বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৩০ পূর্বাহ্ন
মসজিদ: ইসলামী সমাজের প্রাণকেন্দ্র
ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান*

(৯ম কিস্তি) 

Ÿ ছালাতের জন্য মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পড়া

ছালাতের জন্য মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পড়া বিদ‘আত। নিয়্যাত (اَلنِّيَّاتُ) শব্দটি আরবী। যার শাব্দিক অর্থ পরিকল্পনা করা, ইচ্ছা করা, মনস্থ করা, অন্তরে অন্তরে কোন কিছুর সংকল্প করা, স্থির সিদ্ধান্ত নেয়া প্রভৃতি।[১] ‘আল্লামা সাইয়িদ সাবেক (রাহিমাহুল্লাহ) (১৩৩৫-১৪২০ হি./১৯১৫-২০০০ খ্রি.) বলেন,

النية وحقيقتها الارادة المتوجهة نحو الفعل ابتغاء رضا الله تعالى وامتثال حكمه وهي عمل قلبي محض لا دخل للسان فيه والتلفظ بها غير مشروع.

‘নিয়্যাত হল, আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্য ও নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে কোন কাজ করার সংকল্প করা। এটি শুধু মনের সাথে সম্পৃক্ত একটি কাজ। নিয়তের সাথে মৌখিক উচ্চারণের কোন সম্পর্ক নেই। তাছাড়া এটি শরী‘আতসিদ্ধও নয়’।[২] মূলত নিয়্যাতের অর্থ হল- অন্তরের ইচ্ছা ও সংকল্প। নিয়্যাতের সাথে মৌখিক উচ্চারণরে কোন সম্পর্ক নেই। প্রখ্যাত হানাফী ফাকীহ ইবনু নুজাইম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, أَنَّ النِّيَّةَ إنَّمَا هِيَ عَمَلُ الْقَلْبِ وَأَنَّهُ لَا يُعْتَبَرُ بِاللِّسَانِ ‘নিয়্যাত কেবল মনেরই কাজ। এক্ষেত্রে মৌখিক উচ্চারণ বিবেচ্য নয়’।[৩] ইবনু ‘আবিদীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, وَالْمُعْتَبَرُ فِيْهَا عَمَلُ الْقَلْبِ اللَّازِمِ لِلْإِرَادَةِ ‘নিয়্যাতের ক্ষেত্রে আন্তরের ইচ্ছাই হচ্ছে মূল বিবেচ্য বিষয়’।[৪]                                                  

মানুষের মনের ইচ্ছা ও অভিপ্রায়কে নিয়্যাত বলে। তাছাড়া ত্রুটিযুক্ত দানায় যেমন ত্রুটিযুক্ত ফল উৎপাদন হয়। তেমনি নিয়্যাত পরিশুদ্ধ না হলে জীবনের কৃত সকল ‘আমল বা ‘ইবাদতই বরবাদ হয়ে যাবে। আর এ কথা স্বতঃসিদ্ধ যে, বিশ্ব মানবতার প্রত্যেক কাজ তার অন্তরে পরিকল্পিত চিন্তা-চেতনার বহিঃপ্রকাশ মাত্র। তাই মানুষের সকল কাজ তার নিয়্যাতের উপর নির্ভরশীল। সুতরাং একনিষ্ঠচিত্তে ও নিবিষ্ট মনে কেবল আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি ও রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর অনুসরণই হবে বিশুদ্ধ নিয়্যাতের মৌলিক দাবী। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, إنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ ‘প্রত্যেক কাজ নিয়্যাতের উপর নির্ভরশীল’।[৫]

অতএব ছালাত সহ যেকোন ‘ইবাদতের ক্ষেত্রে নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা সুস্পষ্ট বিদ‘আত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ), ছাহাবায়ে কিরাম, তাবি‘ঈন ও তাবি‘-তাবি‘ঈগণের মধ্যে কেউ স্ব-শব্দে নিয়ত করতেন মর্মে কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। এমনকি সালাফে ছালিহীনও এর অনুমোদন দেননি। বরং এটি মানুষের তৈরি বিধান। ইবনুল ক্বাইায়িম আজ-জাওযিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) (৬৯১-৭৫১ হি./১২৯২-১৩৫০ খি.) বলেন,

