মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৭:৫১ পূর্বাহ্ন

মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ

-আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম*


(৬ষ্ঠ কিস্তি) 

মহান আল্লাহ কুরআনে সাতটি স্থানে ‘আল্লাহ ‘আরশের উপর উঠেছেন’[১] হওয়ার কথা ব্যক্ত করেছেন। মহান আল্লাহ নিজ পরিচয় তুলে ধরতে গিয়ে তাঁর এ গুণটির কথা বার বার বলেছেন। স্পষ্টভাবে আসা এ গুণটিকে যারা অস্বীকার করে বা অপব্যাখ্যা করে, তারা আসলে আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে কিনা এ ব্যাপারে একজন ঈমানদারের মনে সন্দেহ হওয়া স্বাভাবিক। মহান আল্লাহ বলেন,

اِنَّ رَبَّکُمُ  اللّٰہُ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ فِیۡ سِتَّۃِ اَیَّامٍ ثُمَّ اسۡتَوٰی عَلَی الۡعَرۡشِ

‘নিশ্চয় তোমাদের রব আল্লাহ যিনি আসমানসমূহ ও যমীন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন; তারপর তিনি ‘আরশের উপর উঠেছেন’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ৫৪)। মহান আল্লাহ বলেন,

  اِنَّ رَبَّکُمُ اللّٰہُ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ فِیۡ سِتَّۃِ اَیَّامٍ ثُمَّ اسۡتَوٰی عَلَی الۡعَرۡشِ یُدَبِّرُ الۡاَمۡرَ

‘তোমাদের রব তো আল্লাহ, যিনি আসমানসমূহ ও যমীন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, তারপর তিনি ‘আরশের উপর উঠলেন। তিনি সবকিছু পরিচালনা করেন’ (সূরা ইউনুস : ৩)। মহান আল্লাহ বলেন,

اَللّٰہُ الَّذِیۡ رَفَعَ السَّمٰوٰتِ بِغَیۡرِ عَمَدٍ تَرَوۡنَہَا ثُمَّ  اسۡتَوٰی عَلَی الۡعَرۡشِ

‘আল্লাহ, যিনি আসমানসমূহ উপরে স্থাপন করেছেন খুঁটি ছাড়া, তোমরা তা দেখছ। তারপর তিনি ‘আরশের উপর উঠেছেন’ (সূরা আর-রা‘দ : ২)। মহান আল্লাহ বলেন,اَلرَّحۡمٰنُ  عَلَی الۡعَرۡشِ اسۡتَوٰی  ‘মহান আল্লাহ ‘আরশের উপর উঠেছেন’ (সূরা ত্বহা : ৫)। মহান আল্লাহ বলেন,

الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ وَ  مَا بَیۡنَہُمَا فِیۡ سِتَّۃِ  اَیَّامٍ ثُمَّ  اسۡتَوٰی عَلَی الۡعَرۡشِ

‘তিনি আসমানসমূহ, যমীন ও এ দু’য়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেন; তারপর তিনি ‘আরশের উপর উঠলেন। তিনিই ‘রহমান’, সুতরাং তাঁর সম্বন্ধে যে অবহিত তাকে জিজ্ঞেস করে দেখুন’ (সূরা আল-ফুরক্বান : ৫৯)। মহান আল্লাহ বলেন,

اَللّٰہُ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ وَ مَا بَیۡنَہُمَا فِیۡ سِتَّۃِ  اَیَّامٍ ثُمَّ  اسۡتَوٰی عَلَی الۡعَرۡشِ

‘আল্লাহ, যিনি আসমানসমূহ, যমীন ও এ দু’য়ের অন্তর্বর্তী সবকিছু সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে। তারপর তিনি ‘আরশের উপর উঠেছেন’ (সূরা আস-সাজদাহ : ৪)। মহান আল্লাহ বলেন,

ہُوَ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ  وَ الۡاَرۡضَ فِیۡ سِتَّۃِ  اَیَّامٍ ثُمَّ   اسۡتَوٰی عَلَی الۡعَرۡشِ

‘তিনি ছয় দিনে আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন; তারপর তিনি ‘আরশের উপর উঠেছেন’ (সূরা আল-হাদীদ : ৪)।

হাদীছে বর্ণিত হয়েছে। আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন। নবী করীম (ﷺ) তাঁর হাত ধরলেন, তারপর বললেন, হে আবূ হুরায়রা!

إِنَّ اللهَ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرَضِيْنَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِيْ سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ

‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা আসমান, যমীন ও তার মাঝের সবকিছু সৃষ্টি করলেন তারপর তিনি তাঁর ‘আরশের উপর উঠলেন’।[২] ক্বাতাদাহ ইবনু নু‘মান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, لَمَّا فَرَغَ اللهُ مِنْ خَلْقِهِ اِسْتَوَى عَلَى عَرْشِهِ ‘যখন আল্লাহ তা‘আলা সৃষ্টির কাজ সম্পন্ন করলেন তখন তিনি তার ‘আরশের উপর উঠলেন’।[৩]

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لَمَّا قَضَى اللهُ الْخَلْقَ كَتَبَ كِتَابًا فَهُوَ عِنْدَهُ فَوْقَ عَرْشِهِ إِنَّ رَحْمَتِيْ سَبَقَتْ غَضَبِيْ

আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা যখন মাখলূক্ব সৃষ্টির ইচ্ছা করলেন, তখন একটি কিতাব লিখলেন, যা তাঁর নিকট তাঁর ‘আরশের উপর আছে। নিশ্চয় আমার দয়া আমার ক্রোধ অতিক্রম করেছে।[৪]

‘ইস্তাওয়া’ (اسْتَوى) শব্দের বিশ্লেষণ

‘ইস্তাওয়া’ (اسْتَوى) শব্দটি কুরআন ও সুন্নাহতে অসংখ্য বার এসেছে। অর্থ উপরে উঠা। তবে এ শব্দটি ভিন্ন ভিন্ন অর্থেও ব্যবহৃত হয়। কারণ শব্দটি নি¤েœাক্ত দু’টি নিয়ম থেকে মুক্ত নয়।

১. উন্মুক্তভাবে আসা। অর্থাৎ ইস্তাওয়ার সাথে অর্থে পরিবর্তন আনয়নকারী কোন অব্যয় যোগ করা হয়নি। এমতাবস্থায় তার অর্থ হবে, পূর্ণতা প্রাপ্ত হওয়া। যেমন মহান আল্লাহ বলেন,
وَ لَمَّا بَلَغَ  اَشُدَّہٗ  وَ اسۡتَوٰۤی ‘আর যখন তিনি তার শক্তিসামর্থ্যে পৌঁছলেন এবং পূর্ণতা প্রাপ্ত হলেন’ (সূরা আল-ক্বছাছ : ১৪)।[৫]

২. উন্মুক্তভাবে না আসা। অর্থাৎ ইস্তাওয়ার সাথে অর্থে পরিবর্তন আনয়নকারী কোন অব্যয় যুক্ত হয়ে আসা। এমতাবস্থায় শব্দটির তিন অবস্থা হতে পারে।[৬]

প্রথম অবস্থা : إلي যুক্ত হয়ে আসা। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, ثُمَّ اسۡتَوٰۤی اِلَی السَّمَآءِ ‘তারপর তিনি আকাশের উপর উঠলেন’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৯)। যখন إلي যুক্ত হয়ে আসবে তখন দু’টি অর্থে ব্যবহৃত হবে। ১. ইচ্ছা করা এবং এগিয়ে যাওয়া।[৭] ২. উপরে উঠা।[৮] ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) সহ অধিকাংশ সালাফী মুফাসসির দ্বিতীয় অর্থ গ্রহণ করেছেন।[৯]

দ্বিতীয় অবস্থা :  واو দিয়ে সেটা কোন কিছুর সাথে থাকার কর্মবাচ্য  مفعول معه হিসাবে ব্যবহৃত হওয়া। তখন ইস্তাওয়া অর্থ হল, কোন কিছু সমান সমান হওয়া। যেমন আরবী ভাষায় বলা হয়,اسْتَوى الماء والخشبة  অর্থাৎ ‘পানি ও কাঠ সমপর্যায়ের আছে’।[১০]

তৃতীয় অবস্থা : على যুক্ত হয়ে আসা। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, اَلرَّحۡمٰنُ  عَلَی الۡعَرۡشِ اسۡتَوٰی  ‘মহান আল্লাহ ‘আরশের উপর উঠেছেন’ (সূরা ত্বহা : ৫)। যখন على যুক্ত হয়ে আসবে, তখন তার অর্থ হবে উপরে উঠা। আরবীতে তা তিনটি শব্দের মাধ্যমে বর্ণনা করা হয়েছে। ১. ارتفع (উপরে উঠা) ২. علا (উপরে উঠা)[১১] এবং ৩. صعد (উপরে উঠা)।[১২]

সুধী পাঠক! اسْتَوى শব্দের এ তিনটি প্রতিশব্দ ব্যবহারে সালাফে ছলেহীনের ঐকমত্য আমরা লক্ষ্য করি।[১৩] ইবনু হাজার আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, اسْتَوى অর্থ উপরে ওঠা। আর এটাই ছহীহ ও সঠিক মত এবং আহলুস সুন্নাহর আক্বীদা। কেননা মহান আল্লাহ নিজেকে উপরে উঠার গুণে গুণান্বিত করেছেন। আর মহান আল্লাহ বলেছেন, তারা যা শরীক করে তা থেকে তিনি মুক্ত। আর এটা তাঁর সত্তাগত ছিফাত।[১৪] ইমাম বাগাভী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন,

أَهْلُ السُّنَّةِ يَقُوْلُوْنَ : الِاسْتِوَاءُ عَلَى الْعَرْشِ صِفَة اللهِ تَعَالَى بِلَا كَيْفٍ، يَجِبُ عَلَى الرَّجُلِ الْإِيْمَانُ بِهِ، وَيَكِلُ الْعِلْمَ فِيْهِ إِلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ

‘আহলুস সুন্নাহর (অনুসারীগণ) বলেন, কোন পদ্ধতি ছাড়াই ‘আরশের উপর ওঠা মহান আল্লাহর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এটার উপর ঈমান আনয়ন করা এবং এই জ্ঞান মহান আল্লাহর দিকে ন্যস্ত করা প্রতিটি মানুষের উপর ফরয’।[১৫] নিম্নে এ সম্পর্কে সালাফদের কিছু বক্তব্য উপস্থাপন করা হল।

