মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০২:৫০ পূর্বাহ্ন

ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ

-ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন*


(৬ষ্ঠ কিস্তি)


০৭). স্বাধীন হওয়া দাস না হওয়া!

দাস অন্যের অধীন এবং সে সাধারণত হীনমন্যতায় ভোগে। একটি জামা‘আতের নেতৃত্ব দিতে গেলে তাঁকে স্বাধীন বিবেচনাসম্পন্ন, বৃহৎ ও মহৎ কর্ম করার যোগ্যতাবিশিষ্ট ও উন্নত মানসিকতার অধিকারী ব্যক্তিত্ব হতে হয়। এটাও বাস্তব যে, কৃতদাস না হলেও যিনি যতটা অন্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অধীন, সাধারণত তাঁর নেতৃত্ব ততটা আনুপাতিক হারে ত্রুটিপূর্ণ ও সীমাবদ্ধ হয়ে থাকে। তবে রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বে যদি কখনো কোন দাস ঘটনাচক্রে এসে যায়, তাহলে কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী যথাযথ নেতৃত্ব করার শর্ত সাপেক্ষে তাঁর পূর্ণাঙ্গ আনুগত্য করতে হবে, বিদ্রোহ ও বিশৃৃঙ্খলা সৃষ্টি করা যাবে না।[১] এখানে কুরাইশ বংশের ব্যাপারটি সঙ্গত কারণেই  এসে যায়; যে আলোচনা একটু আগেই দলীল-প্রমাণসহ উপস্থাপন করা  হয়েছে। আরো উল্লেখ্য, রাষ্ট্রীয় নেতৃত্ব লাভ করার পর স্বাভাবিকভাবে দাসের আর দাসত্ব থাকে না।


০৮). ধনসম্পদ?

উল্লেখ্য, নেতৃত্বের ক্ষেত্রে ধনসম্পদের কথা কোথাও বলা হয়নি, বরং তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। যখন মূসা (আলাইহিস সালাম)-এর পরবর্তী কওম (নবী দাঊদ (আলাইহিস সালাম)-এর যুগে) এসে বলল যে, আমরা কেমন করে ত্বালূতের নেতৃত্ব মানব? তাকে তো মালের প্রাচুর্য দেয়া হয়নি। তখন আল্লাহ তা‘আলা এর প্রতিবাদ করে নেতৃত্বের মূল যোগ্যতার কথা জানান দিয়ে দিলেন, যেমনটি কুরআনে কারীমের আয়াতে বর্ণিত হয়েছে :

وَ قَالَ لَہُمۡ نَبِیُّہُمۡ  اِنَّ اللّٰہَ قَدۡ بَعَثَ لَکُمۡ طَالُوۡتَ مَلِکًا ؕ قَالُوۡۤا  اَنّٰی یَکُوۡنُ لَہُ الۡمُلۡکُ عَلَیۡنَا وَ نَحۡنُ اَحَقُّ بِالۡمُلۡکِ مِنۡہُ وَ لَمۡ یُؤۡتَ سَعَۃً مِّنَ الۡمَالِ ؕ قَالَ  اِنَّ اللّٰہَ  اصۡطَفٰىہُ عَلَیۡکُمۡ وَ زَادَہٗ بَسۡطَۃً فِی الۡعِلۡمِ وَ الۡجِسۡمِ ؕ وَ اللّٰہُ یُؤۡتِیۡ مُلۡکَہٗ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ اللّٰہُ  وَاسِعٌ عَلِیۡمٌ

‘এবং তাদের নবী তাদেরকে বলল, নিশ্চয় আল্লাহ  ত্বালূতকে তোমাদের জন্য বাদশাহ্ হিসাবে পাঠিয়েছেন। তখন তারা বলল, কী করে আমাদের উপর তার রাজত্ব হতে পারে? আমরাই তো তার চেয়ে রাজত্বের বেশি হকদার; তাকে মালের প্রাচুর্য দেয়া হয়নি! সে (নবী) বলল, নিশ্চয় আল্লাহ তাকে তোমাদের জন্য নির্বাচিত করেছেন আর তাঁকে জ্ঞানে ও দৈহিক শক্তিতে বিস্তৃতি ও আধিক্য দিয়েছেন। আর আল্লাহ্ তাঁর রাজত্ব যাকে খুশি তাকেই দিয়ে থাকেন এবং আল্লাহ্ মহাপ্রাচুর্যময়, মহাজ্ঞানী’ (সূরা আল-বাকারাহ : ২৪৭)।


