বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৩ অপরাহ্ন

আশূরায়ে মুহাররম

-মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী*


আশূরায়ে মুহাররমের প্রেক্ষাপট

‘আশারা’ শব্দ থেকে ‘আশূরা’ শব্দটি এসেছে, যার অর্থ হল ‘দশম বা দশক’। হিজরী সনের প্রথম মাস মুহাররম। যেহেতু ইহা মুহাররম মাস, তাই এই দিনটির নামানুসারে একে বলা হয় ‘আশূরায়ে মুহাররম’ বা দশ-ই মুহাররম।[১]  এটি এমন একটি দিন যেদিনে আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর কওমকে নাজাত দিয়েছিলেন এবং ফেরাঊন ও তার লোকদের ডুবিয়ে মেরেছিলেন। তার শুকরিয়া হিসাবে মূসা (আলাইহিস সালাম)-উক্ত দিনে ছিয়াম পালন করেছিলেন। এই ছিয়ামই যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। জাহেলী যুগেও এ ছিয়াম চালু ছিল। নবুঅতপূর্বকালে ও পরে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশূরার ছিয়াম রাখতেন। ২য় হিজরীতে রামাযানের ছিয়াম ফরয হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আশূরার ছিয়াম মুসলিমদের জন্য ‘ফরয’ ছিল। এরপর এটি নফল ছিয়ামে পরিণত হয়।[২]

আশূরার ছিয়ামের মর্যাদা

আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ شَهْرُ اللهِ الْمُحَرَّمُ وَأَفْضَلُ الصَّلَاةِ بَعْدَ الْفَرِيْضَةِ صَلَاةُ اللَّيْلِ ‘রামাযান মাসের পর সর্বোত্তম ছিয়াম হল আল্লাহর মাস মুহাররমের ছিয়াম। আর ফরয ছালাতের পর সর্বোত্তম ছালাত হল রাতের ছালাত’।[৩] ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আল্লাহর মাস’ মুহাররমের সাথে সম্পৃক্ত করা এ মাসের মহত্বের কারণ। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রামাযান ছাড়া কোন মাসেই এত বেশী ছিয়াম পালন করেননি। সুতরাং হাদীছের এ সম্পৃক্ততায় বলা যায়, এ মাসে অধিক ছিয়াম পালন করা যায়। রামাযান ছাড়া কেবল শা‘বান মাসেই রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেশি ছিয়াম পালন করেছেন। এটা এমন হতে পারে যে, এ মাসের ফযীলত সম্পর্কিত বিধানগুলো খায়বার যুদ্ধের পর স্পষ্ট হয়েছে, তাই তিনি বেশি ছিয়াম রাখেননি।[৪] 

আবূ ক্বাতাদা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আশূরার ছিয়াম সম্পর্কে প্রশ্ন করা হল, তিনি বললেন, يُكَفِّرُ السَّنَةَ الْمَاضِيَةَ ‘তা বিগত এক বছরের গোনাহ মুছে দেয়’।[৫] অন্য হাদীছে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,صِيَامُ يَوْمِ عَاشُوْرَاءَ أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِى قَبْلَهُ ‘আমি আশাবাদী যে, আশূরার ছিয়ামের কারণে আল্লাহ তা‘আলা অতীতের এক বছরের গোনাহ ক্ষমা করে দিবেন’।[৬]  

আশূরার ছিয়াম কখন

আশূরার ছিয়াম কখন রাখতে হবে এ মর্মে ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, أَمَرَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِصَوْمِ عَاشُوْرَاءَ يَوْمُ عَاشِرٍ ‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুহাররম মাসের ১০ তারিখে আশূরার ছিয়াম রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন’।[৭] ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,

قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المَدِيْنَةَ فَرَأَى الْيَهُوْدَ تَصُوْمُ يَوْمَ عَاشُوْرَاءَ فَقَالَ مَا هَذَا؟ قَالُوْا هَذَا يَوْمٌ صَالِحٌ هَذَا يَوْمٌ نَجَّى اللهُ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ مِنْ عَدُوِّهِمْ فَصَامَهُ مُوْسَى قَالَ فَأَنَا أَحَقُّ بِمُوْسَى مِنْكُمْ فَصَامَهُ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ

‘আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় আগমন করে দেখতে পেলেন যে, ইহুদীরা আশূরার দিনে ছিয়াম পালন করে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কি ব্যাপার তোমরা এ দিনে ছিয়াম পালন কর কেন? তারা বলল, এটি অতি উত্তম দিন, এদিনে আল্লাহ তা‘আলা বনী ইসরাঈলকে তাদের শত্রুদের কবল হতে নাজাত দান করেন, ফলে এ দিনে মূসা (আলাইহিস সালাম) ছিয়াম পালন করেছেন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘আমি তোমাদের অপেক্ষা মূসার অধিক নিকটবর্তী। এরপর তিনি এদিনে ছিয়াম পালন করেন এবং অন্যদেরকেও ছিয়াম পালনের নির্দেশ দেন’।[৮] অবশ্য ছহীহ মুসলিমে একটু ভিন্নভাবে এসেছে- ‘এটি অতি মহান দিন। এ দিনে আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সম্প্রদায়কে নাজাত দিয়েছেন এবং ফেরাঊন ও তার সম্প্রদায়কে সাগরে ডুবিয়ে মেরেছেন। তাই মূসা (আলাইহিস সালাম) কৃতজ্ঞতাস্বরূপ ছিয়াম পালন করেন’।[৯]

অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘যখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশূরার ছিয়াম পালন করলেন ও অন্যকে পালন করার নির্দেশ দিলেন, তখন ছাহাবীগণ বললেন, এটা তো এমন এক দিবস যাকে ইহুদী ও খ্রিস্টানরা সম্মান করে থাকে। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আগামী বছর এলে আমরা ইনশাআল্লাহ ৯ম তারিখে ছিয়াম পালন করব’। ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, ‘পরবর্তী বছর আসার পূর্বেই রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইন্তেকাল করেন’।[১০]

ইমাম শাফেঈ, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল, ইসহাক্ব ইবনু রাহওয়াইহসহ অনেক ইমামই মনে করেন, মুস্তাহাব হল ৯ ও ১০ তারিখ ছিয়াম পালন করা। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ১০ তারিখ রেখেছিলেন এবং পরের বছর ৯ তারিখ রাখবেন বলে নিয়ত করেছিলেন।

উল্লেখ্য যে, অন্য হাদীছে এসেছে, রাসূলুল্লাহ বলেন, صُوْمُوْا يَوْمَ عَاشُوْرَاءَ وَخَالِفُوْا فِيْهِ الْيَهُوْدَ صُوْمُوْا قَبْلَهُ يَوْمًا أَوْ بَعْدَهُ يَوْمًا ‘তোমরা আশূরার ছিয়াম রাখ এবং ইহুদীদের সাদৃশ্য পরিত্যাগ করে আশূরার আগে বা পরে আরো একদিন ছিয়াম রাখ’।[১১] ইবনু খুযায়মা (রাহিমাহুল্লাহ) তার ‘ছহীহ ইবনু খুযায়মা’তে (হা/২০৯৫) উল্লেখ করেছেন। আহমাদ শাকের (রাহিমাহুল্লাহ) হাদীছটিকে ‘হাসান’ বলেছেন। শায়খ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ইবনু আবী লায়লা নামক একজন রাবী আছেন, যিনি মুখস্ত শক্তিতে দুর্বল। তাই-এর সনদ যঈফ। তবে ‘আতা সহ অনেকেই এর বিরোধিতা করেছেন। তারা মনে করেন হাদীছটি ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) পর্যন্ত ছহীহ। অর্থাৎ মাওকূফ সূত্রে ছহীহ। ইমাম বায়হাক্বী ও ত্বাহাবী (রাহিমাহুমাল্লাহ) -এর কাছে এর সনদ ঠিক আছে। তবে অন্য আরো হাদীছের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ইহুদীদের বিরোধিতা করার জন্যই মূলত ৯ তারিখ রাখা। তাই অনিচ্ছায় যদি কারো ৯ তারিখ ছুটে যায়, তাহলে সে ১১ তারিখে রাখতে পারে।

আশূরার ছিয়াম জাহেলী যুগে ছিল কি?

