বিদ‘আত পরিচিতি
-ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান*
(১৭তম কিস্তি)
(মার্চ ২০২২ সংখ্যার পর)
৬. বিদ‘আতীদের পিছনে ছালাত আদায় করা প্রসঙ্গে
বিদ‘আতীর পিছনে ছালাত আদায়ের বিধানটি দুই প্রকার। যথা : (ক) বিদ‘আত কুফরী পর্যায়ের হওয়া এবং (খ) বিদ‘আত কুফরী পর্যায়ের না হওয়া। নিম্নে উভয় প্রকারের বিধান দালীলিক আলোচনা করা হল :
(ক) বিদ‘আত কুফরী পর্যায়ের হওয়া
আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের ঐকমত্যে বিদ‘আত যদি কুফরী পর্যায়ের হয়, তাহলে ঐ বিদ‘আতীর পিছনে ছালাত আদায় করা শুদ্ধ হবে না। যদিও সে বিদ‘আতের দিকে আহ্বান করুক কিংবা না করুক। তবে কেউ যদি কুফরী পর্যায়ের বিদ‘আতকারীর পিছনে ছালাত আদায় করে, তাহলে সেই ছালাত পুনরায় আদায় করতে হবে কি না সে ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। কেউ বলেছেন, আদায় করতে হবে। আবার কেউ বলেছেন, যদি তার বিদ‘আত সম্পর্কে না জানা থাকে, তাহলে আদায় করতে হবে না। তবে অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের মতে, তার ছালাত পুনরায় আদায় করতে হবে। কেননা কুফরী পর্যায়ের বিদ‘আতী ছালাতের ইমামতির অধিকারী নয়। সুতরাং তার পিছনে ছালাত আদায় ছহীহ হবে না।[১]
বিধানগত দিক থেকে বিদ‘আতীদের কুফরীর কারণে তাদের পিছনে ছালাত আদায় করা নিষিদ্ধ। যেমন জাহমিয়্যাহ, ক্বাদারিয়্যাহ, রাফেযী (শী‘আ), মু‘তাযিলা ইত্যাদি ভ্রান্ত মতবাদে বিশ্বাসী ইমামের পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে না। অতএব কোন ইমাম যদি কুফরী পর্যায়ের বিদ‘আতে লিপ্ত থাকে, তাহলে তার পিছনে ছালাত আদায় করা বৈধ নয়। যেমন সে যদি বিশ্বাস করে নবী বা ওলীরা অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন, হুলুল তথা আল্লাহ সৃষ্টিজগতের সাথে একাকার হওয়াতে বিশ্বাস করেন, আবূ বকর, উমার এবং উছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহুম)-কে গালাগালী করেন, কুরআন আল্লাহর সৃষ্টি বলে বিশ্বাস করেন, তিনি যদি বিপদাপদে আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া অন্যকে ডাকেন অথবা তিনি আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া অন্য কারোর জন্য কোন পশু যব্হ ও মানত করেন ইত্যাদি ভ্রান্ত আক্বীদা পোষণ করেন, তাহলে তার পিছনে ছালাত আদায় করা কোনভাবেই বৈধ হবে না। বরং সে ইমাম হওয়ারও যোগ্যতা রাখে না। এ বিষয়ে সালাফদের বক্তব্য নিম্নরূপ :
১. ওয়াছিলা ইবনুল আসক্বা‘ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তাঁর নিকট ক্বাদারিয়া আক্বীদায় বিশ্বাসী লোকের পিছনে ছালাত আদায় করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, لَا يُصَلِّى خَلْفَهُ أَمَا لَوْ صَلَّيْتُ خَلْفَهُ لَأَعْدَتُّ صَلَاتِيْ ‘তার পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে না। তবে আমি যদি কখনো ছালাত আদায় করেই ফেলি, তাহলে আমি আবার পুনরায় ছালাত আদায় করে নেই’।[২]
২. সালাম ইবনু আবিল মুতীঈ (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত, একদা তাঁকে জাহমিয়্যাহদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, كُفَّارٌ وَلَا يُصَلِّي خَلْفَهُمْ ‘তারা কাফির। তাদের পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে না’।[৩]