كَانَ ﷺ إذَا قَامَ إلَى الصّلَاةِ قَالَ "اللّهُ أَكْبَرُ" وَلَمْ يَقُلْ شَيْئًا قَبْلَهَا وَلَا تَلَفّظَ بِالنّيّةِ الْبَتّةَ وَلَا قَالَ أُصَلّي لِلهِ صَلَاةَ كَذَا مُسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةِ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ إمَامًا أَوْ مَأْمُوْمًا وَلَا قَالَ أَدَاءً وَلَا قَضَاءً وَلَا فَرْضَ الْوَقْتِ وَهَذِهِ عَشْرُ بِدَعٍ لَمْ يَنْقُلْ عَنْهُ أَحَدٌ قَطّ بِإِسْنَادٍ صَحِيْحٍ وَلَا ضَعِيْفٍ وَلَا مُسْنَدٍ وَلَا مُرْسَلٍ لَفْظَةً وَاحِدَةً مِنْهَا الْبَتّةَ بَلْ وَلَا عَنْ أَحَدٍ مِنْ أَصْحَابِهِ وَلَا اسْتَحْسَنَهُ أَحَدٌ مِنْ التّابِعِيْنَ وَلَا الْأَئِمّةِ الْأَرْبَعَةِ.

‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন ছালাতের দাঁড়াতেন, তখন ‘আল্লাহু আকবার’ বলতেন। এর আগে অন্য কিছু বলতেন না এবং অবশ্যই মুখ দিয়ে নিয়্যাত উচ্চারণ করতেন না। তিনি বলতেন না যে, আমি ক্বিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে এত রাক‘আত অমুক ছালাত ফরয হিসাবে ইমাম বা মুক্তাদী রূপে আদায় করার কিংবা ক্বাযা করার মনস্থ করছি। এ হল দশটি বিদ‘আত। কেউ বিশুদ্ধ কি দুর্বল, মুসনাদ কি মুরসাল কোন ধরনের সনদে এ সংক্রান্ত একটি শব্দও রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেননি। এমনকি তাঁর কোন ছাহাবী থেকেও তা বর্ণিত হয়নি। অধিকন্তু তাবি‘ঈ এবং ইমাম চতুষ্টয়ের মধ্যে কেউ একে ভাল জানেননি’।[৬] ‘আল্লামা জালালুদ্দীন আস-সুয়ূতী (রাহিমাহুল্লাহ) (১৪৯-৯১১ হি.) বলেন,

ومن البدع أيضًا الوسوسة في نية الصلاة، ولم يكن ذلك من فعل النبي ( ولا أصحابه، كانوا لا ينطقون بشيء من نية الصلاة سوى التكبير.

‘আর ছালাতের নিয়্যাতের মধ্যে সন্দেহ পোষণও একটি বিদ‘আত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও ছাহাবীগণ এরূপ করেননি। তাঁরা তাকবীর ছাড়া ছালাতের নিয়্যাতের কিছুই মুখ দিয়ে উচ্চারণ করতেন না’।[৭] এ প্রসঙ্গে ইবনুল হাজ্জ (রাহিমাহুল্লাহ) (মৃ. ৭৩৭ হি.) বলেন,

أن النية لا يجهر بها فهو عام في الإمام والمأموم والفذ فالجهر بها بدعة على كل حال إذ إنه لم يرو أن النبي صلى الله عليه وسلم ولا الخلفاء ولا الصحابة رضوان الله عليهم أجمعين جهروا بها فلم يبق إلا أن يكون الجهر بها بدعة.

‘ইমাম, মুক্তাদী ও একা ছালাত আদায়কারী প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য সর্বাবস্থায় সশব্দে নিয়্যাত করা বিদ‘আত। কেননা রাসূলুল্লাহ (ﷺ), ছাহাবী ও তাবি‘ঈগণ  কেউ সশব্দে ছালাতের নিয়্যাত করেছেন মর্মে কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না। অতএব সশব্দে নিয়্যাত করা বিদ‘আত বৈ অন্য কিছুই হতে পারে না’।[৮] এ প্রসেঙ্গ সঊদী আরবের প্রখ্যাত ফক্বীহ ‘আল্লামা শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) (১৩৪৭-১৪২১ হি./১৯২৯-২০০১ খ্রি.) পরিষ্কারভাবে বলেছেন,

والنية محلها القلب ولا يحتاج إلى نطق، وأنت إذا قمت تتوضأ فهذه هي النية، ولا يمكن لإنسان عاقل غير مكره على عمل أن يفعل ذلك العمل إلا وهو ناوٍ له... ولم يرد عن رسول الله صلى الله عليه وسلم ولا عن أصحابه رضوان الله عنهم أنهم كانوا يتلفظون بالنية، والذي تسمعهم يتلفظون بالنية تجد ذلك إما جهلاً منهم، أو تقليداً لمن قال بذلك من أهل العلم، حيث قالوا إنه ينبغي أن يتلفظ بالنية من أجل أن يطابق القلب اللسان، ولكننا نقول إن قولهم هذا ليس بصحيح، فلو كان أمراً مشروعاً لبينه الرسول صلى الله عليه وسلم للأمة، إما بقوله وإما بفعله.

