জঙ্গিবাদ বনাম ইসলাম
-আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম*
(৫ম কিস্তি)
জঙ্গিবাদ বা চরমপন্থার কারণ
‘কুরআন ও সুন্নার মৌলিক জ্ঞান না থাকা’ এবং ‘প্রবৃত্তির অনুসরণ’ এ দু’টিই মূলত চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদের মূল কারণ। কোন ব্যক্তির মধ্যে শরী‘আতের মৌলিক এবং সঠিক জ্ঞান থাকলে এবং প্রবৃত্তির অনুসারী না হলে সে কখনো চরমপন্থা বা জঙ্গি কর্মকা-ের পথ নির্ধারণ করে নিবে না। সালাফে ছালেহীন চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদের কারণ হিসাবে এ দু’টি বিষয় উল্লেখ করেছেন।[১]
প্রথম কারণ : ইমাম ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন,
يَعْتَقِدُوْنَ بِجَهْلِهِمْ وَقِلَّةِ عِلْمِهِمْ وَعَقْلِهِمْ أَنَّ هَذَا الْأَمْرَ يَرْضَى رَبَّ الْأَرْضِ وَالسَّمَوَاتِ وَلَمْ يَعْلَمُوْا أَنَّهُ مِنْ أَكْبَرِ الْكَبَائِرِ الْمُوْبِقَاتِ وَالْعَظاَئِمِ وَالْخَطِيْئَاتِ وَأَنَّهُ مِمَّا زَيَّنَهُ لَهُمْ إِبْلِيْسُ الشَّيْطَانُ الرَّجِيْمُ الْمَطْرُوْدُ ... وَاللهُ الْمَسْؤُوْلُ أَنْ يَّعْصِمَنَا مِنْهُ بِحَوْلِهِ وَقُوَّتِهِ إِنَّهُ مُجِيْبُ الدَّعْوَاتِ
‘তাদের মূর্খতা ও জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে তারা বিশ্বাস করে যে, তাদের এ সমস্ত কর্মকা- আসমান-যমীনের প্রতিপালককে সন্তুষ্ট করে। অথচ তারা জানে না যে, তা কাবীরা গুনাহ সমূহের মধ্যে বড় গুনাহ এবং ধ্বংসাত্মক অন্যায়। বহিষ্কৃত-বিতাড়িত ইবলীস শয়তান এই কর্মকা-ের প্রতি তাদেরকে উৎসাহিত করে থাকে।.. আমরা আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করছি যে, তিনি যেন তাঁর মহাশক্তি ও ক্ষমতা দ্বারা ঐ কুমন্ত্রণা হতে আমাদেরকে রক্ষা করেন। তিনিই প্রার্থনা মঞ্জুরকারী’।[২]
প্রখ্যাত মুহাদ্দিছ আব্দুল মুহসিন আল-আব্বাদ আল-বদর বলেছেন,
وَمِنْ سُوْءِ الْفَهْمِ فِى الدِّيْنِ مَا حُصِلَ لِلْخَوَارِجِ الَّذِيْنَ خَرَجُوْا مِنْ عَلِىٍّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ وَقَاتَلُوْهُ فَإِنَّهُمْ فَهِمُوا النُّصُوْصَ الشَّرْعِيَّةَ فَهْمًا خَاطِئًا مُخَالِفًا لِفَهْمِ الصَّحَابَةِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمْ
‘তাদের পথভ্রষ্টের কারণ হল, দ্বীন সম্পর্কে ভুল বুঝ, যা খারেজীদের ধারণা থেকে অর্জিত হয়েছে, যারা আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর দল থেকে বের হয়ে গিয়েছিল এবং তাঁকে হত্যা করেছিল। তারা শারঈ দলীল সমূহকে ভ্রান্তিপূর্ণভাবে বুঝেছিল, যা ছিল ছাহাবায়ে কেরামের বুঝের সম্পূর্ণ বিরোধী’।[৩]
দ্বিতীয় কারণ : দ্বিতীয় কারণ সম্পর্কে আব্দুল মুহসিন আল- আব্বাদ বলেছেন,
وَمِنْ مَكَائِدِ الشَّيْطَانِ لِهَؤُلَاءِ الْمُفْرِطِيْنَ الْطَاغِيْنَ الْغَافِلِيْنَ أَنَّهُ يُزَيِّنُ لَهُمُ اتِّبَاعُ الْهَوَى وَرُكُوْبُ رُؤُوْسِهِمْ وَسُوْءُ الْفَهْمِ فِى الدِّيْنِ وَيُزَهِّدُهُمْ فِى الرُّجُوْعِ إِلَى أَهْلِ الْعِلْمِ لِئَلَّايُبْصِرُوْهُمْ وَيُرْشِدُوْهُمْ إِلَى الصَّوَابِ وَلِيَبْقُوْا فِىْ غَيِّهِمْ وَضَلَالِهِمْ