৩. ইমাম মালিক (রাহিমাহুল্লাহ)-কে ক্বাদারিয়্যাহ আক্বীদায় বিশ্বাসী ইমামের পিছনে ছালাত আদায় করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ছালাত ফাউত হয়ে গেলেও তাদের পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে না। অতঃপর জিজ্ঞেসকারী বলল, জুমু‘আর ছালাতও কি নয়? তিনি বললেন, না, জুমু‘আর ছালাতও নয়।[৪]
৪. ক্বাযী আবূ ইউসুফ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, لَا أُصَلِّي خَلْفَ جَهْميٍّ وَلَا رَافِضِيٍ وَلَا قَدَرِيٍّ ‘আমি জাহমী, রাফেযী ও ক্বাদেরীদের পিছনে ছালাত আদায় করি না’।[৫]
৫. আব্দুল্লাহ ইবনু ইদরীস (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত, তাঁকে জাহমিয়্যাহদের পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে কি না জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, أَمُسْلِمُوْنَ هَؤُلَاءِ لَا وَلَا كَرَامَةُ لَا يُصَلِّى خَلْفَهُمْ ‘তারা কি মুসলিম? না, তারা মুসলিম নয়। তারা সম্মানীয় নয় এবং তাদের পিছনে ছালাতও আদায় কর না’।[৬]
৬. সুওয়াইদী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, سَأَلْتُ وَكِيْعًا عَنِ الصَّلَاةِ خَلْفَ الْجَهْمِيَّةِ فَقَالَ لَا يُصَلِّى خَلْفَهُمْ ‘আমি ওয়াকী‘ (রাহিমাহুল্লাহ)-কে জাহমিয়্যাদের পিছনে ছালাত আদায় করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, ‘না, তাদের পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে না’।[৭]
৭. আবুছ ছাওর (রাহিমাহুল্লাহ)-কে ক্বাদারিয়্যাহদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,
إن القدرية من قال أن الله لم يخلق أفعال العباد وأن المعاصي لم يقدرها الله على العباد ولم يخلقها فهؤلاء القدرية لا يصلي خلفهم ولا يعاد مريضهم ولا يشهد جنائزهم ويستتابون من هذه المقالة فإن تابوا وإلا ضربت أعناقهم
‘নিশ্চয় ক্বাদারিয়া, যারা বলে, আল্লাহ তা‘আলা বান্দার কর্মের স্রষ্টা নয়। আর বান্দার উপর আল্লাহ তা‘আলা তার পাপকে নির্ধারণ করেননি এবং তা সৃষ্টিও করেননি, তারাই হল ক্বাদারিয়্যাহ। তাদের পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে না, তারা অসুস্থ হলে দেখতে যাওয়া যাবে না, তাদের জানাযায় অংশগ্রহণ করা যাবে না। তাদেরকে এ সকল বিষয় থেকে তওবাহ করতে হবে। আর যদি তারা তওবাহ না করে, তাহলে তাদের ঘাড় মটকাতে হবে’।[৮]
৭. সাঈদ ইবনু আবী সাঈদ আবূ নাছর আল-আরত্বাঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
سمعت أحمد بن حنبل وسئل عن الصلاة خلف المبتدعة فقال: أما الجهمية فلا وأما الرافضة الذين يردون الحديث فلا
‘আমি আহমাদ ইবনু হাম্বাল (রাহিমাহুল্লাহ)-কে বিদ‘আতীদের পিছনে ছালাত আদায় করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে শুনেছি। অতঃপর তিনি তার উত্তরে বলেন, যদি জাহমিয়্যাহ হয়, তাহলে যাবে না। আর যদি রাফেযী হয়, যারা হাদীছকে অস্বীকার করে, তাহলে তাদের পিছনেও ছালাত আদায় করা যাবে না’।[৯]
৮. মু‘আয ইবনু মু‘আয (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, صليت خلف رجل من بني سعد ثم بلغني أنه قدري فأعدت الصلاة بعد أربعين سنة أو ثلاثين سنة ‘আমি বানী সা‘দের এক লোকের পিছনে ছালাত আদায় করেছিলাম। অতঃপর চল্লিশ বছর কিংবা ত্রিশ বছর পর আমার কাছে সংবাদ পৌঁছেছে যে, সে ক্বাদারী তথা তাক্বদীরকে অস্বীকাকারী। তখন আমি আমার ছালাত পুনরায় আদায় করেছিলাম’।[১০]
