সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ১০:৩৬ অপরাহ্ন

বিদ‘আত পরিচিতি

-মুহাম্মাদ বযলুর রহমান*


 (১৪তম কিস্তি) 

গ. বিশ্বাস ও ইবাদতের দিক থেকে বিদ‘আত : এ প্রকার বিদ‘আত দুই প্রকার। যথা :

১. আক্বীদাগত বিদ‘আত (البدعة الإعتقادية)

আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূল (ﷺ) প্রদত্ত বর্ণনার বিপরীত বিশ্বাস করাকে আক্বীদাগত বিদ‘আত বলা হয়। উদাহরস্বরূপ বলা যায় যে, আল্লাহর সৃষ্টির সাদৃশ্য করা অথবা তাঁকে অকেজো  ও বাতিল গণ্য করার বিদ‘আত, তাক্বদীর অস্বীকার করার বিদ‘আত, যুক্তি বা দর্শন শাস্ত্র ব্যবহারের বিদ‘আত ইত্যাদি।[১] অনুরূপভাবে আক্বীদাগত বিদ‘আতের আলোচনা করতে গিয়ে ড. সাঈদ ইবনু আলী ইবনু ওয়াহাফ আল-ক্বাহতানী (রাহিমাহুল্লাহ) উদাহরণস্বরূপ বলেছেন,

الجهمية، والمعتزلة، والرافضة، وسائر الفرق الضالة، واعتقاداتهم، ويدخل في ذلك الفرق التي ظهرت كالقاديانية، والبهائية، وجميع فرق الباطنية المتقدمة: كالاسماعيلية، والنصيرية، والدروز، والرافضة وغيرهم

‘জাহমিয়্যাহ, মু‘তাযিলা, রাফেযী (শী‘আ) ও সকল পথভ্রষ্টদলের বক্তব্য ও তাদের বিশ্বাস। তাদের মাঝে ঐ সকল জামা‘আতও অন্তর্ভুক্ত হবে, যারা নতুন আত্মপ্রকাশ করেছে। যেমন ক্বাদিয়ানী, বাহাইয়া প্রভৃতি। এছাড়াও সকল বাতেনী জামা‘আত। যেমন ইসমাঈলিয়্যাহ, নাছিরিয়্যাহ, দরওয়াজ ও রাওয়াফিযা ইত্যাদি’।[২]

সুধী পাঠক! বর্তমানে বিভিন্ন বিদ‘আতী ভ্রান্ত যে দল ও উপদলের উদ্ভব ঘটেছে সেগুলোও আক্বীদাগত বিদ‘আতের মধ্যে শামিল। যেমন, হিজবুত তাহরীর, কোয়ান্টাম মেথড, চরমপন্থী খারেজী, ইলিয়াসী তাবলীগ জামা‘আত প্রভৃতি। সুতরাং এ সকল বিদ‘আতী দল থেকে হক্ব পিয়াসী প্রত্যেক মুসলিমকে সতর্ক সাবধান থাকতে হবে।

২. আমলগত বা ইবাদতগত বিদ‘আত (البدعة العملية)

শায়খ ছালিহ ইবনু ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, التّعبّد لله بعبادة لم يشرعها ‘এমন কোন কাজকে ইবাদত হিসাবে পালন করা যা ইসলামী শরী‘আত কর্তৃক অনুমোদিত নয়’।[৩] আব্দুর রহমান ইবনু নাছির আস-সা‘আদী (রাহিমাহুল্লাহ) (১৩০৭-১৩৭৬ হি.) বলেন,

هي أن يشرع في الدين عبادة لم يشرعها الله ورسوله وكل عبادة لم يأمر بها الشارع أمر إيجاب أو إستحباب فإنها من البدع العملية

‘এটা দ্বীনের মধ্যে এমন ইবাদত যে ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূল (ﷺ) শরী‘আত সিদ্ধ করেননি। আর প্রত্যেক ঐ ইবাদত, যা শরী‘আত প্রণেতা ওয়াজিব অথবা মুস্তাহাবের ব্যাপারে নির্দেশনা প্রদান করেনি, সেটাই আমল ও ইবাদতগত বিদ‘আত’।[৪]

