মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৬:২৭ অপরাহ্ন

পরবর্তীদের তুলনায় সালাফদের ইলমী শ্রেষ্ঠত্ব

-মূল : ইবনু রজব (রাহিমাহুল্লাহ)
-অনুবাদ : আযহার বিন আব্দুল মান্নান*


(৪র্থ কিস্তি)

সারগর্ভ উপকারী জ্ঞান


বর্ণনার আধিক্যতা আর বক্তব্যের প্রাচুর্যের মধ্যেই ইলম সীমাবদ্ধ নয়; বরং ইলম হচ্ছে অন্তরে ঢেলে দেয়া এক জ্যোতি, যা দিয়ে বান্দা হক্ব বুঝে, সত্য-মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য করে আর এমন সংক্ষিপ্ত বর্ণনাভঙ্গিতে তা ব্যক্ত করে যাতে করে উদ্দেশ্য অর্জিত হয়।

রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ‘জাওয়ামিউল কালিম’ (সংক্ষিপ্ত, অথচ ব্যাপক অর্থবহ বক্তব্য) এবং সংক্ষিপ্তভাবে কথা বলার যোগ্যতা দেয়া হয়েছিল। এজন্যই বক্তব্যের আধিক্যতা এবং অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা থেকে নিষেধ করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

إِنَّ اللهَ لَمْ يَبْعَثْ نَبِيًّا إِلَّا مُبَلِّغًا وَإِنَّ تَشْقِيْقَ الْكَلَامِ مِنَ الشَّيْطَانِ

‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা নবীকে শুধু প্রচারকারী হিসাবেই প্রেরণ করেছেন, আর টুকরা টুকরা কথা শয়তানের পক্ষ থেকেই হয়’।[১] অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমনভাবে কথা বলতেন, যাতে করে উদ্দেশ্য অর্জিত হয়ে যায়, তবে বেশি এবং উদ্দেশ্যহীন টুকরা টুকরা কথা বলা নিন্দনীয়।

বক্তব্যের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দিক নির্দেশনা


রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খুত্ববাগুলো একেবারে মধ্যবর্তী ধরনের ছিল। তিনি এমনভাবে কথা বলতেন যে, যদি কোন গণনাকারী তাঁর কথাগুলো গুণতে চাইত, তাহলে গণনা করতে পারত।[২] রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, إِنَّ مِنَ الْبَيَانِ سِحْرًا ‘কোন কোন বর্ণনা যাদুর মত  হৃদয়গ্রাহী হয়’।[৩] এই কথাটি তিনি নিন্দা করেই বলেছেন; প্রশংসা করে নয়। যেমনটি অনেকেই ধারণা করে থাকে। তবে যে ব্যক্তি হাদীছের শব্দগুলোর প্রতি লক্ষ্য করবে সে অবশ্যই সঠিক বিষয়টি বুঝতে পারবে।[৪]

তিরমিযী এবং অন্যান্য হাদীছ গ্রন্থে আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ ليُبْغِضُ الْبَلِيْغَ مِنَ الرِّجَالِ الَّذِىْ يَتَخَلَّلُ بِلِسَانِهِ كما تَتَخَلَّلَ الْبَقَرَةُ بِلِسَانِهَا

‘সেসব বাকপটু-বাগ্মী লোকদেরকে আল্লাহ তা‘আলা অবশ্যই ঘৃণা করেন, যারা গরুর জাবর কাটার ন্যায় কথা বলেই চলে’।[৫] যেমন এ ব্যাপারে অনেক মারফূ‘ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। তেমনি ওমর, সা‘দ ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা), আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) এবং অন্যান্য ছাহাবীদের থেকে মাওকূফ হাদীছও বর্ণিত হয়েছে।

মিতভাষী হলেই তার জ্ঞান কম নয়


বর্তমানে আমরা এমন কিছু মূর্খ লোকদের পাল্লায় পড়েছি, যারা পরবর্তী কিছু লোকের ব্যাপারে এ বিশ্বাস করে যে, যার বক্তব্য ব্যাপকভাবে প্রসার লাভ করেছে, সে অতীতের আলেমদের থেকে বেশি জ্ঞানী। এমনকি তাদের মধ্যে কেউ কেউ কিছু লোকের ব্যাপারে এমন ধারণাও করে যে, তারা পূর্ববর্তী ছাহাবী বা তাবেঈর চেয়েও বেশী জ্ঞানী। যেহেতু তাদের বক্তব্য ও আলোচনার আধিক্যতা রয়েছে।

