তাক্বওয়াই মুক্তির সোপান
-আব্দুর রশীদ
(শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, ডাঙ্গীপাড়া, রাজশাহী)।
[পূর্ব প্রকাশিতের পর]
তাক্বওয়া অর্জনের উপায়
১. অন্তরকে কলুষমুক্ত ও পরিশুদ্ধ রাখা।
বাহ্যিক আমল দিয়ে তাক্বওয়া অর্জন করা সম্ভব নয়। বরং তাক্বওয়া অর্জন করতে হলে অন্তরকে সর্বদাই নিষ্কলুষ, পরিশুদ্ধ ও পবিত্র রাখা আবশ্যক। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
أَلَا وَإِنَّ فِي الْجَسَدِ مُضْغَةً إِذَا صَلُحَتْ صَلُحَ الْجَسَدُ كُلُّهُ وَإِذَا فَسَدَتْ فَسَدَ الْجَسَدُ كُلُّهُ أَلَا وَهِيَ الْقَلْبُ.
‘মনে রেখো! মানুষের দেহের ভিতরে একটি গোশতের টুকরা রয়েছে, যা সঠিক থাকলে সমস্ত দেহই সঠিক থাকে। আর সেই অংশের বিকৃতি ঘটলে সম্পূর্ণ দেহেরই বিকৃতি ঘটে। সেই গোশতের টুকরাটি হল অন্তর’। [১] আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হল, মানুষের মধ্যে উত্তম কে? তিনি বললেন, ‘মাখমূমুল কলব’ তথা প্রত্যেক নিষ্কলুষ অন্তর ও ‘ছুদূকুল লিসান’ তথা সত্যভাষী। ছাহাবীগণ বললেন, ‘ছুদূকুল লিসান’ তো আমরা বুঝি, তবে ‘মাখমূমুল কলব’ কী? তিনি বললেন, নির্মল ও পবিত্র অন্তর, যা পাপ করেনি, যুলুম করেনি এবং যা হিংসা-বিদ্বেষ হতে মুক্ত।[২]
২. নিয়মিত ছালাত আদায় করা।
ছালাত মানবজীবনের সবচেয়ে বড় ইবাদত। ক্বিয়ামতের মাঠে আল্লাহর নিকটে যার হিসাব না দিয়ে কেউ এক পাও অগ্রসর হতে পারবে না। বস্তুত এই ছালাত মানুষকে তার যাবতীয় অন্যায় ও অশ্লীলতাপূর্ণ কার্যাবলী হতে বিরত রাখে। আর যাবতীয় অন্যায় ও অশ্লীলতাপূর্ণ কাজ থেকে যখন কেউ বিরত থাকতে সক্ষম হবে, তখনই তার তাক্বওয়া বেড়ে যাবে। ঐ দিকে ইঙ্গিত করেই মহান আল্লাহ বলেন,
وَ اَقِمِ الصَّلٰوۃَ اِنَّ الصَّلٰوۃَ تَنۡہٰی عَنِ الۡفَحۡشَآءِ وَ الۡمُنۡکَرِ.
‘ছালাত প্রতিষ্ঠা কর; নিশ্চয়ই ছালাত সকল অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে (সূরা আল-‘আনকাবূত : ৪৫)।
৩. ছিয়াম পালন করা।
মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদেরকে তাক্বওয়াশীল বা মুত্তাক্বী করে গড়ে তোলার জন্যই ছিয়ামের বিধান নাযিল করেছেন (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৮৩)। ছিয়াম মানুষের জন্য ঢাল স্বরূপ। যা তাকে পাপের পথ থেকে বিরত রাখে এবং নেকী ও জান্নাতের পথে ধাবিত করে। আর এটাই হচ্ছে তাক্বওয়ার নিদর্শন। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
وَالصِّيَامُ جُنَّةٌ وَإِذَا كَانَ يَوْمُ صَوْمِ أَحَدِكُمْ فَلَا يَرْفُثْ وَلَا يَصْخَبْ فَإنْ سَابَّهُ أَحَدٌ أَوْ قَاتَلَهُ فَلْيَقُلْ إِنِّي امْرُؤٌ صَائِم.
