মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৩:৪০ পূর্বাহ্ন
ইমাম মাহদী, দাজ্জাল ও ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আগমন সংশয় নিরসন

-হাসিবুর রহমান বুখারী*




(ত্রয়োদশ কিস্তি)

[ফেব্রুয়ারী ২০২৩-এর পর]

ক্বিয়ামতের প্রাক্কালে মক্কা-মদীনার অবস্থা

এই বিস্ময়কর পৃথিবীর রন্ধ্রে রন্ধ্রে গড়ে উঠেছে অসংখ্য তিলোত্তমা নগরী। নয়নাভিরাম শহর, নগর, বন্দর। অথচ তার কোনোটিতেই যেন প্রকৃত ঈমানদারের মন পরিতৃপ্ত হয় না। শীতল হয় না নয়নযুগল। কারণ তাদের অন্তরে যে অঙ্কিত হয়ে আছে ইসলামের প্রাণকেন্দ্র পবিত্র মক্কা-মদীনার চিত্র। মক্কা-মদীনাকে চুম্বন করা বা আলিঙ্গন করা হজ্জের অংশ নয়। এতদসত্ত্বেও কিন্তু মক্কার প্রথম দর্শনে হাজীরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। দেখা মাত্রই রুদ্ধশ্বাসে মনের অজান্তেই হাজীরা তার দিকে ছুটে যায়। আনন্দ ও আবেগের অশ্রুধারা প্রবাহিত হয় নয়নযুগল থেকে। আর এমনটি ঘটা অসম্ভব কিছুই নয়। কেননা হজ্জের সম্পর্ক অন্তরের সাথে দেহের সঙ্গে নয়। মূলত যারা দেহ নিয়ে হজ্জ করতে যায় তারা হজ্জের নামে ভ্রমণ করে আসে। মুমিনের এ প্রেমতৃষ্ণা শেষ হবার নয়। এ যে হৃদয়ের তীর্থ। আর এই তীর্থের মর্যাদা সবার ঊর্ধ্বে। ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) মহান আল্লাহর  নিকট এই দু‘আই করেছিলেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

فَاجۡعَلۡ اَفۡئِدَۃً مِّنَ النَّاسِ تَہۡوِیۡۤ اِلَیۡہِمۡ وَارۡزُقۡہُمۡ مِّنَ الثَّمَرٰتِ لَعَلَّہُمۡ یَشۡکُرُوۡنَ

‘অতএব আপনি কিছু লোকের অন্তর তাদের প্রতি অনুরাগী করে দিন এবং ফল-ফলাদি দিয়ে তাদের রিযিক্বের ব্যবস্থা করুন, যাতে তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে’ (সূরা ইবরাহীম : ৩৭)।

স্বপ্নের রঙ-তুলিতে আঁকা ছবি দু’টি যেন একাকার হয়ে আছে ঈমানদারদের মানসপটে। তাই তো মুমিন মাত্রই হৃদয়ের গহিনে সঞ্চিত সবটুকু ভালোবাসা অর্পণ করে এই মক্কা-মদীনায়। আর দু’হাত তুলে মনের আকুতি জানিয়ে বলে, ‘হে দয়াময়! জীবনে অনন্ত একটি বার হলেও তোমার পবিত্র ঘর কা‘বা এবং মদীনা মুনাওয়ারার সামনে গিয়ে নিজ চক্ষুকে শীতল করার তাওফীক্ব দান করো’। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে ইসলামের কঠোর শত্রুরা মক্কা-মদীনা থেকে মুসলিমদের দূরে সরিয়ে রাখার হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। অনেকে মক্কা-মদীনার বর্তমান পরিস্থিতিকে ক্বিয়ামতের পূর্বাভাস বলে অরাজকতার পায়তারা করছে। মূলত তারা মুসলিমদের অন্তর থেকে মক্কা-মদীনার অগাধ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাকে বিলুপ্ত করতে চায়। ক্বিয়ামতের পূর্ব মুহূর্তে মক্কা-মদীনার অবস্থা কেমন হবে সে সম্পর্কে ছহীহ হাদীছের মধ্যে যা কিছু আলোচনা করা হয়েছে, তাতে এ কথা দিবালোকের ন্যায় প্রতীয়মান হয় যে, সমগ্র বিশ্বে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়লেও মক্কা-মদীনা নিরাপদ থাকবে। রাসূল (ﷺ) ক্বিয়ামতের আলামত স্বরূপ যে কয়েকটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি ঘটনা হল- ‘মদীনায় ঈমানের প্রত্যাবর্তন’। আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন, إِنَّ الإِيْمَانَ لَيَأْرِزُ إِلَى الْمَدِيْنَةِ كَمَا تَأْرِزُ الْحَيَّةُ إِلَى جُحْرِهَا ‘ঈমান মদীনাতে ফিরে আসবে যেমন সাপ তার গর্তে ফিরে আসে’।[১]

