মসজিদ: ইসলামী সমাজের প্রাণকেন্দ্র
- ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান*
(১০ম কিস্তি)
৩- মসজিদ কেন্দ্রিক নিষিদ্ধ কর্মকাণ্ডসমূহ
মসজিদ আল্লাহর ঘর। আল্লাহর পসন্দনীয় জায়গা। মুসলিম মাত্রই মসজিদের পবিত্রতা বজায় রাখবে। পরিষ্কারের প্রতি একান্ত খেয়াল রাখবে। মসজিদের শিষ্টাচারকে কলুষিত করে, এমন কোন কাজ সে করবে না। ইসলামী শরী‘আতের দৃষ্টিতে মসজিদের পবিত্রতা বজায় রাখার স্বার্থে মসজিদে যেসব কাজ করা নিষিদ্ধ নিম্নে সেগুলো উল্লেখ করা হল:
তাহিইয়াতুল মসজিদ ছালাত আদায় না করা
মসজিদে প্রবেশ করে বসার পূর্বে দু’রাক’আত ছালাত আদায় করা সুন্নাত, যাকে ‘তাহিইয়াতুল মসজিদ’ বলে। আবূ কাতাদা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেন,
إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلَا يَجْلِسْ حَتَّى يُصَلِّىَ رَكْعَتَيْنِ
‘তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে দু’ রাক‘আত ছালাত আদায় করার পূর্বে বসবে না’। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, ‘সে যেন বসার পূর্বে দু’ রাক‘আত ছালাত আদায় করে নেয়’।[১] অতএব মসজিদে প্রবেশের পরে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় না করে বসা যাবে না।
আযানের পরে মসজিদ থেকে বের হওয়া
মসজিদের সম্মান-মর্যাদা ও পবিত্রতা রক্ষার ক্ষেত্রে অন্যতম বর্জনীয় বিষয় হলো: আযানের পরে মসজিদ থেকে বের হওয়া। বিনা ওযরে আযানের পরে মসজিদ থেকে বের হওয়া ঠিক নয়। আল-আশ‘আস ইবনু আবিস শা‘সা আল-মাহারিবী (রাহিমাহুল্লাহ) তিনি তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করে বলেন যে, একদা আমরা আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর নিকটে বসে ছিলাম। অতঃপর মুওয়াজ্জিন আযান দিলে জনৈক এক ব্যক্তি মসজিদ থেকে বের হয়ে গেল। তখন আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, এটা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অস্বীকার করেছেন। এমর্মে রাসূল (ﷺ) বলেন,
إِذَا أَذَّنَ الْمُؤَذِّنُ فَلَا يَخْرُجْ أَحَدٌ حَتَّى يُصَلِّيَ
‘যখন মুওয়াযযিন আযান দেয়, তখন কেউ যেন ছালাত আদায় না করে মসজিদ থেকে বের না হয়’।[২]
মসজিদকে রাস্তা হিসাবে গ্রহণ করা
মসজিদ আল্লাহর ঘর ও সেখানে একমাত্র তাঁর ‘ইবাদত করা হয়ে থাকে। এছাড়া তাসবীহ-তাহলীল, যিকির-আযকার ও বিভিন্ন ‘ইবাদত-বন্দেগীর অন্যতম স্থান হলো মসজিদ। সুতরাং ‘ইবাদত ব্যতীত শুধু কেবল চলাচলের জন্য মসজিদকে রাস্তা হিসাবে গ্রহণ করতে রাসূল (ﷺ) নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, لَا تَتَّخَذُوْا الْمَسَاجِدَ طُرُقًا إِلَّا لِذِكْرٍ أَوْ صَلَاةٍ ‘তোমরা মসজিদকে রাস্তা হিসাবে গ্রহণ কর না। সেটা কেবল যিকর ও ছালাতের জন্য’।[৩]
মসজিদে কণ্ঠস্বর উঁচু বা শোরগোল না করা
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান হলো মসজিদ আর সর্বনিকৃষ্ট স্থান হলো বাজার। এছাড়া আল্লাহর নিকট সর্বাধিক পসন্দনীয় জায়গা হলো মসজিদ। সুতরাং এখানে কোন বিষয়ে হৈ চৈ করা যাবে না। এটি হচ্ছে ‘ইবাদতের জায়গা। এখানে ‘ইবাদত ছাড়া অন্য কিছু করা উচিত নয়। আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
قَالَ اعْتَكَفَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ فِى الْمَسْجِدِ فَسَمِعَهُمْ يَجْهَرُوْنَ بِالْقِرَاءَةِ فَكَشَفَ السِّتْرَ وَقَالَ أَلَا إِنَّ كُلَّكُمْ مُنَاجٍ رَبَّهُ فَلَا يُؤْذِيَنَّ بَعْضُكُمْ بَعْضًا وَلَا يَرْفَعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَعْضٍ فِى الْقِرَاءَةِ أَوْ قَالَ فِى الصَّلَاةِ.
‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মসজিদে ই‘তিকাফকালে ছাহাবীদেরকে উচ্চৈঃস্বরে ক্বিরাআত পড়তে শুনে পর্দা সরিয়ে বললেন, জেনে রেখ! তোমাদের প্রত্যেকেই স্বীয় রবের সাথে গোপনে মুনাজাতে রত আছ। কাজেই তোমরা পরস্পরকে কষ্ট দিও না এবং পরস্পরের সামনে ক্বিরাআতে অথবা ছালাতে আওয়াজ উঁচু করো না’।[৪] ইবনু ‘উমার ও ‘আব্দুল্লাহ ইবনু আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) হতে বর্ণিত,
خَرَجَ عَلَى النَّاسِ وَهُمْ يُصَلُّوْنَ وَقَدْ عَلَتْ أَصْوَاتُهُمْ بِالْقِرَاءَةِ فَقَالَ إِنَّ الْمُصَلِّيَ يُنَاجِي رَبَّهُ فَلْيَنْظُرْ بِمَا يُنَاجِيْهِ بِهِ وَلَا يَجْهَرْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَعْضٍ بِالْقُرْآنِ.
‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একদল লোকের নিকট আগমন করলেন, সে সময় তারা ছালাত আদায় করছিল এবং উচ্চকন্ঠে কুরআন তেলাওয়াত করছিল। তা দেখে তিনি বললেন, ছালাত আদায়কারী ছালাতরত অবস্থায় তার প্রতিপালকের সাথে মুনাজাত করে। তাই তার উচিত সে কিরূপে মুনাজাত করে তার প্রতি লক্ষ্য রাখা। অতএব একজনের কুরআন তেলাওয়াতের শব্দ অন্যজনের কানে যেন না পৌঁছে’।[৫]
অতএব মসজিদে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা, গল্প-গুজব, হৈ চৈ থেকে বিরত থাকতে হবে। সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি মসজিদে নববীতে দাঁড়িয়েছিলাম। এমন সময় একজন লোক আমার দিকে একটা কাঁকর নিক্ষেপ করল। আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে, তিনি ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাযিয়াল্লাহু আনহু)। তিনি বললেন, যাও, এ দু’জনকে আমার নিকট নিয়ে এসো। আমি তাদেরকে নিয়ে তাঁর নিকটে আসলাম। তিনি বললেন, তোমরা কারা? অথবা তিনি বললেন, তোমরা কোথাকার লোক? তারা বলল, আমরা ত্বায়েফের অধিবাসী। তিনি বললেন,
لَوْ كُنْتُمَا مِنْ أَهْلِ الْبَلَدِ لأَوْجَعْتُكُمَا، تَرْفَعَانِ أَصْوَاتَكُمَا فِىْ مَسْجِدِ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ.
