বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০৫:১৩ পূর্বাহ্ন

মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ

-আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম*


(৪র্থ কিস্তি)

ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি[১]

মাতুরীদীরা বিশ্বাস করে ঈমানের কোন হ্রাস-বৃদ্ধি নেই।[২] আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের অনুসারীরা বলেন, ঈমানের রয়েছে অনেক স্তর ও মঞ্জিল। রয়েছে পূর্ণতা, হ্রাস ও বৃদ্ধি। যদি এগুলো না থাকত, তাহলে সকল মানুষ মর্যাদার দিকে থেকে একই হত। পশ্চাতগামীদের উপর অগ্রগামীদের কোন মর্যাদা থাকত না। আল্লাহর রহমত এবং ঈমানের পূর্ণতার কারণে মুমিনরা জান্নাতে প্রবেশ করবে। ঈমানের আধিক্যতার কারণে জান্নাতীদের মধ্যে একে অপরের মর্যাদা ভিন্ন হবে।[৩] আল্লাহ তা‘আলা বলেন, اُنۡظُرۡ کَیۡفَ فَضَّلۡنَا بَعۡضَہُمۡ  عَلٰی  بَعۡضٍ ؕ وَ  لَلۡاٰخِرَۃُ   اَکۡبَرُ  دَرَجٰتٍ  وَّ  اَکۡبَرُ  تَفۡضِیۡلًا ‘লক্ষ্য করুন, আমরা কিভাবে তাদের এক দলকে অপরের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছিলাম, পরকাল তো নিশ্চয় মর্যাদায় শ্রেষ্ঠ ও শ্রেষ্ঠত্বে শ্রেষ্ঠতর’ (সূরা বানী ইসরাঈল : ২১)। কুরআনে এমন উদাহরণ অনেক রয়েছে। তারা বলেন, আনুগত্যে ঈমান বাড়ে এবং পাপাচারে ঈমান কমে’।[৪] আনুগত্য হল কাজ এবং পাপাচারও কাজ। যখন আনুগত্যের কাজ করা হয়, তখন ঈমান বৃদ্ধি হয় এবং যখন পাপাচারের কাজ করা হয়, তখন ঈমান হ্রাস পায়। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, کَلَّا بَلۡ ٜ رَانَ عَلٰی قُلُوۡبِہِمۡ مَّا کَانُوۡا یَکۡسِبُوۡنَ  ‘কখনও না, বরং তাদের কৃতকর্মের ফলেই তাদের মনের উপর মরিচা জমে গেছে’ (আল-মুত্বাফফিফীন : ১৪)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,

إِنَّ العَبْدَ إِذَا أَخْطَأَ خَطِيْئَةً نُكِتَتْ فِيْ قَلْبِهِ نُكْتَةٌ سَوْدَاءُ، فَإِذَا هُوَ نَزَعَ وَاسْتَغْفَرَ وَتَابَ سُقِلَ قَلْبُهُ، وَإِنْ عَادَ زِيْدَ فِيْهَا حَتَّى تَعْلُوَ قَلْبَهُ، وَهُوَ الرَّانُ الَّذِيْ ذَكَرَ اللهُগ্ধ { کَلَّا بَلۡ ٜ رَانَ عَلٰی قُلُوۡبِہِمۡ مَّا کَانُوۡا یَکۡسِبُوۡنَ}.

‘বান্দা যখন একটি গুনাহ করে, তখন তার অন্তরে একটি কালো চিহ্ন পড়ে। অতঃপর যখন সে গুনাহের কাজ পরিহার করে, ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং তওবাহ করে, তখন তার অন্তর পরিষ্কার ও দাগমুক্ত হয়ে যায়। সে আবার পাপ করলে তার অন্তরে দাগ বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং তার পুরো অন্তর এভাবে কালো দাগে ঢেকে যায়। এটাই সেই মরিচা, আল্লাহ তা‘আলা যার বর্ণনা করেছেন, کَلَّا بَلۡ  رَانَ عَلٰی قُلُوۡبِہِمۡ مَّا کَانُوۡا یَکۡسِبُوۡنَ ।[৫]

আল-কুরআনের অসংখ্য আয়াতে ঈমান বৃদ্ধির স্পষ্ট দলীল পাওয়া যায়। মহান আল্লাহ বলেন,

اَلَّذِیۡنَ  قَالَ لَہُمُ النَّاسُ  اِنَّ النَّاسَ قَدۡ جَمَعُوۡا لَکُمۡ فَاخۡشَوۡہُمۡ فَزَادَہُمۡ اِیۡمَانًا ٭ۖ وَّ قَالُوۡا حَسۡبُنَا اللّٰہُ وَ نِعۡمَ الۡوَکِیۡلُ.

