ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় যুবসমাজ
-ড. মেসবাহুল ইসলাম বিন মাহতাবুদ্দীন*
ভূমিকা
আল-কুরআন, সুন্নাহ ও ইসলামের ইতিহাস অধ্যয়ন করলে প্রস্ফুটিত হয় যে, ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় যুব সমাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। চারিদিকে যখন যুলুম, অত্যাচার ও নির্যাতনের জয়জয়কার চলছিল; অজ্ঞতা, মূর্খতা, হঠকারিতা এবং গোঁড়ামির কারণে তাওহীদ যখন ভূলুণ্ঠিত হচ্ছিল, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ‘ইবাদতখানা বায়তুল্লাহর চতুর্পাশ্বে স্থাপিত ৩৬০টি মূর্তির সামনে মানুষ মাথা নত করছিল এবং নযর-নেয়াজ পেশ করছিল, পারিবারিক-সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সকল ক্ষেত্রে যখন অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলাপূর্ণ একটি অবস্থা বিরাজ করছিল, তখন বিশ্বনবী মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহ তা‘আলা প্রদত্ত ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজ থেকে যাবতীয় অনাচার-দুরাচার, যুলম-নির্যাতন, অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা প্রভৃতি উচ্ছেদ সাধন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। আর এ কাজে তাঁকে সবচেয়ে যারা বেশি সহযোগিতা করেছিলেন তারা ছিলেন তৎকালীন সময়ের যুব সমাজ। যাদের হুঙ্কার ও তাকবীর ধ্বনির মাধ্যমে এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে তাওহীদ ও সুন্নাতের চির অম্লান বাণী উচ্চারিত হয়েছিল এবং প্রকাশ্যে কা‘বা ঘর থেকে মূর্তি অপসারণ করে এক আল্লাহর ইবাদত করা শুরু হয়েছিল। অতঃপর ইসলামের সুমহান বাণী প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-এর হাতে গড়া যুব সমাজ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। যাদের দাওয়াতী কাজের ফলশ্রুতিতে বিশ্বময় ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠা লাভে যুগান্তকরী ভূমিকা রেখেছিল। এক্ষণে আমরা ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় যুব সমাজ যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল সে সম্পর্কে আলোচনা করার প্রয়াস পাব।
১. ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠা বলতে কী বুঝায়?
ইসলাম মানব জাতির জন্য আল্লাহ প্রদত্ত অসংখ্য নে‘মতসমূহের মধ্যে অন্যতম। এর মাধ্যমে মানব জাতি ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির সফলতা অর্জন করতে সক্ষম। যদি ইসলামের বিধি-বিধান সঠিকভাবে পালন করতে পারে। এর বিধি-বিধান সঠিকভাবে পালন করার লক্ষ্যে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবী মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে পাঠিয়েছেন। ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠা মুমিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মিশন। পৃথিবীতে যত নবী-রাসূল আগমন করেছেন তাঁদের সকলেরই মিশন ছিল এটা। এর মাধ্যমেই মুহাম্মাদ (ﷺ) তাঁর যুব ছাহাবীদের নিয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজে আলোর মশাল প্রজ্জ্বলিত করেছেন। যার ধারাবাহিকতা ক্বিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। কিন্তু বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা ক্রমশ এক ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ন্যায়নীতি আজ বিলুপ্তপ্রায়। যুলুম-নির্যাতন, হত্যা, লুণ্ঠন, ঘুষ-দুর্নীতি প্রভৃতি পাপাচারের বিষবাষ্পে জাতি আজ দিশেহারা। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে সমাজ ও রাষ্ট্রকে রক্ষা করতে প্রচার ও প্রতিষ্ঠার ব্যাপক প্রসারের বিকল্প নেই। এর প্রচার ও প্রতিষ্ঠার বিষয়বস্তু হল পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান ‘ইসলাম’। মহান আল্লাহ বলেন, اِنَّ الدِّیۡنَ عِنۡدَ اللّٰہِ الۡاِسۡلَامُ ‘নিশ্চয় আল্লাহর নিকট একমাত্র গ্রহণযোগ্য দ্বীন ইসলাম’ (সূরা আলে ‘ইমরান : ১৯)।
১৮৭৩ সালের ডিসেম্বর মাসে লণ্ডনের ওয়েস্ট মিনিস্টার এ্যাবেতে ধর্ম প্রচারকদের এক সম্মেলনে অধ্যাপক ম্যাকসমুলার ধর্ম প্রচারের বিষয়ে এক গুরুত¦পূর্ণ ভাষণ দেন। সেই থেকে বিশ্বের বহুল প্রচলিত ছয়টি ধর্মকে সাধারণভাবে তাদের প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্যের জন্য দু’টি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়। প্রচারধর্মী ও অপ্রচারধর্মী। প্রথমোক্ত শ্রেণীর ধর্মসমূহের মধ্যে বৌদ্ধ ধর্ম বা খ্রীষ্টধর্ম ও ইসলামকে গণ্য করা হয়; আর শেষোক্ত শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত হয় হিন্দু ধর্ম বা ব্রাক্ষণ্যবাদ, ইয়াহুদীধর্ম এবং অগ্নি উপাসক। ম্যাক্সমুলার তাঁর ভাষণে প্রচার ধর্মী ও অপ্রচার ধর্মী ধর্মের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেন, ‘যে সকল ধর্মের প্রবর্তকগণ ও তাদের অনুসারীগণ নিজেদের ধর্ম বিশ্বাসের প্রচার ও বিধর্মী অবিশ্বাসীদের নিজ ধর্মে দিক্ষিত করাকে অত্যন্ত পবিত্র দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে মনে করেন, ধর্ম প্রচার সম্পর্কে নৈতিক দায়িত্ববোধ ইসলামের ইতিহাসে পরবর্তী যুগের কোন নতুন সংযোজন নয়। শুরু থেকেই এ ব্যাপারে বিশ্বাসীদের প্রতি সুস্পষ্ট নির্দেশ আছে।[১]
‘ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠা’-এর পরিচয়কে আমরা দুই ভাবে আলোচনা করতে পারি। যথা : ১. ইসলামের প্রচার ২. ইসলামের প্রতিষ্ঠা। একটি অপরটির পরিপূরক। একটি ছাড়া অপরটি বাস্তবায়ন করা কখনো সম্ভব নয়। নিম্নে উভয় প্রকারের পরিচয় তুলে ধরা হল:
১. ইসলামর প্রচার (دعوة الإسلام)
ইসলামী দাওয়াত চিরন্তন ও শাশ্বত। আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে মুসলিম উম্মাহর জন্য এটি একটি ফরয কাজ। যুগে যুগে সকল নবী-রাসূলই পৃথিবীতে ইসলামী জীবনবিধান প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষদেরকে নিরলসভাবে দাওয়াত দিয়েছেন। উম্মাতে মুহাম্মাদী হিসেবে তাদেরকেও এ কাজে অংশগ্রহণ করা ঈমানের অপরিহার্য দাবী। এছাড়া প্রকৃত মুসলিম হিসাবে জীবনযাপন করার জন্যও দাওয়াতী কাজের কোন বিকল্প নেই। এজন্য ইসলামে এটিকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।
