সমকামিতার ভয়াবহতা ও তার অপকার
-হাসিবুর রহমান বুখারী*
(শেষ কিস্তি)
(ঘ) আবূ বাকর ছিদ্দীক্ব, আলী, আব্দুল্লাহ ইবনু যুবাইর (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) এবং হিশাম ইবনু আব্দুল মালিক (রাহিমাহুল্লাহ)-এর মত ব্যক্তিত্বরা পাযুকামী বা সমকামীদের আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। যেমন,
মুহাম্মাদ ইবনু মুনকাদীর (রাহিমাহুল্লাহ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) একদা আবূ বকর ছিদ্দীক (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর নিকট এ মর্মে একটি চিঠি পাঠালেন যে, তিনি আরবের কোন এক উপশহরে এমন এক ব্যক্তিকে ধরেছেন যাকে দিয়ে যৌন উত্তেজনা নিবারণ করা হয় যেমনিভাবে নিবারণ করা হয় মহিলা দিয়ে। তখন আবূ বকর ছিদ্দীক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) সকল ছাহাবীকে একত্রিত করে এ ব্যাপারে তাঁদের পরামর্শ চেয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)ও তখন উপস্থিত ছিলেন। তিনি বললেন, এটি এমন একটি গুনাহ্ যা বিশ্বে শুধু একটি জাতি-ই সংঘটন করেছে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের সঙ্গে যে ব্যবহার করেছেন তা সম্পর্কে আপনারা অবশ্যই অবগত। অতএব আমার মত হচ্ছে, তাকে আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হোক। উপস্থিত সকল ছাহাবী উক্ত মতের সমর্থন করেন। তখন আবূ বকর ছিদ্দীক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাকে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়ার নির্দেশ জারি করেন।[১]
সরকার কর্তৃক ইসলাম বিরোধী আইন প্রণয়ন করার জন্য সমকামী দুনিয়াবী শাস্তি থেকে রক্ষা পেলেও কিন্তু তার জন্য অপেক্ষা করছে পরকালের ভয়াবহ শাস্তি। যেমন, ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা সমকামীদের প্রতি করুণার দৃষ্টিতে কক্ষনো তাকাবেন না। আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেন,لَا يَنْظُرُ اللهُ إِلَى رَجُلٍ أَتَى رَجُلًا أَوِ امْرَأَةً فِيْ الدُّبُرِ ‘আল্লাহ তা‘আলা এমন ব্যক্তির প্রতি কখনো দয়া ও করুণার দৃষ্টিতে তাকাবেন না, যে সমকামে লিপ্ত হয় অথবা কোন স্ত্রীলোকের মলদ্বারে সংগম করে’।[২]
সমকামীদের দুনিয়াবী শাস্তির ধরন
ইমাম ইবনু ক্বুদামাহ্ (রাহিমাহুল্লাহ) ও শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, সমকামীর হত্যার পদ্ধতিগত ব্যাপারে তিনটি মতামত পরিলক্ষিত হয়। যথা,
১. জামহুর আলিমগণ ও সালাফে ছলিহীনের মতানুযায়ী ‘সমকামিতার শাস্তিস্বরূপ সমকামীকে রজম (অর্থাৎ পাথর মেরে হত্যা) করতে হবে, সে বিবাহিত হোক অথবা অবিবাহিত’। এ ব্যাপারে ছাহাবীদের ইজমা রয়েছে। আর এই মতের-ই পক্ষে রয়েছেন, আবূ বকর ছিদ্দীক, উমার ফারুক্ব, আলী, আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুম), জাবীর বিন যায়িদ, আব্দুল্লাহ বিন মা‘আমার, ইমাম জুহুরী, আবূ হাবীব, রাবি‘আহ, ইসহাক্ব, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল, ইমাম মালিক ও ইমাম শাফিঈ (রাহিমাহুল্লাহ)।[৩]
২. সমকামীর শাস্তি ব্যভিচারীর শাস্তির মতই (অর্থাৎ বিবাহিত হলে রজম করতে হবে, আর অবিবাহিত হলে একশ’ বেত্রাঘাত)। এই মতের পক্ষে রয়েছেন তাবিঈদের মধ্য হতে সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব, হাসান আল-বাছরী, ইবরাহীম নাখঈ, আতা ইবনু আবূ রাবাহ, ক্বাতাদাহ, আওজাঈ, আবূ ইউসুফ, মুহাম্মাদ বিন হাসান, আবূ ছাওর, সুফিয়ান ছাওরী (রাহিমাহুমুল্লাহ) ও কুফাবাসীরা সহ অন্যান্য বিদ্বান একই মত পোষণ করেছেন।