৯. ইমাম বারবাহারী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, والصلوات الخمس جائزة خلف من صليت إلا أن يكون جهميا فإنه معطل وإن صليت خلفه فأعد صلاتك ‘যিনি ছালাত আদায় করেন তার পিছনে পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করা জায়েয জাহমিয়্যাহ আক্বীদা পোষণকারী তথা বিদ‘আতী ব্যতীত। কেননা নিশ্চয় সে বাতিল আক্বীদার। তবে তুমি যদি তার পিছনে ছালাত আদায় করেই ফেল, তাহলে পুনরায় তোমার ছালাত আদায় করে নাও’।[১১]
১০. সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া বোর্ডে বিদ‘আতী ইমামের পিছনে ছালাত আদায় করা সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, ‘যদি বিদ‘আত কুফর ও শিরক পর্যায়ের হয়, তাহলে তার পেছনে ছালাত অশুদ্ধ আর বিদ‘আতকারীর বিদ‘আত যদি কুফরি পর্যায়ের না হয় যেমন মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পড়া ইত্যাদি, তাহলে তার নিজের ছালাত শুদ্ধ এবং তার পিছনে ছালাত আদায়কারীর ছালাতও শুদ্ধ হবে’।[১২]
সুধী পাঠক! এ সম্পর্কে সালাফদের অসংখ্য বক্তব্য বর্ণিত হয়েছে। কলেবর বৃদ্ধির আশঙ্কায় সেগুলো উল্লেখ করা হলো না। তবে কেউ যদি আরো বিস্তারিত বা বেশি জানতে চান তাহলে ফুটনোটে উল্লিখিত তথ্যগুলো অনুসন্ধান করতে পারেন।[১৩] সুতরাং উক্ত আলোচনায় স্পষ্ট হল যে, কারো বিদ‘আত যদি কুফুরী পর্যায়ের হয়, তাহলে তার পিছনে ছালাত আদায় করলে তা বাতিল হবে এবং তা শুদ্ধ হবে না। যদি কেউ তাদের পিছনে ছালাত আদায় করে, তাহেল সেই ছালাত জুমু‘আহ হোক, ঈদ হোক অথবা পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতের কোন ছালাত হোক না কেন তাকে পুনরায় ছালাত আদায় করতে হবে।[১৪]
(খ) বিদ‘আত কুফরী পর্যায়ের না হওয়া
ইমাম ছাহেবের বিদ‘আত যদি কুফরী বা শিরকী পর্যায়ের না হয়, তাহলে তার পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে। ইমাম ত্বাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, وَنَرَى الصَّلَاةَ خَلْفَ كُلِّ بَرٍّ وَفَاجِرٍ مِنْ أَهْلِ الْقِبْلَة وَعَلَى مَنْ مَاتَ مِنْهُمْ ‘আহলে ক্বিবলার প্রতিটি সৎ এবং পাপী লোকের পিছনে ছালাত পড়া যাবে এবং তাদের কেউ মারা গেলে তার জানাযা পড়া যাবে’।[১৫] হাদীছে এসেছে,
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ يُصَلُّوْنَ لَكُمْ فَإِنْ أَصَابُوْا فَلَكُمْ وَإِنْ أَخْطَئُوْا فَلَكُمْ وَعَلَيْهِمْ
আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তারা তোমাদের ছালাত পড়ালে যদি সঠিকভাবে আদায় করে তবে তোমাদের জন্য সওয়াব রয়েছে, আর যদি ভুল করে তাহলেও তোমাদের জন্য সওয়াব আছে এবং তাদের ভুল তাদের উপর বর্তাবে।[১৬] উল্লেখ্য, যে ব্যক্তির বিদ‘আত এবং ফাসেকী সম্পর্কে জানা যাবে না, তার পিছনে ছালাত পড়া জায়েয। কেননা কোন মুক্তাদির জন্য ইমামের পিছনে ইকতেদা করার ব্যাপারে ইমামের আক্বীদা জানাটা শর্ত নয় এবং তাকে পরীক্ষা করাও যরূরী নয় যে তাকে বলবে, আপনার আক্বীদা কী? বরং যার অবস্থা জানা যাবে না তার পিছনে ছালাত পড়বে। আর যদি বিদ‘আতের দিকে আহ্বানকারী কোন বিদ‘আতী বা প্রকাশ্যে অপরাধকারী কোন ফাসেক ইমাম নিযুক্ত থাকে, যেমন জুমু‘আহ, ঈদ বা হজ্জের সময় আরাফার ইমাম ইত্যাদি, যদি তার পিছনে ব্যতীত ছালাত পড়া সম্ভব না হয়, তাহলে সকল পূর্ববর্তী সালাফ ও পরবর্তী আলেমদের মতে তার পিছনে ছালাত পড়া যাবে। নি¤েœ এ সম্পর্কে সালাফদের বক্তব্য, ছাহাবী ও তাবেঈগণ এবং পরবর্তীতে তাদের অনুসারী সালাফগণের আমল উল্লেখ করা হল,