‘তোমরা যদি এই মদীনার বাসিন্দা হতে তবে মসজিদে উচ্চৈঃস্বরে কথা বলার কারণে আমি দু’জনকেই কঠোর শাস্তি দিতাম’।[৬] অতএব মসজিদে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা, গল্প-গুজব, হৈ চৈ থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক।
বলাই বাহুল্য যে, মসজিদের যে প্রতিবেশী অথবা অন্য লোক যে (মাইক, টেপ, রেডিও প্রভৃতির) শব্দ বা গান-বাজনা দ্বারা অথবা কোন রঙ্-তামাশাদ্বারা মসজিদের পবিত্রতা-হানি করে এবং মসজিদে অবস্থিত মুছল্লীদের ছালাতে, তিলাওয়াতে ও আল্লাহর যিক্রে ব্যাঘাত ও বাধা সৃষ্টি করে তার ভয় হওয়া উচিত। কারণ মহান আল্লাহর সাধারণ উক্তি এই যে,
وَ مَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنۡ مَّنَعَ مَسٰجِدَ اللّٰہِ اَنۡ یُّذۡکَرَ فِیۡہَا اسۡمُہٗ وَ سَعٰی فِیۡ خَرَابِہَا ؕ اُولٰٓئِکَ مَا کَانَ لَہُمۡ اَنۡ یَّدۡخُلُوۡہَاۤ اِلَّا خَآئِفِیۡنَ ۬ؕ لَہُمۡ فِی الدُّنۡیَا خِزۡیٌ وَّ لَہُمۡ فِی الۡاٰخِرَۃِ عَذَابٌ عَظِیۡمٌ.
‘এবং যে কেউ আল্লাহর মসজিদসমূহের মধ্যে তাঁর নাম উচ্চারণ করতে নিষেধ করেছে এবং তা ধ্বংস করতে প্রয়াস চালিয়েছে, তার অপেক্ষা কে অধিক অত্যাচারী? এ ধরনের ব্যক্তিদেরকে শঙ্কিত অবস্থায়ই তন্মধ্যে প্রবেশ করা উচিত; তাদের জন্য ইহলোকের দুর্গতি এবং পরলোকে কঠোর শাস্তি রয়েছে’।[৭]
জুনুবী, হায়েয ও নেফাসওয়ালীদের মসজিদে অবস্থান না করা
মসজিদ যে পবিত্র গৃহ তার বাস্তব প্রমাণ হলো যে, গোসল ফরয হওয়ার পর জুনুবী অবস্থায় এবং হায়েয-নেফাস অবস্থায় মসজিদে অবস্থান করা সমীচীন নয়। ‘আয়িশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা নবী করীম (ﷺ) আমাকে বললেন, نَاوِلِيْنِي الْخُمْرَةَ مِنَ الْمَسْجِدِ فَقُلْتُ إِنِّيْ حَائِضٌ فَقَالَ إِنَّ حَيْضَتَكِ لَيْسَتْ فِيْ يَدِكِ ‘মসজিদ থেকে আমাকে মাদুরটি এনে দাও। আমি বললাম, আমি হায়েযা বা ঋতুবতী। তিনি বললেন, তোমার হায়েয তোমার হাতে নেই’।[৮]
মহিলাদের সুগন্ধি মেখে ও বেপর্দা অবস্থায় মসজিদে না আসা
ইসলামী শরী‘আতের অন্যতম নির্দেশনা হলো যে, মহিলারা মসজিদে গিয়ে ছালাত আদায় করতে পারে। তবে তাদের জন্য কিছু বিধি-নিষেধ রয়েছে। যেমন কোন মহিলা সুগন্ধি ব্যবহার করে মসজিদে প্রবেশ করতে পারবে না। ‘আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-এর স্ত্রী যায়নাব (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,إِذَا شَهِدَتْ إِحْدَاكُنَّ الْمَسْجِدَ فَلَا تَمَسَّ طِيْبًا ‘তোমাদের মধ্যে কোন নারী মসজিদে গেলে সে যেন সুগন্ধি ব্যবহার না করে’।[৯] এছাড়া এমন বেপর্দা হয়ে মসজিদে আগমন করবে না, যাতে করে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ পায়।[১০]
মসজিদে থুথু ফেলা নিষেধ
যেখানে সেখানে থুথু ফেলা শিষ্টাচার পরিপন্থী অভ্যাস। সমাজে কিছু মানুষ আছে যারা যেখানে সেখানে ক্বফ ও থুথু ফেলতে দ্বিধাবোধ করে না। মূলত তাদের মাঝে শিষ্টতা ও সৌজন্যবোধের উন্নত মানসিকতা অনুপস্থিত। আবার কিছু মানুষ এমন রয়েছে, যারা দুনিয়ার সবচেয়ে সর্বোত্তম স্থান মসজিদেও থুথু, কফ ও শ্লেষ্মা ফেলে থাকে, যা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। কেননা এটার মাধ্যমে মসজিদ তো নোংরা হয়ই, উপরন্তু উক্ত কাজের কারণে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর রেগে যেতেন। রাসূল (ﷺ) বলেন, الْبُزَاقُ فِى الْمَسْجِدِ خَطِيئَةٌ، وَكَفَّارَتُهَا دَفْنُهَا ‘মসজিদে থুথু ফেলা পাপ, তার প্রতিকার হলো তা মিটিয়ে ফেলা’।[১১]
উম্মুল মুমিনীন ‘আয়িশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ رَأَى فِىْ جِدَارِ الْقِبْلَةِ مُخَاطًا أَوْ بُصَاقًا أَوْ نُخَامَةً فَحَكَّهُ.
‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মসজিদের ক্বিবলার দিকের দেওয়ালে শিকনী বা থুথু অথবা কফ লেগে থাকতে দেখে তা খুচিয়ে উঠাতেন’।[১২] ‘আয়িশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে অন্য হাদীছে বর্ণিত হয়েছে,أَمَرَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ بِبِنَاءِ الْمَسَاجِدِ فِى الدُّوْرِ وَأَنْ تُنَظَّفَ وَتُطَيَّبَ ‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মহল্লায় বা জনবসতিপূর্ণ স্থানে মসজিদ নির্মাণ করার এবং তা পরিচ্ছন্ন ও সুগন্ধিময় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন’।[১৩]
আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
رَأَى رَسُوْلُ اللهِ ﷺ نُخَامَةً فِىْ قِبْلَةِ الْمَسْجِدِ فَغَضِبَ حَتَّى احْمَرَّ وَجْهُهُ فَقَامَتِ امْرَأَةٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَحَكَّتْهَا وَجَعَلَتْ مَكَانَهَا خَلُوْقًا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَا أَحْسَنَ هَذَا.
‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মসজিদে ক্বিবলার দিকে থুথু দেখতে পেয়ে খুবই রাগান্বিত হন, এমনকি তাঁর চেহারা রক্তিমবর্ণ ধারণ করে। এক আনছারী মহিলা এসে তা (থুথু) মুছে ফেলেন এবং সে স্থানে সুগন্ধি লাগিয়ে দেন। তখন রাসূল (ﷺ) বলেন, এটা (সুগন্ধি) কতই উত্তম! [১৪] অন্যত্র আবূ যার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন,
عُرِضَتْ عَلَىَّ أُمَّتِىْ بِأَعْمَالِهَا حَسَنِهَا وَسَيِّئِهَا فَرَأَيْتُ فِىْ مَحَاسِنِ أَعْمَالِهَا الْأَذَى يُنَحَّى عَنِ الطَّرِيْقِ وَرَأَيْتُ فِىْ سَيِّئِ أَعْمَالِهَا النُّخَاعَةَ فِى الْمَسْجِدِ لَا تُدْفَنُ.
‘আমার উম্মতের ভাল ও মন্দ কার্যাবলী আমার সামনে পেশ করা হলে, আমি তাদের ভাল কার্যাবলীর মধ্যে যাতায়াতের পথ থেকে তাদের কষ্টদায়ক বস্তু সরানোও অন্তর্ভুক্ত দেখতে পেলাম এবং তাদের নিকৃষ্ট কষ্টদায়ক বস্তুর মধ্যে মসজিদে থুথু ফেলাও অন্তর্ভুক্ত দেখতে পেলাম, যা (মাটি দিয়ে) ঢেকে দেয়া হয়নি’।[১৫]
উল্লেখ্য, দেশের অধিকাংশ মসজিদের মেহরাবের দক্ষিণ দেয়ালে থুথু ফেলার জন্য ছোট্ট একটি জানালা রাখা হয়। এ ব্যাপারে শরী‘আত বিধান হলো: প্রয়োজন সাপেক্ষে জানালা রাখা যেতে পারে। সেটা হতে পারে থুথু ফেলার জন্য কিংবা আলো-বাতাসের জন্য অথবা অন্যকোন কারণে। হাদীছে বামদিকে থুথু ফেলার ব্যপারে কিছু বর্ণনা এসেছে। নবী করীম (ﷺ) বলেন,
إِذَا تَنَخَّمَ أَحَدُكُمْ فَلَا يَتَنَخَّمَنَّ قِبَلَ وَجْهِهِ وَلَا عَنْ يَمِيْنِهِ وَلْيَبْصُقْ عَنْ يَسَارِهِ أَوْ تَحْتَ قَدَمِهِ الْيُسْرَى.