৩. অন্যদিকে বিশিষ্ট ছাহাবীগণের পরামর্শ অনুযায়ী আবূ বকর ছিদ্দীক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) সমকামীদের আগুনে পুড়ে মারার বিধান জারি করেছিলেন।[৪]
সিহাক্ব বা নারী সমকামীদের বিধান
সিহাক্ব বলতে বুঝায় নারীতে নারীতে একে অপরের শরীরে ঘষাঘষি করা। নিঃসন্দেহে এটি হারাম কাজ। অসংখ্য আলেম একে কাবীরা গুনাহ বলেছেন।[৫]
সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটি ও শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, সিহাক্ব বা নারীতে নারীতে সমকামিতা করা হারাম। বরং এটি কাবীরা গুনাহসমূহের মধ্যে অন্যতম। কেননা এর মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করা হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَ الَّذِیۡنَ ہُمۡ لِفُرُوۡجِہِمۡ حٰفِظُوۡنَ . اِلَّا عَلٰۤی اَزۡوَاجِہِمۡ اَوۡ مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُہُمۡ فَاِنَّہُمۡ غَیۡرُ مَلُوۡمِیۡنَ . فَمَنِ ابۡتَغٰی وَرَآءَ ذٰلِکَ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡعٰدُوۡنَ
‘আর যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংরক্ষিত ও সংযত রাখে। নিজেদের স্ত্রী অথবা অধিকারভুক্ত দাসীগণ ব্যতীত, এতে তারা নিন্দনীয় হবে না। সুতরাং কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারাই হবে সীমালংঘনকারী’ (সূরা আল-মুমিনূন : ৫-৭)। উপরিউক্ত আয়াত থেকে এ কথাও প্রতিভাত হয় যে, হস্তমৈথুন বা স্বমেহন করাও হারাম। কেননা এর মধ্যে বিবিধ অকল্যাণ রয়েছে।[৬]
পুরুষ সমকামিতার ক্ষেত্রে যেমন হাদ্দ (নির্ধারিত শাস্তি) অপরিহার্য, ঠিক তেমনি নারী সমকামিতার ক্ষেত্রে তা‘যীর (التعزير) অপরিহার্য। তা‘যীর বলতে বুঝায়, বিচারকের বিবেচনায় শিক্ষামূলক শাস্তি প্রদান করা, যা বিচারক দোষ ও দোষীর অবস্থা এবং গভীরতা বুঝে নির্ধারণ করবেন।[৭]
আলেমগণ এবং ফক্বীহগণ এই ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, সিহাক্ব বা নারী সমকামিতায় হাদ্দ বা মৃত্যুদ- কার্যকারী হয় না। কেননা এটি ব্যভিচারের অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে এক্ষেত্রে তা‘যীর কার্যকারী করা অপরিহার্য। যেহেতু এটি ভয়াবহ গুনাহের কাজ তাই বিচারক তাকে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করবেন।[৮]
ইবনুল হুমাম আল-হানাফী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যদি একজন মহিলা অপরজন মহিলার সঙ্গে সমকামিতায় লিপ্ত হয়, সেক্ষেত্রে তাদের উপর তা‘যীর কার্যকরী হবে’।[৯]
ইবনু আব্দিল বার্র (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যদি দু’জন নারীর ব্যাপারে সমকামিতা প্রমাণিত হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে তাদের জন্য কঠিনতম এবং ভয়ঙ্কর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে’।[১০]
শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল্লাহ আল-খারাশী আল-মালিকী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘সমকামিনী নারী হল সবচেয়ে নিকৃষ্ট নারী। ইমাম তার ইচ্ছানুযায়ী ঐ পাপাচারিণীকে উপযুক্ত শিষ্টাচার শিখানোর জন্য যথার্থ শাস্তির ব্যবস্থা করবেন’।[১১]
ইবনু রুশদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এটি এমন একটি জঘন্যতম কাজ যাকে কুরআনুল কারীম হারাম বলে ঘোষণা করেছে। এবং সমস্ত উম্মাত এর হারাম হওয়ার ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহর হুকুম অমান্য করবে এবং উম্মাতের পূর্ব-পুরুষদের বিরুদ্ধে যাবে, তাকে সত্যিকার অর্থে প্রচ- প্রহার করা উচিত’।[১২]
শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, ‘অনুরূপভাবে বিচারকের ইচ্ছানুযায়ী উভয় সমকামিনী নারীকে প্রহার করার ব্যাপারেও আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। অপরাধের গভীরতা বিচার করে কাযী বেত্রাঘাতের সংখ্যা ও তীব্রতা নির্ধারণ করবেন’।[১৩]
‘ইসলাম ওয়েব’-এর আলেমগণ বলেন, ‘কিছু উলামায়ে কিরাম বলেছেন, যেমন ইজ্জ ইবনু আব্দুস সালাম যদি একজন মহিলার জন্য অপরজন মহিলার সামনে বিবস্ত্র হওয়া হারাম হয়! যদি একে অপরের লজ্জাস্থান ও যৌনাঙ্গের দিকে তাকানো হারাম হয়! তাহলে নারীদের সমকামী হওয়া কী করে জায়েয হতে পারে। নিশ্চিতরূপে এটি জঘন্যতম অপরাধ। হাফিয ইবনু হাযার আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) একে কাবীরা গুনাহ হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। সুতরাং এর থেকে তাওবাহ করা অপরিহার্য’।[১৪]
পাপাচারিণী ও দুরাচারিণী হওয়ার কারণে নারী সমকামিনীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে না।[১৫]
‘ইসলাম ওয়েব’-এর আলেমগণ বলেন, আলেমগণের ইজমা বা ঐকমত্যানুসারে নারী সমকামিতা হারাম। তাঁরা এটিকে কাবীরা গুনাহের মধ্যে শামিল করেছেন।
‘কুয়েতী ফিক্বাহ্ বিশ্বকোষে’র মধ্যে বর্ণিত হয়েছে যে, সিহাক্ব বা নারী সমকামিতা হারাম হওয়ার ব্যাপারে ফিক্বাহ্ শাস্ত্রবিদদের মধ্যে কোন মতপার্থক্য নেই।
‘তাফসীরে আলুসীর’ মধ্যে বর্ণিত হয়েছে যে, ক্বাওমে লূত্বের মধ্যে নারী সমকামিতাও বিদ্যমান ছিল। আর তাহল, এক নারীর অপর নারীর কাছে গমন করা। হুযাইফাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সমকামিতা বলতে বুঝায় পুরুষের জন্য পুরুষকে যথেষ্ট মনে করা, অনুরূপভাবে নারীর জন্য নারীকে যথেষ্ট মনে করা। আল্লাহর আযাব যখন এসেছিল তখন সমকামী পুরুষদের সঙ্গে সমকামী নারীরাও ধ্বংস হয়েছিল।[১৬]
ইমাম ইবনু কুদামাহ্ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যদি দু’জন নারী শরীরে শরীরে ঘষাঘষি করে, তাহলে তারা দু’জনেই অভিশপ্ত ব্যভিচারিণী। কেননা রাসূল (ﷺ) বলেছেন, যদি একজন মহিলা অপর একজন মহিলার সঙ্গে নির্জনে গমন করে, তবে তারা দু’জনেই ব্যভিচারিণী। তবে তাদের উপর হাদ্দ কার্যকারী হবে না। কারণ তারা সঙ্গম করতে সক্ষম নয়। বরং তাদের উপর তা‘যীর কার্যকারী করা হবে’।[১৭]
পুরুষ সমকামী এবং নারী সমকামিনীর শাস্তির বিধানে পার্থক্যের মূল কারণ হল, একজন মহিলা সমকামিনী তার যৌনাঙ্গ অপরজন মহিলা সমকামিনীর লজ্জাস্থানে প্রবেশ করাতে সক্ষম হয় না। যা পুরুষ সমকামীদের ক্ষেত্রে ঘটে থাকে। এজন্যই নারী সমকামিনীদের উপর ব্যভিচারের হাদ্দ (দ-বিধি) কার্যকরী হয় না।
এ ব্যাপারে ইমাম তিরমিযী (রাহিমাহুল্লাহ) অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন, ‘পুরুষে পুরুষে এবং নারীতে নারীতে বিবস্ত্র অবস্থায় গায়ে গা লাগানো মাকরূহ’ নামে। অতঃপর তিনি ধারাবাহিকভাবে তিনটি হাদীছ বর্ণনা করেছেন। যথা,
১. আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন,
لَا يَنْظُرُ الرَّجُلُ إِلَى عَوْرَةِ الرَّجُلِ وَلَا تَنْظُرُ الْمَرْأَةُ إِلَى عَوْرَةِ الْمَرْأَةِ وَلَا يُفْضِي الرَّجُلُ إِلَى الرَّجُلِ فِي الثَّوْبِ الْوَاحِدِ وَلَا تُفْضِي الْمَرْأَةُ إِلَى الْمَرْأَةِ فِي الثَّوْبِ الْوَاحِدِ .
