শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৬ পূর্বাহ্ন

মসজিদ: ইসলামী সমাজের প্রাণকেন্দ্র 

-ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান* 


(৭ম কিস্তি) 

মসজিদের পবিত্রতা রক্ষার্থে বর্জনীয় ও করণীয়

মসজিদকে বায়তুল্লাহ বা ‘আল্লাহর ঘর’ বলা হয়। পৃথিবীতে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় জায়গা মসজিদ। ইসলামী জীবনব্যবস্থায় ব্যক্তিগত শুদ্ধাচারের মাধ্যমে যেমন আত্মিক পরিশুদ্ধতার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে, তেমনি মসজিদে জামা‘আতে ছালাত আদায়ের মাধ্যমে সামাজিক ঐক্য ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার প্রতিও তাকীদ দেয়া হয়েছে। মুসলিমদের দৈনন্দিন জীবনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ও যাপিত জীবনকে কল্যাণময় করার জন্য মসজিদ ও জামা‘আতের গুরুত্ব অত্যধিক। যুগে যুগে আল্লাহ তা‘আলার প্রেরিত নবী-রাসূলগণ মসজিদকে কেন্দ্র করেই নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছেন। মসজিদ মুসলিমদের ‘ইবাদতের জায়গা। তা হবে পবিত্র ও সুগন্ধিময়। মসজিদের সম্মান ও মর্যাদা এবং সামাজিক সম্প্রীতি স্থাপনে মসজিদের গুরুত্বের বিষয়টি বিবেচনা করে মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা করা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা। ইসলামে মসজিদ তৈরি করতে এবং তা পরিষ্কার ও সুগন্ধিময় করে রাখতে আদেশ করা হয়েছে।[১] সামুরাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) নিজের ছেলেকে পত্রে লিখেছিলেন, ‘আল্লাহর রাসূল (ﷺ) আমাদেরকে আমাদের মহল্লায় মসজিদ বানাতে এবং তা পবিত্র রাখতে আদেশ করতেন।[২] মসজিদকে সর্বদা যাবতীয় নোংরা-আবর্জনা, ময়লা, পেশাব-পায়খানা ইত্যাদি থেকে সর্বদা পরিচ্ছন্ন রাখা  কর্তব্য। এটা ধর্মীয় নির্দেশও বটে।[৩] এমনকি রাসূল (ﷺ) মসজিদের দরজায় পেশাব করতে নিষেধ করেছেন।[৪] শুধু তাই নয়, মসজিদে থুথু বা কফ্ ফেলা গোনাহর কাজ। অন্যদিকে থুথু ইত্যাদি নোংরা বস্তু মসজিদ থেকে পরিষ্কার করা ছাওয়াবের কাজ।

মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা করতে হলে সেখানে সংঘটিত অসংখ্য শিরক-বিদ‘আত মুক্ত করতে হবে। দেশের বিভিন্ন মসজিদে অসংখ্য শিরক ও বিদ‘আতী কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়। অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَّ اَنَّ  الۡمَسٰجِدَ لِلّٰہِ  فَلَا تَدۡعُوۡا مَعَ اللّٰہِ  اَحَدًا ‘এবং নিশ্চয় মসজিদসমূহ আল্লাহ্রই জন্য। সুতরাং আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাউকে ডেক না’ (সূরাহ আল-জিন: ১৮)। এছাড়া ইসলামী শরী‘আত মসজিদের পবিত্রতা রক্ষার্থে কিছু কাজ থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে নির্দেশা প্রদান করেছে।

মসজিদ পরিচালনা দেশ, জাতি ও ধর্মের এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এক মহান ইবাদত। এজন্য মসজিদের উন্নয়ন, নির্মাণ ও সার্বিক ব্যবস্থাপনায় একটি কমিটি থাকতে হয়। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ছাড়া একটি প্রতিষ্ঠান টিকে থাকতে পারে না। ইসলামী শরী‘আতের দৃষ্টিতে মসজিদের ব্যাপারে ছয় শ্রেণির মানুষ দায়িত্বশীল। তাঁরা হলেন ১- ইমাম ও খত্বীব, ২- মুওয়াজ্জিন, ৩- খাদেম, ৪- মক্তব-পরিচালক, ৫- কমিটি ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এবং ৬- মুছল্লীবৃন্দ। এছাড়া মসজিদের পবিত্রতা রক্ষার্থে এর পার্শ্ববর্তী অধিবাসীদের কিছু করণীয় রয়েছে। এতদ্ভিন্ন সমাজ ও রাষ্ট্র এবং বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন ও ফাউন্ডেশনের উপরও কিছু দায়িত্ব পড়ে, যাতে করে মসজিদকে সুন্দর ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনা করা সহজ হয়।

