মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৪:২৯ অপরাহ্ন

মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ 

-আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম* 


(১৯তম কিস্তি) 

[ফেব্রুয়ারী’২৩-এর পর] 

আক্বীদা-৫ : ওয়াহদাতুল ওজূদে বিশ্বাসী

দেওবন্দীদের বড় বড় আলেমদের অন্যতম আক্বীদা হল, তারা ‘ওয়াহদাতুল ওজূদে’ বিশ্বাসী। দেওবন্দী মতবাদের আধ্যাত্মিক নেতা ও শায়খ ইমদাদুল্লাহ মুহাজির মাক্কী বলেন, القول بوحدة الوجود حق وصواب ‘ওয়াহদাতুল ওজূদ সঠিক ও সত্য’।[১] সবকিছুর মাঝে আল্লাহর উপস্থিতিকে ‘ওয়াহদাতুল ওজূদ’[২] বলে। তাই মানুষ তো বটেই, পৃথিবীর সবকিছুই এক আল্লাহর অংশ (নাঊযুবিল্লাহ)। ফলে সবই আল্লাহ।[৩] এ মতবাদের প্রবক্তা হলেন ‘শায়খ মুহীউদ্দীন ইবনু আরাবী’। তার এমন বিশ্বাস ও মতামতের ব্যাখ্যা ও বর্ণনার প্রয়োজন নেই। কারণ তিনি নিজেই বলেছেন,أَنَّ الْوُجُوْدَ الْمَخْلُوْقَ هُوَ الْوُجُوْدُ الْخَالِقُ ‘সৃষ্টির অস্তিত্বই হল স্রষ্টার অস্তিত্ব’।[৪]

পর্যালোচনা

সুধী পাঠক! মহান আল্লাহর সাথে এটা কত বড় ধৃষ্টতা, তা কি ভেবে দেখেছেন? একশ্রেণীর আলেমও এই কুফুরী মতবাদে বিশ্বাসী। তারা আবদ আর মা‘বূদের পার্থক্য বুঝে না। তারা মুসলিম হয়ে হিন্দুদের ন্যায় এমন বিশ্বাস লালন করে। কারণ হিন্দুরাও এই আক্বীদা পোষণ করে থাকে। তারা সর্বেশ্বরবাদ বা সবকিছুকেই ইশ্বর মনে করে থাকে। অথচ সৃষ্টির উপরে থাকা মহান আল্লাহর সত্তাগত ও কর্মগত বৈশিষ্ট্য। মহান আল্লাহ কুরআনে সাতটি স্থানে ‘আল্লাহ ‘আরশের উপর উঠেছেন’[৫] হওয়ার কথা ব্যক্ত করেছেন। মহান আল্লাহ নিজ পরিচয় তুলে ধরতে গিয়ে তাঁর এ গুণটির কথা বার বার বলেছেন। স্পষ্টভাবে আসা এ গুণটিকে যারা অস্বীকার করে বা অপব্যাখ্যা করে, তারা আসলে আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে কিনা এ ব্যাপারে একজন ঈমানদারের মনে সন্দেহ হওয়া স্বাভাবিক। তাছাড়া আল্লাহর রয়েছে অনেক নাম ও গুণাবলী। দলীল দ্বারা প্রমাণিত হওয়ায় কারো সুযোগ নেই তা প্রত্যাখ্যান করা। দলীল দ্বারা প্রমাণিত হওয়ার পরে কেউ তার বিরোধিতা করলে সে কাফির। আর দলীল দ্বারা প্রমাণিত হওয়ার পূর্বে করলে অজ্ঞতার ওজর রয়েছে। কেননা নাম ও গুণাবলীর জ্ঞান বিবেক-বুদ্ধি, দর্শন ও চিন্তা-ভাবনা দ্বারা অর্জন হয় না। আমরা এসব গুণাবলী সাব্যস্ত করি এবং তাঁর থেকে সাদৃশ্যকে অস্বীকার করি, যেমনিভাবে আল্লাহ নিজের থেকে অস্বীকার করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাঁর মত কোন কিছুই নেই, তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা’।[৬]

ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘জাহমিয়্যারা আল্লাহর ‘আরশের উপরে থাকাকে অস্বীকার করে। আমি তাদেরকে বললাম, তোমরা আল্লাহর ‘আরশের উপরে থাকাকে অস্বীকার করো। অথচ মহান আল্লাহ বলেন, ‘পরম করুণাময় ‘আরশের উপর উঠেছেন’। তারা বলল, আল্লাহ সাত যমীনের নিচে যেমনটি তিনি ‘আরশের উপরে, আসমানে, যমীনে। আমরা বললাম, মুসলিমরা এমন অনেক স্থান জানে যেখানে রবের মহত্ত্বের কিছুই নেই। তোমাদের দেহে, তোমাদের ভিতরে, পায়খানায় ও খারাপ স্থানে আল্লাহর মহত্ত্বের কিছুই নেই। আল্লাহ আমাদের জানিয়েছেন, তিনি আসমানের উপরে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের সহ যমীন ধসিয়ে দেয়া থেকে কি তোমরা নিরাপদ হয়ে গেছ, অতঃপর আকস্মিকভাবে তা থর থর করে কাঁপতে থাকবে? যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের উপর পাথর নিক্ষেপকারী ঝড়ো হাওয়া পাঠানো থেকে তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছ? তাঁরই পানে উত্থিত হয় ভাল কথা আর নেক আমল তিনি তা উপরে উঠান। নিশ্চয় আমি তোমাকে পরিগ্রহণ করব, তোমাকে আমার দিকে উপরে উঠিয়ে নিব। বরং আল্লাহ তাঁর কাছে তাকে তুলে নিয়েছেন। তারা তাদের উপরস্থ রবকে ভয় করে। এভাবে আল্লাহ সংবাদ দিয়েছেন যে, তিনি আসমানের উপরে’।[৭]

