত জিনিসও (আল্লাহর দর্শন) থাকবে’ (সূরা ক্বাফ : ৩৫)।

হাদীছে এসেছে, জারীর ইবনু আব্দুল্লাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী করীম (ﷺ) বলেন, إِنَّكُمْ سَتَرَوْنَ رَبَّكُمْ عِيَانًا ‘অবশ্যই তোমরা তোমাদের রবকে দিব্যচক্ষে দেখতে পাবে’।[১৮]

আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! ক্বিয়ামতের দিন আমরা আমাদের প্রতিপালককে কি দেখতে পাব? তিনি বললেন, 

فَهَلْ تُضَارُّوْنَ فِيْ رُؤْيَةِ الشَّمْسِ فِي الظَّهِيْرَةِ لَيْسَتْ فِيْ سَحَابَةٍ؟ قَالُوْا لَا قَالَ فَهَلْ تُضَارُّوْنَ فِيْ رُؤْيَةِالْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ لَيْسَ فِيْ سَحَابَةٍ؟ قَالُوْا لَا قَالَ فَوَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ لَا تُضَارُّوْنَ فِيْ رُؤْيَةِ رَبِّكُمْ إِلَّا كَمَا تُضَارُّوْنَ فِيْ رُؤْيَةِ أَحَدِهِمَا

‘দুপুরের সময় মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখতে কি তোমাদের মধ্যে পরস্পরে কোন বাধা সৃষ্টি হয়? ছাহাবীগণ বললেন, না। তিনি আরও বললেন, মেঘমুক্ত আকাশে পূর্ণিমার রাতে পূর্ণ চাঁদ দেখতে কি তোমাদের কোন অসুবিধা হয়? তাঁরা বললেন, না। তখন তিনি বললেন, সে মহান আল্লাহর কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! এ দু’টির কোন একটিকে দেখতে যে পরিমাণ অসুবিধা হয়, তোমাদের প্রতিপালককে দেখতে সে পরিমাণ অসুবিধাও হবে না’।[১৯]

উপরিউক্ত দলীলগুলো থেকে ক্বিয়ামতের দিন মুমিনদের জন্য আল্লাহর দর্শন প্রমাণিত। আল্লাহর দর্শনই হবে মুমিনদের জন্য জান্নাতের সবচেয়ে বড় নে‘মত। আল্লাহর দর্শনের বিষয়ে এটিই হচ্ছে ছাহাবী, তাবেঈ এবং সালাফে ছলেহীনের আক্বীদা।                           

(ইনশাআল্লাহ চলবে)


* শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আল-ইসলামিয়্যাহ, খড়খড়ি, রাজশাহী।

[১]. فالتكوين عند الماتريدية صفة أزلية وأن الصفات الفعلية كلها من متعلقات التكوين وليست صفات حقيقية -আদা’ঊ মাতুরীদীয়াতি লিল আক্বীদাতিত সালাফিয়্যা আল-মাতুরীদীয়া- আল-মাতুরিদীয়া ওয়া মাওক্বিফুহুম মিন তাওহীদিল আসমা’ই ওয়াছ ছিফাত, ১ম খ-, পৃ. ৪৫৮।

[২]. واتفقوا على أن العبد قادر خالق لأفعاله خيرها وشرها مستحق على ما يفعله ثوابا وعقابا في الدار الآخرة والرب تعالى منزه أن يضاف إليه شر وظلم وفعل هو كفر ومعصية لأنه لو خلق الظلم كان ظالما كما لو خلق العدل كان عادلا واتفقوا على أن الله تعالى لا يفعل إلا الصلاح والخير ; আল-মিলাল ওয়ান নিহাল, ১ম খ-, পৃ. ৪৩।

[৩]. ইমাম ইবনে আবীল ইয্ আল-হানাফী, শারহুল আক্বীদা আত-ত্বহাবীয়া; অনুবাদ : শাইখ আব্দুল্লাহ শাহেদ আল-মাদানী (রাজশাহী : মাকতাবাতুস সুন্নাহ, ২০১৭ খৃ.), পৃ. ১২৮।

[৪]. শারহুল আক্বীদা আত-ত্বহাবীয়া, পৃ. ১২৯; শারহুল আক্বীদাহ আল-ওয়াসিত্বীয়া, পৃ. ৯১; আদা’ঊ মাতুরীদীয়াতি লিল আক্বীদাতিত সালাফিয়্যা আল-মাতুরীদীয়্যা- আল-মাতুরীদীয়া ওয়া মাওক্বিফুহুম মিন তাওহীদিল আসমা’ই ওয়াছ ছিফাত, ১ম খ-, পৃ. ৪৯০।