ক. মসজিদের পবিত্রতা রক্ষার্থে বর্জনীয় বিষয় সমূহ

মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা করা প্রত্যেক মুসলিমের ঈমানী দায়িত্ব ও কর্তব্য। সাধারণত ‘ইবাদতের স্থান পবিত্র হওয়াটা শারঈ নির্দেশনার অন্তর্ভুক্ত। এমন কিছু কাজ ও কথা রয়েছে, যা মসজিদে সম্পাদন করা একদিকে শরী‘আতের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ, অন্যদিকে তা পালন করা গর্হিত অপরাধ। যারা মসজিদ নোংরা করে, ময়লা-আবর্জনা ফেলে কিংবা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে না তথা পবিত্রতা বজায় রাখে না তাদেরকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ক্বিয়ামতের দিন কঠিন ভয়াবহতার কথা বলে হুঁশিয়ার করেছেন। আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেন, ‘আমার সামনে আমার উম্মতের ভালো-খারাপ সমস্ত আমল পেশ করা হলো। ভালো আমলগুলোর মধ্যে আছে, রাস্তার মধ্যে কোন কষ্টদায়ক বস্তু থাকলে তা সরিয়ে দেয়া। আর খারাপ আমলের মধ্যে আছে, মসজিদে থুতু, ময়লা-আবর্জনা থাকা সত্ত্বেও পরিষ্কার না করা’।[৫] অতএব মসজিদের পবিত্রতা রক্ষার্থে শরী‘আত যা যা করতে ও বর্জন করতে নির্দেশনা প্রদান করেছে সেগুলো পূর্ণাঙ্গরূপে অনুসরণ করা ঈমানী দায়িত্ব ও কর্তব্য।

এক্ষণে মসজিদের পবিত্রতা রক্ষার্থে করণীয় আলোচনার পূর্বে বর্জনীয় বিষয়গুলো আলোকপাত করব। যেমন,

প্রথমতঃ মসজিদ কেন্দ্রিক শিরকী কর্মকাণ্ডসমূহ

মসজিদে যেসকল শিরকী কর্মকাণ্ড হয়ে থাকে তন্মধ্যে কতিপয় নিম্নরূপ হলো:

১- মাজার ও খানকার উদ্দেশ্যে মসজিদ নির্মাণ করা ও সেখানে লালশালু ও গম্বুজ নির্মাণ করা

মাজার ও খানকার উদ্দেশ্যে মসজিদ নির্মাণ করা সঠিক নয়। বরং হারাম। যদি কেউ আল্লাহ ব্যতীত কোন কবরের ‘ইবাদত করে বা কবরবাসীর নিকট দু‘আ করে অথবা তার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করে, তাহলে তা ‘বড় শিরক’-এর অন্তর্ভুক্ত। পক্ষান্তরে যদি কবরের উপর বা কবরকে কেন্দ্র করে মসজিদ নির্মাণ করে বা মসজিদের ভেতরে মৃতকে দাফন করে, কিন্তু কবরবাসীর উদ্দেশ্যে কোন প্রকার ‘ইবাদত না করে, তথাপিও তা গর্হিত কাজ হিসাবে এবং শিরকে পতিত হওয়ার বড় একটি মাধ্যম হিসাবে গণ্য হবে। অন্যদিকে কবরের উপর নির্মিত মসজিদে ছালাত জায়েয হবে না; বরং এ জাতীয় নির্মাণ হারাম হিসাবে গণ্য। ‘আয়িশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, রাসূল (ﷺ) তাঁর মৃত্যুশয্যায় শায়িত অবস্থায় বলেন,

لَعْنَةُ اللهِ عَلَى الْيَهُوْدِ وَالنَّصَارَى اتَّخَذُوْا قُبُوْرَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ يُحَذِّرُ مَا صَنَعُوْا.

‘আল্লাহ ইহুদী এবং খ্রিস্টানদের উপর অভিশাপ করুন, কারণ তারা তাদের নবীগণের কবরসমূহকে মসজিদ হিসাবে গ্রহণ করেছে। ‘আয়িশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, ইহুদী-খ্রিষ্টানদের এহেন কর্মকাণ্ড থেকে সতর্ক করার জন্য তিনি একথা বলেছেন’।[৬] জুনদুব ইবনু ‘আব্দিল্লাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) মৃত্যুর পাঁচ দিন আগে বলেন,

لَا وَإِنَّ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ كَانُوْا يَتَّخِذُوْنَ قُبُوْرَ أَنْبِيَائِهِمْ وَصَالِحِيهِمْ مَسَاجِدَ أَلَا فَلَا تَتَّخِذُوا الْقُبُوْرَ مَسَاجِدَ إِنِّىْ أَنْهَاكُمْ عَنْ ذَلِكَ.