‘নিয়্যাতের স্থান হল অন্তর। মুখে উচ্চারণ করার কোন প্রয়োজন নেই। তুমি যখন ওযূ করবে, তখন এটা একটা নিয়ত। একজন বিবেকবান ও সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ কোন কাজ করবে অথচ নিয়ত করবে না, এটা অসম্ভব...। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও ছাহাবায়ে কিরামগণের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোন প্রামাণ্য দলীল নেই। যারা মুখে উচ্চারণ করে ও শুনিয়ে নিয়্যাত করে তাদেরকে দেখবে, হয় তারা মূর্খ নতুবা তারা কোন ‘আলিমের তাক্বলীদ বা অন্ধ অনুসরণ করে থাকে। মুখে উচ্চারণকারীদের যুক্তি হচ্ছে, অন্তরের ইচ্ছার সাথে মুখের কথা ও কাজের মিলের জন্য নিয়্যাত পাঠ করা উচিত। কিন্তু আমাদের বক্তব্য হল, তাদের এ যুক্তি ভিত্তিহীন। কেননা একাজ যদি শরী‘আত সম্মত হত, তাহলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কথা ও ‘আমলের মাধ্যমে উম্মতের সামনে বর্ণনা করতেন’।[৯]

Ÿ ছালাতের শুরুতে জায়নামাজের দু‘আ পড়া

বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ ছালাত আদায়ের শুরুতে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে নিম্নোক্ত দু‘আটি পাঠ করে থাকে-

إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ حَنِيفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ.

যাকে ‘মুছাল্লার দু‘আও’ বলা হয়। হানাফীগণের মধ্যে সর্বপ্রথম ফাক্বীহ আবুল লায়স (রাহিমাহুল্লাহ) তাকবীরে তাহরীমার পূর্বে এ দু‘আ পড়ার কথা বলেছেন। তবে আল-মারগীনানী (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইবনুল হুমাম (রাহিমাহুল্লাহ) সহ অন্যান্য হানাফী ফকীহ তার এ অভিমতকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ইবনু ‘আবিদীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

اَلْحَقُّ أَنَّ قِرَاءَتَهُ قَبْلَ النِّيَّةِ أَوْ بَعْدَهَا قَبْلَ التَّكْبِيْرِ لَمْ تَثْبُتْ عَنْ النَّبِيِّ ﷺ وَلَا عَنْ أَصْحَابِهِ.

‘বাস্তব ব্যাপার হল- নিয়্যাতের আগে কিংবা নিয়্যাতের পরে তাকবীরে তাহরীমার আগে এ দু‘আটি পড়ার বিষয় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে প্রমাণিত নয় এবং ছাহাবায়ে কিরাম থেকে প্রমাণিত নয়’।[১০]

বিভিন্ন বিশুদ্ধ হাদীছ থেকে স্পষ্ট হয় যে, এই দু‘আটি নিয়্যাতের আগে নয় বরং তাকবীরে তাহরীমার পর কিরা‘আত শুরু করার আগেই পড়তে হয়। যেমন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন ছালাতের উদ্দেশ্যে দাঁড়াতেন, তখন পড়তেন  ...وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ حَنِيْفًا।[১১] অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে,

كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلَاةِ كَبَّرَ ثُمَّ قَالَ ্রوَجَّهْتُ وَجْهِىَ لِلَّذِى فَطَرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ حَنِيْفًا مُسْلِمًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ...

‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন ছালাতের জন্য দাঁড়াতেন, তখন তাকবীর বলতেন। অতঃপর বলতেন وَجَّهْتُ وَجْهِىَ لِلَّذِى فَطَرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ حَنِيْفًا مُسْلِمًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ।[১২] অনুরূপভাবে তিরমিযী[১৩] এবং নাসাঈতে[১৪] একইভাবে বর্ণিত হয়েছে। হানাফী ইমামগণের মতে, কেবল নাফল ছালাতসমূহের মধ্যেই ছানার পরে এই দু‘আ পড়বে। ইবনু ‘আবিদীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এ সংক্রান্ত যেসব হাদীছ বর্ণিত হয়েছে তা থেকে বুঝা যায় যে, এ দু‘আটি নাফল ছালাতসমূহের মধ্যে ছানার পরে পড়াই নিয়ম।[১৫] তদুপরি এ সংক্রান্ত মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাহিমাহুল্লাহ) থেকে বর্ণিত হাদীছটিতেও এই দু‘আটি নাফল ছালাতে পড়ার কথা বলা হয়েছে।[১৬]

