নফল ছালাত
-আল-ইখলাছ ডেস্ক
নফল ছালাতের মাধ্যমে আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِنَّ اللهَ قَالَ مَنْ عَادَى لِيْ وَلِيًّا فَقَدْ آذَنْتُهُ بِالْحَرْبِ وَمَا تَقَرَّبَ إِلَيّ عَبْدِيْ بِشَيْءٍ أَحَبَّ إِلَىَّ مِمَّا افْتَرَضْتُ عَلَيْهِ وَمَا يَزَالُ عَبْدِيْ يَتَقرَّبُ إِلَيَّ بِالنَّوَافِلِ حَتَّى أُحِبَّهُ فَإِذَا أَحْبَبْتُهُ كُنْتُ سَمْعَهُ الَّذِيْ يَسْمَعُ بِهِ وَبَصَرَهُ الَّذِيْ يَبْصُرُ بِهِ وَيَدَهُ الَّتِيْ يَبْطُشُ بِهَا وَرِجْلَهُ الَّتِي يَمْشِيْ بِهَا وَإِنْ سَأَلَنِيْ لأُعْطِيَنَّهُ وَلَئِنْ اسْتَعَاذَ بِيْ لَأُعِيْذَنَّهُ وَمَا تَرَدَّدْتُ فِيْ شَيْءٍ أَنَا فَاعِلُهُ تَرَدُّدِيْ عَنْ نَفْسِ الْمُؤْمِنِ يَكْرَهُ الْمَوْتَ وَأَنَا أَكْرَهُ مَسَاءَتَهُ
আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোন বন্ধুর সাথে শত্রুতা পোষণ করবে, আমি তার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করব। আমি যা কিছু আমার বান্দার উপর ফরয করেছি, তা দ্বারা কেউ আমার নৈকট্য লাভ করবে না। আমার বান্দা সর্বদা নফল ‘ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকবে। এমনকি অবশেষে আমি তাকে আমার এমন প্রিয় পাত্র বানিয়ে নেই যে, আমিই তার কান হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শোনে। আমিই তার চোখ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে দেখে। আমিই তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। আমিই তার পা হয়ে যাই, যা দিয়ে সে চলে। সে যদি আমার কাছে কোন কিছু চায়, তাহলে অবশ্যই আমি তাকে তা দান করি। আর যদি সে আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তাহলে আমি অবশ্যই তাকে আশ্রয় দেই। আমি কোন কাজ করতে চাইলে তা করতে কোন দ্বিধা করি না, যতটা দ্বিধা করি মুমিন বান্দার প্রাণ নিতে (মৃত্যু ঘটাতে)। সে মৃত্যুকে অপসন্দ করে আর আমি তার বেঁচে থাকাকে অপসন্দ করি।[১]
বাড়িতে নফল ছালাত আদয়ের মর্যাদা
عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ صَلَاةُ الْمَرْءِ فِيْ بَيْتِهِ أَفْضَلُ مِنْ صَلَاتِهِ فِيْ مَسْجِدِيْ هَذَا إِلَّا الْمَكْتُوبَةَ
যায়েদ ইবনু ছাবিত (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, কারও আপন ঘরে নফল ছালাত আদায় করা আমার এই মসজিদে ছালাত আদায় করার অপেক্ষাও উত্তম। তবে ফরয ছালাত ব্যতীত।[২]
মসজিদে ফরজ ছালাত আদায়ের পর নফল ছালাতের জন্য স্থান পরিবর্তন করা মুস্তাহাব
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَرَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ أَيَعْجِزُ أَحَدُكُمْ إِذَا صَلَّى أَنْ يَتَقَدَّمَ أَوْ يَتَأَخَّرَ أَوْ عَنْ يَمِيْنِهِ أَوْ عَنْ شِمَالِهِ
আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী করীম (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের কেউ (ফরয) ছালাত আদায়ের পর একটু সামনে এগিয়ে বা পেছনে সরে অথবা ডানে বা বামে সরে (নফল) ছালাত আদায় করতে কি অপারগ হবে? [৩]
عَنِ الْمُغِيْرَةَ بْنِ شُعْبَة رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ لَا يُصَلِّي الْإِمَامُ فِيْ مَقَامِهِ الَّذِيْ صَلَّى فِيْهِ الْمَكْتُوبَةَ حَتَّى يَتَنَحَّى عَنْهُ
মুগীরাহ ইবনু শু‘বা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ইমাম যে স্থানে দাঁড়িয়ে ফরয ছালাত আদায় করে, সে স্থান থেকে না সরে সে যেন (নফল) ছালাত না আদায় করে।[৪]
দিন ও রাত্রিতে বারো রাকা‘আত (সুন্নাত) ছালাত আদায়ের মর্যাদা