১. ওবায়দুল্লাহ ইবনু আদী ইবনু খিয়ার (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত,
أَنَّهُ دَخَلَ عَلَى عُثْمَانَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ وَهُوَ مَحْصُوْرٌ فَقَالَ إِنَّكَ إِمَامُ عَامَّةٍ وَنَزَلَ بِكَ مَا تَرى وَيُصَلِّى لَنَا إِمَامُ فِتْنَةٍ وَنَتَحَرَّجُ فَقَالَ الصَّلَاةُ أَحْسَنُ مَا يَعْمَلُ النَّاسُ فَإِذَا أَحْسَنَ النَّاسُ فَأَحْسِنْ مَعَهُمْ وَإِذَا أَسَاءُوْا فَاجْتَنِبْ إِسَاءَتَهُمْ
‘তিনি খলীফা উছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর নিকট উপস্থিত হলেন, যখন তিনি স্বীয় গৃহে অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন। অতঃপর তিনি বললেন, আপনিই জনসাধারণের ইমাম কিন্তু আপনার উপর এই বিপদ উপস্থিত, যা আপনি দেখছেন আর বিদ্রোহী নেতা আমাদের ছালাত আদায় করাচ্ছে, অথচ এটাকে আমরা গুনাহ বলে মনে করি। তখন তিনি বললেন, মানুষ যে সকল কাজ করে থাকে সেসকলের মধ্যে উত্তম কাজ হল ছালাত। সুতরাং যখন মানুষ ভাল কাজ করবে, তখন তাদের সাথে শরীক হবে। আর যখন মন্দ কাজ করবে, তখন তাদের মন্দ কাজ হতে দূরে থাকবে’।[১৭]
২. ক্বাতাদা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি সাঈদ ইবনুল মুসাইয়িব (রাহিমাহুল্লাহ)-কে বললাম, أَنُصَلِّي خَلْفَ الْحَجَّاجِ؟ قَالَ إنَّا لَنُصَلِّي خَلْفَ مَنْ هُوَ شَرٌّ مِنْهُ ‘আমরা কি হাজ্জাজ বিন ইউসুফের পিছনে ছালাত আদায় করব? তিনি বললেন, আমরা তার চেয়ে মন্দ ব্যক্তির পিছনে ছালাত আদায় করি’।[১৮]
৩. আবুল হাসান আশ‘আরী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, وَمِنْ دِيْنِنَا أَنْ نُصَلِّي الْجُمُعَةِ وَالْأَعْيَادِ وَسَائَرِ الصَّلَوَاتِ وَالْجَمَاعَاتِ خَلْفَ كُلُّ بِرٍّ وَفَاجِرٍ كَمَا رُوِىَ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا كَانَ يُصَلِّي خَلْفَ الْحَجَّاجِ ‘আমরা আমাদের দ্বীনের মধ্যে প্রত্যেক পাপচার ও তাক্বওয়াশীল ইমামের পিছনে জুমু‘আহ, ঈদ, সকল ধরনের ছালাত ও জামা‘আতে ছালাত আদায় করে থাকি। যেমন ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, তিনি হাজ্জাজ ইবনু ইউসুফের পিছনে ছালাত আদায় করেছিলেন’।[১৯]
৪. শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিইয়া (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘বিদআতী ইমামের পিছনে ছালাত আদায়ের মাসআলায় মতভেদ ও ব্যাখ্যা রয়েছে। তাকে ছাড়া যদি অন্য কোন ইমাম না পাওয়া যায়, যেমন কোন শহরে মাত্র এক জায়গায় জুমু‘আহ ও দুই ঈদের ছালাত কায়েম করা হয় এবং হজ্জের মৌসুমের ছালাতগুলোতে যদি বিদ‘আতী ইমাম ছাড়া অন্য কোন ইমাম না থাকে, তাহলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের ঐকমত্যে এ ছালাতগুলো বিদ‘আতী ইমামের পিছনে আদায় করা বৈধ। তবে বিদ‘আতী যদি রাফেযী (শী‘আ) এবং তাদের অনুরূপ হয় যে, জুমু‘আহ ও জামা‘আত আবশ্যক মনে করে না, তাহলে তার পিছনে ছালাত বর্জন করতে হবে। আর কোন গ্রাম বা শহরে যদি মাত্র একটি মসজিদ থাকে এবং মসজিদের ইমাম বিদ‘আতী হয়, তাহলে বাড়িতে একাকী ছালাত আদায় করার চেয়ে পাপাচারী (বিদ‘আতী) ইমামের পিছনে ছালাত আদায় করা উত্তম। যাতে করে জুমু‘আহ ও জামা‘আত সম্পূর্ণরূপে পরিত্যক্ত না হয়ে যায়। তবে যদি বিদ‘আতী ছাড়া অন্য ইমামের পিছনে ছালাত আদায় করা