সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ১১:১৫ অপরাহ্ন

তাওহীদ প্রতিষ্ঠার উপায়

-আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম*


(৪র্থ কিস্তি)

বিশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ করা
আক্বীদা বা বিশ্বাস মানুষের মূল সম্পদ এবং আমল কবুল হওয়ার জন্য অপরিহার্য বিষয়। বিশুদ্ধ আক্বীদা ছাড়া আমলের কোন মূল্য নেই। অথচ সমাজে ইসলামের নামে এমন অসংখ্য ভ্রান্ত আক্বীদা প্রচলিত আছে, যার দ্বারা তাওহীদ তথা ইসলাম, ঈমান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর এই ভ্রান্ত আক্বীদার অধিকাংশ বিষয় আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সম্পৃক্ত। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত যে কেউ দ্বীন সম্পর্কে বিশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ না করবে, ততক্ষণ তার কোন আমল কবুল হবে না। এ কারণে তাওহীদ প্রতিষ্ঠার অন্যতম উপায় হল বিশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ করা। কেননা আল্লাহ তা‘আলা সঠিক আক্বীদা দিয়েই রাসূলগণকে প্রেরণ করেছেন (সূরা আন-নাহ্ল : ৩৬), কিতাবসমূহ অবতীর্ণ করেছেন (সূরা হূদ : ১-২) এবং সমস্ত জিন-ইনসানের উপর এটি কবুল করে নেয়াকে আবশ্যক করেছেন (সূরা আয-যারিয়াত : ৫৬)। সকল নবী-রাসূল এ ছহীহ আক্বীদার দাওয়াত নিয়ে এসেছেন। সমস্ত আসমানী কিতাবই এর বিশদ বিবরণ দেয়ার জন্য এবং উহাকে ক্রটিযুক্তকারী বিষয়গুলো স্পষ্ট করার জন্যই অবতীর্ণ হয়েছে। প্রাপ্ত বয়স্ক প্রত্যেক মানুষকেই এটা গ্রহণ করার আদেশ করা হয়েছে। সুতরাং আক্বীদার বিষয়টি যেহেতু এত মর্যাদাবান ও গুরুত্বপূর্ণ, তাই সর্বপ্রথম এর প্রতি গুরুত্ব দেয়া, এ নিয়ে গবেষণা করা এবং এ সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জন করা জরুরী। কেননা পরিশুদ্ধ আক্বীদার উপরই মানুষের ইহকালীন-পরকালীন সৌভাগ্য নির্ভর করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

لَاۤ اِکۡرَاہَ فِی الدِّیۡنِ قَدۡ تَّبَیَّنَ الرُّشۡدُ مِنَ الۡغَیِّ فَمَنۡ یَّکۡفُرۡ بِالطَّاغُوۡتِ وَ یُؤۡمِنۡۢ بِاللّٰہِ فَقَدِ اسۡتَمۡسَکَ بِالۡعُرۡوَۃِ الۡوُثۡقٰی لَا انۡفِصَامَ لَہَا وَ اللّٰہُ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ

‘দ্বীন গ্রহণের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি নেই। নিশ্চয় হেদায়াত স্পষ্ট হয়েছে ভ্রষ্টতা থেকে। অতএব যে ব্যক্তি ত্বাগূতকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে, অবশ্যই সে মযবুত রশি আঁকড়ে ধরে, যা ছিন্ন হবার নয়। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৫৬)। অর্থাৎ যে ব্যক্তি এই সঠিক আক্বীদা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিবে, সে এ বিষয়ে নিজস্ব খেয়াল-খুশী ও বাতিল ধারণার দিকে ধাবিত হবে। সুতরাং যে ব্যক্তি সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হবে, সে তার সামনে বাতিল ছাড়া অন্য কিছু দেখতে পাবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

ذٰلِکَ بِاَنَّ اللّٰہَ ہُوَ الۡحَقُّ وَ اَنَّ مَا یَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِہٖ ہُوَ الۡبَاطِلُ