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَنْ ثَابَرَ عَلَى ثِنْتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً مِنَ السُّنَّةِ بَنَى اللهُ لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ قَبْلَ الظُّهْرِ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَهَا وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعِشَاءِ وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْفَجْرِ
আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি নিয়মিত বারো রাকা‘আত সুন্নাত ছালাত আদায় করবে, তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করা হবে। যোহরের আগে চার রাক‘আত ও পরে দুই রাক‘আত, মাগরিবের পরে দু’ রাক‘আত, ‘এশার পরে দু’ রাক‘আত এবং ফজরের পূর্বে দু’ রাক‘আত।[৫]
ফজরের দুই রাক‘আত ছালাত আদায়ের মর্যাদা ও এতে যা পড়তে হয়
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ رَكْعَتَا الْفَجْر خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا
আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ফজরের দুই রাক‘আত ছালাত দুনিয়া এবং দুনিয়ার সকল কিছুর চেয়ে উত্তম।[৬]
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ لَمْ يَكُنْ عَلَى شَيءٍ مِنَ النَّوافِلِ أَشَدَّ مُعَاهَدَةً مِنْهُ عَلَى رَكْعَتَينِ قَبْلَ الصُّبْحِ
আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, নবী করীম (ﷺ) ফজরের ছালাতের পূর্বের দুই রাক‘আত সুন্নাত আদায় করার প্রতি যত সাবধানতা অবলম্বন করতেন, অন্য কোন নফল ছালাতের প্রতি তত রাখতেন না।[৭]
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَجُلًا قَامَ فَرَكَعَ رَكْعَتَي الْفَجْرِ فَقَرَأَ فِي الرَّكْعَةِ الأُوْلَى ) قُلۡ یٰۤاَیُّہَا الۡکٰفِرُوۡنَ ( حَتَّى انقَضَتِ السُّوْرَةُ فَقَالَ النَّبِيُّ ﷺ هَذَا عَبْدٌ عَرَفَ رَبَّهُ وَقَرَأَ فِي الْآخِرَةِ ) قُلۡ ہُوَ اللّٰہُ اَحَدٌ ( حَتَّى انقَضَتِ السُّوْرَةُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ هَذَا عَبْدٌ آمَنَ بِرَبِّهِ
জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, একজন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে দু’রাক‘আত (নফল) ছালাত আদায় করল। এতে প্রথম রাক‘আতে ‘কুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরূন’ শেষ পর্যন্ত তেলাওয়াত করল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, এই বান্দা তার রবকে চিনতে পেরেছে এবং শেষ রাক‘আতে পড়ল ‘কুল হুয়াল্লাহু আহাদ’ শেষ পর্যন্ত তেলাওয়াত করল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, এই বান্দা তার রবের প্রতি ঈমান এনেছে।[৮]
যুহা তথা চাশতের ছালাতের মর্যাদা
عَنْ أَبِي مُوسَى رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ صَلَّى الضُّحَى أَرْبَعًا وَقَبْلَ الْأُوْلٰى أَرْبَعًا بُنِيَ لَهُ بِهَا بَيْتٌ فِي الْجَنَّةِ
আবূ মূসা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি চাশতের চার রাক‘আত এবং যুহরের পূর্বে চার রাক‘আত (নফল) ছালাত আদায় করবে, তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করা হবে।[৯]
যোহরের আগে ও পরে চার রাকা‘আত ছালাত আদায়ের মর্যাদা
عَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ حَافَظَ عَلَى أَرْبَعِ رَكعَاتٍ قَبْلَ الظُّهْرِ وَأَرْبَع بَعْدَهَا حُرِّمَ عَلَى النَّارِ
নবী করীম (ﷺ)-এর স্ত্রী উম্মু হাবীবাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি নিয়মিতভাবে যোহরের পূর্বে চার রাক‘আত এবং পরে চার রাক‘আত ছালাত আদায় করবে, তার জন্য জাহান্নাম হারাম করা হবে।[১০]
আছরের পূর্বে চার রাক‘আত ছালাত আদায়ের মর্যাদা
عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ رَحِمَ اللهُ امْرَأً صَلَّى قَبْلَ الْعَصْرِ أَرْبَعًا
ইবনু ওমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ এমন ব্যক্তির উপর অনুগ্রহ করুন! যে আছরের পূর্বে চার রাক‘আত ছালাত আদায় করে।[১১]