‘ছিয়াম হচ্ছে ছিয়ামপালনকারীর পাপাচার থেকে ঢালস্বরূপ। সুতরাং যখন তোমাদের কারো ছিয়াম পালনের দিন আসে সে যেন অশ্লীল কথা না বলে এবং অনর্থক শোরগোল না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সাথে ঝগড়া করতে চায় সে যেন বলে, আমি একজন ছায়েম’।[৩]
৪. আত্মসমালোচনা করা ও আত্মসংযমী হওয়া।
মানুষ প্রবৃত্তির তাড়নায় বিভোর হয়ে পরসমালোচনায় লিপ্ত হয়। এতে সে যেমন পাপের অংশীদার হয় তেমনি তার অন্তরটাও মরে যায়। ফলে যে কোন ধরনের অন্যায় করতে সে দ্বিধা করে না। অথচ যদি সে আত্মসংযমী হয়ে নিজের পাপ ও মন্দ কাজগুলো হতে বিরত থাকতো এবং সে ব্যাপারে সমালোচনা করত, তাহলে এই আত্মসমালোচনাই তাকে তাক্বওয়াশীল করে তুলতে সহায়তা করত। কেননা তাক্বওয়ার মূল ভিত্তি হল আত্মসমালোচনা। হারিছ ইবনু আসাদ আল-মুহাসিবী বলেন, أَصْلُ التَّقْوَى مُحَاسَبَةُ النَّفْسِ ‘তাক্বওয়ার মূল হচ্ছে আত্মসমালোচনা’।[৪]
৫. বেশী বেশী দান-ছাদাক্বাহ করা।
তাক্বওয়া অর্জনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হল দান-ছাদাক্বাহ করা। বেশী বেশী দান-ছাদাক্বাহ করলে অন্তরে যেমন প্রশান্তি পাওয়া যায়, তেমনি অন্যের প্রতি সহযোগী, সহানুভূতি ও সহমর্মীতা প্রকাশ পায়। আর এটাই তাক্বওয়া অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। ‘আত্বা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,لَنْ تَنَالُوْا شَرَفَ الدِّيْنِ وَالتَّقْوَى حَتَّى تَتَصَدَّقُوْا ‘তোমরা কখনো দ্বীনদারী ও তাক্বওয়ার মর্যাদা লাভ করতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমরা ছাদাক্বাহ করবে।[৫] মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা যা ভালবাস, তা হতে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনই কল্যাণ লাভ করতে পারবে না এবং তোমরা যা কিছুই ব্যয় কর, আল্লাহ তা জ্ঞাত আছেন’ (সূরা আলে ইমরান : ৯২)। আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! উত্তম ছাদাক্বাহ কোনটি? তিনি বলেন, সুস্থ এবং সম্পদের প্রতি অনুরাগ থাকা অবস্থায় দান করা, যখন তোমার ধনী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা থাকে এবং তুমি দারিদ্রতার আশংকা কর, আর তুমি এভাবে অপেক্ষায় থাকবে না যে, যখন তোমার প্রাণ কণ্ঠাগত হবে, তখন তুমি বলবে, অমুকের জন্য এতটুকু, অমুকের জন্য এতটুকু অথচ তা অমুকের জন্য হয়ে গেছে।[৬]
৬. দ্বীনি আলোচনা শ্রবণ করা।
দ্বীনি আলোচনা শ্রবণ তাক্বওয়ার অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এর মাধ্যমে মানুষের অন্তরে তাক্বওয়া বা ঈমান বৃদ্ধি পায়। মহান আল্লাহ বলেন, اِنَّمَا الۡمُؤۡمِنُوۡنَ الَّذِیۡنَ اِذَا ذُکِرَ اللّٰہُ وَجِلَتۡ قُلُوۡبُہُمۡ وَ اِذَا تُلِیَتۡ عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتُہٗ زَادَتۡہُمۡ اِیۡمَانًا ‘মুমিন তারাই, যখন (তাদের সামনে) আল্লাহকে স্মরণ করা হয়, তখন তাদের অন্তরসমূহ ভীত হয়ে পড়ে, আর যখন তাদের সামনে তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন সেই আয়াতসমূহ তাদের ঈমানকে আরও বৃদ্ধি করে দেয়’ (সূরা আল-আনফাল : ২)।
