ইসলামে রোগ ও আরোগ্য
-মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী*
ভূমিকা
সুস্থতা ও অসুস্থতা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। অসুস্থতা দ্বারা মুমিন বান্দার স্তর উন্নত হয়। তাই অসুস্থতাকে অশুভ নিদর্শন হিসাবে গ্রহণ করা উচিত নয়। কেননা রোগের নিজস্ব কোন শক্তি নেই। রোগ দেয়ার মালিক আল্লাহ। সুস্থতা দানের মালিকও তিনিই। কোন ব্যক্তি বা বস্তু কাউকে রোগাক্রান্ত করতে পারে না। সুস্থও করতে পারে না। ইসলাম রোগ-ব্যাধি থেকে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছে। বলা হয়ে থাকে যে, Prevention is better than cure ‘রোগ প্রতিরোধ রোগ নিরাময় থেকে শ্রেয়’। এ কথাও বলা যায় যে, Prevention is cheaper than cure ‘রোগ প্রতিরোধ নিরাময়ের চেয়ে সস্তা’। এছাড়া ইসলাম এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে।
অসুস্থতা পরীক্ষাস্বরূপ
আসলে কোন অসুখই ছোট নয়। কেননা প্রত্যেক রোগেই কষ্ট আছে আবার রোগের মাধ্যমে রবের পক্ষ থেকে পুরস্কারও আছে। পরীক্ষা হয়তো কোনটা সহনীয়-স্বাভাবিক, কোনটা অসহনীয় কষ্ট বয়ে আনে, আবার কোনটা আসে দূরারোগ্য ব্যাধি হিসাবে, যা কখনই ভালো হয় না। কিন্তু রোগ বা অসুখ যে নে‘মত, এটা আবার অনেকেই জানে না। বাসায় মেহমান আসলে যেমন তাকে ইচ্ছা-অনিচ্ছায় গ্রহণ করতে হয়, তেমনি অসুখ এসে গেলে তার সাথে কে কেমন আচরণ করল তা পরীক্ষা করা হয়। আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, مَنْ يُرِدِ اللهُ بِهِ خَيْرًا يُصِبْ مِنْهُ ‘আল্লাহ যে ব্যক্তির কল্যাণ কামনা করেন তাকে তিনি দুঃখ-কষ্টে পতিত করেন’।[১] হাদীছটি ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) ‘রোগের কাফ্ফারা ও ক্ষতিপূরণ’ অধ্যায়ে নিয়ে এসেছেন। অর্থাৎ বিপদাপদ বা অসুখ হলেই বান্দা তার পুরস্কার পেয়ে যাবে। হোক তা দুনিয়া বা আখিরাতে।
বলা হয় পরীক্ষাতেই পুরস্কার। যার যত মুসীবত বা পরীক্ষা তার তত বড় পুরস্কার। মহান আল্লাহ বলেন,
فَاِنَّ مَعَ الۡعُسۡرِ یُسۡرًا- اِنَّ مَعَ الۡعُسۡرِ یُسۡرًا
‘নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে। নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে’ (সূরা আলাম নাশরাহ : ৫-৬)। আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
إِذَا أَرَادَ اللهُ بِعَبْدِهِ الْخَيْرَ عَجَّلَ لَهُ الْعُقُوْبَةَ فِى الدُّنْيَا وَإِذَا أَرَادَ اللهُ بِعَبْدِهِ الشَّرَّ أَمْسَكَ عَنْهُ بِذَنْبِهِ حَتَّى يُوَفَّى بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
‘মহান আল্লাহ যখন তার কোন বান্দার কল্যাণ সাধন করতে চান তখন তাড়াতাড়ি দুনিয়াতে তাকে বিপদে নিক্ষেপ করেন। আর যখন তিনি তার কোন বান্দার অকল্যাণ সাধন করতে চান তখন তাকে তার অপরাধের শাস্তি প্রদান হতে বিরত রাখেন। তারপর ক্বিয়ামতের দিন তিনি তাকে পুরোপুরি শাস্তি দেন’।[২]