সম্ভব হয়, তাহলে নিসন্দেহে সেটাই উত্তম হবে। কিন্তু সুন্নী ইমাম থাকতে বিদ‘আতীর পিছনে আদায়কৃত ছালাত বিশুদ্ধ হবে কিনা, এ মাসআলায় আলেমদের মতভেদ ও ব্যাখ্যা রয়েছে। ইমাম শাফেঈ (রাহিমাহুল্লাহ) ও আবূ হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ)-এর মতে, সুন্নী ইমাম থাকতে বিদ‘আতী ইমামের পিছনে ছালাত ছহীহ হবে। আর ইমাম মালেক (রাহিমাহুল্লাহ) ও আহমাদ (রাহিমাহুল্লাহ)-এর মতে, মাসআলাটি ব্যাখ্যা সাপেক্ষ। যেসব বিদ‘আত আল-কুরআন ও সুন্নাহ বিরোধী যেমন রাফেযী, জাহমী এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের বিদ‘আত, এসব বিদ‘আতীর পিছনে ছালাত আদায় করা বৈধ নয়। আর দ্বীনের যেসব মাসআলায় অনেক আলেম মতভেদ করেছে, যেমন আল্লাহ তা‘আলার কালাম অক্ষর ও আওয়াজের সমষ্ঠিগত নাম কি না এবং অনুরূপ ক্ষেত্রে মতভেদকারীদের প্রত্যেকেই বিদ‘আতী হতে পারে। তাদের প্রত্যেকেই অজ্ঞ ও ব্যাখ্যাকারী হতে পারে। এদের একজন অন্যজনের পিছনে ছালাত বর্জন করা কখনো উত্তম হতে পারে না। তবে যদি সুন্নাত সুস্পষ্ট হয়, জ্ঞাত হয় এবং কোন একজন তার বিরোধিতা করে, তাহলে তার পিছনে ছালাত হবে কি না, এব্যাপারেই কেবল মতভেদ রয়েছে’।[২০]
৫. সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া বোর্ডকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বিদ‘আতী ইমামের পিছনে কি ছালাত আদায় করা জায়েয হবে? উত্তরে উক্ত বোর্ড যে সিদ্ধান্ত দিয়েছিল তা নিম্নরূপ : ‘যে ব্যক্তি বিদ‘আতী ইমাম ছাড়া অন্য ইমাম পাবে, সে যেন বিদ‘আতী ইমাম বাদ দিয়ে অন্য ইমামের পিছনে ছালাত আদায় করে। আর যে ব্যক্তি বিদ‘আতী ইমাম ছাড়া আর কোন ইমাম পাবে না, সে ইমামকে নসীহত করবে। আশা করা যায়, সে বিদ‘আত পরিহার করবে। আর যদি বিদ‘আত পরিহার না করে এবং বিদ‘আতটি শিরকের পর্যায়ে পড়ে, যেমন মৃতব্যক্তিদের কাছে ফরিয়াদ করে, আল্লাহ ছাড়া তাদের কাছে দু‘আ করে এবং তাদের নৈকট্য অর্জনের জন্য পশু যব্হ করে, তাহলে তার পিছনে ছালাত আদায় করা বৈধ নয়। কারণ সে কাফের এবং তার ছালাত বাতিল। তাকে ইমাম নিযুক্ত করা বৈধ নয়। আর তার বিদ‘আত যদি কুফরী পর্যন্ত না পৌঁছায়, যেমন ছালাতের শুরুতে মুখে নিয়ত উচ্চারণ করা, তাহলে তার পিছনে ছালাত আদায় করা জায়েয’।[২১]
৬. শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-উছায়মীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ইমামের বিদ‘আত যদি কুফুরী পর্যায়ের হয়, তাহলে তার পিছনে ছালাত আদায় করা জায়েয নয়। কেননা কুফরী পর্যায়ের বিদ‘আতীর ছালাত কবুল হয় না। এই কুফরী তার ছালাত কবুল হওয়া থেকে বিরত রাখে। আর যখন তার ছালাতই কবুল হয় না, তখন তার ইমামতির পিছনে কিভাবে ছালাত কবুল হবে? তবে বিদ‘আতীর বিদ‘আত সম্পর্কে না জেনে কেউ যদি তার পিছনে ছালাত আদায় করে ফেলে এবং পরে তার বিদ‘আতের ব্যাপারে অবগত হয়, তাহলে তার ছালাত ছহীহ হবে। যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা বলেন, لَا یُکَلِّفُ اللّٰہُ نَفۡسًا اِلَّا وُسۡعَہَا ‘কোন ব্যক্তিকেই আল্লাহ তার সাধ্যের অতিরিক্ত কর্তব্য পালনে বাধ্য করেন না’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৮৬)। আর মানুষ গায়েব সম্পর্কে জ্ঞান রাখে না। আর যখন বিদ‘আতীর বিদ‘আত কুফরী পর্যায়ের নয়, বরং ফাসেকী পর্যায়ের হয়, যা মানুষকে ইসলাম থেকে বহিষ্কার করে না এবং এমতাবস্থায় তার পিছনে ছালাত বিশুদ্ধ হবে। এটিই অগ্রগণ্য অভিমত’।[২২]