দা‘ওয়াত (الدعوة) অর্থ ডাকা, আহ্বান করা, আমন্ত্রণ জানানো, নিমন্ত্রণ করা, প্রচার করা, প্রার্থনা করা, সাহায্য কামনা করা ইত্যাদি। ‘আল-মু‘জামুল ওয়াসীত্ব’ গ্রন্থকার বলেন, دعا إلي الدين ‘দ্বীনের দিকে আহ্বান করা’।[২] এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Missionary Activity, Missionary Work, Propaganda. [৩]
পরিভাষায় কোন ব্যক্তির নিজস্ব মতবাদ, চিন্তাধারা বা জীবন প্রণালীর দিকে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে অন্যকে আহ্বান করা, সে আহ্বান মেনে নিতে প্রভাবিত করা, মেনে নেয়ার পর সেটি বাস্তব জীবনে চর্চার দিল-নির্দেশনা দানের যাবতীয় প্রচেষ্টাকে দাওয়াহ বলা হয়।
ক. শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) (৬৬১-৭২৮ হি./১২৬৩-১৩২৮ খ্রি.) বলেন,
اَلدَّعْوَةُ إلَى اللهِ هِيَ الدَّعْوَةُ إلَى الْإِيْمَانِ بِهِ وَبِمَا جَاءَتْ بِهِ رُسُلُهُ بِتَصْدِيْقِهِمْ فِيْمَا أَخْبَرُوْا بِهِ وَطَاعَتِهِمْ فِيْمَا أَمَرُوْا
‘আল্লাহর দিকে দাওয়াত হচ্ছে আল্লাহর প্রতি ও তাঁর রাসূলগণ যা নিয়েছেন তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন, তারা যে সব বিষয়ের সংবাদ দিয়েছেন সেগুলো সত্য বলে স্বীকৃতি দেয়া এবং যেসব তারা আদেশ করেছেন সেসব বিষয়ে তাদের আনুগত্য করার দিকে আহ্বান করা’।[৪]
খ- শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-‘উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) (১৩৪৭-১৪২১ হি./১৯২৮-২০০১ খ্রি.) বলেন, ‘এটা হচ্ছে উত্তম চরিত্র, সৎ আমল, পারস্পরিক অধিকারসমূহের সংরক্ষণ এবং প্রাপকের যথাযথ হক ও যথোপযুক্ত মর্যাদা দানের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ইনসাফ বা ন্যায়-নীতি প্রতিষ্ঠার দিকে আহ্বান জানানো। যাতে পূর্ণাঙ্গ আক্বীদা ও শরী‘আতের বিধি-বিধান উন্নত ও প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বাতিল আক্বীদা, জাহিলাী নিয়ম-কানুন ও নিকৃষ্ট বিধানসমূহ দূরীভূত হয়’।[৫]
গ- ড. রউফ শালাবীর মতে, ‘দাওয়াহ হলো সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলন। যার দ্বারা মানবসমাজকে কুফুরী হতে ঈমানী অবস্থায়, অন্ধকার হতে আলোতে এবং জীবনে সংকীর্ণতা হতে পার্থিব ও পারলৌকিক জীবনের প্রশস্ত অবস্থায় রূপান্তরিত করা হয়’।[৬]
ঘ- ড. খলীফা হুসাঈন আল ‘আসসাল বলে, ‘মানুষের ইহ ও পরকালৌকিক কল্যাণের লক্ষ্যে ইসলামে বর্ণিত সকল কল্যাণময় বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করা এবং সকল মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখার কাঝে সুভিজ্ঞ ব্যক্তিগণের সকল কর্মতৎপরতার নাম হল ইসলামী দাওয়াহ। ‘কথা ও কাজের মাধ্যমে মানুষকে কোন বিষয়ের প্রতি আকৃষ্ট করাকে দা‘ওয়াহ বলা হয়’।[৭]