আবার কেউ বলে, অমুক ব্যক্তি প্রসিদ্ধ ফকী¡হদের থেকেও বেশি জানে! আর এটা পূর্বে যা বলা হল সে বিষয়কে আবশ্যক করে দেয়। কেননা প্রসিদ্ধ ফক্বীহগণ তো তাদের পূর্ববর্তীদের থেকে বেশি বক্তব্য দিয়ে গেছেন। যেহেতু পরবর্তীরা অধিক বক্তব্যের কারণে বেশি জ্ঞানী, তাহলে যুক্তিসঙ্গতভাবেই বর্তমানরাও সালাফদের থেকে বেশি জ্ঞানী হবেন। কেননা সালাফরা বর্তমানদের থেকে কম আলোচনা করেছেন। যেমন- সুফইয়ান ছাওরী, আওযাঈ, লাইছ, ইবনুল মুবারাক ও তাদের স্থলে যারা আছেন। এ রকমভাবে তাদের পূর্বের ছাহাবী এবং তাবিঈরাও। সবাই তাদের থেকে স্বল্প আলোচনাকারী ছিলেন।

এসব কথা মূলত সালাফে ছালেহীনের মর্যাদায় আঘাত, তাদের ব্যাপারে খারাপ ধারণা এবং তাদেরকে মূর্খ ও অল্প জ্ঞানের দিকে সম্পৃক্ত করা। লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ! ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) ছাহাবীদের ব্যাপারে যথার্থই বলেছিলেন, إِنَّهُمْ أَبَرُّ الْأُمَّةِ قُلُوْبًا وَ أَعْمَقُهَا عُلُوْمًا وَ أَقَلُّهَا تَكَلُّفًا ‘অন্তরের দিক থেকে ছাহাবীগণ ছিলেন উম্মতের মধ্যে সবচেয়ে সদয়, ইলমে গভীর আর ফৎওয়া প্রদানের দায়িত্ব গ্রহণে খুবই অল্প।[৬] ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকেও অনুরূপ বর্ণনা এসেছে।[৭]

ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-এর এই উক্তির মধ্যে ইঙ্গিত রয়েছে যে, ছাহাবীদের পরে যারা আসবে তারা ইলমে পিছিয়ে থাকবে, আর ফৎওয়া প্রদানের দায়িত্বে এগিয়ে থাকবে। ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) আরো বলেন,

إِنَّكُمْ فِيْ زَمَانٍ كَثِيْرٌ عُلَمَاؤُهُ قَلِيْلٌ خُطَبَاؤُهُ وَ سَيَأْتِيْ بَعَدَكُمْ زَمَانٌ قَلِيْلٌ عُلَمَاؤُهُ كَثِيْرٌ خُطَبَاؤُهُ

‘তোমরা এমন একটি যুগে আছ, যে যুগে আলেমের সংখ্যা বেশি বক্তার সংখ্যা কম। তবে তোমাদের পরে এমন একটি যুগ আসবে, যখন আলেমের সংখ্যা কম হবে কিন্তু বক্তার সংখ্যা বেশি হবে’।[৮] সুতরাং যার ইলম বেশি কিন্তু বক্তব্য কম, সেই প্রশংসিত। পক্ষান্তরে যার ইলম কম, বক্তব্য বেশি সেই নিন্দিত।

রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইয়ামানবাসীদের ইমান ও ফিক্বহের ব্যাপারে সাক্ষ্য দিয়েছেন।[৯] কারণ তারাই মানুষদের মধ্যে মিতভাষী এবং বাহ্যিক দৃষ্টিতে অল্প জ্ঞানী হলেও তাদের জ্ঞান ছিল উপকারী, যা তাদের অন্তরে গেঁথে ছিল। সেই উপকারী জ্ঞান থেকে তারা প্রয়োজনে প্রকাশ করতেন, আর এটাই হল ফিক্বহ ও উপকারী জ্ঞান।