‘শয়তানের অনন্ত কুমন্ত্রণাই এই সমস্ত সীমালংঘনকারীদেরকে প্রবৃত্তির অনুসরণের প্রতি, ঔদ্ধত্যের চরমে আরোহণ করা এবং দ্বীন সম্পর্কে নোংরা ধারণার দিকে উৎসাহিত করেছে। এছাড়া এই কুমন্ত্রণাই তাদেরকে বিজ্ঞ আলেমদের দিকে প্রত্যাবর্তন করা থেকে বিমুখ করেছে, যেন আলেমগণ তাদেরকে স্বচ্ছ জ্ঞান দিতে ও সঠিক পথ প্রদর্শন করতে না পারেন; তারা যেন তাদের ভ্রষ্টতা ও ভ্রান্তির মধ্যেই থেকে যায়’।[৪]
চরমপন্থা বা জঙ্গিবাদের উৎপত্তি এবং ক্রমবিকাশ
শরী‘আতের পরিপূর্ণ জ্ঞান না থাকা এবং প্রবৃত্তির অনুসারী হওয়ার জন্য চরমপন্থী ও জঙ্গিদের উৎপত্তি যে ঘটবে, সে কথা স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা এবং মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আজ থেকে সাড়ে চৌদ্দশ’ বছর পূর্বে ইঙ্গিত প্রদান করেছেন এবং মানবজাতিকে সতর্ক করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
قُلۡ ہَلۡ نُنَبِّئُکُمۡ بِالۡاَخۡسَرِیۡنَ اَعۡمَالًا . اَلَّذِیۡنَ ضَلَّ سَعۡیُہُمۡ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ ہُمۡ یَحۡسَبُوۡنَ اَنَّہُمۡ یُحۡسِنُوۡنَ صُنۡعًا . اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِاٰیٰتِ رَبِّہِمۡ وَ لِقَآئِہٖ فَحَبِطَتۡ اَعۡمَالُہُمۡ فَلَا نُقِیۡمُ لَہُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ وَزۡنًا
‘(হে নবী!) আপনি বলুন, আমরা কি তোমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের ব্যাপারে সংবাদ দেব? যাদের প্রচেষ্টা দুনিয়াবী জীবনে বিভ্রান্ত হয়, যদিও তারা মনে করে যে, তারা সৎকর্ম করছে। ওরাই তারা, যারা অস্বীকার করে তাদের প্রতিপালকের নিদর্শনাবলী ও তাঁর সাথে তাদের সাক্ষাতের বিষয়; ফলে, তাদের কর্ম নিষ্ফল হয়ে যায়। সুতরাং ক্বিয়ামতের দিন আমরা তাদের জন্য কোন পরিমাপ প্রতিষ্ঠিত ও স্থির করব না’ (সূরা আল-কাহ্ফ : ১০৩-১০৫)।
ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় একটি হাদীছ উল্লেখ করেছেন। মুছ‘আব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমি আমার পিতাকে (সা‘দ ইবনু আবী ওয়াক্কাছ) জিজ্ঞেস করলাম, قُلۡ ہَلۡ نُنَبِّئُکُمۡ بِالۡاَخۡسَرِیۡنَ اَعۡمَالًا এ আয়াতে যাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, তারা হল ‘হারূরী’ গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বললেন, না; তারা হচ্ছে ইহুদী ও খ্রিষ্টান। কেননা, ইহুদীরা মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিল এবং খ্রিষ্টানরা জান্নাতকে অস্বীকার করত এবং বলত, সেখানে কোন খাদ্য-পানি নেই। আর ‘হারূরী’ হল তারা, যারা আল্লাহর সঙ্গে ওয়াদা করার পরও তা ভঙ্গ করেছিল। সা‘দ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাদের বলতেন ‘ফাসিক’।[৫]
আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) এবং যাহ্হাক (রাহিমাহুল্লাহ) সহ সালাফদের কিছু অংশ উপিরউক্ত আয়াতকে ‘হারূরী’[৬] চরমপন্থী বা খারেজীদের ব্যাপারে অবতীর্ণ করা হয়েছে বলে ব্যক্ত করেছেন। হাফেয ইবনু কাছীর তাঁর ‘আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ’ গ্রন্থে এমনটিই উল্লেখ করেছেন।[৭] তবে তিনি উপরিউক্ত দু’টি মতের ব্যাপারে সমন্বয় করে বলেছেন, ‘উপরিউক্ত আয়াতটি হারূরীদেরকে যেমন অন্তর্ভুক্ত করে তেমনিভাবে ইহুদী, খ্রিষ্টান এবং অন্যদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করে। কেননা আয়াতটি কারও জন্য খাছ করে অবতীর্ণ হয়নি। বরং আয়াতটি সবার জন্য আম’।[৮] হাদীছে এসেছে,