প্রকৃতপক্ষে মহান আল্লাহর ছিফাতের ব্যাপারে সালাফদের মানহাজ হল, পবিত্র কুরআন ও সুন্নাতে যেভাবে মহান রবের গুণাবলী বর্ণিত হয়েছে, ঐভাবেই বিশ্বাস করা। যেমনটা ইমাম আওযাঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

كنا والتابعون متوافرون نقول إن الله تعالى فوق عرشه ونؤمن بما وردت به السنة من صفاته

‘আমরা ও তাবেঈগণ পর্যাপ্ত পরিমাণ ছিলাম। আমরা বলতাম, ‘আল্লাহ তাঁর ‘আরশের উপর এবং সুন্নাহয় আল্লাহর যেসব গুণ বর্ণিত হয়েছে, তার প্রতি আমরা ঈমান রাখি’।[৮]

আবূ হাতিম রাযী ও আবূ যুর‘আ রাযী (রাহিমাহুমাল্লাহ) বলেছেন,

أَدْرَكْنَا الْعُلَمَاءَ فِي جَمِيعِ الْأَمْصَارِ حِجَازًا وَعِرَاقًا وَشَامًا وَيَمَنًا فَكَانَ مِنْ مَذْهَبِهِمُ: وَأَنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ عَلَى عَرْشِهِ بَائِنٌ مِنْ خَلْقِهِ كَمَا وَصَفَ نَفْسَهُ فِي كِتَابِهِ , وَعَلَى لِسَانِ رَسُولِهِ ﷺ بِلَا كَيْفٍ , أَحَاطَ بِكُلِّ شَيْءٍ عِلْمًا

‘আমরা হিজায, ইরাক, মিশর, শাম, ইয়ামানসহ সকল এলাকার আলিমদের পেয়েছি এ মতের উপর যে, আল্লাহ তাঁর ‘আরশের উপর রয়েছেন, তিনি তাঁর সৃষ্টি থেকে আলাদা। যেমনটি স্বয়ং আল্লাহ কুরআনে এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর মুখের মাধ্যমে নিজের বর্ণনা দিয়েছেন। কোন ধরন নির্ধারণ ও জানা ছাড়াই। তিনি সকল কিছুকে জ্ঞানের মাধ্যমে বেষ্টন করে আছেন’।[৯] আবূ হাতিম রাযী ও আবূ যুর‘আ রাযী (রাহিমাহুমাল্লাহ) আরো বলেছেন,

أجمع أهل الإسلام على إثبات الصفات لله تعالى وأنه على عرشه بائن من خلقه وعلم الله في كل مكان من قال غير هذا فعليه لعنة الله

‘মহান আল্লাহর ছিফাতের উপর আহলুল ইসলামের ইজমা‘ হয়েছে যে, তিনি তাঁর ‘আরশের উপরে, তাঁর সৃষ্টি থেকে আলাদা। আল্লাহর জ্ঞান সর্বত্র, যে কেউ এর বিপরীতটি বলবে, তার উপর আল্লাহর লা‘নত’।[১০]

সুতরাং যে কেউ আল্লাহর আরশে উঠাকে অস্বীকার করে অথবা অপব্যাখ্যা করে, নিঃসন্দেহে সে অভিশপ্ত, পথভ্রষ্ট এবং কাফির। ইমাম আবূ হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন,من لم يقر أن الله على العرش قد كفر  ‘যে ব্যক্তি স্বীকার করল না আল্লাহ ‘আরশের উপরে, সে কুফুরী করল’।[১১] ইমাম শাফেঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন,

لله أسماء وصفات لا يسع أحدا قامت عليه الحجة ردها، فإن خالف بعد ثبوت الحجة عليه فهو كافر

‘আল্লাহর রয়েছে অনেক নাম ও গুণাবলী। দলীল দ্বারা প্রমাণিত হওয়ার কারো সুযোগ নেই তা প্রত্যাখ্যান করা। দলীল দ্বারা প্রমাণিত হওয়ার পরে কেউ তার বিরোধিতা করলে সে কাফির’।[১২]

যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর আরশে উঠাকে বিশ্বাস করে না, ইমাম আওযাঈ (রাহিমাহুল্লাহ) তাকে পথভ্রষ্ট মনে করেন।[১৩] অনুরূপভাবে ইমাম মালিক ইবনু আনাস (রাহিমাহুল্লাহ)-ও এমন ব্যক্তিকে পথভ্রষ্ট মনে করেন। এমনকি এরূপ ব্যক্তিকে তিনি তাঁর মাজলিস থেকে বের করে দিয়েছিলেন।[১৪]

ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর উস্তাদ মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, من قَالَ اِنَّ الله لَيْسَ على عَرْشه فَهُوَ كَافِر ‘যে কেউ বলবে, আল্লাহ ‘আরশের উপর নেই সে কাফির’।[১৫] প্রখ্যাত (তাবেঈ-তাবেঈন) আবূ আছেম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, 

منْ كفرَ بآيةٍ منْ كتابِ الله؛ فقدْ كفرَ بهِ أجمع، فمنْ أنكرَ العرشَ؛ فقدْ كفرَ بالله. وجاءتِ الآثارُ بأنَّ لله عرشًا، وأنَّهُ على عرشهِ

‘যে ব্যক্তি আল্লাহর একটি আয়াতকে অস্বীকার করবে সে যেন সকল আয়াতকে অস্বীকার করল। সুতরাং যে কেউ ‘আরশ অস্বীকার করল যে আল্লাহর সাথে কুফুরী করল। দলীল প্রমাণ দ্বারা এটা সাব্যস্ত হয়েছে যে, আল্লাহর ‘আরশ রয়েছে এবং তিনি ‘আরশের উপর রয়েছেন’ (বিস্তারিত : মাতুরীদীদের আক্বীদা-১ : আলোচনা দ্রষ্টব্য)।[১৬]

ওয়াহদাতুল ওজূদে বিশ্বাসীরা কিভাবে কোন্ যুক্তিতে আল্লাহ এবং সৃষ্টিকে একাকার করেছে? এভাবেই তারা শিরকী আক্বীদা তথা ‘ওয়াহদাতুল ওজূদ’ মতবাদ মানুষের মাঝে প্রচার করছে। তারা কালেমায়ে শাহাদাত মুখে উচ্চারণ করার পরও কিভাবে স্রষ্টা এবং সৃষ্টিকে এক মনে করে? অথচ মহান আল্লাহ হলেন সকল সৃষ্টির স্রষ্টা, রব এবং ইলাহ। মানবসত্তাজাত এবং জাগতিক প্রমাণই রব ও বান্দার পরিচয় বহন করে। মহান আল্লাহ বলেন,

اِنَّ رَبَّکُمُ اللّٰہُ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ فِیۡ سِتَّۃِ اَیَّامٍ ثُمَّ اسۡتَوٰی عَلَی الۡعَرۡشِ یُغۡشِی الَّیۡلَ النَّہَارَ یَطۡلُبُہٗ حَثِیۡثًا وَّ الشَّمۡسَ وَ الۡقَمَرَ وَ النُّجُوۡمَ مُسَخَّرٰتٍۭ بِاَمۡرِہٖ  اَلَا لَہُ  الۡخَلۡقُ وَ الۡاَمۡرُ   تَبٰرَکَ اللّٰہُ رَبُّ الۡعٰلَمِیۡنَ

‘নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক হচ্ছেন সেই আল্লাহ, যিনি আসমান ও যমীনকে ছয়দিনে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনি স্বীয় আরশের উপর সমুন্নত হন, তিনি দিবসকে রাত্রি দ্বারা আচ্ছাদিত করেন এমনভাবে যে, রাত্রি ও দিবস একে অন্যকে অনুসরণ করে চলে তড়িৎ গতিতে; সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজি সবই তাঁর হুকুমের অনুগত। জেনে রেখো, সৃষ্টির একমাত্র কর্তা তিনিই, আর হুকুমের একমাত্র মালিক তিনিই, সারা জাহানের প্রতিপালক আল্লাহ হলেন বরকতময়’ (সূরা আল-আরা‘ফ : ৫৪)। তিনি আরো বলেন,

یُدَبِّرُ الۡاَمۡرَ مِنَ السَّمَآءِ  اِلَی الۡاَرۡضِ ثُمَّ یَعۡرُجُ  اِلَیۡہِ  فِیۡ یَوۡمٍ کَانَ مِقۡدَارُہٗۤ اَلۡفَ سَنَۃٍ  مِّمَّا تَعُدُّوۡنَ 

‘তিনি আকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত সমুদয় বিষয় পরিচালনা করেন। অতঃপর একদিন সব কিছুই তাঁর সমীপে সমুত্থিত হবে যে দিনের পরিমাপ হবে তোমাদের হিসেবে হাজার বছরের সমান’ (সূরা আস-সাজ্দাহ : ৫)।

মানবসত্তাজাত প্রমাণের মধ্যে রয়েছে যে, মানুষ যদি তার সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে, তাহলে সে উপলব্ধি করবে যে, তার একজন প্রভু ও পরিচালক রয়েছেন, যিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ  فِیۡۤ   اَنۡفُسِکُمۡ   اَفَلَا  تُبۡصِرُوۡنَ

‘আর তোমাদের নিজেদের মধ্যে রয়েছে নিদর্শন, তোমরা কি তা লক্ষ্য করছ না?’ (সূরা আয-যারিয়াত : ২১)।