অতএব উক্ত আলোচনায় প্রমাণ হলো যে, ছালাতের শুরুতে তাকবীরে তাহরীমার আগে জায়নামাজ বা মুছাল্লায় দাঁড়িয়ে পাঠ করার মত নির্দিষ্ট কোন দু‘আ নেই। বর্ণিত দু‘আটি তাকবীরে তাহরীমার পরে পড়াই নিয়ম। তাই জায়নামাজ বা মুছাল্লায় এই দু‘আ পাঠ করা স্পষ্ট সুন্নাহ পরিপন্থী এবং বিদ‘আত। ‘আলী আল-মারগীনানী (৫৩০-৫৯৩ হি.) এবং কামালুদ্দীন ইবনুল হুমাম (৭৯০-৮৬১ হি.) প্রমুখ হানাফী বিদ্বান বলেছেন, ‘অধিকতর উত্তম হলো- তাকবীরের আগে وَجَّهْتُ وَجْهِىَ... না বলা, যাতে তাকবীর ও নিয়্যাত এক সাথে হতে পারে। এটিই বিশুদ্ধ অভিমত।[১৭]

Ÿ জেহরী সালাতে ‘আঊযুবিল্লাহ’ ও ‘বিসমিল্লাহ’ সরবে পড়া

অনেক মসজিদে উক্ত আমল দেখা যায়। তাদের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছালেও কোন গুরুত্ব দেন না। এটা গোঁড়ামি মাত্র। কারণ ‘আঊযুবিল্লাহ’ ও ‘বিসমিল্লাহ’ নীরবেই পড়তে হবে। ‘বিসমিল্লাহ’ জোরে বলার পক্ষে যে বর্ণনা রয়েছে তা যঈফ।[১৮] আর ‘আঊযুবিল্লাহ’ জোরে বলার কোন দলীলই নেই। বরং ‘বিসমিল্লাহ’ নীরবে বলার ছহীহ হাদীছ রয়েছে।

عَنْ أَنَسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ وَأَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا كَانُوْا يَفْتَتِحُوْنَ الصَّلَاةَ بِ- اَلۡحَمۡدُ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ.

আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ), আবূ বাক্র ও ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) ‘আল-হামদু লিল্লা-হি রাব্বিল ‘আলামীন’ দ্বারা ছালাত শুরু করতেন।[১৯] অন্যত্র আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,

صَلَّيْتُ خَلْفَ النَّبِىِّ ﷺ وَأَبِى بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ فَكَانُوْا يَسْتَفْتِحُوْنَ بِ (اَلۡحَمۡدُ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ) لَا يَذْكُرُوْنَ بِسۡمِ اللّٰہِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ فِىْ أَوَّلِ قِرَاءَةٍ وَلاَ فِىْ آخِرِهَا.

‘আমি নবী (ﷺ), আবূ বাক্র, ‘উমার ও ‘উছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর পিছনে ছালাত আদায় করেছি। তারা ‘আল-হামদু লিল্লা-হি রাব্বিল ‘আলামীন’ দ্বারা ছালাত শুরু করতেন। ক্বিরাআতের প্রথমে বা শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম’ উল্লেখ করতেন না’।[২০]

Ÿ চুপিসারে পড়তে হয় ছালাতে এ ধরনের দু‘আগুলোকে উচ্চৈঃস্বরে পড়া

চুপিসারে পড়তে হয়- ছালাতে এ ধরনের দু‘আ ও তাসবীগুলোকে উচ্চৈঃস্বরে পড়া বিদ‘আত। অনুরূপভাবে যে সব ছালাতে কিরা‘আত চুপিসারে পড়তে হয়, তাতে কিরা‘আত উচ্চৈঃস্বরে পড়াও বিদ‘আত। কেননা এ ধরনের রীতি রাসূলুল্লাহ (ﷺ), ছাহাবায়ে কিরাম ও সালাফে ছালিহীনের আমলে চালু ছিল না।[২১]

Ÿ দুই সিজদার মাঝে দু‘আ না পড়া

দুই সিজদার মাঝে নির্দিষ্ট দু‘আ পড়তেন শরী‘আত নির্দেশিত পন্থ। যা রাসূলুল্লাহ (ﷺ), ছাহাবায়ে কিরাম ও সালাফগণ পড়তেন। কিন্তু উক্ত আজ সুন্নাত সমাজ থেকে উঠে গেছে। অধিকাংশ মুছল্লী ‘আমল করে না। এভাবে ইচ্ছাকৃতভাবে একটি সুন্নাতকে প্রত্যাখ্যান করা গর্হিত অন্যায়।

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ كَانَ يَقُوْلُ بَيْنَ السَّجْدَتَيْنِ اللهُمَّ اغْفِرْ لِىْ وَارْحَمْنِىْ وَعَافِنِىْ وَاهْدِنِىْ وَارْزُقْنِىْ.