عَنْ أَبِىْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِىِّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ يَخْرُجُ فِيْكُمْ قَوْمٌ تَحْقِرُوْنَ صَلَاتَكُمْ مَعَ صَلَاتِهِمْ وَصِيَامَكُمْ مَعَ صِيَامِهِمْ وَعَمَلَكُمْ مَعَ عَمَلِهِمْ وَيَقْرَءُوْنَ الْقُرْآنَ لَايُجَاوِزُ حَنَاجِرَهُمْ يَمْرُقُوْنَ مِنَ الدِّيْنِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ
আবু সাঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, তোমাদের মধ্যে একটি সম্প্রদায় বের হবে। তোমরা তাদের ছালাতের তুলনায় তোমাদের ছালাতকে অতি তুচ্ছ মনে করবে, তাদের ছিয়ামের তুলনায় তোমাদের ছিয়ামকে এবং তাদের আমলের তুলনায় তোমাদের আমলকে তুচ্ছ জ্ঞান করবে। তারা কুরআন তেলাওয়াত করবে কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা ইসলাম থেকে এমন দ্রত গতিতে বের হয়ে যাবে, যেমন শিকার ভেদ করে তীর বেরিয়ে যায়।[৯] অন্য বর্ণনাতে এসেছে,يَقْتُلُوْنَ أَهْلَ الْإِسْلَامِ وَيدَعُوْنَ أَهْلَ الْأَوْثَانِ لَئِنْ أَنَا أَدْرَكْتُهُمْ لَأَقْتُلَنَّهُمْ قَتْلَ عَادٍ ‘তারা মুসলিমদেরকে হত্যা করবে এবং মূর্তিপূজকদের ছেড়ে দিবে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি যদি তাদেরকে পাই, তাহলে অবশ্যই ‘আমি তাদেরকে ‘আদ সম্প্রদায়ের ন্যায় হত্যা করব’।[১০] অন্য হাদীছে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
يَأْتِىْ فِىْ آخِرِ الزَّمَانِ قَوْمٌ حُدَثَاءُ الْأَسْنَانِ سُفَهَاءُ الْأَحْلَامِ يَقُوْلُوْنَ مِنْ خيْرِ قَوْلِ الْبَرِيَّةِ يَمْرُقُوْنَ مِنَ الْإِسْلَامِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ لَايُجَاوِزُ إِيْمَانُهُمْ حَنَاجِرَهُمْ فَأَيْنَمَا لَقِيْتُمُوْهُمْ فَاقْتُلُوْهُمْ فَإِنَّ قَتْلَهُمْ أَجْرٌ لِّمَنْ قَتَلَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
‘শেষ যামানায় একদল অল্প বয়সী নির্বোধ তরুণের আবির্ভাব হবে, যারা পৃথিবীতে সর্বোত্তম কথা বলবে। তারা ইসলাম থেকে অনুরূপ দ্রুত গতিতে বেরিয়ে যাবে, যেমন শিকার ভেদ করে তীর বেরিয়ে যায়। তাদের ঈমান তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তোমরা তাদেরকে যেখানেই পাবে সেখানেই হত্যা করবে। কারণ যে ব্যক্তি তাদেরকে হত্যা করবে তার জন্য ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট অশেষ নেকী রয়েছে’।[১১] রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের সম্পর্কে বলেছেন,هُمْ شَرُّ الْخَلْقِ وَالْخَلْقِيَّةِ ‘তারাই সৃষ্টির সর্বনিকৃষ্ট মানুষ’।[১২]
চরমপন্থীদের আংশিক বিকাশটা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময়ে শুরু হয়, যা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ভবিষ্যদ্বাণীরই বাস্তবায়ন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর জীবনের শেষ দিকে যখন গণীমতের মাল বণ্টন করছিলেন, তখন চরমপন্থীদের তৎকালীন নেতা বনু তামীম গোত্রের ‘যুল-খুওয়াইছির’ রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বণ্টনে সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছিল, يَا مُحَمَّدُ اِتَّقِ اللهَ ‘হে মুহাম্মাদ! আল্লাহকে ভয় কর। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তরে বলেছিলেন, مَنْ يُّطِيْعُ اللهَ إِذَا عَصَيْتُهُ ‘আমিই যদি আল্লাহর অবাধ্যতা করি, তবে কে তাঁর আনুগত্য করবে?’।[১৩] অন্য বর্ণনায় এসেছে, সে বলেছিল,اِعْدِلْ يَا رَسُوْلَ اللهِ ‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি ইনছাফ করুন’।[১৪]
অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে হত্যা করার জন্য ছাহাবীদেরকে প্রেরণ করেছিলেন। হাদীছে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছাহাবীদেরকে বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে কে যাবে এবং তাকে হত্যা করবে? আবূ বকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) গেলেন এবং তাকে ছালাত পড়া অবস্থায় পেলেন। তিনি হত্যা করতে ভয় পেয়ে ফিরে আসলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমাদের মধ্যে কে যাবে এবং তাকে হত্যা করবে? ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, আমি যাব। তিনি গিয়ে তাকে ছালাত অবস্থায় পেলেন। তাই আবূ বকর যা করেছিলেন তিনিও তাই করলেন এবং ফিরে আসলেন। আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, আমি হত্যা করব। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি! তাকে তুমি পেলে তো? তিনি গিয়ে দেখলেন, সে চলে গেছে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, নিশ্চয় আমার উম্মতের এই হল প্রথম শত্রু। যদি তাকে হত্যা করা হত তবে কেউ মতভেদ করতে পারত না। তারপর তিনি বললেন, বানী ইসরাঈলরা ৭১ দলে বিভক্ত হয়েছিল। আমার উম্মত ৭২ দলে বিভক্ত হবে। সবগুলোই জাহান্নামে যাবে একটি ব্যতীত। সেটা হল একটি ঐক্যবদ্ধ দল।[১৫]
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর পর খারেজীরা আত্মপ্রকাশ করতে পারেনি। কারণ ইসলাম বিরোধী যাবতীয় চক্রান্তের বিরুদ্ধে প্রথম খলীফা আবূ বকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। অনুরূপভাবে খলীফা ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর খেলাফতকালেও চরমপন্থীরা মাথা চাড়া দিতে পারেনি, কারণ তিনি ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোসহীন। এর পরেও চরমপন্থীরা থেমে থাকেনি। তারা ইসলাম এবং মুসলিম ব্যক্তির ক্ষতি সাধনের জন্য সর্বদা তৎপর ছিল। কারণ ইসলামের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে এই চরমপন্থী ইহুদী-খ্রিষ্টান এবং মুনাফিক্ব।
তারা মুসলিম ছদ্মবেশে মুসলিম সমাজে অনুপ্রবেশ করে ইসলামের ক্ষতি সাধন করেছে। ছাহাবীদের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়িয়ে খলীফা এবং ছাহাবীদেরকে হত্যা করেছে। চরমপন্থীদের মধ্যে অগ্নিপূজক আবূ লুলু প্রথম ছদ্মবেশ ধারনকারী। ঐ আবূ লু’লু নামক জনৈক অগ্নিপূজক বাহ্যিকভাবে ইসলাম গ্রহণ করে গোপনে মদীনায় প্রবেশ করে। ২৩ হিজরীর ২৬ যিলহজ্জ তারিখে ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) যখন ইমাম হয়ে ফজরের ছালাত আদায় করছিলেন, তখন সে ছদ্মবেশে প্রথম কাতারে অবস্থান করে। অতঃপর সুযোগ বুঝে আবূ লু’লু তীক্ষè তরবারী দ্বারা তিন বা ছয়বার তাঁর কোমরে আঘাত করে। তিনদিন পর তিনি শাহাদত বরণ করেন। ফলে চরমপন্থী তৎপরতার পুনরুত্থান ঘটে। উল্লেখ্য, ঐ দিন সে আরো ১৩ জন ছাহাবীকে আঘাত করে। তার মধ্যে ৬ জন ছাহাবী শাহাদত বরণ করেন। ঐ ঘাতক পালিয়ে যেতে না পেরে নিজের অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করে।[১৬]