আলহামদুলিল্লাহ্! উপরিউক্ত হাদীছের উপসর্গ যে এখনো প্রকাশ পায়নি তা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের দিকে লক্ষ্য করলেই বুঝা যায়। পৃথিবীর এমন কোন দেশ নেই, যেখানে কম-বেশি সত্যিকারের মুমিন-মুসলিম নেয়। যেখানে কালিমার দাওয়াত অব্যাহত নেয়। কম-বেশি সব জায়গাতেই ঈমানদারদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপরিউক্ত হাদীছ অনুযায়ী যখন পৃথিবী থেকে ঈমানদারদের সংখ্যা কমে যাবে বা ঈমান মদীনার দিকে প্রত্যাবর্তন করবে, তখন আবির্ভাব হবে এক ভয়ঙ্কর কাফিরের। যার নাম হবে দাজ্জাল।

রাসূল (ﷺ) মদীনার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলেন যে, ‘মদীনা অপ্রয়োজনীয় ও অবাঞ্ছিত লোকজনকে বহিষ্কার করে দেয়’। আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেন, ‘আমি এমন এক জনপদে হিজরত করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি, যে জনপদ অন্য সকল জনপদের উপর জয়ী হবে। লোকেরা তাকে ইয়াছরীব বলে থাকে। প্রকৃতপক্ষে তা হল মদীনা। তা অবাঞ্ছিত লোকদেরকে এমনভাবে বহিষ্কার করে দেয়, যেমনভাবে কামারের অগ্নিচুলা লোহার মরিচিকা দূর করে দেয়’।[২] অন্য বর্ণনায় এসেছে, জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,

جَاءَ أَعْرَابِىٌّ النَّبِىَّ ﷺ فَبَايَعَهُ عَلَى الإِسْلَامِ، فَجَاءَ مِنَ الْغَدِ مَحْمُوْمًا، فَقَالَ أَقِلْنِىْ، فَأَبَى ثَلَاثَ مِرَارٍ، فَقَالَ ্রالْمَدِيْنَةُ كَالْكِيْرِ، تَنْفِى خَبَثَهَا، وَيَنْصَعُ طَيِّبُهَا

‘একজন বেদুঈন নবী (ﷺ)-এর নিকট এসে ইসলামের উপর তাঁর কাছে বায়‘আত গ্রহণ করল। পরদিন সে জ্বরাক্রান্ত অবস্থায় নবী (ﷺ)-এর কাছে এসে বলল, আমার (বায়‘আত) ফিরিয়ে নিন। নবী (ﷺ) তা প্রত্যাখ্যান করলেন। এভাবে তিনবার হল। অতঃপর বললেন, মদীনা কামারের হাপরের মত, যা তার আবর্জনা ও মরিচাকে দূরীভূত করে এবং খাঁটি ও নির্ভেজালকে পরিচ্ছন্ন করে’।[৩]

সঊদী আরবের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গোটা বিশ্বেই কম-বেশী সমালোচনা হচ্ছে। অথচ উপরিউক্ত হাদীছের আলোকে আমরা দৃপ্তকণ্ঠে এ কথা বলতে পারি যে, মদীনায় বসবাসকারী মানুষ কখনো অপ্রয়োজনীয় হতে পারে না। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ঈমানদার মুসলিমরা নিজেদের ঈমান বাঁচানোর তাকীদে মদীনায় গিয়ে আশ্রয় নিবে। আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) সূত্রে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেন,

تَبْلُغُ الْمَسَاكِنُ إِهَابَ أَوْ يَهَابَ. قَالَ زُهَيْرٌ قُلْتُ لِسُهَيْلٍ فَكَمْ ذَلِكَ مِنَ الْمَدِيْنَةِ قَالَ كَذَا وَكَذَا مِيلًا