‘সাবধান! তোমাদের পূর্ববর্তীরা তাদের নবী এবং নেককার মুমিনগণের কবরসমূহকে মসজিদ হিসাবে গ্রহণ করতো! খবরদার! তোমরা কবরসমূহকে মসজিদ হিসাবে গ্রহণ করো না। কেননা আমি তোমাদেরকে এ থেকে নিষেধ করছি’।[৭]

অতএব মসজিদকে কেন্দ্র করে নির্মিত কবর ভেঙ্গে ফেলা ওয়াজিব। তবে মসজিদের নিচে মৃতকে দাফন করা হলে মসজিদ ভাঙতে হবে না; বরং কবর খনন করে মৃতকে সেখান থেকে সরিয়ে সাধারণ কবরস্থানে দাফন করতে হবে।[৮] এছাড়া মাযার কেন্দ্রিক মসজিদে ছালাত আদায় করা যাবে না।[৯] কারণ এর উদ্দেশ্যই হলো শিরকের প্রতি মুছল্লীদের প্রলুব্ধ করা ও তাদেরকে মাযারমুখী করা। বর্তমানে জানা-অজানা কবর ও ভুয়া কবর নিয়েই বহু স্থানে ‘মাযার’ নাম দিয়ে নজর-নেয়ায ও ওরসের জমজমাট ব্যবসা চলছে। আর এসব স্থানে দ্বীনদার মানুষকে আকর্ষণ করার জন্য বানানো হয় মসজিদ। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর যুগে কুফরীর উদ্দেশ্যে মুনাফিকরা ক্বোবায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিল, যা ‘মসজিদে যেরার’ নামে খ্যাত।[১০] রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নির্দেশে সেই মসজিদ জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছিল। অনুরূপভাবে এ যুগের এসব মসজিদ শিরকের উদ্দেশ্যে নির্মিত। অতএব এখানে ছালাত আদায় করা ঠিক হবে না। কেননা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কবরের দিকে ফিরে ছালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন।[১১]

উল্লেখ্য, একশ্রেণীর ব্যক্তিগণ অলী-আওলীয়া ও তরীকার মাশায়েখের কবর পাকা করা, কবরের উপর গম্বুজ নির্মাণ, তাতে বাতি জ্বালানো, কবর ও মাযার যিয়ারত করার উপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে থাকে। এমনকি ছূফীরা মাযারের চার পাশে ত্বাওয়াফও করে থাকে। মিশরে সায়্যেদ বদভীর কবরের চতুর্দিকে ছূফীরা কা‘বা ঘরের ত্বাওয়াফের ন্যায় ত্বাওয়াফ করে থাকে। ভারতের আজমীরে তথাকথিত খাজা মইনুদ্দ্ীন চিশতীর কবরেও এহেন ত্বাওয়াফ করে থাকে চিশতীয়া তরীকার অনুসারীরা। অথচ সকল মুসলিমের কাছে অতি সুস্পষ্ট যে, ত্বাওয়াফ এমন একটি ইবাদত, যা কা‘বা ঘরের চতুর্পার্শ্বে এবং একমাত্র আল্লাহর জন্যই করতে হবে। সুতরাং কোন কবরকে কেন্দ্র করে ত্বাওয়াফ করা বড় শিরক, যা ইসলাম থেকে বের করে দেয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ لۡیَطَّوَّفُوۡا بِالۡبَیۡتِ الۡعَتِیۡقِ ‘এবং তারা যেন এই সুসংরক্ষিত (পবিত্র) গৃহের ত্বাওয়াফ করে’ (সূরা আল-হাজ্জ : ২৯)। নবী (ﷺ) কবর নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে উম্মাতকে সতর্ক করেছেন।[১২]

শরী‘আতে উঁচু কবর ও খানকাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়ার আদেশ দেয়া হয়েছে। আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি আবুল হায়্যায আল-আসাদীকে বলেন, আমি কি তোমাকে এমন আদেশ দিয়ে প্রেরণ করব না, যা দিয়ে নবী (ﷺ) আমাকে প্রেরণ করেছিলেন?

