মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৯:৫৭ অপরাহ্ন

ইসলামের দৃষ্টিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা

-মুহাম্মাদ আযীযুর রহমান*


(৪র্থ কিস্তি)

ইসলাম ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে দুধ


পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে কীট-পতঙ্গের নামে কয়েকটি সূরা রয়েছে, যা মানুষের জন্য শিক্ষনীয়। যেমন, ‘নাহল’-অর্থ মৌমাছি, ‘আনকাবূত’-অর্থ মাকড়সা, ‘নামল’-অর্থ পিঁপড়া। মৌমাছির অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল মধু অসংখ্য ফলের নির্যাস থেকে তৈরি হয়, যা বহুরোগের প্রতিষেধক। পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপাদান, যা কখনও নষ্ট হয় না। মধু সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন,

ثُمَّ کُلِیۡ مِنۡ کُلِّ الثَّمَرٰتِ فَاسۡلُکِیۡ سُبُلَ رَبِّکِ ذُلُلًا یَخۡرُجُ مِنۡۢ بُطُوۡنِہَا شَرَابٌ مُّخۡتَلِفٌ اَلۡوَانُہ فِیۡہِ شِفَآءٌ لِّلنَّاسِ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً لِّقَوۡمٍ یَّتَفَکَّرُوۡنَ

‘এরপর প্রত্যেক ফল হতে কিছু কিছু আহার কর, অতঃপর তোমার প্রতিপালকের সহজ পথ অনুসরণ কর; ওর উদর হতে নির্গত হয় বিবিধ বর্ণের পানীয়; যাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগমুক্তি; অবশ্যই এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে’ (সূরা আন-নাহল ১৬/৬৯)।

মৌমাছি ও মধু সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞাতব্য


(১) মৌমাছির ৫টি চোখ আছে, যা দিয়ে সে সবদিক দেখতে পায়। মাথার উপরে ৩টি, ডানে-বামে ২টি। মৌমাছির ৫টি চোখ আমাদের ৩,৫০০টি চোখের সমান। তাই এরা বহু দূর থেকে মধু সংগ্রহ করতে পারে। এদের ডানাও ৪টি, যাতে এদের উড়তে সুবিধা হয়। প্রতিটি মৌচাকে মাত্র ১টি রাণী মৌমাছি থাকে। রাণী মৌমাছি ৩ সপ্তাহে ৬-১২ হাযার ডিম পাড়ে। প্রত্যেক চাকে ২০-৩০ হাযার মৌমাছি থাকে।[১]
(২) কোন মৌমাছি ময়লা-আবর্জনার মধ্যে বসলে বা ময়লা মাখলে রাণীর নির্দেশে তাকে চাকে ঢুকতে দেয়া হয় না; বরং তাকে হত্যা করা হয়।[২]
(৩) মাত্র ১০০ গ্রাম মধু আহরণ করতে মৌমাছিকে প্রায় ১০ লক্ষ ফুলে ভ্রমণ করতে হয়। ১ পাউন্ড মোম দিয়ে মৌমাছিরা ৩৫,০০০ কক্ষ তৈরি করতে পারে এবং এর মধ্যে মধু থাকে ২২ পাউন্ড বা প্রায় ১০ কেজি। মৌমাছিরা পরাগায়নে সহায়তা করে।[৩]
(৪) মধু পানিশূন্য পদার্থ। তাই মধু কখনও জমে না। মধু সহজে নষ্ট হয় না। কিন্তু অধিক তাপের কারণে এর খাদ্যগুণ ও সুগন্ধি নষ্ট হয়ে যায়।[৪]
উল্লেখ্য, মোম প্যারাফিন জাতীয় হাইড্রোকার্বন, যা ৬২ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় গলে যায়। কর্মী মৌমাছির পেটের নীচে ৪ জোড়া মোম গ্রন্থি থাকে। সে গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস বাতাসের সংস্পর্শে এসে জমাট বেঁধে তৈরি হয় মোম। মৌচাক ও মৌকোষ এই মোম দিয়ে তৈরি হয়।