সালাফদের জ্ঞানই উত্তম


কুরআনের তাফসীর, হাদীছের তাৎপর্য এবং হালাল-হারাম সংক্রান্ত বিষয়ে উত্তম ইলম হচ্ছে- যা ছাহাবী, তাবেঈ, তাবে তাবেঈ এবং অনুসরণীয় ইমামদের যুগ পর্যন্ত সালাফ কর্তৃক বর্ণিত। যাদের নাম আমরা ইতিপূর্বে উল্লেখ করেছি। অতএব তাদের থেকে বর্ণিত বিষয়গুলো অনুধাবনকরতঃ সে বিষয়ে পা-িত্য অর্জন করে তা সংরক্ষণ করাই উত্তম ইলম। আর তাদের পরবর্তীতে যেসব ইলমের প্রচার-প্রসার ঘটেছে, তার অধিকাংশের মধ্যেই কোন কল্যাণ নেই। তবে পরবর্তীতে প্রসারিত ইলম যদি সালাফদের কোন বক্তব্যের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ হয়, তাহলে তাতে কোন সমস্যা নেই। পক্ষান্তরে পরবর্তীতে প্রসার লাভ করা ইলম যদি সালাফদের বক্তব্য বিরোধী হয়, তাহলে তার বেশির ভাগই বাতিল হিসাবে গণ্য হবে।

কুরআনের তাফসীর, হাদীছের ব্যাখ্যা ও হালাল-হারামের আলোচনার ক্ষেত্রে সালাফদের বক্তব্যই যথেষ্ট। অতএব তাদের পরবর্তী যুগে কারো বক্তব্যে যে হকই¡ পাওয়া যাবে তা সালাফদের আলোচনায় বাহুল্যবর্জিত শব্দে এবং সংক্ষিপ্ত বর্ণনাভঙ্গিতে বিদ্যমান। এমনিভাবে তাদের পরবর্তী যুগে কারো বক্তব্যে যদি নতুন কোন বাতিলের সন্ধান পাওয়া যায়, তাহলে যে বুঝে এবং গবেষণা করে তার জন্য সালাফদের আলোচনাতেও এমন কিছু বিদ্যমান রয়েছে যা সেটাকে বাতিল করে দেয়।  সালাফদের বক্তব্যে এমন অলংকার ও তাৎপর্যপূর্ণ কিছু সূত্র পাওয়া যায়, যা পরবর্তীরা আবিষ্কার করতে পারে না এবং সে সম্পর্কে তারা জানতেও পারে না। সুতরাং যে সালাফদের বক্তব্য থেকে ইলম গ্রহণ করেনি, বুঝতে হবে কল্যাণ তার হাতছাড়া হয়ে গেছে এবং পরবর্তীদের অনুসরণ করতে গিয়ে সে অনেক বাতিলের মধ্যে পতিত হয়েছে।

ছাহাবীদের বক্তব্য গ্রহণের ক্ষেত্রে ছহীহ-যঈফ বিষয়ে জ্ঞান থাকা যরূরী

ছাহাবীদের বক্তব্য সংকলনকারীর জন্য উচিত হচ্ছে তাদের বক্তব্যের মধ্যে কোন্টি ছহীহ আর কোন্টি যঈফ সে সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা। আর এটা ‘আল-জারাহ ওয়াত তা‘দীল’এবং ‘ইলাল’ শাস্ত্র জানার মাধ্যমেই সম্ভব। আর যে এ সম্পর্কে জানে না, সে তাদের বক্তব্য বর্ণনা করার ক্ষেত্রে নিভর্রযোগ্য নয়। তার কাছে হক্ব বাতিলের সাথে মিশে তালগোল পাকিয়ে যাবে আর তার কাছে যা থাকবে তাও আস্থাযোগ্যও হবে না। যেমন দেখা যায়, জারাহ ওয়াত-তা‘দীল সম্পর্কে যার জ্ঞান কম, সে যদি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বা সালাফদের থেকে বর্ণনা করে, তাহলে তার ব্যাপারে ছহীহ-যঈফ সম্পর্কে আস্থাশীল হওয়া যায় না। তার ছহীহ ও যঈফের মধ্যে পার্থক্য করার জ্ঞান না থাকার কারণে এমন হয়। আর এই অজ্ঞতার কারণে তার সকল বর্ণনাকে বাতিল গণ্য করা জায়েয আছে। কারণ সে ছহীহ-যঈফের পার্থক্য বুঝে না। ইমাম আওযাঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, الْعِلْمُ مَا جَاءَ بِهِ أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَمَا كَانَ غَيْرُ ذَلكَ فَلَيْسَ بِعِلْمٍ ‘মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ছাহাবীগণ যা নিয়ে এসেছেন তাই ইলম, এছাড়া আর কিছইু ইলম নয়’।[১০]

