মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ১১:৪৮ অপরাহ্ন

পরবর্তীদের তুলনায় সালাফদের জ্ঞানের শ্রেষ্ঠত্ব

-মূল : ইবনু রজব (রাহিমাহুল্লাহ)
-অনুবাদ : আযহার বিন আব্দুল মান্নান*


যাবতীয় প্রশংসা জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। অগণিত শান্তির ধারা বর্ষিত হোক মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তাঁর পরিবার-পরিজন এবং সকল ছাহাবীদের উপর। জ্ঞানের মর্মার্থ, উপকার ও অনুপকারের দিক দিয়ে ইলমের প্রকারভেদ এবং পরবর্তীদের জ্ঞানের উপর পূর্ববর্তীদের জ্ঞানের মর্যাদা সম্পর্কে এটি একটি সংক্ষিপ্ত গ্রন্থ। অতঃপর আল্লাহর সাহায্য কামনা করে আলোচনা শুরু করছি- যার সাহায্য ও সহায়তা ছাড়া কোন আশ্রয় ও সাহায্য নেই। মহান আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কিতাবে ইলমকে কখনো প্রশংসিত স্থানে উল্লেখ করেছেন, যা উপকারী ইলম। আবার কখনো নিন্দিত স্থানে উল্লেখ করেছেন। আর তা এমন ইলম যা কোন উপকারে আসে না।*

কুরআনে বর্ণিত উপকারী জ্ঞান

উপকারী জ্ঞান সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,قُلۡ ہَلۡ  یَسۡتَوِی الَّذِیۡنَ یَعۡلَمُوۡنَ وَ الَّذِیۡنَ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ‘(হে নবী) বলুন! যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান?’ (সূরা আয-যুমার : ৯)।[১] আল্লাহ তা‘আলা বলেন, شَہِدَ اللّٰہُ  اَنَّہٗ  لَاۤ  اِلٰہَ  اِلَّا ہُوَ ۙ وَ الۡمَلٰٓئِکَۃُ وَ اُولُوا الۡعِلۡمِ قَآئِمًۢا بِالۡقِسۡطِ ‘আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে, তিনি ছাড়া সত্য কোন মা‘বূদ নেই, আর ফেরেশতা এবং ন্যায়নিষ্ঠ জ্ঞানীগণও সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তিনি ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই’ (সূরা আলে ‘ইমরান : ১৮)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ  قُلۡ  رَّبِّ  زِدۡنِیۡ  عِلۡمًا  ‘আর আপনি বলুন, হে আমার রব, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দিন’ (সূরা ত্ব-হা : ১১৪)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, اِنَّمَا یَخۡشَی اللّٰہَ مِنۡ عِبَادِہِ الۡعُلَمٰٓؤُا ‘বান্দাদের মধ্যে কেবল জ্ঞানীরাই আল্লাহকে ভয় করে’ (সূরা ফাত্বির : ২৮)।

আদম (আলাইহিস সালাম)-কে সকল বস্তুর নাম শিক্ষা দেয়া, ফেরেস্তাদের সামনে সে সকল বস্তুর উপস্থাপনা এবং তাদের কথোপকথনের ঘটনা উল্লেখ করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

قَالُوۡا سُبۡحٰنَکَ لَا عِلۡمَ لَنَاۤ اِلَّا مَا عَلَّمۡتَنَا ؕ اِنَّکَ اَنۡتَ الۡعَلِیۡمُ الۡحَکِیۡمُ

‘তারা বললেন, আপনি পবিত্র মহান। আপনি আমাদের যা শিখিয়েছেন, তা ছাড়া আমাদের কোন ইলম নেই। নিশ্চয় আপনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ৩২)। মূসা (আলাইহিস সালাম) ও খাযির (আলাইহিস সালাম)-এর ঘটনা উল্লেখ করে মহান আল্লাহ বলেন, قَالَ لَہٗ مُوۡسٰی ہَلۡ اَتَّبِعُکَ عَلٰۤی اَنۡ تُعَلِّمَنِ  مِمَّا عُلِّمۡتَ رُشۡدًا ‘মূসা তাঁকে বললেন, আমি কি এ শর্তে আপনার অনুসরণ করতে পারি যে, সত্যপথের যে জ্ঞান আপনাকে শেখানো হয়েছে, তা থেকে আপনি আমাকে কিছু শিক্ষা দেবেন?’ (সূরা আল-কাহফ : ৬৬)। উপরিউক্ত আয়াতসমূহে বর্ণিত জ্ঞানই হল উপকারী জ্ঞান।