খলীফাহ্ আবূবাক্র (রাযিয়াল্লাহু আনহু), ‘উমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ও ‘আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ধনাঢ্য ব্যক্তি ছিলেন না। আবার তৃতীয় খলীফাহ্ ‘উছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ছিলেন শ্রেষ্ঠ ধনীদের একজন। পঞ্চম খলীফাহ্ নামে খ্যাত ‘উমর বিন ‘আব্দুল ‘আযীয (রাহিমাহুল্লাহ) উমাইয়্যাহ্ রাজ পরিবারের ধনকুবের সন্তান হয়েও খলীফাহ্ হওয়ার পর নিজের সকল ধনসম্পদ সরকারী কোষাগারে (বাইতুল মালে) জমা দিয়ে দেন। সুতরাং ধনসম্পদ থাকা না থাকা ইসলামে নেতৃত্বের কোন যোগ্যতা বা অযোগ্যতার মানদণ্ড নয়। সেগুলো সদ্ভাবে উপার্জিত কিনা আর তা সৎপথে ব্যয় হয় কিনা - সেটাই বড় কথা।


০৯). আনুগত্য পাওয়ার ব্যক্তিগত গুণাবলী

নেতৃত্বকে অবশ্যই আনুগত্য পাওয়ার যোগ্যতার ব্যাপারে সর্বদাই সচেতন থাকতে হবে। একটি ইসলামী সংগঠনের নেতৃত্বের দায়িত্বে ভক্তি-শ্রদ্ধা নিয়ে টিকে থাকতে হলে তাঁকে অবশ্যই অপরাপর কর্মীর চাইতে সব বিষয়ে সাধ্যানুযায়ী অগ্রগামী থাকার জন্য যতœবান হওয়া কর্তব্য। তাঁকে দ্বীনি বিদ্যায় পারদর্শী, মুখলেছ (একনিষ্ঠ ও আন্তরিক), আমলদার, নিঃস্বার্থ, ও অহিংস হতে হবে। তিনি সদা পক্ষপাতমুক্ত, স্বজনপ্রীতির ঊর্ধ্বে এবং আঞ্চলিকতা থেকে দূরে থাকবেন এবং নিজেকে পারিবারিক অনৈতিক, অসতর্ক পিছুটান ও দুর্বলতা এবং অন্যান্য চাটুকারদের প্রভাবমুক্ত রাখবেন। তিনি রাগ-বিরাগ-অনুরাগ-আবেগ ও হঠকারিতাকে প্রশ্রয় দিবেন না। তিনি সর্বত্র ইনছাফ ও ন্যায়ানুগ ফয়ছালাহ’র প্রতীক হবেন। তিনি কথায় ও লেখায় সংযত ও ভারসাম্যপূর্ণ হবেন। তিনি যা বলবেন বা লিখবেন তা হবে প্রয়োজনীয়, দিক-নির্দেশনামূলক, সুচিন্তিত, সুস্পষ্ট ও আবেদনময়ী। তিনি সবকিছুর যথাযথ মূল্যায়ন করবেন।


তিনি পরোপকারে অগ্রগামী, মেহমান নাওয়ায, মিতব্যয়ী ও অকৃপণ হবেন। এখানে একটি কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, কার্পণ্য ও অপব্যয় সবার জন্যই দূষণীয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন : وَ الَّذِیۡنَ  اِذَاۤ  اَنۡفَقُوۡا لَمۡ  یُسۡرِفُوۡا وَ لَمۡ یَقۡتُرُوۡا وَ کَانَ  بَیۡنَ  ذٰلِکَ  قَوَامًا ‘এবং তারা যখন ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না এবং কার্পণ্যও করে না; বরং এ দু’য়ের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থার মধ্যে থাকে’ (সূরা আল-ফুরক্বান : ৬৭)। 


তিনি হবেন নম্র, বিনয়ী, প্রসন্নচিত্ত, রহম-দিল এবং নরম-ভাষী। কর্মীদের প্রতি তাঁর মমত্ববোধ ও দায়িত্ববোধ থাকবে অকৃত্রিম। অবয়ব হবে ভাব-গাম্ভীর্যপূর্ণ, ধীর-স্থির কিন্তু চালচলন হবে নিরহংকার। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবীকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছেন, وَ لَوۡ کُنۡتَ فَظًّا غَلِیۡظَ الۡقَلۡبِ لَانۡفَضُّوۡا مِنۡ حَوۡلِکَ ‘আপনি যদি কঠিন হৃদয় ও কর্কষভাষী হতেন তাহলে অবশ্যই তাঁরা আপনার চারপাশ থেকে সরে যেত’ (সূরা আলে ‘ইমরান : ১৫৯)।