ইমাম আবূ হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ)-এর বক্তব্য

আবূ মুতী‘ হাকাম ইবনু আব্দুল্লাহ বালখী (রাহিমাহুল্লাহ) ‘আল-ফিকহুল আকবার’-এ বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন,

سألت أبا حنيفة عمن يقول : لا أعرف ربي في السماء أو في الأرض فقال: من لم يقر أن الله على العرش قد كفر لأن الله تعالى يقول { اَلرَّحۡمٰنُ  عَلَی الۡعَرۡشِ اسۡتَوٰی} وعرشه فوق سبع سموات، فقلت : إنه يقول عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوَى، ولكن لايدري العرش في السماء أم في الأرض. فقال: إذا أنكر أنه في السماء فقد كفر

‘আমি আবূ হানীফাকে জিজ্ঞাসা করলাম এমন ব্যক্তি সম্পর্কে যে বলে, আমি জানি না আমার রব আসমানের উপরে না যমীনে? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি স্বীকার করল না আল্লাহ ‘আরশের উপরে, সে কুফুরী করল। কেননা মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘পরম করুণাময় ‘আরশের উপরে উঠেছেন’। তাঁর ‘আরশ সাত আসমানের উপরে। আমি বললাম, যদি সে বলে তিনি ‘আরশের উপরে উঠেছেন, কিন্তু জানি না ‘আরশ আসমানের উপরে না যমীনে। তিনি বললেন, ‘আরশ আসমানের উপরে থাকাকে যে অস্বীকার করল, সে কুফুরী করল’।[১৬]

ইমাম আওযাঈ (রাহিমাহুল্লাহ)-এর বক্তব্য

শামবাসীদের ইমাম আওযাঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

كنا والتابعون متوافرون نقول إن الله تعالى فوق عرشه ونؤمن بما وردت به السنة من صفاته

‘আমরা ও তাবেঈগণ পর্যাপ্ত পরিমাণ ছিলাম। আমরা বলতাম, ‘আল্লাহ তাঁর ‘আরশের উপর এবং সুন্নাহয় আল্লাহর যেসব গুণ বর্ণিত হয়েছে, তার প্রতি আমরা ঈমান রাখি’।[১৭]

মুহাম্মাদ ইবনু শু‘আইব ইবনু সাবূর (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করে বলেন, এক ব্যক্তি ইমাম আওযাঈকে ‘ اَلرَّحۡمٰنُ  عَلَی الۡعَرۡشِ اسۡتَوٰی’ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,هو على العرش كما وصف نفسه، وإني لأراك رجلا ضالا ‘তিনি তাঁর ‘আরশের উপর, যেভাবে তিনি বলেছেন। আর আমি তো তোমাকে পথভ্রষ্ট ব্যক্তিই দেখতে পাচ্ছি’।[১৮]

ইমাম মালিক ইবনু আনাস (রাহিমাহুল্লাহ)-এর বক্তব্য

এক ব্যক্তি ইমাম মালিক ইবনু আনাস (রাহিমাহুল্লাহ)-কে প্রশ্ন করেছিলেন যে, মহান আল্লাহ আরশের উপর কিভাবে উঠেছেন? ইমাম মালেক (রাহিমাহুল্লাহ) বললেন,

اَلْكَيْفُ غَيْرُ مَعْقُوْلٍ وَالِاسْتِوَاءُ مِنْهُ غَيْرُ مَجْهُوْلٍ، وَالْإِيْمَانُ بِهِ وَاجِبٌ، وَالسُّؤَالُ عَنْهُ بِدْعَةٌ

‘ধরন তো বিবেকের যুক্তি ধারণ করতে পারে না, তাঁর ইস্তাওয়া (‘আরশের উপর উঠার) বিষয়টি অজানা নয়। তাঁর উপর ঈমান আনা ফরয এবং ধরন সম্পর্কে প্রশ্ন করা বিদ‘আত’। ইমাম মালেক (রাহিমাহুল্লাহ) প্রশ্নকারীকে বললেন, আমার তো আশঙ্কা হচ্ছে তুমি পথভ্রষ্ট কেউ হবে। তারপর তাকে বের করে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হল, ফলে তাকে বের করে দেয়া হল।[১৯]

ইমাম শাফেঈ (রাহিমাহুল্লাহ)-এর বক্তব্য

ইমাম শাফেঈ (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর অছীয়তনামায় বলেছেন,
وأن الله على عرشه في سمائه، يقرب من خلقه كيف شاء، وينزل إلى سماء الدنيا كيف شاء

‘মহান আল্লাহ তাঁর আসমানে তাঁর ‘আরশের উপরে। তিনি সৃষ্টিকুলের নিকটবর্তী হন যেভাবে ইচ্ছা করেন এবং দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন যেভাবে ইচ্ছা করেন’।[২০] তিনি তাঁর অছীয়তনামায় আরো বলেছেন,
وأنَّ الله عزَّ وجلَّ يُرى فِي الآخرةِ يَنْظُرُ إليهِ المؤمنونَ عيانًا جهارًا، ويسمعونَ كلامَهُ وأَنَّهُ فَوْقَ العَرْشِ