তাছাড়া আল্লাহ তা‘আলা এমন এক জাতি সম্পর্কে সংবাদ দিয়েছেন, যাদেরকে ইলম দেয়া হয়েছিল, কিন্তু ইলম তাদের কোন উপকারে আসেনি। এখানে প্রদত্ত ইলমটা প্রকৃত পক্ষে উপকারীই ছিল, কিন্তু যাদেরকে দেয়া হয়েছিল তারা তার দ্বারা উপকার লাভ করেনি। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, مَثَلُ  الَّذِیۡنَ حُمِّلُوا  التَّوۡرٰىۃَ  ثُمَّ  لَمۡ یَحۡمِلُوۡہَا کَمَثَلِ  الۡحِمَارِ یَحۡمِلُ اَسۡفَارًا ‘যাদেরকে তাওরাতের দায়িত্বভার দেয়া হয়েছিল তারপর তারা তা বহন করেনি, তাদের দৃষ্টান্ত গাধার মত, যে কিতাবের বোঝা বহন করে’ (সূরা আল-জুমু‘আহ : ৫)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ اتۡلُ عَلَیۡہِمۡ  نَبَاَ الَّذِیۡۤ  اٰتَیۡنٰہُ  اٰیٰتِنَا فَانۡسَلَخَ مِنۡہَا فَاَتۡبَعَہُ الشَّیۡطٰنُ فَکَانَ مِنَ  الۡغٰوِیۡنَ  -وَ لَوۡ شِئۡنَا لَرَفَعۡنٰہُ بِہَا وَ لٰکِنَّہٗۤ اَخۡلَدَ اِلَی الۡاَرۡضِ وَ اتَّبَعَ ہَوٰىہُ

‘আর আপনি তাদেরকে শুনিয়ে দিন, সে লোকের অবস্থা, যাকে আমরা নিজের নিদর্শনসমূহ দান করেছিলাম, অথচ সে তা পরিহার করে বেরিয়ে গেছে। আর তার পেছনে লেগেছে শয়তান, ফলে সে পথভ্রষ্টদের অন্তভুূক্ত হয়ে পড়েছে। আর আমরা ইচ্ছা করলে উক্ত নিদর্শনাবলীর মাধ্যমে তাকে অবশ্যই উচ্চ মর্যাদা দিতাম, কিন্তু সে পৃথিবীর প্রতি ঝুঁকে পড়েছে এবং প্রবৃত্তির অনুসরণ করেছে’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ১৭৫-১৭৬)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

فَخَلَفَ مِنۡۢ بَعۡدِہِمۡ خَلۡفٌ وَّرِثُوا الۡکِتٰبَ یَاۡخُذُوۡنَ عَرَضَ ہٰذَا الۡاَدۡنٰی وَ یَقُوۡلُوۡنَ سَیُغۡفَرُ لَنَا ۚ وَ اِنۡ یَّاۡتِہِمۡ عَرَضٌ مِّثۡلُہٗ یَاۡخُذُوۡہُ ؕ اَلَمۡ یُؤۡخَذۡ عَلَیۡہِمۡ مِّیۡثَاقُ الۡکِتٰبِ اَنۡ لَّا یَقُوۡلُوۡا عَلَی اللّٰہِ  اِلَّا الۡحَقَّ وَ دَرَسُوۡا مَا فِیۡہِ