বিপদ যত মারাত্মক হবে, প্রতিদানও তত মহান হবে। মহান আল্লাহ যখন কোন জাতিকে ভালোবাসেন, তখন তাদেরকে বিপদে ফেলে পরীক্ষা করেন। যে লোক তাতে সন্তষ্ট থাকে, তার জন্য আল্লাহর সন্তÍষ্টি বিদ্যমান। আর যে লোক তাতে অসন্তষ্ট হয় তার জন্য আল্লাহর অসন্তষ্টি বিদ্যমান। হাদীছে এসেছে,
عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَىُّ النَّاسِ أَشَدُّ بَلَاءً قَالَ اَلْأَنْبِيَاءُ ثُمَّ الْأَمْثَلُ فَالْأَمْثَلُ فَيُبْتَلَى الرَّجُلُ عَلَى حَسَبِ دِيْنِهِ فَإِنْ كَانَ دِيْنُهُ صُلْبًا اشْتَدَّ بَلَاؤُهُ وَإِنْ كَانَ فِىْ دِيْنِهِ رِقَّةٌ ابْتُلِىَ عَلَى حَسَبِ دِيْنِهِ فَمَا يَبْرَحُ الْبَلَاءُ بِالْعَبْدِ حَتَّى يَتْرُكَهُ يَمْشِى عَلَى الْأَرْضِ مَا عَلَيْهِ خَطِيْئَةٌ
মুছ‘আব ইবনু সা‘দ (রাহিমাহুল্লাহ) হতে তার বাবার সূত্রে বর্ণিত আছে, তিনি (সা‘দ) (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! মানুষের মাঝে কার বিপদের পরীক্ষা সবচেয়ে কঠিন হয়? তিনি বললেন, ‘নবীদের বিপদের পরীক্ষা, তারপর যারা নেককার তাদের, এরপর যারা নেককার তাদের বিপদের পরীক্ষা। মানুষকে তার দ্বীন অনুসারে পরীক্ষা করা হয়। তুলনামূলকভাবে যে লোক বেশি ধার্মিক তার পরীক্ষাও সে অনুপাতে কঠিন হয়ে থাকে। আর যদি কেউ তার দ্বীনের ক্ষেত্রে শিথিল হয়ে থাকে, তাহলে তাকে সে মোতাবেক পরীক্ষা করা হয়। অতএব বান্দার উপর বিপদাপদ লেগেই থাকে, অবশেষে তা তাকে এমন অবস্থায় ছেড়ে দেয় যে, সে যমীনে চলাফেরা করে অথচ তার কোন গুনাহই থাকে না’।[৩]
মুমিনদের বিপদ পরীক্ষাস্বরূপ। মহান আল্লাহ বলেন,
وَ لَنَبۡلُوَنَّکُمۡ بِشَیۡءٍ مِّنَ الۡخَوۡفِ وَ الۡجُوۡعِ وَ نَقۡصٍ مِّنَ الۡاَمۡوَالِ وَ الۡاَنۡفُسِ وَ الثَّمَرٰتِ ؕ وَ بَشِّرِ الصّٰبِرِیۡنَ -ۙ الَّذِیۡنَ اِذَاۤ اَصَابَتۡہُمۡ مُّصِیۡبَۃٌ ۙ قَالُوۡۤا اِنَّا لِلّٰہِ وَ اِنَّاۤ اِلَیۡہِ رٰجِعُوۡنَ- اُولٰٓئِکَ عَلَیۡہِمۡ صَلَوٰتٌ مِّنۡ رَّبِّہِمۡ وَ رَحۡمَۃٌ ۟ وَ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُہۡتَدُوۡنَ
‘এবং অবশ্যই আমরা তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, জান-মালের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও ছবরকারীদের। যখন তারা বিপদে পতিত হয়, তখন বলে, নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাব। তারা সে সমস্ত লোক, যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হেদায়াতপ্রাপ্ত’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৫৫-১৫৭)। সাধারণত মানুষের অভ্যাস উল্টাই হয়ে থাকে। মানুষ কিছু পেয়ে পরীক্ষার শিকার হলে বলে আমার দিকে আল্লাহ দেখেছেন। বিপরীত হলেই তখন মানুষ আল্লাহর ব্যাপারে উল্টাপাল্টা বলা শুরু করে। এই আচরণ বিশেষ করে মুমিনের কাছে কখনোই কাম্য নয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