‘যাদেরকে লোকেরা বলেছিল যে, তোমাদের সাথে মোকাবেলা করার জন্য লোকেরা সমবেত হয়েছে। অতএব তোমরা তাদেরকে ভয় কর। কিন্তু তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে দিয়েছিল এবং তারা বলেছিল, আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট আর তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক’ (সূরা আলে ‘ইমরান : ১৭৩)। মহান আল্লাহ বলেন,

اِنَّمَا الۡمُؤۡمِنُوۡنَ الَّذِیۡنَ اِذَا ذُکِرَ اللّٰہُ وَجِلَتۡ قُلُوۡبُہُمۡ وَ اِذَا تُلِیَتۡ عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتُہٗ زَادَتۡہُمۡ  اِیۡمَانًا وَّ عَلٰی رَبِّہِمۡ یَتَوَکَّلُوۡنَ.

‘মুমিন তো কেবল তারাই, যাদের সামনে যখন আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়, তখন তাদের অন্তরসমূহ ভীত হয়ে পড়ে। আর যখন তাদের সামনে তার আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করা হয়, তখন তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে দেয় এবং তারা তাদের রবের উপর ভরসা করে’ (সূরা আল-আনফাল : ২)।  মহান আল্লাহ বলেন,

وَ اِذَا مَاۤ  اُنۡزِلَتۡ سُوۡرَۃٌ  فَمِنۡہُمۡ مَّنۡ یَّقُوۡلُ اَیُّکُمۡ زَادَتۡہُ ہٰذِہٖۤ  اِیۡمَانًا ۚ فَاَمَّا الَّذِیۡنَ  اٰمَنُوۡا  فَزَادَتۡہُمۡ   اِیۡمَانًا وَّ ہُمۡ  یَسۡتَبۡشِرُوۡنَ.

‘আর যখন কোন সূরা অবতীর্ণ করা হয়, তখন তাদের কেউ কেউ বলে, এ সূরা তোমাদের কার ঈমান বৃদ্ধি করল? অতএব, যারা ঈমান এনেছে, তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করেছে এবং তারাই আনন্দ লাভ করছে’ (সূরা আত-তাওবাহ : ১২৪)। মহান আল্লাহ বলেন,

وَ لَمَّا رَاَ  الۡمُؤۡمِنُوۡنَ الۡاَحۡزَابَ ۙ قَالُوۡا ہٰذَا مَا وَعَدَنَا اللّٰہُ  وَ رَسُوۡلُہٗ  وَ صَدَقَ اللّٰہُ وَ رَسُوۡلُہٗ ۫ وَ مَا زَادَہُمۡ  اِلَّاۤ اِیۡمَانًا  وَّ  تَسۡلِیۡمًا.

‘আর মুমিনরা যখন সম্মিলিত বাহিনীকে দেখল, তখন তারা বলে উঠল, এটা তো তা-ই, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যার ওয়াদা আমাদেরকে দিয়েছেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সত্যই বলেছেন। এতে তাদের ঈমান ও আত্মসমর্পণই বৃদ্ধি পেল’ (সূরা আল-আহযাব : ২২)। মহান আল্লাহ বলেন,

ہُوَ الَّذِیۡۤ  اَنۡزَلَ السَّکِیۡنَۃَ  فِیۡ  قُلُوۡبِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ  لِیَزۡدَادُوۡۤا  اِیۡمَانًا مَّعَ اِیۡمَانِہِمۡ ؕ وَ لِلّٰہِ  جُنُوۡدُ  السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ وَ  کَانَ اللّٰہُ  عَلِیۡمًا حَکِیۡمًا.