মধু সম্পর্কে রাসূলূল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বাণী

(ألف) عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها قَالَتْ كَانَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعْجِبُهُ الْحَلْوَاءُ وَالْعَسَلُ

(ক) আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, রাসূলূল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিষ্টি ও মধু পসন্দ করতেন।[৫]

(ب) عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الشِّفَاءُ فِى ثَلاَثَةٍ شَرْطَةِ مِحْجَمٍ أَوْ شَرْبَةِ عَسَلٍ أَوْ كَيَّةٍ بِنَارٍ وَأَنْهَى أُمَّتِى عَنِ الْكَىِّ

(খ) আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তিনটি জিনিসের মধ্যে রোগের প্রতিষেধক রয়েছে। শিঙ্গা লাগানোতে, মধু পানে এবং আগুন দিয়ে দাগ দেয়াতে। তবে আমার উম্মতকে আগুন দিয়ে দাগ দেয়াকে নিষেধ করছি।[৬]

(ج) عَنْ أَبِى سَعِيْدٍ أَنَّ رَجُلًا أَتَى النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ أَخِىْ يَشْتَكِىْ بَطْنَهُ فَقَالَ اسْقِهِ عَسَلًا ثُمَّ أَتَى الثَّانِيَةَ فَقَالَ اسْقِهِ عَسَلًا. ثُمَّ أَتَاهُ فَقَالَ فَعَلْتُ فَقَالَ صَدَقَ اللهُ وَكَذَبَ بَطْنُ أَخِيْكَ اسْقِهِ عَسَلًا فَسَقَاهُ فَبَرَأَ

(গ) আবু সাঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, আমার ভাইয়ের পেটে অসুখ হয়েছে। তখন নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাকে মধু পান করাও। তাকে মধু পান করানো হল। লোকটি আবার এসে বলল, আরও বেড়ে গেছে। এভাবে তৃতীয়বার এসে একই অভিযোগ করল। তখন রাসূলূল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ (তাঁর কালামে) যা বলেছেন তা সত্য। তোমার ভাইয়ের পেট মিথ্যা (অর্থাৎ তার পেটে এখনও দুষিত পদার্থ রয়েছে)। অতঃপর (চতুর্থবার) তাকে মধু পান করানো হল এবং সে আরোগ্য লাভ করল।[৭]

মহান আল্লাহ মধু ও মধুমক্ষিকে আমাদের জন্য বিশেষ নে‘মত স্বরূপ দান করেছেন।

ইসলাম ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে পানি


মহান আল্লাহর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নে‘মত হচ্ছে পানি। পৃথিবীর সকল সৃষ্টি পানির উপর নির্ভরশীল। বৃষ্টির পানি স্বচ্ছ, সুমিষ্ট ও জীবাণুমুক্ত। বৃষ্টি শুরুর একটু পরে পানি সংগ্রহ করলে পানি জীবাণুমুক্ত হয়। বৃষ্টির পানি চর্ম রোগের জন্য উপকারী। পৃথিবীর ৪ ভাগের ৩ ভাগই পানি। আমাদের শরীরের বেশির ভাগই পানি। পানি তৃষ্ণা মেটায়। পানির অপর নাম জীবন, কথাটি ঠিক নয়। বরং বিশুদ্ধ পানির অপর নাম জীবন।

পানি সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলার বলেন,

اَوَ لَمۡ یَرَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡۤا اَنَّ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ کَانَتَا رَتۡقًا فَفَتَقۡنٰہُمَا وَ جَعَلۡنَا مِنَ الۡمَآءِ کُلَّ شَیۡءٍ حَیٍّ اَفَلَا یُؤۡمِنُوۡنَ