মানুষ যদি তার নিজের সৃষ্টি ও তাতে আল্লাহর যে আশ্চর্য কীর্তি রয়েছে অর্থাৎ হাত-পা, চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, মুখ, মস্তিষ্ক, দেহ ইত্যাদিসহ সুন্দর অবয়ব দিয়ে বিন্যস্ত করে যে মানুষকে তিনি সৃষ্টি করেছেন, তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে, তবে অবশ্যই তা তাকে দিক-নির্দেশনা দান করে যে, তার এমন একজন প্রতিপালক বা রব আছেন যিনি সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রিযিকদাতা, বিজ্ঞ, সর্বজ্ঞ এবং অমুখাপেক্ষী।[১৭] তখন মানুষের গ্রন্থি বা জোর অর্থাৎ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রবের ইবাদতের জন্য নমনীয় হবে।[১৮] যখন সে গভীর মনোযোগ দিয়ে চিন্তা-ভাবনা করবে, তখন সে উপলব্ধি করবে যে, তাকে আল্লাহর ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে।[১৯] কেননা যে বীর্য থেকে মানুষের উৎপত্তি হয়েছে, মানুষ নিজে সে বীর্য সৃষ্টি করতে পারে না। বীর্যকে রক্তপিণ্ডেও পরিণত করতে পারে না এবং রক্তপিণ্ডকে মাংসপিণ্ডে পরিণত করতে পারে না। আর মাংসপিণ্ডকে অস্থিতে পরিণত করতে বা অস্থিকে মাংসে আবৃত করতে পারে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

اَفَرَءَیۡتُمۡ مَّا تُمۡنُوۡنَ  . ءَاَنۡتُمۡ  تَخۡلُقُوۡنَہٗۤ  اَمۡ  نَحۡنُ  الۡخٰلِقُوۡنَ

‘তোমরা কি ভেবে দেখেছো তোমাদের বীর্যপাত সম্বন্ধে? ওটা কি তোমরা সৃষ্টি কর, না আমরা সৃষ্টি করি?’ (সূরা আল-ওয়াকি‘আহ : ৫৮)।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘(তিনিই সেই সত্তা) যিনি তাঁর প্রত্যেক সৃষ্টিকে সুন্দর করেছেন এবং কাদামাটি থেকে মানব সৃষ্টির সূচনা করেছেন। অতঃপর তিনি তার বংশধর সৃষ্টি করেন তুচ্ছ পানির নির্যাস থেকে। অতঃপর তিনি তাকে সুষম করেন, তাতে রূহ সঞ্চার করেন এবং তোমাদেরকে দেন চক্ষু, কর্ণ ও অন্তঃকরণ। (অথচ) তোমরা সামান্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাক’। বস্তÍতঃ এই অপূর্ব সৃষ্টি কৌশলের মধ্যেই সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের প্রমাণ নিহিত রয়েছে (সূরা আস-সাজদাহ : ৭-৯)।

আর জাগতিক প্রমাণ হল জগৎ সৃষ্টির ক্ষেত্রে আল্লাহর নিদর্শনসমূহ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণা করা। এটিও অনুরূপভাবে আল্লাহর সেসব মহান নিদর্শনাবলির অন্যতম, যা তার প্রভুত্বের উপর প্রমাণ বহন করে। উদাহরণ স্বরূপ- মহান আল্লাহ হলেন জগতসমূহের প্রতিপালক, পরম করুণাময়, অতিশয় দয়ালু (সূরা আল-ফাতিহা : ২-৩), আকাশ ও পৃথিবীর আধিপত্য তাঁরই। তিনি গগণ ও ভূবনকে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে আনয়নকারী (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১০৭, ১১৭)। মানবজাতীর সৃষ্টিকর্তা, যিনি মানুষের জন্য যমীনকে করেছেন শয্যা ও আকাশকে ছাদ স্বরূপ এবং যিনি আকাশ হতে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর তার দ্বারা মানুষের জন্য উপজীবিকা স্বরূপ ফলপুঞ্জ উৎপাদন করেন। মানুষ নির্জীব ছিল, মহান আল্লাহই তাদেরকে সঞ্জীবিত করেছেন, পুনরায় আবার তাদেরকে নির্জীব করবেন, পরে আবার জীবন্ত করবেন এবং তাদেরকে তাঁরই দিকে প্রতিগমন করতে হবে। তিনি মানুষের জন্য পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই সৃষ্টি করেছেন (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২১-২২, ২৮-২৯)। তিনিই মানুষকে মেঘমালা দিয়ে ছায়া দান করেন, তিনি মানুষকে উপজীবিকা দান করেন। ভূমি থেকে খাবার উৎপন্ন করেন (সূরা আল-বাক্বারাহ : ৫৭-৬১)। 

তিনি পৃথিবীকে বিছিয়ে দিয়েছেন সৃষ্টজীবের জন্য। এতে রয়েছে ফলমূল এবং খেজুর বৃক্ষ যার ফল আবরণযুক্ত এবং খোসাবিশিষ্ট দানা ও সুগন্ধি ফুল। তিনি দুই সমুদ্রকে প্রবাহিত করেন যারা পরস্পর মিলিত হয়, এ দু’য়ের মধ্যে রয়েছে এক অন্তরাল, যা ওরা অতিক্রম করতে পারে না। উভয় সমুদ্র হতে উৎপন্ন হয় মুক্তা ও প্রবাল। সমুদ্রে বিচরণশীল পর্বত প্রমাণ জাহাজসমূহ তাঁরই নিয়ন্ত্রণাধীন (সূরা আর-রহমান : ১০-২০)।