‘নিশ্চয় আল্লাহই সত্য; আর তাঁর পরিবর্তে তারা যাকে ডাকে, তা বাতিল’ (সূরা আল-হজ্জ : ৬২)। সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত লোকের পরিণাম জাহান্নাম। কতই না নিকৃষ্ট বাসস্থান। এগুলো কারণে আক্বীদার পরিচয় জানা অপরিহার্য।

‘আক্বীদা’ শব্দটি আরবী ‘আক্দ’ শব্দ থেকে উৎপত্তি। যার অর্থ ‘কোন কিছুকে গিরা বা বাঁধন দেয়া’।[১] যেমন পবিত্র কুরআনে (عُقۡدَۃُ النِّکَاحِ) ‘উক্বদাতুন নিকাহ’ বা বিবাহের বাঁধন বলা হয়েছে (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৩৫ ও ২৩৭)। বাঁধনের মাঝে কী আছে তা না দেখেই শুধু শুনে চূড়ান্ত বিশ্বাস করার নামই আক্বীদা। মূলত কর্ম ছাড়া কোন বিষয়ে সন্দেহাতীত চূড়ান্ত বিশ্বাসই আক্বীদা। আরবীতে বলা হয় اِعْتَقَدْتُّ كَذَا ‘আমি এ বিষয়ের উপর আমার হৃদয় ও অন্তরকে বেঁধেছি’। অপরদিকে ‘মানুষের দ্বীন বা ধর্মকে আক্বীদা বলা হয়।[২] বলা হয়, لَهُ عَقِيْدَةٌ حَسَنَةٌ ‘তার আক্বীদা ভালো’ তথা সন্দেহ থেকে মুক্ত। আক্বীদা হল আন্তরের ইবাদত। আর তা হল إيمان القلب بالشيء وتصديقه به ‘হৃদয় দিয়ে কোন বিষয়ের প্রতি ঈমান আনা এবং তাকে সত্য বলে বিশ্বাস করা’।[৩]

ইসলামী শরী‘আতের পরিভাষায় আক্বীদা হল- আল্লাহ তা‘আলা, তাঁর ফেরেশতাগণ, তাঁর আসমানী কিতাব সমূহ, তাঁর প্রেরিত রাসূলগণ, শেষ দিবস এবং ভাগ্যের ভাল-মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। এগুলো আরকানুল ঈমান বা ঈমানের ভিত্তিও বলা হয়।[৪] তাই আল্লাহকে না দেখে, ফেরেশতা, জান্নাত, জাহান্নাম, হাশর, ক্বিয়ামত, কবরের আযাব ইত্যাদি অদৃশ্য বিষয় না দেখেই শুধু পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের বর্ণনায় সুদৃঢ় বিশ্বাস করার নাম আক্বীদা।[৫] এ জন্য পবিত্র কুরআনের শুরুতেই মুত্তাক্বীদের প্রথম গুণ হিসাবে ‘অদৃশ্যে বিশ্বাস করার’ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, اَلَّذِیۡنَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِالۡغَیۡبِ ‘যারা অদৃষ্ট বিষয়গুলোতে বিশ্বাস স্থাপন করে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ৩)।

ইসলামী শরী‘আতের মূল রূহ হল ‘তাওহীদ’। এর মৌলিক দু’টি ধারা হল, আক্বীদা ও আমল। তবে এর ভিত্তি হল তাওহীদী আক্বীদা বা ঈমান।[৬] আর ঈমান বলা হয় এমন বিশ্বাসকে, যা নিরাপত্তাপূর্ণ ও প্রশান্তিময়। অর্থাৎ ভীতিশূন্য দৃঢ় বিশ্বাসই হল ‘ঈমান’।[৭] শারঈ অর্থে ঈমান হল