ইবনু ‘আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) দুই সিজদার মাঝে এই দু‘আ পড়তেন- اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِىْ وَارْحَمْنِىْ وَعَافِنِىْ وَاهْدِنِىْ وَارْزُقْنِىْ ‘হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আমার উপরে রহম করুন, আমার অবস্থার সংশোধন করুন, আমকে সৎপথ প্রদর্শন করুন ও আমাকে রূযী দান করুন’।[২২] অথবা বলবে ‘রব্বিগ্ফিরলী’ ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন’। দুইবার বলবে।[২৩]

Ÿ মসজিদের মাইকে ডাকাডাকি করা

রামাযানের রাত্রিগুলোর শেষে সুন্নাতী পদ্ধতি পরিত্যাগ করে মুওয়াযযিনগণ মাইকে উচ্চ আওয়াযে কুরআন তেলাওয়াত, গযল, ইসলামী সঙ্গীত ইত্যাদি গাওয়া শুরু করেন। অথবা টেপ রেকর্ডার চালিয়ে বক্তাদের ওয়ায, গজল বাজাতে থাকে। সেই সাথে আহ্বান করা হতে থাকে, ‘ভায়েরা আমার, বোনেরা আমার! উঠুন, সাহারীর সময় হয়েছে, রান্না-বান্না করুন, খাওয়া-দাওয়া করুন’ ইত্যাদি বলে। অথবা কোথাওবা কিছুক্ষণ পরপর উঁচু আওয়াযে হুইসেল বাজানো হয়। এটি শরী‘আতের নামে নতুন আবিষ্কার, যা স্পষ্ট বিদ‘আত।[২৪]

রামাযানে আরো একটি বিষয় লক্ষ্য করা যায় যে, এলাকার কিছু যুবক রামাযানের প্রতি রাতের শেষে মাইক নিয়ে সম্মিলিত কণ্ঠে গযল বা কাওয়ালী গেয়ে মানুষের বাড়ীর দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে চাঁদা আদায় করে। অথবা মাইক বাজিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে থাকে। এ ছাড়াও এলাকা ভেদে ভিন্ন ভিন্ন বিদ‘আতী কার্যক্রম দেখা যায়। কেননা অসংখ্য মুমিন বান্দাগণ এ সময় তাহাজ্জুদের ছালাত আদায় করেন, কুরআন তেলাওয়াত করেন, মহান আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করেন। তাই একদিকে যেমন তাদের ইবাদত বিঘ্ন ঘটে, অন্যদিকে মানুষের ঘুমেও ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। এছাড়া এখানেও রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সুন্নাত ভূলুণ্ঠিত ও অবহেলিত হয়েছে। কারণ এখানের সুনির্দিষ্ট সুন্নাত হল- সাহারীর আযান দেয়া। দু’টি আযান দেয়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সুন্নাত। ১ম আযান সাহারী খাওয়ার জন্য এবং ২য় আযান সাহারী খাওয়া শেষ করা ও ফজরের ছালাতের জন্য এবং এজন্য দু’জন মুওয়াযযিনও নির্ধারণ করা ছিল। ‘আয়িশাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন,

إِنَّ بِلَالًا كَانَ يُؤَذِّنُ بِلَيْلٍ فَقَالَ رَسُولُ ﷺكُلُوْا وَاشْرَبُوْا حَتَّى يُؤَذِّنَ ابْنُ أُمِّ مَكْتُوْمٍ فَإِنَّهُ لَا يُؤَذِّنُ حَتَّى يَطْلُعَ الفَجْرُ.