‘জনবসতি বিস্তৃত হয়ে মদীনার মানুষের বাড়ি ঘর ‘ইহাব’ অথবা ‘ইয়াহাব’ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। যুহাইর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি আমার শিক্ষক সুহাইল (রাহিমাহুল্লাহ)-কে প্রশ্ন করলাম, সেটা মদীনাহ হতে কত দূরে হবে? তিনি বললেন, এতো এতো মাইল দূরে অবস্থিত’।[৪] আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) সূত্রে বর্ণিত। রাসূল (ﷺ) বলেছেন,

يُوْشِكُ الْمُسْلِمُوْنَ أَنْ يُحَاصَرُوْا إِلَى الْمَدِيْنَةِ حَتَّى يَكُوْنَ أَبْعَدُ مَسَالِحِهِمْ سَلَاحَ

‘অচিরেই মুসলিমদেরকে মদীনাতে অবরোধ করা হবে, এমনকি তাদের দূরতম যুদ্ধক্ষেত্র হবে (খায়বারের নিকটবর্তী এলাকা) ‘সালাহ’।[৫]

উল্লেখ্য, ক্বিয়ামতের এক্কেবারে নিকটবর্তী সময়ে পবিত্র কা‘বা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। আবু সা‘ঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) সূত্রে বর্ণিত। নবী (ﷺ) বলেছেন, لَيُحَجَّنَّ الْبَيْتُ وَلَيُعْتَمَرَنَّ بَعْدَ خُرُوْجِ يَأْجُوْجَ وَمَأْجُوْجَ ‘ইয়া’জূজ ও মা’জূজ বাহির হওয়ার পরও বাইতুল্লার হজ্জ ও ‘উমরাহ পালিত হবে। অন্য বর্ণনায় এসেছে,لَا تَقُوْمُ السَّاعَةُ حَتَّى لَا يُحَجَّ الْبَيْتُ ‘বাইতুল্লার হজ্জ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না’।[৬] আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) সূত্রে বর্ণিত। নবী (ﷺ) বলেন, كَأَنِّى بِهِ أَسْوَدَ أَفْحَجَ، يَقْلَعُهَا حَجَرًا حَجَرًا ‘আমি যেন দেখতে পাচ্ছি কালো বর্ণের বাঁকা পা বিশিষ্ট লোকেরা কা‘বা ঘরের একটি একটি করে পাথর খুলে এর মূল উৎপাটন করে দিচ্ছে’।[৭]

আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, يُخَرِّبُ الْكَعْبَةَ ذُو السُّوَيْقَتَيْنِ مِنَ الْحَبَشَةِ ‘হাবাশার (বর্তমানে আবিসিনিয়ার) এক লোক কা‘বা ঘরকে ভেঙ্গে চূর্ণ-বিচূর্ণ করবে, তার উভয় পায়ের নলা ছোট ছোট সরু বিশিষ্ট হবে’।[৮] ঐ ব্যক্তি পবিত্র কা‘বার গুপ্তধন আত্মসাৎ করার জন্য পবিত্র কা‘বাকে ধ্বংস করবে। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) সূত্রে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন,

اتْرُكُوا الْحَبَشَةَ مَا تَرَكُوْكُمْ فَإِنَّهُ لَا يَسْتَخْرِجُ كَنْزَ الْكَعْبَةِ إِلَّا ذُو السُّوَيْقَتَيْنِ مِنَ الْحَبَشَةِ

‘যতদিন পর্যন্ত ইথিওপীয়রা তোমাদের ত্যাগ করবে, তোমরাও তাদের ত্যাগ কর। কেননা ইথিয়পীয় ছোট গোছাধারী এক ব্যক্তি ব্যতীত কেউ কা‘বার ভা-ার লুণ্ঠন করবে না’।[৯] অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘ঐ ব্যক্তি পবিত্র কা‘বার গিলাফ ও অন্যান্য সম্পদ কেড়ে নেবে। যেন আমি দেখছি, জনৈক টাকমাথা ও বাঁকা পা বিশিষ্ট ব্যক্তি কোদাল ও কুঠার দিয়ে কা‘বা ঘরে আঘাত করছে’।[১০]