‘তোমাদের কেউ ছালাতে দাঁড়ালে সে যেন তার সামনের (ক্বিবলার) দিকে থুথু না ফেলে। কারণ সে যতক্ষণ তার মুছাল্লায় থাকে, ততক্ষণ মহান আল্লাহ্র সাথে চুপে চুপে কথা বলে। আর ডান দিকেও ফেলবে না। তার ডান দিকে থাকেন ফেরেশতা। সে যেন তার বাম দিকে অথবা পায়ের নিচে থুথু ফেলে এবং পরে তা দাবিয়ে দেয়’।[১৬] উক্ত হাদীছের আলোকে বামদিকে অর্থাৎ দক্ষিণ দিকে থুথু নিক্ষেপ করার অনুমোদন প্রমাণিত হয়। শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘মসজিদে থাকাবস্থায় যদি কারোর থুথু নিক্ষেপ করার প্রয়োজন হয়, তাহলে সে বামদিকে অর্থাৎ দক্ষিণ দিকে নিক্ষেপ করবে। তা না হলে রুমালে কিংবা কাপড়ে নিক্ষেপ করে মুছে ফেলবে’।[১৭]
ছাহাবী হুযাইফা ইবনু ইয়ামান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেন, مَنْ تَفَلَ تِجَاهَ الْقِبْلَةِ جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ تَفْلُهُ بَيْنَ عَيْنَيْهِ ‘যে ব্যক্তি ক্বিবলার দিকে থুথু নিক্ষেপ করে ক্বিয়ামতের দিন সে ঐ থুথু নিজের দু’চোখের মধ্যখানে পতিত অবস্থায় উপস্থিত হবে’।[১৮] হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘মসজিদের ভিতরে অথবা বাহিরে উভয়াবস্থাতেই ক্বিবলার দিকে এবং ডান দিকে অর্থাৎ উত্তর দিকে থুথু নিক্ষেপ করা নিষেধ’।[১৯]
দুই খুঁটির মাঝখানে কাতার করা
জামা‘আতে ছালাত আদায় করার জন্য মসজিদ একান্ত প্রয়োজন। প্রয়োজনের তাকীদে গ্রাম-গঞ্জে ও শহরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য মসজিদ। আর বড় বড় মসজিদ গুলোর মাঝে রয়েছে প্রয়োজনীয় খুঁটি। বড় মসজিদগুলোতে খুঁটি থাকবে এটাই স্বাভাবিক, তাছাড়া রাসূল (ﷺ)-এর যুগেও মসজিদের মাঝে খুঁটি ছিল। কিন্তু সে যুগে দুই খুঁটির মাঝখানে কাতার করা হতো না, যা বর্তমানে অনেক মসজিদের দেখা যায়। যা পরিত্যাগ করা আবশ্যক। হাদীছে বর্ণিত হয়েছে, আব্দুল হামীদ ইবনু মাহমুদ (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
صَلَّيْنَا خَلْفَ أَمِيْرٍ مِنَ الْأُمَرَاءِ فَاضْطَرَّنَا النَّاسُ فَصَلَّيْنَا بَيْنَ السَّارِيَتَيْنِ فَلَمَّا صَلَّيْنَا قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ كُنَّا نَتَّقِى هَذَا عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ
‘আমরা জনৈক আমীরের পিছনে ছালাত আদায় করলাম। লোকের এত ভিড় হলো যে-আমরা বাধ্য হয়ে খুঁটির মাঝখানে ছালাতে দাঁড়ালাম। যখন ছালাত শেষ করলাম, তখন আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, আমরা রাসূল (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর সময়ে (এভাবে দাঁড়ানো) এড়িয়ে যেতাম’।[২০] অন্যত্র মু‘আবিয়া ইবনু কুর্রাহ (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত, তিনি তার পিতা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন,
كُنَّا نُنْهَى أَنْ نَصُفَّ بَيْنَ السَّوَارِى عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ وَنُطْرَدُ عَنْهَا طَرْدًا.