‘নিশ্চয় বিলাল রাতে আযান দেয়। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, তোমরা পানাহার করতে থাক ইবনু উম্মে মাকতূমের আযান দেয়া পর্যন্ত। আর ফজর উদিত না হলে সে আযান দেয় না’।[২৫] অবশ্য নাসাঈর হাদীছে বর্ণিত হয়েছে যে, ইবনু মাস‘ঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) নবী করীম (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন, নবী করীম (ﷺ) বলেন, إِنَّ بِلَالًا يُؤَذِّنُ بِلَيْلٍ لِيُوْقِظَ نَائِمَكُمْ وَلِيَرْجِعَ قَائِمَكُمْ ‘বেলাল আযান দেয় এজন্য যে, যেন ঘুমন্ত লোক জাগ্রত হয় আর তাহাজ্জুদ আদায়কারী ফিরে আসে অর্থাৎ ছালাত বাদ দেয় এবং সাহারী খায়’।[২৬]

Ÿ জুম‘আতুল বিদা পালন করা

রামাযানের শেষ জুম‘আহকে ‘জুম‘আতুল বিদা’ বলা হয়। যার শরী‘আতে কোন ভিত্তি নেই। একটি হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, তবুও সেটা জাল।[২৭] একশ্রেণীর মুসলিমরা অতি উৎসাহী হয়ে এই বিদ‘আতী জুম‘আর উদ্ভব ঘটিয়েছে। আব্দুল হাই লাক্ষèৗভী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

هَذَا مَوْضُوْعٌ لَا إِشْكَالَ فِيْهِ وَلَمْ أَجِدْهُ فِيْ شَيْءٍ مِنَ الْكُتُبِ الَّتِيْ جَمَعَ مُصَنِّفُوْهَا فِيْهَا الأَحَادِيْثَ الْمَوْضُوْعَةَ وَلَكِنَّهُ اشْتَهَرَ عِنْدَ جَمَاعَةٍ مِنَ الْمُتَفَقِّهَةِ بِمَدِيْنَةِ صَنْعَاءَ فِيْ عَصْرِنَا هَذَا وَصَارَ كَثِيْرٌ مِنْهُمْ يَفْعَلُوْنَ ذَلِكَ وَلَا أَدْرِي مَنْ وَضَعَهُ لَهُمْ. فَقَبَّحَ اللهُ الْكَذَّابِيْنَ.

‘লেখক বলেন, এটি একটি বানাওয়াট বা জাল হাদীছ, এতে কোন সন্দেহ নেই। কারণ হাদীছের যত গ্রন্থ প্রণেতা আছেন, তাদের কারো কোন গ্রন্থেই হাদীছটি আমি পাইনি। বর্তমানে এই হাদীছটি ইয়ামানের রাজধানী ছান‘আ থেকে পরিচিতি পায়।



আর মানুষের কাছেও বেশ গুরুত্বের বিষয়বস্তু হয়ে পড়ে। এর ইতিহাস আমি জানি না যে, এ হাদীছটি কে তৈরি করল। আল্লাহ মিথ্যুকদের ধ্বংস করুন’।[২৮]

সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া বোর্ড ‘লাজনাহ দায়েমাহ’-কে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তারা বলেন, ‘ছালাত একটি ইবাদত। আর এর ভিত্তিও আছে- সেটা তাওক্বীফী তথা অপরিবর্তনীয়... কিন্তু ‘জুম‘আতুল বিদা’ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে তো নয়ই; বরং ছাহাবী, তাবি‘ঈ, ইমাম-মুজতাহিদগণ এর পক্ষ থেকেও এমন কোন কথা বা আমল বর্ণিত হয়নি। যদি তাদের মাঝে আমল থাকতই, তাহলে কেউ না কেউ আমাদের পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দিত। কিন্তু না, কথা ও কর্মে কেউই কোন হাদীছের মাধ্যমে বর্ণনা করেননি। আর এটা একটি স্পষ্ট বিদ‘আত। যা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) করেননি, করতে বলেননি, ছাহাবীগণও করেননি। সেদিন মানুষ ক্বাযা ছালাতের ব্যস্ত হয়ে পড়ে। মনে করে আজই জীবনের সব কাজা আদায় করা সম্ভব। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, যে আমাদের দ্বীনের মধ্যে এমন কিছু কাজের সূচনা করল আর তাতে আমাদের নির্দেশনা নেই, তা প্রত্যাখ্যাত। সুতরাং মানুষ সেই কাজা ছালাতই আদায় করবে, যা ভুল ও ঘুমের কারণে ক্বাযা হয়েছে, অন্য কোন ছালাত না’।[২৯] শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-‘উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ)ও অনুরূপ জবাব দিয়েছেন।[৩০]

(ইনশাআল্লাহ চলবে)



* শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আল-ইসলামিয়্যাহ, খড়খড়ি, রাজশাহী।