أَنْ لَا تَدَعَ تِمْثَالًا إِلَّا طَمَسْتَهُ وَلَا قَبْرًا مُشْرِفًا إِلَّا سَوَّيْتَهُ

‘কোন মূর্তি পেলেই তা ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলবে। আর কোন কবর উঁচু পেলেই তা ভেঙ্গে মাটি বরাবর করে দিবে’।[১৩] অনুরূপভাবে নবী (ﷺ) কবর পাকা করতে, চুনকাম করতে, তার উপর বসতে, কবরে লিখতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। ছাহাবী (রাযিয়াল্লাহু আনহুম), তাবি‘ঈন ও তাবি‘ তাবি‘ঈন (রাহিমাহুল্লাহ)-এর যুগে ইসলামী শহর সমূহে কোন কবর পাকা করা বা কবরের উপর গম্বুজ নির্মাণ করা হয়নি।[১৪]

২- মসজিদের নিচে-সামনে-পিছনে-ডানে-বামে কবর থাকা শিরকের মাধ্যম

মসজিদের চতুর্পাশ্বে কিংবা যেকোন এক পার্শ্বে কোন মাইয়েতকে দাফন করা ঠিক নয়। কেননা এটা শিরকের মাধ্যম। শরী‘আতে এরকম স্থানে মসজিদ নির্মাণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। তাই যদি কোন মসজিদের পার্শ্বে কবর পড়ে যায় এমতাবস্থায় কবরস্থানের জন্য আলাদা প্রাচীর থাকা আবশ্যক। অন্যথা সেখানে ছালাত হবে না। তবে যদি মসজিদের দেয়াল ও কবরস্থানের মাঝে রাস্তা থাকে, তাহলে সে মসজিদে ছালাত আদায় করতে কোন বাধা নেই। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কবরের দিকে ফিরে ছালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন।[১৫] আর মসজিদের বাইরে যদি কবরস্থান থেকে পৃথককারী প্রাচীর থাকে, তবে সেখানে ছালাত আদায় করা যাবে। যদি তা না থাকে তবে মসজিদ ও কবরস্থানকে পৃথককারী আলাদা প্রাচীর নির্মাণ করতে হবে।[১৬]

উল্লেখ্য, মসজিদের ভিতরে কিংবা মসজিদের কোন অংশের মাটির নিচে কবর থাকলে সে মসজিদেও ছালাত হবে না। দেশের অনেক মসজিদে এরূপটি লক্ষ্য করা যায়। যেমন, ঢাকার আজিমপুর গোরস্থানের পাশে ‘সরকারী আবাসিক কোয়ার্টার’ এলাকার মধ্যে একটি তিনতলা বিশিষ্ট মসজিদের ভিতরে বিশাল মাযার রয়েছে। তথাকথিত শিক্ষিত নামধারী মুসলিমরা ঐ কবরকে সামনে-পিছনে-ডানে-বামে রেখে নিয়মিত ছালাত আদায় করছেন। প্রকৃতপক্ষে ঐ মসজিদের কোন মুছল্লীরই ছালাত হয় না। বরং সকলেই শিরকের পাপে লিপ্ত। এমতাবস্থায় ঐ মাযারকে ভেঙ্গে না পর্যন্ত সেখানে ছালাত আদায় করা যাবে না। এছাড়া প্রয়োজনে কবর স্থানান্তরেরও বিধান শরী‘আতে রয়েছে। জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,

لَمَّا حَضَرَ أُحُدٌ دَعَانِىْ أَبِىْ مِنَ اللَّيْلِ فَقَالَ مَا أُرَانِىْ إِلَّا مَقْتُوْلًا فِىْ أَوَّلِ مَنْ يُقْتَلُ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِىِّ ﷺ، وَإِنِّىْ لَا أَتْرُكُ بَعْدِىْ أَعَزَّ عَلَىَّ مِنْكَ، غَيْرَ نَفْسِ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ، فَإِنَّ عَلَىَّ دَيْنًا فَاقْضِ، وَاسْتَوْصِ بِأَخَوَاتِكَ خَيْرًا. فَأَصْبَحْنَا فَكَانَ أَوَّلَ قَتِيْلٍ، وَدُفِنَ مَعَهُ آخَرُ فِىْ قَبْرٍ، ثُمَّ لَمْ تَطِبْ نَفْسِىْ أَنْ أَتْرُكَهُ مَعَ الْآخَرِ فَاسْتَخْرَجْتُهُ بَعْدَ سِتَّةِ أَشْهُرٍ، فَإِذَا هُوَ كَيَوْمِ وَضَعْتُهُ هُنَيَّةً غَيْرَ أُذُنِهِ .