‘তারপর তাদের পেছনে এসেছে কিছু অপদার্থ, যারা উত্তরাধিকারী হয়েছে কিতাবের, তারা নিকৃষ্ট পাখির উপকরণ আহরণ করছে এবং বলছে, আমাদের ক্ষমা করে দেয়া হবে। বস্তুত এমনি উপকরণ যদি আবারো তাদের সামনে উপস্থিত হয়, তবে তাও তুলে নেবে’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ১৬৯)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَ اَضَلَّہُ اللّٰہُ عَلٰی عِلۡمٍ  ‘আল্লাহ জেনে শুনে তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন’ (সূরা আল-জাছিয়াহ : ২৩)।

কুরআনে বর্ণিত অনুপকারী জ্ঞান

যেসব ইলমকে আল্লাহ নিন্দনীয় হিসাবে উল্লেখ করেছেন, তার মধ্যে একটি হল যাদু। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ یَتَعَلَّمُوۡنَ مَا یَضُرُّہُمۡ  وَ لَا یَنۡفَعُہُمۡ وَ لَقَدۡ عَلِمُوۡا لَمَنِ اشۡتَرٰىہُ مَا لَہٗ فِی الۡاٰخِرَۃِ مِنۡ خَلَاقٍ

‘আর তারা শিখত যা তাদের ক্ষতি করত, তাদের উপকার করত না এবং তারা অবশ্যই জানত যে, যে ব্যক্তি তা ক্রয় করবে, আখিরাতে তার কোন অংশ থাকবে না’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১০২)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

فَلَمَّا جَآءَتۡہُمۡ  رُسُلُہُمۡ  بِالۡبَیِّنٰتِ فَرِحُوۡا بِمَا عِنۡدَہُمۡ مِّنَ الۡعِلۡمِ  وَ  حَاقَ بِہِمۡ مَّا کَانُوۡا بِہٖ یَسۡتَہۡزِءُوۡنَ

‘তাদের কাছে যখন তাদের রাসূলগণ স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ আগমন করেছিল, তখন তারা নিজেদের জ্ঞান-গরিমার দম্ভ প্রকাশ করেছিল। তারা যে বিষয় নিয়ে ঠাট্টাবিদ্রুপ করেছিল, তাই তাদেরকে গ্রাস করে নিয়েছিল’ (সূরা আল-গাফির : ৮৩)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, یَعۡلَمُوۡنَ ظَاہِرًا مِّنَ  الۡحَیٰوۃِ  الدُّنۡیَا  وَ ہُمۡ عَنِ الۡاٰخِرَۃِ ہُمۡ غٰفِلُوۡنَ ‘তারা দুনিয়ার জীবনের বাহ্যিক দিক সম্পর্কে জানে, আর আখিরাত সম্পর্কে তারা গাফিল’ (সূরা আর-রূম : ৭)।

হাদীছে ইলমের প্রকারভেদ

হাদীছেও ইলমের দু’টি প্রকার বর্ণিত হয়েছে। ১. উপকারী ইলম। ২. অনুপকারী ইলম। অধিকন্তু হাদীছে অনুপকারী ইলম থেকে আশ্রয় চেয়ে উপকারী ইলমের জন্য প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে। ছহীহ মুসলিমে যায়েদ বিন আরকাম (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

اَللهم إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ عِلْمٍ لَا يَنْفَعُ وَمِنْ قَلْبٍ لَا يَخْشَعُ وَمِنْ نَفْسٍ لَا تَشْبَعُ وَمِنْ دَعْوَةٍ لَا يُسْتَجَابُ لَهَا

‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি অনুপকারী ইলম, নির্ভয় অন্তর, অতৃপ্ত প্রবৃত্তি এবং ঐ দু‘আ থেকে, যা কবুল হয় না’।[২]

সুনানের গ্রন্থাকারগণ হাদীছটিকে বিভিন্ন সনদে বর্ণনা করেছেন, যেমন কোনটিতে রয়েছে, وَمْنْ دُعَاءٍ لَا يُسْمَعُ ‘এবং ঐ দু‘আ থেকে, যা কবুল হয় না।[৩] আবার কোনটিতে আছে, أَعُوْذُ بِكَ مِنْ هَؤُلَاءِ الْأَرْبَعِ ‘হে আল্লাহ আমি আপনার নিকট উক্ত চারটি বিষয় থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি’।[৪] নাসাঈতে জাবের (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেন,