মৃত যমীন, যাকে আল্লাহ জীবিত করেন এবং তা হতে উৎপন্ন করেন শস্য দানা, যা হতে মানুষ ভক্ষণ করে। রাত্রি, তা থেকে দিবালোক অপসারিত করে অন্ধকারাচ্ছন্ন করেন। সূর্য ভ্রমণ করে ওর নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে এবং চন্দ্রের বিভিন্ন মনযিল, অবশেষে ওটা শুষ্কবক্র, পুরাতন খেজুর শাখার আকার ধারণ করে। সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চন্দ্রের নাগাল পাওয়া এবং রজনীর পক্ষে সম্ভব নয় দিবসকে অতিক্রম করা (সূরা ইয়াসীন : ৩৩-৪০)। ইত্যাদি মহান নিদর্শনাবলি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

سَنُرِیۡہِمۡ  اٰیٰتِنَا فِی الۡاٰفَاقِ  وَ فِیۡۤ   اَنۡفُسِہِمۡ حَتّٰی یَتَبَیَّنَ  لَہُمۡ  اَنَّہُ  الۡحَقُّ ؕ اَوَ لَمۡ یَکۡفِ بِرَبِّکَ  اَنَّہٗ عَلٰی کُلِّ  شَیۡءٍ شَہِیۡدٌ

‘অচিরেই আমরা তাদেরকে আমাদের নিদর্শনাবলি দেখাব (আসমান ও যমীনের) দিগন্তসমূহে এবং তাদের নিজেদের সত্তায়, যাতে তাদের কাছে স্পষ্ট হয় যে, এ (কুরআন) সত্য, আপনার রব সব কিছুর উপর সাক্ষ্যদাতা হিসাবে কি যথেষ্ট নয়’ (সূরা হা-মীম সাজদাহ : ৫৩)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

 اِنَّ فِیۡ خَلۡقِ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ اخۡتِلَافِ الَّیۡلِ وَ النَّہَارِ وَ الۡفُلۡکِ الَّتِیۡ تَجۡرِیۡ فِی الۡبَحۡرِ  بِمَا یَنۡفَعُ النَّاسَ وَ مَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ مِنَ السَّمَآءِ مِنۡ مَّآءٍ فَاَحۡیَا بِہِ الۡاَرۡضَ بَعۡدَ مَوۡتِہَا وَ بَثَّ فِیۡہَا مِنۡ کُلِّ دَآبَّۃٍ  ۪ وَّ تَصۡرِیۡفِ الرِّیٰحِ وَ السَّحَابِ الۡمُسَخَّرِ بَیۡنَ السَّمَآءِ وَ الۡاَرۡضِ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ  یَّعۡقِلُوۡنَ

‘নিশ্চয় নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল সৃষ্টিতে, দিন ও রাতের পরিবর্তনে, জাহাজসমূহের চলাচলে- যা মানুষের লাভজনক এবং সম্ভার নিয়ে সমুদ্রে চলাচল করে, আল্লাহ আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ দ্বারা পৃথিবীকে মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন তাতে, প্রত্যেক জীবজন্তুর বিস্তার করেন তাতে, বায়ুরাশির গতি পরিবর্তন এবং আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যস্থ নিয়ন্ত্রিত মেঘমালায় সত্য জ্ঞানবান সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৬৪)।

দিগন্ত জোড়া সৃষ্টিজগৎ এবং তাতে যে আসমান ও যমীন রয়েছে, আর আকাশে যে তারকারাজি, গ্রহ, সূর্য ও চন্দ্রের সমাহার ঘটেছে এবং যমীনে যে পাহাড়-পর্বত, বৃক্ষরাজি, সাগর-মহাসাগর, নদ-নদীর অস্তিত্ব রয়েছে। এ সবের পাশাপাশি তাতে রাত-দিনের যে আবর্তন ও সূক্ষ্ম নিয়ম মাফিক বিশ্বজগতের পরিক্রমণ- এ সবকিছু নিয়ে যদি কেউ চিন্তা-গবেষণা করে, তা তাকে সেদিকেই দিক-নির্দেশনা দান করে যে, এ জগতের এমন একজন মহান স্রষ্টা রয়েছেন যিনি এগুলোকে সৃষ্টি করেছেন ও সংশ্লিষ্ট সকল বিষয় পরিচালনা করছেন। এই নিদর্শনগুলো আল্লাহ তা‘আলার মহান সৃষ্টির এবং ক্ষমতার উজ্জ্বল ও চমৎকার প্রমাণ।[২০] যখনই কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তি এ সৃষ্টিজগৎ নিয়ে গবেষণা করে এবং জগতের আশ্চর্য বিষয়সমূহ নিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়, তখনি সে জানতে পারে যে, এ সবকিছুই সৃষ্টি করা হয়েছে সঠিক উদ্দেশ্যে এবং যথাযথভাবে। আর আল্লাহ স্বীয় সত্তা সম্পর্কে যে সকল সংবাদ দিয়েছেন এগুলো হচ্ছে সে সবের ওপর ব্যাপক নিদর্শন ও প্রকৃষ্ট প্রমাণ এবং তাঁর এককত্বের দলীল।