উপরের আলোচনায় এটা ফুটে উঠে যে, মদীনায় আসার পর শেষের বছর ইহুদীদের কাছ থেকে এ ছিয়াম সম্পর্কে জানতে পারলেন। তার মানে এ ছিয়াম কি ইসলামে তখন থেকেই এসেছে? না-কি আগেও এর অস্তিত্ব ছিল। নিম্নের আলোচনা থেকে বুঝা যাবে। ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন,

أَنَّ أَهْلَ الْجَاهِلِيَّةِ كَانُوْا يَصُوْمُوْنَ يَوْمَ عَاشُوْرَاءَ وَأَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَامَهُ وَالْمُسْلِمُوْنَ قَبْلَ أَنْ يُفْتَرَضَ رَمَضَانُ فَلَمَّا افْتُرِضَ رَمَضَانُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ عَاشُوْرَاءَ يَوْمٌ مِنْ أَيَّامِ اللهِ فَمَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ تَرَكَهُ

‘জাহেলী যুগে তারাও আশূরার ছিয়াম পালন করত। আর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং মুসলিমরাও ছিয়াম রেখেছেন রামাযানের ছিয়াম ফরয হওয়ার আগ পর্যন্ত। আর রামাযান ফরয হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, নিশ্চয় আশূরা আল্লাহর দিনসমূহের একটি দিন। সুতরাং যার ইচ্ছা সে রাখবে আর যার ইচ্ছা সে ছেড়ে দেবে’।[১২] তার মানে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাক্কী জীবনেও এ ছিয়াম পালন করতেন। যখন মদীনায় আসলেন, দেখলেন ইহুদীরাও এদিন ছিয়াম পালন করে। কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা উত্তরে বলল, এদিন মূসা (আলাইহিস সালাম)-কে শত্রুদের হাত থেকে মুক্ত করা হয়েছিল। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিয়াম পালন করলেন ও সবাইকে রাখতে নির্দেশ দিলেন।