‘রাসূল (ﷺ)-এর যামানায় আমাদেরকে দুই খুঁটির মাঝখানে কাতারবন্দী হতে নিষেধ করা হতো এবং আমাদেরকে (এটি হতে) কঠোরভাবে বিরত রাখা হতে’।[২১]
উপরিউক্ত হাদীছ দু’টি খুঁটির মাঝখানে কাতারবন্দী না হওয়ার সুস্পষ্ট দলীল। তাই ওয়াজিব হলো খুঁটি থেকে সামনে কিংবা পিছনে দাঁড়ানো’।[২২] তবে দুই পিলারের মাঝে দাঁড়িয়ে একাকী ছালাত আদায় করা যাবে।[২৩] উল্লেখ্য, ইমাম মালিক (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, বাধ্যগত অবস্থায় দুই পিলারের মাঝে ছালাত পড়াতে কোন সমস্যা নেই।[২৪]
ছালাতরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে অতিক্রম করা
কোন ব্যক্তি ছালাত আদায়রত অবস্থায় থাকলে তার সামনে দিয়ে যাওয়া যাবে না। আর ছালাতের সামনে দিয়ে যাওয়ার অপরাধটি মসজিদেই বেশি হয়ে থাকে। অনেক ব্যক্তি আছেন যারা সময়কে অত্যধিক মূল্য দিতে গিয়ে এই কাজটি করে ফেলেন। আবার অনেকেই আছে যারা ছালাতের সামনে দিয়ে যাওয়াকে অপরাধ মনে করে না; যা অবশ্যই ভ্রান্তি। রাসূল (ﷺ) ছালাতের সামনে দিয়ে যেতে নিষেধ করেছেন। এ সম্পর্কে হাদীছে পাওয়া যায়-
عَنْ بُسْرِ بْنِ سَعِيْدٍ أَنَّ زَيْدَ بْنَ خَالِدٍ أَرْسَلَهُ إِلَى أَبِىْ جُهَيْمٍ يَسْأَلُهُ مَاذَا سَمِعَ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ فِى الْمَارِّ بَيْنَ يَدَىِ الْمُصَلِّى فَقَالَ أَبُوْ جُهَيْمٍ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لَوْ يَعْلَمُ الْمَارُّ بَيْنَ يَدَىِ الْمُصَلِّى مَاذَا عَلَيْهِ لَكَانَ أَنْ يَقِفَ أَرْبَعِيْنَ خَيْرًا لَهُ مِنْ أَنْ يَمُرَّ بَيْنَ يَدَيْهِ قَالَ أَبُو النَّضْرِ لَا أَدْرِىْ أَقَالَ أَرْبَعِيْنَ يَوْمًا أَوْ شَهْرًا أَوْ سَنَةً.
বুসর ইবনু সাঈদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ছালাত আদায়কারীর সামনে দিয়ে অতিক্রমকারী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য ছাহাবীগণ আমাকে যায়েদ ইবনু খালিদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর নিকট পাঠালেন। তিনি আমাকে অবহিত করলেন, নবী করীম (ﷺ) বলেছেন, ছালাতরত কোন ব্যক্তির সামনে দিয়ে অতিক্রম করার চাইতে চল্লিশ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম। আবূ নযর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ৪০ দ্বারা তিনি ৪০ বছর, না মাস, না দিন বুঝিয়েছেন তা আমি অবগত নই’।[২৫] অপর হাদীছে পাওয়া যায়, আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন,
إِذَا كَانَ أَحَدُكُمْ يُصَلِّى فَلَا يَدَعْ أَحَدًا يَمُرُّ بَيْنَ يَدَيْهِ فَإِنْ أَبَى فَلْيُقَاتِلْهُ فَإِنَّ مَعَهُ الْقَرِيْنَ وَقَالَ الْمُنْكَدِرِىُّ فَإِنَّ مَعَهُ الْعُزَّى.
