মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০১:০১ পূর্বাহ্ন

এমফিল ও পিএইচডি : গবেষণার প্রকৃতি ও পদ্ধতি

-ড. মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ*


বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষা বলতে এমফিল ও পিএইচডি গবেষণা প্রচলিত আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে মূলত জ্ঞান উৎপাদন ও বিতরণ করা হয়। একজন গবেষকের কাজ হলো বিশ্ব স্বীকৃত পন্থায় বিদ্যমান জ্ঞানের ভেতরগত ত্রুটি নির্ণয় করে তা পরিশোধন ও উন্নয়ন করা এবং বিদ্যমান জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করা। এ জন্য গবেষককে হতে হয় অনুসন্ধিৎসু মনের অধিকারী; ফলে গবেষকের প্রধান কাজ হচ্ছে প্রথমত প্রচুর পরিমাণে অধ্যয়ন করা। বর্তমান একবিংশ শতাব্দীতে ধর্ম, সমাজ, রাষ্ট্র ও পরিবেশের আলোকে গবেষণার চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। গবেষণা ছাড়া টেকসই উন্নয়নের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না। ফলে গবেষণার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। যদিও আমাদের দেশে গবেষণাকে স্বীকৃত পেশা হিসাবে স্বীকার করা হয় না। গবেষকরা দেশ ও জাতির অমূল্য সম্পদ, জাতির গৌরব। গবেষক পৃথিবীর সকল বিষয় নিয়ে চিন্তা করবেন না, তবে যে বিষয় নিয়ে চিন্তা করবেন তার আদ্যপ্রান্ত সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর ফলাফল বের করে আনবেন, আনার চেষ্টা করবেন। নতুন জ্ঞান সৃষ্টিই গবেষকের কাজ। তারা গবেষণালব্ধ ফলাফল দিয়ে দেশ ও জাতি গঠনে শক্তি ও সাহস সঞ্চয়ন করেন এবং রাষ্ট্রকে আধুনিক কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য উৎসাহ-উদ্দীপনা জোগান। সুতরাং গবেষণাকর্মগুলো আমাদের জাতীয় জীবনে বিশেষ করে দেশপ্রেম, সুনাগরিক ও শোষণমুক্ত সমাজগঠনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অবদান রাখে। ইসলামের মৌলিক বিষয়াবলীর সঠিক অবয়বের বিচ্যুতিজনিত হুমকি খেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে গবেষণা চমৎকারভাবে ভূমিকা পালন করে। মানুষের যাপিত জীবনে ব্যক্তিগত আক্বীদা, বিশ্বাস ও ধর্ম চর্চার গতি-প্রকৃতির বহুমাত্রিকতা বিশ্লেষণে আল-কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর পথে বিশুদ্ধ পন্থায় চলতে আলোকবর্তিকার মত পথ দেখায়।*

গবেষণামূলক উচ্চশিক্ষার স্তর

বর্তমানে বাংলাদেশে গবেষণামূলক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে উচ্চশিক্ষার স্তর হচ্ছে এমফিল ও পিএইচডি এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেড় বছর মেয়াদি এমএএস ডিগ্রি চালু আছে। যা সম্পন্ন করলে এমফিল না করেই পিএইচডিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ আছে। বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে ২ বছর মেয়াদি (সর্বোচ্চ ৩ বছর) এমফিল ডিগ্রি এবং ৩ বছর মেয়াদি (সর্বোচ্চ ৫ বছর) মেয়াদি পিএইচডি কোর্স চালু আছে। এসব ডিগ্রি দেশ ও দেশের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও অর্জন করা যেতে পারে। ইতোমধ্যে দেশের একমাত্র আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কামিল পাশ করে নির্দিষ্ট স্কোর নিয়ে শিক্ষার্থীরা এই কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে পারবে।