এ হাদীছ থেকে প্রশ্ন আসে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ ছিয়াম সম্পর্কে জানতেন না; ইহুদীদের কাছ থেকে জানলেন? উত্তরে বলতে পারি ‘না’। কারণ (১) রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ ছওমের ব্যাপারে জানতেন না, ইহুদীদের কাছ থেকে জেনেছেন,  এটা হতেই পারে না। কারণ তিনি মক্কাতেই এ ছিয়াম পালন করেছেন। (২) ইহুদীদের কাছ থেকে জানার পর তিনি ছিয়াম পালন করলেন এবং ছাহাবীদের নির্দেশ দিলেন। এ নির্দেশের মাধ্যমে কি ছিয়ামের বিধান জানালেন? না, ইহুদীদের বিপরীত করার জন্য ৯ তারিখসহ ছিয়াম পালন করার নির্দেশ দিলেন? পরেরটাই ঠিক। অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিয়ামের বিধান সম্পর্কে নির্দেশ দিলেন না; বরং ইহুদীদের বিপরীত করার জন্য বললেন। আরো একটি বিষয়, তা হচ্ছে উপরে আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-এর হাদীছ এবং পূর্বে বর্ণিত فإذا كان العام المقبل إن شاء الله صمنا اليوم التاسع এ হাদীছের মাঝে কোন মিল নেই। অর্থাৎ দু’টি বিষয় দুই সময়ের সাথে সম্পৃক্ত। বুঝিয়ে বললে এমন হয়, আশূরার ছিয়াম পূর্বে জাহেলী যুগে ছিল যা ইহুদী-নাছারারা করত। ইসলাম আসার পর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও করেছেন। এমনকি মদীনাতে আসার পরও করেছেন। কিন্তু মদীনায় আসার পূর্বে এই আশূরার ছিয়ামকে ফরয করা হয়। আর মদীনা যাওয়ার এক বছর পর ২য় হিজরীতে রামাযানের ছিয়াম ফরয করা হলে আশূরার ছিয়াম নফল হয়ে যায়। ঠিক এভাবেই চলছিল। কিন্তু ছহীহ মুসলিমের ১১৩১ নং হাদীছ দ্বারা বুঝা যায় রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইহুদীদের ঈদ বা আনন্দ উদযাপনের বিষয়টি জেনেছেন খায়বার বিজয়ের অনেক পর। খায়বার যুদ্ধ হয় ৭ হিজরীর মুহাররম মাসে। যুদ্ধের বছরই যদি জানতেন তাহলে ৮ম, ৯ম এবং ১০-১১ হিজরীতে ছিয়াম পালন করতেন, ছাহাবীরাও করতেন। কিন্তু না, পরবর্তীতে কোন সময় রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে গিয়ে ইহুদীদের ধর্ম পালন স্বচক্ষে দেখেছিলেন। আর যখনই জেনেছেন তখনই তিনি এমন নিয়ত করেন যে, আগামী বছর ৯ তারিখসহ ছিয়াম পালন করবেন। আর এটা ছিল মৃত্যুর এক বা দুই বছর পূর্বে।

মুসলিম বিশ্বে বর্তমানে আশূরার গুরুত্বের কারণ কী?

অধিকাংশ মুসলিম ১০ মুহাররম পালন করে কারবালা দিবস হিসাবে এবং সে নিয়তেই ছিয়াম রাখে। অথচ এটা সম্পূর্ণরূপে বিদ‘আত ও হারাম। কারণ ছিয়াম রাখতে হবে নাজাতে মূসা (আলাইহিস সালাম)-এর নিয়তে, যে নিয়তে রেখেছিলেন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও ছাহাবায়ে কেরাম। অতএব হুসাইন (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর মিথ্যা কবর তৈরি করে মিছিল বের করা, সে কবরে রূহ হাযির হওয়ার মিথ্যা ধারণা করা, কবর যিয়ারত করা ও সালাম দেয়া, সিজদা করা, তার জন্য তা‘যিয়া মিছিল বের করা, ‘হাই হোসেন’ ‘হাই হোসেন’ বলে চিল্লানো, মুখমণ্ডল ও বুক চাপড়ানো, লাঠিসহ তীর-বল্লম খেলার আয়োজন করা, নিজেকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা, এ মাসকে শোকের মাস হিসাবে গণ্য করা, শোকের মাস তাই কোন বিবাহ-সাদীও করা যাবে না মর্মে ধারণা করা সবই বিদ‘আত ও শিরকের অন্তর্ভুক্ত। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

لَيْسَ مِنَّا مَنْ ضَرَبَ الْخُدُوْدَ وَشَقَّ الْجُيُوْبَ وَدَعَا بِدَعْوَى الجَاهِلِيَّةِ

‘যারা শোকে গণ্ডদেশে চপেটাঘাত করে, জামার বক্ষ ছিন্ন করে ও জাহেলী যুগের মত চিৎকার করে, তারা আমাদের দলভুক্ত নয়’।[১৩]