‘তোমাদের কেউ যখন ছালাত পড়ে, তখন সে যেন তার সামনে দিয়ে কাউকে অতিক্রম করতে না দেয়। যদি সে অস্বীকার করে (অর্থাৎ তবুও ছালাতের সামনে দিয়ে যায়) তবে সে (ছালাতরত ব্যক্তি) যেন তার সাথে লড়াই করে। কেননা তার সাথে তার সহযোগী (শয়তান) রয়েছে। আল-মুনকাদিরী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, নিশ্চয় তার সাথে উযযা (মূর্তি) রয়েছে’।[২৬] উল্লেখ্য যে, মসজিদে একাকী ছালাত আদায় করার সময় অন্য মুছল্লী তার সামনে দিয়ে যরূরী প্রয়োজনে সিজদার স্থানের বাহির দিয়ে অতিক্রম করতে পারবে।[২৭]
মসজিদে হাত মটকানো
ছালাতের জন্য ওযূ করার পর থেকেই হাত মটকানো নিষেধ। আবূ সুমামাহ আন-হান্নাত সূত্রে বর্ণিত তিনি বলেন,
أَنَّ كَعْبَ بْنَ عُجْرَةَ أَدْرَكَهُ وَهُوَ يُرِيْدُ الْمَسْجِدَ أَدْرَكَ أَحَدُهُمَا صَاحِبَهُ قَالَ فَوَجَدَنِىْ وَأَنَا مُشَبِّكٌ بِيَدَىَّ فَنَهَانِىْ عَنْ ذَلِكَ وَقَالَ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ إِذَا تَوَضَّأَ أَحَدُكُمْ فَأَحْسَنَ وُضُوْءَهُ ثُمَّ خَرَجَ عَامِدًا إِلَى الْمَسْجِدِ فَلَا يُشَبِّكَنَّ يَدَيْهِ فَإِنَّهُ فِىْ صَلَاةٍ.
‘তিনি মসজিদে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে কা‘ব ইবনু উজরাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর সাথে তার সাক্ষাৎ হয়। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি আমাকে আমার দু’হাতের আঙ্গুলসমূহ পরস্পরের মধ্যে ঢুকিয়ে মটকাতে দেখতে পেয়ে আমাকে এরূপ কাজ করতে নিষেধ করলেন। তিনি আরো বললেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের কেউ উত্তমরূপে ওযূ করে মসজিদের উদ্দেশ্যে বের হলে সে যেন তার দু’হাতের আঙ্গুল না মটকায়। কেননা সে তখন ছালাতের মধ্যে থাকে (অর্থাৎ ঐ অবস্থায় তাকে ছালাত আদায়কারী হিসাবেই গণ্য করা হয়’।[২৮]
অতএব মসজিদ হলো পবিত্রতম স্থান। এর পবিত্রতা রক্ষা করার দায়িত্ব সকলের। তাই প্রত্যেক মুসলমানকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে মসজিদের পবিত্রতা রক্ষায় সচেষ্ট হতে হবে।
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
* শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আল-ইসলামিয়্যাহ, খড়খড়ি, রাজশাহী।
[১]. ছহীহুল বুখারী, হাদীছ নং-১১৬৩; ইমাম আহমাদ, আল-মুসনাদ, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৩১১, হাদীছ নং-২২৭০৫।
[২]. আবূ বাকর আহমাদ ইবনুল হুসাইন আল-বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, ৩য় খণ্ড (বৈরূত: দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, ১ম সংস্করণ, ১৪১০ হি.), পৃ. ৫৮, হাদীছ নং-২৮৬৩।
[৩]. আবুল কাসিম সুলাইমান ইবনু আহমাদ আত-তাবারানী, আল-মু‘জামুল আওসাত্ব, ১ম খণ্ড (কায়রো: দারুল হারামাইন, ১৪১৫ হি.), পৃ. ১৪, হাদীছ নং-৩১।
[৪]. ইমাম আবূ দাঊদ, আস-সুনান, ১ম খণ্ড, পৃ. ৪২৪, হাদীছ নং-১৩৩২।