‘যখন উহুদ যুদ্ধের সময় উপস্থিত হল, তখন রাতের বেলা আমার পিতা আমাকে ডেকে বললেন, আমার মনে হয় যে, নবী (ﷺ)-এর ছাহাবীগণের মধ্যে যাঁরা প্রথমে শহীদ হবেন, আমি তাঁদের মধ্যে একজন হব। আর আমি আমার (মৃত্যুর) পরে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) ব্যতীত তোমার চেয়ে অধিকতর প্রিয় কাউকে রেখে যাচ্ছি না। আমার যিম্মায় কর্য রয়েছে। তুমি তা পরিশোধ করবে। তোমার বোনদের ব্যাপারে সদুপদেশ গ্রহণ করবে। জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, পরদিন সকাল হলে (আমরা দেখলাম যে) তিনিই প্রথম শহীদ। তাঁর কবরে তাঁর আর একজন ছাহাবীকে তাঁর সাথে দাফন করা হয়েছিল। কিন্তু পরে অন্য একজনের সাথে (একই) কবরে তাঁকে রাখা আমার মনে ভাল লাগল না। তাই ছয় মাস পর আমি তাঁকে (কবর হতে) বের করলাম এবং দেখলাম যে, তাঁর কানে সামান্য চিহ্ন ব্যতীত তিনি সেই দিনের মতই (অক্ষত ও অবিকৃত) রয়েছেন, যে দিন তাঁকে (কবরে) রেখেছিলাম’।[১৭]

৩- আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত পীরবাবার নামে মসজিদে নযর ও মানত করা

আল্লাহ তা‘আলার উদ্দেশ্যে ‘ইবাদতের প্রকারসমূহের মধ্যে অন্যতম ‘ইবাদত হল নযর ও মানত করা। অর্থাৎ কেউ যদি নযর করে তথা মানত করতে চায়, তাহলে কেবল আল্লাহ তা‘আলার উদ্দেশ্যেই মানত করতে হবে। আর আল্লাহর নামে মানত করলে তা আদায় করা ওয়াজিব। আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে মানত করলে তা হবে শিরক। সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত পীরবাবার নামে বিভিন্ন মসজিদে মানত করা শিরক। কেননা গায়রুল্লাহর নামে মানত পূর্ণ করা হারাম। এরূপ মানতের নিয়ত করে থাকলে তা ত্যাগ করতে হবে এবং তওবা করতে হবে।[১৮] আল্লাহ তা‘আলা বলেন, یُوۡفُوۡنَ بِالنَّذۡرِ وَ یَخَافُوۡنَ یَوۡمًا کَانَ شَرُّہٗ  مُسۡتَطِیۡرًا ‘তারা মানত পূর্ণ করে এবং সেদিনকে ভয় করে, যেদিনের অনিষ্ট হবে সুদূরপ্রসারী’ (সূরা আদ-দাহর : ৭)। অন্যত্র তিনি বলেন, وَ مَاۤ اَنۡفَقۡتُمۡ مِّنۡ نَّفَقَۃٍ اَوۡ نَذَرۡتُمۡ مِّنۡ نَّذۡرٍ فَاِنَّ اللّٰہَ یَعۡلَمُہٗ ‘তোমরা যা কিছু খরচ করেছ আর যে মানত মেনেছ, তা আল্লাহ জানেন’ (সূরা আল-বাকারাহ : ২৭০)।

আল্লাহ ছাড়া মৃত বা জীবিত কারো নামে মানত করা শিরক। গায়রুল্লাহর নামে মানত করলে ঐ মানত পূর্ণ করা যাবে না। হাদীছে এসেছে- ‘আয়িশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, مَنْ نَذَرَ أَنْ يُطِيْعَ اللهَ فَلْيُطِعْهُ وَمَنْ نَذَرَ أَنْ يَعْصِىَ اللهَ فَلَا يَعْصِهِ ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্যের কাজে মানত করে, সে যেন তা পূর্ণ করার মাধ্যমে তার আনুগত্য করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর নাফরমানীমূলক কাজে মানত করে, সে যেন তার নাফরমানী না করে। অর্থাৎ মানত পূরা না করে’।[১৯]

অনেককে দেখা যায়, রোগ থেকে মুক্তির জন্য, হারানো জিনিস ফিরে পাওয়ার জন্য কিংবা সন্তান লাভের আশায় মসজিদ, মাযার, বড় বটবৃক্ষ ইত্যাদি জায়গায় মোমবাতি, তেল, আগরবাতি, টাকা-পয়সা, গরু-খাসি, মোরগ-মুরগী, কবুতর ইত্যাদি মানত করে। তারা মনে করে এর মাধ্যমে তাদের উদ্দেশ্য হাছিল হবে, রোগমুক্তি হবে, হারানো ব্যক্তিকে ফিরে পাবে, মালের নিরাপত্তা লাভ হবে, নিঃসন্তান দম্পতির সন্তান হবে ইত্যাদি। অথচ এসবই শিরক-এর অন্তর্ভুক্ত।