তারা ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর সময় তাদের কার্যক্রম আরো জোরদার করে। ‘আব্দুল্লাহ বিন সাবা’ নামক জনৈক ইহুদী মুখে ইসলামের কথা বলে গুপ্তচর হিসাবে মুসলিম সমাজে স্থান করে নেয়। সে ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর প্রতি কতিপয় জাজ্বল্য মিথ্যা অভিযোগ আরোপ করে চরমপন্থী গ্রুপকে প্ররোচিত করে। অবশেষে সে খলীফাকে হত্যা করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে এবং ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে হত্যা করাই সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ বলে ঘোষণা করে। হাফেয ইবনু কাছীর বলেন, يدعون الناس إلى قتال عثمان ونصر الدين وأنه أكبر الجهاد اليوم ‘তারা মানুষকে যুদ্ধ এবং দ্বীনের বিজয়ের জন্য আহ্বান করে এবং এটাকে বড় জিহাদ বলে উল্লেখ করে’।[১৭] অবশেষে জুম‘আর খুৎবা দেয়ার সময় তারা ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে নির্মমভাবে আহত করে। অতঃপর বেঁচে থাকার সকল পথ রুদ্ধ করে দীর্ঘ চল্লিশ বা সাতচল্লিশ দিন অবরোধ করে রেখে ক্ষুধার্ত অবস্থায় খারেজীরা তাকে হত্যা করে।
ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) অবরোধকালীন ছিয়াম অবস্থায় পবিত্র কুরআনের সূরা বাক্বারাহ ১৩৭ নং আয়াত পাঠ করছিলেন।[১৮] এমতাবস্থায় ‘গাফেক্বী বিন হারব’ নামক ঘাতক তাঁর মুখম-লে ও মাথার অগ্রভাগে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। রক্তের ফিনকি নিম্নোক্ত আয়াতের উপর গিয়ে পড়ে (فَسَیَکۡفِیۡکَہُمُ اللّٰہُ وَ ہُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ) ‘তোমার জন্য তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহই যথেষ্ট। তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ’ (সূরা আল-রাক্বারাহ : ১৩৭)। ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর রক্তে সেদিন পবিত্র কুরআন রঞ্জিত হয়। এই অবস্থা দেখে ঐ রক্ত পিপাসু পা দিয়ে আঘাত করে কুরআনকে ফেলে দেয়। তাঁর স্ত্রী নায়েলা বিনতে ক্বরাফাছাহ বাধা দিতে আসলে ‘সাওদান বিন হামরান’ নামক হিংস্র পশু তার আঙ্গুলগুলো কেটে নেয় এবং পৃষ্ঠদেশে আঘাত করে নির্মমভাবে আহত করে।[১৯]
হাফেয ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) হাফেয ইবনু আসাকিরের বর্ণনা পেশ করে বলেছেন, ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ‘আমর ইবনুল হামক’ নামক ধূর্ত লাফিয়ে তাঁর বুকের উপর চেপে বসে এবং ছয়বার অস্ত্রবিদ্ধ করে তাঁকে হত্যা করে। ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর মাথাটা কুরআনের পার্শ্বে পড়ে থাকতে দেখে পা দ্বারা লাথি মেরে দূরে ফেলে দেয়। অতঃপর মহা উল্লাসে বলে উঠে, مَارَأَيْتُ كَالْيَوْمِ وَجْهَ كَافِرِ أَحْسَنَ وَلَا مَضْجَعَ كَافِرِ أَكْرَمَ ‘আজকের দিনের ন্যায় কোন কাফেরের এত সুন্দর মুখম-ল আমি দেখিনি এবং কোন কাফেরের অতি মর্যাদা সম্পন্ন এমন বাসস্থানও কোনদিন দেখিনি’ (নাঊযুবিল্লাহ)।[২০]