গবেষণার বিষয়

প্রকৃতপক্ষে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কলা, সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও বাণিজ্যসহ মোটামুটি সব বিষয়ের ওপর গবেষণা হচ্ছে এবং গবেষকরা তাদের গবেষণার মাধ্যমে উত্তরোত্তর গবেষণার পরিধি সম্প্রসারিত করছেন। একজন গবেষক কোন্ বিষয়ের ওপর গবেষণা করবেন সেটা নির্ভর করে তার ব্যক্তিগত চাহিদা এবং একাডেমিক বিষয়ের ওপর; যে বিষয়ে তিনি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করছেন অথবা অন্য অনুষদ ও বিভাগ থেকেও করা যেতে পারে যদি সেটা তার বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্য হয়।  তবে গবেষকের কোন বিষয়ের প্রতি ঝোঁক আছে, তিনি কী নিয়ে কাজ করতে চান, গবেষণার বিষয় নির্ধারণে সেই বিশেষ বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব প্রদান করা উচিত। এতে গবেষণা চলাকালীন হতাশায় ধৈর্য ধরে টিকে থাকা ও পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সহজ হয়। গবেষণার গুণগতমানও ভালো হয়।

গবেষণা প্রার্থীর করণীয়

গবেষণা প্রার্থীর প্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হচ্ছে সুপারভাইজার বা গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক নির্বাচন, যার তত্ত্বাবধানে থেকে গবেষণা প্রার্থী তার গবেষণার কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন। সুপারভাইজার গবেষণা প্রার্থীর গবেষণার বিষয় ঠিক করে দিবেন, গবেষণার কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করবেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করবেন। তাই প্রার্থীকে সুপারভাইজার নির্বাচন করতে হবে নিজ প্রচেষ্টার মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে বিবেচনার বিষয় হচ্ছে তত্ত্বাবধায়কের গবেষণার ক্ষেত্র, গবেষণার ব্যাপারে তার ইচ্ছা, আগ্রহ সর্বোপরি তার যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা।  এ ক্ষেত্রে সম চিন্তার হলে ভাল হয়।

কোথায় গবেষণা করবেন

বাংলাদেশে বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা প্রায় ৫৮টির মত। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে গবেষণা কোর্স চালু না হলেও পুরোনো প্রথম সারির ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মূলত এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি প্রদানের জন্য উপযুক্ত। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম। এ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গবেষণার কাজ হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত গবেষণা ইনস্টিটিউট সমূহে। ইনস্টিটিউট এবং বিভাগগুলোর মাধ্যমে এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

গবেষণার সুফল

একজন গবেষক তার গবেষণাকর্ম সুচারুরূপে সম্পন্ন করতে পারলে তিনি নিজে যেমন উপকৃত হবেন, পাশাপাশি দেশ ও জাতিগঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন। গবেষণাকাজে তার পরিশ্রমপ্রিয়তা তাকে অন্যান্য গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করবে। এভাবেই তিনি হয়ে উঠবেন একজন প্রতিভাবান গবেষক। গবেষণার নির্ধারিত বিষয়ে তিনি বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠবেন।

ভর্তির প্রাথমিক যোগ্যতা

দেশের প্রথমসারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এমফিল ও পিএইচডিতে ভর্তির যোগ্যতা প্রায় একই রকম; তবে বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে কিছুটা তারতম্য আছে। এর মধ্যে মূল ধারার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা তুলে ধরা হলো।

১- এমফিল প্রোগ্রাম

১. ভর্তির যোগ্যতা: (ক) চার বছর মেয়াদি স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অথবা ফাযিল ডিগ্রি অথবা (খ) তিন বছর মেয়াদি স্নাতক বা ফাযিল সম্মান ও এক বছর মেয়াদি মাস্টার্স বা কামিল ডিগ্রি অথবা প্রার্থীদের সকল পরীক্ষায় কমপক্ষে ২য় বিভাগ/শ্রেণিসহ ন্যূনতম ৫০% নম্বর থাকতে হবে। ঈ.এ.চ.অ. নিয়ম থাকলে মাধ্যমিক/সমমান থেকে স্নাতক/স্নাতকোত্তর পর্যন্ত সকল পরীক্ষায় ঈ.এ.চ.অ. ৫-এর মধ্যে ৩.৫ অথবা ঈ.এ.চ.অ. ৪-এর মধ্যে ৩ থাকতে হবে।