খলীফাহ্ ‘উমার (রাহিমাহুল্লাহ) তৎকালীন আরবীয় নেতৃবৃন্দকে সম্বোধন করে তাদেরকে অট্টালিকার অহংকার না করে মাটিতে নেমে আসতে বলেছেন।[২] কেননা যে নেতা মাটিতে নেমে, সমাজে মিশে জামাতীয় কর্মীসাধারণ ও আপামর জনগণকে ভালোবাসতে পারেন না- তার নেতৃত্ব স্বাভাবিকভাবেই দূরত্বের ও সমালোচনার। নেতৃত্বের চোখে-মুখে, চলনে-বলনে সর্বদাই আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি আনুগত্যের ভাব থাকবে সুস্পষ্ট। জামা‘আত-সংগঠনের ধ্যান-জ্ঞান-চিন্তায় তিনি থাকবেন সদাই নিমগ্ন ও ব্যতিব্যস্ত। 

বলাবাহুল্য, যার মধ্যে এসকল গুণের সমাহার যত বেশি থাকবে, তার প্রতি মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত শ্রদ্ধা ও আনুগত্য ততটা স্বাভাবিকভাবেই বেশি থাকবে। আর যার মধ্যে এগুলো যত কম থাকবে তিনি ততটা স্বতঃস্ফূর্ত আনুগত্য হারাবেন, যা পুরো সংগঠনকেই ধীরেধীরে দুর্বলতার দিকে নিয়ে যাবে ও এর অগ্রগতি ব্যাহত করবে এবং কর্মীরা সংগঠনের কাজে দিনদিন নিরুৎসাহিত হতে থাকবে ও কাজের চাইতে বিরক্তি প্রকাশ ও নেতৃত্বের সমালোচনায় অধিক সময় ব্যয় করবে। এমতাবস্থায় তারা যতদিন সংগঠন করবে শুধু সংগঠন বাঁচিয়ে রাখার তাকিদে ও বৃহত্তর ক্ষতি রোধের জন্য এবং বিকল্প নেতৃত্ব নেই তাই আর কী করা; ‘দাউন ধরে থাকি’- এই মনোভাব নিয়ে। আর এ জাতীয় দায়সারা গোছের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের পথে যে বেশি দূর এগিয়ে যাওয়া যায় না, তা বুঝার জন্য খুব বেশি বিদ্যা-বুদ্ধি ও গবেষণার প্রয়োজন পড়ে না।


এখানে স্মরণীয় যে, একজন খলীফাহ্ বা রাষ্ট্রীয় আমীরকে -তিনি ভাল-মন্দ যাই হোন না কেন- বাধে-অবাধে, শ্রদ্ধা বা অশ্রদ্ধার সাথে মেনে চলতেই হয়; শরী‘আতের বিধানও তাই। যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি ইসলামী শরী‘আতে বিশ্বাস করবেন, মানবেন বিশেষ করে ছালাত কায়েম করবেন ও দ্বীনের কোন যরূরী বিষয়কে অস্বীকার করবেন না ও বাধা দিবেন না; ততক্ষণ পর্যন্ত বিদ্রোহ করা যাবে না।[৩] বিদ্রোহ অধিকাংশ সময়ই অতি সমস্যার সৃষ্টি করে; কেননা তাতে দেশ, জাতি, ধর্ম, জান-মাল ইত্যাদির ক্ষয়ক্ষতি নিহিত রয়েছে।



সংগঠনের আমীরের স্বতঃস্ফূর্ত আনুগত্য প্রাপ্তি নির্ভর করে তাঁর প্রতি আস্থা ও গভীর শ্রদ্ধাবোধের উপর। কর্মীদের পক্ষ থেকে আনুগত্য যেমন যরূরী, তেমনই নেতৃত্বকে খেয়াল রাখতে হবে দায়িত্ববোধ, দৃঢ়তা, নীতি-আদর্শ, ব্যক্তিগত ঈমান-‘আমল,  তাক্ওয়া, আমানত, নিঃস্বার্থতা, উত্তম চরিত্র ও সদ্ব্যবহার সহ তার প্রয়োজনীয় শর্তাবলী ও গুণাবলীর কথা। মানুষকে যদি সমালোচনার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া হয়, আর তারা যদি সত্যিকার পক্ষেই সে রসদ হাতে পায়, তাহলে অন্য কোন বিকল্প পথে ধর্মীয় জামা‘আতী নেতৃত্ব টিকিয়ে রাখা সহজ নয় এবং অসংশোধিতভাবে তা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার মধ্যে কোন কল্যাণও নেই।