আব্দুল্লাহ বিন সাবার ইহুদী জোট মুসলিমদের অভ্যন্তরে থেকেই তাদের কর্মকা- অব্যাহত রাখে। অতঃপর আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর খেলাফতকালে তাদের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। আর এ চরমপন্থীদের কারণেই ৩৬ হিজরীতে আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ও আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর মাঝে উষ্ট্রের যুদ্ধ এবং আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ও মু‘আবিয়া (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর মাঝে ৩৭ হিজরীতে ছিফফীনের যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। মূলত এই যুদ্ধকে কেন্দ্র করেই চরমপন্থীরা পরিপূর্ণরূপে আত্মপ্রকাশ করে।[২১]
আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) এবং মু‘আবিয়া (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর যুদ্ধের সময় মু‘আবিয়া (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর দল পরাজিত হওয়ার আশংকায় তরবারির মাথায় পবিত্র কুরআন উঁচু করে যুদ্ধ বিরতির আহ্বান জানায়। উক্ত আহ্বানে আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) সাড়া দেন এবং মীমাংসার জন্য তৃতীয় পক্ষ নির্ধারণের ঘোষণা দেন। এ কারণে আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর দল থেকে ১২ বা ১৬ হাযার চরমপন্থী সৈন্য বের হয়ে ‘হারুরাহ’ নামক স্থানে চলে যায়। ইতিহাসে এদেরকেই ‘খারেজী’ বা দলত্যাগী বলা হয়।[২২] তারা এ ঘটনার পর মর্যাদাসম্পন্ন ছাহাবীদেরকে কাফের ও হত্যাযোগ্য অপরাধী বলে ফৎওয়া প্রদান করে এবং তাদেরকে হত্যার জন্য কসম করে। তারা অনেক ছাহাবীকে হত্যাও করে। অতঃপর আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন এবং ‘নাহরাওয়ান’ নামক স্থানে তাদের সকলকে হত্যা করেন। তবে কয়েকজন বেঁচে যায়। তারা বিভিন্ন স্থানে চলে যায়। আল্লামা শাহরস্তানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ظَهَرَتْ بِدْعُ الْخَوَارِجِ فِىْ هَذِهِ الْمَوَاضِعِ مِنْهُمْ وَبَقِيَتْ إِلَى الْيَوْمِ ‘এ সমস্ত স্থানগুলো থেকে খারেজী ফেৎনা প্রকাশিত হয়েছে এবং আজও অবশিষ্ট আছে’।[২৩] তাই বলা যায়, খারেজী মতবাদের আধুনিক রূপ হল জঙ্গিবাদ বা জঙ্গি মতবাদ।
ইসলামের সাথে জঙ্গিবাদ, চরমপন্থা এবং সন্ত্রাসবাদের সম্পর্ক
নৈরাজ্য সৃষ্টি করার জন্য উগ্রবাদী ব্যক্তিই জঙ্গী, চরমপন্থী বা সন্ত্রাসী। সর্বদা চরমপন্থা অবলম্বন করাই যাদের মৌলিক দাবী। অথচ ইসলামে চরমপন্থার কোন স্থান নেই। ইসলাম অর্থ শান্তি। ইসলামের মৌলিক দাবী হল, মনোবৃত্তির আতিশয্য থেকে মুক্ত হয়ে অভ্রান্ত সত্যের চূড়ান্ত উৎস পবিত্র কুরআন এবং ছহীহ হাদীছের সামনে আত্মসমর্পণ করা। সর্বক্ষেত্রে জঙ্গি, চরমপন্থি মনোভাব পোষণ না করে মধ্যমপন্থা অবলম্বনপূর্বক সঠিক সিদ্ধান্তকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া। কোন প্রকারের চরমপন্থা ও গোঁড়ামির সাথে ইসলামের সামান্য কোন সম্পর্ক নেই। ইসলামের মধ্যে কোন বাড়াবাড়ি বা জবরদস্তি নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, لَاۤ اِکۡرَاہَ فِی الدِّیۡنِ ‘দ্বীনের মধ্যে কোন জবরদস্তি নেই’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৫৬)। তাছাড়া আল্লাহ তা‘আলা দ্বীনের ব্যাপারে কঠোরতাও আরোপ করেননি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ مَا جَعَلَ عَلَیۡکُمۡ فِی الدِّیۡنِ مِنۡ حَرَجٍ ‘তিনি (আল্লাহ) দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি’ (সূরা আল-হজ্জ : ৭৮)।