দাজ্জাল মক্কা ও মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না

ক্বিয়ামতের সবচেয়ে বড় আলামতগুলোর একটি হল- দাজ্জালের আগমন। দাজ্জাল সারা পৃথিবী জুড়ে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে বেড়াবে। তবে আল্লাহ তা‘আলা দু’টি প্রদেশকে দাজ্জালের হাত থেকে রক্ষা করবেন- ‘মক্কা ও মদীনা’। শত প্রচেষ্টা করেও দাজ্জাল ও তার দলবল পবিত্র নগরী মক্কা ও মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না। হাদীছের ভাষা অনুযায়ী দাজ্জাল ‘খুরাসান’ এবং ‘ইসফাহান’ থেকে আবির্ভূত হবে এবং তার অবতরণ হবে ‘খুজ’ এবং ‘কিরমান’ থেকে। আর এ সমস্ত অঞ্চলের সবগুলোই বর্তমানে ইরানে অবস্থিত। নির্দিষ্ট করে সে ‘কুছা’ গ্রামে অবতরণ করবে। (যা পূর্বের সংখ্যায় বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে)। অতঃপর ডানে-বামে দুর্যোগ সৃষ্টি করতে করতে মদীনার দিকে রওনা দেবে। মদীনার প্রত্যেকটি গেটে পাহারাদার নিযুক্ত থাকায় সে প্রবেশ করতে সক্ষম হবে না। এ সম্পর্কে নবী (ﷺ) থেকে একাধিক ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। যেমন,

১- আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন, عَلَى أَنْقَابِ الْمَدِيْنَةِ مَلَائِكَةٌ لَا يَدْخُلُهَا الطَّاعُوْنُ وَلَا الدَّجَّالُ ‘মদীনার প্রবেশ পথসমূহে ফেরেশতা পাহারায় নিয়োজিত আছে। তাই প্লেগ রোগ এবং দাজ্জাল মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না’।[১১]

২- আবূ বাকরাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন,

لَا يَدْخُلُ الْمَدِيْنَةَ رُعْبُ الْمَسِيْحِ الدَّجَّالِ لَهَا يَوْمَئِذٍ سَبْعَةُ أَبْوَابٍ عَلَى كُلِّ بَاب مَلَكَانِ

‘মদীনাতে দাজ্জালের ত্রাস ও ভীতি প্রবেশ করতে পারবে না। ঐ সময় মদীনার সাতটি প্রবেশ পথ থাকবে। প্রত্যেক পথে দু’জন করে ফেরেশতা মোতায়েন থাকবে’।[১২]

৩- আনাস ইবনু মালিক (ﷺ) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন,

لَيْسَ مِنْ بَلَدٍ إِلَّا سَيَطَؤُهُ الدَّجَّالُ إِلَّا مَكَّةَ وَالْمَدِيْنَةَ لَيْسَ لَهُ مِنْ نِقَابِهَا نَقْبٌ إِلَّا عَلَيْهِ الْمَلَائِكَةُ صَافِّينَ يَحْرُسُوْنَهَا ثُمَّ تَرْجُفُ الْمَدِيْنَةُ بِأَهْلِهَا ثَلَاثَ رَجَفَاتٍ فَيُخْرِجُ اللهُ كُلَّ كَافِرٍ وَمُنَافِقٍ.

‘মক্কা ও মদীনা ব্যতীত এমন কোন শহর নেই যেখানে দাজ্জাল পদচারণ করবে না। মক্কা এবং মদীনার প্রত্যেকটি প্রবেশ পথেই ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে পাহারায় নিয়োজিত থাকবে। অতঃপর মদীনা তার অধিবাসীদেরকে নিয়ে তিনবার কেঁপে উঠবে এবং আল্লাহ তা‘আলা সমস্ত কাফির এবং মুনাফিকদেরকে বের করে দিবেন’।[১৩] অন্য বর্ণনায় এসেছে, আনাস ইবনু মালিক (ﷺ) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, ‘দাজ্জাল আসবে। অবশেষে মদীনার এক পার্শ্বে অবতরণ করবে। (এ সময় মদীনাহ) তিনবার কেঁপে উঠবে। তখন সকল কাফির ও মুনাফিক্ব বের হয়ে তার নিকট চলে আসবে’।[১৪] অতঃপর সে মদীনা থেকে মাত্র তিন মাইল দূরে ‘জুরুফ’ নামক একটি জায়গায় আশ্রয় গ্রহণ করবে।[১৫] যেমন,