[১]. আল-মু‘জামুল ওয়াসীত, ২য় খণ্ড, পৃ. ৯৬৬; ড. মুহাম্মাদ ফজলুর রহমান, আল-মু‘জামুল ওয়াফী : আধুনিক আরবী-বাংলা অভিধান (ঢাকা : রিয়াদ প্রকাশনী, ১১শ সংস্করণ, সেপ্টেম্বর ২০১২), পৃ. ১০৯০।

[২]. ‘আল্লামা সাইয়িদ সাবেক, ফিকহুস সুন্নাহ, ১ম খণ্ড, (প্রকাশস্থান : প্রকাশকম সংস্করণ ও সাল বিহীন), পৃ. ৪২-৪৩।

[৩]. যাইনুদ্দীন ইবনু ইবরাহীম ইবনু নুজাইম, আল-বাহরুর রায়িক শারহু কানযিক দাকাইক, ৩য় খণ্ড (প্রকাশস্থান বিহীন : দারুল কিতাবিল ইসলামী, তা.বি.), পৃ. ৯১।

[৪]. ইবনু ‘আবিদীন, রাদ্দুল মুহতার, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২৮৫।

[৫]. সহীহুল বুখারী, ১ম খণ্ড, পৃ. ১, হাদীছ সংখ্যা-১; সুনানু আবী দাঊদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৬৭০, হাদীছ সংখ্যা-২২০১; মিশকাতুল মাসাবীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১, হাদীছ সংখ্যা-১।

[৬]. মুহাম্মাদ ইবনু আবী বাকর ইবনু আইয়ূব ইবনু সা‘আদ শামসুদ্দীন ইবনুল কাইয়িম আল-জাওযিয়্যাহ, যাদুল মা‘আদ ফী হাদই খইরিল ‘ইবাদ, ১ম খণ্ড (বৈরুত : মুওয়াসসাসাতুর রিসালাহ, ২৭শ সংস্করণ ১৪১৫ হি./১৯৯৪ খ্রি.), পৃ. ২০১ ।

[৭]. জালালুদ্দীন আস-সুয়ূতী, আল-আমরু বিল ইত্তিবা‘ ওয়ান নাহিউ ‘আনিল ইবতিদা‘ (প্রকাশস্থান : প্রকাশক, সংস্করণ ও সাল বিহীন), পৃ. ৩১ ।

[৮]. আবূ ‘আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু মুহাম্মাদ ‘আবদারী আল-কাসী আল-মালিকী ইবনিল হাজ্জ, আল-মাদখাল, ২য় খণ্ড (বৈরুত : দারুল ফিকর, ১৪০১ হি./১৯৮৫ খ্রি.), পৃ.  ৫৫।

[৯]. মুহাম্মাদ ইবনু সালিহ আল-‘উসাইমীন, ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম (তা.বি.), পৃ. ৬৭, প্রশ্ন নং -২২২ ‘সালাত সংক্রান্ত ফাতাওয়া সমূহ’ অধ্যায়।

[১০]. ইবনু ‘আবিদীন, রাদ্দুল মুহতার, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ২৪।

[১১]. সহীহ মুসলিম, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫৩৪, হাদীছ সংখ্যা-৭৭১; মিশকাতুল মাসাবীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৭৯, হাদীছ সংখ্যা-৮১৩।

[১২]. সুনানু আবী দাঊদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৬০, হাদীছ সংখ্যা-৭৬০।

[১৩]. সুনানুত তিরমিযী, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৪৮৭, হাদীছ সংখ্যা-৩৪২৩।

[১৪]. সুনানুন নাসাঈ, ২য় খণ্ড, পৃ. ১২৯, হাদীছ সংখ্যা-৮৯৭।

[১৫]. ইবনু ‘আবিদীন, রাদ্দুল মুহতার, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ২৪।

[১৬]. সুনানুন নাসাঈ, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৩১, হাদীছ সংখ্যা-৮৯৮; মিশকাতুল মাসাবীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৮১, হাদীছ সংখ্যা-৮২১।

[১৭]. ইবনুল হুমাম, ফাতহুল কাদীর, ২য় খণ্ড, পৃ. ৫২; ‘আল-আল-মারগীনানী, আল-হিদায়াতু শারহু বিদায়াতুল মুবতাদী, ১ম খণ্ড (প্রকাশস্থান বিহীন : আল-মাকতাবুল ইসলামিয়্যাহ, তা.বি.), পৃ. ৪৮।