‘কুরআন আল্লাহর কালাম, মাখলূক নয়, আল্লাহকে ক্বিয়ামতের দিন স্বচক্ষে দেখা যাবে, তাঁ দিকে মুমিনরা তাকাবেন, তাঁর কথা শুনবেন, আর আল্লাহ তা‘আলা ‘আরশের উপর রয়েছেন’।[২১] তিনি আরো বলেছেন,
لله أسماء وصفات لا يسع أحدا قامت عليه الحجة ردها، فإن خالف بعد ثبوت الحجة عليه فهو كافر، فأما قبل ثبوت الحجة عليه فمعذور بالجهل، لأن علم ذلك لا يدرك بالعقل، ولا بالروية والفكر، ونثبت هذه الصفات وننفي عنها التشبيه، كما نفى عن نفسه، قال { لَیۡسَ کَمِثۡلِہٖ  شَیۡءٌ ۚ وَ ہُوَ السَّمِیۡعُ الۡبَصِیۡرُ }

‘আল্লাহর রয়েছে অনেক নাম ও গুণাবলী। দলীল দ্বারা প্রমাণিত হওয়ায় কারো সুযোগ নেই তা প্রত্যাখ্যান করা। দলীল দ্বারা প্রমাণিত হওয়ার পরে কেউ তার বিরোধিতা করলে সে কাফির। আর দলীল দ্বারা প্রমাণিত হওয়ার পূর্বে করলে অজ্ঞতার ওজর রয়েছে। কেননা নাম ও গুণাবলীর জ্ঞান বিবেক-বুদ্ধি, দর্শন ও চিন্তা-ভাবনা দ্বারা অর্জন হয় না। আমরা এসব গুণাবলী সাব্যস্ত করি এবং তাঁর থেকে সাদৃশ্যকে অস্বীকার করি, যেমনিভাবে আল্লাহ নিজের থেকে অস্বীকার করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাঁর মত কোন কিছুই নেই, তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা’।[২২]

ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ)-এর বক্তব্য

ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল ‘আর-রাদ্দু ‘আলাজ জাহমিয়্যাহ ওয়ায যানাদিক্বাতি’ গ্রন্থে বলেন, ‘জাহমিয়্যারা আল্লাহর ‘আরশের উপরে থাকাকে অস্বীকার করে। আমি তাদেরকে বললাম, তোমরা আল্লাহর ‘আরশের উপরে থাকাকে অস্বীকার করো। অথচ মহান আল্লাহ বলেন, ‘পরম করুণাময় ‘আরশের উপর উঠেছেন’। তারা বলল, আল্লাহ সাত যমীনের নিচে যেমনটি তিনি ‘আরশের উপরে, আসমানে, যমীনে। আমরা বললাম, মুসলিমরা এমন অনেক স্থান জানে যেখানে রবের মহত্ত্বের কিছুই নেই। তোমাদের দেহে, তোমাদের ভিতরে, পায়খানায় ও খারাপ স্থানে আল্লাহর মহত্ত্বের কিছুই নেই। আল্লাহ আমাদের জানিয়েছেন, তিনি আসমানের উপরে। মহান আল্লাহ বলেন,  ‘যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের সহ যমীন ধসিয়ে দেয়া থেকে কি তোমরা নিরাপদ হয়ে গেছ, অতঃপর আকস্মিকভাবে তা থর থর করে কাঁপতে থাকবে? যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের উপর পাথর নিক্ষেপকারী ঝড়ো হাওয়া পাঠানো থেকে তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছ? তাঁরই পানে উত্থিত হয় ভাল কথা আর নেক আমল তিনি তা উপরে উঠান। নিশ্চয় আমি তোমাকে পরিগ্রহণ করব, তোমাকে আমার দিকে উপরে উঠিয়ে নিব। বরং আল্লাহ তাঁর কাছে তাকে তুলে নিয়েছেন। তারা তাদের উপরস্থ রবকে ভয় করে। এভাবে আল্লাহ সংবাদ দিয়েছেন যে, তিনি আসমানের উপরে’।[২৩]

প্রকৃতপক্ষে মহান আল্লাহর ছিফাতের ব্যাপারে সালাফদের মানহাজ হল, পবিত্র কুরআন ও সুন্নাতে যেভাবে মহান রবের গুণাবলী বর্ণিত হয়েছে, ঐভাবেই বিশ্বাস করা। যেমনটা ইমাম আওযাঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
كنا والتابعون متوافرون نقول إن الله تعالى فوق عرشه ونؤمن بما وردت به السنة من صفاته

‘আমরা ও তাবেঈগণ পর্যাপ্ত পরিমাণ ছিলাম। আমরা বলতাম, ‘আল্লাহ তাঁর ‘আরশের উপর এবং সুন্নাহয় আল্লাহর যেসব গুণ বর্ণিত হয়েছে, তার প্রতি আমরা ঈমান রাখি’।[২৪]

আবূ হাতিম রাযী ও আবূ যুর‘আ রাযী  (রাহিমাহুমাল্লাহ)  বলেছেন,
أَدْرَكْنَا الْعُلَمَاءَ فِي جَمِيعِ الْأَمْصَارِ حِجَازًا وَعِرَاقًا وَشَامًا وَيَمَنًا فَكَانَ مِنْ مَذْهَبِهِمُ: وَأَنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ عَلَى عَرْشِهِ بَائِنٌ مِنْ خَلْقِهِ كَمَا وَصَفَ نَفْسَهُ فِي كِتَابِهِ , وَعَلَى لِسَانِ رَسُولِهِ ﷺ بِلَا كَيْفٍ , أَحَاطَ بِكُلِّ شَيْءٍ عِلْمًا