‘যারা কুফরী করে তারা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী মিলে ছিল ওতপ্রোতভাবে; অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম এবং প্রাণবান সমস্ত কিছু সৃষ্টি করলাম পানি হতে; তবুও কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না?’ (সূরা আল-আম্বিয়া : ৩০)। অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন,

وَ ہُوَ الَّذِیۡۤ اَرۡسَلَ الرِّیٰحَ بُشۡرًۢا بَیۡنَ یَدَیۡ رَحۡمَتِہ وَ اَنۡزَلۡنَا مِنَ السَّمَآءِ مَآءً طَہُوۡرًا

‘তিনি স্বীয় রহমতে সুসংবাদ বহনকারীরূপে বায়ু প্রেরণ করেন এবং আমি আকাশ হতে বিশুদ্ধ পানি বর্ষণ করি’ (সূরা আল-ফুরকান : ৪৮)। বৃষ্টির পানি বিশুদ্ধ। তাই এতে কোন ক্ষতিকারক দ্রব্য বা আর্সেনিক নেই। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

الَّذِیۡ جَعَلَ لَکُمُ الۡاَرۡضَ فِرَاشًا وَّ السَّمَآءَ بِنَآءً وَّ اَنۡزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَاَخۡرَجَ بِہلَّکُمۡ فَلَا تَجۡعَلُوۡا لِلّٰہِ اَنۡدَادًا وَّ اَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ

‘যিনি তোমাদের জন্য যমীনকে শয্যা ও আকাশকে ছাদ স্বরূপ করেছেন এবং যিনি আকাশ হতে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর তারা দ্বারা তোমাদের জন্য উপজীবিকা স্বরূপ ফলপুঞ্জ উৎপাদন করেন। অতএব তোমরা জেনে শুনে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২২)।

পানি পানের আদব

১. ডান হাতে গ্লাস ধরা।[৮]
২. বসে পান করা।[৯]
৩. বিসমিল্লাহ বলে পান করা।[১০]
৪. তিন নিঃস্বাসে পান করা।[১১]
৫. পানি পান শেষে আলহামদুলিল্লাহ বলা।[১২]
এছাড়া সুপেয় পানি তালাশ করে তা থেকে পান করা।[১৩] আর বিসমিল্লাহ বলে খাবার পাত্রের মুখগুলো বন্ধ করা এবং ঢেকে রাখা।[১৪] বড় মশকের মুখে মুখ লাগিয়ে পান না করা[১৫] এবং সোনা ও রূপার পাত্রে পান না করা।[১৬]

বরকতের পানি পান করা

জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। তখন আছরের ছালাতের সময়। অথচ আমাদের সাথে বেঁচে যাওয়া অল্প পানি ছাড়া কিছুই ছিল না। তখন সেটুকু একটি পাত্রে রেখে পাত্রটি নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে পেশ করা হল। তিনি পাত্রটির মধ্যে নিজর হাত প্রবেশ করালেন এবং আঙ্গুলগুলো ছড়িয়ে দিলেন। অতঃপর বললেন,

حَىَّ عَلَى أَهْلِ الْوُضُوْءِ الْبَرَكَةُ مِنَ اللهِ فَلَقَدْ رَأَيْتُ الْمَاءَ يَتَفَجَّرُ مِنْ بَيْنِ أَصَابِعِهِ فَتَوَضَّأَ النَّاسُ وَشَرِبُوْا فَجَعَلْتُ لَا آلُوْ مَا جَعَلْتُ فِىْ بَطْنِى مِنْهُ فَعَلِمْتُ أَنَّهُ بَرَكَةٌ . قُلْتُ لِجَابِرٍ كَمْ كُنْتُمْ يَوْمَئِذٍ قَالَ أَلْفًا وَأَرْبَعَمِائَةٍ