৭. দ্বীনি জ্ঞান অর্জন করা।
তাক্বওয়ার অর্জনের ক্ষেত্রে দ্বীনি জ্ঞান এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা দ্বীনি ইলমের অধিকারীগণ শরী‘আতের বিধি-বিধান সম্পর্কে ব্যাপক জ্ঞান রাখে এবং সে জ্ঞানানুপাতেই আল্লাহকে ভয় করে ও যাবতীয় সৎকার্য সম্পাদন করে। অন্যথা সে সীমালঙ্ঘনকারীতে পরিণত হয়। মহান আল্লাহ বলেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা যা করনা তা বল কেন? (সূরা আছ-ছফ্ফ : ২)।
৮. হালাল রূযী ভক্ষণ করা।
রূযী হালাল না হলে কোন ইবাদত আল্লাহর নিকট কবুল হবে না। আর ইবাদত কবুল না হলে তার পরিণাম জাহান্নাম। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا ‘নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র ছাড়া গ্রহণ করেন না’।[৭] তিনি আরোও বলেন, لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ جَسَدٌ غُذِّيَ بِالْحَرَامِ ‘যে দেহ হারাম দ্বারা প্রতিপালিত, তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না’।[৮] অপর হাদীছে তিনি বলেন, ‘হালাল এবং হারাম সুুস্পষ্ট, আর উভয়ের মধ্যে অনেক সন্দেহজনক বিষয় রয়েছে। সে সম্পর্কে অনেকেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। অতএব যে ব্যক্তি সন্দেহজনক বস্তুকে পরিহার করে চলবে, তার দ্বীন এবং সম্মান পবিত্র থাকবে। পক্ষান্তরে যে সন্দেহজনক কাজে লিপ্ত হবে, সে হারামে লিপ্ত হয়ে পড়বে। যেমন যে রাখাল তার পশুপালকে নিষিদ্ধ এলাকার সীমার ধারে চরাবে, খুব সম্ভব তার পশু নিষিদ্ধ এলাকার ভিতরেও মুখ ঢুকিয়ে দিবে। সাবধান! প্রত্যেক বাদশাই নিজ পশুপালের চারণভূমি বানিয়ে রাখেন। অনুরূপ আল্লাহ তা‘আলার চারণভূমি তাঁর হারাম বস্তুসমূহকে নির্ধারণ করে রেখেছেন। মনে রেখো! মানুষের দেহের ভিতরে একটি গোশতের টুকরা রয়েছে, যা সঠিক থাকলে সমস্ত দেহই সঠিক থাকে। আর সেই অংশের বিকৃতি ঘটলে সম্পূর্ণ দেহেরই বিকৃতি ঘটে। সেই গোশতের টুকরাটি হল অন্তর’।[৯] সুতরাং জাহান্নাম থেকে বাঁচার ভয়ে মানুষ হারাম থেকে বেঁচে থাকার মাধ্যমে তাক্বওয়া অর্জন করতে পারে।
৯. মহান আল্লাহ ও তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।
মহান আল্লাহর প্রতি ও তাক্বদীরের ভালো-মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করার মাধ্যমে তাক্বওয়া অর্জন করা যায়। ‘আত্বা ইবনু আবী রাবাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ওয়ালীদ ইবনু উবাদাহ ইবনু ছামিত (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে জিজ্ঞেস করলাম, মৃত্যুকালে তোমার প্রতি তোমার পিতার উপদেশ কেমন ছিল? তিনি বলেন, তিনি আমাকে ডেকে বললেন, ‘হে বৎস! আল্লাহকে ভয় কর। আর জেনে রাখো, নিশ্চয় তুমি ততক্ষণ তাক্বওয়া অর্জন করতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা ও তাক্বদীরের ভাল-মন্দের প্রতি ঈমান না আনবে’।[১০]
১০. দু‘আ করা ও শয়তানী ওয়াসওয়াসা থেকে পরিত্রাণ চাওয়া।