১- আবূ সাঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, একদিন নবী (ﷺ) আমাদের নিকট দাজ্জাল সম্পর্কে একটি দীর্ঘ হাদীছ বর্ণনা করলেন। তিনি তার সম্পর্কে আমাদেরকে যা কিছু বলেছিলেন, তাতে এটাও বলেছিলেন যে,

 يَأْتِي الدَّجَّالُ وَهُوَ مُحَرَّمٌ عَلَيْهِ أَنْ يَدْخُلَ نِقَابَ الْمَدِيْنَةِ فَيَنْزِلُ بَعْضَ السِّبَاخِ الَّتِيْ تَلِي الْمَدِيْنَةَ

‘দাজ্জাল আসবে, কিন্তু মদীনার প্রবেশ পথে তার প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ থাকবে। সুতরাং সে মদীনার নিকটবর্তী বালুকাময় একটি স্থানে অবতরণ করবে। তখন তার নিকট এক ব্যক্তি যাবে যে উত্তম ব্যক্তি হবে বা উত্তম মানুষের একজন হবে এবং সে বলবে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তুমিই হলে সে দাজ্জাল যার সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) আমাদেরকে অবহিত করেছেন। দাজ্জাল বলবে, আমি যদি একে হত্যা করে পুনরায় জীবিত করতে পারি তাহলেও কি তোমরা আমার ব্যাপারে সন্দেহ করবে? তারা বলবে, ‘না’। এরপর দাজ্জাল লোকটিকে হত্যা করে পুনরায় জীবিত করবে। জীবিত হয়েই লোকটি বলবে, আল্লাহর শপথ! আজকের চেয়ে অধিক প্রত্যয় আমার আর কখনো ছিল না। অতঃপর দাজ্জাল বলবে, আমি তাকে হত্যা করে ফেলব। কিন্তু সে লোকটিকে হত্যা করতে আর সক্ষম হবে না’।[১৬] উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এটি এমন একটি বালুকাময় অনুর্বর ভূমি, যেখানে লবণাক্ততার কারণে কোন ফসল উৎপন্ন হয় না। আর মদীনার পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোর এটিই বৈশিষ্ট্য। এ জায়গাটি মূলত মদীনা থেকে শামের দিকে অবস্থিত’।[১৭]

২- আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, অতঃপর হাম্মাদ ইবনু সালামাহ অবিকল বর্ণনা করেছেন। তবে এতে রয়েছে যে,

فَيَأْتِي سَبَخَةَ الْجُرُفِ فَيَضْرِبُ رِوَاقَهُ وَقَالَ فَيَخْرُجُ إِلَيْهِ كُلُّ مُنَافِقٍ وَمُنَافِقَةٍ

‘দাজ্জাল এসে ‘জুরুফ’-এর এক অনুর্বর ভূমিতে নামবে এবং এখানেই সে তার তাঁবু বা শিবির স্থাপন করবে। যার ফলে প্রত্যেক মুনাফিক্ব পুরুষ ও মহিলা তার কাছে চলে যাবে’।[১৮] উক্ত হাদীছে বর্ণিত ‘জুরুফ’ নামক জায়গা সম্পর্কে হাফিয ইবনে হাজার আসক্বালানী (ﷺ) বলেন, ‘জুরুফ’ হল- মদীনা থেকে মোটামুটি তিন মাইল দূরে শামের দিকে যেতে রাস্তার ধারে অবস্থিত একটি জায়গার নাম’।[১৯] অর্থাৎ দাজ্জাল যেখানে অবস্থান করবে বা শিবির স্থাপন করবে সে জায়গাটি মদীনা থেকে মাত্র তিন মাইল দূরে অবস্থিত। অথচ মদীনা থেকে জেরুজালেমের দূরত্ব প্রায় ১,২০০ কিলোমিটার। তাহলে বক্তা কোন্ গবেষণার ভিত্তিতে বলেছেন যে, দাজ্জাল জেরুজালেম থেকে বিশ্ব পরিচালনা করবে? তবে এ কথা সত্য যে, দাজ্জাল সমগ্র বিশ্ব ভ্রমণ করবে, অবশেষে সে যখন জেরুজালেমে পৌঁছবে তখন তাকে ঈসা (আলাইহিস সালাম) সেখানেই হত্যা করবেন।

দাজ্জাল পৃথিবীতে কতদিন অবস্থান করবে?