১০). মনস্তাত্বিক দৃঢ়তা এবং সিদ্ধান্ত ও সংকল্পের অটলতা

মনস্তাত্বিক দৃঢ়তা, চিত্তের স্থিরতা এবং সিদ্ধান্ত ও সংকল্পের অটলতা আল্লাহর কাছে পসন্দনীয়। তাই তিনি উলুল ‘আযম বা দৃঢ়চেতা রাসূলগণের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করে নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁদের মত ধৈর্যধারণ করতে বলেছেন :

فَاصۡبِرۡ کَمَا صَبَرَ اُولُوا الۡعَزۡمِ مِنَ الرُّسُلِ وَ لَا تَسۡتَعۡجِلۡ  لَّہُمۡ

‘(হে নবী!) আপনি দৃঢ়চেতা রাসূলগণের মত ধৈর্যধারণ করুন। আর তাদের (লোকদের) ব্যাপারে তাড়াহুড়া করবেন না’ (সূরা আল-আহক্বাফ : ৩৫)।


আবার আদম (আলাইহিস সালাম)-এর জান্নাতে বিশেষ অধৈর্যের কথা আল্লাহ্ তা‘আলা উল্লেখ করেছেন :


وَ لَقَدۡ عَہِدۡنَاۤ  اِلٰۤی اٰدَمَ مِنۡ قَبۡلُ فَنَسِیَ  وَ  لَمۡ  نَجِدۡ  لَہٗ  عَزۡمًا


‘আদমের কাছ থেকে পূর্বে ওয়াদা নিয়েছিলাম (গাছ থেকে না খাওয়ার জন্য), সে তা ভুলে গিয়েছিল, আর তার মধ্যে দৃঢ়তা পাইনি’ (সূরা ত্বা-হা : ১১৫)। আর আল্লাহ্ তা‘আলা নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সিদ্ধান্ত ও সংকল্পে স্থির থেকে কাজে নেমে পড়ার জন্য বলেছেন। তিনি বলেছেন :


فَاعۡفُ عَنۡہُمۡ وَ اسۡتَغۡفِرۡ لَہُمۡ وَ شَاوِرۡہُمۡ فِی الۡاَمۡرِ ۚ فَاِذَا عَزَمۡتَ فَتَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ الۡمُتَوَکِّلِیۡنَ


‘(হে নবী!) আপনি তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন এবং তাদের সাথে কাজেকর্মে পরামর্শ করুন। আর যখন আপনি দৃঢ় সিদ্ধান্ত ও সংকল্প করে ফেলবেন তখন আল্লাহ’র উপর তাওয়াক্কুল করবেন (কাজে নেমে পড়বেন)’ (সূরা আলে ‘ইমরান : ১৫৯)।


কখনো কখনো বাজে মানসিকতা সম্পন্ন, দুর্বলচিত্ত ও অলস-প্রকৃতির বেহুদা সমালোচকদের এড়িয়ে প্রয়োজনীয় কাজে অগ্রসর হতে হয়। পাশ্চাত্বে বহুল প্রচলিত প্রবাদ আছে :

‘The dog bark, but caravan will go on’

অর্থাৎ “কুকুর ভুগতে থাকবে; কিন্তু লরি চলতে থাকবে।” কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, নেতা যথাযোগ্য পরামর্শ সভা ও অভিজ্ঞদের মতামতের তোয়াক্কা না করেই, নিজের ভাবমত যখন যা খুশি তখন তাই করবেন এবং কুরআনের উপরিউক্ত আয়াত দিয়ে দলীল দিতে থাকবেন এবং বিভিন্ন প্রবাদবাক্য আওড়াবেন। কেননা আয়াতটির মধ্যে পরামর্শ করার নির্দেশ দেয়া আছে। (এ বিষয়ের বিস্তারিত বিবরণ পরবর্তীতে ‘শূরা’ বা পরামর্শ-এর অধ্যায়ে পেশ করা হয়েছে।) 