আধুনিক অভিধানগুলোতে যে কোন ধর্ম বা ভাল-মন্দ যে কোন লক্ষ্য অর্জন সম্পর্কিত প্রচার-প্রচারণা অর্থে দাওয়াহ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। ফলে দাওয়াহ যে কোন মত বা পথের দিকে হতে পারে। ইসলামের দৃষ্টিতে সকল প্রকার দাসত্ব, মত ও পথ পরিহার করে কেবল আল্লাহর দাসত্ব বা গোলামী করার আহ্বানকে ইসলামী দাওয়াহ বলা হয়। অন্যকথায় আল্লাহর দ্বীনের প্রচার-প্রসারের লক্ষ্যে ইসলামের বিধি-বিধান অন্যের নিকট পৌঁছে দেয়ার জন্য নিজের বাকশক্তি এবং কর্মক্ষমতাকে সার্বিকভাবে প্রয়োগ করাকে ইসলামী দাওয়াহ বলা হয়।
দাওয়াতের আরো একটি মৌলিক পরিভাষা হচ্ছে তাবলীগ। এ দু’টি শব্দ একটি অন্যটির পরিপূরক। যেমন- দাওয়াত অর্থ ডাকা এবং তাবলীগ অর্থ পৌঁছে দেয়া।[৮] যুগে যুগে নবী-রাসূলগণ আল্লাহর পক্ষ থেকে আনীত বিধান মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ مَا عَلَی الرَّسُوۡلِ اِلَّا الۡبَلٰغُ الۡمُبِیۡنُ ‘এবং রাসূলের উপর দা‘ওয়াত সুস্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া ছাড়া আর কোন দায়িত্ব নেই’ (সূরা আন নূর : ৫৪)।
২. ইসলামের প্রতিষ্ঠা (إقامة الدين)
পৃথিবীর সকল নবী-রাসূল ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজ করে গেছেন। আল-কুরআনের আয়াতে বিশেষ বিশেষ নবী-রাসূলের নাম উল্লেখ করা হলেও এই প্রত্যাদেশ প্রত্যেক নবী-রাসূলের উপরই নাযিল করা হয়েছিল। সবশেষে মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর প্রতিও একই নির্দেশ দেয়া হয়। তিনিও সেই নির্দেশ পূর্ণাঙ্গভাবেই বাস্তবায়ন করে গেছেন।
প্রথমে ‘ইকামাত’ (إقامة) ও ‘দ্বীন’ (الدين) এই দু’টি শব্দের অর্থ জানা যরূরী। আরবী ‘ইকামাত’ শব্দের অর্থ প্রতিষ্ঠা করা, স্থাপন করা, দাঁড় করানো ইত্যাদি।[৯] আর ‘দ্বীন’ শব্দের অর্থ জীবন ব্যাবস্থা, নিয়ম-কানুন, বিধি-বিধান ইত্যাদি।[১০] দ্বীন (الدين) শব্দটি আরবী دان (দানা) হতে নির্গত। এটি সমাপিকা ক্রিয়া ও অসমাপিকা ক্রিয়া হিসাবে ব্যবহৃত হয়। ফলে শব্দটি বিভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে। এজন্য যখন ‘দ্বীন’ শব্দটি সমাপিকা ক্রিয়া হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তখন নিম্নোক্ত অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন, পরাক্রমশীলতা, কোনো কিছু জোর করে চাপিয়ে দেয়া; আধিপত্য, রাজত্ব, বাদশাহী; পুরস্কার, বৃত্তি, স্কলারশিপ, প্রতিদান; বিচার, হিসাব-নিকাশ, গণনা; আনুগত্য, বাধ্যগত, অনুগত; অভ্যাস, আচার-আচরণ; দাসত্ব, লাঞ্ছনা, নিয়ন্ত্রণ; সম্মান, সম্ভ্রম। অবাধ্যতা, আনুগত্যহীন, সেবা, পরিচর্যা, কর্তৃত্ব, শাসন, অবস্থা। আর যখন অসমাপিকা ক্রিয়া হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তখন এর সাথে কোন কোন অব্যয় যোগ করে একে সমাপিকা ক্রিয়া করা হয়। আর তখন অব্যয়ভেদে এর অর্থ হয়। ১. নিয়ম-নীতি, মাযহাব, পথ বা পন্থা হিসবে মেনে নেয়া। ২. আনুগত্য ও বিনয়-নম্রতা।[১১]
الدين শব্দটি সমাপিকা ক্রিয়া বা অসমাপিকা ক্রিয়া যেভাবেই ব্যবহৃত হোক না কেন, উপরিউক্ত অর্থগুলোর মাঝে পারস্পরিক একটা সম্পর্ক রয়েছে। দেখা যাচ্ছে যে, সকল ক্ষেত্রেই ‘আনুগত্য ও বশ্যতা স্বীকার’ অর্থটি প্রকাশ করছে।[১২] যেমনটি ড. সা‘উদ ইবনু ‘আব্দিল ‘আযীয আল-খালাফ বলেন,