تصديق بالجنان وإقرار باللسان وعمل بالأركان يزيد بالطاعة وينقص بالعصيان

‘অন্তরে বিশ্বাস, মুখে স্বীকৃতি এবং কর্মে সম্পাদন করা। আনুগত্য ও সৎ আমলের মাধ্যমে ঈমান বাড়ে এবং পাপাচারের কারণে ঈমান কমে’।[৮] ঈমানের ভিত্তি ছয়টি। ১. আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, ২. ফেরেশতাম-লী, ৩. কিতাব সমূহ, ৪. রাসূলগণ, ৫. বিচার দিবস এবং ৬. তাক্বদীরের ভাল-মন্দের প্রতি বিশ্বাস করা (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৭৭ ও ২৮৫)।[৯] এই ঈমানী চেতনা যদি শিরকমুক্ত হয়, তাহলে আমলগুলো আল্লাহর নিকট কবুল ও গ্রহণযোগ্য হবে। কারণ বিশুদ্ধ আক্বীদার উপর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত এবং যাবতীয় আমল নির্ভরশীল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

قُلۡ اِنَّمَاۤ اَنَا بَشَرٌ مِّثۡلُکُمۡ یُوۡحٰۤی اِلَیَّ اَنَّمَاۤ اِلٰـہُکُمۡ اِلٰہٌ وَّاحِدٌ فَمَنۡ کَانَ یَرۡجُوۡا لِقَآءَ رَبِّہٖ فَلۡیَعۡمَلۡ عَمَلًا صَالِحًا وَّ لَا یُشۡرِکۡ بِعِبَادَۃِ رَبِّہٖۤ اَحَدًا

‘আপনি বলুন, আমি তো তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহ একজন। সুতরাং যে তার প্রতিপালকের সাক্ষাৎ কামনা করে সে যেন সৎকর্ম করে ও তার প্রতিপালকের ইবাদতে কাউকেও শরীক না করে’ (সূরা আল-কাহ্ফ : ১১০)। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ ‘সমস্ত আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল’।[১০] উক্ত ‘নিয়ত’ শব্দটি ‘নাওয়া’ (نواة, نوى) শব্দ থেকে উৎপত্তি। অর্থ- বিচি বা আঁঠি। অর্থাৎ মনের গহীনে যে আঁঠি লাগানো হবে, গাছ তারই হবে এবং ফলও সেই গাছেরই হবে। আক্বীদা বা নিয়ত যার যেমন হবে, তার আমল তেমনই হবে। তার বিপরীত কিছু হবে না। কারণ কাঁঠালের বিচি লাগালে আম হয় না। অনুরূপ আমের আঁঠি লাগালে কাঁঠাল হয় না। সুতরাং ক্বলবের কল্পনার মূল ভিত্তি আক্বীদাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে, সবই বরবাদ হয়ে যাবে।[১১] রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

أَلَا وَإِنَّ فِى الْجَسَدِ مُضْغَةً إِذَا صَلَحَتْ صَلَحَ الْجَسَدُ كُلُّهُ وَإِذَا فَسَدَتْ فَسَدَ الْجَسَدُ كُلُّهُ أَلَا وَهِىَ الْقَلْبُ

‘সাবধান! নিশ্চয় শরীরের মধ্যে একটি টুকরা আছে। যদি সেই টুকরা সুস্থ থাকে, তাহলে পুরো শরীরটাই সুস্থ থাকে। আর যদি ঐ টুকরা অসুস্থ থাকে, তাহলে পুরো শরীরটাই অসুস্থ থাকে। মনে রেখ, সেটাই হল ‘ক্বলব’ বা হৃদয়’।[১২]

অতএব এই ক্বলব সঠিকভাবে পরিচালিত হলে শরীরের হাত-পা, চোখ-কান, কথা-বার্তা, চিন্তা-চেতনা, চলা-ফেরা সবই সঠিক পথে পরিচালিত হবে। অন্যথা শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সবই ধ্বংসের পথে পরিচালিত হবে। আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

إِنَّ اللهَ لَا يَنْظُرُ إِلَى صُوَرِكُمْ وَأَمْوَالِكُمْ وَلَكِنْ يَنْظُرُ إِلَى قُلُوْبِكُمْ وَأَعْمَالِكُمْ

‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের চেহারা ও সম্পদের দিকে দেখবেন না; বরং তিনি দেখবেন তোমাদের অন্তর ও আমল সমূহের দিকে’।[১৩] এ কারণে মুসলিম ব্যক্তির প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব হল নিজের আক্বীদাকে পরিশুদ্ধ করা। কারণ ভ্রান্ত আক্বীদার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ مَنۡ یَّکۡفُرۡ بِالۡاِیۡمَانِ فَقَدۡ حَبِطَ عَمَلُہٗ وَ ہُوَ فِی الۡاٰخِرَۃِ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ

‘যে ব্যক্তি বিশ্বাসের সাথে কুফরী করবে, তার আমল নষ্ট হয়ে যাবে। সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে’ (সূরা আল-মায়িদাহ : ৫)। অর্থাৎ যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং আসমানী কিতাবসমূহ, রাসূলগণ এবং শরী‘আতের অন্যান্য বিষয়ের উপর যেভাবে ঈমান আনয়ন করা ফরয, যদি সেভাবে ঈমান আনয়ন না করে তা অস্বীকার করে, তাহলে তার আমল নষ্ট হয়ে যাবে এবং কুফরীর উপর তার মৃত্য হবে (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২১৭)।[১৪] আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ مَنۡ یَّرۡتَدِدۡ مِنۡکُمۡ عَنۡ دِیۡنِہٖ فَیَمُتۡ وَ ہُوَ کَافِرٌ فَاُولٰٓئِکَ حَبِطَتۡ اَعۡمَالُہُمۡ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ وَ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ

‘আর তোমাদের মধ্যকার কেউ যদি দ্বীন হতে ফিরে যায় এবং ঐ কাফের অবস্থাতেই তার মৃত্যু ঘটে, তাহলে তার ইহকাল পরকালের সমস্ত কর্মই নিস্ফল হয়ে যায়, তারাই জাহান্নামের অধিবাসী এবং তারই মধ্যে তারা চিরকাল অবস্থান করবে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২১৭)।

অতএব আক্বীদা হল, ما يصدقه العبد ويدين به ‘মানুষ যা সত্য বলে বিশ্বাস করে এবং যাকে সে দ্বীন হিসেবে গ্রহণ করে’।[১৫] এ আক্বীদাটি যদি আল্লাহ তা‘আলার প্রেরিত রাসূলগণের দ্বীন এবং তার অবর্তীণ কিতাবসমূহ অনুযায়ী হয়, তাহলে তা ছহীহ আক্বীদা হিসাবে গণ্য হবে। তার মাধ্যমে আল্লাহর শাস্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে এবং দুনিয়া ও আখেরাতে সৌভাগ্য লাভ করা যাবে। আর এ আক্বীদা যদি আল্লাহ তা‘আলার প্রেরিত রাসূলগণের আনীত আক্বীদার বিরোধী হয় এবং তাঁর অবতীর্ণ আসমানী কিতাবসমূহের পরিপন্থী হয়, তাহলে তার অনুসারীরা শাস্তির সম্মুখীন হবে এবং দুনিয়া ও আখেরাতে হতভাগ্য হবে।

কেউ পরিশুদ্ধ আক্বীদা গ্রহণ করলে দুনিয়াতে তার জান-মাল নিরাপদ থাকবে এবং অন্যায়ভাবে তার উপর আক্রমণ করা নিষিদ্ধ হবে।[১৬] বিশুদ্ধ আক্বীদাই ক্বিয়ামতের দিন বান্দাকে আল্লাহর শাস্তি থেকে বাঁচাবে।[১৭] পরিশুদ্ধ আক্বীদার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা মানুষের সমস্ত গুনাহ মোচন করে দিবেন।[১৮] সুতরাং তাওহীদ অর্থাৎ বিশুদ্ধ আক্বীদাপন্থী যে লোক আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক না করা অবস্থায় যমীন ভর্তি গুনাহ নিয়ে সাক্ষাৎ করবে, আল্লাহ তা‘আলা তার সাথে যমীন ভর্তি ক্ষমা নিয়ে সাক্ষাৎ করবেন। যার তাওহীদ ক্রটিযুক্ত হবে, সে এ ফযীলত থেকে বঞ্চিত হবে। অতএব যে খাঁটি তাওহীদের সাথে শিরক মিশ্রিত হয় না, তার সাথে কোন গুনাহ অবশিষ্ট থাকে না। কেননা পরিশুদ্ধ আক্বীদা আল্লাহ তা‘আলার ভালবাসা, তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, তাঁর ভয়, একমাত্র তাঁর নিকট আশা-ভরসা ইত্যাদিকে আবশ্যক করে। আর এটা নিঃসন্দেহে গুনাহ মোচন হওয়ার কারণ। যদিও উহা যমীন ভর্তি হোক না কেন। আক্বীদা বিশুদ্ধ থাকলে আমল কবুল হয় এবং আমল দ্বারা বান্দা উপকৃত হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