اَللهم إِنِّيْ أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ عِلْمٍ لَا يَنْفَعُ

‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট উপকারী জ্ঞানের প্রার্থনা করছি এবং অনুপকারী জ্ঞান থেকে আশ্রয় চাচ্ছি’।[৫] ইবনু মাজাতেও হাদীছটি বর্ণনা করেছেন, তার নিকট হাদীছের শব্দগুলো হল,

‏سَلُوْا اللهَ عِلْمًا نَّافِعًا وَتَعَوَّذُوْا بِاللهِ مِنْ عِلْمٍ لَّا يَنْفَعُ

‘তোমরা আল্লাহর নিকট উপকারী জ্ঞান লাভের প্রার্থনা কর এবং অনুপকারী জ্ঞান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা কর’।[৬]  

তিরমিযীতে আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হয়েছে। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেন,

اَللهم انْفَعْنِيْ بِمَا عَلَّمْتَنِيْ وَعَلِّمْنِيْ مَا يَنْفَعُنِيْ وَزِدْنِيْ عِلْمًا

‘হে আল্লাহ! আপনি আমাকে যা শিখিয়েছেন তা দিয়ে আমাকে উপকৃত করুন, আমার জন্য যা উপকারী হবে তা আমাকে শিখিয়ে দিন এবং আমার ইলম (জ্ঞান) বৃদ্ধি করি দিন’।[৭] ইমাম নাসাঈ (রাহিমাহুল্লাহ) আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু‘আ করতেন এভাবে,

اَللهم انْفَعْنِيْ بِمَا عَلَّمْتَنِيْ وَعَلِّمْنِيْ مَا يَنْفَعُنِيْ وَارْزُقْنِيْ عِلْمًا تَنْفَعُنِيْ بِهِ

‘হে আল্লাহ! আমাকে আপনি যা শিখিয়েছেন তা দিয়ে আমাকে উপকৃত করুন, আমার জন্য যা উপকারী হবে তা আমাকে শিখিয়ে দিন এবং আমাকে এমন ইলম দান করুন যা আমার উপকারে আসবে’।[৮]

আবূ নু‘আঈম (রাহিমাহুল্লাহ) আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেন,

اَللهم إِنَّا نَسْأَلُكَ إِيْمَانًا دَائِمًا فَرُبَّ إِيْمَانٍ غَيْرُ دَائِمٍ وَأَسْأَلُكَ عِلْمًا نَّافِعًا فَرُبَّ عِلْمٍ غَيْرُ نَافِعٍ

‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট স্থিতিশীল ইমান প্রার্থনা করছি, কিছু ইমান এমনও আছে যা স্থিতিশীল নয়, আমি আপনার নিকট উপকারী জ্ঞান প্রার্থনা করছি, কিছু জ্ঞান এমনও আছে যা উপকারী নয়’।[৯]

ইমাম আবূ দাঊদ (রাহিমাহুল্লাহ) বুরায়দা (রাহিমাহুল্লাহ) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, إِنَّ مِنَ الْبَيَانِ سِحْرًا وَإِنَّ مِنَ الْعِلْمِ جَهْلًا ‘কোন কোন বক্তৃতা যাদুর মত হৃদয়গ্রাহী হয়, আর কোন কোন ইলম অজ্ঞতাপূর্ণ হয়’।[১০]

এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ছা‘ছা‘আহ ইবনু ছওহান (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘কিছু ইলম অজ্ঞতাপূর্ণ হয়’ এর অর্থ হল, আলিম ব্যক্তি না জেনেও জানার ভান করে, ফলে এটাই তার অজ্ঞতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এর অন্য একটি ব্যাখ্যা হল, যে জ্ঞান উপকার না করে ক্ষতি করে, তাও এক ধরনের মূর্খতা, এবং এমন জ্ঞান থেকে মূর্খতাই উত্তম। আর মূর্খতা যখন জ্ঞান থেকে উত্তম হয়, তখন জ্ঞান মূর্খতা থেকেও নিকৃষ্ট হয়ে যায়। যার দৃষ্টান্ত যাদু এবং অন্যান্য এমন সব জ্ঞানের সাথে দেয়া যায়, যা দ্বীন ও দুনিয়া উভয় ক্ষেত্রে ক্ষতি সাধন করে।