ড. সাঈদ ইবনু আলী ইবনু ওয়াহাফ আল-ক্বাহতানী (রাহিমাহুল্লাহ) প্রণীত ‘আক্বাদাতুল মুসলিম’, ‘নূরুস সুন্নাতি ওয়া যুল্মাতিল বিদ‘আতি’, শায়খ ছালিহ ইবনু ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) প্রণীত ‘ইরশাদু ইলা ছহীহিল ই‘তিক্বাদ ওয়ার রাদ্দু আলা আহলিশ শিরকি ওয়াল ইলহাদ’, ‘কিতাবুত তাওহীদ’, ‘আক্বীদাতু তাওহীদ’ এবং শায়খ মুহাম্মাদ হামিদ আন-নাছির (রাহিমাহুমুল্লাহ) প্রণীত ‘বিদাঈল ই‘তিক্বাদি ওয়া আখত্বারিহা ‘আলাল মুজতামি‘আতিল ইসলামিয়্যাহ’ গ্রন্থে আমলগত বা ইবাদতগত বিদ‘আতকে ওলামায়ে কিরাম মোট চার (৪) টি ভাগে বিভক্ত করেছেন। যেমন,

১. মৌলিক ইবাদতে বিদ‘আত : শরী‘আত কর্তৃক অনুমোদিত নয় এমন কোন ইবাদত প্রবর্তন করা। শায়খ ছালিহ ইবনু ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, بدعة في أصل العبادة، كأن يحدث عبادة ليس لها أصل في الشرع ‘মূল ইবাদতের মধ্যে বিদ‘আত। অর্থাৎ এমন কোন নতুন ইবাদত চালু করা, যার ভিত্তি শরী‘আতে নেই। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, শরী‘আতের দলীল বিহীন কোন ছালাত যেমন : ছালাতুল আলফিয়া, ছালাতুল রাগাইব। ছিয়াম প্রবর্তন করা, যেমন রজব মাসে ছিয়াম পালন করা এবং এমন ঈদ পালন করা, যা শরী‘আতে নেই। যেমন ঈদে মীলাদুন্নবী পালন করা ইত্যাদি।

২. ইবাদতের মধ্যে কিছু সংযোজন করা : যে সকল ইবাদত শরী‘আতসিদ্ধ, সে ইবাদতগুলোর মধ্যে নতুন করে কিছু সংযোজন করা এই প্রকার বিদ‘আতের অন্তর্ভুক্ত। ওলামায়ে কিরাম বলেন, ما يكون من الزيادة على العبادة المشروعة ‘শরী‘আত কর্তৃক অনুমোদিত এমন ইবাদতে নতুন করে কিছু সংযোজন করা’। উদাহরণস্বরূপ : যোহর, আছর কিংবা এশার ছালাতের রাক‘আত বৃদ্ধি করে পাঁচ রাক‘আত ছালাত আদায় করা। অথবা সূর্যাস্তের পরেও ইফতারের জন্য বিলম্ব করা, মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে ঈদের খুত্ববাহ দেয়া অথবা দু’টি ঈদের খুত্ববাহ দেয়া ইত্যাদি।

৩. ইবাদত সম্পাদনের পদ্ধতিতে বিদ‘আত : শরী‘আতে ইবাদতের যে পদ্ধতি বর্ণিত হয়নি, সেই পদ্ধতিতে ইবাদত করলে তা বিদ‘আত হিসাবে গণ্য হবে। ওলামায়ে কেরাম বলেন, ما يكون في صفة أداء العبادة المشروعة، بأن يؤديها على صفة غير مشروعة ‘শরী‘আত সমর্থিত ইবাদত আদায়ের পদ্ধতিতে বিদ‘আত অর্থাৎ বৈধ ইবাদতকে অবৈধ পন্থায় আদায় করা। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে যে,  শরী‘আত সম্মত যিকির দলবদ্ধভাবে সমস্ব^রে আদায় করা, ইবাদত করার ক্ষেত্রে নিজ জীবনের উপর কঠোরতা আরোপ করা। হাত তুলে দু‘আ করা জায়েয, কিন্তু পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতের পরে ইমাম ছাহেব কর্তৃক সম্মিলিত মুনাজাত করা এবং মুক্তাদীদের আমীন আমীন বলা। অথচ এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে কোন প্রমাণ বর্ণিত নেই। এমনকি কোন ছাহাবায়ে কিরাম, তাবেঈন ও তাবি‘ তাবেঈগণ, প্রসিদ্ধ চার ইমাম এবং কোন মুহাদ্দিছ ওলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকেও কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না।