মাগরিবের পূর্বে ছালাত আদায়ের মর্যাদা
عَنْ عَبْدِ اللهِ الْمُزَنِيِّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ صَلُّوْا قَبْلَ الْمَغْرِبِ رَكْعَتينِ ثُمَّ قَالَ صَلُّوْا قَبْلَ الْمَغْرِبِ رَكْعَتَينِ لِمَنْ شَاءَ خَشْيَةً أَنْ يَتَّخِذَهَا النَّاسُ سُنَّةً
আব্দুল্লাহ আল-মুযানী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমরা মাগরিবের পূর্বে দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করো। তিনি দুই বার এরূপ বললেন। অতঃপর বললেন, যার ইচ্ছা হয়। এ আশংকায় যে লোকেরা হয়ত এটাকে সুন্নাত বানিয়ে নিবে।[১২]
মাগরিবের পরে দুই রাকা‘আত ছালাতের বর্ণনা, আদায়ের স্থান ও পঠিতব্য ক্বিরাআতের বর্ণনা
عَنْ كَعْبِ بْنِ عُجْرَة رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ أَتَى مَسْجِدَ بَنِيْ عَبدِ الْأَشْهَلْ فَصَلَّى فِيْهِ الْمَغْرِبَ فَلَمَّا قَضَوْا صَلَاتَهُمْ رَآهُمْ يُسَبِّحُوْنَ بَعْدَهَا فَقَالَ هَذِهِ صَلَاةُ الْبُيُوْتِ
কা‘ব ইবনু উজরাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা বলেন, একদা নবী করীম (ﷺ) বনী আব্দুল আশহালের মসজিদে এসে সেখানে মাগরিবের ছালাত আদায়ের পর দেখলেন, ছালাত শেষে লোকেরা সেখানেই সুন্নাত ছালাত আদায় করছেন। তখন তিনি বললেন, এটাতো ঘরের ছালাত।[১৩]
عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لَا يُصَلِّي الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْجُمُعَةِ وَلَا الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ إِلَّا فِيْ أَهْلِهِ
ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) জুমু‘আ ও মাগরিবের পরের দুই রাক‘আত ছালাত বাড়িতেই আদায় করতেন।[১৪]
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّهُ قَالَ مَا أُحْصِيْ مَا سَمِعْتُ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ يَقْرَأُ فِي الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ وَفِي الرَّكْعَتَينِ قَبْلَ صَلَاةِ الْفَجْرِ (قُلۡ یٰۤاَیُّہَا الۡکٰفِرُوۡنَ) و (قُلۡ ہُوَ اللّٰہُ اَحَدٌ)
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে মাগরিবের পরের দুই রাক‘আতে এবং ফজরের পূর্বের দুই রাক‘আতে ‘কুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরূন’ এবং ‘কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ সূরা দু’টি এতবার পাঠ করতে শুনেছি যে, তা গণনা করে শেষ করতে পারব না।[১৫]
রাতের ছালাতের মর্যাদা
عَنْ أَبِيْ أُمَامَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ أَنَّهُ قَالَ عَلَيْكُمْ بِقِيَامِ اللَّيْلِ فَإِنَّهُ دَأبُ الصَّالِحِينَ قَبْلكُمْ وَهُوَ قُرْبَةٌ إِلَى رَبِّكُمْ وَمَكْفَرةٌ لِلسَّيِّئاتِ وَمَنْهَاةٌ لِلإثْمِ
আবূ উমামা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমরা রাতের ছালাত আদায় করবে। কেননা তা তোমাদের পূর্ববর্তী সৎ-কর্মপরায়ণগণের অভ্যাস। আর তা আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জনের উপায়, গুনাহসমূহের কাফফারা এবং পাপ কর্মের প্রতিবন্ধক।[১৬]
عَنْ أَنَسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ ﷺ إِذَا اجْتَهَدَ لِأَحَدٍ فِي الدُّعَاءِ قَالَ جَعَلَ اللهُ عَلَيْكُمْ صَلَاةَ قَوْمٍ أَبْرَارٍ يَقُوْمُوْنَ اللَّيْلَ وَيَصُوْمُوْنَ النَّهَارَ لَيْسُوْا بِأَثَمَةٍ وَلَا فُجّارٍ
আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কারো জন্য দু‘আ করতেন, তখন বলতেন, আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের উপর নেক্কার সম্প্রদায়ের ছালাতের ছাওয়াব দিন, যারা রাত্রি জাগরণ করে, দিনের বেলায় ছিয়াম রাখে এবং যারা পাপী ও দুরাচারী নয়।[১৭]