‘এসো! যাদের ওযূর দরকার আছে। বরকত তো আসে আল্লাহ তা‘আলার নিকট হতে’। জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, তখন আমি দেখলাম যে, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আঙ্গুলগুলোর ফাঁক থেকে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। লোকজন ওযূর করল এবং পানি পান করল। আমিও আমার পেটে যতটুকু সম্ভব ছিল ততটুকু পান করতে কসুর করলাম না। কেননা আমি জানতাম যে, এটি বরকতের পানি। রাবী বলেন, আমি জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-কে বললাম, সেদিন আপনারা কত জন ছিলেন? তিনি বললেন, এক হাযার চারশ’ জন’।[১৭] বর্তমানে বরকতযুক্ত পানি হল- জমজমের পানি। যেমনটি হাদীছে এসেছে,

আবু যার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আগমনের সংবাদ শুনে মক্কায় গিয়েছিলেন। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ হল। কথাবার্তার এক পর্যায়ে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, কতদিন যাবৎ এখানে অবস্থান করছ? তিনি বললেন, আমি এখানে ত্রিশদিন যাবৎ আছি। তিনি বললেন, তোমাকে কে খাদ্য দিত? আমি (আবু যার) বললাম, যমযম কূপের পানি ব্যতীত আমার জন্য অন্য কোন খাদ্য ছিল না। এ পানি পান করেই আমি স্থুলদেহী হয়ে গেছি, এমনকি আমার পেটের চামড়ায় ভাঁজ পড়েছে এবং আমি কখনও ক্ষুধার কোন দুর্বলতা বুঝতে পারিনি। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, إِنَّهَا مُبَارَكَةٌ إِنَّهَا طَعَامُ طُعْمٍ ‘এটি অতিশয় বরকতময়। এটি খাদ্যগুণ সমৃদ্ধ’ (যা অন্যান্য খাবারের মত পেট পূর্ণ করে দেয়)’।[১৮] আবুদাঊদ আত-ত্বায়ালাসী তাঁর ‘মুসনাদ’-এ মুসলিমের সনদে হাদীছটি বর্ণনা করেন এবং তিনি নিম্নোক্ত বাক্যটি উল্লেখ করেন, وشِفاءُ سَقْمٍ ‘আর এটি রোগ-ব্যাধি নিরাময়কারী’।[১৯]

যমযম পানির ফযীলত সম্পর্কে ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

خَيْرُ مَاءٍ عَلَى وَجْهِ الْأَرْضِ مَاءُ زَمْزَمَ وَفِيْهِ طَعَامٌ مِّنَ الطُّعْمِ وَشِفَاءٌ مِنَ السُّقْمِ

‘ভূপৃষ্ঠের সেরা পানি হল যমযমের পানি। এর মধ্যে রয়েছে পুষ্টিকর খাদ্য এবং রোগ হতে আরোগ্য’।[২০] জাবের (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বর্ণিত নিম্নোক্ত হাদীছটিতেও এই পানির ফযীলত বর্ণনা করে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, مَاءُ زَمْزَمَ لِمَا شُرِبَ لَهُ ‘যমযম পানি যে উদ্দেশ্যে পান করা হবে, সে উদ্দেশ্যই পূরণ হবে’।[২১] ইবনুল ক্বাইয়িম (৬৯১-৭৫১ হি.) বলেন, سَيِّدُ الْمِيَاهِ وَأَشْرَفُهَا وَأجَلُّهَا قَدْرًاً وَأَحَبُّهَا إِلَى النُّفُوْسِ وَأَغْلَاهَا ثَمَنًا ‘যমযম পানি হচ্ছে পানির সরদার। এটি যেমন সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পানি, তেমনি তা মানুষের নিকটে প্রিয়তর। এটি মানুষের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান পানি’।[২২]