‘আমরা হিজায, ইরাক, মিশর, শাম, ইয়ামানসহ সকল এলাকার আলিমদের পেয়েছি এ মতের উপর যে, আল্লাহ তাঁর ‘আরশের উপর রয়েছেন, তিনি তাঁর সৃষ্টি থেকে আলাদা। যেমনটি স্বয়ং আল্লাহ কুরআনে এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর মুখের মাধ্যমে নিজের বর্ণনা দিয়েছেন। কোন ধরন নির্ধারণ ও জানা ছাড়াই। তিনি সকল কিছুকে জ্ঞানের মাধ্যমে বেষ্টন করে আছেন’।[২৫] আবূ হাতিম রাযী ও আবূ যুর‘আ রাযী (রাহিমাহুমাল্লাহ) আরো বলেছেন,
أجمع أهل الإسلام على إثبات الصفات لله تعالى وأنه على عرشه بائن من خلقه وعلم الله في كل مكان من قال غير هذا فعليه لعنة الله

‘মহান আল্লাহর ছিফাতের উপর আহলুল ইসলামের ইজমা‘ হয়েছে যে, তিনি তাঁর ‘আরশের উপরে, তাঁর সৃষ্টি থেকে আলাদা। আল্লাহর জ্ঞান সর্বত্র, যে কেউ এর বিপরীতটি বলবে, তার উপর আল্লাহর লা‘নত’।[২৬]

সুতরাং যে কেউ আল্লাহর আরশে উঠাকে অস্বীকার করে অথবা অপব্যাখ্যা করে, নিঃসন্দেহে সে অভিশপ্ত, পথভ্রষ্ট এবং কাফির। ইমাম আবূ হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন,من لم يقر أن الله على العرش قد كفر  ‘যে ব্যক্তি স্বীকার করল না আল্লাহ ‘আরশের উপরে, সে কুফুরী করল’।[২৭] ইমাম শাফেঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন,

لله أسماء وصفات لا يسع أحدا قامت عليه الحجة ردها، فإن خالف بعد ثبوت الحجة عليه فهو كافر

‘আল্লাহর রয়েছে অনেক নাম ও গুণাবলী। দলীল দ্বারা প্রমাণিত হওয়ার কারো সুযোগ নেই তা প্রত্যাখ্যান করা। দলীল দ্বারা প্রমাণিত হওয়ার পরে কেউ তার বিরোধিতা করলে সে কাফির’।[২৮]

যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর আরশে উঠাকে বিশ্বাস করে না, ইমাম আওযাঈ (রাহিমাহুল্লাহ) তাকে পথভ্রষ্ট মনে করেন।[২৯] অনুরূপভাবে ইমাম মালিক ইবনু আনাস (রাহিমাহুল্লাহ)-ও এমন ব্যক্তিকে পথভ্রষ্ট মনে করেন। এমনকি এরূপ ব্যক্তিকে তিনি তাঁর মাজলিস থেকে বের করে দিয়েছিলেন।[৩০]

ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর উস্তাদ মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, من قَالَ اِنَّ الله لَيْسَ على عَرْشه فَهُوَ كَافِر ‘যে কেউ বলবে, আল্লাহ ‘আরশের উপর নেই সে কাফির’।[৩১] প্রখ্যাত (তাবেঈ-তাবেঈন) আবূ আছেম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, 

منْ كفرَ بآيةٍ منْ كتابِ الله؛ فقدْ كفرَ بهِ أجمع، فمنْ أنكرَ العرشَ؛ فقدْ كفرَ بالله. وجاءتِ الآثارُ بأنَّ لله عرشًا، وأنَّهُ على عرشهِ

‘যে ব্যক্তি আল্লাহর একটি আয়াতকে অস্বীকার করবে সে যেন সকল আয়াতকে অস্বীকার করল। সুতরাং যে কেউ ‘আরশ অস্বীকার করল যে আল্লাহর সাথে কুফুরী করল। দলীল প্রমাণ দ্বারা এটা সাব্যস্ত হয়েছে যে, আল্লাহর ‘আরশ রয়েছে এবং তিনি ‘আরশের উপর রয়েছেন’।[৩২]

(ইনশাআল্লাহ চলবে)

* পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

তথ্যসূত্র :
[১]. সূরা ইউনূস : ৩; সূরা আর-রা‘দ : ২; সূরা ত্বহা : ৫; সূরা আল-ফুরক্বান : ৫৯; সূরা আস-সাজদাহ : ৪; সূরা আল-হাদীদ : ৪; সূরা আল-আ‘রাফ : ৫৪।
[২]. ইমাম নাসাঈ, আস-সুনান আল-কুবরা, ১০ম খণ্ড (বৈরূত : মুওয়াসসাসাতুর রিসালাহ, ১৪২১ হি.), পৃ. ২২৩, হা/১১৩২৮; শামসুদ্দীন আয-যাহাবী, আল-ঊলুয়্যু লিল ‘আলিয়্যিল গাফ্ফার (রিয়াদ : মাকতাবাতু আযওয়াইস সালাফ, ১৪১৬ হি.), পৃ. ৯৪, হা/২২৫; নাছিরুদ্দীন আলবানী, মাওসূ‘আতুল আল্লামা মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী, ৭ম খণ্ড (ইয়ামান : মারকাযুন নু‘মান, ১৪৩১ হি.), পৃ. ৯৭০।
[৩]. শামসুদ্দীন আয-যাহাবী, আল-‘আরশ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৮৯, হা/৬২, হাদীছটি ইমাম বুখারীর শর্তে ছহীহ; আল-ঊলুয়্যু লিল ‘আলিয়্যিল গাফ্ফার, পৃ. ৬৩, হা/১১৯; হাফিয ইবনু আহমাদ ইবনু ‘আলী আল-হাকামী, মা‘আরিজুল কুবূল বি শারহি সালমিল উছূল ইলা ‘ইলমিল উছূল, ১ম খণ্ড (দাম্মাম : দারু ইবনিল ক্বাইয়্যিম, ১৪১০ হি.), পৃ. ১৪৯; নুখবাতু মিনাল ‘উলামা, কিতাবু উছূলিল ঈমান ফী যূইল কিতাবি ওয়াস সুন্নাহ (সঊদীআরব : ওযারাতুশ শুয়ূনিল ইসলামিয়্যাহ ওয়াল আওক্বাফ ওয়াদ দাওয়াত ওয়াল ইরশাদ, ১৪২১ হি.), পৃ. ৮৬।
[৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৭৪২২; ছহীহ মুসলিম, হা/২৭৫১; মিশকাত, হা/২৩৬৪।
[৫]. রহমান ‘আরশের উপর উঠেছেন, পৃ. ৭২।
[৬]. প্রাগুক্ত।
[৭]. ইবনু কাছীর এ অর্থটি তাঁর তাফসীরে বর্ণনা করেছেন। দ্র. আবুল ফিদা ইসমাঈল ইবনু কাছীর, তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, তাহক্বীক্ব : সামী ইবনু মুহাম্মাদ সালামাহ, ১ম খণ্ড (দারুত ত্বয়্যিব, ১৪২০ হি.), পৃ. ২১৩।
[৮]. রবীঊ ইবনু আনাস (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,استوى  অর্থ উপরে উঠলেন। ইমাম ইবনু জারীর এটাকে পছন্দ করেছেন। দ্র. মুহাম্মাদ ইবনু জারীর ইবনু ইয়াযীদ আবূ জা‘ফর আত-ত্বাবারী, জামি‘ঊল বায়ান ফী তা’বীলিল কুরআন, ১ম খণ্ড (মুওয়াসসাসাতুর রিসালাহ, ১৪২০ হি.), পৃ. ৪২৯।  
[৯]. আবূ মুহাম্মাদ আল-হুসাইন ইবনু মাসঊদ আল-বাগাভী, মা‘আলিমুত তানযীল, ১ম খণ্ড (দারুত ত্বায়্যিব, ১৯৯৭ হি.), পৃ. ৭৮।
[১০]. রহমান ‘আরশের উপর উঠেছেন, পৃ. ৭৩।
[১১]. ইমাম বুখারী, ছহীহ বুখারী, ৯ম খণ্ড, পৃ. ১২৪।
[১২]. মা‘আলিমুত তানযীল, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২৩৫।
[১৩]. মুহাম্মাদ ইবনু জারীর ইবনু ইয়াযীদ আবূ জা‘ফর আত-ত্বাবারী, জামি‘ঊল বায়ান ফী তা’বীলিল কুরআন, ১৮তম খণ্ড (মুওয়াসসাসাতুর রিসালাহ, ১৪২০ হি.), পৃ. ২৭০; আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনু আবি বকর আল-কুরতুবী, আল-জামি‘ঈ লি আহকামিল কুরআন, ৭ম খণ্ড (কায়রো : দারুল কুতুবিল মিছরিয়্যাহ, ১৩৮৪ হি.), পৃ. ২২০; রহমান ‘আরশের উপর উঠেছেন, পৃ. ৭৩।  
[১৪]. আহমাদ ইবনু ‘আলী ইবনু হাজার আল-‘আসক্বালানী, ফাতহুল বারী, ১৩ম খণ্ড (বৈরূত : দারুল মা‘রিফাহ, ১৩৭৯ হি.), পৃ. ৪০৬।
[১৫]. মা‘আলিমুত তানযীল, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২৩৬।
[১৬]. আবূ হানীফা নু‘মান ইবনু ছাবিত, আল-ফিক্বহুল আকবার, (মাকতাবাতুল ফুরক্বান, ১৪১৯ হি.), পৃ. ১৩৫; আল-‘আরশ, ২য় খণ্ড, পৃ. ২২৫; আল-ঊলুয়্যু লিল ‘আলিয়্যিল গাফ্ফার, পৃ. ১৩৪-১৩৫; ছদরুদ্দীন মুহাম্মাদ ইবনু আলাউদ্দীন ইবনু আবিল ‘ইয আল-হানাফী, শারহুল ‘আক্বীদা আত-ত্বাহাবিয়্যাহ, তাহক্বীক্ব : আহমাদ শাকির (ওযারাতুশ শুয়ূনিল ইসলামিয়্যাহ ওয়াল আওক্বাফ ওয়াদ দা‘ওয়াত ওয়াল ইরশাদ, ১৪১৮ হি.), পৃ. ২৬৭।
[১৭]. আবূ সাহল মুহাম্মাদ ইবনু আব্দির রহমান, মাওসূ‘আতু মাওয়াক্বিফুস সালাফ ফিল আক্বীদা, ২য় খণ্ড (মিশর : আল-মাকতাবাতুল ইসলামিয়্যাহ, তা.বি.), পৃ. ৩৬৪ ; মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুর রহমান আল-খমীস, ই‘তিক্বাদু আয়্যিমাতিস সালাফ আহলিল হাদীছ (কুয়েত : দারু ই’লাফিদ দাওলিয়্যাহ, ১৪২০ হি.), পৃ. ১৪৭।
[১৮]. আহমাদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ইবরাহীম আছ-ছা‘আলাবী, আল-কাশফু ওয়াল বায়ান আন তাফসীরিল কুরআন, ৪র্থ খণ্ড (বৈরূত : দারু ইহইয়াইত তুরাছিল ‘আরাবী, ১৪২২ হি.), পৃ. ২৩৯।