‘তিনিই মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি নাযিল করেন, যাতে তাদের ঈমানের সাথে আরো ঈমান বৃদ্ধি পায়। আসমানসমূহ ও যমীনের বাহিনীগুলো আল্লাহরই; আর আল্লাহ হলেন সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়’ (সূরা আল-ফাত্্হ : ৪)। মহান আল্লাহ বলেন,

اَلۡیَوۡمَ اَکۡمَلۡتُ لَکُمۡ دِیۡنَکُمۡ.

‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করলাম’ (সূরা আল-মায়েদাহ : ৩)। আয়াতটিকে ঈমান হ্রাস-বৃদ্ধির স্পষ্ট দলীল হিসাবে গণ্য করা হয়। কেননা এখানে দ্বীন পরিপূর্ণ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আর পূর্ণতার সামান্যতম অংশও যদি বাদ রাখা হয়, তবুও তাকে অসম্পূর্ণ ধরা হয়। ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) এ আয়াতটিকে ঈমান হ্রাস-বৃদ্ধির দলীল হিসাবে গ্রহণ করেছেন এবং বলেছেন, فَإِذَا تَرَكَ شَيْئًا مِنَ الكَمَالِ فَهُوَ نَاقِصٌ ‘পূর্ণ জিনিস থেকে কিছু বাদ দেয়া হলে তা অপূর্ণ হয়’।[৬]

মহান আল্লাহ বলেন,

وَ مَا جَعَلۡنَاۤ  اَصۡحٰبَ النَّارِ  اِلَّا مَلٰٓئِکَۃً ۪ وَّ مَا جَعَلۡنَا عِدَّتَہُمۡ  اِلَّا فِتۡنَۃً لِّلَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ۙ لِیَسۡتَیۡقِنَ  الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ وَ یَزۡدَادَ  الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِیۡمَانًا.

‘আর আমরা ফেরেশতামণ্ডলীকেই জাহান্নামের তত্ত্বাবধায়ক বানিয়েছি এবং কাফেরদের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ, আমরা তাদের সংখ্যা নির্ধারণ করেছি, যাতে কিতাবীদের দৃঢ় প্রত্যয় জন্মে এবং ঈমানদারদের ঈমান বৃদ্ধি হয়’ (সূরা আল-মুদ্দাছছির : ৩১)।

ঈমান বৃদ্ধির অনেক দলীল রয়েছে। ছাহাবীগণ ঈমান বৃদ্ধির মাধ্যমগুলোকে খুবই গুরুত্ব দিতেন। প্রখ্যাত বিদ্বান হাবীব ইবনু উমাইর (রাহিমাহুল্লাহ) তার সাথীকে বলতেন,إنا إذا ذكرنا الله زاد إيماننا وإذا غفلنا نقص إيماننا ‘নিশ্চয় যখন আমরা আল্লাহকে স্মরণ করি, তখন আমাদের ঈমান বৃদ্ধি পায়। আর যখন আমরা গাফেল থাকি, আমাদের ঈমান হ্রাস পায়’। মানুষের ঈমানের অবস্থা কখনো একরকম থাকে না। কখনো কম আবার কখনও বেশি। এ কারণে আল্লাহ তা‘আলা ঈমানদারদেরকে তিন শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন। ১. কল্যাণের কাজে অগ্রগামী ২. মধ্যপন্থী এবং ৩. যুলমকারী।[৭] মহান আল্লাহ বলেন,

ثُمَّ  اَوۡرَثۡنَا الۡکِتٰبَ الَّذِیۡنَ اصۡطَفَیۡنَا مِنۡ عِبَادِنَا ۚ فَمِنۡہُمۡ ظَالِمٌ لِّنَفۡسِہٖ ۚ وَ مِنۡہُمۡ مُّقۡتَصِدٌ ۚ وَ مِنۡہُمۡ سَابِقٌۢ بِالۡخَیۡرٰتِ بِاِذۡنِ اللّٰہِ ؕ ذٰلِکَ ہُوَ الۡفَضۡلُ  الۡکَبِیۡرُ.