ইমাম আহমাদ (রাহিমাহুল্লাহ)ও একই কথা বলেছেন। তিনি তাবেঈদের ক্ষেত্রে বলতেন, ‘তোমার ইচ্ছা, অর্থাৎ তাবেঈদের বক্তব্য লেখা ও না লেখার ক্ষেত্রে তোমার ইচ্ছা’।

ইমাম  যুহুরী (রাহিমাহুল্লাহ) (৫৮-১২৪ হি.) তাবেঈদের কথা লিখে রাখতেন, কিন্তু ছালিহ ইবনু কাইসান (রাহিমাহুল্লাহ) (৪০-১৪০ হি.) তার বিরোধিতা করতেন, তবে পরবর্তীতে তাবেঈদের কথা না লেখার কারণে তিনি অনুতপ্ত হয়েছিলেন।[১১]

তাবেঈ বা ইমামদের বক্তব্য লিখার বিধান


আমাদের যুগে ইমাম শাফেঈ, আহমাদ, ইসহাক্ব এবং আবূ উবাইদ পর্যন্ত অনুসরণীয় আইম্মাতুস সালাফের বক্তব্য লিখা নির্দিষ্ট হয়ে গেছে। তবে তাদের পরবর্তীতে যা ঘটেছে, সে ব্যাপারে মানুষের সতর্ক হওয়া উচিত। তাদের পরে বহু ঘটনা প্রবাহই তো ঘটে গেছে। তাদের পরবর্তীতে জাহিরিয়্যা ও তাদের মত এমন লোকদের আবির্ভাব ঘটেছে, যাদেরকে সুন্নাহ ও হাদীছ অনুসরণের দিকে সম্পৃক্ত করা হয়। অথচ নিজস্ব বুঝ এবং স্বীয় চিন্তা-চেতনা নিয়ে উম্মাহ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে তা সুন্নাহর সাথে কঠিনভাবে সাংঘর্ষিক। অথবা সে এমন কিছু গ্রহণ করেছে, যা তার পূর্ববর্তী ইমামগণ গ্রহণ করেননি।

যুক্তিবাদী বা দার্শনিকদের বক্তব্যে অনুপ্রবেশ ক্ষতিকারক


যুক্তিবাদী ও দার্শনিকদের বক্তব্যে প্রবেশ করা ক্ষতি ছাড়া আর কিছু নয়। যারাই তাতে প্রবেশ করেছে তারাই তাদের আবর্জনা দ্বারা কলঙ্কিত হয়েছে। যেমন ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, لَا يَخْلُوْ مَنْ نَظَرَ فِيْ الْكَلَامِ إِلَّا تَجَهَّمَ ‘যারা যুক্তিবিদ্যার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছে, তারা জাহমিয়্যা না হয়ে থাকতে পারেনি’।[১২] তিনি ও সালাফদের অন্যান্য সম্মানিত ইমামগণ আহলে কালামদের ব্যাপারে সতর্ক করে গেছেন, যদিও তারা সুন্নাহকে রক্ষা করে থাকে।

আর যে ব্যক্তি বিদ‘আতপূর্ণ বক্তব্যকে ভালোবাসে, বিদ‘আতীকে অনুসরণ করে এবং যে ব্যক্তি ঝগড়া-বিবাদে জড়ায় না তাকে নিন্দা করে জাহেল বা মূর্খতার দিকে সম্পৃক্ত করে এবং বলে সে না-কি আল্লাহ বা ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞানই রাখে না, তাহলে এসব কিছুই শয়তানের পরিকল্পনা, এগুলো থেকে আমরা আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাচ্ছি।