মহান আল্লাহর নিকট বেশী বেশী দু‘আ করার মাধ্যমে তাক্বওয়া অর্জন করা যায়। যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু‘আ করতেন ও বলতেন, اَللّٰهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنَى ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকটে সুপথের নির্দেশনা, পরহেযগারিতা, পবিত্রতা ও সচ্ছলতা প্রার্থনা করছি’।[১১] তাছাড়া সূরা নাস, ফালাক্ব, ইখলাছ, আয়াতুল কুরসী ও সূরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত পড়ে শয়তানী ওয়াস্ওয়াসা থেকে পরিত্রাণ চাওয়া যায় এবং এর মাধ্যমে তাক্বওয়া অর্জন করা যায়। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, প্রত্যেক ফরয ছালাত শেষে আয়াতুল কুরসী পাঠকারীর জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য আর কোন বাধা থাকে না মৃত্যু ব্যতীত’।[১২] শয়নকালে পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত তার হেফাযতের জন্য একজন ফেরেশতা পাহারায় নিয্ক্তু থাকে। যাতে শয়তান তার নিকটবর্তী হতে না পারে।[১৩]
তাক্বওয়ার ফলাফল
তাক্বওয়ার ফলাফলকে আমরা দুই ভাগে বিভক্ত করতে পারি। তাহল (১) পার্থিব ফলাফল (২) পরকালীন ফলাফল। নিম্নে আমরা ফলাফল দু’টির পৃথক পৃথক আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।
(১) পার্থিব ফলাফল
(ক) আল্লাহর নিকট সর্বাধিক সম্মাানিত হওয়া।
তাক্বওয়া অবলম্বন করলে মহান আল্লাহর নিকট সর্বাধিক সম্মানিত হওয়া যায়। তার ভালবাসা অর্জন করা যায়। কেননা মহান আল্লাহর বাণী, اِنَّ اَکۡرَمَکُمۡ عِنۡدَ اللّٰہِ اَتۡقٰکُمۡ ‘নিশ্চয় আল্লাহর নিকট তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক সম্মানিত যে ব্যক্তি তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরহেযগার’ (সূরা আল-হুজুরাত : ১৩)। অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰہَ مَعَ الۡمُتَّقِیۡنَ ‘জেনে রাখ! নিশ্চয় আল্লাহ তাক্বওয়াশীল মানুষের সাথেই থাকেন’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৯৪)। তিনি আরো বলেন, فَاِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ الۡمُتَّقِیۡنَ ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাক্বওয়াশীল মানুষকে ভালবাসেন’ (আলে ‘ইমরান : ৭৬) । রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
إِنَّ أَنْسَابَكُمْ هَذِهِ لَيْسَتْ بِمَسَبَّةٍ عَلَى أَحَدٍ كُلُّكُمْ بَنُوْ آدَمَ طَفُّ الصَّاعِ لَمْ تَمْلَؤُهُ لَيْسَ لِأَحَدٍ عَلَى أَحَدٍ فَضْلٌ إِلَّا بِدِيْنٍ أَوْ تَقْوَى.
‘তোমাদের বংশ পরিচয় এমন কোন বস্তু নয় যে, তার কারণে তোমরা অন্যকে গালমন্দ করবে। তোমরা সকলেই এক আদম সন্তান। দাঁড়িপাল্লার উভয় দিক যেমন সমান থাকে, যাকে তোমরা পূর্ণ করনি। দ্বীন ও তাক্বওয়া বা আল্লাহভীরুতা ছাড়া তোমাদের একজনের উপর অপর জনের কোন মর্যাদা নেই’।[১৪] অন্যত্র রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
يَا أَيُّهَا النَّاسُ أَلَا إِنَّ رَبَّكُمْ وَاحِدٌ وَإِنَّ أَبَاكُمْ وَاحِدٌ أَلَا لَا فَضْلَ لِعَرَبِىٍّ عَلَى أَعْجَمِىٍّ وَلَا لِعَجَمِىٍّ عَلَى عَرَبِىٍّ وَلَا لِأَحْمَرَ عَلَى أَسْوَدَ وَلَا أَسْوَدَ عَلَى أَحْمَرَ إِلَّا بِالتَّقْوَى إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللهِ أَتْقَاكُمْ.