[৫]. ইমাম আহমাদ, আল-মুসনাদ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৩৪৪, হাদীছ নং-১৯০৪৪।
[৬]. ছহীহুল বুখারী, হাদীছ নং-৪৭০।
[৭]. সূরাহ আল-বাকারাহ : ১১৪।
[৮]. ইমাম মুসলিম, আস-সাহীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৪৪, হাদীছ নং-২৯৮।
[৯]. মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক ইবনু খুযায়মাহ আবূ বাকর আস-সুলামী আন-নাইসাপুরী, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ, ৩য় খণ্ড (বৈরূত : আল-মাকতাবুল ইসলামী, ১৩৯০ হি./১৯৭০ খ্রি.), পৃ. ৯১, হাদীছ নং-১৬৮০।
[১০]. সূরাহ আন-নূর: ৩০; সূরাহ আল-আহযাব: ৩৩।
[১১]. ইমাম মুসলিম, আস-সাহীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৯০, হাদীছ নং-৫৫২; ইমাম আবূ দাঊদ, আস-সুনান, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৮২, হাদীছ নং-৪৭৫।
[১২]. ছহীহুল বুখারী, হাদীছ নং-৪০৭।
[১৩]. ইমাম আবূ দাঊদ, আস-সুনান, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৭৮, হাদীছ নং-৪৫৫; ইমাম তিরমিযী, আস-সুনান, ২য় খণ্ড,, পৃ. ৪৮৯, হাদীছ নং-৫৯৪।
[১৪]. ইমাম নাসাঈ, আস-সুনান, ২য় খণ্ড, পৃ. ৫২, হাদীছ নং-৭২৮; সুনানু ইবনি মাজাহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৫১, হাদীছ নং-৭৬২।
[১৫]. ইমাম আহমাদ, আল-মুসনাদ, ৫ম খণ্ড, পৃ. ১৭৮, হাদীছ নং-২১৫৯০; সুনানু ইবনি মাজাহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ১২১৪, হাদীছ নং-৩৬৮৩।
[১৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৪০৮, ৪১৬।
[১৭]. মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল, ৮ম খণ্ড, পৃ. ৪২৪।
[১৮]. আবূ দাঊদ, হা/৩৮২৪; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২২২।
[১৯]. ফাৎহুল বারী শারহু ছহীহিল বুখারী, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫১০-৫১২; ইমাম নববী, আল-মাজমূঊ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১০০।
[২০]. ইমাম তিরমিযী, আস-সুনান, ১ম খণ্ড, পৃ. ৪৪৩, হাদীছ নং-২২৯।
[২১]. সুনানু ইবনি মাজাহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩২০, হাদীছ নং-১০০২।
[২২]. মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী, আস-সিলসিলাহ আস-সহীহাহ, ১ম খণ্ড (রিয়াদ : মাকতাবুল মা‘আরিফ, তাবি), পৃ. ৬৫৫, হাদীছ নং-৩৩৫।
[২৩]. ছহীহুল বুখারী, হাদীছ নং-৫০৪-৫০৫।
[২৪]. আস-সিলসিলাহ আস-সহীহাহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৬৫৫, হাদীছ নং-৩৩৫।
[২৫]. ইমাম মুসলিম, আস-সাহীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৬৩, হাদীছ নং-৫০৭।
[২৬]. সুনানু ইবনি মাজাহ, ১ম খণ্ড, পডৃ. ৩০৭, হাদীছ নং-৯৫৫।
[২৭]. ইমাম আবূ দাঊদ, আস-সুনান, ১ম খণ্ড, পৃ. ২০৯, হাদীছ নং-৫৬২।
[২৮]. ছহীহুল বুখারী, হাদীছ নং-৫০৯।
প্রসঙ্গসমূহ »:
মসজিদ