[১৯]. আবুল ‘আব্বাস শিহাবুদ্দীন আহমাদ ইবনু ইদরীস আল-ক্বিরাফী, আদ-দাখীরাহ, ১৩তম খণ্ড (বৈরূত : দারুল গারব, ১৯৯৪ হি.), পৃ. ২৪২; আবূ সাঈদ উছমান ইবনু সাঈদ আদ-দারেমী আস-সিজিস্তানী, আর-রদ্দু ‘আলাজ জাহমিয়্যা, ১ম খণ্ড (কুয়েত : দারু ইবনুল আছীর, ১৪১৬ হি.), পৃ. ৬৬, হা/১০৪; মা‘আলিমুত তানযীল, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২৩৬; আবুল ক্বাসিম হিবাতুল্লাহ ইবনুল হাসান আল-ত্বাবারী আর-রাযী আল-লালকাঈ, শারহু উছূলি ই‘তিক্বাদি আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত, ৩য় খণ্ড (সঊদী আরব : দারুত ত্বায়্যিব, ১৪২৩ হি.), পৃ. ৪৪১; আহমাদ ইবনুল হুসাইন ইবনু ‘আলী ইবনু মূসা আবূ বকর আল-বায়হাক্বী, আল-আসমাঊ ওয়াছ ছিফাত, ২য় খণ্ড (জেদ্দা : মাকতাবাতুস সাওয়াদী, ১৪১৩ হি.), পৃ. ৩০৫; ইবরাহীম ইবনু মূসা ইবনু মুহাম্মাদ আশ-শাত্বেবী, আল-ই‘তিছাম, ১ম খণ্ড (সঊদী আরব : দারু ইবনুল জাওযী, ১৪২৯ হি.), পৃ. ২২৯।       
[২০]. আল-‘আরশ, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৯০; আল-ঊলুয়্যু লিল ‘আলিয়্যিল গাফ্ফার, পৃ. ১৬৫।
[২১]. আবূ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ ইবনু আহমাদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু কুদামাহ, ইছবাতু সিফাতিল ‘ঊলুব্বি, তাহক্বীক্ব : আহমাদ ইবনু ‘আত্বিয়্যা ইবনু ‘আলী, (মদীনা : মাকতাবাতুল ‘ঊলূমি ওয়াল হাকামি, ১৪০৯ হি.), পৃ. ১৭৭; আব্দুল হাদী ইবনু হাসান ওয়াহবী, আল-কালিমাতুল হুস্সান ফী বায়ানি ঊলুয়্যির রহমান, পৃ. ৭৪।
[২২]. আল-‘আরশ, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৯৩।
[২৩]. আহমাদ ইবনু হাম্বল, আর-রাদ্দু ‘আলাজ জাহমিয়্যাহ ওয়ায যানাদিক্বাতি, (দারুছ ছাবাত, তা.বি.), পৃ. ১৪২-১৪৩;  আল-‘আরশ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩১৯।
[২৪]. আবূ সাহল মুহাম্মাদ ইবনু আব্দির রহমান, মাওসূ‘আতু মাওয়াক্বিফুস সালাফ ফিল আক্বীদা, ২য় খণ্ড (মিশর : আল-মাকতাবাতুল ইসলামিয়্যাহ, তা.বি.), পৃ. ৩৬৪ ; মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুর রহমান আল-খমীস, ই‘তিক্বাদু আয়্যিমাতিস সালাফ আহলিল হাদীছ (কুয়েত : দারু ই’লাফিদ দাওলিয়্যাহ, ১৪২০ হি.), পৃ. ১৪৭।
[২৫]. শারহু উছূলি ই‘তিক্বাদি আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৯৭; আল-‘আরশ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩২৯; আল-ঊলুয়্যু লিল ‘আলিয়্যিল গাফ্ফার, পৃ. ১৮৮।
[২৬]. ই‘তিক্বাদু আয়্যিমাতিস সালাফ আহলিল হাদীছ, পৃ. ১৪৮।
[২৭]. আবূ হানীফা নু‘মান ইবনু ছাবিত, আল-ফিক্বহুল আকবার, (মাকতাবাতুল ফুরক্বান, ১৪১৯ হি.), পৃ. ১৩৫; আল-‘আরশ, ২য় খণ্ড, পৃ. ২২৫; আল-ঊলুয়্যু লিল ‘আলিয়্যিল গাফ্ফার, পৃ. ১৩৪-১৩৫; ছদরুদ্দীন মুহাম্মাদ ইবনু আলাউদ্দীন ইবনু আবিল ‘ইয আল-হানাফী, শারহুল ‘আক্বীদা আত-ত্বাহাবিয়্যাহ, তাহক্বীক্ব : আহমাদ শাকির (ওযারাতুশ শুয়ূনিল ইসলামিয়্যাহ ওয়াল আওক্বাফ ওয়াদ দা‘ওয়াত ওয়াল ইরশাদ, ১৪১৮ হি.), পৃ. ২৬৭।
[২৮]. আল-‘আরশ, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৯৩।
[২৯]. আহমাদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ইবরাহীম আছ-ছা‘আলাবী, আল-কাশফু ওয়াল বায়ান আন তাফসীরিল কুরআন, ৪র্থ খণ্ড (বৈরূত : দারু ইহইয়াইত তুরাছিল ‘আরাবী, ১৪২২ হি.), পৃ. ২৩৯।
[৩০]. আবুল ‘আব্বাস শিহাবুদ্দীন আহমাদ ইবনু ইদরীস আল-ক্বিরাফী, আদ-দাখীরাহ, ১৩তম খণ্ড, (বৈরূত : দারুল গারব, ১৯৯৪ হি.), পৃ. ২৪২; আবূ সাঈদ উছমান ইবনু সাঈদ আদ-দারেমী আস-সিজিস্তানী, আর-রদ্দু ‘আলাজ জাহমিয়্যা, ১ম খণ্ড (কুয়েত : দারু ইবনুল আছীর, ১৪১৬ হি.), পৃ. ৬৬, হা/১০৪; মা‘আলিমুত তানযীল, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২৩৬; আবুল ক্বাসিম হিবাতুল্লাহ ইবনুল হাসান আল-ত্বাবারী আর-রাযী আল-লালকাঈ, শারহু উছূলি ই‘তিক্বাদি আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত, ৩য় খণ্ড (সঊদী আরব : দারুত ত্বায়্যিব, ১৪২৩ হি.), পৃ. ৪৪১; আহমাদ ইবনুল হুসাইন ইবনু ‘আলী ইবনু মূসা আবূ বকর আল-বায়হাক্বী, আল-আসমাঊ ওয়াছ ছিফাত, ২য় খণ্ড (জেদ্দা : মাকতাবাতুস সাওয়াদী, ১৪১৩ হি.), পৃ. ৩০৫; ইবরাহীম ইবনু মূসা ইবনু মুহাম্মাদ আশ-শাত্বেবী, আল-ই‘তিছাম, ১ম খণ্ড (সঊদী আরব : দারু ইবনুল জাওযী, ১৪২৯ হি.), পৃ. ২২৯।
[৩১]. ইমাম বুখারী, খলকু আফ‘আলিল ‘ইবাদ (রিয়াদ : দারুল মা‘আরিফিস সঊদিয়্যাহ, তা.বি.), পৃ. ৩৩; আহমাদ ইবনু ইবরাহীম ইবনু হামদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ঈসা, তাওযীহুল মাক্বাছিদ ওয়া তাছহীহুল ক্বাওয়াঈদ ফী শারহি ক্বাছীদাতিল ইমাম ইবনিল ক্বাইয়িম, ১ম খণ্ড (বৈরূত : আল-মাকতাবুল ইসলামী, ১৪০৬ হি.), পৃ. ৪৮।       
[৩২]. মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনু আব্দুর রহমান আল-মালাত্বী আল-‘আসক্বালানী, আত-তানবীহ ওয়ার রাদ্দু ‘আলা আহলিল আহওয়ায়ি ওয়াল বিদা‘য়ি (মিশর : আল-মাকতাবাতুল আযহারিয়্যাহ, তা.বি.), পৃ. ১০০।