পানির গুণ

(১) বাদ ফজর বাসি পেটে এক মুষ্টি চাউল ও ২ গ্লাস পানি পান করবে (চাউল গিলে খাবে)। যা পেটের গ্যাস নষ্ট করে দিবে।
(২) পানি কিডনির পাথর প্রতিরোধ করে এবং কিডনিকে ভাল রাখে। নিয়মিত পানি পান করলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।
(৩) মানসিক চাপ বা টেনশন কমায়। মস্তিষ্কে ৮৫% পানি থাকে। মস্তিষ্ক পানিশূন্য হলে সকল কর্মকাণ্ডে ভীষণ চাপ পড়ে। তৃষ্ণা পেলে বুঝতে হবে মস্তিস্কের পানি শুকিযে গেছে। তখন দ্রুত পানি পান করতে হবে।
(৪) হজমে সাহায্য করে। গোশত-মাছ, শাক-সবজি, আঁশযুক্ত সকল খাবার খাওয়ার পর যথানিয়মে হজমের জন্য প্রচুর পানির প্রয়োজন।
(৫) পানি ত্বককে সুন্দর ও সতেজ রাখে। পানি ত্বকের কোষকে পরিপূর্ণতা দেয়। মুখমণ্ডলকে তরুণ ও সতেজ দেখায়। পানি শূন্যতায় ত্বকের সৌন্দর্য ম্রিয়মান হয়।
(৬) পানি শরীরকে স্লিম রাখে ও ওজন কমায়।
(৭) পানি শক্তি যোগায়। তাই কর্মক্ষেত্রে বা সফরে হাতের কাছে সর্বদা পানি রাখবে। পানি পেলে গাছগুলোর মত আমাদের শরীরও সুন্দর ও সজীব হয়। পানির অভাবে রক্তের পরিমাণ, কোষে অক্সিজেন ও মিনারেল (নুন)-এর পরিমাণ কমে যায়।
(৮) এক গ্লাস পানির সাথে দুই টুকরো লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে রুচি বাড়ে।
(৯) পেশাব যখন পানির মত রং হবে, তখন বুঝতে হবে তা পানিশূন্যতামুক্ত। আর হলুদ বা অন্য কোন রং হলেই ২ গ্লাস পানি পান করবে।
(১০) শরীর গঠনে কাজ করে। কেননা শরীরের প্রতি জয়েন্টে পানি থাকে। পানি পেলেই মাংসপেশী অতি সহজে কাজ করতে পারে।[২৩]

ইসলাম ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে কালোজিরা

কালোজিরার বীজ ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এটা একটা ছোট নরম গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। ২০ ইঞ্চি উঁচু হয়। সাদা, নীল ও ঈষৎ পীত বর্ণের ফুল হয়। ফল গোলাকার হয়। প্রত্যেক বীজকোষে ত্রিকোণাকার কালো বর্ণের অনেক বীজ থাকে। কালোজিরা একটি বনজ ঔষধী। কালোজিরা অথবা এর তেল খালি পেটে সেবন করাই উত্তম। এক কথায় সকল রোগের জন্য মহান আল্লাহর উপর ভরসা করে এবং রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীছের উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে কালোজিরা বা এর তেল ব্যবহার করা অত্যন্ত ফলদায়ক ইনশাআল্লাহ।

কালোজিরাকে সব রোগের ঔষধ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। ১৯০৬ সালে মিসরের গবেষকরা নিশ্চিত হন যে, কালোজিরায় বিদ্যমান নাইজেলনের কারণে হাঁপানি উপশম হয়। জার্মানী গবেষকরা বলেন, কালোজিরার এন্টিব্যাকটেরিয়াল ও এ্যান্টি-মাইকোটিক প্রভাব রয়েছে। এটি বোনম্যারো ও প্রতিরক্ষা কোষগুলোকে উত্তেজিত করে এবং ইন্টারফেরন তৈরি বাড়িয়ে দেয়। আমেরিকার গবেষকরা প্রথম কালোজিরার টিউমার বিরোধী প্রভাব সম্পর্কে মতামত দেন। শরীরে ক্যান্সার উৎপাদনকারী ফ্রিরোডিক্যাল অপসারিত করতে পারে কালোজিরা। মোট কথা সব ধরনের রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ হিসাবে কালোজিরা তুলনাবিহীন। কালোজিরাকে আরবীতে ‘আল-হাব্বাতুস সাওদা’ (اَلْحَبَّةِ السَّوْدَاءِ) ইংরেজীতে Black Cumin (ব্লাক কিউমিন) বলে।