‘কোন পুরুষ অপর পুরুষের গুপ্তাঙ্গের দিকে তাকাবে না, অনুরূপভাবে কোন নারী অপর নারীর লজ্জাস্থানের দিকে তাকাবে না। আর এক পুরুষ অপর পুরুষের সাথে একই কাপড়ের নিচে ঘুমাবে না, অনুরূপভাবে এক নারী অপর নারীর সাথে একই কাপড়ের ভেতরে ঘুমাবে না’।[১৮]
২. আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন,لَا تُبَاشِرُ الْمَرْأَةُ الْمَرْأَةَ حَتَّى تَصِفَهَا لِزَوْجِهَا كَأَنَّمَا يَنْظُرُ إِلَيْهَا ‘কোন নারী অন্য নারীর সাথে (বস্ত্রহীন অবস্থায়) শরীরে শরীর লাগিয়ে শোবে না। কেননা সে তার স্বামীর নিকট অপর নারীর শরীরের এমন বর্ণনা দিবে যে, মনে হবে সে যেন তাকে চাক্ষুস দেখছে’।[১৯]
৩. বাহয ইবনু হাকীম (রাহিমাহুল্লাহ) হতে পর্যায়ক্রমে তার বাবা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী (ﷺ)! আমাদের আভরণীয় অঙ্গের কতটুকু অংশ ঢেকে রাখব এবং কতটুকু অংশ উন্মুক্ত রাখতে পারব? তিনি বললেন, তোমার স্ত্রী ও দাসী ব্যতীত (সবার দৃষ্টি হতে) তোমার আভরণীয় অঙ্গের হিফাযাত কর। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আবার প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! দলের লোকেরা কখনো একত্রিত হল? তিনি বললেন, তোমার দ্বারা যতটুকু সম্ভব তা ঢেকে রাখবে, কেউ যেন তা দেখতে না পায়। তিনি বলেন, আমি আবারো বললাম, হে আল্লাহর নবী (ﷺ)! আমাদের মাঝে কেউ নির্জন স্থানে থাকলে তিনি বললেন, মানুষের চাইতে আল্লাহ তা‘আলাকে বেশি লজ্জা করা দরকার।[২০]
আল্লাহ তা‘আলা বিশ্বের সমস্ত নারীকে সম্বোধন করে বলেন, وَ یَحۡفَظۡنَ فُرُوۡجَہُنَّ ‘তারা যেন তাদের লজ্জাস্থানের সংরক্ষণ করে’ (সূরা আন-নূর : ৩১)। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা যে সমস্ত বিষয়কে হারাম করেছেন, যেন তার থেকে নিজের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। যেমন ব্যভিচার এবং হালাল নয় এমন কেউ যেন তাকে না দেখে অথবা স্পর্শ না করে।[২১]
সমকামিতার অপকারসমূহ
বর্তমান বিশ্বের সভ্য সমাজের মানুষেরা অসভ্যতায় মেতে উঠেছে। তারা পুরুষে পুরুষে অথবা নারী-নারীতে অথবা নারী-পুরুষে সমকামিতায় লিপ্ত হচ্ছে। পাশবিক প্রবৃত্তির কুরুচিপূর্ণ পুরুষরা নারীদেরকে সমকামী হিসাবে পায়ুপথে গমন করছে। আর নারী-পুরুষের অবৈধ যৌন মিলনে সিফিলিস, প্রমেহ, গনোরিয়া, এমনকি এইডসের মত মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যে সমস্ত বিবাহিতা নারীর দেহে অস্ত্রপচার করা হয়, তাদের শতকরা ৭৫ জনের মধ্যেই সিফিলিসের জীবাণু পাওয়া যায়। (উৎ. খড়ৎিু, ঐবৎ ংবষভ, চ-২০৪)। আর সিফিলিস রোগে আক্রান্ত রোগী সুচিকিৎসা গ্রহণ না করলে মারাত্মক সব রোগে আক্রান্ত হয়।
ধর্মীয় অপকার
সমকামিতা কাবীরাহ গুনাহসমূহের একটি। এর ফলে তাকে ইহকাল ও পরকালে ভয়াবহ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ইসলামের স্বচ্ছ ধারণা থেকে অনেক অনেক দূরে সরিয়ে রাখে। এমনকি তা যে কারোর তাওহীদ বিনষ্টে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
চারিত্রিক অপকার