مَنۡ عَمِلَ صَالِحًا مِّنۡ ذَکَرٍ اَوۡ اُنۡثٰی وَ ہُوَ مُؤۡمِنٌ فَلَنُحۡیِیَنَّہٗ حَیٰوۃً طَیِّبَۃً وَ لَنَجۡزِیَنَّہُمۡ اَجۡرَہُمۡ بِاَحۡسَنِ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ

‘যে পুরুষ বা নারীই সৎকাজ করবে, সে যদি মুমিন হয়, তাহলে তাকে আমি দুনিয়ায় পবিত্র-পরিচ্ছন্ন জীবন দান করব এবং আখেরাতে তাদের প্রতিদান দিব তাদের সর্বোত্তম কাজ অনুসারে’ (সূরা আন-নাহল : ৯৭)।

আর যদি আক্বীদা বিশুদ্ধ না হয়, তাহলে তার বিপরীত হবে। কেননা বাতিল আক্বীদা সমস্ত আমল বরবাদ করে দেয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ لَقَدۡ اُوۡحِیَ اِلَیۡکَ وَ اِلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکَ لَئِنۡ اَشۡرَکۡتَ لَیَحۡبَطَنَّ عَمَلُکَ وَ لَتَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ

‘আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি অহী করা হয়েছে, যদি আল্লাহর সাথে শরীক করেন, তবে আপনার কর্ম নিস্ফল হবে এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবেন’ (সূরা আয-যুমার : ৬৫)। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন, ‘তারা যদি শিরক করত, তাহলে তাদের আমলসমূহ বরবাদ হয়ে যেত’ (সূরা আল-আন‘আম : ৮৮)।

শিরকপূর্ণ বাতিল আক্বীদার কারণে বান্দার জন্য জান্নাত হারাম হয়ে যায় এবং সে আল্লাহ তা‘আলার ক্ষমা হতে বঞ্চিত হয়। এর কারণে মানুষ আল্লাহর শাস্তির সম্মুখীন হবে এবং চিরকাল জাহান্নামে থাকবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, اِنَّ اللّٰہَ لَا یَغۡفِرُ اَنۡ یُّشۡرَکَ بِہٖ وَ یَغۡفِرُ مَا دُوۡنَ ذٰلِکَ لِمَنۡ یَّشَآءُ ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শিরক করার গুনাহ ক্ষমা করবেন না। শিরক ছাড়া যেসব গুনাহ রয়েছে সেগুলো যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করে দিবেন’ (সূরা আন-নিসা : ৪৮)। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,

اِنَّہٗ مَنۡ یُّشۡرِکۡ بِاللّٰہِ فَقَدۡ حَرَّمَ اللّٰہُ عَلَیۡہِ الۡجَنَّۃَ وَ مَاۡوٰىہُ النَّارُ وَ مَا لِلظّٰلِمِیۡنَ مِنۡ اَنۡصَارٍ

‘নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শিরক করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার বাসস্থান হয় জাহান্নাম। বস্তুত যালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই’ (সূরা আল-মায়িদাহ : ৭২)। তাছাড়া বাতিল আক্বীদা পোষণকারীর জান ও মালের কোন নিরাপত্তা থাকে না (সূরা আল-আনফাল : ৩৯; সূরা আত-তওবাহ : ৫)।