যা জানা প্রয়োজন  

১০ মুহাররমের সঠিক গুরুত্ব ও মূল ইতিহাস পরিবর্তনে বেশী ভূমিকা পালন করেছে মীর মোশাররফ হোসেনের রচিত ‘বিষাদ সিন্ধু’। অথচ এটা শিরক-বিদ‘আত ভর্তি একটি উপন্যাস। কারণ মীর মোশাররফ ১৮৪৭ সালে জন্ম গ্রহণ করেন এবং কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার ও ঔপন্যাসিক হিসাবে খ্যাতি লাভ করেন। তিনি প্রথম জীবনে কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ (১৮৬৩) ও বিখ্যাত কবি ঈশ্বরগুপ্তের ‘সংবাদ প্রভাকর’ (১৮৩১) পত্রিকায় কিছু সংবাদ প্রবাহের কাজ করতেন। এই সুবাদেই বলা যায় কাঙাল হরিনাথের সঙ্গে তার হৃদ্যতা গড়ে উঠেছিল, যা আমৃত্যুই বহাল থাকে। এজন্য তাকে কাঙাল হরিনাথের সাহিত্য শিষ্যও বলা হয়। কারবালার বিষাদময় ঘটনা নিয়ে লেখা উপন্যাস ‘বিষাদ সিন্ধু’ তার শ্রেষ্ঠ রচনা বলা হয়।

সুধী পাঠক! বাংলার মুসলিমরা বিষাদ সিন্ধু উপন্যাস পড়ে তা ধর্মের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে দ্বীনের বড় ক্ষতি সাধন করেছে। আশূরায়ে মুহাররমের ঐ রাতে কিছু মুসলিম ভাই-বোন এই ওযূ-গোসল করে সারারাত্রি বিষাদ সিন্ধু পড়ে থাকে। কুরআনের মত যত্ন করে কাপড় দিয়ে জড়িয়ে রাখে আবার পরের বছর পড়ার জন্য। কিন্তু উপরের লিখায় আমরা যা দেখলাম তাতে ইসলামের নাম গন্ধও নেই। ‘বিষাদ সিন্ধু’ রচনার ইতিহাসও আশ্চর্যজনক! কারণ হিন্দুদের মধ্যে ধর্মীয় যুদ্ধ নিয়ে রচিত বঙ্কিমচন্দ্রের ‘দুর্গেশনন্দিনী’ উপন্যাস প্রকাশিত হওয়ার পর অনেকটা চ্যালেঞ্জ নিয়েই তিনি এর রচনায় হাত দেন।

ইয়াযীদ সম্পর্কে আমাদের অবস্থান

ইয়াযীদ ইবনু মু‘আবিয়া ইবনু আবি সুফিয়ান ইবনু হারব ইবনু উমাইয়াহ আল-উমাবী আদ-দামেস্কী। ইতিহাসে যিনি প্রথম ইয়াযীদ নামে পরিচিত। যার খেলাফতকালে এবং তারই অনুগত সেনাবাহিনী কর্তৃক শেষ নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তার হাত ছিল কি না, সেটাই আলোচ্য বিষয়। ইতিহাসে তার ব্যাপারে ভালো-খারাপ দুইভাবেই উপস্থাপন করা হয়।

ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) তার সম্পর্কে বলেন, তিনি কনস্টান্টিনোপলের যুদ্ধে সেনাপতি ছিলেন। সে যুদ্ধে আবূ আইয়ূব আল-আনছারী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর মত বিজ্ঞ ছাহাবীও উপস্থিত ছিলেন। তার পিতা মু‘আবিয়া (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাকে খেলাফতে অধিষ্ঠিত করেন। তিনি পিতার মৃত্যুর পরে ৬০ হিজরীর রজব মাসে শাসনভার গ্রহণ করেন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ৩৩ বছর। তার রাজত্ব চার বছরের কম সময় স্থায়ী ছিল। ইয়াযীদ এমন সব লোকদের মধ্যে একজন যাদেরকে আমরা গালাগালিও করব না আবার ভালও বাসব না।

শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়াহ (রাহিমাহুল্লাহ) ইয়াযীদ সম্পর্কে বলেন, তার সম্পর্কে মানুষ তিনভাগে বিভক্ত। দু’দল অতি বাড়াবাড়ি করে আরেকদল মধ্যপন্থী। সীমাহীন বাড়াবাড়ি করে একদল বলে, তিনি কাফের ও মুনাফিক ছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রতিশোধ নিতে সর্বদা প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতেন। তার মধ্যে দাদা উতবা, দাদার ভাই শাইবা, খালু ওয়ালিদ ইবনু উতবা ও অন্যান্য যাদেরকে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ছাহাবীগণ বদরের যুদ্ধে হত্যা করেছিলেন সে হত্যার প্রতিশোধ নিতে সর্বদা কাজ করত। এ ধরনের আক্বীদা শী‘আ (রাফেযী) সম্প্রদায়ের লোকেরা পোষণ করে থাকে। এ শী‘আরা আবূ বকর, ওমর, ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) ও আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর মত জান্নাতী ছাহাবীদেরকে কাফের বলে থাকে। তাদের কাছে ইয়াযীদকে কাফের বলা আরো অনেক সহজ।

শায়খুল ইসলাম বলেন, ‘দ্বিতীয় সীমালঙ্ঘনকারী দল মনে করে তিনি একজন সৎ, ন্যায়পরায়ণ ইমাম ছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ছাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত ও রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে কোলে নিয়েছেন এবং তার বরকতের জন্য দু‘আ করেছেন। আবার কেউ কোন ছাহাবীদের উপরেও মর্যাদা দিয়ে থাকে। আবার বর্তমানে ‘ইয়াযীদিয়্যাহ’ ফের্কা নামে ইরাকে যারা আছে, তারা ইয়াযীদকে নবীও মনে করে।

তৃতীয় দল, তারা মনে করেন যে, তিনি মুসলিম রাজা-বাদশাহদের একজন, তার দোষ-গুণ দুটোই ছিল। তিনি ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর খিলাফাতকালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কাফের ছিলেন না আবার ছাহাবীও ছিলেন না। তবে তার কারণেই হুসাইন (রাযিয়াল্লাহু আনহু) শহীদ হন এবং মদীনার আহলে হাররাদের সাথে যা ঘটেছিল তার জন্য তিনিই দায়ী। তিনি আল্লাহর ওলী ছিলেন না। এটা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের সর্বসম্মত মত। যদিও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত এ ব্যাপারে তিন ভাগে বিভক্ত। কেউ আছেন যারা তাকে লা‘নত করে থাকেন। কেউ তাকে ভালবাসেন। আর কেউ আছেন যারা তাকে ভালও বাসেন না আবার গালিও দেন না। অধিকাংশ মুসলিমসহ ইমাম আহমাদ বিন হাম্বলের এমনই অভিমত।

আবূ মুহাম্মাদ মাক্বদিসী (রাহিমাহুল্লাহ)-কে ইয়াযীদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমার কাছে এ মর্মে সংবাদ পৌঁছেছে যে, তাকে গাল-মন্দও করা যাবে না আবার ভালবাসাও যাবে না। আমার পূর্বপুরুষ আবূ আব্দুল্লাহ ইবনু তায়মিয়াহ (রাহিমাহুল্লাহ) -কে তার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমরা তার সম্পর্কে বেশি বাড়াবাড়ি বা ছাড়াছাড়ি কোনটাই করব না।[১৪]