চারিত্রিক অধঃপতনের অপর নাম সমকামিতা। এটি পৃথিবীর স্থায়ী নিয়মনীতি এবং স্বাভাবিকতার বিরুদ্ধ। এর ফলে লজ্জা কমে যায়, মুখ হয় অশ্লীল এবং অন্তর হয় কঠিন, পুরুষত্ব ও মানবতা বিলুপ্ত হয়, সাহসিকতা, সম্মান ও আত্মমর্যাদাবোধ বিনষ্ট হয়। নির্যাতন ও অঘটন ঘটাতে তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সাহসী করে তোলে। উচ্চ মানসিকতা বিনষ্ট করে দেয় এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নির্বোধ বানিয়ে তোলে। তার উপর থেকে মানুষের আস্থা কমে যায়। তার দিকে মানুষ খিয়ানতের সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকায়। উক্ত ব্যক্তি ধর্মীয় জ্ঞান থেকে বঞ্চিত হয় এবং উত্তরোত্তর সার্বিক উন্নতি থেকে ক্রমান্বয়ে পিছিয়ে পড়ে।
মানসিক অপকার
উক্ত কর্মের অনেকগুলো মানসিক অপকার রয়েছে। যথা,
১. অস্থিরতা ও ভয়-ভীতি অধিক হারে বেড়ে যায়। কারণ, আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্যের মধ্যেই রয়েছে সার্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা। যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকেই ভয় করবে আল্লাহ তা‘আলা তাকে অন্য সকল ভয় থেকে মুক্ত রাখবেন। আর যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করবে না তাকে সকল ভয় এমনিতেই ঘিরে রাখবে। কারণ, যে কোন অপরাধমূলক কাজের শাস্তি তো অনুরূপ হওয়াই শ্রেয়।
২. মানসিক বিশৃঙ্খলতা ও মনের অশান্তি তার নিকট প্রকট হয়ে দেখা দেয়। শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ্ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, এ কথা সবারই জানা উচিত যে, কেউ কাউকে ভালোবাসলে, সে প্রিয় ব্যক্তি অবশ্যই তার প্রেমিকের ক্ষতি সাধন করবে এবং এ ভালোবাসা অবশ্যই প্রেমিকের যে কোন ধরনের শাস্তির কারণ হবে।
৩. এ জাতীয় লোকেরা একাকী থাকাকেই বেশি ভালোবাসে এবং তাদের একান্ত শিকার অথবা উক্ত কাজের সহযোগী ছাড়া অন্য কারোর সাথে এরা একেবারেই মিশতে চায় না।
৪. এ জাতীয় মানুষের নিজের মধ্যে এক জাতীয় পাপ বোধ জন্ম নেয়। এরা নিয়ন্ত্রণহীন যৌন তাড়নায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে। সদা সর্বদা যৌন চেতনা নিয়েই ব্যস্ত থাকে।
৫. এদের মধ্যে ধীরে ধীরে মানসিক টানাপোড়নে ও বেপরোয়াভাব জন্ম নেয়। এছাড়া এদের দেহের কোষসমূহের উপরও এর একটা বিরাট প্রভাব রয়েছে।
শারীরিক অপকার
শারীরিক ক্ষতির কথা তো বলাই বাহুল্য। কারণ, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান কিছু দিন পর পরই এ সংক্রান্ত নতুন নতুন রোগ আবিষ্কার করে চলেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এ জাতীয় কোন একটি রোগের ঔষুধ খুঁজতে খুঁজতেই দেখা যায় নতুন আরেকটা রোগ আবিষ্কৃত হয়ে গেছে। আর এটি তো হচ্ছে রাসূল (ﷺ)-এর ভবিষ্যদ্বাণীর সত্যিকার ফলাফল।
আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, কোন সম্প্রদায়ের মাঝে যিনা-ব্যভিচার তথা অশ্লীলতা প্রকাশ্যে ছড়িয়ে পড়লে তাদের মধ্যে অবশ্যই মহামারি এবং এমন বহু প্রকারের রোগ-ব্যাধি ছড়িয়ে পড়বে যা তাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে ছিল না।[২২]
১. এ জাতীয় মানুষের নিজ স্ত্রীর প্রতি অনীহা জন্ম নেয়। লিঙ্গের কোষগুলো একেবারেই ঢিলে হয়ে যায়। ফলস্বরূপ পেশাব ও বীর্যপাতের উপর কোন নিয়ন্ত্রণই থাকে না। টাইফয়েড এবং ডিসেন্ট্রিয়া রোগেও আক্রান্ত হয়। সিফিলিস রোগের বিশেষ প্রাদুর্ভাব ঘটে। লিঙ্গ, হৃদপি-, আঁত, পাকস্থলী, ফুসফুস ও অ-কোষের ক্ষতের মাধ্যমেই এ রোগের শুরু। এমনকি পরিশেষে তা অঙ্গ বিকৃতি, অন্ধত্ব, জিহ্বা’র ক্যান্সার এবং অঙ্গহানীর বিশেষ কারণও হয়ে দাঁড়ায়। ডাক্তারদের ধারণায় এটি একটি দ্রুত সংক্রামক ব্যাধি। কখনো কখনো এরা গনোরিয়ায়ও আক্রান্ত হয় এবং এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা সাধারণত একটু বেশি। ‘আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থা’র রিপোর্টে বলা হয়, ১৯৭৫ সালে উক্ত রোগে প্রায় পঁচিশ কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়। বর্তমানে ধারণা করা হয়, এ জাতীয় রোগীর হার বছরে বিশ থেকে পঞ্চাশ কোটি। যার অধিকাংশই যুবক।