২. মেয়াদ: এমফিল. প্রোগ্রামের মেয়াদ দুই বছর। প্রথম বর্ষ কোর্স ওয়ার্কস ও ২য় বর্ষ থিসিস। তবে এমফিল প্রোগ্রামের রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ সর্বোচ্চ ৪ (চার) বছর।

৩. কোর্স ও ক্লাস: সকল অনুষদের/ইনস্টিটিউটের এমফিল কোর্স পূর্ণকালীন কোর্স হিসেবে গণ্য হবে। এমফিল প্রোগ্রামে রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত গবেষকদের জন্য সর্বোচ্চ ২০০ নম্বরের দুই ইউনিট (প্রতি ইউনিট ১০০ নম্বর) অথবা চার ইউনিট (প্রতি ইউনিট ৫০ নম্বর) তত্ত্বীয় কোর্স ১ম বর্ষে সম্পন্ন করা আবশ্যিক। প্রতি কোর্সে ১০০ নম্বরের ইউনিটের জন্য ৪ ঘণ্টার এবং ৫০ নম্বরের ইউনিটের জন্য ২ ঘণ্টার পরীক্ষা দিতে হবে। এ ছাড়া ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষাও থাকবে। তত্ত্বীয় পরীক্ষায় পাস নম্বর গড়ে ৫০% এবং মৌখিক পরীক্ষায় পাস নম্বর ৫০%।

৪. ছুটি: চাকরিরত প্রার্থীদের ১ (এক) বছরের ছুটি নিয়ে এমফিল প্রোগ্রামে যোগদান করতে হবে। তবে কোনো আবেদনকারী যদি কোনো উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অথবা গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকেন, সে ক্ষেত্রে বিভাগের/ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কমিটির এবং সংশ্লিষ্ট অনুষদের সুপারিশের ভিত্তিতে একাডেমিক পরিষদ তা শিথিল করতে পারে।

৫. দ্বিতীয় বর্ষে ভর্তি: এমফিল ১ম বর্ষ উত্তীর্ণ গবেষকগণকে পরীক্ষার ফল প্রকাশের ১ (এক) মাসের মধ্যে ২য় বর্ষে ভর্তি হতে হবে।

৬. পুনঃভর্তি: কোনো এমফিল গবেষক ১ম বর্ষ পরীক্ষায় প্রথম বারে পাস করতে না পারলে অথবা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারলে অথবা কোর্স সমাপ্ত করতে না পারলে তত্ত্বাবধায়ক ও বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সুপারিশে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে শুধু একবার পুনরায় ভর্তি হয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এরপর আর পুনঃভর্তির সুযোগ থাকবে না। সংশ্লিষ্ট তত্ত্বাবধায়ক ও বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে উপাচার্য মহোদয় পুনঃভর্তির অনুমতি দিবেন।

৭. থিসিস জমা ও সময়বৃদ্ধি: (ক) এমফিল ১ম পর্বের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের ১ (এক) বছরের মধ্যে থিসিস জমা দিতে হয়। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেউ থিসিস জমা দিতে না পারলে তাকে সময়বৃদ্ধির নির্ধারিত ফরম সংগ্রহ করে তা সংশ্লিষ্ট বিভাগ/ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কমিটি ও সংশ্লিষ্ট অনুষদ সভার সুপারিশের পর অনুমোদনের জন্য বোর্ড অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ ও একাডেমিক পরিষদের সভায় উপস্থাপন করতে হবে।

(খ) কোনো গবেষকের থিসিস জমা দেয়ার সময় পার হয়ে গেলে তিনি তা জমা দানের জন্য তত্ত্বাবধায়ক ও বিভাগের/ইনস্টিটিউটের প্রধানের সুপারিশসসহ উপাচার্য মহোদয় বরাবর সাদা কাগজে আবেদন করলে উপাচার্য মহোদয় সিন্ডিকেটের ৬/১২/২০০১ তারিখের সিদ্ধান্ত বলে গবেষককে থিসিস জমা দেয়ার জন্য আরো ৬ (ছয়) মাস সময় বৃদ্ধির বিষয়ে বিবেচনা করতে পারেন।