অনুপকারী ইলম

রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে কিছু অনুপকারী জ্ঞানের ব্যাখ্যা বর্ণিত হয়েছে। যেমন ইমাম আবূ দাঊদের মারাসীল গ্রন্থে যায়েদ বিন আসলাম (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলা হল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! উমুক ব্যক্তি কতই না জ্ঞানী, তিনি বললেন, কীভাবে? তারা বলল, মানুষের বংশ পরিচয় সম্পর্কে। তিনি বললেন, عِلْمٌ لَا يَنْفَعُ وَ جَهَالَةٌ لَا تَضُرُّ ‘যে সম্পর্কে জানলেও কোন উপকার নেই আর না জানলেও কোন ক্ষতি নেই’।[১১]

আবূ নু‘আঈম স্বীয় ‘রিয়াযাতুল মুতা‘আল্লিমীন’[১২] নামক কিতাবে বাক্বিয়্যার হাদীছটি ইবনু জুরাইজ (রাহিমাহুল্লাহ)-এর সূত্রে ‘আতা (রাহিমাহুল্লাহ) আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণনা করেন, ‘তারা বলেন, মানুষের মধ্যে জ্ঞানী হল, যারা আরবদের বংশ, কবিতা এবং আরবদের মতবিরোধপূর্ণ বিষয়ে জ্ঞান রাখে’।[১৩] তার শেষে তিনি অতিরিক্ত হিসাবে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,الْعِلْمُ ثَلَاثَةٌ مَا خَلَاهُنَّ فَهُوَ فَضْلٌ آيَةٌ مُحْكَمَةٌ أَوْ سُنَّةٌ قَائِمَةٌ أَوْ فَرِيْضَةٌ عَادِلَةٌ ‘ইলম (জ্ঞান) তিন প্রকার, এছাড়া অবশিষ্টগুলো অতিরিক্ত। ১. আল-কুরআনের বিধান সম্পর্কিত (মুহকাম) আয়াতসমূহ অথবা ২. প্রতিষ্ঠিত সুন্নাহ (হাদীছ) অথবা ৩. ইনসাফ ভিত্তিক ফারায়েজের জ্ঞান (যথাযথভাবে মিরাছ বন্টনের জ্ঞান)।[১৪]

এ সনদটি ছহীহ নয়, কারণ বাক্বিয়্যা (غير ثقة) ‘অবিশ্বস্ত’ রাবী থেকে তাদলীস করতেন। অন্য একটি হাদীছ, ইমাম আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ (রাহিমাহুল্লাহ) আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু আছ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,الْعِلْمُ ثَلَاثَةٌ وَمَا سِوَى ذَلِكَ فَهُوَ فَضْلٌ آيَةٌ مُحْكَمَةٌ أَوْ سُنَّةٌ قَائِمَةٌ أَوْ فَرِيْضَةٌ عَادِلَةٌ ‘অত্যাবশ্যকীয় ইলম (জ্ঞান) তিন প্রকার, আর বাকীগুলো অতিরিক্ত। ১. আল-কুরআনের বিধান সম্পর্কিত (মুহকাম) আয়াতসমূহ অথবা ২. প্রতিষ্ঠিত সুন্নাহ (হাদীছ) অথবা ৩. ইনছাফ ভিত্তিক ফারায়েযের জ্ঞান’।[১৫] এই সনদেও আব্দুর রহমান ইবনু যিয়াদ আল-ইফরিক্বী আছেন, তার মধ্যেও প্রসিদ্ধ দুর্বলতা রয়েছে।[১৬]

বংশধারা সম্পর্কে ততটুকু জ্ঞানার্জন করার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে নির্দেশনা রয়েছে, যার মাধ্যমে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় থাকবে। আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,تَعَلَّمُوْا مِنْ أَنْسَابِكُمْ مَا تَصِلُوْنَ بِهِ أَرْحَامَكُمْ ‘তোমরা নিজেদের বংশধারার ব্যাপারে জ্ঞানার্জন কর, যাতে করে তোমাদের বংশীয় আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখতে পার’।[১৭]