অপরপক্ষে মানুষের অন্তরে, সামাজিক আচার-আচরণে ও জীবন-যাপনে পরিশুদ্ধ আক্বীদার বিরাট প্রভাব রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যামানায় দু’দল লোক মসজিদ নির্মাণ করেছিল। একদল লোক সৎ নিয়ত ও আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ছহীহ আক্বীদা পোষণ করে মসজিদ নির্মাণ করেছিল। অন্য একটি দল অসৎ উদ্দেশ্যে এবং বাতিল আক্বীদার উপর একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিল। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবীকে ঐ মসজিদে ছালাত আদায় করার আদেশ করলেন, যা তাক্বওয়া এবং পরিশুদ্ধ ঈমানের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আর যে মসজিদ কুফরী করার জন্য এবং অসৎ উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়েছে, তাতে তিনি তার নবীকে ছালাতের জন্য দাঁড়াতে নিষেধ করেছেন (সূরা আত-তওবাহ : ১০৭-১০৯)।

এ কারণে ঈমানের প্রত্যেকটি শাখার ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ করা অপরিহার্য কর্তব্য।

আল্লাহ তা‘আলা সম্পর্কে বিশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ করার পাশাপাশি তাঁর সম্পর্কে ভ্রান্ত আক্বীদাগুলোও পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য। যা বর্তমান সমাজে প্রচলিত আছে। যেমন- ১. ‘আল্লাহ নিরাকার’ ও ‘তিনি সর্বত্র বিরাজমান’ বলে বিশ্বাস করা ২. ওয়াহদাতুল ওজূদ বা সবকিছুতে আল্লাহর উপস্থিতিকে বিশ্বাস করা।[১৯] ৩. আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে শপথ করা ৪. কারো ইচ্ছাকে আল্লাহর ইচ্ছার সমতুল্য করা ৫. আল্লাহ তা‘আলার নামের যিকরের সাথে বা এককভাবে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামের যিকর করা ইত্যাদি।

অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কেও সঠিক আক্বীদা পোষণ করা অপরিহার্য কর্তব্য। যেমন : ১. তিনি মাটির তৈরি (সূরা আল-কাহ্ফ : ১১০), ২. তিনি মারা গেছেন (সূরা আয-যুমার : ৩০-৩১), ৩. তিনি গায়েব জানতেন না ইত্যাদি (সূরা আল-আ‘রাফ : ১৮৮)।

সঠিক আক্বীদা পোষণ করার পাশাপাশি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে ভ্রান্ত আক্বীদা পরিহার করা ফরয, যা বর্তমানে সমাজে চালু আছে। যেমন : ১. রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নূরের তৈরি বলে বিশ্বাস করা। ২. রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গায়েব বা অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে জানতেন বলে বিশ্বাস করা। ৩. রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রশংসা বর্ণনায় তাঁকে আল্লাহর সাথে একাকার করে দেয়া। ৪. রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কবর থেকে সালামের উত্তর দেন ও কখনো হাত বের করে দেন। ৫. রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে কোন স্থানে হাযির হতে পারেন। ৬. যিনিই আল্লাহ তিনিই মুহাম্মাদ (নাঊযুবিল্লাহ)। ৭. আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সৃষ্টি না করলে পৃথিবী, জান্নাত-জাহান্নাম কিছুই সৃষ্টি করতেন না ইত্যাদি।[২০]