‘হে মানুষ! নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক একজন, তোমাদের পিতা একজন, মনে রেখ! আরবীর কোন মর্যাদা নেই আজমীর উপর। লাল রংয়ের লোকের কোন সম্মান নেই কালো রংয়ের উপর এবং কালো রংয়ের লোকের কোন সম্মান নেই লাল রংয়ের উপর। তবে তাক্বওয়া হচ্ছে মর্যাদার মাধ্যম। নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে মর্যাদার অধিকারী সেই, যে আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বেশি তাক্বওয়াশীল’।[১৫]
(খ) রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ভালবাসা অর্জন
তাক্বওয়া অবলম্বন করলে প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট প্রিয়পাত্র হওয়া যায় এবং তাঁর ভালবাসা অর্জন করা যায়। কেননা তিনি বলেছেন, إِنَّ أَوْلَى النَّاسِ بِيَ الْمُتَّقُوْنَ مَنْ كَانُوْا وَحَيْثُ كَانُوْا ‘নিশ্চয় ঐ সমস্তু লোকেরাই আমার নিকটতম, যারা আল্লাহভীরু, পরহেযগার। চাই তারা যে কেউই হোক এবং যে কোথাও থাকুক না কেন?’[১৬]
(গ) সত্য-মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য নিরূপণের সূক্ষ্ম জ্ঞান অর্জন।
পার্থিব জীবনে চলার পথে নানাবিধ সমস্যা, প্রতিকূল পরিস্থিতি, বিচার-সালিশের শরণাপন্ন হতে হয়। মহান আল্লাহ এসকল প্রতিকূল পরিস্থিতে তাক্বওয়াশীলদেরকে ন্যায় ও অন্যায়, হক্ব ও বাতিল এবং সত্য ও মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য নিরূপণের সূক্ষ্ম জ্ঞান দান করে থাকেন। তিনি বলেন,
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنۡ تَتَّقُوا اللّٰہَ یَجۡعَلۡ لَّکُمۡ فُرۡقَانًا.
‘হে মুমিনগণ! তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় কর তবে তিনি তোমাদের ভাল-মন্দের মধ্যে পার্থক্য করার মানদ- দান করবেন’ (সূরা আল-আনফাল : ২৯)।
(ঘ) সহজভাবে পার্থিব কাজের সমাধা।
তাক্বওয়াশীলদের সম্মুখে আপতিত দুর্লভ ও কষ্টসাধ্য কার্যাবলীকে আল্লাহ তা‘আলা সহজ করে দেন। কেননা তিনি নিজেই গায়েবী মদদে তাদেরকে সহযোগিতা করে থাকেন। যেমন, তিনি বলেন, ‘জেনে রাখ! নিশ্চয় আল্লাহ তাক্বওয়াশীল মানুষের সাথে সাথে থাকেন’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৯৪)। অন্যত্র আল্লাহ বলেন, وَ مَنۡ یَّتَّقِ اللّٰہَ یَجۡعَلۡ لَّہٗ مِنۡ اَمۡرِہٖ یُسۡرًا ‘যে লোক আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহ তার কাজ সহজ করে দেন’ (সূরা আত-ত্বালাক্ব : ৪ )।
(ঙ) আসমান-যমীনের বরকত লাভ।
তাক্বওয়া অবলম্বন করলে আসমান-যমীনের যাবতীয় কল্যাণ বান্দা লাভ করে। মহান আল্লাহ বলেন, لَوۡ اَنَّ اَہۡلَ الۡقُرٰۤی اٰمَنُوۡا وَ اتَّقَوۡا لَفَتَحۡنَا عَلَیۡہِمۡ بَرَکٰتٍ مِّنَ السَّمَآءِ وَ الۡاَرۡضِ ‘জনপদের অধিবাসীগণ যদি ঈমান আনত এবং তাক্বওয়া অবলম্বন করত, তবে আমি তাদের জন্য আকাশ ও পৃথিবীর বরকতের দ্বার খুলে দিতাম’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ৯৬)।
(চ) আল্লাহর পক্ষ থেকে রিযিক্ব লাভ।
যারা তাক্বওয়া অবলম্বন করে চলেন আল্লাহ তাদের সকল সমস্যা দূর করে দেন এবং তাদেরকে কল্পনাতীত রিযিক্ব দান করে থাকেন। তিনি বলেন,
وَمَنۡ یَّتَّقِ اللّٰہَ یَجۡعَلۡ لَّہٗ مَخۡرَجًا- وَّ یَرۡزُقۡہُ مِنۡ حَیۡثُ لَا یَحۡتَسِبُ.