ইসলাম কোন ব্যাপারে কঠোরতা আরোপ করে না। বরং ইসলামের সবকিছুই মধ্যমপন্থী ও সহজ পন্থী। মুসলিমকে সহজ করেই পাঠানো হয়েছে। কঠিন করে নয়। হাদীছে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,إِنَّمَا بُعِثْتُمْ مُيَسِّرِيْنَ وَلَمْ تُبْعَثُوْا مُعَسِّرِيْنَ ‘তোমাদেরকে মূলত সহজ করেই পাঠানো হয়েছে, কঠিন করে পাঠানো হয়নি’।[২৪] আল্লাহ তা‘আলা ইসলাম ও মুসলিমের সর্বোত্তম আদর্শ এবং মহান শিক্ষক রাসূল মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কেও সহজপন্থী শিক্ষক করে প্রেরণ করেছেন। হাদীছে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,إِنَّ اللهَ لَمْ يَبْعَثْنِىْ مُعَنِّتًا وَلَامُتَعَنِّتًا وَلَكِنْ بَعَثَنِىْ مُعَلِّمًا مُيَسِّرًا ‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা আমাকে বোঝা হিসাবে এবং যেদী করে পাঠাননি; বরং তিনি আমাকে একজন সহজপন্থী শিক্ষক হিসাবে পাঠিয়েছেন’।[২৫] এর অন্যতম কারণ হল ইসলাম উদারতাপূর্ণ এক মধ্যমপন্থী জীবন বিধান। এখানে যেমন কোন ধরণের উগ্রতা ও চরমত্বের আশ্রয় নেই, তেমনি বৈরাগ্য ও শৈথিল্যেরও স্থান নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَ کَذٰلِکَ جَعَلۡنٰکُمۡ اُمَّۃً وَّسَطًا لِّتَکُوۡنُوۡا شُہَدَآءَ عَلَی النَّاسِ وَ یَکُوۡنَ الرَّسُوۡلُ عَلَیۡکُمۡ شَہِیۡدًا
‘এভাবে আমি তোমাদেরকে এক মধ্যমপন্থী জাতিরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছি, যাতে তোমরা মানবজাতির জন্য সাক্ষী স্বরূপ হও এবং রাসূলও যেন তোমাদের সাক্ষী স্বরূপ হন’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৪৩)। হাদীছে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,إِنّ الدِّيْنَ يُسْرٌ وَلَنْ يَشَادَّ هَذَا الدِّيْنَ أَحَدٌ إِلَّا غَلَبَهُ فَسَدِّدُوْا وَقَارِبُوْا وَأَبْشِرُوْا ‘নিশ্চয় দ্বীন সহজ-সরল, কঠিন নয়। দ্বীন নিয়ে যে বাড়াবাড়ি করে দ্বীন তার উপর বিজয়ী হয়। কাজেই তোমরা মধ্যমপন্থা অবলম্বন কর এবং তার নিকটবর্তী হও, আশান্বিত থাক’।[২৬] এমনকি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ মূসা আল-আশ‘আরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ও মু‘আয ইবনু জাবাল (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে ইয়ামানে শাসক হিসাবে প্রেরণ করলেন। তখন তিনি তাদেরকে বললেন, يَسِّرَا وَلَا تُعَسِّرَا ‘তোমরা সহজ কর, কঠোরতা আরোপ কর না’।[২৭]
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
* পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
তথ্যসূত্র :
[১]. ভ্রান্তির বেড়াজালে ইক্বামতে দ্বীন, পৃ. ২৮-২৯।
[২]. আবুল ফিদা ঈসমাইল ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ (দারু ইহ্ইয়ায়ুত তুরাছিল ‘আরাবী, ১ম সংস্করণ, ১৪০৮ হি.), ৭ম খণ্ড, পৃ. ৩১৭।
[৩]. আব্দুল মুহসিন আল- আব্বাদ, বি আইয়ে আক্বলিন ওয়া দ্বীনিন ইয়াকুনুত তাফজীরি ওয়াত তাদমীরি জিহাদান, পৃ. ২।
[৪]. তদেব, পৃ. ৩।