এছাড়া দ্বীনের অন্যান্য বিষয়েও ভ্রান্ত আক্বীদা পরিহার করে সঠিক আক্বীদা পোষণ করা ফরয। সমাজে ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহের মধ্যে অন্যতম হল- ১. নবী-রাসূলগণের চেয়ে ছূফীরাই শ্রেষ্ঠ ২. অসীলা ধরা অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও কথিত মৃত অলীদেরকে মাধ্যম করে দু‘আ করা ৩. ভ- পীরের কারামত দাবী করা এবং ভবিষ্যতের কথা ব্যক্ত করা ৪. পীর ধরা ফরয। যার পীর নেই, তার পীর শয়তান ৫. পীরের মুরীদ হলে ছালাত, ছিয়াম ও হজ্জ করা লাগে না। কবরে সওয়াল-জওয়াবও হবে না। পীরেরা ক্বিয়ামতের মাঠে সুপারিশ করে মুরীদদেরকে জান্নাতে নিয়ে যাবে ৬. পীরের দরগায় দান করলে সব পাপ ক্ষমা হয়ে যায় এবং সকল বিপদ দূর হয়ে যায় ৭. প্রকৃত ছূফীই আল্লাহ ৮. খানকা, মাযার, কবরস্থান, তীর্থস্থান, গাছতলা, পাথর, খাম্বা, শহীদ মিনার, প্রতিকৃতি ইত্যাদি স্থানে মানত করা এবং ওরসের আয়োজন করা ৯. প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীসহ বিভিন্ন দিবসকে মঙ্গলময় মনে করা ১০. ঈমান বাড়েও না কমেও না। অর্থাৎ ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি নেই।[২১] ১১. ছবি, মূর্তি ও ভাস্কর্য পূজা এবং তাদেরকে সম্মান প্রদর্শন করা। ১২. শিখা অনির্বাণ ও শিখা চিরন্তনে আগুন প্রজ্জ্বলন করা ও সম্মান প্রদর্শন করা ১৩. কবর ও মাযারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা ১৪. অধিকাংশের রায়ই চূড়ান্ত ১৫. রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত বিজাতীয় শিরকী মতবাদসমূহ অর্থাৎ জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ, গণতন্ত্র, পুঁজিবাদ এবং সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী হওয়া ১৬. জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস ১৭. মানব রচিত আইন দ্বারা শাসন করা ও বিচারকার্য পরিচালনা করা ১৮. আইন রচনায় আল্লাহর সাথে অন্যকে শরীক করা ১৯. কবর পূজা করা ২০. ভাগ্য জানার জন্য জ্যোতির্বিদদের নিকট গমন করা এবং তাদের কথায় বিশ্বাস করা ২১. কবরমুখী হয়ে বা কবরের পার্শ্বে ছালাত আদায় করা ২২. দ্রুত দু‘আ কবুল হওয়ার আশায় পীরের বৈঠকখানার দিকে মুখ করে দু‘আ পাঠ করা ২৩. ওলী-আউলিয়াদের নিকট কিছু কামনা করা ও সাহায্যের জন্য আহ্বান করা ২৪. কবরের চার পার্শ্বে ত্বাওয়াফ করা ২৫. কবর, মাযার, দরবার ও খানকায়ে মানত করা ২৬. গায়রুল্লাহর নামে পশু যবেহ করা ২৭. আল্লাহ তা‘আলাকে ভালবাসার ন্যায় অন্যকে ভালবাসা ২৮. আল্লাহ ব্যতীত অন্যের উপর ভরসা করা ২৯. মৃত ব্যক্তি, শিক্ষক-মুরুব্বী ও নেতার উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে বিনয় ও আনুগত্য প্রকাশ করা এবং নীরবতা পালন করা ৩০. সম্মান প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে কাউকে সিজদা করা ৩১. তাবীয ব্যবহার করা ৩২. অষ্টধাতু অর্থাৎ রোগ নিরাময়ের উদ্দেশ্যে ধাতব দ্রব্য দ্বারা নির্মিত আংটি বা বালা পরিধান করা ইত্যাদি।

আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সকল ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ করার পাশাপাশি তাওহীদ পরিপন্থী আক্বীদাসমূহ পরিত্যাগ করার তাওফীক্ব দান করুন-আমীন!!

(ইনশাআল্লাহ চলবে)

* পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

তথ্যসূত্র :
[১]. ড. ছালিহ ইবনু ফাওযান আল-ফাওযান, আক্বীদাতুত তাওহীদ ওয়া বায়ানু মা ইউযাদ্দুহা আও ইয়ানকুছুহা মিনাশ শিরকিল আকবার ওয়াল আছগার ওয়াত তা‘ত্বীল ওয়াল বিদ‘আহ ওয়া গাইরি যালিকা (রিয়াদ : মাকতাবাতু দারিল মিনহাজ, ১৪৩৪ হি.), পৃ. ৯। পরবর্তীতে এই বইটি ‘আক্বীদাতুত তাওহীদ’ নামে উল্লেখিত হবে।
[২]. প্রাগুক্ত।
[৩]. প্রাগুক্ত।
[৪]. প্রাগুক্ত।
[৫]. আক্বীদাতুত তাওহীদ, পৃ. ৯।
[৬]. ড. মুযাফফর বিন মুহসিন, ভ্রান্ত আক্বীদা বনাম সঠিক আক্বীদা (রাজশাহী : আছ-ছিরাত প্রকাশনী, ২০১৫ খ্রি.), পৃ. ৯।
[৭]. প্রাগুক্ত।
[৮]. ইবনু ঈসা, তাওযীহুল কাফিয়্যাহ আশ-শাফিয়্যাহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৩৯; আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল মুহসিন আল-বদর, যিয়াদাতুল ঈমান ওয়া নুক্বছানিহি ওয়া হুকমিল ইসতিছনাই ফীহ (রিয়ায : মাকতাবাতু দারিল ক্বলম, ১ম সংস্করণ ১৪১৬ হি.), পৃ. ১১০; মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক্ব ইবনু ইয়াহইয়া ইবনু মান্দাহ, আল-ঈমান (বৈরূত : মুওয়াস্সাসাতুর রিসালাহ, ১৪০৬ হি.), ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৩১; মুহাম্মাদ ছিদ্দীক হাসান খান, ক্বাৎফুছ ছামার (ওযারাতুশ শুয়ূনিল ইসলামী ওয়াল আওক্বাফ ওয়াদ দাওয়াত ওয়াল ইরশাদ), ১ম খণ্ড, পৃ. ৮৬।
[৯]. ছহীহ বুখারী, হা/৫০, ৪৭৭৭,; ছহীহ মুসলিম, হা/৮।
[১০]. ছহীহ বুখারী, হা/১; ছহীহ মুসলিম, হা/১৯০৭।
[১১]. ভ্রান্ত আক্বীদা বনাম সঠিক আক্বীদা, পৃ. ১০।
[১২]. ছহীহ বুখারী, হা/৫২; ছহীহ মুসলিম, হা/১৫৯৯।
[১৩]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৬৪।
[১৪]. তায়সীরুল কারীমির রহমান ফী তাফসীরিল কালামিল মান্নান, পৃ. ২২১।
[১৫]. ড. ছালিহ ইবনু ফাওযান আল-ফাওযান, আল-ইরশাদ ইলা ছহীহিল ই‘তিক্বাদ (রিয়াদ : রিয়াসাতুল ‘আম্মাতি লিল বুহূছিল ‘ইলমিয়্যাহ ওয়াল ইফতা, ১৪৩০ হি.), পৃ. ১০।
[১৬]. ছহীহ বুখারী, হা/২৫; ছহীহ মুসলিম, হা/২০।
[১৭]. ছহীহ বুখারী, হা/১২৯; ছহীহ মুসলিম, হা/৯৩।
[১৮]. তিরমিযী, হা/৩৫৪০।
[১৯]. ভ্রান্ত আক্বীদা বনাম সঠিক আক্বীদা, পৃ. ৪৯।
[২০]. তদেব, পৃ. ৮৭- ৯৮।
[২১]. প্রাগুক্ত, পৃ. ১০০-১১৫।




বিদ‘আত পরিচিতি (২০তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
মসজিদ: ইসলামী সমাজের প্রাণকেন্দ্র (২য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
প্রচলিত তাবলীগ জামা‘আত সম্পর্কে শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের অবস্থান (শেষ কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির
কুরবানীর মাসায়েল - আল-ইখলাছ ডেস্ক
রামাযানের শেষ দশকের গুরুত্ব ও করণীয় - মাইনুল ইসলাম মঈন
বিদ‘আত পরিচিতি (১৬তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
সুন্নাতের আলো বিদ‘আতের অন্ধকার - অনুবাদ : হাফীযুর রহমান বিন দিলজার হোসাইন
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (৫ম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
সর্বশ্রেষ্ঠ আমল - হাফেয আবূ তাহের বিন মজিবুর রহমান
ইসলামী পুনর্জাগরণের প্রতিবন্ধকতা ও তার সমাধান (৫ম কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ইসলামী তাবলীগ বনাম ইলিয়াসী তাবলীগ (২য় কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (৪র্থ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম

ফেসবুক পেজ