সালাফদের মতে, ইয়াযীদ বিন মু‘আবিয়া রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ঘোষিত সেই কনস্টানন্টিনোপল (ইস্তাম্বুল) বিজয়ের যুদ্ধে আমীর হিসাবে অংশগ্রহণ করেছেন। যাদের সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রশংসাসূচক বাক্য ব্যবহার করেছেন। আর এ যুদ্ধটি হয়েছিল ৪৯ হিজরী মোতাবেক ৬৬৯ সালে। মু‘আবিয়া (রাযিয়াল্লাহু আনহু) সেখানে ৩ বার সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন। যার প্রথমে সেনাপতি ছিলেন ফুযালা বিন ওবাইদুল্লাহ আনছারী। ২য় বারে পাঠান সুফিয়ান ইবনু ‘আওফ এবং তৃতীয় বা সর্বশেষ যাদের পাঠান তাদের সেনাপতি ছিল ইয়াযীদ। এ অংশের সাথেই ছিলেন বিখ্যাত ছাহাবী আবূ আইয়ূব আনছারী (রাযিয়াল্লাহু আনহু), যিনি এ যুদ্ধেই মৃত্যুবরণ করেন এবং ইস্তাম্বুলের প্রাচীরের পাশেই তাকে দাফন করা হয়। ইবনু ওমর, ইবনু আব্বাস, হুসাইন বিন আলী ও ইবনু যুবাইর (রাযিয়াল্লাহু আনহুম)ও এ যুদ্ধে উপস্থিত ছিলেন বলে অনেকেই উল্লেখ করেছেন।[১৫] যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,أَوَّلُ جَيْشٍ مِنْ أُمَّتِىْ يَغْزُوْنَ مَدِيْنَةَ قَيْصَرَ مَغْفُوْرٌ لَهُمْ ‘আমার উম্মাতের প্রথম যে দলটি কায়সার-এর রাজধানী আক্রমণ করবে, তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত’।[১৬]

রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন, ‘অবশ্যই অবশ্যই ইস্তাম্বুল বিজয় হবে। আর সেই জয়ের যুদ্ধের আমীররা কতই না সুন্দর হবে, অনুরূপ ঐ যুদ্ধের সেনাবাহিনী হবে সৌভাগ্যবান’।[১৭] ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) ইয়াযীদ সম্পর্কে বলেন,

لَهُ عَلَى هَنَاتِهِ حَسَنَةٌ وَهِيَ غَزْوُ القُسْطَنْطِيْنِيَّةِ وَكَانَ أَمِيْرَ ذَلِكَ الْجَيْشِ وَفِيْهِم مِثْلُ أَبِيْ أَيُّوْبَ الْأَنْصَارِيِّ

অর্থাৎ ‘সে বড় অপরাধী হওয়ার পরেও তার একটি ভাল অধ্যায় আছে। আর তা হচ্ছে কনস্টানন্টিনোপল-এর যুদ্ধ। আর এ যুদ্ধে সে ছিল সেনাপতি তাদের মধ্যে আরো একজন হলেন বিখ্যাত ছাহাবী আবূ আইয়ূব আনছারী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)।[১৮] ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) একটি সূত্র উল্লেখ করে বলেন, তিনি মৃত্যুর পূর্বে এ বিষয়ে আফসোস করেছেন এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন। যেমন তিনি বলেন,

اَللّٰهُمَّ لَا تُؤَاخِذْنِيْ بِمَا لَمْ أُحِبُّهُ وَلَمْ أُرِدْهُ وَاحْكُمْ بَيْنِيْ وَبَيْنَ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ زِيَادٍ وَكَانَ نَقْشُ خَاتَمِهِ آمَنْتُ بِاللهِ الْعَظِيْمِ

‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে পাকড়াও কর না ঐ বিষয়ে যা আমি চাইনি এবং আমি এর প্রতিরোধও করতে পারিনি। হে আল্লাহ! তুমি আমার ও ওবাইদুল্লাহ বিন যিয়াদের মধ্যে ফায়ছালা কর। তার আংটিতে নকশা করা ছিল ‘আমি মহান আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি’।[১৯]