أن الدين يتضمن علاقة بين إثنين فيها إنقياد وخضوع وتسلط وقهر من أحدهما للأخر
‘যখন কোথাও আনুগত্য ও বশ্যতা পাওয়া যাবে সেখানেই কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা থাকবে। যার মাধ্যমে এ আনুগত্য ও বশ্যতা পাওয়া সম্ভব।[১৩]
‘দ্বীন’-এর পারিভাষিক অর্থে মুসলিম গবেষকগণ ‘দ্বীন’-এর পরিপূর্ণ সংজ্ঞা দিয়েছেন। কারণ তারা ‘দ্বীন’-কে বুঝেছেন কুরআন, সুন্নাহ ও বিভিন্ন দ্বীনের বাস্তবতা থেকে। তাদের সংজ্ঞাসমূহের মধ্যে প্রসিদ্ধ হচ্ছে, ‘আনুগত্য ও ‘ইবাদতের উপযুক্ত একমাত্র আল্লাহর উপর বিশ্বাসের নাম দ্বীন’।[১৪] উল্লেখ্য, دين শব্দটির পূর্বে যখন ال দ্বারা নির্দিষ্ট করা হয়, তখন তা দ্বারা শুধু ইসলামকেই নির্দিষ্ট করা হয়। এজন্যই আল-কুরআন ও সুন্নাহয় বর্ণিত دين শব্দটির পূর্বে ال অব্যয় দ্বারা বিশেষিত করা হয়েছে। যার মৌলিক উদ্দেশ্য হলো ইসলাম। তাই অহী বা প্রত্যাদেশের মাধ্যমে প্রাপ্ত অহির বিধানকে দ্বীন বলা হয়।[১৫]
ইসলামী পরিভাষায় ইসলামী জীবন ব্যাবস্থাকে ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় জীবন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠা করাকে ইক্বামতে দ্বীন বা ইসলাম প্রতিষ্ঠা বলে। অর্থাৎ ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলামী জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাই হল ইক্বামতে দ্বীন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
شَرَعَ لَکُمۡ مِّنَ الدِّیۡنِ مَا وَصّٰی بِہٖ نُوۡحًا وَّ الَّذِیۡۤ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلَیۡکَ وَ مَا وَصَّیۡنَا بِہٖۤ اِبۡرٰہِیۡمَ وَ مُوۡسٰی وَ عِیۡسٰۤی اَنۡ اَقِیۡمُوا الدِّیۡنَ وَ لَا تَتَفَرَّقُوۡا فِیۡہِ ؕ کَبُرَ عَلَی الۡمُشۡرِکِیۡنَ مَا تَدۡعُوۡہُمۡ اِلَیۡہِ ؕ اَللّٰہُ یَجۡتَبِیۡۤ اِلَیۡہِ مَنۡ یَّشَآءُ وَ یَہۡدِیۡۤ اِلَیۡہِ مَنۡ یُّنِیۡبُ
‘তিনি তোমাদের জন্য দ্বীনের সে পথই বিধিবদ্ধ করেছেন, যার নির্দেশ তিনি নূহকে দিয়েছিলেন এবং যা আমরা প্রত্যাদেশ করেছি আপনার প্রতি; এছাড়া আমরা যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা ও ঈসাকে এই মর্মে যে, আপনারা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করুন এবং এর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করবেন না। আপনি মুশরিকদেরকে যে বিষয়ের দিকে আহ্বান করেন, তা তাদের নিকট দুঃসাধ্য মনে হয়। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা দ্বীনের প্রতি মনোনীত করেন এবং যে তাঁর অভিমুখী হয়, তাকে তিনি দ্বীনের পথে পরিচালিত করেন’ (সূরা আশ-শূরা : ১৩)।
উপরিউক্ত আয়াতের اَنۡ اَقِیۡمُوا الدِّیۡنَ তথা দ্বীন ক্বায়েম বা ইসলাম প্রতিষ্ঠার পরিচয় প্রদান করে বিভিন্ন উলামায়ে কিরামের বক্তব্য নিম্নে উল্লেখ করা হল:
(এক) ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) (মৃ. ৬৮ হি.) বলেন, أَنِ اتَّفِقُوْا فِى الدِّيْنِ ‘তোমরা দ্বীনের ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ থাক’।[১৬]
