শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২২ পূর্বাহ্ন

যাদের জন্য জান্নাত ওয়াজিব 

-ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর* 


(শেষ কিস্তি)  


 
৩. পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতের হেফযতকারী
কোন মুসলিম সঠিকভাবে পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত, তার রুকূ‘, সিজদা, ওযূ এবং ছালাতের নির্ধারিত সময়কে সংরক্ষণ করলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতের হিফাযত করা সম্পর্কে রাসূল (ﷺ) বলেছেন,

عَنْ حَنْظَلَةَ  رَضِىَ اللهُ عَنْهُقَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ مَنْ حَافَظَ عَلَى الصَّلَوَاتِ الْخَمْسِ رُكُوْعِهِنَّ وَسُجُوْدِهِنَّ وَوُضُوْئِهِنَّ وَمَوَاقِيْتِهِنَّ وَعَلِمَ أَنَّهُنَّ حَقٌّ مِنْ عِنْدِ اللهِ دَخَلَ الْجَنَّةَ أَوْ قَالَ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ.

হানযালা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি রাসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতের রুকূ‘, সিজদা, ওযূ এবং নির্ধারিত সময়কে সংরক্ষণ করে, জেনে রাখ! তার ব্যাপারে আল্লাহ্র হক্ব হল, তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন অথবা তার জন্য জান্নাতকে ওয়াজিব করে দিবেন।[১] অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, ‘ঐ ব্যক্তির উপর জাহান্নামের আগুন হারাম হয়ে যায়’।[২]

عَنْ أَبِىْ قَتَادَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ قَالَ اللهُ تَعَالَى إِنِّيْ فَرَضْتُ عَلَى أُمَّتِكَ خَمْسَ صَلَوَاتٍ وَعَهِدْتُ عِنْدِي عَهْدًا أَنَّهُ مَنْ جَاءَ يُحَافِظُ عَلَيْهِنَّ لِوَقْتِهِنَّ أَدْخَلْتُهُ الْجَنَّةَ وَمَنْ لَمْ يُحَافِظْ عَلَيْهِنَّ فَلَا عَهْدَ لَهُ عِنْدِي.

আবূ ক্বাতাদা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘নিশ্চয় আমি আপনার উম্মতের উপর পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত ফরয করেছি এবং আমার কাছে একটি অঙ্গীকার রেখেছি যে, যে ব্যক্তি ওয়াক্তমত সেই পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করে ক্বিয়ামতের দিন উপস্থিত হবে, আমি তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করাব। আর যে ব্যক্তি সেগুলোর সংরক্ষণ করবে না তার জন্য আমার নিকট কোন অঙ্গীকার নেই’।[৩] 

বিশুদ্ধভাবে সুনির্দিষ্ট সময়ে পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত, রুকূ‘, সিজদা ও ওযূর সংরক্ষণে জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। এগুলোর হেফাযতকারীকে মহান আল্লাহ জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ দিয়ে ধন্য করেন।

৪. আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে অংশগ্রণকারী

জিহাদ ইসলামে অত্যন্ত পবিত্রতম ও ফযীলতপূর্ণ ইবাদত হিসাবে স্বীকৃত। যে ব্যক্তি আল্লাহ্র দ্বীনকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আল্লাহ্্র রাস্তায় প্রাণপনে যুদ্ধ করে অতঃপর শহীদ হয় আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতকে তার জন্য ওয়াজিব করে দেন। এমর্মে হাদীছে এসেছে,

عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ  رَضِىَ اللهُ عَنْهُأَنَّهُ سَمِعَ النَّبِىَّ ﷺ يَقُوْلُ مَنْ قَاتَلَ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ مِنْ رَجُلٍ مُسْلِمٍ فُوَاقَ نَاقَةٍ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ.