[৫]. বুখারী, হা/৪৭২৮; তাফসীরুল কুরআনিল আযীম, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২০২।
[৬]. তাফসীরুল কুরআনিল আযীম, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২০২।
[৭]. আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ৭ম খণ্ড, পৃ. ৩১৬ -قال بعض السلف في الخوارج إنهم المذكورون في قوله تعالى (قل هل ننبئكم بالاخسرين أعمالا الذين ضل سعيهم في الحياة الدنيا وهم يحسبون أنهم يحسنون صنعا.أولئك الذين كفروا بآيات ربهم ولقائه فحبطت أعمالهم فلا نقيم لهم يوم القيامة وزنا) الكهف: ১০৩
[৮]. তাফসীরুল কুরআনিল আযীম, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২০২।
[৯]. ছহীহ বুখারী, হা/৫০৫৮।
[১০]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৩৪৪, ‘নবীদের ঘটনাবলী’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৬; ছহীহ মুসলিম, হা/১০৬৪; মিশকাত, হা/৫৮৯৪।
[১১]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৬১১, ৬৯৩০ ‘মানাক্বিব’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২৫; ছহীহ মুসলিম, হা/১০৬৬, ‘যাকাত’ অধ্যায় , অনুচ্ছেদ-৪৯।
[১২]. ছহীহ মুসলিম, হা/১০৬৭, ‘যাকাত’ অধ্যায়, ‘সৃষ্টি ও চরিত্রগত দিক থেকে খারেজী সম্প্রদায় সবচেয়ে নিকৃষ্ট’ অনুচ্ছেদ।
[১৩]. ছহীহ বুখারী, হা/৭৪৩২, ‘তাওহীদ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৫৪; ছহীহ মুসলিম, হা/১০৬৪, ‘যাকাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৪৮।
[১৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৬১৬৩, ‘আচার-ব্যবহার’ অধ্যায়, অনুচ্ছে-৯৫; ছহীহ মুসলিম, হা/১০৬৪, ‘যাকাত’ অধ্যায়, ‘খারেজী সম্প্রদায় ও তাদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা’ অনুচ্ছেদ।
[১৫]. যিয়াউদ্দীন আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল ওয়াহেদ আল-মাক্বদেসী, আল-আহাদীছুল মুখতারাহ, হা/২৫০০; তাহক্বীক্ব : ড. আব্দুল মালেক ইবনু আব্দুল্লাহ (বৈরূত : দারু খিযির, ৩য় সংস্করণ, ১৪২০ হি.), ৭ম খণ্ড, পৃ. ৯০।
[১৬]. আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ৭ম খণ্ড, পৃ. ১৫৫।
[১৭]. আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ, ৭ম খণ্ড, পৃ. ১৯৪।
[১৮]. ভ্রান্তির বেড়াজালে ইক্বামতে দ্বীন, পৃ. ২২-২৩।
[১৯]. আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ, ৭ম খণ্ড, পৃ. ২১০।
[২০]. আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ,৭ম খণ্ড, পৃ. ২০৬; ভ্রান্তির বেড়াজালে ইক্বামতে দ্বীন, পৃ. ২২-২৩।
[২১]. ভ্রান্তির বেড়াজালে ইক্বামতে দ্বীন, পৃ. ২৩।
[২২]. তদেব।
[২৩]. তদেব।
[২৪]. ছহীহ বুখারী, হা/২২০, ‘ওযূ’ অধ্যায়, ‘মসজিদে পেশাবের উপর পানি ঢেলে দেয়া’ অনুচ্ছেদ; মিশকাত, হা/৪৯১।
[২৫]. মুসলিম, হা/৩৭৬৩, ‘ত্বালাক্ব’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৪; মিশকাত, হা/৩২৪৯।
[২৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৯, ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘দ্বীন সহজ’ অনুচ্ছেদ; মিশকাত, হা/১২৪৬।
[২৭]. ছহীহ বুখারী, হা/৭১৭২, ‘আহকাম’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২২।
প্রসঙ্গসমূহ »:
দাওয়াত ও জিহাদ