فَاَمَّا الۡاِنۡسَانُ اِذَا مَا ابۡتَلٰہُ رَبُّہٗ فَاَکۡرَمَہٗ وَ نَعَّمَہٗ ۬ۙ فَیَقُوۡلُ رَبِّیۡۤ اَکۡرَمَنِ - وَ اَمَّاۤ اِذَا مَا ابۡتَلٰہُ فَقَدَرَ عَلَیۡہِ رِزۡقَہٗ ۬ۙ فَیَقُوۡلُ رَبِّیۡۤ اَہَانَنِ
‘মানুষ এরূপ যে, যখন তার পালনকর্তা তাকে পরীক্ষা করেন, অতঃপর সম্মান ও অনুগ্রহ দান করেন, তখন বলে, আমার পালনকর্তা আমাকে সম্মান দান করেছেন। আর যখন তাকে পরীক্ষা করেন, অতঃপর রিযিক্ব সংকুচিত করে দেন, তখন বলে, আমার পালনকর্তা আমাকে হেয় বা অপমান করেছেন’ (সূরা আল-ফযর : ১৫-১৬)।
ছোট কোন অপ্রাপ্তি বা অসুবিধার জন্য আমরা অনেক অভিযোগ করে থাকি, অসন্তুষ্টি প্রকাশ করি। অথচ আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কীভাবে দিনাতিপাত করতেন উম্মাত হিসাবে সেটাও খেয়াল রাখা প্রয়োজন। যেমন নিম্নের হাদীছটি খেয়াল করুন-
عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ نَامَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى حَصِيْرٍ فَقَامَ وَقَدْ أَثَّرَ فِىْ جَنْبِهِ فَقُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَوِ اتَّخَذْنَا لَكَ وِطَاءً. فَقَالَ مَا لِىْ وَمَا لِلدُّنْيَا مَا أَنَا فِى الدُّنْيَا إِلَّا كَرَاكِبٍ اسْتَظَلَّ تَحْتَ شَجَرَةٍ ثُمَّ رَاحَ وَتَرَكَهَا
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন একসময় খেজুর পাতার মাদুরে শুয়ে ছিলেন। তিনি ঘুম হতে জাগ্রত হয়ে দাঁড়ালে দেখা গেল তার গায়ে মাদুরের দাগ পড়ে গেছে। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমরা আপনার জন্য যদি একটি নরম বিছানার (তোষক) ব্যবস্থা করতাম। তিনি বললেন, ‘দুনিয়ার সাথে আমার কী সম্পর্ক? দুনিয়াতে আমি একজন মুসাফির ছাড়া তো আর কিছুই নই, যে একটি গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিল, তারপর তা ছেড়ে দিয়ে গন্তব্যের দিকে চলে গেল’।[৪]
অসুস্থ ব্যক্তির মর্যাদা
অসুস্থ ব্যক্তির যথেষ্ট মর্যাদা রয়েছে। এর অর্থ এটা নয় যে, সুস্থ থাকার চেয়ে অসুস্থ হওয়াই ভাল। কিন্তু না বরং ‘সুস্থতা অনেক বড় নে‘মত’ তা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। তবে আমাদের উদ্দেশ্য- আমরা কোন না কোনভাবে অসুস্থ হয়ই। যখন অসুস্থ হই তখন আমাদের মর্যাদা কেমন হয়, বেড়ে যায় না-কি আগের মতই থাকে। সে বিষয়ে আলোকপাত করার উদ্দেশ্যেই উক্ত শিরোনাম নির্ধারণ করা হয়েছে। কারণ আমরা অনেকেই এ বিষয়ে জানিই না যে, অসুস্থ হলেও মানুষের সম্মান-মর্যাদা বাড়ে বৈ কমে না। কুরআনের আয়াত ও হাদীছ পর্যালোচনা করলে সেটাই বুঝা যায়। হাদীছে এসেছে,