হুমাইদ ইবনু যানজুওয়াইহ (রাহিমাহুল্লাহ) অন্য সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে মারফূ হিসাবে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমরা নিজেদের বংশধারার ব্যাপারে জ্ঞানার্জন কর, যাতে করে তোমাদের বংশীয় আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখতে পার। অতঃপর এতটুকুতেই বিরত থাক। তোমরা আরবী ভাষা শিখ, যাতে আল্লাহর কিতাব সম্পর্র্কে অবহিত হতে পার, অতঃপর এতটুকুতেই বিরত থাক। তোমরা জ্যোতির্বিদ্যা শিক্ষা কর, যার দ্বারা তোমরা জলে এবং স্থলে সঠিক পথের সন্ধান পাবে, অতপর এতটুকুতেই বিরত থাক’।[১৮] হাদীছটির সনদে ইবনু লাহিয়্যাহ নামক রাবী আছেন।[১৯]

(ইনশাআল্লাহ চলবে)

* অধ্যয়নরত, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদীনা মুনাওয়ারাহ, সঊদী আরব।

তথ্যসূত্র :
[১]. যে আলেম তার প্রভুকে চিনে এবং তাঁকে ভয় করে, সে আল্লাহর নিকট মূর্খের সমান হতে পারে না।
[২]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৭২২।
[৩]. আবূ দাঊদ, হা/১৫৪৮; নাসাঈ, হা/৫৪৬৭; ইবনে মাজাহ, হা/২৫০; তিরমিযী, হা/৩৪৮২, আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) -এর হাদীছ। সনদ ছহীহ। নাসাঈ, হা/৫৪৭০, আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) -এর হাদীছ হতে। সনদ ছহীহ।
[৪]. তিরমিযী, হা/৩৪৮২; নাসাঈ, হা/৫৪৭০, সনদ ছহীহ।
[৫]. নাসাঈ, ‘সুনান আল-কুবরা’, হা/৭৮১৮; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৮২, সনদ ছহীহ।
[৬]. ইবনু মাজাহ, হা/৩৮৪৩; ইবনু আবী শায়বা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৩৪২, সনদ হাসান।
[৭]. তিরমিযী, হা/৩৫৯৯; ইবনু মাজাহ, হা/২৫১। তবে তাতে অতিরিক্ত আছে- وَالْحَمْدُ لِلهِ عَلٰى كُل حَالٍ وَأَعُوْذُ بِاللهِ مِنْ حَالِ أَهْلِ النَّارِ
‘সর্বাবস্থায় সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য এবং আল্লাহর নিকট জাহান্নামীদের অবস্থা থেকে আশ্রয় চাচ্ছি’। সনদ দুর্বল, সনদে মুসা বিন উবায়দাহ নামক একজন রাবী আছেন যাকে জমহুর আলেমগণ দুর্বল বলেছেন, তবে তার শাহেদ আছে। সিলসিলা ছহীহাহ, ৭ম খণ্ড, পৃ. ৪২৯।
[৮]. নাসাঈ, ‘সুনান আল-কুবরা’, হা/৭৮১৯; মুসতাদরাক হাকিম, হা/১৮৭৯; বায়হাক্বী ‘আদ-দা‘ওয়াতুল কাবীর’ হা/২৪১; ইমাম হাকেম (রাহিমাহুল্লাহ) ইমাম মুসলিম (রাহিমাহুল্লাহ)-এর শর্তে হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন। ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) তার সাথে একমত পোষণ করেছেন। শায়খ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদীসটিকে ছহীহ বলেছেন। সিলসিলা ছহীহাহ, হা/৩১৫১।
[৯] . আবূ নু‘আইম, হিলয়া, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ১৭৯; তার শব্দ হল : اَللهم إِنِّيْ أَسْئَلُكَ إِيْمَانًا دَائِمًا وَّ هَدْيًا قَيِّمًا وَّ عِلْمًا نَّافِعًا  ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট চিরস্থায়ী ইমান, সঠিক হেদায়াত এবং উপকারী ইলম প্রার্থনা করছি’। এর সনদে একজন মাজহুল রাবি আছে।