মু‘আয ইবনু জাবাল (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী করীম (ﷺ) বলেছেন, কোন মুসলিম ব্যক্তি উটের দুধ দোহনের পরিমাণ সময়ও যদি আল্লাহ্র রাস্তায় যুদ্ধ করে, তাহলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব’।[৪]

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ فَإِنَّ مَقَامَ أَحَدِكُمْ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ أَفْضَلُ مِنْ صَلَاتِهِ فِىْ بَيْتِهِ سَبْعِيْنَ عَامًا أَلَا تُحِبُّوْنَ أَنْ يَغْفِرَ اللهُ لَكُمْ وَيُدْخِلَكُمُ الْجَنَّةَ اغْزُوْا فِىْ سَبِيْلِ اللهِ مَنْ قَاتَلَ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ فُوَاقَ نَاقَةٍ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ.

আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহর রাস্তায় তোমাদের কোন ব্যক্তির (জিহাদ উপলক্ষে) অবস্থান করা, নিজ ঘরে সত্তর বছর ব্যাপী ছালাত পড়া অপেক্ষা উত্তম। তোমরা কি চাও না যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করান? অতএব আল্লাহর পথে লড়াই কর। যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে দু’বার উটনী দহনের মধ্যবর্তী সময় পরিমাণ জিহাদ করবে, তার জন্য জান্নাত অবধারিত (ওয়াজিব) হয়ে যাবে’।[৫]

عَنْ أَبِىْ نَجِيْحٍ السُّلَمِىِّ  رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ مَنْ بَلَغَ بِسَهْمٍ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ فَهُوَ لَهُ دَرَجَةٌ فِى الْجَنَّةِ فَبَلَّغْتُ يَوْمَئِذٍ سِتَّةَ عَشَرَ سَهْمًا قَالَ وَسَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ مَنْ رَمَى بِسَهْمٍ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ فَهُوَ عِدْلُ مُحَرَّرٍ.

আবূ নাজিহ আস-সুলামী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একটি তীরের মাধ্যমে আঘাত হানে তার জন্য জান্নাতে একটি বিশেষ মর্যাদাকর স্তর রয়েছে। সুতরাং একদিন আমি ষোলটি তীর নিক্ষেপ করেছিলাম। রাবী বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে এ মর্মে আরো বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একটি তীর নিক্ষেপ করল তার জন্য একটি গোলামকে স্বাধীন করার নেকী রয়েছে।[৬]

عَنْ أَنَسِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ أُمَّ الرُّبَيِّعِ بِنْتَ الْبَرَاءِ وَهْىَ أُمُّ حَارِثَةَ بْنِ سُرَاقَةَ أَتَتِ ﷺ فَقَالَتْ يَا نَبِىَّ اللهِ أَلَا تُحَدِّثُنِىْ عَنْ حَارِثَةَ وَكَانَ قُتِلَ يَوْمَ بَدْرٍ أَصَابَهُ سَهْمٌ غَرْبٌ فَإِنْ كَانَ فِى الْجَنَّةِ صَبَرْتُ وَإِنْ كَانَ غَيْرَ ذَلِكَ اجْتَهَدْتُ عَلَيْهِ فِى الْبُكَاءِ قَالَ يَا أُمَّ حَارِثَةَ إِنَّهَا جِنَانٌ فِى الْجَنَّةِ وَإِنَّ ابْنَكِ أَصَابَ الْفِرْدَوْسَ الْأَعْلَى.

আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, বারার কন্যা রুবাইয়্যা যিনি হারেছা ইবনু সুরাকার মাতা হিসাবে পরিচিত (আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর ফুফু) তিনি রাসূল (ﷺ)-এর খিদমতে এসে বললেন, হে আল্লাহর নবী (ﷺ)! আপনি হারেছা সম্পর্কে কিছু বলুন। হারেছা বদর যুদ্ধে শহীদ হয়েছে। এক অদৃশ্য তীর এসে তার শরীরে বিধেছিল। সুতরাং সে যদি জান্নাতবাসী হয়ে থাকে তাহলে আমি ধৈর্যধারণ করব। অন্যথা তার জন্য অঝোরে কাঁদতে থাকব। উত্তরে নবী করীম (ﷺ) বললেন, হে হারেছার মা! জান্নাতে অসংখ্য বাগান আছে। তোমার পুত্র সেখানে সর্বোচ্চ জান্নাতুল ফিরদাউস লাভ করেছে’।[৭]

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَا مِنْ مَكْلُوْمٍ يُكْلَمُ فِى اللهِ إِلَّا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَكَلْمُهُ يَدْمَى اللَّوْنُ لَوْنُ دَمٍ وَالرِّيْحُ رِيْحُ مِسْكٍ.

আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘যে ক্ষত বা আঁচড় আল্লাহর সৃষ্ট হয়, সে ক্ষত বা আঁচড় ক্বিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উপস্থিত হবে যে, তা হতে রক্তধারা প্রবাহিত হবে। (দৃশ্যত) তার রং হবে রক্তের মত, কিন্তু তার গন্ধ হবে কস্তুরীর ন্যায় সুঘ্রাণযুক্ত’।[৮]

৫. কন্যা সন্তান প্রতিপালনকারী

কন্যা সন্তানকে দ্বীন শিক্ষা করত সঠিকভাবে প্রতিপালন করা জন্নাত লাভের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। সাধরাণত মানুষ কন্যাদের প্রতি অবহেলা করে থাকে। অথচ তাদের প্রতিপালনেই ছওয়াব বেশি। একজন কন্যা ক্রমান্বয়ে, কন্যা তারপর অন্যের স্ত্রী পরিশেষে মা-এর ভূমিকা পালন করে। তাই একজন কন্যাকে সঠিক জ্ঞান শিক্ষাসহ প্রতিপালন করলে আগামীদেরন জাতি সুন্দর হবে। তাদের সুন্দরভাবে প্রতিপালন করার কারণে জান্নাত ওয়াজিব হয়।

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ  رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَنْ كَانَ لَهُ ثَلَاثُ بَنَاتٍ يُؤْوِيْهِنَّ وَيَكْفِيْهِنَّ وِيَرْحَمْهُنَّ فَقَدْ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةَ الْبَتَّةَ فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ بَعْضِ الْقَوْمِ وَثِنْتَيْنِ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ وَثِنْتَيْنِ.

জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যার তিনটি কন্যা সন্তান আছে অতঃপর সে তাদেরকে আশ্রয় দান করে, তাদের ব্যয় নির্বাহ করে এবং তাদের সাথে দয়াদ্র আচরণ করে তাহলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। অতঃপর উপস্থিত জনতার মধ্যে থেকে একজন বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল (ﷺ)! যদি কারো দু’টি কন্যা সন্তান থাকে? উত্তরে তিনি বললেন, দু’টি কন্যা সন্তান থাকলেও।[৯]

عَنْ عَائِشَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهَا أَنَّهَا قَالَتْ جَاءَتْنِىْ مِسْكِينَةٌ تَحْمِلُ ابْنَتَيْنِ لَهَا فَأَطْعَمْتُهَا ثَلَاثَ تَمَرَاتٍ فَأَعْطَتْ كُلَّ وَاحِدَةٍ مِنْهُمَا تَمْرَةً وَرَفَعَتْ إِلَى فِيْهَا تَمْرَةً لِتَأْكُلَهَا فَاسْتَطْعَمَتْهَا ابْنَتَاهَا فَشَقَّتِ التَّمْرَةَ الَّتِىْ كَانَتْ تُرِيْدُ أَنْ تَأْكُلَهَا بَيْنَهُمَا فَأَعْجَبَنِىْ شَأْنُهَا فَذَكَرْتُ الَّذِىْ صَنَعَتْ لِرَسُوْلِ اللهِ ﷺ فَقَالَ إِنَّ اللهَ قَدْ أَوْجَبَ لَهَا بِهَا الْجَنَّةَ أَوْ أَعْتَقَهَا بِهَا مِنَ النَّارِ.

আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, এক মিসকীন মহিলা তার দু’টি কন্যাকে  বহন করে আমার কাছে এল। আমি তাকে তিনটি খেজুর দিলাম। অতঃপর সে তার কন্যা দু’টিকে একটি করে খেজুর দিল এবং সে নিজের খাবার জন্য একটি খুরমা মুখ পর্যন্ত তুলল। কিন্তু তার কন্যা দু’টি সেটিও খেতে চাইল। সুতরাং মহিলাটি যে খেজুরটি নিজে খেতে ইচ্ছা করেছিল সেটিকে দু’ভাগ করে তাদের মধ্যে বণ্টন করে দিল। (তিনি বলেন) তার এ অবস্থা আমাকে অভিভূত করল। সুতরাং আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট মহিলাটির ঘটনা বর্ণনা করলাম। তখন নবী (ﷺ) বললেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য তার এ কাজের বিনিময়ে জান্নাত ওয়াজিব করে দিয়েছেন অথবা তাকে জাহন্নাম থেকে মুক্ত করে দিয়েছেন’।[১০] অপর বর্ণনায় রয়েছে, مَا عَجَبُكِ لَقَدْ دَخَلَتْ بِهِ الْجَنَّةَ ‘তুমি তো অবাক হচ্ছো এর ফলে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে’।[১১]

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ  رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَنْ عَالَ جَارِيَتَيْنِ حَتَّى تَبْلُغَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَنَا وَهُوَ وَضَمَّ أَصَابِعَهُ.

আনাস ইবনু মালেক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি দু’জন কন্যা সন্তানকে তাদের বালেগ হওয়া পর্যন্ত প্রতিপালন করে, ক্বিয়ামতের দিন আমি ও ঐ ব্যক্তি একসঙ্গে উপস্থিত হব। অতঃপর তিনি তাঁর দু’আঙ্গুলকে একত্রে মিলিয়ে দেখালেন।[১২]


অন্য বর্ণনায় রয়েছে, ‘তারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে’।[১৩]

عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ يَقُوْلُ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ مَنْ كَانَ لَهُ ثَلَاثُ بَنَاتٍ فَصَبَرَ عَلَيْهِنَّ وَأَطْعَمَهُنَّ وَسَقَاهُنَّ وَكَسَاهُنَّ مِنْ جِدَتِهِ كُنَّ لَهُ حِجَابًا مِنَ النَّارِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.

উক্ববাহ ইবনু আমের (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘কারো তিনটি কন্যা সন্তান থাকলে এবং সে তাদের ব্যাপারে ধৈর্যধারণ করলে, যথাসাধ্য তাদের পানাহার করালে ও পোশাক-পরিচ্ছেদ দিলে, ক্বিয়ামতের দিন তারা তাদের পিতা-মাতাদের জাহান্নামের অন্তরাল হবে।[১৪]

কন্যা সন্তান সঠিকভাবে প্রতিপালন করা জান্নাতে প্রবেশের নিশ্চিত এক মাধ্যম। বিধায় কোন অবস্থায় তাদেরকে অবহেলা করা উচিত নয়। বরং তাদের ছহীহ দ্বীন শিক্ষা দিয়ে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে হবে। বালেগ হওয়ার পর সৎ পাত্রে পাত্রস্থ করতে হবে। বিনিময়ে জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।


* পরিচালক, ইয়াসিন আলী সালাফী কমপ্লেক্স, রাজশাহী।

[১]. মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৩৭১; মুসনাদুল জামে‘, হা/৩৪৯২; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হা/১৫৯৮; কানযুল উম্মাল, হা/১৯০৫১; আত-তারগীব, হা/৩৮১, সনদ হাসান।

[২]. মুসানদে আহমাদ, হা/১৮৩৭২; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/২৭২৪; ত্বাবারাণী, মু‘জামুল কাবীর, হা/৩৪৯৪; ছহীহ আত-তারগীব, হা/৩৮১, সনদ হাসান।

[৩]. আবূ দাঊদ, হা/৪৩০; ইবনু মাজাহ, হা/১৪০৩; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/৪০৩৩, সনদ হাসান।