তাছাড়া আসমান, যমীন, তারকা, নক্ষত্র, পশু-পাখি, গাছ-পালা, দুনিয়াবাসী, জল-স্থলবাসী, ফেরেশতা, জিন এবং ইনসানসহ সবকিছুই স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় আল্লাহর বশ্যতা ও আনুগত্য স্বীকার করে তাঁর দুনিয়াবী নির্দেশ মেনে চলে। যা কিছু গগণে ও ভূমণ্ডলে রয়েছে তা আল্লাহর জন্য; সবই তাঁর আজ্ঞাধীন’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১১৬)। আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে স্বেচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক তাঁরই অনুগত এবং তাঁরই দিকে ফিরে যাবে’ (সূরা আলে ইমরান : ৮৩)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ لِلّٰہِ یَسۡجُدُ  مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ مِنۡ دَآبَّۃٍ وَّ الۡمَلٰٓئِکَۃُ وَ ہُمۡ  لَا یَسۡتَکۡبِرُوۡنَ

‘আল্লাহকে সেজদা করে যা কিছু নভোমণ্ডলে আছে এবং যা কিছু ভূমণ্ডলে আছে এবং ফেরেশতাগণ; তারা অহঃকার করে না’ (সূরা আন-নাহল : ৪৯)। আল্লাহ তা‘আলা অপর আয়াতে বলেন, ‘তুমি কি দেখো না যে, আল্লাহকে সিজদা করে, যা কিছু আছে আকাশমণ্ডলীতে ও পৃথিবীতে, সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্রমণ্ডলী, পর্বতরাজী, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু এবং সিজদা করে মানুষের মধ্যে অনেকে? আর অনেকের প্রতি অবধারিত হয়েছে শাস্তি; আল্লাহ যাকে হেয় করেন তার সম্মানদাতা কেউই নেই; আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন’ (সূরা আল-হজ্জ : ১৮)। এমনকি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের প্রতিচ্ছায়াও সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহকে সিজদা করে (সূরা আর-রাদ : ১৫)।

পৃথিবীর সবকিছু এবং সমগ্র জগত আল্লাহর অনুগত ও বশ্যতা স্বীকার করে। তাঁর ইচ্ছা এবং নির্দেশ অনুযায়ী এগুলো পরিচালিত হয়। কিন্তু আমরা তা অনুধাবন করতে পারি না। জগত সমূহের কোন জিনিস তাঁর অবাধ্য হতে চায় না। প্রত্যেকে স্ব-স্ব কাজ আঞ্জাম দিয়ে স্বীয় স্রষ্টাকে যাবতীয় ক্রটি, অপারগতা এবং দোষ হতে মুক্ত ঘোষণা করে খুব সূক্ষ্মভাবে তার ফল দিয়ে যাচ্ছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘সপ্ত আকাশ, পৃথিবী এবং ওদের অন্তর্বর্তী সব কিছু তাঁরই পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং এমন কিছু নেই যা তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করে না; কিন্তু ওদের পবিত্রতা ঘোষণা তোমরা অনুধাবন করতে পার না; নিশ্চয় তিনি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ’ (সূরা বানী ইসরাঈল : ৪৪)।

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে প্রমাণিত যে, মহান আল্লাহ হলেন রব এবং ইলাহ। তিনি আরশে উঠেছেন। তাঁর রয়েছে সুন্দর সুন্দর নাম ও গুণাবলীসমূহ। বান্দা সহ পৃথিবীতে যা কিছু আছে, তা মহান আল্লাহর সৃষ্টি এবং ইচ্ছা-অনিচ্ছায় তাঁর অনুগত। এরপরেও যারা ‘সবকিছুর মাঝে আল্লাহর উপস্থিতি এবং পৃথিবীর সককিছুই এক আল্লাহর অংশ; ফলে সবই আল্লাহ’ এমন বিশ্বাস লালন করে তারা স্পষ্ট কাফির। এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। মহান আল্লাহ আমাদেরকে ছূফী তরীকার এবং দেওবন্দীদের বড় বড় আলেমদের ভ্রান্ত আক্বীদা ‘ওয়াহদাতুল ওজূদ’-থেকে হেফাযত করুন এবং তাদেরকে সরল-সঠিক পথ প্রদর্শন করুন-আমীন!

(ইনশাআল্লাহ চলবে)


* পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

তথ্যসূত্র :
[১]. ‘আক্বাইদু ‘উলামাই দেওবন্দ মিন কিতাবি দেওবন্দিয়া, পৃ. ১১; মাওসূ‘আতুল ফিরাক্বিল মুনতাসিবাতি লিল ইসলাম, ৮ম খণ্ড, পৃ. ৪৫২।
[২]. ওয়াহদাতুল ওজূদ : সবকিছুর মাঝে আল্লাহর উপস্থিতিকে ‘ওয়াহদাতুল ওজূদ’ বলে। এটা ছূফীদের অন্যতম আক্বীদা। এ জন্য তথাকথিত ছূফীরা স্রষ্টা ও সৃষ্টিতে কোন পার্থক্য করে না। বরং কোন ব্যক্তি যখন উক্ত মর্যাদা অর্জন করে তখন তাকে আর শরী‘আতের কোন বিধি-বিধান পালন করা লাগে না। কারণ সে আল্লাহর মাঝে বিলীন হয়ে যায়। তাদের বক্তব্য হল,إِنَّ مَنْ عَرَفَ اللهَ تَعَالَى سَقَطَتْ عَنْهُ الشَّرَائِعُ وَزَادَ بَعْضُهُمْ وَاتَّصَلَ بِاللهِ تَعَالَى ‘নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলাকে চিনতে পারবে, তার উপর থেকে শরী‘আতের হুকুম রহিত হয়ে যাবে। কেউ একটু বাড়িয়ে বলেছেন, সে আল্লাহ তা‘আলার সাথে মিলিত হবে’ (ইবনু হাযম আন্দালুসী, আল-ফাছলু ফিল মিলাল ওয়াল আহওয়াই ওয়ান নাহাল (কায়রো : মাকতাবাতুল খানিজী, তা.বি.), ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১৪৩)।