(গ) এমফিল প্রোগ্রামে যোগদানের পর গবেষক ৩ শিক্ষাবর্ষের মধ্যে থিসিস জমা দিতে না পারলে ২০০০ টাকা এবং ৫ শিক্ষাবর্ষের মধ্যে জমা দিতে না পারলে ৪০০০ টাকা বিলম্ব ফিস দিয়ে তা জমা দিতে পারবেন।

৮. বৃত্তি: এমফিল প্রোগ্রামে প্রতি শিক্ষাবর্ষে আবেদনকারীদের মধ্য থেকে মেধার ভিত্তিতে ইতিহাস বিভাগের জন্য নির্ধারিত একটি শেরেবাংলা বৃত্তিসহ মোট ৩৬টি বৃত্তি মাসিক ৩০০০ টাকা হারে মঞ্জুর করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ (আইবিএস) এর গবেষকদের মাসিক ১৫০০০ টাকা করে দেয়া হয়। তবে গবেষক চাকরিরত থাকলে অথবা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে বৃত্তি/আর্থিক সহযোগিতা পেলে এ বৃত্তি ভোগ করার যোগ্য বিবেচিত হবেন না। ২য় বর্ষে এই বৃত্তি নবায়নের ব্যবস্থা থাকবে। তবে বৃত্তিধারী গবেষক যদি প্রথম বর্ষে প্রথমবারে পাস করতে না পারেন তবে এই বৃত্তি নবায়ন করা হবে না।

২- পিএইচডি প্রোগ্রাম

১. ভর্তির শিক্ষাগত ও অন্যান্য যোগ্যতা: (ক) এমফিল পাস অথবা (খ) ৪ (চার) বছর মেয়াদি স্নাতক/ফাযিল/স্নাতক সম্মান ডিগ্রি এবং ১ (এক) বছর মেয়াদি মাস্টার্স/ কামিল ডিগ্রি। শিক্ষাজীবনে সকল পরীক্ষায় কমপক্ষে ২য় বিভাগ/শ্রেণি (ন্যূনতম ৫০% নম্বর) থাকতে হবে। C.G.P.A. নিয়ম থাকলে মাধ্যমিক/সমমান থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত সকল পরীক্ষায় C.G.P.A. ৫-এর মধ্যে ৩.৫ অথবা C.G.P.A.৪-এর মধ্যে ৩ থাকতে হবে। উল্লিখিত ন্যূনতম নম্বর বজায় রেখে সংশ্লিষ্ট বিভাগ/ইনস্টিটিউট/ পিএইচডি উপ-কমিটি/ অনুষদ নিজ নিজ ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করবে।

২. মেয়াদ: পিএইচডি প্রোগ্রামে রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ ৪ (চার) বছর। ২ (দুই) বছর পর থিসিস জমা দেয়া যায়। থিসিস জমা না হওয়া পর্যন্ত প্রতি বছর একই সময় রেজিস্ট্রেশন ফিস জমা দিতে হবে। সময়মতো রেজিস্ট্রেশন ফিস জমা না দিলে নিয়মানুযায়ী বিলম্ব ফিস প্রদান করতে হবে। খণ্ডকালীন পিএইচডি প্রোগ্রামে রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ ৫ (পাঁচ) বছর। ৪ (চার) বছর পরে থিসিস জমা দেয়া যাবে। তবে কোনো গবেষক যদি কাজ সম্পন্ন করে ৩ (তিন) বছরের শেষে থিসিস জমা দিতে চান তাহলে তত্ত্বাবধায়ক এবং বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সুপারিশসহ একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদন নিয়ে বিশেষ বিবেচনায় জমা দিতে পারবেন।

৩. এমফিল থেকে পিএইচডি প্রোগ্রামে স্থানান্তর: যে সকল প্রার্থী এমফিল ১ম বর্ষের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েছেন এবং ২য় বর্ষের মধ্যে আবেদন করছেন তাদেরকে গবেষণায় সন্তোষজনক অগ্রগতির ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়কের সুপারিশক্রমে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় একাডেমিক কমিটি, পিএইচডি উপ-কমিটি, অনুষদ সভার সুপারিশ এবং বোর্ড অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ ও একাডেমিক পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে এমফিল থেকে পিএইচডি প্রোগ্রামে স্থানান্তর করা যাবে।