৭. শায়খ আব্দুল্লাহ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ)-কে জিজ্ঞস করা হয়েছিল, যে লোক বিদ‘আতীদের সাথে বসবাস করে, তার জন্য কি তাদের সাথে জুমু‘আর ছালাত ও জামা‘আতের সাথে ছালাত আদায় করা বৈধ হবে? নাকি সে একাকী ছালাত আদায় করে নিবে? উত্তরে শায়খ বলেন, ‘পাপাচারী নেককার প্রত্যেক মুসিলমের পিছনেই জুমু‘আর ছালাত কায়েম করা ওয়াজিব। তবে জুমু‘আর ছালাতের ইমামের বিদ‘আত যদি এমন হয় যে, তা ইসলাম থেকে বের করে দেয় না, তাহলে তার পিছনে জুমু‘আহ ও জামা‘আত কায়েম করা যাবে। ইমাম আবূ জা‘ফর আত-ত্বাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, وَنَرَى الصلاة خَلْفَ كُلِّ بَرٍّ وَفَاجِرٍ مِنْ أَهْلِ الْقِبْلَة وعلى مَنْ مَاتَ مِنْهُمْ ‘আমরা আহলে কিবলার প্রত্যেক নেককার ও বদকারের পিছনে ছালাতের অনুসরণ করা জায়েয মনে করি এবং তাদের মৃতদের উপর জানাযা ছালাত পড়া ও তাদের জন্য দু‘আ করাকেও বৈধ জানি’।[২৩]... অতঃপর তিনি বলেন, ‘হে মুসলিম ভাই! আল্লাহ তা‘আলা আপনার উপর এবং আমাদের উপর রহম করুন। জেনে রাখুন! এ ব্যাপারে উম্মতের ইজমা সংঘটিত হয়েছে যে, মুসলিমদের জন্য ঐ ব্যক্তির পিছনে ছালাতের ইকতেদা করা জায়েয, যার নিকট থেকে বিদ‘আত বা ফাসেকীর কোনটিই প্রকাশিত হয়নি। মুক্তাদীর জন্য ইমামের আক্বীদা সম্পর্কে জানা যরূরী নয়। ইমামের আক্বীদাহ পরীক্ষা ও যাচাই করাও আবশ্যক নয়। তাকে এই কথা জিজ্ঞেস করাও ঠিক নয় যে, আপনার আক্বীদাহ কী বা কেমন? বরং যার অবস্থা অজ্ঞাত, তার পিছনে ছালাত পড়ে নিবে। যদিও এমন বিদ‘আতীর পিছনে ছালাত পড়া হয়, যে বিদ‘আতের দিকে মানুষকে আহ্বান করে এবং এমন ফাসেক হয়, যার ফাসেকী প্রকাশ্য তাতেও কোন অসুবিধা নেই। বিশেষ করে যখন সে বেতনভুক্ত কিংবা সরকারের পক্ষ হতে নিয়োগপ্রাপ্ত ইমাম হয় এবং তার পিছনে ছালাত পড়া ব্যতীত অন্য কোন উপায় না থাকে। যেমন জুমু‘আর ছালাতের ইমাম, দুই ঈদের ছালাতের ইমাম, হজ্জের সময় আরাফার ইমাম ইত্যাদি। মুসলিমগণ তাদের পিছনে ছালাত পড়বে। এটিই সকল সালাফ ও খালাফ তথা পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী আলেমের অভিমত।
যে ব্যক্তি ফাসেক ইমামের পিছনে জুমু‘আহ ও জামা‘আতে শরীক হওয়া বর্জন করবে, অধিকাংশ আলেমের নিকট সে নিজেই বিদ‘আতী হিসাবে গণ্য হবে। সঠিক কথা হচ্ছে মুসলিম ব্যক্তি ফাসেক ইমামের পিছনে ছালাত পড়বে এবং সেই ছালাত দ্বিতীয়বার পড়তে হবে না। কেননা ছাহাবীগণ পাপিষ্ঠ ইমামদের পিছনে জুমু‘আহ ও জামা‘আতে শরীক হতেন। তারা পুনরায় সেই ছালাত আদায় করতেন না। যেমন আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হাজ্জাজের পিছনে ছালাত পড়তেন। আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু)ও তাই করতেন। যেমন একটু পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে। অনুরূপ আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ এবং অন্যান্য ছাহাবীও ওয়ালীদ ইবনু উক্ববা ইবনু আবী মুঈতের পিছনে ছালাত পড়তেন। অলীদ ছিল মদপানকারী। বলা হয় যে, সে একবার নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ফজরের ছালাত চার রাক‘আত আদায় করার পর বলেছিল, তোমাদের জন্য ছালাত আরো বাড়াবো কি? ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) তখন বললেন, আজ তো তোমার সাথে আমরা বেশি পড়েই ফেলেছি!! আসলে বেশি তো হয়েই গেছে। আরো বেশি পড়াতে চাও?