    শুধু তাই নয় এই ছূফীদের অন্যতম জঘন্য কুফুরী আক্বীদা হল, মানবদেহে যখন আল্লাহ প্রবেশ করে, তখন মানুষ আল্লাহতে পরিণত হয়। তারা বলে, أَنَّ اللهَ يَحِلُّ فِى الْإِنْسَانِ ‘আল্লাহ মানুষের মধ্যে বাস করে’। এটা মূলত নাছারা তথা খ্রীষ্টানদের আক্বীদা। সেখান থেকে  আবূ ইয়াযীদ বিস্তামী ও মানছূর হাল্লাজ এ আক্বীদা গ্রহণ করেছে (ইবনু তাইমিয়্যাহ, আল-জাওয়াবুছ ছহীহু লি মা বাদ্দালা দ্বীনাল মাসীহা, তাহক্বীক্ব : আলী ইবনু হাসান (সঊদী আরব : দারু ‘আছিমাহ, ২য় সংস্করণ ১৪১৯ হি.), ৩য় খণ্ড, পৃ. ৩২৯; আহমাদ ইবনু আব্দিল আযীয ইবনে আব্দিল্লাহ আল-হুছাইন, দা‘ওয়াতুল ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু আব্দিল ওহ্হাব (মাকতাবাতুল মুলক, ১৪২০ হি.), পৃ. ৪৪৭; টিকা দ্রষ্টব্য)। 