এ সম্পর্কে ছহীহ হাদীছের আলোকে যা প্রতিভাত হয় তা  নিম্নরূপ :

১- ফাতিমা বিনতে ক্বায়িস (রাযিয়াল্লাহু আনহা) কর্তৃক বর্ণিত হাদীছে দাজ্জাল সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনা করা হয়েছে।

...وَإِنِّيْ مُخْبِرُكُمْ عَنِّيْ إِنِّيْ أَنَا الْمَسِيْحُ وَإِنِّيْ أُوْشِكُ أَنْ يُؤْذَنَ لِيْ فِي الْخُرُوْجِ فَأَخْرُجَ فَأَسِيْرَ فِي الْأَرْضِ فَلَا أَدَعَ قَرْيَةً إِلَّا هَبَطْتُهَا فِيْ أَرْبَعِيْنَ لَيْلَةً غَيْرَ مَكَّةَ وَطَيْبَةَ فَهُمَا مُحَرَّمَتَانِ عَلَىَّ كِلْتَاهُمَا كُلَّمَا أَرَدْتُ أَنْ أَدْخُلَ وَاحِدَةً أَوْ وَاحِدًا مِنْهُمَا اسْتَقْبَلَنِيْ مَلَكٌ بِيَدِهِ السَّيْفُ صَلْتًا يَصُدُّنِيْ عَنْهَا وَإِنَّ عَلَى كُلِّ نَقْبٍ مِنْهَا مَلَائِكَةً يَحْرُسُوْنَهَا قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ وَطَعَنَ بِمِخْصَرَتِهِ فِي الْمِنْبَرِ ‏ هَذِهِ طَيْبَةُ هَذِهِ طَيْبَةُ هَذِهِ طَيْبَةُ‏.‏ يَعْنِي الْمَدِيْنَةَ‏ أَلَا هَلْ كُنْتُ حَدَّثْتُكُمْ ذَلِكَ‏.‏ فَقَالَ النَّاسُ نَعَمْ فَإِنَّهُ أَعْجَبَنِيْ حَدِيْثُ تَمِيْمٍ أَنَّهُ وَافَقَ الَّذِيْ كُنْتُ أُحَدِّثُكُمْ عَنْهُ وَعَنِ الْمَدِيْنَةِ وَمَكَّةَ

‘অতঃপর দাজ্জাল বলল, এখন আমি নিজের ব্যাপারে তোমাদেরকে বলছি, আমিই মাসীহ দাজ্জাল। অতি সত্ত্বরই আমি এখান থেকে বাহির হওয়ার অনুমতি পেয়ে যাব। বাহির হয়ে আমি সমগ্র ভূ-পৃষ্ঠ প্রদক্ষিণ করব। চল্লিশ দিনের ভিতর এমন কোন জনপদ থাকবে না, যেখানে আমি প্রবেশ না করব। তবে মক্কাহ ও মদীনা এ দু’টি স্থানে আমার প্রবেশ নিষিদ্ধ। যখন আমি এ দু’টির কোন স্থানে প্রবেশের ইচ্ছা করব, তখন এক ফেরেশতা উন্মুক্ত তরবারি হাতে সম্মুখে এসে আমাকে বাধা প্রদান করবে। এ দু’টি স্থানের সকল রাস্তায় ফেরেশতাদের পাহারা থাকবে। বর্ণনাকারী বলেন, ‘তখন রাসূল (ﷺ) তার ছড়ি দ্বারা মিম্বারে আঘাত করে বললেন, এ হচ্ছে ত্বাইবাহ, এ হচ্ছে ত্বাইবাহ, এ হচ্ছে ত্বাইবাহ। আর ত্বাইবাহ অর্থ এ মদীনা। সাবধান! আমি কি এ কথাটি ইতোপূর্বে তোমাদেরকে বলিনি? তখন লোকেরা বলল, হ্যাঁ, আপনি বলেছেন। রাসূল (ﷺ) বললেন, তামীম আদ-দারীর কথাটি আমার খুবই ভালো লেগেছে। যেহেতু তা সামঞ্জস্যপূর্ণ আমার ঐ বর্ণনার সঙ্গে, যা আমি তোমাদেরকে দাজ্জাল, মদীনা ও মক্কা বিষয়ে ইতোপূর্বে বলেছি’।[২০]