কালোজিরা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণী

عَنِ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ فِى الْحَبَّةِ السَّوْدَاءِ شِفَاءٌ مِنْ كُلِّ دَاءٍ إِلَّا السَّامَ. قَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَالسَّامُ الْمَوْتُ وَالْحَبَّةُ السَّوْدَاءُ الشُّوْنِيْزُ

আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেছেন, কালোজিরা সাম ব্যতীত সকল রোগের ঔষধ। ইবনু শিহাব (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘সাম’ অর্থ হল ‘মৃত্যু’ এবং কালোজিরার উপর নাম ‘শূনীয’।[২৪] অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে,

عَنْ خَالِدِ بْنِ سَعْدٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ خَرَجْنَا وَمَعَنَا غَالِبُ بْنُ أَبْجَرَ فَمَرِضَ فِى الطَّرِيْقِ فَقَدِمْنَا الْمَدِيْنَةَ وَهْوَ مَرِيْضٌ فَعَادَهُ ابْنُ أَبِىْ عَتِيْقٍ فَقَالَ لَنَا عَلَيْكُمْ بِهَذِهِ الْحُبَيْبَةِ السَّوْدَاءِ فَخُذُوْا مِنْهَا خَمْسًا أَوْ سَبْعًا فَاسْحَقُوْهَا ثُمَّ اقْطُرُوْهَا فِىْ أَنْفِهِ بِقَطَرَاتِ زَيْتٍ فِىْ هَذَا الْجَانِبِ وَفِىْ هَذَا الْجَانِبِ فَإِنَّ عَائِشَةَ حَدَّثَتْنِىْ أَنَّهَا سَمِعَتِ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ إِنَّ هَذِهِ الْحَبَّةَ السَّوْدَاءَ شِفَاءٌ مِنْ كُلِّ دَاءٍ إِلَّا مِنَ السَّامِ قُلْتُ وَمَا السَّامُ قَالَ الْمَوْتُ

খালেদ ইবনু সা‘দ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমরা (যুদ্ধের অভিযানে) বের হলাম। আমাদের সঙ্গে ছিলেন গালিব ইবনু আবজার। তিনি পথে অসুস্থ হয়ে গেলেন। এরপর আমরা মদীনায় ফিরলাম; তখনও তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাঁকে দেখাশুনা করতে আসেন ইবনু আবু আতীক্ব। তিনি আমাদের বললেন, তোমরা এ কালোজিরা সাথে রেখ। এত্থেকে পাঁচটি কিংবা সাতটি দানা নিয়ে পিষে ফেলবে, তারপর তন্মধ্যে যাইতুনের কয়েক ফোঁটা তেল ঢেলে দিয়ে তার নাকের এদিক-ওদিকের ছিদ্র দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা করে প্রবিষ্ট করাবে। কেননা আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন যে, তিনি নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, এই কালো জিরা ‘সাম’ ছাড়া সকল রোগের ঔষধ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘সাম’ কী? তিনি বললেন, মৃত্যু।[২৫]