৪. সময় নির্ধারণের ক্ষেত্রে পরিবর্তন করা : আলিমগণ বলেন, ما يكون بتخصيص وقت للعبادة المشروعة لم يخصصه الشرع ‘শরী‘আত সম্মত ইবাদতের জন্য এমন সময় নির্ধারণ করা, যা শরী‘আত নির্ধারণ করেনি। যেমন শা‘বান মাসের ১৫তম দিন ছিয়াম পালন ও ১৪তম দিবাগত রাত ছালাত আদায়ের জন্য নির্ধারণ করা। কেননা ছিয়াম ও ছালাত শরী‘আতসম্মত ইবাদত, তবে তা বিশেষ সময়ে তথা ১৫ শা‘বানের রাতে ইবাদতের জন্য নির্ধারণ করার কোন প্রমাণ নেই।[৫]

ফাযীলাতুশ শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-উছায়মীন (রাহিমাহুল্লাহ) (১৩৪৭-১৪২১ হি.) আমলগত বিদ‘আতের আলোচনা করতে গিয়ে শরী‘আতসম্মত ইবাদত করার জন্য ছয়টি বিষয়কে শর্তারোপ করেছেন। অর্থাৎ ইবাদতের মধ্যে নিম্নোক্ত ছয়টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত না থাকলে সে ইবাদত গৃহীত হবে না। নিম্নে তা উল্লেখ করা হল-

(১) اَلسَّبَبُ তথা কারণ বা উদ্দেশ্য : ইবাদতের মধ্যে শরী‘আতসম্মত কারণ বিদ্যমান থাকা। সম্মানিত শায়খ বলেছেন,

إذا تعبد الإنسان لله عبادة مقرونة بسبب ليس شرعيّاً فهي بدعة مردودة على صاحبها

‘কেউ যদি এমন কোন কারণে বা উদ্দেশ্যে ইবাদত করে যা শরী‘আত পরিপন্থী, তাহলে তার অধিবাসীর উপর তা পরিত্যাগযোগ্য বিদ‘আত হবে’। যেমন- কিছু মানুষ রয়েছে, যারা আরবী রজব মাসের ২৭ তারিখে জাগরণ করে। কেননা ঐ রাত্রিতে নাকি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মি‘রাজে গমন করেছিলেন। যাকে শবেবরাত বলা হয়। অথচ তাহাজ্জুদের ছালাত একটি উত্তম ইবাদত হওয়া সত্ত্বেও ঐদিন শবেমে‘রাজের উদ্দেশ্যে ইবাদত করা বিদ‘আত হবে। কেননা যে উদ্দেশ্যে ঐ রাত্রিতে ইবাদত করা হয় তা শরী‘আতসম্মত নয়। অধিকাংশ মানুষ এটাকে সুন্নাত মনে করে পালন করলেও সেটা সুন্নাত নয় বরং ভ্রষ্ট বিদ‘আত হবে। কেননা অধিকাংশ মানুষ দলীল নয় বরং দলীল হল শরী‘আত।

(২) اَلْجِنْسُ তথা শ্রেণী, প্রকার বা রকম : ইবাদত গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য তা কোন্ প্রকার বা কোন্ শ্রেণীর তার দলীল বিদ্যমান থাকা। তিনি বলেছেন,

لابد أن تكون العبادة موافقة للشرع في جنسها فلو تعبد إنسان لله بعبادة لم يشرع جنسها فهي غير مقبول

‘অবশ্যই ইবাদত হিসাবে গণ্য হওয়ার জন্য সেটি শরী‘আতসম্মত শ্রেণী বা প্রকার বিদ্যমান থাকতে হবে। কোন মানুষ যদি আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করে কিন্তু তা শরী‘আত সিদ্ধ কোন শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত নয়, তাহলে তা গ্রহণযোগ্য হিসাবে বিবেচিত হবে না’। উদাহরণস্বরূপ : কোন ব্যক্তি যদি ঘোড়া কুরবানী করে, তাহলে তার কুরবানী ছহীহ হবে না। কেননা তা শরী‘আতসিদ্ধ শ্রেণী বা প্রকারের বিপরীত। মূলত কুরবানীর জন্য শরী‘আতসিদ্ধ প্রাণী হল কেবল উঠ, গরু, মহিষ, ছাগল, দুম্বা, ভেড়া।