[১০]. আবূ দাউদ, হা/৫০১২। হাদীছটি হল, কোন কোন কবিতা হিকমাতপূর্ণ হয় এবং কোন কোন কথা বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। সনদ যঈফ, তবে হাদীছের প্রথম অর্ধাংশটুকু ছহীহ বুখারী ও ছহীহ মুসলিমে আছে।
[১১]. আল-মিয্যী, তুহফাতুল আশরাফ, ১৩তম খণ্ড, পৃ. ১৯৭; হাদীছটিকে আবূ দাউদের মারাছীল পর্যন্ত সম্পৃক্ত করেছেন। ইবনু ওয়াহ্হাব, জামে‘, পৃ. ৭৩; তিনি বলেন, এটি মুরসাল; আর মুরসাল যঈফ হাদীছেরই প্রকার।
[১২]. এই কিতাবটি এখনো প্রকাশ হয়নি। বলা হয় যে, মাহমুদ আল-হাদ্দাদের তাখরীজে একটি খণ্ড ১৪০৮ হিজরীতে দারুল আছীমাহ্ প্রকাশ করেছে। এটি একটি প্রসিদ্ধ কিতাব, অনেক আলেম কিতাবটির সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। যেমন ক্বাজী ইয়াজ ‘গুনায়্যাত’ পৃ. ১৩২; ইবনু খাইর আল-ইশবীলী, ফিহরিসত, পৃ. ১৩০।
[১৩]. ইবনু আব্দুল বার, জামেউ বায়ানিল ইলম ওয়া ফাযলিহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৭৫২; হা/১৩৮৫, নিম্নোক্ত শব্দে বর্ণনা করেছেন-دَخَلَ الْمَسْجِدَ فَرَأَى جَمْعًا مِنَ النَّاسِ عَلَى رَجُلٍ فَقَالَ مَا هَذَا؟ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ رَجُلٌ عَلَّامَةٌ قَالَ وَمَا الْعَلَّامَةُ؟ قَالُوْا أَعْلَمُ النَّاسِ بِأَنْسَابِ الْعَرَبِ أَعْلَمُ النَّاسِ بِعَرَبِيَّةٍ أَعْلَمُ النَّاسِ بِشِعْرٍ أَعْلَمُ النَّاسِ بِمَا اخْتَلَفَ فِيْهِ الْعَرَبُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَذَا عِلْمٌ لَا يَنْفَعُ وَ جَهْلٌ لَا يَضُّرُّ.
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদে প্রবেশ করলেন অতঃপর এক ব্যক্তির নিকট একদল মানুষকে দেখে বললেন, এটা কি? তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! এই লোকটি আল্লামা! তিনি বললেন, আল্লামা আবার কি? তারা বললেন, আরবদের বংশধারা, আরবী ভাষা, কবিতা এবং আরবদের মতবিরোধপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এগুলো জানলেও কোন উপকার নেই আর না জানলেও কোন ক্ষতি নেই। হাদীছটি যঈফ, সনদে বাক্বিয়্যা বিন আল-ওয়ালিদ নামক রাবি আছে, যে তাদলিস আস-তাসাবিয়্যাকারী হিসেবে পরিচিত। তাছারা তিনি আন-আন সূত্রে বর্ণনা করেন।
[১৪]. সম্পূর্ণ হাদীছটিকে ইরাক্বী ‘আত-তাখরীজুল কাবীরে’ আবূ নু‘আইমের ‘রিয়াযাতুল মুতাআল্লিমীন’ পর্যন্ত সম্পৃক্ত করেছেন। ইরাক্বী, তাখরীজুল ইহয়া, ১ম খণ্ড, পৃ. ১১৬।
[১৫]. আবূ দাঊদ, হা/২৮৮৫; ইবনু মাজাহ, হা/৫৪; অন্যরাও আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণনা করেছেন। আর তার কেন্দ্রবিন্দু হল আব্দুর রহমান ইবনু যিয়াদ ইবনু আন‘আম আল-ইফরীক্বী ও আব্দুর রহমান ইবনু রাফে’ আত-তানুখী। আর তারা উভয়ই যঈফ।
[১৬]. ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল তার ব্যাপারে বলেন, ‘তিনি গ্রহণযোগ্য নয়’। তিনি আরো বলেন, ‘সে মুনকারুল হাদীছ’। ইয়াহয়া ইবনু মুঈন বলেন, ‘যঈফ’। আল-জুযাজানী বলেন, ‘তিনি হাদীছের ক্ষেত্রে প্রশংসিত নয়’। ইমাম নাসাঈও যঈফ বলেছেন।-দ্র. তাহযীবুল কামাল, ১৭তম খণ্ড, পৃ. ১০৬। 
[১৭]. তিরমিযী, হা/১৯৭৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/৮৮৬৮। হাদীছটি হল,