২. এ জাতীয় রোগে প্রথমত লিঙ্গে এক ধরনের জ্বলন সৃষ্টি হয়। এরই পাশাপাশি তাতে বিশ্রী ধরনের এক প্রকার পুঁজও জন্ম নেয়। এটি বন্ধ্যত্বের একটি বিশেষ কারণও বটে। এরই কারণে ধীরে ধীরে পেশাবের রাস্তাও বন্ধ হয়ে যায়। পেশাবের সময় জ্বালাপোড়া অনুভূত হয়। উক্ত জ্বলনের কারণে ধীরে ধীরে লিঙ্গাগ্রের ছিদ্রের আশপাশ লাল হয়ে যায়। পরিশেষে সে জ্বলন মুত্রথলী পর্যন্ত পৌঁছোয়। তখন মাথা ব্যাথা, জ্বর ইত্যাদি শুরু হয়ে যায়। এমনকি এর প্রতিক্রিয়া শরীরের রক্তে পৌঁছলে তখন হৃদপি-ে জ্বলন সৃষ্টি হয়, আরো কতো কী?
৩. হেরপেস রোগও এ সংক্রান্ত একটি অন্যতম ব্যাধি। আমেরিকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি রিপোর্টে বলা হয়, হেরপেসের এখনো কোন চিকিৎসা উদ্ভাবিত হয়নি এবং এটি ক্যান্সারের চাইতেও মারাত্মক।
এ রোগ হলে প্রথমে লিঙ্গাগ্রে চুলকানি অনুভূত হয়। অতঃপর চুলকানির জায়গায় লাল ধরনের ফোস্কা জাতীয় কিছু দেখা দেয় যা দ্রুত বড় হয়ে পুরো লিঙ্গে এবং যার সাথে সমকাম করা হয় তার গুহ্যদ্বারে ছড়িয়ে পড়ে। এগুলোর ব্যাথা খুবই চরম এবং এগুলো ফেটে গিয়ে পরিশেষে সেস্থানে জ্বলন ও পুঁজ সৃষ্টি হয়। কিছু দিন পর রান ও নাভীর নীচের অংশও ভীষণভাবে জ্বলতে থাকে। এমনকি তা পুরো শরীরেও ছড়িয়ে পড়ে এবং তা মগজ পর্যন্তও পৌঁছায়। এ রোগের শারীরিক ক্ষতির চাইতেও মানসিক ক্ষতি আরো অনেক বেশি।
৪. এইডসও এ সংক্রান্ত একটি অন্যতম রোগ। এ রোগে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি।
সমকামীদের করণীয়
যেহেতু আমাদের দেশে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা নেই তাই হাদ্দ (দণ্ড, শাস্তি) কার্যকরী করা সম্ভবপর নয়। এক্ষেত্রে সমকামী দুনিয়াবী তুচ্ছ শাস্তি থেকে পরিত্রাণ পেলেও কিন্তু পরকালের ভয়াবহ শাস্তি থেকে রক্ষা পাবে না। তাই পরকালের শাস্তি থেকে মুক্তি প্রাপ্তির জন্য আল্লাহ তা‘আলার নিকট কঠোরভাবে তাওবাহ ও ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
আল্লাহ তা‘আলা খালেছ তাওবাহর মাধ্যমে শিরকের মত ধ্বংসাত্মক, হত্যার মত মারাত্মক ও ব্যভিচারের মত জঘন্য গুনাহকেও ক্ষমা করার ঘোষণা করেছেন। যে ব্যক্তি স্বচ্ছ ও পবিত্র অন্তরে একনিষ্ঠ ও একাগ্রতার সহিত খালেছ তাওবাহ করে আল্লাহ তার তাওবাহ কবুল করেন। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোন উপাস্যকে ডাকে না, আল্লাহ যাকে যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন, তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। আর যারা এগুলো করে, তারা শাস্তি ভোগ করবে। ক্বিয়ামতের দিন ওদের শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে এবং সেখানে তারা হীন অবস্থায় স্থায়ী হবে। তবে যারা তাওবাহ্ করে, বিশ্বাস আনয়ন করে ও সৎকাজ করে আল্লাহ তাদের পাপকর্মগুলোকে পূণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আর আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’ (সূরা আল-ফুরক্বান : ৬৮-৭০)।