শেষ কথা

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে আমরা যে মুহাররমের শিক্ষা নেব তা হচ্ছে- হারাম মাস হিসেবে তাকে সম্মান করা, আশূরায়ে মুহাররমের ২ দিন ছিয়াম পালন করা, ছিয়ামের নিয়ত অবশ্যই নাজাতে মূসা উপলক্ষে হওয়া, ছিয়াম ৯-১০ রাখায় উত্তম তবে ১০-১১ তারিখও রাখা যায়, এ দিনকে লক্ষ্য করে সমাজে প্রচলিত রসম-রেওয়ায সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগ করা, হুসাইন (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর প্রশংসায় অতিরঞ্জিত না করা এবং ইয়াযীদকে গালমন্দ না করা, ইয়াযীদ সম্পর্কে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের পূর্বপুরুষগণ যে কথা বলেছেন, তাতেই সন্তুষ্ট থাকা। আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন এবং সৎ আমলগুলো কবুল করুন- আমীন!


* এম.ফিল গবেষক, আরবী বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

তথ্যসূত্র :
[১]. লিসানুল আরাব, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৬৯।
[২]. ছহীহ মুসলিম, হা/১১২৮; মিশকাত, হা/২০৬৯ ‘ছিয়াম’ অধ্যায়, ‘নফল ছিয়াম’ অনুচ্ছেদ-৬।
[৩]. ছহীহ মুসলিম, হা/১১৬৩।
[৪]. শারহু নববী, ৮ম খণ্ড, পৃ. ৩৮।
[৫]. ছহীহ মুসলিম, হা/১১৬২।
[৬]. ছহীহ মুসলিম, হা/১১৬২; তিরমিযী, হা/৭৫২।
[৭]. তিরমিযী, হা/৭৫৫।
[৮]. ছহীহ বুখারী, হা/২০০৪।
[৯]. ছহীহ মুসলিম, হা/১১৩০।
[১০]. ছহীহ মুসলিম, হা/১১৩৪।
[১১]. মুসনাদে আহমাদ, হা/২১৫৪।
[১২]. ছহীহ মুসলিম, হা/১১২৬।
[১৩]. ছহীহ বুখারী, হা/১২৯৭।
[১৪]. মাজমু‘আ ফাতাওয়া ইবনু তায়মিয়াহ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৪৮১-৪৮৩।
[১৫]. তারিখুত ত্বাবারী, তারিখুর রসূল ওয়াল মুলূক, ৫ম খ-, পৃ. ২৩২; তারীখু খলীফাহ ইবনু খাইয়াত্ব, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৯৭।
[১৬]. ছহীহ বুখারী, হা/২৯২৪।
[১৭]. মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৯৫৭।
[১৮]. সিয়ারু আ‘লাম আন-নুবালা, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৩৬।
[১৯]. আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ১১তম খণ্ড, পৃ. ৬৫৯।




দু‘আ ও যিকর : আল্লাহর অনুগ্রহ ও প্রশান্তি লাভের মাধ্যম (২য় কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
ছয়টি মূলনীতির ব্যাখ্যা (শেষ কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির
আধুনিক যুগে দাওয়াতী কাজের পদ্ধতি (২য় কিস্তি) - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী
মাযহাবী গোঁড়ামি ও তার কুপ্রভাব (৪র্থ কিস্তি) - অনুবাদ : রিদওয়ান ওবাইদ
আল-কুরআন এক জীবন্ত মু‘জিযা - আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইউনুস
তওবার গুরুত্ব ও ফযীলত (২য় কিস্তি) - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
পরবর্তীদের তুলনায় সালাফদের ইলমের শ্রেষ্ঠত্ব (২য় কিস্তি) - অনুবাদ : আযহার বিন আব্দুল মান্নান
জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামে ইসলাম শিক্ষার আবশ্যকতা - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
বিদ‘আত পরিচিতি (২৯তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
আল-কুরআনে বর্ণিত জাহেলি সমাজের দশটি চিত্র - তানযীল আহমাদ
ছয়টি মূলনীতির ব্যাখ্যা - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির
সূদ-ঘুষ ও অবৈধ ব্যবসা (৪র্থ কিস্তি) - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর

ফেসবুক পেজ