(দুই) প্রখ্যাত মুফাসসির ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) (মৃ. ৪০৬ হি.) বলেন,
هُوَ تَوْحِيْدُ اللهِ وَطَاعَتُهُ وَالْإِيْمَانُ بِرُسُلِهِ وَكُتُبِهِ وَبِيَوْمِ الْجَزَاءِ وَبِسَائِرِ مَا يَكُوْنُ الرَّجُلُ بِإِقَامَةٍ مُسْلِمًا
‘দ্বীন প্রতিষ্ঠা কর’ অর্থ হল আল্লাহ্র তাওহীদ ও তাঁর আনুগত্য প্রতিষ্ঠা কর। এছাড়া রাসূলগণের উপরে, কিতাব সমূহের উপরে, ক্বিয়ামত দিবসের উপরে এবং একজন মানুষকে মুসলিম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত কারার জন্য যেসব বিষয় প্রয়োজন সবকিছুর উপরে ঈমান আনয়ন কর’। অতঃপর তিনি সকল নবী-রাসূলের দ্বীন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন, ‘দ্বীনের মূলনীতি সমূহ, শরী‘আত যাতে পৃথক করেনি। আর তা তাওহীদ, ছালাত, যাকাত, ছিয়াম, হজ্জ, সৎ আমলের মাধ্যমে আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভ করা, অন্তরে যা উদিত হয় তার দ্বারা নৈকট্য হাছিল করা এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে তাঁর দিকে রুজু করা। সত্যবাদিতা, অঙ্গীকার পূরণ করা, আমানত ফেরত দেয়া, আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখা। এছাড়া কুফুরী, হত্যা, যেনা এবং সৃষ্টিকে যেকোনভাবে কষ্ট দেয়াকে হারাম মনে করা। অনুরূপ যেকোনভাবে প্রাণীর উপর অত্যাচার করা, নিকৃষ্ট কাজে প্রবৃত্ত হওয়া এবং যে সমস্ত কর্ম মনুষ্যত্ব নষ্ট করে সেগুলোকে হারাম মনে করা। এগুলো সবই শরী‘আত, একই দ্বীন এবং একই মিল্লাতভুক্ত। নবীগণের মুখে এগুলো পৃথকভাবে বর্ণিত হয়নি; যদিও তাঁদের সংখ্যা অনেক ছিল। আর এটাই আল্লাহ্র কথা ‘আপনারা দ্বীন কায়েম করুন; এর মধ্য বিভেদ সৃষ্টি করবেন না’।[১৭]
(তিন) হাফেয ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) (৭০১-৭৭৪ হি.) বলেন,
الدِّيْنُ الَّذِىْ جَائَتْ بِهِ الرُّسُلُ كُلُّهُمْ هُوَ عِبَادَةُ اللهِ وَحْدَهُ لَاشَرِيْكَ لَهُ وَإِنِ اخْتَلَفَتْ شَرَائِعُهُمْ وَمَنَاهِجُهُمْ
‘ঐ দ্বীন যা নিয়ে রাসূল আগমন করেছিলেন। তা হল এক আল্লাহর ইবাদত করা, যার কোন শরীক নেই। যদিও তাঁদের শরী‘আত ও কর্মধারা পৃথক ছিল’।[১৮]
(চার) ইমাম মুহাম্মাদ আবূ জা‘ফর আত-তাবারী (মৃ. ৩১০ হি.) বলেন, أَنِ اعْمَلُوْا بِهِ عَلَى مَا شُرِعَ لَكُمْ وَفُرِضَ ‘তোমাদের উপর যা বিধিবদ্ধ করা হয়েছে এবং যা ফরয করা হয়েছে তার উপর আমল কর’। তিনি ক্বাতাদার উক্তি পেশ করে বলেন, ‘হালাল গ্রহণ এবং হারাম বর্জন’ করার মাধ্যমে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করুন।[১৯]
(পাঁচ) ইমাম শাওকানী (রাহিমাহুল্লাহ) (১১৭২-১২৫০ হি.) বলেন, تَوْحِيْدُ اللهِ وَالْإِيْمَانُ بِهِ وَطاَعَةُ رُسُلِهِ وَقَبُوْلُ شَرَائِعِهِ ‘তা হল আল্লাহ্র তাওহীদ ও তাঁর প্রতি ঈমান আনা, তাঁর রাসূলগণের উপর ঈমান আনা ও আল্লাহ্র শরী‘আত সমূহ কবুল করা’।[২০]
(ছয়) ‘আব্দুর রহমান ইবনু নাছির আস-সা‘দী (রাহিমাহুল্লাহ) (১৩০৭-১৩৭৬ হি.) বলেন,