অতএব বেশি-বেশি তাওবাহ্, ইস্তিগফার, আমলে ছালিহ, ছালাত আদায়, ছাদাক্বাহ ইত্যাদি করতে থাকতে হবে। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘আর অবশ্যই আমি তার প্রতি ক্ষমাশীল, যে তাওবাহ্ করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে অতঃপর সৎ পথে চলতে থাকে’ (সূরা ত্ব-হা : ৮২)।
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ ‘গুনাহ্ থেকে তাওবাহকারী নিষ্পাপ ব্যক্তিতুল্য’।[২৩]
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি এক পরনারীকে চুম্বন করে রাসূল (ﷺ)-এর নিকট আসলেন এবং সে ঘটনাটি রাসূল (ﷺ)-কে বললেন, অতঃপর পবিত্র কুরআনের এ আয়াতগুলো অবতীর্ণ হল, (আর তুমি ছালাত আদায় কর দিবসের দু’ প্রান্তে এবং রাতের প্রথম অংশে, নিশ্চয় ভালোকাজ মন্দকাজকে মিটিয়ে দেয়। এটি উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্য উপদেশ’ (সূরা হুদ : ১১৪)। লোকটি বললেন, এটা কি আমার জন্য হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! তিনি বললেন, আমার উম্মাতের এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে এ অনুযায়ী আমাল করবে।[২৪]
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেছেন, ‘বলুন, হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের উপর বাড়াবাড়ি করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। অবশ্যই আল্লাহ সকল পাপ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’ (সূরা আয-যুমার : ৫৩)।
অতএব সমকামীদের উচিত দ্রুত তাওবাহ্ করা এবং উত্তমরূপে তাওবাহ্ করা।
ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আলেমগণ বলেছেন, ‘প্রত্যেক পাপ থেকে তাওবাহ্ করা অপরিহার্য। যদি গোনাহর সম্পর্ক আল্লাহর (অবাধ্যতার) সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়, তাহলে এ ধরনের তাওবাহ্ কবুলের জন্য তিনটি শর্ত রয়েছে। ১. পাপকে সম্পূর্ণরূপে বর্জন করা, ২. কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত হওয়া এবং ৩. ঐ পাপ পুনরায় না করার দৃঢ় সঙ্কল্প করা। সুতরাং যদি এর মধ্যে একটি শর্তও লুপ্ত হয়, তাহলে সেই তাওবাহ্ বিশুদ্ধ হবে না।
পক্ষান্তরে যদি সেই পাপ মানুষের অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত হয়, তাহলে তা কবুলের জন্য চারটি শর্ত আছে। উপরোক্ত তিনটি এবং চতুর্থ শর্ত হল, ৪. অধিকারীর অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। যদি অবৈধপন্থায় কারো মাল বা অন্য কিছু নিয়ে থাকে, তাহলে তা ফিরিয়ে দিতে হবে।[২৫]
মনে রাখবেন! ধর্মীয় অনুশীলন করা, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান মেনে চলা, ধর্মীয় রীতিনীতি ও বিধি-বিধান নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করা এবং ধর্মের ছায়াতলে জীবনযাপন করাই হল মানবজাতির মুক্তির একমাত্র উপায়। ধর্মবিমুখতা ও অধর্মচারিতার মধ্যে কোন কল্যাণ নেই।
বিশ্বের এই মহা দুর্যোগের সময় ইসলামের হুঁশিয়ারী বাণী উপলব্ধি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এইডস প্রতিরোধে ধর্মীয় অনুশাসনের কথা বলছে। WHO এ মর্মে ঘোষণা করেছে, (Nothing can be more helpful in this preventive effort than religious teachings and the adoption of proper and decent behavior as advocated and urged by all divine religions.) অর্থাৎ ‘এইডস প্রতিরোধ প্রচেষ্টায় ধর্মীয় শিক্ষাদান এবং যথাযথ নির্মল আচরণ প্রবর্তনের চেয়ে আর কোন কিছুই অধিক সহায়ক হতে পারে না, যার প্রতি সকল ঐশ্বরিক ধর্মে সমর্থন প্রদান ও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে’।[২৬]