নবীগণ সবচেয়ে সম্মানী ও মর্যাদাপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের কবরসমূহে কোন নযরানা, মানত দেয়া হয় না। এ ধরনের মানত, নজরানা তারা কবরবাসীর সম্মান ও বরকতের জন্যই করে থাকে এবং তাদের ধারণা এর দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য হাছিল হবে। মক্কার মুশরিকদের ধারণাও ছিল এমন। তাইতো তারা বলতো- مَا نَعۡبُدُہُمۡ  اِلَّا لِیُقَرِّبُوۡنَاۤ  اِلَی اللّٰہِ  زُلۡفٰی ‘তারা (এসব কবর ও মাজার ইত্যাদি) আমাদের আল্লাহর নৈকট্যে পৌঁছে দেবে বলেই আমরা তাদের ইবাদত করি’ (সূরা আয-যুমার : ৩)। উল্লেখ্য, যেখানে আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে ‘ইবাদত করা হতো সেখানেও আল্লাহর নামে মানত করা হারাম। চাই সেখানে পূজা চলুক বা না চলুক। হাদীছে এসেছে- ছাবিত ইবনু আয-যাহ্হাক (রা.) বর্ণনা করেছেন,

نَذَرَ رَجُلٌ عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ أَنْ يَنْحَرَ إِبِلًا بِبُوَانَةَ فَأَتَى النَّبِىَّ ﷺ فَقَالَ: إِنِّىْ نَذَرْتُ أَنْ أَنْحَرَ إِبِلًا بِبُوَانَةَ. فَقَالَ النَّبِىُّ ﷺ : ্রهَلْ كَانَ فِيْهَا وَثَنٌ مِنْ أَوْثَانِ الْجَاهِلِيَّةِ يُعْبَدُগ্ধ. قَالُوْا: لَا. قَالَ: ্রهَلْ كَانَ فِيْهَا عِيْدٌ مِنْ أَعْيَادِهِمْগ্ধ. قَالُوْا: لَا. قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ: ্রأَوْفِ بِنَذْرِكَ فَإِنَّهُ لَا وَفَاءَ لِنَذْرٍ فِىْ مَعْصِيَةِ اللهِ وَلَا فِيْمَا لَا يَمْلِكُ ابْنُ آدَمَগ্ধ.

‘এক ব্যক্তি রাসূল (ﷺ)-এর যুগে ‘বুয়ানা’ নামক স্থানে একটি উট কুরবানী করার মানত করল। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘সে স্থানে এমন কোন মূর্তি ছিল কি, জাহেলী যুগে যার পূজা করা হতো? ছাহাবায়ে কেরাম বললেন, ‘না’। তিনি বললেন ‘সে স্থানে কি তাদের কোন উৎসব বা মেলা অনুষ্ঠিত হত? তাঁরা বললেন, ‘না’। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, ‘তুমি তোমার মানত পূর্ণ কর। কেননা আল্লাহর নাফরমানীমূলক কাজে মানত পূর্ণ করা যাবে না। আদম সন্তান যা করতে সক্ষম নয়, এমন মানতও পুরা করা যাবে না’।[২০]

আল্লাহ ঘর মসজিদে অসংখ্য শরী‘আত বিরোধী ও বিদ‘আতী কার্যক্রম হয়ে থাকে। যার সাথে শরী‘আতের কোন সম্পর্ক নেই। শায়খ খায়রুদ্দীন ওয়ানিলী মসজিদ কেন্দ্রিক বিদ‘আতকে কয়েক প্রকারে বিভক্ত করেছেন। যথা: ক- আযান ও ইকামতের বিদ‘আত, ২- ছালাতের মধ্যে বিদ‘আত, ৩- জুমু‘আ ও জুমু‘আর খুতবার মধ্যে বিদ‘আত, ৪- দু‘আর মধ্যে বিদ‘আত এবং ৫- বিবিধ বিদ‘আত।[২১] মসজিদের পবিত্রতা রক্ষার্থে বর্জনীয় বিষয়গুলোর মধ্যে মসজিদ কেন্দ্রিক শিরক ও বিদ‘আত মূল গবেষণা কর্মে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।[২২]

৪- কোন মসজিদকে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী বলে বিশ্বাস করা ও বরকতময় মনে করা

দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞ ও মূর্খ কিছু মুসলিম আবেগের বশবর্তী হয়ে এমন কিছু কাজ করে থাকে, যার পক্ষে শরী‘আতের কোন নির্দেশনা বর্ণিত হয়নি। বরং তার কোনটা শিরক আবার কোনটা বিদ‘আতের স্তরে পৌঁছে যায়। দেশে এমন অনেক মসজিদ রয়েছে, যেগুলোকে মানুষ যেমন অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী বলে মনে করে আবার সেখানে বরকতের আশায় ভ্রমণও করে থাকে। অথচ এটা সুস্পষ্ট শিরক। কেননা দুনিয়াতে কতিপয় বৈধ জিনিস রয়েছে, যার মাধ্যমেই কেবল বরকত হাসিল করা যায়। যেমন, আল্লাহর যিকির ও কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে বরকত লাভ করা, রাসূল (ﷺ)-এর জীবদ্দশায় তাঁর সত্ত্বা থেকে বরকত লাভ করা[২৩], যমযমের পানি পান করা দ্বারা বরকত লাভ[২৪] এবং বৃষ্টির পানি দ্বারা বরকত লাভ করা।[২৫] এগুলো ছাড়া অন্য কোন কিছুকে বরকতময় মনে করা যাবে না।

এতদ্ভিন্ন মসজিদে নেতা-নেত্রীর ছবি টাঙ্গানো, মসজিদের পাশে তাবীয-কবয বিক্রি করা, কোন নির্দিষ্ট মসজিদে গেলে বা সেখানে দান-ছাদাক্বাহ করলে মনের আশা পূরণ হয়, সেখানে ‘ইবাদত করতে মনের কষ্ট ও বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি মেলে ইত্যাদি বিশ্বাস করা শিরকী কর্মকাণ্ডসমূহের অন্তর্ভুক্ত।

(ইনশাআল্লাহ চলবে)



* শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আল-ইসলামিয়্যাহ, খড়খড়ি, রাজশাহী।

[১]. ইমাম আবূ দাঊদ, আস-সুনান, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৭৮, হাদীছ নং৪৫৫, অধ্যায়: সালাত পর্ব, পরিচ্ছেদ: মহাল্লায় মাসজিদ নির্মাণ; তিরমিযী হাদীছ নং ৫৯৪।

[২]. ইমাম আবূ দাঊদ, আস-সুনান, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৭৮, হাদীছ নং ৪৫৬।

[৩]. আহমাদ ইবনু হাম্বাল আবূ আব্দিল্লাহ আশ-শায়বানী, আল-মুসনাদ, ৩য় খণ্ড (কায়রো: মুওয়াসসাসাতু কুরতুবা, তাবি), পৃ. ১৯১, হাদীছ নং ১৩০০৭।

[৪]. আলাউদ্দীন আলী ইবনু হিসামুদ্দীন আল-মুত্তাকী আল-হিন্দী আল-বুরহান ফাওরা, কানযুল ‘উম্মাল ফী সুনানিল আকওয়াল ও আফ‘আল, ৯ম খণ্ড (বৈরূত: মুওয়াসসাসাতুর রিসালাহ, ৫ম সংস্করণ, ১৪০১ হি./১৯৮১ খ্রি.), পৃ. ৩৫৩, হাদীছ নং ২৬৪১৪।

[৫]. মুহাম্মাদ ইবনু ইসমা‘ঈল আবূ ‘আব্দিল্লাহ আল-বুখারী আল-জু‘ফী, আল-আদাবুল মুফরাদ (বৈরূত : দারুল বাশাইরিল ইসলামিয়্যাহ, ৩য় সংস্করণ, ১৪০৯ হি./১৯৮৯ খ্রি.), পৃ. ৯০, হাদীছ নং-২৩০; ইমাম মুসলিম, আস-সাহীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৯০, হাদীছ নং-৫৫৩।

[৬]. ছহীহুল বুখারী, হাদীছ নং-৪৩৫-৪৩৬।

[৭]. ইমাম মুসলিম, আস-সাহীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৭৭, হাদীছ নং-৫৩২।

[৮]. ছহীহ বুখারী, হা/১৩৫১-৫২ ‘কবর হতে লাশ বের করা যায় কি’? অনুচ্ছেদ-৭৭, ‘জানাযা’ অধ্যায়-২৩।

[৯]. ছহীহ মুসলিম, হা/৯৭২; মিশকাত, হা/১৬৯৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত, হা/১৬০৭, ৪/৭৩ পৃ.; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/২৩২২, সনদ ছহীহ।

[১০]. সূরাহ আত-তাওবাহ : ১০৭।

[১১]. ইমাম তিরমিযী, আস-সুনান, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৩৬৭, হাদীছ নং-১০৫০।

[১২]. মালিক ইবনু আনাস, আল-মুওয়াত্ত্বা, ২য় খণ্ড (মুওয়াসসাসু যাযেদ ইবনু সুলতান আলি নাহিয়ান, ১ম সংস্করণ, ১৪২৫ হি./২০০৪ খ্রি.), পৃ. ২৪০-২৪১, হাদীছ নং-৫৯৩।