‘যে কেউ আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার পথ সৃষ্টি করে দিবেন এবং তাকে তার ধারণাতীত উৎস হতে দান করবেন রিযিক্ব (সূরা আত-ত্বালাক্ব : ২-৩)।
(ছ) শত্রুদের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা।
মহান আল্লাহ তাক্বওয়াশীল মানুষদেরকে সকল প্রতিকূলতা ও শত্রুদের কূটকৌশল, চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করেন। তিনি বলেন,
اِنۡ تَمۡسَسۡکُمۡ حَسَنَۃٌ تَسُؤۡہُمۡ وَ اِنۡ تُصِبۡکُمۡ سَیِّئَۃٌ یَّفۡرَحُوۡا بِہَا وَ اِنۡ تَصۡبِرُوۡا وَ تَتَّقُوۡا لَا یَضُرُّکُمۡ کَیۡدُہُمۡ شَیۡـًٔا اِنَّ اللّٰہَ بِمَا یَعۡمَلُوۡنَ مُحِیۡطٌ.
‘যদি তোমাদেরকে কোন কল্যাণ স্পর্শ করে তবে তারা অসন্তুষ্ট হয়; আর যদি তোমাদের অমঙ্গল উপস্থিত হয়, তবে তারা আনন্দিত হয়ে থাকে। তোমরা যদি ধৈর্যধারণ কর ও তাক্বওয়াশীল হও, তবে তাদের চক্রান্ত তোমাদের কোনই ক্ষতি করতে পারবে না; তারা যা করে নিশ্চয় আল্লাহ তার পরিবেষ্টনকারী’ (সূরা আলে ‘ইমরান : ১২০)।
পরকালীন ফলাফল
(ক) পাপ ক্ষমা করা হয় ও পুণ্য দান করা হয়
মহান আল্লাহ তাক্বওয়া অবলম্বনকারী মুমিন বান্দাদের পাপ সমূহ ক্ষমা করে দেন এবং তাদেরকে অশেষ পুণ্য দান করেন। তিনি বলেন,
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنۡ تَتَّقُوا اللّٰہَ یَجۡعَلۡ لَّکُمۡ فُرۡقَانًا وَّ یُکَفِّرۡ عَنۡکُمۡ سَیِّاٰتِکُمۡ وَ یَغۡفِرۡ لَکُمۡ وَ اللّٰہُ ذُو الۡفَضۡلِ الۡعَظِیۡمِ.
‘হে মুমিনগণ! তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় কর তবে তিনি তোমাদের ভাল-মন্দের মধ্যে পার্থক্য করার মানদ- দান করবেন। আর তোমাদের পাপ মিটিয়ে দিবেন এবং তোমাদের ক্ষমা করে দিবেন, কারণ আল্লাহ বড় অনুগ্রহশীল’ (সূরা আল-আনফাল : ২৯)। তিনি আরা বলেন,
وَمَنۡ یَّتَّقِ اللّٰہَ یُکَفِّرۡ عَنۡہُ سَیِّاٰتِہٖ وَ یُعۡظِمۡ لَہٗۤ اَجۡرًا.