২- নাওওয়াস ইবনু সাম‘আন (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘একদা সকালে রাসূল (ﷺ) দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করলেন। আলোচনার সময় তিনি তার ব্যক্তিত্বকে তুচ্ছ করে তুলে ধরলেন। পরে অনেক গুরুত্ব সহকারে তাকে উপস্থাপন করলেন ফলে আমরা ঐ বৃক্ষরাজির নির্দিষ্ট এলাকায় (আবাসস্থল সম্পর্কে) ধারণা করতে লাগলাম। এরপর আমরা সন্ধ্যায় আবার তার কাছে গেলাম। তিনি আমাদের মধ্যে এর প্রভাব দেখতে পেয়ে বললেন, তোমাদের ব্যাপার কী? আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আপনি সকালে দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করেছেন এবং এতে আপনি কখনো তার ব্যক্তিত্বকে তুচ্ছ করে তুলে ধরেছেন, আবার কখনো তার ব্যক্তিত্বকে বড় করে তুলে ধরেছেন। ফলে আমরা মনে করেছি যে, ‘দাজ্জাল বুঝি ঐ বাগানের মধ্যেই বিদ্যমান’। এ কথা শুনে তিনি বললেন, দাজ্জাল নয়, বরং আমি তোমাদের ব্যাপারে অন্য কিছুর অধিক ভয় করছি। তবে শোন, আমি তোমাদের মধ্যে বিদ্যমান থাকা অবস্থায় যদি দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ হয় তবে আমি নিজেই তাকে প্রতিহত করব। তোমাদের প্রয়োজন হবে না। আর যদি আমি তোমাদের মাঝে না থাকাবস্থায় দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ হয়, তবে প্রত্যেক মুমিন লোক নিজের পক্ষ হতে তাকে প্রতিহত করবে। প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আল্লাহ তা‘আলাই হলেন আমার পক্ষ হতে তত্ত্বাবধানকারী।  দাজ্জাল যুবক এবং ঘন চুল বিশিষ্ট হবে, চোখ আঙ্গুরের ন্যায় হবে। তোমাদের যে কেউ দাজ্জালের সময়কাল পাবে সে যেন সূরা আল-কাহাফ-এর প্রথমোক্ত আয়াতসমূহ পাঠ করে। সে ইরাক ও সিরিয়ার মধ্যপথ হতে আবির্ভূত হবে। সে ডানে-বামে দুর্যোগ সৃষ্টি করবে। হে আল্লাহর বান্দাগণ! তোমরা অটল থাকবে। তখন আমরা প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)!

وَمَا لَبْثُهُ فِي الْأَرْضِ؟ قَالَ‏ أَرْبَعُوْنَ يَوْمًا يَوْمٌ كَسَنَةٍ وَيَوْمٌ كَشَهْرٍ وَيَوْمٌ كَجُمُعَةٍ وَسَائِرُ أَيَّامِهِ كَأَيَّامِكُمْ.‏ قُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ فَذَلِكَ الْيَوْمُ الَّذِيْ كَسَنَةٍ أَتَكْفِيْنَا فِيْهِ صَلَاةُ يَوْمٍ قَالَ‏ لَا اقْدُرُوْا لَهُ قَدْرَهُ‏.‏

‘সে পৃথিবীতে কতদিন অবস্থান করবে? উত্তরে রাসূল (ﷺ) বললেন, ‘চল্লিশ দিন পর্যন্ত’। এর প্রথম দিনটি হবে এক বছরের সমান, দ্বিতীয় দিনটি হবে এক মাসের সমান এবং তৃতীয় দিনটি হবে এক সপ্তাহের সমান। অবশিষ্ট দিনগুলো তোমাদের দিনসমূহের মতই হবে। আমরা প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! যেদিন এক বছরের সমান হবে, সেটিতে এক দিনের ছালাতই কি আমাদের জন্য যথেষ্ট হবে? উত্তরে তিনি বললেন, ‘না, বরং তোমরা এদিন হিসাব করে তোমাদের দিনের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে নিবে’।[২১]