কালোজিরার উপকারিতা

(১) কালোজিরা মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিকারক ও কৃমিনাশক।
(২) সন্তান প্রসবের পর মায়ের শরীরের সুস্থতা আনয়ন ও ব্যথার উপশমকারী।
(৩) বাতের ব্যথা সহ যেকোন চর্মরোগ ও যৌন রোগের ফলদায়ক ঔষধ। কালোজিরার তেল হালকা গরম করে ব্যথার স্থানে মালিশ করলে ব্যথা সেরে যাবে।
(৪) জণ্ডিস ও ঘুম কম হওয়ার জন্য বিশেষ উপকারী।
(৫) শারীরিক দুর্বলতা ও সর্দি-কাশির উপশমকারী।
(৬) গলাফোলা, টনসিল, গলা ব্যথা ও কাশির জন্য চাল ও পুড়া কালোজিরা বেটে ফোলা বা ব্যথার স্থানে প্রলেপ দিলে সেরে যাবে ইনশাআল্লাহ।
(৭) মাথা যন্ত্রণার জন্য কালোজিরা হালকা ভেজে বেটে পুটলি করে শুকতে হবে। মাঝে মাঝে একটু রগড়িয়ে নিতে হবে।
(৮) চায়ের সঙ্গে মধু ও ৫/৭ ফোঁটা কালোজিরার তেল খুবই উপকারী। ডায়াবেটিসেও সমস্যা হয় না।
(৯) চুল পড়া বন্ধের জন্য গোসলের ৩০ মিনিট পূর্বে মাথায় লেবুর রস দিয়ে মেখে শুকিয়ে নিবে। অতঃপর সাবান বা শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করবে। তারপর মাথায় কালোজিরার তেল মাখবে। এভাবে প্রতি সপ্তাহে ১ বার করে ৪ সপ্তাহ লাগালে চুল পড়া বন্ধ হয়ে যায়।
(১০) সর্দি ও নাকের রোগের জন্য কালোজিরার তেলে তাপ দিয়ে নাকে ধোয়া নিলে উপকার হয়।
(১১) ডায়রিয়া ও বদহজমের জন্য দধির সাথে কালোজিরার তেল প্রতিদিন ৩ বার কমপক্ষে ৩ দিন খেতে হবে।
(১২) হাম, বসন্ত ও সিফিলিস রোগের জন্য উচ্ছে বা করলা পাতার রস, মধু ও কালোজিরার তেল দিনে ৩ বার খাবে।[২৬]
(১৩) মেদ কমাতে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে চা পাতা ও কালোজিরা পানিতে মিশিয়ে ছেঁকে চায়ের মত পান করবে। নিয়মিত পান করলে মেদ কমে যাবে।
(১৪) দাঁতের ব্যথায় পানিতে কালোজিরা দিয়ে ফুটিয়ে কুসুম গরম পানিতে কুলি করবে। দাঁত ব্যথা ও রক্ত পড়া বন্ধ হবে। জিহ্বার ও মুখের জীবাণু ধ্বংস হবে।[২৭]

(চলবে ইনশাআল্লাহ)