‘যে লোক পরহেযগারিতা অবলম্বন করে আল্লাহ তার পাপ মিটিযে দেন এবং তাকে বড় প্রতিদান দান করেন’ (সূরা আত-ত্বালাক্ব : ৫)।
(খ) ক্বিয়ামতের দিন উন্নত মর্যাদা লাভ।
ক্বিয়ামতের দিন হাশরের ময়দানে উপস্থিত সকলের চেয়ে তাক্বওয়াশীলরাই সর্বাধিক মর্যাদার অধিকারী হবেন। মহান আল্লাহ বলেন, زُیِّنَ لِلَّذِیۡنَ کَفَرُوا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَا وَ یَسۡخَرُوۡنَ مِنَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ الَّذِیۡنَ اتَّقَوۡا فَوۡقَہُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ‘যারা অবিশ্বাস করেছে, তাদের জন্য পার্থিব জীবনকে সুশোভিত করা হয়েছে। তারা বিশ্বাস স্থাপনকারীদেরকে উপহাস করে থাকে; অথচ ক্বিয়ামতের দিন তাক্বওয়াশীলদেরকে সমুন্নত করা হবে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২১২)।
(গ) জান্নাত লাভ।
তাক্বওয়াশীলদেরকে আল্লাহ তা‘আলা জান্নাত দান করবেন। মহান আল্লাহ বলেন, تِلْكَ الۡجَنَّۃُ الَّتِیۡ نُوۡرِثُ مِنۡ عِبَادِنَا مَنۡ کَانَ تَقِیًّا ‘এই সেই জান্নাত, যার অধিকারী করব আমাদের বান্দাদের মধ্যে মুত্তাক্বীদেরকে’ (সূরা মারিয়াম : ৬৩)। তাছাড়া যাদেরকে আল্লাহ ভালবাসেন, আর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করেন, তাদের স্থান জান্নাত। আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
سُئِلَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ عَنْ أَكْثَرِ مَا يُدْخِلُ النَّاسَ الْجَنَّةَ فَقَالَ تَقْوَى اللهِ وَحُسْنُ الْخُلُقِ وَسُئِلَ عَنْ أَكْثَرِ مَا يُدْخِلُ النَّاسَ النَّارَ فَقَالَ الْفَمُ وَالْفَرْجُ.
‘তোমরা কি জান কোন্ জিনিস মানুষকে সবচেয়ে বেশি জান্নাতে প্রবেশ করায়? তা হচ্ছে তাক্বওয়া ও উত্তম চরিত্র। তোমরা কি জান কোন্ জিনিস মানুষকে সবচেয়ে বেশি জাহান্নামে প্রবেশ করায়? তাহল, মুখম-ল অপরটি লজ্জাস্থান’।[১৭] মহান আল্লাহ আরো বলেন, وَ لِمَنۡ خَافَ مَقَامَ رَبِّہٖ جَنَّتٰنِ ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ্র সামনে দাঁড়াতে ভয় করে তার জন্য রয়েছে দু’টি জান্নাত’ (সূরা আর-রহমান : ৪৬)।
পার্থিব জীবনে তাক্বওয়াশীলরা পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাক না কেন পরকালীন জীবনে তারা সকলেই দলে দলে জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করবে। কোন সময়ই তারা সেখান থেকে বিচ্যুত হবে না। মহান আল্লাহ বলেন,
وَ سِیۡقَ الَّذِیۡنَ اتَّقَوۡا رَبَّہُمۡ اِلَی الۡجَنَّۃِ زُمَرًا حَتّٰۤی اِذَا جَآءُوۡہَا وَ فُتِحَتۡ اَبۡوَابُہَا وَ قَالَ لَہُمۡ خَزَنَتُہَا سَلٰمٌ عَلَیۡکُمۡ طِبۡتُمۡ فَادۡخُلُوۡہَا خٰلِدِیۡنَ.
‘যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করত তাদেরকে দলে দলে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। যখন তারা জান্নাতের নিকট উপস্থিত হবে ও এর দ্বারসমূহ খুলে দেয়া হবে এবং জান্নাতের রক্ষীরা তাদেরকে বলবে, তোমাদের প্রতি ‘সালাম’ তোমরা সুখী হও এবং জান্নাতে প্রবেশ কর স্থায়ীভাবে অবস্থানের জন্য’ (সূরা আয-যুমার : ৭৩)।
(ঘ) জান্নাতের সর্বোত্তম সফলতা ও নে‘আমত লাভ।
পবিত্র কুরআনের একাধিক আয়াত থেকে প্রমাণিত হয় যে, তাক্বওয়াশীলরা জান্নাতের সর্বোচ্চ স্তর ও সর্বোত্তম নে‘মত লাভ করবে। মহান আল্লাহ বলেন,
اِنَّ لِلۡمُتَّقِیۡنَ مَفَازًا- حَدَآئِقَ وَ اَعۡنَابًا- وَّکَوَاعِبَ اَتۡرَابًا – وَّ کَاۡسًا دِہَاقًا- لَا یَسۡمَعُوۡنَ فِیۡہَا لَغۡوًا وَّ لَا کِذّٰبًا – جَزَآءً مِّنۡ رَّبِّکَ عَطَآءً حِسَابًا.