৪. সময়বৃদ্ধি (উপাচার্যের ওপর অর্পিত ক্ষমতাবলে): গবেষকদের থিসিস জমা দেয়ার সময় রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে এবং থিসিস জমা দেয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকলে সে ক্ষেত্রে মাননীয় উপাচার্য অনূর্ধ্ব ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করতে পারবেন।

৫. পুনঃরেজিস্ট্রেশন: রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ (চার বছর) শেষ হলে আরও চার বছরের জন্য পুনরায় রেজিস্ট্রেশন করা যাবে।

৬. নতুনভাবে রেজিস্ট্রেশন: রেজিস্ট্রেশন এবং পুনরায় রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ (৪+৪=৮) আট বছর অতিক্রান্ত হলে নতুনভাবে রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা থাকবে।

৭. সেমিনার বক্তব্য: সকল অনুষদের বিভাগ এবং ইনস্টিটিউটসমূহের পিএইচডি গবেষকদের প্রতি বছর স্ব স্ব একাডেমিক কমিটির সম্মুখে একটি করে সেমিনার বক্তব্য দিতে হবে। এভাবে কমপক্ষে ২টি সেমিনার রিপোর্ট তত্ত্বাবধায়ক এবং বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সুপারিশসহ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের নিকট থিসিসের সঙ্গে জমা দিতে হবে। সেমিনার বক্তব্যের রিপোর্ট ছাড়া থিসিস জমা নেয়া হবে না।

৮. বৃত্তি: প্রতি শিক্ষাবর্ষে আবেদনকারীদের মধ্য থেকে মেধার ভিত্তিতে মোট ৫টি বৃত্তি মাসিক ৩০০০ (তিন হাজার) টাকা হারে মঞ্জুর করা হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ (আইবিএস) এ পিএইচডি গবেষকদের মাসিক ২০০০০ টাকা করে দেয় হয়ে। এর মাঝে কেউ ইউজিসির স্কলারশিপ পেলে তিনি মাসিক ৩০০০০ টাকা করে পেয়ে থাকেন। এ ছাড়াও ‘বঙ্গবন্ধু স্কলারশিপ’ এবং ‘প্রধানমন্ত্রী স্কলারশিপ’ পিএইচডি গবেষকদের পাঁচ বছর ব্যাপী মাসিক ২৫০০০ টাকা করে প্রদান করা হয়। তবে গবেষক চাকরিরত থাকলে অথবা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে বৃত্তি/আর্থিক সহযোগিতা পেলে, এ বৃত্তি ভোগ করার যোগ্য বিবেচিত হবে না। ২য় বর্ষে এই বৃত্তি নবায়নের ব্যবস্থা থাকবে।

* সহকারী অধ্যাপক (বিসিএস সাধারণ শিক্ষা), সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকা।




প্রসঙ্গসমূহ »: শিক্ষা-সংস্কৃতি
ইসলামে রোগ ও আরোগ্য (৪র্থ কিস্তি) - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী
ছয়টি মূলনীতির ব্যাখ্যা (৪র্থ কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
পরবর্তীদের তুলনায় সালাফদের ইলমের শ্রেষ্ঠত্ব (২য় কিস্তি) - অনুবাদ : আযহার বিন আব্দুল মান্নান
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (৪র্থ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
প্রচলিত তাবলীগ জামা‘আত সম্পর্কে শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের অবস্থান (শেষ কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির
ইসলামে পর্দার বিধান (২য় কিস্তি) - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
কুরআন মাজীদের উপর বিদ‘আতের আবরণ - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ইমাম মাহদী, দাজ্জাল ও ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আগমন সংশয় নিরসন (১৫তম কিস্তি) - হাসিবুর রহমান বুখারী
ইসলামে রোগ ও আরোগ্য (২য় কিস্তি) - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী
ইসলামে বিবাহের গুরুত্ব (৩য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আবূ সাঈদ
নফল ছালাত - আল-ইখলাছ ডেস্ক

ফেসবুক পেজ