أَنْ تُقِيْمُوْا جَمِيْعَ شَرَائِعِ الدِّيْنِ أُصُوْلَهُ وَفُرُوْعَهُ تُقِيْمُوْنَهُ بِأَنْفُسِكُمْ وَتَجْتَهِدُوْنَ فِىْ إِقَامَتِهِ عَلَى غَيْرِكُمْ وَتَعَاوَنُوْنَ عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلاَ تَعَاوَنُوْنَ عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ
‘তোমরা মূল ও শাখাসহ দ্বীনের সকল বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা কর। তোমরা তাকে নিজেদের উপর প্রতিষ্ঠা কর এবং অন্যদের উপর প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা কর। নেকী ও তাক্বওয়ার কাজে পরষ্পরকে সাহায্য কর। অন্যায় ও গোনাহের কাজে কাউকে সাহায্য কর না’।[২১]
(সাত) সাইয়িদ কুতুব (রাহিমাহুল্লাহ) (১৯০৬-৬৬ খ্রি.) বলেন, ‘সকল মাক্কী সূরার ন্যায় এ সূরাটিও আক্বীদা বিষয়ে বক্তব্য রেখেছে। তবে এ সূরাটিতে বিশেষভাবে অহী ও রিসালাতের বিষয়ে দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়েছে। বরং যথার্থভাবে বলতে গেলে বলতে হয় যে, এটাই হলো এ সূরার মুখ্য এবং প্রতিপাদ্য বিষয় (اَلْمِحْوَرُ الرَّئِيْسِىُّ)। অতঃপর ‘আক্বীমুদ্দীন’-এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘আমরা সূরার প্রথমে যে সারমর্ম ব্যাখ্যা করেছি, সেই হাক্বীক্বত বা সারবস্তুকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই এখানে নির্দেশ করা হয়েছে। ... আর সেটা হলো ‘তাওহীদের হাক্বীক্বত’ (حَقِيْقَةُ التَّوْحِيْدِ)।[২২]
অতএব এ কথা সুস্পষ্ট যে, ‘দ্বীন’ অর্থ ‘তাওহীদ’। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা নবী-রাসূলদেরকে আক্বীদা ও আমল ভিত্তিক যে সমস্ত বিধি-বিধান দিয়েছেন, সেগুলোর সমষ্টিই হল দ্বীন বা ইসলাম। আর একক স্রষ্টা হিসাবে কেবল আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে সেই দ্বীন পালন করাই হল ‘তাওহীদ’ প্রতিষ্ঠা করা। মূলত দ্বীনের মূল চেতনাই হল তাওহীদ। তাই দ্বীনের সামগ্রিক বিষয়গুলো সেই তাওহীদী চেতনার উপর ভিত্তি করেই বাস্তবায়িত হবে।[২৩]
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
* প্রভাষক, দেওগাঁ রহমানিয়া ফাযিল ডিগ্রী মাদরাসা, ঘোড়াঘাট, দিনাজপুর।
তথ্যসূত্র :
[১]. মূল টি. ডব্লিউ.আর্নল্ড অনুবাদ মোঃ সিরাজ মান্নান, ইব্রাহীম ভুঁইয়া, দি প্রিচিং অব ইসলাম (ইসলাম প্রচারের ইতিহাস) (ঢাকা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ১ম সংস্করণ, ২০১২ খ্রি.), পৃ. ২৩-২৪।
[২]. ইবরাহীম মোসতফা ও তার সাথীবৃন্দ, আল-মু‘জামুল ওয়াসীত (ঢাকা : আল-মাকতাবাতুল ইসলামিয়্যাহ, তা.বি.), পৃ. ২৯৬।
[৩]. Jm. Cowan, The Hanswer Dictionary of modern Written ( Newyork, 1976 A.D.), p . 283.
[৪]. শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ, মাজমূ‘ঊল ফাতাওয়া, ১৫তম খণ্ড, পৃ. ১৫৭।
[৫]. ‘আলী ইবন নাইফ আশ-শুহূদ, আল-মুফাসসাল ফী ফিকহিদ দা‘ওয়াহ ইলাল্লাহি তা‘আলা (প্রকাশস্থান, প্রকাশ ও তারিখ বিহীন), পৃ. ২১০।
[৬]. ড. রউফ শালাবী, সাইকোলূজিয়াতুর রায় ওয়াদ দা‘ওয়াহ ( বৈরূত : দারুল উলূম, ১৯৮২ খ্রি.), ৪৯।