[১৮]. ‘আলী ইবনু ‘উমার আবুল হাসান আদ-দারাকুতনী আল-বাগদাদী, সুনানুদ দারাকুৎনী, ১ম খণ্ড (বৈরুত : দারুল মা‘আরিফাহ, ১৩৮৬ হি./১৯৬৬ খ্রি.), পৃ. ৩১১, হাদীছ সংখ্যা-৩৩; আহমাদ ইবনুল হুসাইন ইবনু ‘আলী আল-বাইহাকী, আস-সুনানুস সুগরা (মদীনা আল-মুনাওয়রাহ : মাকতাবাতুদ দার, ১৪১০ হি./১৯৮৯ খ্রি.), পৃ. ২৫১, হাদীছ সংখ্যা-৩৯৮; জামালুদ্দীন আবূ মুহাম্মাদ ‘আব্দিল্লাহ ইবনু ইউসুফ ইবনু মুহাম্মাদ আয-যাইলাঈ, নাসবুর রাইয়াহ লিআহাদীসিল হিদায়াহ, ১ম খণ্ড (বৈরুত : মুওয়াস্সাসাতুর রাইয়ান, ১ম সংস্করণ ১৪১৮ হি./১৯৯৭ খ্রি.), পৃ. ৩৫৩।

[১৯]. সহীহুল বুখারী, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৫৯, হাদীছ সংখ্যা-৭১০; মিশকাতুল মাসাবীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৮২, হাদীছ সংখ্যা-৮২৩।

[২০]. মুসনাদুল ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২২৩, হাদীছ সংখ্যা-১৩৩৬১; সহীহ মুসলিম, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৯৯, হাদীছ সংখ্যা-৩৯৯; আল-আহকামুশ শার‘ঈয়্যাহ আল-কুবরা, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৯৮-১৯৯।

[২১]. ড. আহমাদ আলী, বিদ‘আত, পৃ. ২৩০।

[২২]. সুনানুত তিরমিযী, ২য় খণ্ড, পৃ. ৭২, হাদীছ সংখ্যা-২৮৪; সুনানু আবী দাঊদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৮৬, হাদীছ সংখ্যা-৮৫০; মিশকাতুল মাসাবীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৯৬, হাদীছ সংখ্যা-৯০০।

[২৩]. নাসাঈ হা/১১৪৫; মিশকাত হা/৯০১, সনদ ছহীহ।

[২৪]. ফাৎহুল বারী শারহু ছহীহিল বুখারী, ২য় খণ্ড, পৃ. ১০৪-১০৫, হাদীছ সংখ্যা-৬২১-এর ব্যাখ্যা দ্র. ‘আযান’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১৩।

[২৫]. ছহীহুল বুখারী, ২য় খণ্ড, পৃ. ৬৭৭, হাদীছ সংখ্যা-১৮১৯।

[২৬] সুনানুন নাসাঈ, ২য় খণ্ড, পৃ. ১১, হাদীছ সংখ্যা-৬৪১।

[২৭] ‘আব্দুল হাই লাক্ষেèৗবী হানাফী, আল-আসারুল মারফূ‘আহ ফিল আখবারিল মাওযূ‘আহ (প্রকাশস্থান বিহীন : দারুল কুতুবলি ‘ইলমিয়্যাহ), পৃ. ৮৫।

[২৮] তদেব।

[২৯]. ফাতাওয়া লাজনাহ আদ-দায়িমাহ, ৮ম খণ্ড, পৃ. ১৬৭-১৬৮।

[৩০]. শায়খ ‘উসাইমীন, মাজমূ‘ঊ ফাতাওয়া ও রাসাইল, ১৪শ খণ্ড, পৃ. ৩৩১।




প্রসঙ্গসমূহ »: মসজিদ
আশূরায়ে মুহাররম - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী
অহংকার করা ও তার পরিণাম (শেষ কিস্তি) - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
ইসলামী তাবলীগ বনাম ইলিয়াসী তাবলীগ (শেষ কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
তারুণ্যের উপর সন্ত্রাসবাদের হিংস্র ছোবল : প্রতিকারের উপায় (শেষ কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
রামাযানের খুঁটিনাটি - আল-ইখলাছ ডেস্ক
ছয়টি মূলনীতির ব্যাখ্যা - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির
রজব মাসের বিধানসমূহ - অনুবাদ : ইউনুস বিন আহসান
প্রচলিত তাবলীগ জামা‘আত সম্পর্কে শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের অবস্থান - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির
ইসলামী তাবলীগ বনাম ইলিয়াসী তাবলীগ - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
রামাযানে দাওয়াতী কাজের গুরুত্ব ও প্রভাব - অধ্যাপক মো. আকবার হোসেন
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ (৬ষ্ঠ কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (২য় কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম

ফেসবুক পেজ