* মুর্শিদাবাদ, ভারত।
তথ্যসূত্র :
[১]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৫৩৮৯; আল-মুহাল্লা, ১১তম খণ্ড, পৃ. ৩৮৩; ইবনুল ক্বাইয়্যিম, আল-জাওয়াবুল কাফী, পৃ. ১৬৯; আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব, হা/৩৫৭২; ইবনু রাজাব, জামিউল ‘উলূম, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৮৭।
[২]. তিরমিযী, হা/১১৬৫, সনদ হাসান; তাখরীজু মিশকাতিল মাছাবীহ, হা/৩১৩১; ছহীহুল জামি‘, হা/৭৮০১; ছহীহুত তারগীব, হা/২৪২৪।
[৩]. আল-মাবসূত্ব, ৯ম খণ্ড, পৃ. ৭৭; শারহু মুখতাছার খলীল, ৮ম খণ্ড, পৃ. ৮৭; আল-হাবীউল কাবীর, ৯ম খণ্ড, পৃ. ৮২১; আল-মুগনী, ৯ম খণ্ড, পৃ. ৬১।
[৪]. আল-মুগনী, ৯ম খণ্ড, পৃ. ৫৪।
[৫]. আয-যাওয়াজির ‘আন ইক্বতিরাফিল কাবাইর, কাবীরাহ, পৃ. ৩৬২।
[৬]. ফাতাওয়া আল-লাজনাতুদ দায়িমাহ, ২২তম খণ্ড, পৃ. ৬৮; ইসলাম সাওয়াল জাওয়াব, ফাতাওয়া নং-২১০৫৮।
[৭]. আল-মুফাসসাল ফী আহকামিল মারা‘আতি, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৪৫০।
[৮]. ইসলামী ফিক্বাহ্ বিশ্বকোষ, ২৪তম খণ্ড, পৃ. ২৫২।
[৯]. ফাৎহুল ক্বাদীর, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৬২; আসনাল মাত্বালীব, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১২৬।
[১০]. আল-কাফী ফী ফিক্বহি আহলিল মাদীনাহ্ ২য় খণ্ড, পৃ. ১০৭৩।
[১১]. শারহু মুখতাছার খালীল, ৮ম খণ্ড, পৃ. ৭৮।
[১২]. আল-বায়ান ওয়াত-তাহছীল, ১৬তম খণ্ড, পৃ. ৩২৩।
[১৩]. ইসলাম সাওয়াল জাওয়াব ফাতাওয়া নং-১৮৫০৯৯।
[১৪]. ইসলাম ওয়েব ফাতাওয়া নং-১১৫০৫২, ৩৫৮৫৬৭।
[১৫]. ইসলামী ফিক্বাহ্ বিশ্বকোষ, ২৪তম খণ্ড, পৃ. ২৫৩।
[১৬]. ইসলাম ওয়েব, ফাতাওয়া নং-১১৫০৫২।
[১৭]. আল-মুগনী, ৯ম খণ্ড, পৃ. ৫৯, ১০ম খণ্ড, পৃ. ১৬২, তুহ্ফাতুল মুহ্তাজ, ৯ম খণ্ড, পৃ. ১০৫।
[১৮]. ছহীহ মুসলিম, হা/৩৩৮, ৬৫৫; আবূ দাউদ, হা/৪০১৮; তিরমিযী, হা/২৭৯৩; ইবনে মাজাহ, হা/৬৬১; মুসনাদে আহমাদ, হা/১১৬০১; ছহীহুল জামি‘, হা/৭৮০০।
[১৯]. ছহীহ বুখারী, হা/৫২৪০-৫২৪১; আবূ দাঊদ, হা/২১৫০; তিরমিযী, হা/২৭৯২।
[২০]. আবূ দাঊদ, হা/৪০১৭; তিরমিযী, হা/২৭৯৪, ২৭৬৯; ইবনে মাজাহ, হা/১৯২০।
[২১]. তাফসীরে ইবনে জারীর, ১৭তম খণ্ড, পৃ. ২৫৬; তাফসীরে ইবনে আত্বিয়্যাহ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১৭৮; তাফসীরে ইবনে কাছীর, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৪৫; তাফসীরে আলুসী, ৯ম খণ্ড, পৃ. ৩৩৫; তাফসীরে সা‘দী, পৃ. ৫৬৬; আজওয়াউল বায়ান, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৫০৬।
[২২]. ইবনু মাজাহ, হা/৪০৯১; হাকিম, হা/৮৬২৩; ত্বাবরানী আওসাত, হা/৪৬৭১।
[২৩]. ইবনু মাজাহ, হা/ ৪২৫০, সনদ হাসান।
[২৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৫২৬, ৪৬৮৭; ছহীহ মুসলিম, হা/২৭৬৩, ৬৮৯৪-৬৮৯৮; আবূ দাঊদ, হা/৪৪৬৮; তিরমিযী, হা/৩১১২, ৩১১৪; ইবনে মাজাহ, হা/১৩৯৮, ৪২৫৪।
[২৫]. রিয়াযুছ ছলিহীন, তাওবাহ অনুচ্ছেদ, পৃ. ১৪-২২।
[২৬]. The role of Religion and ethics in the prevention and control of AIDS. Page 3, Para 9, Published by WHO.
প্রসঙ্গসমূহ »:
পাপ