‘অতঃপর আমরা কিতাবের অধিকারী করলাম আমাদের বান্দাদের মধ্যে তাদেরকে, যাদেরকে আমরা মনোনীত করেছি। তবে তাদের কেউ নিজের প্রতি যুলমকারী, কেউ মধ্যপন্থী এবং কেউ আল্লাহর ইচ্ছায় কল্যাণের কাজে অগ্রগামী। এটাই মহা অনুগ্রহ’ (সূরা ফাত্বির : ৩২)।

এ আয়াতে ঈমান হ্রাস-বৃদ্ধির স্পষ্ট দলীল মিলে। শায়খ আব্দুর রহমান নাছের আস-সা‘আদী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘মহান আল্লাহ মুমিনদেরকে ৩টি শ্রেণীতে ভাগ করেছেন। কল্যাণের কাজে অগ্রগামী বলতে তাদেরকে বুঝানো হয়েছে, যারা ওয়াজিব ও মুস্তাহাবসমূহ পালন করেছে এবং হারাম ও অপসন্দনীয় বিষয়সমূহ বর্জন করেছে। আর তারাই হচ্ছে, আল্লাহর নিকটতম বান্দা। মধ্যপন্থী তারা, যারা শুধু ওয়াজিবসমূহ পালন করেছে এবং শুধু হারামসমূহ বর্জন করেছে। আর নিজেদের প্রতি যুলমকারী তারা, যারা কিছু কিছু হারাম কাজ করে ফেলেছে এবং কিছু কিছু ওয়াজিব আদায়ে শিথিলতা দেখিয়েছে। প্রত্যেককেই মহান আল্লাহ কুরআনের অধিকারী করেছেন এবং মনোনীত করেছেন। যদিও মর্যাদা ও অবস্থার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। তবে তাদের মূল ঈমান আছে।[৮] এটাই ঈমান হ্রাস-বৃদ্ধির বড় দলীল।

অনুরূপভাবে হাদীছেও ঈমান হ্রাস-বৃদ্ধির দলীল পাওয়া যায়। আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,

لَا يَزْنِي الزَّانِيْ حِيْنَ يَزْنِيْ وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلَا يَشْرَبُ الخَمْرَ حِيْنَ يَشْرَبُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلَا يَسْرِقُ حِيْنَ يَسْرِقُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلَا يَنْتَهِبُ نُهْبَةً يَرْفَعُ النَّاسُ إِلَيْهِ فِيْهَا أَبْصَارَهُمْ حِيْنَ يَنْتَهِبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ.

‘কোন ব্যভিচারী মুমিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না এবং কোন মদ্যপায়ী মুমিন অবস্থায় মদ পান করে না। কোন চোর মুমিন অবস্থায় চুরি করে না। কোন লুটতরাজকারী মুমিন অবস্থায় এরূপ লুটতরাজ করে না যে, যখন সে লুটতরাজ করে, তখন তার প্রতি লোক চোখ তুলে তাকিয়ে থাকে’।[৯]

আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-এর বর্ণনায় রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, وَلَا يَقْتُلُ وَهْوَ مُؤْمِنٌ ‘হত্যাকারী হত্যা করতে পারে না মুমিন থাকা অবস্থায়’। ইকরিমা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-কে বললাম, কিভাবে তার থেকে ঈমান বের করে নেয়া হয়? ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বললেন, এভাবে। এ কথা বলেই তিনি দু’হাতের আঙ্গুলগুলো পরস্পরের মধ্যে প্রবেশ করালেন ও পরে টেনে বের করে নিলেন। অতঃপর যদি সে তওবাহ করে, তাহলে ঈমান তার দিকে এভাবে পুনরায় ফিরে আসে- এ কথা বলেই তিনি পুনরায় দু’হাতের আঙ্গুলগুলোকে পরস্পরের মধ্যে প্রবেশ করালেন।[১০]  ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, لَا يَكُوْنُ هَذَا مُؤمِنًا تَامًا وَلَا يَكُوْنَ لَهُ نُوْرُ الْإِيْمَانِ ‘ঐ ব্যক্তি পূর্ণ মুমিন থাকে না এবং তার মধ্যে ঈমানের জ্যোতি থাকে না’।[১১]