নব আবিষ্কৃত ইলমের মধ্যে আরো রয়েছে, চিন্তাধারা, ঝোঁক অথবা কাশফের দ্বারা মা‘রিফাত, অন্তরের আমল এবং এ ধরনের অপ্রকাশ্য ইলম নিয়ে আলোচনা করা, যাতে ভয়াবহ বিপদ বিদ্যমান। স্বয়ং ইমামগণ এর প্রতিবাদ করে গেছেন। যেমনটা ইমাম আহমাদ এবং অন্যদের ব্যাপারে ঘটেছে। আবূ সুলায়মান (রাহিমাহুল্লাহ) বলতেন,

إِنَّهُ لَتَمُرُّ بِيَ النُّكْتَةُ مِنْ نُكَتِ الْقَوْمِ فَلَا أُقَبِّلُهَا إِلَّا بِشَاهِدَيْنِ عَدْلَيْنِ: الْكِتَابُ وَ السُّنَّةُ

‘মানুষের কত কথার মালা আমার পাশ দিয়ে চলে যায়, অথচ ন্যায়পরায়ণ দু’টি সাক্ষী ছাড়া আমি তা গ্রহণ করি না। তাহল কুরআন ও সুন্নাহ’।[১৩] জুনাইদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলতেন,

عِلْمُنَا هَذَا مُقَيَّدٌ بِالْكِتَابِ وَ السُّنَّةِ مَنْ لَمْ يَقْرَأِ الْقُرْآنَ وَيَكْتُبِ الْحَدِيْثَ لَا يُقْتَدَى بِهِ فِيْ عِلْمِنَا هَذَا 

‘আমাদের ইলম তো কুরআন ও সুন্নাহর সাথে মিশে আছে। সুতরাং যে ব্যক্তি কুরআন পড়বে না এবং হাদীছ লিখবে না, আমাদের এ ইলমের ক্ষেত্রে তার অনুসরণও করা যাবে না’।[১৪]

ইলমে কালাম শাস্ত্রে নির্বুদ্ধিতা ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছে। এ বিষয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে অনেক লোক নাস্তিক এবং মুনাফিক্ব হয়ে গেছে। এমনকি তাদের অনেকে এই দাবী পর্যন্ত করেছে যে, আল্লাহর ওলীগণ নবীদের থেকেও উত্তম কিংবা তারা নবীদের মুক্ষাপেক্ষী নয় এবং রাসূলদের নিয়ে আসা শরী‘আত অসম্পূর্ণ। কখনো তারা হুলূল, ইত্তিহাদ বা ওয়াহদাতুল ওজুদের দাবি করেছে। এছাড়াও কুফুরী, ফাসেকী এবং অবাধ্যতার অনেক মূলনীতি তো আছেই। যেমন- হালালকে হারাম বা শরী‘আতের নিষিদ্ধ বিষয়ের ক্ষেত্রে হালালের দাবি করা ইত্যাদি।

এসব নিয়ম-নীতিতে তারা এমন অনেক বিষয় প্রবেশ করিয়েছে যার সাথে দ্বীনের কোন সম্পর্ক নেই। তবে কিছু কিছু বিষয়ের ক্ষেত্রে তারা ধারণা করে যে, এগুলোর দ্বারা অন্তর নরম হয়। যেমন গান ও নৃত্য! আর কিছু বিষয়ের ক্ষেত্রে তাদের ধারণা, এগুলোর দ্বারা প্রবৃত্তির ব্যায়াম হয়। যেমন- হারাম ছবির প্রতি আকৃষ্ট হওয়া ও তা দেখা! আর কিছু বিষয়ের ক্ষেত্রে তারা মনে করেছে যে, তা অন্তরের ফাটল এবং বিনয়ীর জন্য। যেমন- পোশাকের প্রসিদ্ধতা। এছাড়াও এমন কিছু বিষয় আছে যা শরী‘আত প্রবর্তন করেনি!