فَإِنَّ صِلَةَ الرَّحِمِ مَحَبَّةٌ فِيْ الْأَهْلِ مَثْرَاةٌ فِيْ الْمَالِ مَنْسَأَةٌ فِيْ الْأَثَرِ

‘নিশ্চয় আতাœীয়তার সম্পর্ক বজায় থাকলে নিজেদের মধ্যে আন্তরিকতা ও ভালবাসা তৈরি হয় এবং ধন-সম্পদ ও আয়ুকাল বৃদ্ধি পায়’। সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২৭৬, সনদ হাসান।
[১৮]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২৩৮, হা/১৫৯৪। এ হাদীছের সনদে ইবনু লাহিয়্যাহ থাকার কারণে হাদীছটি যঈফ।
[১৯]. আব্দুল্লাহ ইবনু লাহিয়্যাহ ইবনু উক্ববা ফিরআন আল-মিছরী আল-ফাক্বীহ, মিসরের বিচারক ছিলেন। তিনি তার পান্ডুলিপি থেকে হাদীছ বর্ণনা করতেন। পরবর্তীতে ১৭০ হিজরীতে তার বাড়ি আগুনে পুড়ে গেলে তিনি তার হিফজ থেকে হাদীছ বর্ণনা করেন। তবে তিনি মুতক্বীন ছিলেন না, তাই ইমামদের নিকট তিনি দলীল গ্রহণের স্তর থেকে অধঃপতিত হন। তবে ব্যক্তিগত ভাবে তিনি আদল সম্পন্ন ছিলেন। ১৭৪ হিজরীর রবিউল মাসের মাঝামাঝি সময়ে মিসরে ইন্তেকাল করেন। সিয়ারু আ‘লামীন নুবালা, ৮ম খণ্ড, পৃ. ১১।




প্রসঙ্গসমূহ »: সমাজ-সংস্কার জীবন কথা
ইসলামী পুনর্জাগরণের প্রতিবন্ধকতা ও তার সমাধান - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
সালাফী মানহাজের বৈশিষ্ট্য (শেষ কিস্তি) - হাসিবুর রহমান বুখারী
মীলাদুন্নবী ও আমাদের অবস্থান - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
শবেবরাত - আল-ইখলাছ ডেস্ক
আল-কুরআনের আলোকে দাওয়াতের মাধ্যম - আব্দুল গাফফার মাদানী
প্রচলিত তাবলীগ জামা‘আত সম্পর্কে শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের অবস্থান (শেষ কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির
মুসলিম বিভক্তির কারণ ও প্রতিকার (শেষ কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ইমাম মাহদী, দাজ্জাল ও ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আগমন সংশয় নিরসন (৮ম কিস্তি) - হাসিবুর রহমান বুখারী
পরবর্তীদের তুলনায় সালাফদের ইলমী শ্রেষ্ঠত্ব (৫ম কিস্তি) - অনুবাদ : আযহার বিন আব্দুল মান্নান
বিদ‘আত পরিচিতি (৩২তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ইসলামী পুনর্জাগরণের প্রতিবন্ধকতা ও তার সমাধান (৫ম কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ইসলামে রোগ ও আরোগ্য - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী

ফেসবুক পেজ