(৩) اَلْقَدْرُ তথা পরিমাণ : ইবাদতের মধ্যে শরী‘আতসম্মত পরিমাণ বিদ্যমান থাকা। আল-কুরআন ও ছহীহ হাদীছ দ্বারা যতটুকু প্রমাণিত কেবল ততটুকুই পালন করতে হবে। এর অতিরিক্ত করলে তা সুন্নাত পরিপন্থী আমল হিসাবে গণ্য হবে যা আল্লাহ তা‘আলার নিকট কবুল হবে না। সুতরাং কোন ব্যক্তি যদি ইচ্ছা করে ফরয ছালাতের নির্ধারিত পরিমাণ থেকে বৃদ্ধি করবে, তাহলে তা বিদ‘আত হবে এবং অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। কেননা তা শরী‘আত র্নিধারিত পরিমাণের বিপরীত। যেমন ঐকমত্য হল, যদি কোন মানুষ ইচ্ছাকৃত যোহরের পাঁচ রাক‘আত ছালাত আদায় করে, তাহলে সেই ছালাত বিশুদ্ধ হবে না। তবে ভুলক্রমে পড়লে সাহু সিজদা দিলেই তা শুদ্ধ হয়ে যাবে।

(৪) اَلْكَيْفِيَةُ তথা পদ্ধতি : ইবাদতের ক্ষেত্রে ইসলামী শরী‘আত নির্দেশিত পদ্ধতি একশ’ ভাগ বিদ্যমান থাকা। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যে ইবাদত যে পদ্ধতিতে আদায় করেছেন সেই ইবাদত ঠিক সেই পদ্ধতিতে আদায় করতে হবে। অন্যথা তা বিদ‘আত হিসাবে পরিগণিত হবে। সুতরাং কোন ব্যক্তি যদি ওযূ করার সময় প্রথমে পা ধৌত করার মাধ্যমে শুরু করে অতঃপর তার মাথাহ মাসাহ করে, হাত ধৌত করে অতঃপর মুখম-ল ধৌত করে। এমতাবস্থায় আমরা বলব, এই ওযূ বাতিল। কেননা এটা শরী‘আত নির্ধারিত পদ্ধতির বিপরীত।

(৫) اَلزَّمَانُ তথা সময় : ইসলামের প্রত্যেকটি ইবাদতের জন্য সুনির্দিষ্ট সময় রয়েছে। সুতরাং যে সময় যে ইবাদত আল-কুরআন ও ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত, ঠিক সেই ইবাদত সেই সময় পালন করতে হবে। অন্যথা তা সুন্নাত পরিপন্থী আমল তথা বিদ‘আতে পরিণত হবে।  যেমন, যুলহিজ্জার প্রথম দিনেই কোন ব্যক্তি যদি কুরবানী করে, তাহলে শরী‘আত পরিপন্থী সময়ে হওয়ায় তার কুরবানী কবুল করা হবে না। শায়খ উছায়মীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি শুনেছি যে, কিছু মানুষ আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য রামাযান মাসে ছাগল যব্হ করে থাকে। অথচ এরূপ কাজ বিদ‘আত। কেননা আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কুরবানী, হাদী তথা হজ্জের কুরবানী, ‘আক্বীক্বাহ ব্যতীত অন্য কোন সময় যব্হ করা যাবে না। সুতরাং ঈদুল আযহার কুরবানীর ন্যায় নেকী অর্জনের আশায় রামাযানে পশু যব্হ করা বিদ‘আত। তবে শুধু গোশত খাওয়ার জন্য যদি পশু যব্হ করে, তাহলে তা জায়েয।

(৬) اَلْمَكَانُ তথা স্থান : ইবাদতটি শরী‘আত সম্মত স্থানেই কেবল সম্পাদন করতে হবে। আল-কুরআন ও ছহীহ হাদীছ দ্বারা যে স্থানে যে ইবাদত প্রমাণিত, ঠিক সে ইবাদত সে স্থানেই পালন করতে হবে। অন্যথা স্থান পরিবর্তন করলে তা সুন্নাত পরিপন্থী আমল তথা বিদ‘আত হিসাবে পরিগণিত হবে। সুতরাং কোন ব্যক্তি যদি জামে মসজিদ ছাড়া ই‘তিকাফ করে, তাহলে তার ই‘তিকাফ ছহীহ হবে না। কেননা জামে মসজিদ ব্যতীত ই‘তিকাফ সঠিক হয় না। এভাবে কোন মহিলা যদি বলে, আমি আমার বাড়ীর ছালাতের স্থানে ই‘তিকাফ করব, তাহলে শরী‘আত পরিপন্থী স্থান হওয়ার কারণে ঐ মহিলার ই‘তিকাফ বিশুদ্ধ হবে না। অনুরূপভাবে বলা যায় যে, কোন ব্যক্তি যদি ত্বাওয়াফ করার ইচ্ছা করে কিন্তু মাত্বাফে স্থান সংকুলান না হওয়ার কারণে মসজিদের পিছনে গিয়ে ত্বাওয়াফ করে, তাহলে তার ত্বাওয়াফ ছহীহ হবে না। কেননা ত্বাওয়াফের জায়গা হল বায়তুল্লাহ তথা কা‘বা আল-মুশাররফা। ইবরাহীম খলীলুল্লাহকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ طَہِّرۡ بَیۡتِیَ لِلطَّآئِفِیۡنَ ‘আমার গৃহকে পবিত্র রাখ তাদের জন্য যারা তাওয়াফ করে’ (সূরা আল-হজ্জ : ২৬)।[৬]