আবার কিছু কিছু বিষয় আছে, যা আল্লাহর যিকির ও ছালাত থেকে বিরত রাখে। যেমন গান-বাজনা, হারামের প্রতি দৃষ্টি। আর এসব কিছুর মাধ্যমে তারা তাদের মত হয়ে গেছে, যারা দ্বীনকে খেল-তামাশা হিসাবে গ্রহণ করেছে।

 (ইনশাআল্লাহ চলবে)

* অধ্যয়নরত, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদীনা মুনাওয়ারাহ, সঊদী আরব।

তথ্যসূত্র :
[১]. মা‘মার বিন রশিদ তাঁর ‘জামে‘ গ্রন্থে মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেছেন, যেটি মুছান্নাফে আব্দুর রাযযাকের সাথে সংযুক্ত, (১১তম খণ্ড, পৃ. ১৬৩), তবে এটি যঈফ মুরসাল।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৫৬৭; ছহীহ মুসলিম হা/২৪৯৩, আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত।
[৩]. ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে لَسِحْرًا শব্দে বর্ণনা করেছেন, হা/৫১৪৬; ইমাম মুসলিম ‘আম্মার বিন ইয়াসার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে উল্লিখিত শব্দে বর্ণনা করেছেন, হা/৮৬৯।
[৪]. রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীছ ‘কোন কোন বর্ণনা যাদুর মত হৃদয়গ্রাহী’ এটি প্রশংসা ও নিন্দা উভয় প্রসঙ্গে বর্ণিত হয়েছে।
    প্রশংসনীয় প্রসঙ্গের উদাহরণ হল

    (ক) ছহীহ বুখারীতে আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

أَنَّهُ قَدِمَ رَجُلَانِ مِنْ الْمَشْرِقِ فَخَطَبَا فَعَجِبَ النَّاسُ لِبَيَانِهِمَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ مِنْ الْبَيَانِ لَسِحْرًا  أَوْ إِنَّ بَعْضَ الْبَيَانِ لَسِحْرٌ

    ‘একবার পূর্বাঞ্চল (নজদ এলাকা) থেকে দু’জন লোক এসে তারা ভাষণ দিল। লোকজন তাদের ভাষণে বিস্মিত হয়ে গেল। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কোন কোন ভাষণ অবশ্যই যাদুর মত’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫৭৬৭)।

    (খ) ছহীহ মুসলিমে আবূ ওয়ায়িল থেকে বর্ণিত, তিনে বলেন,

خَطَبَنَا عَمَّارٌ فَأَوْجَزَ وَأَبْلَغَ فَلَمَّا نَزَلَ قُلْنَا يَا أَبَا الْيَقْظَانِ لَقَدْ أَبْلَغْتَ وَأَوْجَزْتَ فَلَوْ كُنْتَ تَنَفَّسْتَ. فَقَالَ إِنِّىْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ إِنَّ طُوْلَ صَلَاةِ الرَّجُلِ وَقِصَرَ خُطْبَتِهِ مَئِنَّةٌ مِنْ فِقْهِهِ فَأَطِيلُوا الصَّلَاةَ وَاقْصُرُوا الْخُطْبَةَ وَإِنَّ مِنَ الْبَيَانِ سِحْرًا

    ‘আম্মার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) আমাদের উদ্দেশে সংক্ষেপে একটি সারগর্ভ ভাষণ দিলেন। তিনি মিম্বর থেকে নামলে আমরা বললাম, হে আবুল ইয়াক্বযান! আপনি অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত ও সারগর্ভ ভাষণ দিয়েছেন, তবে যদি তা কিছুটা দীর্ঘ করতেন। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, কোন ব্যক্তির দীর্ঘ ছালাত ও সংক্ষিপ্ত ভাষণ তার প্রজ্ঞার পরিচায়ক। অতএব তোমরা ছালাতকে দীর্ঘ ও ভাষণকে সংক্ষিপ্ত কর। অবশ্যই কোন কোন ভাষণে যাদুকরী প্রভাব থাকে’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১৮৯৪)।