উপরিউক্ত হাদীছটিতে ‘মুমিন অবস্থায়’ উল্লিখিত পাপগুলো না করার অর্থ ‘পূর্ণ মুমিন অবস্থায়’ সেগুলো না করা। অর্থাৎ যখন কেউ পাপ কাজ করে, তখন সে পূর্ণ মুমিন থাকে না; তবে তার মধ্যে অপূর্ণ ঈমান মওজূদ থাকে। আর সেকারণেই মুমিন কাবীরা গুনাহগার হলেও তারা ‘কাফের’ নয়; বরং তারা মুমিন, তবে অপূর্ণ মুমিন। তারা তওবাহ করলে তাদের সাজা মওকূফ হবে আর কাবীরা গুনাহের উপর অটল থাকলে তারা আল্লাহর ইচ্ছাধীন হয়ে যাবে; তিনি চাইলে তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়ে শুরু থেকেই জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, আর চাইলে প্রথমে শাস্তি দিয়ে পরে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।[১২]

আনাস ইবনু মালেক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,

يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَفِيْ قَلْبِهِ وَزْنُ شَعِيْرَةٍ مِنْ خَيْرٍ وَيَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَفِيْ قَلْبِهِ وَزْنُ بُرَّةٍ مِنْ خَيْرٍ وَيَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَفِيْ قَلْبِهِ وَزْنُ ذَرَّةٍ مِنْ خَيْرٍ.

‘যে ব্যক্তি ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু’ পড়েছে এবং তার অন্তরে একটি যবের ওযন পরিমাণ কল্যাণ (ঈমান) আছে, সে জাহান্নামের আগুন থেকে বের হয়ে আসবে। যে ব্যক্তি ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু’ পড়েছে এবং তার অন্তরে একটি গমের ওযন পরিমাণ কল্যাণ (ঈমান) আছে, সে জাহান্নামের আগুন থেকে বের হয়ে আসবে। যে ব্যক্তি ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু’ পড়েছে এবং তার অন্তরে অণু পরিমাণ কল্যাণ (ঈমান) আছে, সে জাহান্নামের আগুন থেকে বের হয়ে আসবে’।[১৩] ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর ‘ছহীহ’-এর ‘ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি’ অনুচ্ছেদে হাদীছটিকে এনেছেন।[১৪]

ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি সম্পর্কে সালাফে ছালেহীনের বক্তব্যও রয়েছে। যেমন-

প্রখ্যাত তাবিঈ বিদ্বান উমাইর ইবনু হাবীব (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি হয়। তাকে বলা হল, কিভাবে হ্রাস-বৃৃদ্ধি হয়। তিনি বলেন, যখন আমরা আমাদের রবকে স্মরণ করি এবং ভয় করি, তখন ঈমান বৃদ্ধি হয়। আর যখন আমরা গাফেল থাকি, ভুলে যাই এবং ক্রটি করি, তখন ঈমান হ্রাস পায়’।[১৫]

ইমাম মালিক ইবনু আনাস (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, হাম্মাদ, সুফইয়ান, ফুযাইল, শারীক, ইয়াহইয়া, মুসলিম, হিশাম, জারীর, ‘আলী, ‘আবদাহ, আব্দুল্লাহ, হাফছ, ওকীঈ, মুহাম্মাদ, আব্দুর রহীম, আব্দুল আযীয, দারাওয়ারদী, ইসমাঈল, হাতিমসহ (রাহিমাহুমুল্লাহ) সকল মুহাদ্দিছ যাদের কাছে আমি জ্ঞান সংগ্রহ করেছি, তারা বলতেন,الإيمان قول وعمل يزيد وينقص ‘ঈমান হল স্বীকারোক্তি ও আমলের নাম। ঈমান বাড়ে এবং ঈমান কমে’।[১৬] ইমাম মালিক (রাহিমাহুল্লাহ)ও বলেছেন, ‘ঈমান হল স্বীকারোক্তি ও আমলের নাম। ঈমান বাড়ে এবং ঈমান কমে’।[১৭]

ইমাম শাফিঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘ঈমান হল স্বীকারোক্তি ও আমলের নাম। ঈমান বাড়ে এবং কমে’।[১৮]

ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, সত্তর জন তাবেঈ, মুসলিমদের ইমামগণ এবং পূর্ববর্তী ফক্বীহগণ সকলেই ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে,الإيمان قول وعمل يزيد بالطاعة وينقص بالمعصية ‘ঈমান হল স্বীকারোক্তি ও আমলের নাম। আনুগত্যে ঈমান বাড়ে এবং পাপাচারে ঈমান কমে’।[১৯] 

ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, পূর্ববর্তী আলেমদের মধ্য থেকে এক হাজারের অধিক আলেমের সাথে সাক্ষাৎ করেছি। তারা সকলেই বলেছেন, ‘ঈমান হল স্বীকারোক্তি ও আমলের নাম। আনুগত্যে ঈমান বাড়ে এবং পাপাচারে ঈমান কমে’।[২০] ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ)ও বলেছেন, قَوْلٌ وَفِعْلٌ وَيَزِيْدُ وَيَنْقُصُ ‘মুখে স্বীকার এবং কাজে পরিণত করাই হচ্ছে ঈমান এবং তা বৃদ্ধি পায় ও হ্রাস পায়’।[২১]

ইমাম মুসলিম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, أَنَّ الْإِيْمَانَ يَزِيْدُ وَيَنْقُصُ ‘ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি হয়’।[২২] 

ইবনু আবূ হাতিম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, আমি আমার পিতা এবং আবূ যুর‘আ-কে ‘আহলুস সুন্নাহ’-এর মাযহাব, তাদের যুগের আলেমগণ এবং তাদের বিশ্বাস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তারা বলেছেন, আমরা হিজাজ, ইরাক, মিশর, শাম এবং ইয়ামানের আলেমদের পেয়েছি, তাদের মাযহাব হল, ‘ঈমান হল স্বীকারোক্তি ও আমলের নাম। সৎ আমলের মাধ্যমে ঈমান বাড়ে এবং পাপাচারের কারণে ঈমান কমে’।[২৩]

শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়াহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন,

وَأَمَّا الصَّحَابَةُ وَأَهْلُ السُّنَّةِ وَالْحَدِيْثِ فَقَالُوْا إِنَّهُ يَزِيْدُ وَيَنْقُصُ كَمَا قَالَ النَّبِيُّ ﷺ يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ كَانَ فِيْ قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةِ خَرْدَلٍ مِنْ إِيْمَانٍ.

‘আর ছাহাবায়ে কেরাম এবং আহলুস সুন্নাহ ওয়াল হাদীছগণ বলে থাকেন, ঈমান বাড়ে ও কমে, ঠিক যেমনটি নবী (ﷺ) বলেছেন, ‘যার হৃদয়ে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমান আছে, সে জাহান্নামের আগুন থেকে বের হয়ে আসবে’।[২৪]

অতএব, কুরআন ও সুন্নাহতে ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধির আলোচনা যেভাবে এসেছে, সেটাই বিশ্বাস করতে হবে। যারা এর বিপরীত বিশ্বাস করবে, তারা বিদ‘আতী বলে গণ্য হবে। ইমাম আওযাঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, اَلْإِيْمَانُ يَزِيْدُ وَيَنْقُصُ فَمَنْ زَعَمَ أَنَّ الْإِيْمَانَ لَا يَزِيْدُ وَلَا يَنْقُصُ فَهُوَ صَاحِبُ بِدْعَةٍ ‘ঈমাণের হ্রাস-বৃদ্ধি হয়। কেউ যদি ধারণা করে যে, ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি হয় না, তাহলে সে বিদ‘আতী’।[২৫]

অতএব ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি আক্বীদায় মাতুরীদীদের অবস্থান আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের বিশুদ্ধ আক্বীদার পরিপন্থী। যা থেকে মুক্ত থাকা সকল মুসলিমের ঈমানী কর্তব্য।

 (ইনশাআল্লাহ চলবে)


* পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

তথ্যসূত্র :
[১]. এ গুরুত্বপূর্ণ উছূল নিয়ে বিদ‘আতীরা ঈমানের বিষয়ে বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত হয়েছে। বিদ‘আতীরা মনে করে, কার মধ্যে যদি ঈমান হ্রাস দেখা দেয়, তাহলে তার ঈমান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। ঈমানের কিছুই বাকি থাকে না। আবার কেউ মনে করে, পাপ কাজ ঈমানের কোন ক্রটি করে না। যেমন, খারেজীরা বলে, আমল ঈমানের অন্তর্ভুক্ত। তবে আমল পরিপূর্ণ না হলে ঈমান সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট হয়ে যায় এবং ঐ ব্যক্তি কাফের হয়ে যায়। যার ফলে দুনিয়ায় তার রক্ত হালাল এবং আখিরাতে সে চিরস্থায়ী জাহান্নামী। মু‘তাযিলারা খারেজীদের মতই আক্বীদা পোষণ করে। তবে আমলের ত্রুটির কারণে চিরস্থায়ী জাহান্নামী হলেও দুনিয়ায় মুসলিম বা কাফের কোনটিই গণ্য হবে না এবং তাদের রক্ত হালাল হবে না। মুরজিয়ারা  মনে করে যে, পাপ কাজ ঈমানের কোন ক্ষতি করে না। তারা কোন আমল ছাড়াই পরিপূর্ণ ঈমানের দাবী করে। দ্রষ্টব্য : আশ-শারী‘আহ, পৃ. ৫৮০; আব্দুল কাফী আল-ইবাযী, আল মুওজায ফী আরা-ইল খাওয়ারিজ আল-কালামিয়্যাহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৯০; কাযী আব্দুল জাব্বার, শারহুল উছুল আল-খামসা, পৃ. ৭০৭; আবূ সানাদ ফাৎহুল্লাহ, আলাফ ফাতাওয়া লি-শাইখিল আলবানী, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৩০।
[২]. আদা’ঊ মাতুরীদিয়াতি লিল আক্বীদাতিস সালাফিয়্যা আল-মাতুরীদিয়া, ১ম খণ্ড, পৃ. ৪৭৭।
[৩]. আবূ আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল্লাহ আন্দালুসী, রিয়াযুল জান্নাহ বি তাখরীজি উছূলিস সুন্নাহ (মদীনা : মাকতাবাতুল গুরাবাইল আছরিয়্যা, ১৪১৫ হি.), পৃ. ২১১। 
[৪]. তাওযীহুল কাফিয়্যাহ আশ-শাফিয়্যাহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৩৯; শারহুল ‘আক্বীদাতিত ত্বাহাবী, পৃ. ৫৭; যিয়াদাতুল ঈমান ওয়া নুক্বছানিহি ওয়া হুকমিল ইসতিছনাই ফীহ, পৃ. ১১০; ই‘আনাতুল মুসতাফীদ বিশারহি কিতাবিত তাওহীদ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৭৯।
[৫]. তিরমিযী, হা/৩৩৩৪; ইবনু মাজাহ, হা/৪২৪৪; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/২৭৮৭; মুসতাদরাক হাকিম, হা/৩৯০৮; মিশকাত, হা/২৩৪২ সনদ হাসান। 
[৬]. ছহীহ বুখারী, ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘ঈমানের বৃদ্ধি ও হ্রাস’ অনুচ্ছেদ।
[৭]. আব্দুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ আল-গানীমান, শারহুল ‘আক্বীদা আল-ওয়াসিত্বিয়্যা, ২৬তম খণ্ড, পৃ. ৫।       
[৮]. আব্দুর রহমান নাছের আস-সা‘আদী, তাইসীরুল কারীমির রহমান ফী তাফসীরি কালামিল মান্নান (মুওয়াস্সাসাতুর রিসালাহ, ১৪২০ হি.), পৃ: ৬৮৯। 
[৯]. ছহীহ বুখারী, হা/২৪৭৫; ছহীহ মুসলিম, হা/৫৭; তিরমিযী, হা/২৬২৫; নাসাঈ, হা/৪৮৭০; ইবনু মাজাহ, হা/৩৯৩৬; মিশকাত, হা/৫৩। 
[১০]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৮০৯; মিশকাত, হা/৫৪।
[১১]. মিশকাত, হা/৫৪; ওবাইদুল্লাহ মুবারকপুরী, মির‘আতুল মাফাতীহ শারহু মিশকাতিল মাছাবীহ (বানারস : ইদারাতুল বহূছিল ইলমিয়্যাহ ওয়াদ দা‘ওয়াতি ওয়াল ইফতা, ৩য় সংস্করণ, ১৪০৪ হি.), ১ম খণ্ড, পৃ. ১২৭।