প্রসঙ্গসমূহ »: আক্বীদা বা বিশ্বাস
বিদ‘আত পরিচিতি (৩২তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
নৈতিক মূল্যবোধ বিকাশে ধর্মের ভূমিকা (শেষ কিস্তি) - ড. মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ
আল-কুরআনে বর্ণিত জাহেলি সমাজের দশটি চিত্র - তানযীল আহমাদ
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ (১১তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
গোপন পাপ: ভয়াবহতা ও পরিত্রাণের উপায় অনুসন্ধান - ড. মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ
তাওহীদ প্রতিষ্ঠার উপায় - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
মাযহাবী গোঁড়ামি ও তার কুপ্রভাব (৪র্থ কিস্তি) - অনুবাদ : রিদওয়ান ওবাইদ
বিদ‘আত পরিচিতি (২৯তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ফিতনা পরিচিতি ও আমাদের করণীয় (শেষ কিস্তি) - আব্দুল হাকীম বিন আব্দুল হাফীজ
শরী‘আত অনুসরণের মূলনীতি (৪র্থ কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ছালাতে একাগ্রতা অর্জনের ৩৩টি উপায় (শেষ কিস্তি) - আব্দুল হাকীম বিন আব্দুল হাফীজ
ইসলামে পর্দার বিধান - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর

ফেসবুক পেজ