    নিন্দনীয় প্রসঙ্গের উদাহারণ হল

    বুুরাইদা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি,

إِنَّ مِنَ الْبَيَانِ سِحْرًا وَإِنَّ مِنَ الْعِلْمِ جَهْلًا وَإِنَّ مِنَ الشِّعْرِ حُكْمًا وَإِنَّ مِنَ الْقَوْلِ عِيَالًا. فَقَالَ صَعْصَعَةُ بْنُ صُوْحَانَ صَدَقَ نَبِىُّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَّا قَوْلُهُ إِنَّ مِنَ الْبَيَانِ سِحْرًا. فَالرَّجُلُ يَكُوْنُ عَلَيْهِ الْحَقُّ وَهُوَ أَلْحَنُ بِالْحُجَجِ مِنْ صَاحِبِ الْحَقِّ فَيَسْحَرُ الْقَوْمَ بِبَيَانِهِ فَيَذْهَبُ بِالْحَقِّ

    ‘কোন কোন বর্ণনা যাদুর মত হৃদয়গ্রাহী হয়, কোন কোন ইলম অজ্ঞাতাপূর্ণ হয়, কোন কোন কবিতা হিকমাতপূর্ণ হয় এবং কোন কোন কথা বোঝা হয়ে দাঁড়ায়’। ছা‘ছা‘আহ ইবনু ছূহান বলেন, আল্লাহর নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সঠিক বলেছেন। প্রথমত রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণী : ‘কোন কোন বর্ণনা যাদুর মত হৃদয়গ্রাহী হয়’ প্রায় দেখা যায়, কোন ব্যক্তির নিকট অপরের হক্ব থাকে কিন্তু সে হক্বদারের সাথে এমন সুন্দরভাবে যুক্তিপূর্ণ কথা বলে, যাতে পাওনাদারের দেনা পরিশোদ করতে হয় না’ (আবূ দাঊদ, হা/ ৫০১২, সনদ দুর্বল)। এজন্যই ক্বাযী ই‘আয (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, এর দু’টি ব্যাখ্যা আছে।

নিন্দা। কেননা কথার ছন্দের মাধ্যমে মানুষের অন্তরসমূহকে সে তার নিজের দিকে আকৃষ্ট করে এমনকি এর দ্বারা তখন গুনাহও কামাই করে। যেমন যাদুর দ্বারা কামাই করে থাকে।
দুই. প্রশংসনীয়। কেননা বাগ্মীতা শিক্ষা দেয়ার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দার প্রতি অনুগ্রহ করেন। আর অন্তরসমূহকে তার দিকে আকৃষ্ট করার কারণে তাকে যাদুর সাথে সাদৃশ্য দেয়া হয়েছে। আর যাদুর মূলই হল ফিরানো। আর বায়ানও অন্তরসমূহকে তার আহ্বানকৃত বিষয়ের দিকে ফিরিয়ে দেয় এবং আকৃষ্ট করে। ইমাম নববী বলেন, ২য় ব্যখ্যাটিই বিশুদ্ধ (নববী, শারহু ছহীহ মুসলিম, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ১৫৯)।