[১২]. ইমাম নববী, শারহুন নববী ‘আলা ছহীহ মুসলিম (বৈরূত : দারু এহ্্ইয়াইত তুরাছ আল-আরাবী, ২য় সংস্করণ, ১৩৯২ হি.), ২য় খণ্ড, পৃ. ৪১-৪২।
[১৩]. ছহীহ বুখারী, হা/৪৪; ছহীহ মুসলিম, হা/৩২৫।
[১৪]. ছহীহ বুখারী, ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘ঈমানের বৃদ্ধি ও হ্রাস’ অনুচ্ছেদ।
[১৫]. আশ-শারী‘আহ, পৃ. ৫৮৩।
[১৬]. ইমাম বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা (হায়দারাবাদ, হিন্দ : মাজলাসু দাইরাতিল মা‘আরিফিল নিযামিয়্যাহ, ১৩৪৪ হি.), ১০ম খণ্ড, পৃ. ২০৬, হা/২১৪১৭।  
[১৭]. আহমাদ ইবনু সালমান, আর-রদ্দু ‘আলা মান ইয়াকূলুল কুরআন মাখলূক, তাহক্বীক্ব : মুহাম্মাদ ইদরীস (কুয়েত : মাকতাবাতুছ ছাহাবাতিল ইসলামিয়্যা, ১৪০০ হি.), পৃ. ৭১।  
[১৮]. আহমাদ ইবনুল হুসাইন বায়হাক্বী, মা‘রিফাতুস সুনান ওয়াল আছার, তাহক্বীক্ব : আব্দুল মু‘ত্বী আমীন (দামেস্ক : জামি‘আতুদ দিরাসাতিল ইসলামিয়্যা, ১৪১২ হি.), হা/৭০, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৯২।  
[১৯]. মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুর রহমান আল-খামীস, উছূলুদ দ্বীন ঈনদাল ইমাম আবী হানীফা (সঊদী আরব : দারুছ ছামীঈ, তাবি.), পৃ. ৩৮৬।  
[২০]. প্রাগুক্ত।  
[২১]. ইমাম বুখারী, ছহীহ বুখারী, ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘অনুচ্ছেদ-১।
[২২]. ইমাম মুসলিম, ছহীহ মুসলিম, ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘অনুচ্ছেদ-২০।
[২৩]. উছূলুদ দ্বীন ঈনদাল ইমাম আবী হানীফা, পৃ. ৩৮৬।  
[২৪]. ইবনু তায়মিয়াহ, মিনহাজুস সুন্নাহ আন-নাবাবিয়্যাহ, তাহক্বীক্ব : মুহম্মাদ রশাদ সালেম (মুওয়াসসাসাতু কুরতুবা, তাবি.), ৫ম খণ্ড, পৃ. ১৩৭।
[২৫]. ইমাম বুখারী, রাফঊল ইয়াদাইন ফীছ ছালাত, তাহক্বীক্ব : আহমাদ শারীফ (কুয়েত : দারুল আরক্বাম, ১৪০৪ হি.), হা/১৮১, পৃ. ৮৭।




ছয়টি মূলনীতির ব্যাখ্যা (২য় কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির
ইসলামী তাবলীগ বনাম ইলিয়াসী তাবলীগ - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ফাযায়েলে কুরআন (৬ষ্ঠ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
কুরআনী প্রবাদ সংকলন : তাৎপর্য ও শিক্ষা - প্রফেসর ড. লোকমান হোসেন
বিদ‘আত পরিচিতি (১৪তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
বিদ‘আত পরিচিতি (৯ম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ইসলামী পুনর্জাগরণের প্রতিবন্ধকতা ও তার সমাধান - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ইসলামী উত্তরাধিকার আইন: উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ ধারা - ড. মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (১২তম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
ছালাতের সঠিক সময় ও বিভ্রান্তি নিরসন (৪র্থ কিস্তি) - মাইনুল ইসলাম মঈন
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (১৫তম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে আলো ও অন্ধকার (২য় কিস্তি) - অনুবাদ : হাফীযুর রহমান বিন দিলজার হোসাইন

ফেসবুক পেজ