নফল ছিয়াম
-আল-ইখলাছ ডেস্ক*
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ اَنۡ تَصُوۡمُوۡا خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ‘আর ছিয়াম তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জান’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৮৪)। অন্যত্র আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও নারী, মুমিন পুরুষ ও নারী, অনুগত পুরুষ ও নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও নারী, বিনয়াবনত পুরুষ ও নারী, দানশীল পুরুষ ও নারী, ছিয়ামপালনকারী পুরুষ ও নারী, নিজেদের লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী পুরুষ ও নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও নারী, তাদের জন্য আল্লাহ মাগফিরাত ও মহান প্রতিদান প্রস্তুত রেখেছেন’ (সূরা আল-আহযাব : ৩৫)।
আল্লাহর রাস্তায় একদিন ছিয়াম রাখার ফযীলত
عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَا مِنْ عَبْدٍ يَصُوْمُ يَوْمًا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ تَعَالَى إِلَّا بَاعَدَ اللهُ بِذَلِكَ الْيَوْمِ وَجْهَهُ عَنِ النَّارِ سَبْعِيْنَ خَرِيْفًا
আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে বান্দা আল্লাহর রাস্তায় (যুদ্ধের সময়) একদিন ছিয়াম পালন করবে আল্লাহ তা‘আলা তার চেহারাকে এ দিনের (ছিয়ামের) বারাকাতে জাহান্নামের আগুন থেকে সত্তর বছরের পথ দূরে রাখবেন।[১]
একদিন পরপর ছিয়াম পালন করার ফযীলত
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أَفْضَلُ الصَّوْمِ صَوْمُ أَخِيْ دَاوُدَ كَانَ يَصُوْمُ يَوْمًا وَيُفْطِرُ يَوْمًا
আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আমার ভাই দাঊদ (আলাইহিস সালাম)-এর ছিয়াম হল সবচেয়ে উত্তম ছিয়াম। তিনি একদিন ছিয়াম পালন করতেন এবং একদিন পালন করতেন না।[২]
শাওয়ালের ছয়টি ছিয়াম রাখার ফযীলত
عَنْ اَبِيْ اَيُّوْبَ الْاَنْصَارِيِّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ اَتبَعَهُ سِتًّا مِّنْ شَوَّالٍ كَانَ كَصِيَامِ الدَّهْرِ
আবূ আইয়ূব আনছারী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি রামাযানের ছিয়াম পালন করল, অতঃপর শাওয়াল মাসের ছয়টি ছিয়াম পালন করল, সে যেন পূর্ণ এক বছর ছিয়াম পালন করল।[৩]
عَنْ ثَوْبَانَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ جَعَلَ اللهُ الْحَسَنَةَ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا الشَّهْرُ بِعَشْرَةِ أَشْهُرٍ وَصِيَامُ سِتَّةِ أَيَّامٍ بَعْدَ الشَّهْرِ تَمَامُ السَّنَةِ
ছাওবান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছেন যে, আল্লাহ তা‘আলা ভাল কাজকে তার দশগুণ বৃদ্ধি করেন। এক মাস ছিয়াম পালন করলে দশ মাসের সমপরিমাণ এবং শাওয়ালের ছয়টি ছিয়াম পালন করলে (ষাট দিন = দুই মাস) পূর্ণ এক বছর ছিয়াম পালনের ছওয়াব পাওয়া যায়।[৪]
আরাফার দিনের ছিয়াম রাখার ফযীলত
عَنْ أَبِيْ قَتَادَةَ الْأَنْصَارِيِّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سُئِلَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ عَنْ صَوْمِ يَوْمِ عَرَفَةَ قَالَ يُكَفِّرُ السَّنَةَ الْمَاضِيَةَ وَالْبَاقِيَةَ
আবূ ক্বাতাদা আল আনছারী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে ‘আরাফাত দিবসের ছিয়াম সম্পর্কে জিজ্ঞাস করা হলে তিনি বলেন, তাতে পূর্ববর্তী বছর ও পরবর্তী বছরের গুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে।[৫] আর তিরমিযীর বর্ণনায় এসেছে, নিশ্চয় নবী (ﷺ) বলেছেন,
صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ إِنِّيْ أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِيْ قَبْلَهُ وَالسَّنَةَ الَّتِيْ بَعْدَهُ
‘আমি আল্লাহ তা‘আলার নিকট ‘আরাফাতের দিনের ছিয়াম সম্পর্কে আশা করি যে, তিনি এর মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছর এবং পরবর্তী এক বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিবেন’।[৬]
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَنْ صَامَ يَوْمَ عَرَفَةَ غُفِرَ لَهُ ذَنْبُ سَنَتَيْنِ مُتَتَابِعَتَيْنِ
সাহল ইবনু সা‘দ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি ‘আরাফার দিনে ছিয়াম রাখে, তার ধারাবাহিকভাবে দু’বছরের পাপ ক্ষমা করে দেয়া হয়।[৭]
আশুরায়ে মুহাররম মাসের ছিয়াম রাখার ফযীলত
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ اَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ شَهْرُ اللهِ الْمُحَرَّمُ وَاَفْضَلُ الصَّلٰوةِ بَعْدَ الْفَرِيْضَةِ صَلٰوةُ اللَّيْلِ
আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, রামাযানের পর আল্লাহর মাস মুহাররমের ছিয়ামই শ্রেষ্ঠ ছিয়াম এবং ফরয ছালাতের পর রাতের ছালাতই শ্রেষ্ঠ ছালাত’।[৮]
عَنْ أَبِيْ قَتَادَةَ الْأَنْصَارِيِّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ سُئِلَ عَنْ صَوْمِ يَوْمِ عَاشُوْرَاءَ؟ فَقَالَ يُكَفِّرُ السَّنَةَ الْمَاضِيَةَ
আবূ ক্বাতাদা আনছারী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে ‘আশূরার ছিয়াম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, বিগত বছরের গুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে।[৯] ইবনু মাজার বর্ণনায় এসেছে,
قَالَ صِيَامُ يَوْمِ عَاشُوْرَاءَ إِنِّيْ أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ
তিনি (ﷺ) বলেছেন, ‘আশূরার দিনের ছিয়াম দ্বারা আমি আল্লাহর নিকট বিগত এক বছরের গুনাহ মাফের আশা রাখি।[১০]
প্রতি আরবী মাসের (১৩, ১৪ ও ১৫) তিনটি ছিয়াম রাখার ফযীলত
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ صَوْمُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ صَوْمُ الدَّهْرِ كُلِّهِ
আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল ‘আছ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, প্রত্যেক মাসের তিন দিনের ছিয়ামই সারা বছরের ছিয়ামের সমতুল্য।[১১]
সোমবার ও বৃহস্পতিবার ছিয়াম রাখার ফযীলত
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ كَانَ يَصُوْمُ الِاثْنَيْنِ وَالْخَمِيْسَ فَقِيْلَ يَا رَسُوْلَ اللهِ ﷺ إِنَّكَ تَصُوْمُ الْاِثْنَيْنِ وَالْخَمِيْسَ؟ فَقَالَ إِنَّ يَوْمَ الْاِثْنَيْنِ وَالْخَمِيْسَ يَغْفِرُ اللهُ فِيْهِمَا لِكُلِّ مُسْلِمٍ إِلَّا مُهْتَجِرَيْنِ يَقُوْلُ دَعْهُمَا حَتَّى يَصْطَلِحَا
আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী করীম (ﷺ) সোমবার ও বৃহস্পতিবার ছিয়াম রাখতেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হল, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আপনি সোমবার ও বৃহস্পতিবারে ছিয়াম রাখেন? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, প্রত্যেক মুসলিমকে পরস্পর আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী ব্যক্তিদ্বয় ব্যতীত সবাইকে সোমবার ও বৃহস্পতিবার আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করেন। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, তাদেরকে ছেড়ে দাও যতক্ষণ পর্যন্ত তারা পরস্পরে মীমাংসা না করে।[১২]
عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ قَالَ تُعْرَضُ الْأعْمَالُ يَوْمَ الْاِثْنَيْنِ وَالْخَمِيْسِ فَأُحِبُّ أنْ يُّعْرَضَ عَمَلِيْ وَأنَا صَائِمٌ
আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, সোমবার ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমলসমূহ আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। অতএব আমি পসন্দ করি যে, আমার আমল পেশ করা হোক আমার ছিয়াম অবস্থায়।[১৩]
শীতকালে ছিয়াম পালনের ফযীলত
عَنْ عَامِرِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ الْغَنِيْمَةُ الْبَارِدَةُ الصَّوْمُ فِي الشِّتَاءِ
আমির ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি নবী করীম (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন যে, শীতকালের ছিয়াম হল বিনা পরিশ্রমে যুদ্ধলব্ধ মালের মত।[১৪]
ছিয়াম পালনরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করার ফযীলত
عَنْ حُذَيْفَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قاَلَ مَنْ خُتِمَ لَهُ بِصِيَامِ يَوْمٍ دَخَلَ الْجَنَّةَ
হুযায়ফা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) নবী করীম (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন যে, যে ব্যক্তি ছিয়াম অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।[১৫]
عَنْ حُذَيْفَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ أَسْنَدْتُ النَّبِيَّ ﷺ إِلَى صَدْرِيْ فَقَالَ مَنْ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَا اللهُ قَالَ حَسَنٌ ابْتِغَاءَ وَجْهِ اللهِ خُتِمَ لَهُ بِهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ صَامَ يَوْمًا ابْتِغَاءَ وَجْهِ اللهِ خُتِمَ لَهُ بِهِ دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ ابْتِغَاءَ وَجْهِ اللهِ خُتِمَ لَهُ بِهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ
হুযায়ফা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, নবী করীম (ﷺ) আমার পিঠের উপর ভর দিয়ে বললেন, যে ব্যক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে বলা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ছিয়াম পালনরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ছাদাক্বাহ করবে এবং মৃত্যুবরণ করবে সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে।[১৬]
তথ্যসূত্র :
[১]. ছহীহ বুখারী, হা/২৮৪০; ছহীহ মুসলিম, হা/১১৫৩।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/১৯৭৭; ছহীহ মুসলিম, হা/১১৫৯; তিরমিযী, হা/৭৭০, শব্দ তিরমিযীর; সনদ ছহীহ।
[৩]. ছহীহ মুসলিম, হা/১১৬৪; মিশকাত, হা/২০৪৭।
[৪]. ইবনুল আসাকির, তারীখু দিমাশ্ক, ৫৪তম খ-, পৃ. ৮২; ইবনু খুযায়মাহ, হা/২১১৫; সনদ ছহীহ, ছহীহুল জামে’, হা/৩০৯৪।
[৫]. ছহীহ মুসলিম, হা/১১৬২; আবূ দাঊদ, হা/২৪২৫।
[৬]. তিরমিযী, হা/৭৪৯, সনদ ছহীহ।
[৭]. মুসনাদে আবী ইয়ালা, হা/৭৫৪৮, সনদ ছহীহ।
[৮]. ছহীহ মুসলিম, হা/১১৬৩।
[৯]. ছহীহ মুসলিম, হা/১১৬২।
[১০]. ইবনু মাজাহ, হা/১৭৩৮, সনদ ছহীহ।
[১১]. ছহীহ বুখারী, হা/১৯৭৯; ছহীহ মুসলিম, হা/১১৫৯।
[১২]. ইবনু মাজাহ, হা/১৭৪০; মিশকাত, হা/২০৭৩, সনদ ছহীহ।
[১৩]. তিরমিযী, হা/৭৪৭; মিশকাত, হা/২০৫৬, সনদ ছহীহ।
[১৪]. তিরমিযী, হা/৭৯৭, সনদ ছহীহ।
[১৫]. মুসনাদে বায্যার, হা/২৮৫৪, সনদ ছহীহ।
[১৬]. মুননাদে আহমাদ, হা/২৩৩৭২; সনদ ছহীহ, ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৯৮৫; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১৬৪৫।
প্রসঙ্গসমূহ »:
ছিয়াম-রামাযান