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ (مَنۡ یَّعۡمَلۡ سُوۡٓءًا یُّجۡزَ بِہٖ) شَقَّ ذَلِكَ عَلَى الْمُسْلِمِيْنَ فَشَكَوْا ذَلِكَ إِلَى النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ قَارِبُوْا وَسَدِّدُوْا وَفِىْ كُلِّ مَا يُصِيْبُ الْمُؤْمِنَ كَفَّارَةٌ حَتَّى الشَّوْكَةِ يُشَاكُهَا أَوِ النَّكْبَةِ يُنْكَبُهَا
আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহ তা‘আলার বাণী- مَنۡ یَّعۡمَلۡ سُوۡٓءًا یُّجۡزَ بِہٖ ‘কেউ মন্দ কাজ করলে তার প্রতিফল সে পাবে’ (সূরা আন-নিসা : ১২৩) মর্মে আয়াতটি যখন নাযিল হয়, তখন মুসলিমদের নিকট বিষয়টি খুবই গুরুতর মনে হয়। তাই ছাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এ ব্যাপারে অভিযোগ করেন। তিনি বললেন, ‘তোমরা সত্যের নিকটবর্তী থাক এবং সরল সোজা পথ তালাশ কর। মুমিনের প্রতিটি বিপদ-মুসীবত ও কষ্ট-ক্লেশ, এমনকি তার দেহে কোন কাটা বিদ্ধ হলে বা তার উপর কোন আকষ্মিক বিপদ এলে তার দ্বারাও তার গুনাহের কাফফারা বা ক্ষতিপূরণ হয়ে যায়’।[৫]
আসলে মুমিন ব্যক্তির সবসময়ই কল্যাণ, ভাল-খারাপ বলে কিছু নেই। কারণ মুমিনরা বিশ্বাস করে, যা কিছু হয় সবকিছু মহান আল্লাহর সিদ্ধান্তেই হয়। তাই তারা শুকরিয়া আদায় করে অথবা ছবর করে। তাই দু’টিই কল্যাণকর। হাদীছে এসেছে,
عَنْ صُهَيْبٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَجَبًا لِأَمْرِ الْمُؤْمِنِ إِنَّ أَمْرَهُ كُلَّهُ خَيْرٌ وَلَيْسَ ذَاكَ لِأَحَدٍ إِلَّا لِلْمُؤْمِنِ إِنْ أَصَابَتْهُ سَرَّاءُ شَكَرَ فَكَانَ خَيْرًا لَهُ وَإِنْ أَصَابَتْهُ ضَرَّاءُ صَبَرَ فَكَانَ خَيْرًا لَهُ
ছুহায়ব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘মুমিনের অবস্থা বিষ্ময়কর। সকল কাজই তার জন্য কল্যাণকর। মুমিন ছাড়া অন্য কেউ এ বৈশিষ্ট্য লাভ করতে পারে না। তারা সুখ-শান্তি লাভ করলে শুকরগুজার করে আর অসচ্ছলতা বা দুঃখ-মুসীবাতে আক্রান্ত হলে ছবর করে। প্রত্যেকটাই তার জন্য কল্যাণকর’।[৬] আবূ সাঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ও আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
مَا يُصِيْبُ الْمُسْلِمَ مِنْ نَصَبٍ وَلَا وَصَبٍ وَلَا هَمٍّ وَلَا حُزْنٍ وَلَا أَذًى وَلَا غَمٍّ حَتَّى الشَّوْكَةِ يُشَاكُهَا إِلَّا كَفَّرَ اللهُ بِهَا مِنْ خَطَايَاهُ
‘মুসলিম ব্যক্তির উপর যে কষ্ট-ক্লেশ, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানী আসে, এমনকি যে কাঁটা তার দেহে ফুটে, এ সবের মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন’।[৭]
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেও রোগের জন্য কষ্ট স্বীকার করেছেন। আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, مَا رَأَيْتُ أَحَدًا أَشَدَّ عَلَيْهِ الْوَجَعُ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চেয়ে বেশি রোগ যন্ত্রণা ভোগকারী অন্য কাউকেও দেখিনি’।[৮]
عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا أَتَيْتُ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِىْ مَرَضِهِ وَهْوَ يُوْعَكُ وَعْكًا شَدِيْدًا وَقُلْتُ إِنَّكَ لَتُوْعَكُ وَعْكًا شَدِيْدًا قُلْتُ إِنَّ ذَاكَ بِأَنَّ لَكَ أَجْرَيْنِ قَالَ أَجَلْ مَا مِنْ مُسْلِمٍ يُصِيْبُهُ أَذًى إِلَّا حَاتَّ اللهُ عَنْهُ خَطَايَاهُ كَمَا تَحَاتُّ وَرَقُ الشَّجَرِ
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অসুস্থ অবস্থায় তাঁর কাছে গেলাম। এ সময় তিনি ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আমি বললাম, নিশ্চয় আপনি ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত। আমি এও বললাম যে, এটা এজন্য যে, আপনার জন্য দ্বিগুণ নেকী। তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ। যে কেউ রোগাক্রান্ত হয়, তা থেকে গুনাহসমূহ এভাবে ঝরে যায়, যেভাবে গাছ হতে তার পাতাগুলো ঝরে যায়’।[৯]
‘আত্বা ইবনু আবূ রাবাহ (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) আমাকে বললেন,
أَلَا أُرِيْكَ امْرَأَةً مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ قُلْتُ بَلَى قَالَ هَذِهِ الْمَرْأَةُ السَّوْدَاءُ أَتَتِ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ إِنِّىْ أُصْرَعُ وَإِنِّىْ أَتَكَشَّفُ فَادْعُ اللهَ لِىْ قَالَ إِنْ شِئْتِ صَبَرْتِ وَلَكِ الْجَنَّةُ وَإِنْ شِئْتِ دَعَوْتُ اللهَ أَنْ يُعَافِيَكِ فَقَالَتْ أَصْبِرُ فَقَالَتْ إِنِّىْ أَتَكَشَّفُ فَادْعُ اللهَ أَنْ لَا أَتَكَشَّفَ فَدَعَا لَهَا
‘আমি কি তোমাকে একজন জান্নাতী মহিলা দেখাব না? আমি বললাম, অবশ্যই। তিনি বললেন, এই কালো মহিলাটি, সে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসেছিল। তারপর সে বলল, আমি মৃগী রোগে আক্রান্ত হই এবং এ অবস্থায় আমার লজ্জাস্থান খুলে যায়। সুতরাং আপনি আমার জন্য আল্লাহর কাছে দু‘আ করুন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘তুমি যদি চাও, ধৈর্যধারণ করতে পার। তোমার জন্য আছে জান্নাত। আর তুমি যদি চাও, তাহলে আমি আল্লাহর কাছে দু‘আ করি, আল্লাহ যেন তোমাকে আরোগ্য দান করেন। মহিলা বলল, আমি ধৈর্যধারণ করব। সে বলল, ঐ অবস্থায় আমার লজ্জাস্থান খুলে যায়, কাজেই আল্লাহর নিকট দু‘আ করুন যেন আমার লজ্জাস্থান খুলে না যায়। রাসূলুল্লাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) তাঁর জন্য দু‘আ করলেন’।[১০]
আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, মহান আল্লাহ বলেছেন,إِذَا ابْتَلَيْتُ عَبْدِىْ بِحَبِيبَتَيْهِ فَصَبَرَ عَوَّضْتُهُ مِنْهُمَا الْجَنَّةَ ‘আমি যদি আমার কোন বান্দাকে তার অতি প্রিয় দু’টি বস্তু সম্পর্কে পরীক্ষায় ফেলি, আর সে তাতে ধৈর্য ধরে, তাহলে আমি তাকে সে দু’টির বিনিময়ে জান্নাত দান করব’। আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, দু’টি প্রিয় বস্তু হল সে ব্যক্তির চক্ষুদ্বয়।[১১]