* চাঁদপুর, খুলনা।

তথ্যসূত্র :
[১]. বিজ্ঞান না কুরআন, পৃ. ১১০-১১১।
[২]. প্রাগুক্ত।
[৩]. মাসিক আত-তাহরীক, জুন-২০০২।
[৪]. প্রাগুক্ত।
[৫]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৮২ ‘চিকিৎসা’ অধ্যায়-৭৬, অনুচ্ছেদ-৪।
[৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৮১ ‘চিকিৎসা’ অধ্যায়-৭৬, অনুচ্ছেদ-৪।
[৭]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৮৪ ‘চিকিৎসা’ অধ্যায়-৭৬, অনুচ্ছেদ-৪।
[৮]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৩৭৬; ছহীহ মুসলিম, হা/২০২২; মিশকাত, হা/৪১৫৯।
[৯]. ছহীহ মুসলিম, হা/২০২৪; মিশকাত, হা/৪২৬৬।
[১০]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৩৭৬; ছহীহ মুসলিম, হা/২০২২; মিশকাত, হা/৪১৫৯।
[১১]. ছহীহ মুসলিম, হা/২০২৮; মিশকাত, হা/৪২৬৩।
[১২]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৭৩৪; মিশকাত, হা/৪২০০।
[১৩]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬১১; ছহীহ মুসলিম, হা/৯৯৮; মিশকাত, হা/১৯৪৫।
[১৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬২৩; ছহীহ মুসলিম, হা/২০১২; মিশকাত, হা/৪২৯৪।
[১৫]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬২৯; আবূ দাঊদ, হা/৩৭১৯।
[১৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৩২; ছহীহ মুসলিম, হা/২০৬৭; মিশকাত, হা/৪২৭২।
[১৭]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৩৯ ‘পানীয়’ অধ্যায়-৭৪, ‘বরকত পান করা ও বরকত যুক্ত পানির বর্ণনা’ অনুচ্ছেদ-৩১।
[১৮]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৪৭৩; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৭১৩৩।
[১৯]. মুসনাদে ত্বায়ালাসী, হা/৪৫৯; ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১১৬২, সনদ ছহীহ।
[২০]. ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল আওসাত্ব, হা/৩৯১২; ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১১৬১; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১০৫৬, সনদ হাসান।
[২১]. ইবনু মাজাহ, হা/৩০৬২; আল-মুসতাদরাক ‘আলাছ ছহীহাইন, হা/১৭৩৯; ইরওয়াউল গালীল, হা/১১২৩, সনদ ছহীহ।
[২২]. মুহাম্মাদ ইবনু আবুবকর ইবনু আইয়ূব ইবনু সা‘দ শামসুদ্দীন ইবনে ক্বাইয়িম আল-জাওযিয়া, যাদুল মা‘আদ ফী হাদই খায়রিল ইবাদ (বৈরূত : মুওয়াস্সাসাতুর রিসালাহ, ২৭ তম সংস্করণ ১৪১৫ হি./১৯৯৪ খ্রি.) ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৩৯২।
[২৩]. মাসিক আত-তাহরীক, নভেম্বর ২০১১।
[২৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৮৮ ‘কালোজিরা’ অনুচ্ছেদ-৭, ‘চিকিৎসা’ অধ্যায়-৭৬; ছহীহ মুসলিম, হা/২২১৫; ইবনু মাজাহ, হা/৩৪৪৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৫৪৮; মিশকাত, হা/৪৫২০।
[২৫]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৬৮৭ ‘কালোজিরা’ অনুচ্ছেদ-৭, ‘চিকিৎসা’ অধ্যায়-৭৬।
[২৬]. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক জনাব ড. আবুল হাসান, জনাব ড. হাসান শামসী ও আবদুস ফদা মোহাম্মদ ইজ্জত কর্তৃক প্রণীত ‘স্বাস্থ্য রক্ষায় মধু ও কালোজিরা’ নামক গ্রন্থ ও ভেষজ বিজ্ঞানের অন্যান্য গ্রন্থ হতে সংগৃহীত।
[২৭]. দৈনিক আমাদের সময়, ২৫/০৬/২০১৫।




মসজিদ : ইসলামী সমাজের প্রাণকেন্দ্র - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ইসলামী পুনর্জাগরণের প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায় (৮ম কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ইসলামে পর্দার বিধান - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
তারুণ্যের উপর সন্ত্রাসবাদের  হিংস্র ছোবল : প্রতিকারের উপায় (২য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ইমাম মাহদী, দাজ্জাল ও ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আগমন : সংশয় নিরসন (৪র্থ কিস্তি) - হাসিবুর রহমান বুখারী
মহামারী থেকে বেঁচে থাকার দশটি উপদেশ - অনুবাদ : আযহার বিন আব্দুল মান্নান
ইসলামী পুনর্জাগরণের মূলনীতি (শেষ কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ঈদুল ফিতরে করণীয় ও বর্জনীয় - আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
বিদ‘আত পরিচিতি (১৪তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ (৮ম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
সূদ-ঘুষ ও অবৈধ ব্যবসা - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
গোপন পাপ: ভয়াবহতা ও পরিত্রাণের উপায় অনুসন্ধান - ড. মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ

ফেসবুক পেজ