ছহীহ বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে, ওছমান ইবনু ‘আফ্ফান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে যখন ঘেরাও করা হল, তখন এক লোক মুসলিমদেরকে নিয়ে ছালাত পড়ল। ঐ সময় জনৈক লোক ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে জিজ্ঞেস করল। আপনি মুসলিমদের সকলের ইমাম। আর এই যে লোকটি মানুষের ছালাতের ইমামতি করছে, সে কি ফিতনার ইমাম নয়? তখন ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, হে ভাতিজা! মানুষ যেসব ভাল আমল করে, তার মধ্যে সর্বোত্তম হচ্ছে ছালাত। তারা যখন সুন্দর করে ছালাত পড়বে, তখন তুমিও তাদের সাথে সুন্দর করে ছালাত পড়। আর যখন তারা অসুন্দরভাবে ছালাত পড়বে, তখন তুমি তাদের সেই অসুন্দরকে পরিত্যাগ করবে’।[২৪]
পরিশেষ বলতে চাই, উভয় পর্যায়ের আলোচনায় এ কথা সুস্পষ্টরূপে প্রতিভাত হয় যে, বিদ‘আতীর বিদ‘আত যদি স্পষ্ট কুফরী বা শিরকী পর্যায়ের হয়, তাহলে তার পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে না। পক্ষান্তরে বিদ‘আত যদি কুফরী বা শিরকী পর্যায়ের না হয় ফাসেকী হয়, তাহলে তার পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে এবং উভয়ের ছালাত বিশুদ্ধ হবে ইনশাআল্লাহ। এটাই অগ্রগণ্য অভিমত। উল্লেখ্য, বর্তমানেও অসংখ্য জাহমিয়্যা, ক্বাদারিয়া, মু‘তাযিলা, রাফেযী (শী‘আ) ইত্যাদি ভ্রান্ত আক্বীদার আলেম রয়েছে, যারা বিভিন্ন মসজিদে ছদ্মবেশে ইমামতি করে যাচ্ছে। কেউ কেউ বুক ফুলিয়ে তার আক্বীদার প্রচারও করছে। বর্তমানে তো হাদীছ অস্বীকারকারী বিদ‘আতীদের উৎপাত বেড়েছে। সুতরাং এ সকল বিদ‘আতীদেরকে চিহ্নিত করে ইমামিতর দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করতে হবে এবং সর্বত্র তাদেরকে বয়কট করা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের ঈমানদার মুসলিমগণের উপর আবশ্যক কর্তব্য। কেননা এরূপ ইমামের পিছনে ফরয ছালাত আদায় করলে যদি তা বাতিল হয়ে যায়, তাহলে তাদের পিছনে ছালাত আদায় করার তো কোন প্রশ্নই আসে না। অতএব সাবধান!
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
* শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আল-ইসলামিয়্যাহ, খড়খড়ি, রাজশাহী।
তথ্যসূত্র :
[১]. ড. ইবরাহীম ইবনু আমির আর-রুহায়লী, মাওক্বিফু আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আতি মিন আহলিল হাওয়া ওয়াল বিদাঈ (মদীনা মুনাওয়ারা : মাকতাবাতুল গুরাবা আল-আছরিয়্যাহ, ১ম সংস্করণ, ১৪১৫ হি.), ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৪৪।
[২]. হিবাতুল্লাহ ইবনুল হাসান ইবনু মানছূর আল-লালকাঈ, শারহু উছূলি ই‘তিক্বাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আতি (রিয়ায : দারু ত্বাইয়েবা, ১৪০২ হি.), ১ম খণ্ড, পৃ. ৭৩১, আছার নং-১৩৪৭।
[৩]. শারহু উছূলি ই‘তিক্বাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আতি, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩২১, আছার নং-৫১৭।
[৪]. মাওক্বিফু আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আতি মিন আহলিল হাওয়া ওয়াল বিদাঈ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৪৫।
[৫]. শারহু উছূলি ই‘তিক্বাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আতি, ১ম খণ্ড, পৃ. ৭৩৩, আছার নং-১৩৫৬।
[৬]. আব্দুল্লাহ ইবনু আহমাদ ইবনু হাম্বাল আশ-শায়বানী, আস-সুন্নাহ (দাম্মাম : দারু ইবনিল ক্বাইয়িম, ১ম সংস্করণ, ১৪০৬ হি.), ১ম খণ্ড, পৃ. ১১৩, আছার নং-২৭, সনদ ছহীহ।