সংগঠনের প্রতি বিশ্বস্ত ও আস্থাশীল এবং সুদূর প্রসারী চিন্তা-ভাবনাকারী নেতৃত্ব বা দায়িত্বশীলকে অবশ্যই সুস্পষ্ট ও দৃঢ় সিদ্ধান্তের অধিকারী হতে হবে। সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল বাধাবিপত্তি, সমস্যা, অপবাদ, দুর্নাম-বদনাম ইত্যাদিতে যতটা সম্ভব স্থির ও স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করতে হবে। তাঁকে চিত্তচঞ্চল, ধৈর্যহারা, ভগ্ন মনোবল, কথা ও কাজে বেসামাল ও অসংলগ্ন হওয়া যাবে না। তার উপর প্রতিপক্ষের দিক থেকে দৈহিক কষ্টও আসতে পারে- যেমনটা এসেছিল নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর ছাহবীগণের উপর মাক্কী জীবনে। অর্থনৈতিক অবরোধ ও বন্দী-দশাও আসতে পারে- যেমনটি এসেছিল নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও ছাহবীগণের উপর ঐ মাক্কী জীবনেই। আর নবী ইউসূফ (আলাইহিস সালাম)-এর উপরে বহু পূর্বে মিসরে। মানসিক চাপতো বার বার আসতেই থাকবে। যেমন এসেছিল মাক্কাহ’য় বিভিন্ন প্রেক্ষিতে এবং বিশেষভাবে উহুদের যুদ্ধের সময় নবী (আলাইহিস সালাম)-এর মৃত্যুর মিথ্যা খবর ছড়িয়ে তদুপরি তাঁর বিরুদ্ধে বস্তু লুকানোর অভিযোগ এনে। এমনকি নবী (আলাইহিস সালাম)-এর স্ত্রী ‘আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ রটিয়ে পরিবার সহ তাঁকে মনস্তাত্বিকভাবে (সাইকোলজিকালি) বিপর্যস্ত করা হয়েছিল (বানী মুস্তালেকের যুদ্ধের পর)।  নেতৃত্বকে সকল অবস্থায় তাক্বওয়া, বুদ্ধিমত্ত্বা, বিচক্ষণতা, সাবধানতা, ধীর ও দৃঢ়তার সাথে মনোবল চাঙ্গা রেখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে হয় ও সম্মুখে এগুতে হয়। নেতৃত্ব নিজেই যদি মনোবল হারা হয়ে যান বা মানসিক দুর্বলতা প্রকাশ করেন, তাহলে সে সংগঠন ও তার কর্মীদের কিংকর্তব্যবিমূঢ় ও বেহাল দশায় পতিত হওয়া ছাড়া আর কোন পথ থাকে না।


১১). মেজাজ ও আচরণের ভারসাম্য

যাকে আরবীতে বলা হয় হিল্ম, ই‘তিদাল, তাওয়াযুন, আনাহ্, তু‘আদাহ্, ওকার ইত্যাদি। আল্লাহ্ তা‘আলা মুসলিম জাতির পিতা নবী ইব্রাহীম (আলাইহিস সালাম) প্রসঙ্গে বলেছেন :

اِنَّ اِبۡرٰہِیۡمَ  لَاَوَّاہٌ  حَلِیۡمٌ ‘নিশ্চয় ইব্রাহীম হল আল্লাহর দিকে অতি দু‘আকারী ও  পরম সহনশীল ও  স্থির-মেজাজসম্পন্ন’ (সূরা আত-তাওবাহ : ১১৪)। আবার তাঁরই প্রথম পুত্র যাকে তিনি কুরবানী করার জন্য আদিষ্ট হয়েছিলেন এবং যাঁর বংশ থেকে নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জন্মগ্রহণ করেছেন, সেই নবী ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা‘আলা বলছেন : فَبَشَّرۡنٰہُ  بِغُلٰمٍ  حَلِیۡمٍ ‘অতঃপর আমরা তাঁকে (ইব্রাহীমকে) সুসংবাদ দিলাম একজন সহনশীল, ধীর-বুদ্ধি, স্থির-মেজাজবিশিষ্ট পুত্রের’ (সূরা আছ্-ছাফ্ফাত : ১০১)।


আব্দুল ক্বায়েস সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা যখন নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে মাদীনাহ্তে দেখা করতে আসলেন, তখন তাদের সবাই একটু তাড়াহুড়া করে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে পৌঁছে গেলেন। কিন্তু শুধু মুন্যির আল-আশাজ্জ নামক একজন তার যানবাহন যথাস্থানে বেঁধে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক পরে, ধীর-স্থিরতার সাথে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে এসে উপস্থিত হলেন। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে কাছে বসালেন[৪] এবং বললেন : إِنَّ فِيْكَ خَصْلَتَيْنِ يُحِبُّهُمَا اللهُ الْحِلْمُ وَالْأَنَاةُ ‘নিশ্চয় তোমার মধ্যে দু’টি গুণ আছে, যা আল্লাহ্ পছন্দ করেন- ধীর-বুদ্ধি (ভারসাম্যপূর্ণ মেজাজ) ও সুস্থির চাল-চলন’।[৫]


আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) প্রসঙ্গে ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেছেন :فَتَكَلَّمَ أَبُوْ بَكْرٍ فَكَانَ هُوَ أَحْلَمَ مِنِّىْ وَأَوْقَرَ ‘অতঃপর আবূ বাক্র (রাযিয়াল্লাহু আনহু) কথা বললেন, তিনি ছিলেন আমার (‘উমারের) চেয়ে অধিক ধীর-স্থির বিচার-বুদ্ধিবিশিষ্ট ও বেশি ভারসাম্যপূর্ণ মানুষ’।[৬] ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে দ্বিতীয়বারের মত গভর্নর হওয়ার প্রস্তাব দিলে তিনি বলেছিলেন : أخشى أن أقول بغير علم، وأقضي بغير حلم ‘আমি জ্ঞান ছাড়া কথা বলা ও হিলম ছাড়া বা মেজাজের ভারসাম্যহীনভাবে বিচার করাকে ভয় পাই’।[৭]


স্বভাবের স্থিরতা ও মেজাজের ভারসাম্য না থাকলে, মানুষ তার যোগ্যতাগুলো যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারে না। বরং তার সুষ্ঠু প্রয়োগে ব্যর্থ হয় ও কাম্য ফলাফল থেকে বঞ্চিত থাকে। আর যেহেতেু সংগঠনের কারবার মানুষ নিয়ে, মানুষ গড়ার, মানুষ ধরে রাখার, মানুষ কাজে লাগাবার তাও আবার বিনা পারিশ্রমিকে; সুতরাং এখানে নেতৃত্বের ভারসাম্যপূর্ণ স্বভাব ও ধীরস্থির চালচলন অত্যাবশ্যক। মানুষও হয় শত রকমের শত মানসিকতার, তদুপরি কাজও থাকে বিভিন্ন ধরনের ও বহুমুখী, আবার সমস্যাও থাকে অগণিত; নেতৃত্বের মন-মগজে ভীড় করে থাকে রাশি-রাশি চিন্তা-ভাবনা আর মাথায় থাকে হিমালয় পরিমাণ দায়িত্বের বোঝা। সব কিছু সমন্বয় করে সুষ্ঠুভাবে পথ চলা ও চালানো খুবই জটিল কাজ। মেজাজের এই ভারসাম্য কারো থাকে জন্মগত আবার কাউকে তা আত্মস্থ ও ধাতস্থ’ করে নিতে হয়। সুষ্ঠুভাবে সংগঠনকে এগিয়ে নিতে গেলে নেতৃত্বের জন্য এ গুণের বিকল্প নেই। এ গুণটি কথাবার্তা, চালচলন, পারস্পরিক আচরণ, কাজকর্ম ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহ সকল কিছুর সাথেই সম্পৃক্ত। ভারসাম্যপূর্ণ আচরণ নেতৃত্বের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখে ও বৃদ্ধি করে। আর ভারসাম্যহীন আচরণ নেতৃত্বের মর্যাদা ক্ষুণ্ন ও হ্রাস করে- যা সংগঠনের মর্যাদা ও গ্রহণযোগ্যতাকেও মাঠে ময়দানে ক্ষুন্ন ও হ্রাস করে দেয়। সুতরাং সংগঠনের প্রতিটি ধাপ ও স্তরের নেতৃত্বকেই  মেজাজের ভারসাম্যের ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন থাকা কর্তব্য।


উল্লেখ্য, পরামর্শান্তে স্থিরীকৃত যরূরী কাজ বাস্তবায়ন নিয়ে ঢিলেমী ও কালক্ষেপণ করতে থাকা হবে ও ব্যাখ্যাহীন রহস্যময় আচরণ প্রকাশ পেতে থাকবে এবং প্রশ্নের উত্তরে নির্বিকার ভাবগাম্ভীর্য প্রদর্শনপূর্বক দুর্বোধ্য মা‘রেফতী ইশারা-ইঙ্গীত ফরমানো হবে বা হাওয়ার চোখ ভাসিয়ে এদিক ওদিকের কথাবার্তা বলে পাশ কাটানো চলতে থাকবে; আর আরাধ্য কাজ বিনষ্ট হওয়া কিংবা তার সময় অতিবাহিত হওয়ার পর মুরীদ-কর্মীরা স্বভাবসুলভভাবে ঘাড় নাড়িয়ে  শেখানো বুলি আওড়াতে থাকবেন এই বলে : ‘দেখুন না - আমীর হুজুরের ‘হিলম’টা কত বড়; আল্লাহ্ যা করেন তা মঙ্গলের জন্যই করেন’। বলাবহুল্য, এগুলো মুখরোচক খাদ্য ‘হালিম’ হতে পারে বা ‘হুলম’ স্বপ্নবিলাস হতে পারে; কিন্তু ‘হিলম’ কক্ষণো নয়; বরং হিলমের অপব্যাখ্যা ও অপপ্রয়োগ মাত্র।