[১৩]. ইমাম মুসলিম, আস-সাহীহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৬৬৬, হাদীছ নং-৯৬৯; আল-মুসতাদরাকু ‘আলাস সহীহাইন, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫২৪, হাদীছ নং-১৩৬৬।

[১৪]. আবদুস শহীদ নাসিম, মুসলিম সমাজে প্রচলিত ১০১ ভুল (ঢাকা: বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা সোসাইটি, ১ম প্রকাশ, ২০১০ খ্রি.), পৃ. ১৮।

[১৫] ইমাম মুসলিম, আস-সাহীহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৬৬৮, হাদীছ নং-৯৭২।

[১৬] মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী, তাহযীরুস সাজিদ মানিত তাখাযাল কুবূরিল মাসাজিদ (বৈরূত : আল-মাকতাবুল ইসলামী, ৪র্থ সংস্করণ, তাবি), পৃ. ১২৭।

[১৭]. ছহীহুল বুখারী, হা/১৩৫১।

[১৮]. ‘আব্দুর রহমান ইবনু হাসান ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ‘আব্দিল ওয়াহহাব ইবনু সুলাইমান আত-তামীমী, ফাৎহুল মাজীদ শারহু কিতাবিত তাওহীদ (কায়রো: মাতবু‘আতুস সুন্নাতিল মুহাম্মাদিয়্যাহ, ৭ম সংস্করণ, ১৩৭৭ হি./১৯৫৭ খ্রি.), পৃ. ১৫৭-১৫৮।

[১৯]. ছহীহুল বুখারী, হাদীছ নং-৬৬৯৬।

[২০]. ইমাম আবূ দাঊদ, আস-সুনান, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৫৮, হাদীছ নং-৩৩১৩; ইমাম ইবনু মাজাহ, আস-সুনান, ১ম খণ্ড, পৃ. ৬৮৮, হাদীছ নং-২১৩০; মিশকাত, হা/৩৪৩৭, সনদ ছহীহ।

[২১]. খায়রুদ্দীন ওয়ানিলী, আল-মাসজিদু ফিল ইসলাম আহকামুহু ওয়া আদাবুহু ও বিদঊহু (আম্মান: আল-মাকাতাবাতুল ইসলামিয়্যাহ, ৩য় সংস্করণ, ১৪১৪ হি.), পৃ. ২৮৪-৪২৭।

[২২]. আল-মাসজিদু ফিল ইসলাম, পৃ. ২৩৫-৪২৫; মুহাম্মাদ জামালুদ্দীন ইবনু মুহাম্মাদ সাঈদ ইবনু কাসিম আল-হালাক আল-কাসিমী, ইসলাহুল মাসাজিদি মিনাল বিদাঈ ওয়াল আওয়াইদি (বৈরূত : আল-মাকতাবুল ইসলামী, ৫ম সংস্করণ, ১৪০৩ হি./১৯৮৩ খ্রি.), পৃ. ৪৭-২৬২।

[২৩]. ছহীহুল বুখারী, হাদীছ নং-৩৫৫৩।

[২৪]. ইমাম মুসলিম, আস-সাহীহ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১৯১৯, হাদীছ নং-২৪৭৩।

[২৫] ইমাম মুসলিম, আস-সাহীহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৬১৫, হাদীছ নং-৮৯৮; আল-মিনহাজু শারহু সহীহ মুসলিম, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ১৯৫।




প্রসঙ্গসমূহ »: মসজিদ
ছালাতে একাগ্রতা অর্জনের ৩৩ উপায় (৯ম কিস্তি) - আব্দুল হাকীম বিন আব্দুল হাফীজ
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ (১১তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
ইসলামে ব্যবসায়িক মূলনীতি - ছাদীক মাহমূদ
রামাযানের শেষ দশকের গুরুত্ব ও করণীয় - মাইনুল ইসলাম মঈন
বিদ‘আত পরিচিত (২১তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
গাযওয়াতুল হিন্দ : একটি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ - হাসিবুর রহমান বুখারী
সালাফী মানহাজ অনুসরণের মর্যাদা - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
বিদায় হজ্জের ভাষণ : তাৎপর্য ও মূল্যায়ন - অধ্যাপক মো. আকবার হোসেন
জঙ্গিবাদ বনাম ইসলাম - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ (১০ম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
পরবর্তীদের তুলনায় সালাফদের ইলমী শ্রেষ্ঠত্ব (৩য় কিস্তি) - অনুবাদ : আযহার বিন আব্দুল মান্নান
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ (৫ম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন

ফেসবুক পেজ