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أَفْضَلُ الصِيَامِ بَعْدَ شَهْرِ رَمَضَانَ شَهْرُ اللهِ الْمُحَرَّمِ وَأَفَضَلُ الصَّلَاةِ بَعْدَ الْفَرِيْضَةِ صَلَاةُ اللَّيْلِ
আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, রামাযানের ছিয়ামের পর সর্বোত্তম ছাওম হচ্ছে আল্লাহ্র মাস মুহাররমের ছিয়াম এবং ফরয ছালাতের পর সর্বোত্তম ছালাত হচ্ছে রাতের ছালাত।[১৮]
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ شَرَفُ الْمُؤْمِنِ صَلَاتُهُ بِاللَّيْلِ وَعِزُّهُ اسْتِغْنَاؤُهُ عَمَّا فِيْ أَيْدِي النَّاسِ
আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, মুমিন ব্যক্তির সম্মান বৃদ্ধি পায় তার রাতের ছালাতের মাধ্যমে এবং তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায় মানুষের কাছে যা (ধন-সম্পদ) আছে তা থেকে অমুখাপেক্ষিতার মাধ্যমে।[১৯]
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قِيْلَ يَا رَسُوْلَ اللهِ! ﷺ إِنَّ فُلَانًا يُصَلِّي اللَّيْلَ كُلَّهُ فَإِذَا أَصْبَحَ سَرَقَ قَالَ سَيَنْهَاهُ مَا تَقُوْلُ
আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, বলা হল- হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! উমুক ব্যক্তি সারা রাত্রি জেগে ছালাত আদায় করে, অতঃপর যখন ভোর হয়, সে চুরি করে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তুমি যা বললে তা থেকে সে (ছালাত) তাকে অচিরেই বিরত রাখবে।[২০]
عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ وَأَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ إِذَا اسْتَيْقَظَ الرَّجُلُ مِنَ اللَّيْلِ وَأَيْقَظَ امْرَأَتَهُ فَصَلَّيَا رَكْعَتَينِ كُتِبَا مِنَ الذَّاكِرِيْنَ اللهَ كَثيْرًا وَالذَّاكِرَاتِ
আবূ সাঈদ খুদরী ও আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতে নিজে জাগ্রত হল এবং তার স্ত্রীকেও জাগিয়ে দিল। অতঃপর উভয়েই একত্রে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করল। তাদের দু’জনকেই আল্লাহর অধিক যিকিরকারী ও যিকিরকারিণীর তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হয়।[২১]
তথ্যসূত্র :
[১]. ছহীহ বুখারী, হা/৬০২১।
[২]. আবূ দাঊদ, হা/১০৪৪, সনদ ছহীহ।
[৩]. ইবনু মাজাহ, হা/১৪২৭, সনদ ছহীহ।
[৪]. ইবনু মাজাহ, হা/১৪২৮, সনদ ছহীহ।
[৫]. তিরমিযী, হা/৪১৪, সনদ ছহীহ।
[৬]. ছহীহ মুসলিম, হা/৭২৫; নাসাঈ, হা/১৭৫৯; সনদ ছহীহ।
[৭]. ছহীহ মুসলিম, হা/৭২৪; আবূ দাঊদ, হা/১৫৫৪।
[৮]. ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/২৪৫১; সনদ ছহীহ।
[৯]. আল-মু‘জামুল আওসাত্ব, হা/৪৭৫৩; ছহীহুল জামে‘, হা/৬৩৪০; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২৩৪৯।
[১০]. আবূ দাঊদ, হা/১২৬৯; সনদ ছহীহ।
[১১]. ছহীহ বুখারী, হা/১১২৮; আবূ দাঊদ, হা/১২৮১; সনদ হাসান; মুসনাদে আহমাদ, হা/৫৯৮০।
[১২]. ছহীহ বুখারী, হা/১১২৮; আবূ দাঊদ, হা/১২৮১; সনদ হাসান; মুসনাদে আহমাদ, হা/৫৯৮০।
[১৩]. আবূ দাঊদ, হা/১৩০০; সনদ হাসান।
[১৪]. মুসনাদে তায়ালিসী, হা/১৮৩৬; সনদ ছহীহ; ছহীহুল জামে‘, হা/৪৮৫৭।
[১৫]. তিরমিযী হা/৪৩১; সনদ হাসান ছহীহ।
[১৬]. তিরমিযী হা/৩৫৪৯; সনদ হাসান ছহীহ।
[১৭]. মুসনাদে আব্দ ইবনু হুমাইদ, হা/১৩৬০; সনদ ছহীহ; ছহীহুল জামে‘, হা/৩০৯৭; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১৮১০।
[১৮]. ছহীহ মুসলিম, হা/১১৬৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/৮৫১৫; শু‘আইব আরনাঊত্ব (রাহিমাহুল্লাহ)-এর মতে, হাদীছটি শাইখাইনের শর্তে ছহীহ।
[১৯]. ইবনু আসাকির, তারিখে দামিশক, ২৩তম খণ্ড, পৃ. ৮১; সনদ হাসান; ছহীহুল জামে‘, হা/৩৭১০; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১৯০৩।
[২০]. ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/২৫৫১; সনদ ছহীহ।
[২১]. আবূ দাঊদ, হা/১৪৫১; ইবনু মাজাহ, হা/১৩৩৫; সনদ ছহীহ।