১২). নেতৃত্ব, স্বৈরাচার ও অহংকার

সাংগঠনিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে একাকি সিদ্ধান্ত নেয়া, কাউকে জিজ্ঞাসা না করা, কাউকে পাত্তা না দেয়া ও এড়িয়ে চলা বা এজাতীয় মনোভাব পোষণ করা খুবই আপত্তিকর ও ক্ষতিকর। সবার উপর নিজস্ব হুকুম চালানোর মানসিকতা, খামাখা ধমকা-ধমকি করা ও হামবড়াই ভাব সবাইকে ক্ষুব্ধ করে। মনে রাখতে হবে, নেতার নির্দেশ দেয়ার অধিকার রয়েছে আর সেটা তার কর্তব্যও বটে; কিন্তু সেটা সাংগঠনিক ও জামা‘আতী সুচিন্তিত নির্দেশ ও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা পরামর্শভিত্তিক হওয়া যরূরী। স্বৈরাচারের সাথে অহংকার অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দিয়েছেন : اِنَّہٗ  لَا یُحِبُّ الۡمُسۡتَکۡبِرِیۡنَ ‘তিনি অহংকারীকে পসন্দ করেন না’ (সূরা আন্-নাহল : ২৩ )।


ইবলীস শয়ত্বান আল্লাহ’র রুবূবিয়্যাতকে বিশ্বাস করত, তার ভুলের পেছনে সে কুযুক্তিও পেশ করেছে; কিন্তু তার সব চেয়ে বড় দোষ ও অন্যায় ছিল- সে অহঙ্কারী। কুরআন কারীমে এর উপর অনেক আয়াত রয়েছে এবং বহু হাদীছেও তার উল্লেখ রয়েছে। আল্লাহ্ তা‘আলা এজাতীয় কর্ম থেকে নিষেধ করে বলেছেন :


وَ لَا تُصَعِّرۡ  خَدَّکَ  لِلنَّاسِ وَ لَا  تَمۡشِ فِی الۡاَرۡضِ مَرَحًا ؕ اِنَّ  اللّٰہَ  لَا  یُحِبُّ  کُلَّ مُخۡتَالٍ  فَخُوۡرٍ


‘এবং তুমি লোকদের সাথে গালভারী করে কথা বলো না, আর মাটিতে গর্বোৎফুল্ল হয়ে চলাফেরা করো না! কারণ আল্লাহ কোন উদ্ধত, অহংকারীকে পসন্দ করেন না’ (সূরা লুকমান : ১৮)। তিনি নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে উদ্দেশ্য করে বলেছেন : لَسۡتَ عَلَیۡہِمۡ  بِمُصَۜیۡطِرٍ ‘আপনি তাদের উপর মুছাইত্বির (কঠিন হস্তক্ষেপকারী) নন’ (সূরা আল-গাশিয়াহ : ২২)। তিনি নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে সম্বোধন করে আরো বলেছেন : فَبِمَا رَحۡمَۃٍ مِّنَ اللّٰہِ لِنۡتَ لَہُمۡ ۚ وَ لَوۡ کُنۡتَ فَظًّا غَلِیۡظَ الۡقَلۡبِ لَانۡفَضُّوۡا مِنۡ حَوۡلِکَ ‘আল্লাহ’র রহমত আপনার সাথে রয়েছে বলে আপনি তাদের সাথে নম্র আচরণ করছেন। আর যদি আপনি কর্কশভাষী, কঠিন হৃদয়বিশিষ্ট হতেন, তাহলে অবশ্যই তারা আপনার চতুর্দিক থেকে সরে যেত’ (সূরা আলে ‘ইমরান : ১৫৯)।