[৫]. শারহুল আক্বীদাহ আল-ওয়াসিত্বীয়া, পৃ. ৯১।

[৬]. শারহুল আক্বীদাহ আল-ওয়াসিত্বীয়া, পৃ. ৯৫।

[৭]. শারহুল আক্বীদাহ আল-ওয়াসিত্বীয়া, পৃ. ৯৫।

[৮]. শারহুল আক্বীদাহ আল-ওয়াসিত্বীয়া, পৃ. ৯৫।

[৯]. শারহুল আক্বীদাহ আল-ওয়াসিত্বীয়া, পৃ. ৯১।

[১০]. শারহুল আক্বীদাহ আল-ওয়াসিত্বীয়া, পৃ. ৯৫।

[১১]. শারহুল আক্বীদাহ আল-ওয়াসিত্বীয়া, পৃ. ৯৫।

[১২]. প্রাগুক্ত।

[১৩]. ইরাদায়ে কাওনীয়া এবং ইরাদায়ে শারঈয়ার মধ্যে পার্থক্য : (১) ইরাদায়ে কাওনীয়া তথা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নির্ধারণগত ইচ্ছার মাধ্যমে যা হয়, আল্লাহ কখনো তাকে ভালোবাসেন ও তাতে সন্তুষ্ট থাকেন। আবার কখনো তা তিনি ভালোবাসেন না এবং উহার প্রতি সন্তুষ্টও থাকেন না। আর ইরাদায়ে শারঈয়ার মাধ্যমে যা সংঘটিত হয়, তাকে তিনি অবশ্যই ভালোবাসেন এবং উহার প্রতি সন্তুষ্টও থাকেন। সুতরাং সকল প্রকার পাপকাজ এবং অকল্যাণও আল্লাহর সন্তুষ্টির মধ্যে শামিল। সে হিসাবে সৃষ্টি ও বিধানগত দিক থেকে তিনি পাপাচার সৃষ্টি করার ইচ্ছা করেছেন, কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা পাপ কাজকে ভালবাসেন না এবং উহার প্রতি সন্তুষ্টও থাকেন না। তিনি তাতে লিপ্ত হওয়ার আদেশও করেননি; বরং তা থেকে বিরত থাকার জন্য কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। এখন কেউ যদি প্রশ্ন করে, আল্লাহ তা‘আলা কিভাবে এমন জিনিষের ইচ্ছা করেন, যা তিনি ভালোবাসেন না? অন্য কথায় আল্লাহ তা‘আলা কিভাবে কুফরী, পাপাচার এবং সীমালংঘন হওয়ার ইচ্ছা করেন? অথচ তিনি তা পছন্দ করেন না।

      এর উত্তর হচ্ছে অন্যায় ও ক্ষতিকর বস্তু সংঘটিত হওয়া একদিক থেকে আল্লাহর নিকট প্রিয় এবং অন্যদিক থেকে উহা অপছন্দনীয়। এর মধ্যে যেই বিরাট কল্যাণ নিহিত থাকে, সেই দিক বিচারে এটি আল্লাহর নিকট প্রিয় এবং এতে যেহেতু আল্লাহর অবাধ্যতা রয়েছে, সেই হিসাবে এটি তাঁর নিকট অপ্রিয়। সুতরাং একই জিনিষ দু’দিক বিচারে একই সাথে প্রিয় এবং অপ্রিয় হওয়াতে কোন বাঁধা নেই। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে, মানুষ তার কলিজার টুকরা শিশু সন্তানকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। যাতে করে ডাক্তার শিশুর পেট ফেড়ে ভিতর থেকে দূষিত জিনিষ বের করে ফেলে। অথচ অন্য কেউ তার শিশুর গায়ে সুইয়ের একটি খোঁচা দিতে চাইলেও সে রাজী হয় না। বরং সে তার সাথে ঝগড়া করে। অপরপক্ষে সে নিজেই পেট ফেড়ে ফেলার জন্য শিশুকে নিয়ে ডাক্তারের নিকট নিয়ে যায়। ডাক্তার শিশুর পেট কাটে ও চিরে ফেলে। পিতা এই দৃশ্য খুশী মনেই দেখে। এতে তার শিশুর কষ্ট হওয়া সত্ত্বেও কি কারণে সে রাজী হয়? রাজী হওয়ার কারণ হল, এই মূহুর্তে শিশুর কষ্ট হলেও অন্য কারণে অর্থাৎ শিশুর জন্য এমন এক বিরাট স্বার্থ ও কল্যাণ হাসিলের আশায় সে একটি অপছন্দনীয় বিষয় পছন্দ করে, যা ভবিষ্যতে অর্জিত হবে।