[৭]. ড. খলীফা হুসাঈন আল আসসাল, মা‘আলিমুদ দা‘ওয়াতিল ইসলামিয়্যাহ ফী আহাদিহাল মাক্কী, ১ম খণ্ড (কায়রো : দারত তবিা‘আতিল মোহাম্মাদিয়া ১৯৮৮ খ্রি.) , পৃ. ১৯।
[৮]. ড. মুহাম্মদ ফজলুর রহমান, আল-মু‘জামুল ওয়াফী (আধুনিক আরবী-বাংলা অভিধান) (ঢাকা : রিয়াদ প্রকামনী, ২০১৬ খ্রি.), পৃ. ২৪৯।
[৯]. আল-মু‘জামুল ওয়াফী, পৃ. ১৩৩।
[১০]. তদেব, পৃ. ৪৮২।
[১১]. লিসানুল আরব, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৪৫৮-৪৬২; মুহাম্মাদ ইবন্ ফারেস, মু‘জামু মাক্বাইসুল লুগাহ, ১ম খণ্ড (বৈরূত : তা.বি.), পৃ. ৩৪২; ইসমাঈল ইবনে হাম্মাদ আল-জাওহারী, আস-সিহাহ, ৫ম খণ্ড (বৈরূত : দারুল গারব, তা.বি.), পৃ. ২১১৮; মুহাম্মাদ ইবনু ইয়া‘কূব আল-ফীরোযাবাদী, আল-কামূসুল মুহীত্ব (বৈরূত : মুওয়াস্সাসাতুর রিসালাহ, তা.বি.), পৃ. ১৫৪৬।
[১২]. মু‘জামু মাক্বায়িসিল লুগাহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩১৯।
[১৩]. সা‘উদ ইবন্ আব্দুল আযীয আল-খালাফ, দিরাসাতুন ফিল আদইয়ান আল-ইয়াহূদিয়্যাহ ওয়ান নাসরানিয়্যাহ (রিয়াদ : মাকতাবাতু আযওয়াইস সালাফ, ১ম সংস্করণ, ১৪২২ হি.), পৃ. ৯; ড. আব্দুল্লাহ দারায, আদ-দ্বীন (কুয়েত : দারুল কালাম, ১৪১০ হি.), পৃ. ৩১।
[১৪]. আদ-দ্বীন, পৃ. ৩১।
[১৫]. তদেব, পৃ. ৩১।
[১৬]. ‘আব্দুল্লাহ ইবন ‘আব্বাস, তানভীরুল মিক্ববাস মিন তাফসীরি ইবনি ‘আব্বাস (লিবানন : দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, তা.বি.), পৃ. ৪০৭।
[১৭]. আবূ ‘আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ শামসুদ্দীন কুরতুবী, আল-জামি‘ঊ লি আহকামিল কুরআন (তাফসীরে কুরতুবী), ১৬শ খণ্ড (রিয়াদ : দারু ‘আলামিল কুতুব, ১৪২৩ হি./২০০৩ খ্রি.), পৃ. ১০-১১; আবুল কাসিম মাহমূদ ইবনু ‘উমার আয-যামাখশারী আল-খাওয়ারিযমী, আল-কাশশাফ ‘আন হাক্বাইক্বিত তানযীল ওয়া উয়ূনিল আক্বাবিল ফী উজূহিত তা’বীল, ৪র্থ খণ্ড (বৈরূত : দারু ইহইয়াইত তুরাছ আল-আরাবী, তা.বি.), পৃ. ২১৯।
[১৮]. আবুল ফিদা ইসমাঈল ইবনু কাছীর আদ-দিমাস্কী, তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, ৭ম খণ্ড (বৈরূত : দারুল কাতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, ১ম সংস্করণ, ১৪১৯ হি.), ১৭৮।
[১৯]. মুহাম্মাদ ইবনু জারীর আবূ জা‘ফর আত-তাবারী, জামিঊল বায়ান ফী তা’বীলিল কুরআন, ২১শ খণ্ড (বৈরূত : মুওয়াসসাসাতুর রিসালাহ, ১ম সংস্করণ, ১৪২০ হি./২০০০ খ্রি.), পৃ. ৫১৩।
[২০]. মুহাম্মাদ ইবনু ‘আলী ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ‘আব্দিুল্লাহ আশ-শাওকানী, ফাৎহুল ক্বাদীর, ৪র্থ খণ্ড (দামেস্ক : দারু ইবনি কাছীর, ১ম সংস্করণ, ১৪১৪ হি.), পৃ. ৬০৭।
[২১]. ‘আব্দুল রহমান ইবনু নাছির আস-সা‘দী, তাইসীরুল কারীমির রহমান ফী তাফসীরি কালামিল মান্নান (বৈরূত : মুওয়াসসাসাতুর রিসালাহ, ১ম সংস্করণ, ১৪২০ হি./২০০০ খ্রি.), পৃ. ৭৫৪।
[২২]. সাইয়িদ কুতুব, ফী যিলালিল কুরআন, ৫ম খণ্ড (বৈরূত : দারুশ শুরূক্ব, ১০ম সংস্করণ, ১৪১২ হি./১৯৮২ খ্রি), পৃ. ৩১৪৬-৪৭।
[২৩]. ড. মুযাফফর বিন মুহসিন, ভ্রান্তির বেড়াজালে ইক্বামতে দ্বীন (২য় সংস্করণ, ২০১৪), পৃ. ২২৭।