নেতৃত্ব ক‎খনো ‘আমি-আমি’ বলে হুঙ্কার দিবেন না বা আত্মপ্রচার করবেন না। ভাল-মন্দ বিবেচনা না করে নিজের খেয়ালখুশি বাস্তবায়নে তৎপর হবেন না। অন্যকে মূল্যায়ণ করবেন, সম্মান করবেন, স্বীকৃতি ও কৃতিত্ব দিবেন। কর্মীদের কেউ মনক্ষুণ্ন হলে নেতাকে তা অবশ্যই আন্তরিকতার সাথে অনুভব করতে হবে। অপরের মাধ্যমে তা জানতে পারলেও মমত্বের সাথে তাকে কাছে টেনে নিয়ে মনঃকষ্ট লাঘবের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে নেতৃত্বের মর্যাদা কমে না বরং বৃদ্ধি পায়। পক্ষান্তরে নেতৃত্ব যদি এমনটা মনে করেন বা তাঁর আচরণে প্রকাশ পায় যে; দু চার দশজন চলে গেছে তাতে কী হয়েছে, আরো কত-শত কর্মী হাজার-হাজার মোছাহেব আছে, আরো কত আসবে! তাহলে সেটা হল এক সর্বনাশা মানসিকতা ও নিষ্ঠুর আচরণ। মাতা-পিতা যেমন একথা বলতে পারেন না যে, সন্তান একজন মরে গেছে তাতে কী হয়েছে? আমাদের তো আরো সন্তান আছে এবং আরো জন্মাবার সম্ভাবনা রয়েছে! ঠিক তেমনই একজন সুযোগ্য যথাযথ দায়িত্বশীল নেতৃত্বও তার হারানো বা নিস্ক্রিয় কর্মীর ব্যাপারে এমন মন্তব্য করতে পারেন না; বরং তিনি তাদেরকে খুঁজে বের করতে, কুড়িয়ে টেনে আনতে ও সক্রিয় করতে আন্তরিকতার সাথে যথাযথ তৎপরতা চালাবেন। যথাযোগ্য ও কার্যকর পরামর্শ সভার সক্রিয় গতিবিধির মাধ্যমে যে কারো স্বৈরাচারী আচরণ শিথিল থাকে। দ্বীনি-সাংগঠনিক কাজে স্বৈরাচারী নেতৃত্বের সাথে সচেতন কোন ব্যক্তি খুশী মনে অবস্থান ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করে না- এটাই চিরাচরিত নিয়ম। আর একা একা বা শুধু গুণগ্রাহী ভক্তকুল নিয়ে সংগঠন হয় না - এটাও বাস্তবতা। (এ প্রসঙ্গে সম্পূরক আলোচনা পরবর্তীতে ‘শূরা’ অধ্যায়ে দ্রষ্টব্য।)


(চলবে ইনশাআল্লাহ)


* সাবেক অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম।


তথ্যসূত্র :

[১]. ইমাম নববী, শারহু ছহীহ মুসলিম, ১২তম খণ্ড, পৃ. ৪২৮-৪২৯।

[২]. জামি‘উ বায়ানিল ইলমি ওয়া ফাযলিহি, ইমাম ইবনু ‘আব্দিল বারর্, ১ম খণ্ড, পৃ. ৬২ (পূর্বে আলোচিত হয়েছে)।

[৩]. ছহীহ মুসলিম, বিভাগ : আল-ইমারাহ, (এ প্রসঙ্গে হাদীছ বিস্তারিতভাবে অন্যত্র উল্লেখ করা হযেছে)।

[৪]. ইবনু মাজাহ, হা/৪২৪০, ‘যুহদ’ অধ্যায়, ‘হিলম’ অনুচ্ছেদ; ইমাম নববী, শারহু ছহীহ মুসলিম, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৪০।

[৫]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৭, ‘ঈমান’ অধ্যায়; তিরমিযী, হা/২০১১; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৭২০৪।

[৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৮৩০, ‘হুদূদ’ অধ্যায়।

[৭]. ইবনু কাছীর, বিদায়াহ্ নিহায়াহ্, ৮ম খণ্ড, পৃ. ৫০৬।





বিদ‘আত পরিচিতি (১৩তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ইসলামে দারিদ্র্য বিমোচনের কৌশল - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ছালাতে একাগ্রতা অর্জনের ৩৩ উপায় - আব্দুল হাকীম বিন আব্দুল হাফীজ
ইমাম মাহদী, দাজ্জাল ও ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আগমন সংশয় নিরসন (১৭তম কিস্তি) - হাসিবুর রহমান বুখারী
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (১৫তম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
ইমাম মাহদী, দাজ্জাল ও ঈসা (আলাইহিস সালাম) -এর আগমন সংশয় নিরসন (৬ষ্ঠ কিস্তি) - হাসিবুর রহমান বুখারী
ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় যুবসমাজ - ড. মেসবাহুল ইসলাম
বিদ‘আত পরিচিতি (২৫ তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ইসলামী পুনর্জাগরণের প্রতিবন্ধকতা ও তার সমাধান (৩য় কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
রামাযানে দাওয়াতী কাজের গুরুত্ব ও প্রভাব - অধ্যাপক মো. আকবার হোসেন
ছালাতে একাগ্রতা অর্জনের ৩৩টি উপায় (শেষ কিস্তি) - আব্দুল হাকীম বিন আব্দুল হাফীজ
দু‘আ ও যিকর : আল্লাহর অনুগ্রহ ও প্রশান্তি লাভের মাধ্যম (২য় কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম

ফেসবুক পেজ