(২) ইরাদায়ে কাওনীয়ার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা যা সৃষ্টি করার ইচ্ছা করেন, তা সৃষ্টি করা মূল উদ্দেশ্য হয় না; বরং তা অন্য এক বিশেষ উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করা হয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা ইবলীস এবং সকল প্রকার পাপাচার ও অকল্যাণ সৃষ্টি করেছেন। যাতে করে মুমিন বান্দাগণ নফসে আম্মারা ও শয়তানের সাথে সর্বদা জিহাদে লিপ্ত থাকে। শয়তানের প্ররোচনা ও ধোঁকায় নিপতিত হয়ে মানুষ পাপকাজে লিপ্ত হয়ে গেলেও আল্লাহ্র কাছে তারা তওবা করে এবং ক্ষমা চায়। এমনি আরো ভালো উদ্দেশ্যে আল্লাহ তা‘আলা অন্যায় ও অকল্যাণ সৃষ্টি করেছেন। অন্যদিকে শারঈ ইচ্ছার দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা যা সৃষ্টি করার ইচ্ছা করেন, তা মূলতঃই উদ্দেশ্যই হয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা সৃষ্টি ও শরী‘আতগত এই উভয় দিক থেকেই ইচ্ছা করেছেন যে, বান্দারা তাঁর আনুগত্য করুক। কেননা তিনি আনুগত্যের কাজকে ভালোবাসেন এবং উহার প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন।

(৩) আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি ও নির্ধারণগত ইচ্ছা অবশ্যই সংঘটিত হয়। অর্থাৎ এর মাধ্যমে তিনি যা সৃষ্টি করার ইচ্ছা করেন, সাথে সাথে তা সৃষ্টি হয়ে যায়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, اِنَّمَاۤ  اَمۡرُہٗۤ   اِذَاۤ   اَرَادَ  شَیۡئًا اَنۡ یَّقُوۡلَ  لَہٗ کُنۡ فَیَکُوۡنُ ‘আল্লাহ তা‘আলা যখন কোন কিছুর ইচ্ছা করেন তখন তিনি শুধু বলেন যে, হয়ে যাও। সাথে সাথেই তা হয়ে যায়’ (সূরা ইয়াসীন : ৮২)। আর শারঈ ইচ্ছার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা যা ইচ্ছা করেন, তা সকল ক্ষেত্রে সংঘটিত হওয়া আবশ্যক নয়। কখনো তা সংঘটিত হয়, আবার কখনো হয় না।

[১৪]. - إنما هي رؤية القلب التي هي علم ء معرفةপ্রাগুক্ত, ১ম খ-, পৃ. ৫১৮।

[১৫]. যেমন আবূ মানছূর মাতুরীদী বলেন, فَإِن قيل كَيفَ يرى قيل بِلَا كَيفَ إِذْ الْكَيْفِيَّة تكون لذى صُورَة بل يرى بِلَا وصف قيام وقعود وإتكاء وَتعلق وإتصال وانفصال ومقابلة ومدابرة وقصير وطويل وَنور وظلمة وَسَاكن ومتحرك ومماس ومباين وخارج وداخل ; দ্র. আবূ মানছূর মাতুরীদী, আত-তাওহীদ (দারুল জামি‘আতিল মিছরিয়্যাহ, তা.বি.), পৃ. ৮৫; আবূ মানছূর মাতুরীদী, তাফসীরুল মাতুরীদী ( বৈরূত : দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, ১৪২৬ হি.), ৫ম খ-, পৃ. ৩১।

[১৬]. ই‘তিক্বাদু আহলিস সুন্নাহ শারহি আছহাবুল হাদীছ, ১ম খ-, পৃ.  ৭৪।

[১৭]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৮১।

[১৮]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৫৪, ৭৪৩৫; ছহীহ মুসলিম, হা/৬৩৩।

[১৯]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৯৬৮, ১৮২, ১৮৩;  ছহীহ বুখারী, হা/৮০৬; মিশকাত, হা/৫৫৫৫।





ছালাতে একাগ্রতা অর্জনের ৩৩ উপায় (৫ম কিস্তি) - আব্দুল হাকীম বিন আব্দুল হাফীজ
ফিতনা পরিচিতি ও আমাদের করণীয় (শেষ কিস্তি) - আব্দুল হাকীম বিন আব্দুল হাফীজ
প্রচলিত তাবলীগ জামা‘আত সম্পর্কে শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের অবস্থান (২য় কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির
রামাযান : কুরআন নাযিলের মাস - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
তাওহীদ প্রতিষ্ঠার উপায় (শেষ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (২৪তম কিস্তি)   - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
আশূরায়ে মুহাররম : করণীয় ও বর্জনীয় - ইউনুস বিন আহসান
ইসলামী ভ্রাতৃত্বের গুরুত্ব ও মূল্যায়ন (শেষ কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
হজ্জ মুসলিম উম্মাহর বিশ্ব সম্মেলন - প্রফেসর ড. মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম
ইসলামে বিবাহের গুরুত্ব (৩য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আবূ সাঈদ
কুরআন মাজীদের উপর বিদ‘আতের আবরণ - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ছয়টি মূলনীতির ব্যাখ্যা - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির

ফেসবুক পেজ