[৫].  আবূ দাউদ, হা/৫০০৫; তিরমিযী, হা/২৮৫৩; আহমাদ শাকের সনদটিকে ছহীহ বলেছেন, তাহক্বীক্বে মুসনাদে আহমাদ, ১০তম খণ্ড, পৃ. ৫৩); শায়খ আলবানীও ছহীহ বলেছেন, ছহীহুল জামে‘, হা/ ১৮৭৫।
[৬].  ইবনু আব্দুল বার্র, জামি‘ঊ বায়ানিল ইলম ও ফাযলিহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৯৮৭, সনদ মুনক্বাতে‘, সানিদ আল-মাসীসী নামক একজন রাবী আছেন, যিনি ইবনু আবী হাতেম ও অন্যান্যের নিকট দুর্বল।
[৭].  আবূ নু‘আইম, হিলয়াতুল আউলিয়া, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩০৫, সনদে ওমর ইবনু নুবহান নামক রাবী আছেন, যিনি দুর্বল। হাসান বাছরী থেকেও এমন আছার বর্ণিত হয়েছে।
[৮].  যুহাইর ইবনু হারব ‘ইলম’ গ্রন্থে ছহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন, পৃ. ২৭; হাকেম পাশাপাশি শব্দে মুসতাদরাকে বর্ণনা করেছন, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৫২৯; ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর, ৯ম খণ্ড, পৃ. ১০৮; হান্দাদ, যুহুদ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩৫৫; হাকেম শায়খাইনের শর্তে ছহীহ বলেছেন, ইমাম যাহাবীও তার সাথে একমত পোষণ করেছেন, শায়খ আলবানী ছহীহ বলেছেন। সিলসিলাহ ছহীহাহ, ৭ম খণ্ড, পৃ. ৫৭৬।
[৯]. লেখক সেই হাদীছের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন, যা আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন,الْإِيمَانُ يَمَانٍ وَالْحِكْمَةُ يَمَانِيَةٌ ‘ঈমান হল ইয়ামানীদের আর হিকমাতও ইয়ামানীদের’।
[১০].  ইবনু আব্দুল বার্র, জামে‘ঊ বায়ানিল ইলম ও ফাযলিহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৬১৭।
[১১]. খতিব বাগদাদী, ‘তাক্বঈদুল ইলম, পৃ. ১০৬-১০৭; ইবনু আব্দিল বার্র, ‘জামে‘ঊ বায়ানিল ইলম ও ফাযলিহ, ১ম খ-, পৃ. ৩৩৩; ছালেহ ইবনু কায়সান (৪০-১৪০ হি.) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি এবং যুহুরী একত্রিত হয়ে ইলম অর্জন করছিলাম। অতঃপর আমরা হাদীছ লিখব বলে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে যা বর্ণিত হয়েছে তা লিখে ফেললাম। অতঃপর তিনি (যুহুরী) বললেন, ছাহাবীদের থেকে বর্ণিত বিষয়গুলোও আমরা লিখব, কেননা তাও সুন্নাহ। আমি বললাম, তা সুন্নাহ্ নয়, সুতরাং আমরা তা লিখব না। অতঃপর তিনি লিখলেন আর আমি লিখলাম না। তাই তিনি সফলকাম হলেন, আর আমি ক্ষতিগ্রস্থ হলাম।
[১২].  ইবনুল বাত্তাহ, আল-ইনাবাতুল কুবরা, ২য় খণ্ড, পৃ. ৫৩৮।
[১৩] আর-রিসালাতুল কুশায়রিয়্যাহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৬১; তারীখে দামেস্ক, ৩৪তম খণ্ড, পৃ. ১২৭। আবূ সুলায়মান হলেন আদ-দারানী, তিনি যাহেদ ছিলেন। তার নাম আব্দুর বিন আহমাদ বিন আতিয়্যাহ আল-আনাসী।
[১৪] আর-রিসালাতুল কুশায়রিয়্যাহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৭৯; মাজমূঊল ফাতাওয়া, ১১তম খণ্ড, পৃ. ২১০।




কুরবানীর মাসায়েল - ইবাদুল্লাহ বিন আব্বাস
জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামে ইসলাম শিক্ষার আবশ্যকতা - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
আধুনিক যুগে দাওয়াতী কাজের পদ্ধতি (২য় কিস্তি) - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী
ভ্রান্ত ফের্কাসমূহের ঈমান বনাম আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের ঈমান : একটি পর্যালোচনা (শেষ কিস্তি) - ড. আব্দুল্লাহিল কাফী বিন লুৎফর রহমান মাদানী
কুরবানীর মাসায়েল - আল-ইখলাছ ডেস্ক
ইসলামী সংগঠন ও তরুণ-যুবক-ছাত্র (শেষ কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
বিদ‘আত পরিচিতি (২০তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
কালো কলপ ব্যবহারের শারঈ বিধান - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
শরী‘আত অনুসরণের মূলনীতি (২য় কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
তাওহীদ প্রতিষ্ঠার উপায় (শেষ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
তওবার গুরুত্ব ও ফযীলত (শেষ কিস্তি) - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
দু‘আ ও যিকর : আল্লাহর অনুগ্রহ ও প্রশান্তি লাভের মাধ্যম (২য় কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম

ফেসবুক পেজ