[৩]. ড. মুযাফফর বিন মুহসিন, ভ্রান্তির বেড়াজালে ইক্বামতে দ্বীন (রাজশাহী : বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ, ২য় সংস্করণ, ২০১৪ খ্রি.), পৃ. ৯৯।
[৪]. ইবনু তাইমিয়্যাহ, মিনহাজুস সুন্নাহ আন-নববিয়্যাহ, ৫ম খণ্ড (জামি‘আতুল ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু সঊদ আল-ইসলামিয়্যাহ, ১৪০৬ হি.), পৃ. ৩৩৩; ‘আক্বাইদু ‘উলামাই দেওবন্দ মিন কিতাবি দেওবন্দিয়া, পৃ. ১১; মাওসূ‘আতুল ফিরাক্বিল মুনতাসিবাতি লিল ইসলাম, ৮ম খণ্ড, পৃ. ৪৫২।
[৫]. সূরা ইউনূস : ৩; সূরা আর-রা‘দ : ২; সূরা ত্বহা : ৫; সূরা আল-ফুরক্বান : ৫৯; সূরা আস-সাজদাহ : ৪; সূরা আল-হাদীদ : ৪; সূরা আল-আ‘রাফ : ৫৪।
[৬]. আল-‘আরশ, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৯৩।
[৭]. আহমাদ ইবনু হাম্বল, আর-রাদ্দু ‘আলাজ জাহমিয়্যাহ ওয়ায যানাদিক্বাতি, (দারুছ ছাবাত, তা.বি.), পৃ. ১৪২-১৪৩;  আল-‘আরশ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩১৯।
[৮]. আবূ সাহল মুহাম্মাদ ইবনু আব্দির রহমান, মাওসূ‘আতু মাওয়াক্বিফুস সালাফ ফিল আক্বীদা, ২য় খণ্ড (মিশর : আল-মাকতাবাতুল ইসলামিয়্যাহ, তা.বি.), পৃ. ৩৬৪ ; মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুর রহমান আল-খমীস, ই‘তিক্বাদু আয়্যিমাতিস সালাফ আহলিল হাদীছ (কুয়েত : দারু ই’লাফিদ দাওলিয়্যাহ, ১৪২০ হি.), পৃ. ১৪৭।
[৯]. শারহু উছূলি ই‘তিক্বাদি আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৯৭; আল-‘আরশ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩২৯; আল-ঊলুয়্যু লিল ‘আলিয়্যিল গাফ্ফার, পৃ. ১৮৮।
[১০]. ই‘তিক্বাদু আয়্যিমাতিস সালাফ আহলিল হাদীছ, পৃ. ১৪৮।
[১১]. আবূ হানীফা নু‘মান ইবনু ছাবিত, আল-ফিক্বহুল আকবার, (মাকতাবাতুল ফুরক্বান, ১৪১৯ হি.), পৃ. ১৩৫; আল-‘আরশ, ২য় খণ্ড, পৃ. ২২৫; আল-ঊলুয়্যু লিল ‘আলিয়্যিল গাফ্ফার, পৃ. ১৩৪-১৩৫; ছদরুদ্দীন মুহাম্মাদ ইবনু আলাউদ্দীন ইবনু আবিল ‘ইয আল-হানাফী, শারহুল ‘আক্বীদা আত-ত্বাহাবিয়্যাহ, তাহক্বীক্ব : আহমাদ শাকির (ওযারাতুশ শুয়ূনিল ইসলামিয়্যাহ ওয়াল আওক্বাফ ওয়াদ দা‘ওয়াত ওয়াল ইরশাদ, ১৪১৮ হি.), পৃ. ২৬৭।
[১২]. আল-‘আরশ, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৯৩।
[১৩]. আহমাদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ইবরাহীম আছ-ছা‘আলাবী, আল-কাশফু ওয়াল বায়ান আন তাফসীরিল কুরআন, ৪র্থ খণ্ড (বৈরূত : দারু ইহইয়াইত তুরাছিল ‘আরাবী, ১৪২২ হি.), পৃ. ২৩৯।
[১৪]. আবুল ‘আব্বাস শিহাবুদ্দীন আহমাদ ইবনু ইদরীস আল-ক্বিরাফী, আদ-দাখীরাহ, ১৩তম খণ্ড, (বৈরূত : দারুল গারব, ১৯৯৪ হি.), পৃ. ২৪২; আবূ সাঈদ উছমান ইবনু সাঈদ আদ-দারেমী আস-সিজিস্তানী, আর-রদ্দু ‘আলাজ জাহমিয়্যা, ১ম খণ্ড (কুয়েত : দারু ইবনুল আছীর, ১৪১৬ হি.), পৃ. ৬৬, হা/১০৪; মা‘আলিমুত তানযীল, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২৩৬; আবুল ক্বাসিম হিবাতুল্লাহ ইবনুল হাসান আল-ত্বাবারী আর-রাযী আল-লালকাঈ, শারহু উছূলি ই‘তিক্বাদি আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত, ৩য় খণ্ড (সঊদী আরব : দারুত ত্বায়্যিব, ১৪২৩ হি.), পৃ. ৪৪১; আহমাদ ইবনুল হুসাইন ইবনু ‘আলী ইবনু মূসা আবূ বকর আল-বায়হাক্বী, আল-আসমাঊ ওয়াছ ছিফাত, ২য় খণ্ড (জেদ্দা : মাকতাবাতুস সাওয়াদী, ১৪১৩ হি.), পৃ. ৩০৫; ইবরাহীম ইবনু মূসা ইবনু মুহাম্মাদ আশ-শাত্বেবী, আল-ই‘তিছাম, ১ম খণ্ড (সঊদী আরব : দারু ইবনুল জাওযী, ১৪২৯ হি.), পৃ. ২২৯।    
[১৫]. ইমাম বুখারী, খলকু আফ‘আলিল ‘ইবাদ (রিয়াদ : দারুল মা‘আরিফিস সঊদিয়্যাহ, তা.বি.), পৃ. ৩৩ ; আহমাদ ইবনু ইবরাহীম ইবনু হামদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ঈসা, তাওযীহুল মাক্বাছিদ ওয়া তাছহীহুল ক্বাওয়াঈদ ফী শারহি ক্বাছীদাতিল ইমাম ইবনিল ক্বাইয়িম, ১ম খণ্ড (বৈরূত : আল-মাকতাবুল ইসলামী, ১৪০৬ হি.), পৃ. ৪৮।      
[১৬]. মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনু আব্দুর রহমান আল-মালাত্বী আল-‘আসক্বালানী, আত-তানবীহ ওয়ার রাদ্দু ‘আলা আহলিল আহওয়ায়ি ওয়াল বিদা‘য়ি (মিশর : আল-মাকতাবাতুল আযহারিয়্যাহ, তা.বি.), পৃ. ১০০।      
[১৭]. তায়সীরুল কারীমির রহমান ফী তাফসীরি কালামিল মান্নান, ১ম খণ্ড, পৃ. ৮০৯।  
[১৮]. তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, ৭ম খণ্ড, পৃ. ৪১৯।  
[১৯]. আল-জামেঈ লি-আহকামিল কুরআন, ১৭তম খণ্ড, পৃ. ৪০।  
[২০]. তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, ৭ম খণ্ড, পৃ. ৪১৯; তায়সীরুল কারীমির রহমান ফী তাফসীরি কালামিল মান্নান, ১ম খণ্ড, পৃ. ৮০৯।   




সূদ-ঘুষ ও অবৈধ ব্যবসা (৭ম কিস্তি) - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ (৩য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
হজ্জ মুসলিম উম্মাহর বিশ্ব সম্মেলন - প্রফেসর ড. মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম
ইসলামী পুনর্জাগরণের মূলনীতি (২য় কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ফাযায়েলে কুরআন - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
কুরবানীর মাসায়েল - আল-ইখলাছ ডেস্ক
মহামারী থেকে বেঁচে থাকার দশটি উপদেশ - অনুবাদ : আযহার বিন আব্দুল মান্নান
যিলহজ্জ মাসের আমল ও তার ফযীলত - মুহাম্মাদ জাহিদুল ইসলাম
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ (৮ম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
নৈতিক মূল্যবোধ বিকাশে ধর্মের ভূমিকা - আল-ইখলাছ ডেস্ক
ইসলামের দৃষ্টিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা - মুহাম্মাদ আযীযুর রহমান
আধুনিক যুগে দাওয়াতী কাজের পদ্ধতি (২য় কিস্তি) - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী

ফেসবুক পেজ