‘নিশ্চয় মুত্তাক্বীদের জন্য রয়েছে সফলতা; (সুশোভিত) বাগানসমূহ ও নানাবিধ আঙ্গুর; সমবয়স্কা নব্য কুমারীবৃন্দ এবং পরিপূর্ণ পানপাত্র। সেখানে তারা অসার ও মিথ্যা বাক্য শুনবে না; এটা তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যথেষ্ট পুরস্কার ও অনুগ্রহের প্রতিদান’ (সূরা আন-নাবা : ৩১-৩৬)। মহান আল্লাহ বলেন, ہٰذَا ذِکۡرٌ وَ اِنَّ لِلۡمُتَّقِیۡنَ لَحُسۡنَ مَاٰبٍ ‘এটা এক স্মরণীয় বর্ণনা, মুত্তাক্বীদের জন্য রয়েছে উত্তম আবাস’ (সূরা ছোয়াদ : ৪৯)। তিনি অন্যত্র বলেন,
اِنَّ الۡمُتَّقِیۡنَ فِیۡ جَنّٰتٍ وَّ نَہَرٍ – فِیۡ مَقۡعَدِ صِدۡقٍ عِنۡدَ مَلِیۡکٍ مُّقۡتَدِرٍ.
‘মুত্তাক্বীরা থাকবে স্রোতস্বিনী বিধৌত জান্নাতে। যোগ্য আসনে, সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহর সান্নিধ্যে’ (সূরা আল-ক্বামার ; ৫৪-৫৫)।
উপসংহার
তাক্বওয়া মানবজীবনের একমাত্র ও অতীব গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এর ফলাফল অপরিসীম। যারা তাক্বওয়া অবলম্বন করবে তারা পার্থিব জীবনে যেমন সফলতা লাভ করবে, তেমনি পরকালীন জীবনেও মুক্তি লাভ করবে। মহান আল্লাহ আমাদের তাক্বওয়াশীল হওয়ার তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!!
* শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, ডাঙ্গীপাড়া, রাজশাহী।
[১] ছহীহ বুখারী, হা/৫২; ছহীহ মুসলিম, হা/১৫৯৯; মিশকাত, হা/২৭৬২।
[২] ইবনু মাজাহ, হা/৪২১৬; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৬৬০৪; মিশকাত, হা/৫২২১।
[৩] ছহীহ বুখারী, হা/১৯০৪; ছহীহ মুসলিম, হা/১১৫১।
[৪] মুহাসাবাতুন নাফস, পৃ. ২৫-২৬; গৃহীত : ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম, তাক্বওয়া (আল্লাহভীতি), পৃ. ৪৬।
[৫] তাফসীরে কুরতুবী, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১৩৩।
[৬] ছহীহ বুখারী, হা/২৭৪৮; ছহীহ মুসলিম, হা/১০৩২; মিশকাত, হা/১৮৬৭।
[৭] ছহীহ মুসলিম, হা/১০১৫; মিশকাত, হা/২৭৬০।
[৮] আল-মু‘জামুল আওসাত্ব, হা/৫৯৬১; মিশকাত, হা/২৭৮৭।
[৯] ছহীহ বুখারী, হা/৫২; ছহীহ মুসলিম, হা/১৫৯৯; মিশকাত, হা/২৭৬২।
[১০] তিরমিযী, হা/২১৫৫।
[১১] ছহীহ মুসলিম, হা/২৭২১; মিশকাত, হা/২৪৮৪।
[১২] নাসাঈ, আল-কুবরা, হা/৯৯২৮; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/৯৭২।
[১৩] ছহীহ বুখারী, হা/২৩১১; ছহীহ মুসলিম, হা/২৭১০; মিশকাত, হা/২১২২-২৩।
[১৪] মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭৯০৯; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৫১৪৬; মিশকাত, হা/৪৯১০।
[১৫] সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২৭০০।
[১৬] মুসনাদে আহমাদ, হা/২২১০৫; মিশকাত হা/৫২২৭।
[১৭] তিরমিযী, হা/২০০৪; মিশকাত, হা/৪৮৩২, সনদ হাসান।
প্রসঙ্গসমূহ »:
আত্মশুদ্ধি