[৪]. আবূ দাঊদ, হা/২৫৪১; তিরমিযী, হা/১৬৫০; নাসাঈ, হা/৩১৪১; ইবনু মাজাহ, হা/২৭৯২; মুসনাদে আহমাদ, হা/৯৭৬১; মুসতাদরাকে হাকেম, হা/২৩৮২; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৪৬১৮; দারেমী, হা/২৩৯৪; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/৯০২; ছহীহুল জামে‘, হা/৬৪১৬; মিশকাত, হা/৩৮২৫, সনদ ছহীহ।

[৫]. তিরমিযী, হা/১৬৫০; কানযুল উম্মাল, হা/১০৬৩৭; ছহীহ আত-তারগীব, হা/১৩০১; ছহীহুল জামে‘, হা/৭৩৭৯; মিশকাত, হা/৩৮৩০, সনদ হাসান।

[৬]. নাসাঈ, হা/৩১৪৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭০৬৩; হাকেম, হা/২৫৬০; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৪৬১৫; ছহীহুল জামে‘, হা/৬১২৬; মিশকাত, হা/৩৮৭৩, সনদ ছহীহ।

[৭]. ছহীহ বুখারী, হ/২৮০৯; তিরমিযী, হা/৩১৭৪; মুসতাদরাকে হাকেম, হা/৪৯৩০; আহমাদ, হা/১৩৭৬৭; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৪৬৬৬৪; মিশকাত, হা/২৮০৯।

[৮]. ছহীহ বুখারী, হ/৫৫৩৩; ছহীহ মুসলিম, হা/১৮৭৬; ইবনু মাজাহ, হা/২৭৯৫।

[৯]. আল-আদাবুল মুফরাদ, হা/৭৮; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১০২৭, সনদ হাসান।

[১০]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৩০; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৬৫৫; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৪৪৮; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/১১০২০; মুসনাদুল জামে‘, হা/১৬৯৯৩।

[১১]. ইবনু মাজাহ, হা/৩৬৬৮; মুসনাদুছ ছাহাব,া হা/৫৮৩, সনদ ছহীহ।

[১২]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৩১; তিরমিযী, হা/১৯১৪; মুসাতাদরাকে হাকেম, হা/৭৩৫০; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২৯৭; ছহীহুল জামে‘, হা/৬৩৯১; মশকাত, হা/৪৯৫০।

[১৩]. ইবনু মাজাহ, হা/৩৬৭০; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৪২৪; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/২৯৪৫; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২৭৭৬; ছহীহুল জামে‘, হা/২৯৬০, সনদ হাসান।

[১৪]. ইবনু মাজাহ, হা/৩৬৬৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭৪৩৯; আল-আদাবুল মুফরাদ, হা/৭৬; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২৯৪; ছহীহুল জামে‘, হা/৬৪৮৮, সনদ ছহীহ।




প্রসঙ্গসমূহ »: পরকাল
বিদ‘আত পরিচিতি (২৮তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
তওবার গুরুত্ব ও ফযীলত (শেষ কিস্তি) - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
ছয়টি মূলনীতির ব্যাখ্যা (৩য় কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির
তাক্বওয়াই মুক্তির সোপান - আব্দুর রশীদ
পরবর্তীদের তুলনায় সালাফদের ইলমী শ্রেষ্ঠত্ব (৬ষ্ঠ কিস্তি) - অনুবাদ : আযহার বিন আব্দুল মান্নান
পরবর্তীদের তুলনায় সালাফদের ইলমী শ্রেষ্ঠত্ব (৩য় কিস্তি) - অনুবাদ : আযহার বিন আব্দুল মান্নান
আশূরায়ে মুহাররম : করণীয় ও বর্জনীয় - ইউনুস বিন আহসান
জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ - অনুবাদ : মুহাম্মদ ইমরান বিন ইদরিস
ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ১১ রাক‘আতের নির্দেশ দিয়েছিলেন - ব্রাদার রাহুল হোসেন (রুহুল আমিন)
হজ্জ ও ওমরাহ সম্পর্কে প্রচলিত বিদ‘আতসমূহ - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
ইসলামী শরী‘আতে খাওয়ার আদব - আল-ইখলাছ ডেস্ক

ফেসবুক পেজ