অতএব ধৈর্য ধরতে হবে। ধৈর্য ধরতে পারলে যেমন পুরস্কার নিশ্চিত, বিপরীতে ধৈর্য ধরতে না পারলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুরস্কার বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অত্র হাদীছে অসুখ বা বিপদ আসলে আল্লাহর বিধানের দিকে প্রত্যাবর্তনের আদেশ করা হয়েছে। সাথে পাপী বান্দার গোনাহ মাফেরও শুভ সংবাদ দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ধৈর্য ধরার সময়ই ধৈর্য ধরতে হবে। কেউ মারা গেছে তারপর শোকে শরী‘আতবিরোধী অনেক কিছুই করেছে। ৭দিন পর যদি বলে এখন ধৈর্য ধরলাম, তাহলে সেটাকে আর ধৈর্য বলে না। যখন আঘাত পেলাম ধৈর্য ঠিক তখনই; ব্যথা শেষ হওয়ার পর ছবরকে ছবর বলে না। তার স্পষ্ট দৃষ্টান্ত নিম্নের হাদীছটি-
আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এক মহিলার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে তখন একটি কবরের পাশে কাঁদছিল। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেন, আল্লাহকে ভয় কর এবং ধৈর্যধারণ কর। তখন সে বলল, আমার নিকট হতে সরে যাও। কেননা তুমি আমার বিপদ থেকে মুক্ত। আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে অতিক্রম করে চলে গেলেন। এ সময় অপর লোক তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। সে তাকে জিজ্ঞেস করল, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাকে কী বললেন? মহিলাটি বলল, আমি তো তাঁকে চিনতে পারিনি। লোকটি বলল, ইনিই তো রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। তিনি বললেন, পরে সে মহিলাটি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরজায় এল। তবে দরজায় কোন দারোয়ান দেখতে পেল না। তখন সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আল্লাহর শপথ! আমি আপনাকে চিনতে পারিনি। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, إِنَّ الصَّبْرَ عِنْدَ أَوَّلِ صَدْمَةٍ ‘আঘাতের প্রথম চোটেই ধৈর্যধারণ করতে হয়’।[১২]
আলী ইবনু আবি তালিব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, শরীরের ক্ষেত্রে মাথা যেমন, ঈমানের ক্ষেত্রে ধৈর্য তেমন। মাথা কেটে গেলে যেমন বডি নিথর হয়ে পড়ে থাকে, তেমনি ছবর না থাকলে ঈমানও অকার্যকর হয়ে যায়। তারপর আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, হে লোকসকল! জেনে রাখ, যার ধৈর্য নেই তার ঈমান নেই।[১৩]
আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক যুবকের নিকট গেলেন। তখন সে মুমূর্ষু অবস্থায় ছিল। তিনি বললেন, তোমার কেমন অনুভব হচ্ছে? যুবকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আল্লাহর কসম! আমি মহান আল্লাহর রহমতের আশা করছি। কিন্তু আবার ভয়ও পাচ্ছি আমার গুনাহগুলোর কারণে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘যে বান্দার হৃদয়ে এরকম সময়ে এরূপ দুই বিপরীত জিনিস একত্র হয়, আল্লাহ অবশ্যই তার আকাক্সিক্ষত জিনিস তাকে দান করেন এবং তাকে তার বিপদাশঙ্কা হতে নিরাপদ রাখেন’।[১৪] অন্য হাদীছে আছে- ‘রোগাক্রান্ত ব্যক্তির প্রতিদান দ্বিগুণ। তার গোনাহসমূহ এমনভাবে ঝরে যায়, যেভাবে গাছ থেকে পাতাগুলো ঝরে যায়’।[১৫]
অসুস্থ ব্যক্তি বা বিপদে পতিত ব্যক্তির মর্যাদা ক্বিয়ামতের দিন এমনভাবে বাড়ানো হবে যে, যারা বিপদে পড়েনি তারা এর জন্য আফসোস করতে থাকবে। জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
يَوَدُّ أَهْلُ الْعَافِيَةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حِيْنَ يُعْطَى أَهْلُ الْبَلَاءِ الثَّوَابَ لَوْ أَنَّ جُلُوْدَهُمْ كَانَتْ قُرِضَتْ فِى الدُّنْيَا بِالْمَقَارِيْضِ
‘ক্বিয়ামত দিবসে বিপদে পতিত ধৈর্যধারী মানুষদের যখন প্রতিদান দেয়া হবে, তখন পৃথিবীতে বিপদমুক্ত মানুষেরা আকাঙ্ক্ষা তথা পরিতাপ করবে। হায়! দুনিয়াতে যদি কাঁচি দ্বারা তাদের শরীরের চামড়া কেটে টুকরা টুকরা করে দেয়া হত’।[১৬]
ধৈর্যের সাথে বিপদ-মুছীবত পার করতে পারলে আল্লাহর সাথে গোনাহমুক্ত হয়ে মিলিত হওয়ার সুমহান সুযোগ রয়েছে। আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, مَا يَزَالُ الْبَلَاءُ بِالْمُؤْمِنِ وَالْمُؤْمِنَةِ فِىْ نَفْسِهِ وَوَلَدِهِ وَمَالِهِ حَتَّى يَلْقَى اللهَ وَمَا عَلَيْهِ خَطِيْئَةٌ ‘মুমিন নারী-পুরুষের উপর, তার সন্তানের উপর ও তার ধন-সম্পদের উপর অনবরত বিপদাপদ লেগেই থাকে। সবশেষে মহান আল্লাহর সাথে সে গুনাহমুক্ত অবস্থায় মিলিত হয়’।[১৭]
মানুষের চোখ না থাকা বা অন্ধত্বও একটি অসুখ। তাদের জন্য রয়েছে সীমাহীন পুরস্কার তথা জান্নাত, যদি সে ছবর করে। আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি যদি আমার কোন বান্দাকে তার অতি প্রিয় দু’টি বস্তু সম্পর্কে পরীক্ষায় ফেলি, আর সে তাতে ধৈর্য ধরে, তাহলে আমি তাকে সে দু’টির বিনিময়ে জান্নাত দান করব’। আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, দুটি প্রিয় বস্তু হল সে ব্যক্তির চক্ষুদ্বয়।[১৮]
সুধী পাঠক! উক্ত হাদীছে ছবরের বিষয়টি বেশ গুরুত্বের সাথেই স্পষ্ট হয়েছে। দৃষ্টিহীন মানুষ অনেকেই আছে, কিন্তু দৃষ্টি হারানোর পর কে কীভাবে ধৈর্যধারণ করে তা দেখার বিষয়। সাথে আরেকটি বিষয় যোগ করতে হবে তা হচ্ছে কোন অভিযোগ না করা। বিশেষ করে মানুষ যখন কোন বিপদে পড়ে, তখন যার সাথেই দেখা-সাক্ষাৎ হয় তার কাছেই তার বিপদের কথা উপস্থাপন করতে চায়। অথচ অভিযোগ যা আছে কেবল মহান