[৭]. আস-সুন্নাহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১১৩, আছার নং-৩৩, সনদ ছহীহ।
[৮]. শারহু উছূলি ই‘তিক্বাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আতি, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৭২, আছার নং-৩১৯।
[৯]. মুহাম্মাদ ইবনু মুহাম্মাদ আবুল হুসাইন ইবনু আবূ ই‘আলা, ত্বাবাক্বাতুল হানাবালাহ (বৈরূত : দারুল মা‘আরিফাহ, তাবি), ১ম খণ্ড, পৃ. ১৬৭।
[১০]. আস-সুন্নাহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩৮৬, আছার নং-৮৩৯, সনদ ছহীহ।
[১১]. আবূ মুহাম্মাদ হুসাইন ইবনু আলী ইবনু খালফ আল-বারবাহারী, কিতাবু শারহিস সুন্নাহ (দাম্মাম : দারু ইবনিল ক্বাইয়িম, ১ম সংস্করণ, ১৪০৮ হি.), পৃ. ৪৯।
[১২]. ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়েমাহ, ৭ম খণ্ড, পৃ. ৩৬৪-৩৬৫, ফৎওয়া নং-১২০৮৭।
[১৩]. আস-সুন্নাহ লি ‘আব্দিল্লাহ ইবনি আহমাদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১০৩, ১১৮, ১২৩, ১২৯, ১৩০, ১৬৪, ৩৮৪, আছার নং-৪, ৪২, ৫৫, ৭২-৭৩,৭৫, ৮৩৩-৮৩৪; শারহু উছূলি ই‘তিক্বাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আতি, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩২২, ৩২৫, আছার নং-৫১৮-৫১৯, ৫৩০; ৩য় খণ্ড, পৃ. ৫০৪, ৭৩১, ৭৩৫, আছার নং-৮৭৮, ১৩৪৮, ১৩৬৪।
[১৪]. মাওক্বিফু আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আতি মিন আহলিল হাওয়া ওয়াল বিদাঈ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৪৮।
[১৫]. ছাদরুদ্দীন মুহাম্মাদ ইবনু আলাউদ্দীন আলী ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আবীল ঈয আল-হানাফী, শারহুল ‘আক্বীদাতিত ত্বাহাবিয়্যাহ (ওয়াযারাতুশ শুয়ূনিল ইসলামিয়্যাহ ওয়াল আওক্বাফ ওয়াদ দাওয়াতি ওয়াল ইরশাদ, ১ম সংস্করণ, ১৪১৮ হি.), পৃ. ৩৬৫।
[১৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৯৪; মিশকাত, হা/১১৩৩।
[১৭]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৯৫; মিশকাত, হা/৬২৩।
[১৮]. ইবনু হাযম আন্দালুসী, আল-মুহাল্লা বিল আছার (বৈরূত : দারুল ফিকর, তাবি), ৩য় খণ্ড, পৃ. ১৩০।
[১৯]. আবুল হাসান আলী ইবনু ইসমাঈল আল-আশ‘আরী, আল-ইবানাতু ‘আন উছূলিদ দিয়ানাতি (কায়রো : দারুল আনছার, ১ম সংস্করণ, ১৩৯৭ হি.), পৃ. ৩০।
[২০]. তাক্বীউদ্দীন আবুল আব্বাস আহমাদ ইবনু তাইমিয়্যাহ, মাজমূঊল ফাতাওয়া (দারুল ওয়াফা, ৩য় সংস্করণ, ১৪২৬ হি./২০০৫ খ্রি), ২৩তম খণ্ড, পৃ. ৩৫৫।
[২১]. ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়েমাহ, ৭ম খণ্ড, পৃ. ৩৬৪-৩৬৫, ফৎওয়া নং-১২০৮৭।
[২২]. মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-উছায়মীন, ফাতাওয়া নূরুন ‘আলাদ দারব (মুওয়াসসাসাতুশ শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-উছায়মীন, ১ম প্রকাশ, ১৪২৭ হি./২০০৬ খ্রি.), ক্যাসেট নং-১৮২, ‘ইমামতের বিধান’ দ্র.।
[২৩]. ছাদরুদ্দীন মুহাম্মাদ ইবনু আলাউদ্দীন আলী ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আবীল ঈয আল-হানাফী, শারহুল ‘আক্বীদাতিত ত্বাহাবিয়্যাহ (ওয়াযারাতুশ শুয়ূনিল ইসলামিয়্যাহ ওয়াল আওক্বাফ ওয়াদ দাওয়াতি ওয়াল ইরশাদ, ১ম সংস্করণ, ১৪১৮ হি.), পৃ. ৩৬৫।
[২৪]. আব্দুল আযীয ইবনু আব্দুল্লাহ বিন বায, মাজমূঊ ফাতাওয়া, ৯ম খণ্ড, পৃ. ৩৭৫-৩৭৬।
প্রসঙ্গসমূহ »:
শিরক, বিদ‘আত ও কুসংস্কার