মোদ্দাকথা, দাজ্জাল চল্লিশ দিন অবস্থান করবে। প্রথম দিনটি হবে এক বছরের মত লম্বা। দ্বিতীয় দিনটি হবে এক মাসের মত। তৃতীয় দিনটি হবে এক সপ্তাহের মত। আর বাকী দিনগুলো দুনিয়ার স্বাভাবিক দিনের মতই হবে। তাহলে দেখা যাচ্ছে দাজ্জাল ভূপৃষ্ঠের উপর সর্বমোট ৪৩৯ দিন অবস্থান করবে।[২২]

(ইনশাআল্লাহ চলবে)

* মুর্শিদাবাদ, ভারত।

তথ্যসূত্র :
[১]. ছহীহ বুখারী, হা/১৮৭৬; ছহীহ মুসলিম, হা/১৪৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/৯৪৬২।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/১৮৭১; ছহীহ মুসলিম, হা/১৩৮২; মুসনাদে আহমাদ, হা/৮৯৯৪।
[৩]. ছহীহ বুখারী হা/১৮৮৩, ৭২০৯, ৭২১১, ৭২১৬, ৭৩২২।
[৪]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৯০৩।
[৫]. আবূ দাঊদ, হা/৪২৫০; মিশকাত, হা/৫৪২৭, সনদ ছহীহ।
[৬]. ছহীহ বুখারী, হা/১৫৯৩।
[৭]. ছহীহ বুখারী হা/১৫৯৫।
[৮]. ছহীহ বুখারী হা/১৫৯১, ১৫৯৬; ছহীহ মুসলিম, হা/২৯০৯।
[৯]. আবূ দাঊদ, হা/৪৩০৯; মিশকাত, হা/৫৪২৯, সনদ হাসান।
[১০]. মুসনাদে আহমাদ হা/৭০৫৩।
[১১]. ছহীহ বুখারী, হা/১৮৮০, ৫৭৩১, ৭১৩৩; ছহীহ মুসলিম, হা/১৩৭৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭২৩৮।
[১২]. ছহীহ বুখারী, হা/১৮৭৯, ৭১২৫, ৭১২৬।
[১৩]. ছহীহ বুখারী, হা/১৮৮১,৭১২৪, ৭১৩৪, ৭৪৭৩; ছহীহ মুসলিম, হা/২৯৪৩।
[১৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৭১২৪।
[১৫]. বুলদানুল খিলাফাতিশ শারক্বিয়্যাহ, পৃ. ৯৪-৯৫; মু‘জামুল বুলদান, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৩৩; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১২৯১৬৪।
[১৬]. ছহীহ বুখারী, হা/১৮৮২, ৭১৩২; ছহীহ মুসলিম, হা/২৯৩৮, ৭২৬৫।
[১৭]. ফাৎহুল বারী, ১৩শ খণ্ড, পৃ. ১০২।
[১৮]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৯৪৩।
[১৯]. ফাৎহুল বারী, ১৩শ খণ্ড, পৃ. ৯৩।
[২০]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৯৪২।
[২১]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৯৩৭; আবূ দাঊদ, হা/৪৩২১; তিরমিযী, হা/২২৪০।
[২২]. ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৩২৬৬৫।




প্রসঙ্গসমূহ »: আক্বীদা বা বিশ্বাস
শরী‘আত অনুসরণের মূলনীতি - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ (৮ম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ (৩য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় যুবসমাজ (২য় কিস্তি) - ড. মেসবাহুল ইসলাম
রামাযানে ছিয়াম রাখার বিধান ও না রাখার পরিণাম - আল-ইখলাছ ডেস্ক
মাযহাবী গোঁড়ামি ও তার কুপ্রভাব (৪র্থ কিস্তি) - অনুবাদ : রিদওয়ান ওবাইদ
সুন্নাতের আলো বিদ‘আতের অন্ধকার (১২তম কিস্তি) - অনুবাদ : হাফীযুর রহমান বিন দিলজার হোসাইন
ইসলামী পুনর্জাগরণের প্রতিবন্ধকতা ও তার সমাধান (৩য় কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
বিদ‘আত পরিচিতি (১৪তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ (১৪তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
বিদ‘আত পরিচিতি (২৯তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (১৮তম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম

ফেসবুক পেজ