আল্লাহর কাছেই পেশ করা যেতে পারে; অন্য কারো কাছে নয়। মহান আল্লাহ বলেন, اِنَّمَاۤ اَشۡکُوۡا بَثِّیۡ وَ حُزۡنِیۡۤ اِلَی اللّٰہِ ‘আমি তো আমার দুঃখ ও অস্থিরতা আল্লাহর সমীপেই নিবেদন করছি’ (সূরা ইউসুফ : ৮৬)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ اَیُّوۡبَ اِذۡ نَادٰی رَبَّہٗۤ اَنِّیۡ مَسَّنِیَ الضُّرُّ وَ اَنۡتَ اَرۡحَمُ الرّٰحِمِیۡنَ ‘স্মরণ করুন আইয়ূবের কথা, যখন তিনি তাঁর পালনকর্তাকে আহ্বান করে বলেছিলেন, আমি দুঃখ-কষ্টে পতিত হয়েছি এবং আপনি দয়াবানদের চেয়েও সর্বশ্রেষ্ট দয়াবান’ (সূরা আল-আম্বিয়া : ৮৩)।
জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন উম্মু সায়িব কিংবা উম্মুল মুসাইয়্যাব (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর কাছে গিয়ে বললেন, তোমার কী হয়েছে? হে উম্ম সায়িব! অথবা উম্মুল মুসাইয়্যাব! কাঁদছ কেন? তিনি বললেন, ভীষণ জ্বর, একে আল্লাহ বর্ধিত না করুন। তখন তিনি বললেন, لَا تَسُبِّى الْحُمَّى فَإِنَّهَا تُذْهِبُ خَطَايَا بَنِى آدَمَ كَمَا يُذْهِبُ الْكِيْرُ خَبَثَ الْحَدِيْدِ ‘তুমি জ্বরকে গালমন্দ কর না। কেননা জ্বর আদম সন্তানের পাপরাশী মোচন করে দেয়, যেভাবে হাপর লোহার মরীচিকা দূর করে দেয়’।[১৯]
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
* এম.ফিল গবেষক, আরবী বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
তথ্যসূত্র :
[১]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৪৫; মিশকাত, হা/১৫৩৬।
[২]. তিরমিযী, হা/২৩৯৬; সনদ ছহীহ, ছহীহুল জামে‘, হা/৩০৮।
[৩]. তিরমিযী, হা/২৩৯৮; ইবনু মাজাহ, হা/৪০২৩; মিশকাত, হা/১৫৬২, সনদ ছহীহ।
[৪]. তিরযিমী, হা/২৩৭৭, সনদ ছহীহ।
[৫]. তিরমিযী, হা/৩০৩৮, সনদ ছহীহ।
[৬]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৯৯৯।
[৭]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৪০-৫৬৪১; মিশকাত, হা/১৫৩৭।
[৮]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৪৬।
[৯]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৪৭।
[১০]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৫২।
[১১]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৫৩।
[১২]. ছহীহ বুখারী, হা/৭১৫৪।
[১৩]. ইবনু আবিদ দুনিয়া, আস-সবর ওয়াছ-ছাওয়াব, পৃ. ২৪।
[১৪]. তিরমিযী, হা/৯৮৩, সনদ হাসান।
[১৫]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৪৭।
[১৬]. তিরমিযী, হা/২৪০২; মিশকাত, হা/১৫৭০, সনদ হাসান।
[১৭]. তিরমিযী, হা/২৩৯৯; সনদ হাসান ছহীহ, সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২২৮০।
[১৮]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৫৩।
[১৯]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৭৫; মিশকাত, হা/১৫৪৩।
প্রসঙ্গসমূহ »:
বিবিধ