(ইনশাআল্লাহ চলবে)

* পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

তথ্যসূত্র :
[১]. আব্দুল্লাহ ইবনু আব্দুল আযীয ইবনু হামাদাহ আল-জিবরীন, তাসহীলুল আক্বীদাতিল ইসলামিয়্যাহ (দারুল উছায়মী, ২য় সংস্করণ, তাবি), পৃ. ৪৭১।
[২]. ড. সাঈদ ইবনু আলী ইবনু ওয়াহাফ আল-ক্বাহতানী, আল-আক্বীদাতুল মুসলিম ফী যাউইল কিতাবি ওয়াস সুন্নাহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৭২৮; ঐ, নূরুস সুন্নাতি ওয়া যুলুমাতিল বিদ‘আহ, পৃ. ৩১; ছালিহ ইবনু ফাওযান ইবনু আব্দুল্লাহ আলে ফাওযান, আল-ইরশাদু ইলা ছহীহিল ই‘তিক্বাদ, পৃ. ২৯৯; কিতাবুত তাওহীদ, পৃ. ১৩৬; আক্বীদাতু তাওহীদ, পৃ. ১২১; শায়খ মুহাম্মাদ হামিদ আন-নাছির, বিদাঊল ই‘তিক্বাদি ওয়া আখত্বারিহা ‘আলাল মুজতামি‘আতিল ইসলামিয়্যাহ, পৃ. ৫।
[৩]. ছালিহ ইবনু ফাওযান ইবনু আব্দুল্লাহ আলে ফাওযান, আক্বীদাতু তাওহীদ, পৃ. ১২১।
[৪]. ড. ইবরাহীম ইবনু আমির আর-রুহায়লী, মাওক্বিফু আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আত মিন আহলিল আহওয়া ওয়াল বিদাঈ (সঊদী আরব : মাকতাবাতুল গুরাবাই আল-আছরিয়্যাহ, ১ম সংস্করণ, ১৪১৫ হি.), ১ম খণ্ড, পৃ. ১০২।
[৫]. শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তায়মিয়্যাহ, মাজমূঊল ফাতাওয়া, ১৮তম খণ্ড, পৃ. ৩৪৬; ছালিহ ইবনু ফাওযান ইবনু আব্দুল্লাহ আলে ফাওযান, কিতাবুত তাওহীদ, পৃ. ১৩৬-১৩৭; আক্বীদাতু তাওহীদ, পৃ. ১২১-১২২; নূরুস সুন্নাতি ওয়ায যুল্মাতিল বিদ‘আতি, পৃ. ৩১; বিদাঊল ই‘তিক্বাদি ওয়া আখত্বারিহা ‘আলাল মুজতামি‘আতিল ইসলামিয়্যাহ, পৃ. ৫-৬; ড. ছালিহ আল-ফাওযান, “আনওয়াঊল বিদ‘আতি”, মাজাল্লাতুদ দা‘ওয়াহ, সংখ্যা-১১৩৯, ৯ রামাযান ১৪০৮; ড. ছালিহ আস-সাহীমী, ওয়া তান্বীহু উলিল আবছারি ইলা কামালিদ দ্বীন ওয়ামা ফিল বিদাঈ মিন আখত্বার, পৃ. ১০০; মাওক্বিফু আহলিস সুন্নাহি ওয়াল জামা‘আত মিন আহলিল আহওয়া ওয়াল বিদাঈ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১০২।
[৬]. মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ ইবনু মুহাম্মাদ আল-উছায়মীন, আল-ইবদাঊ ফী বায়ানি কালামিশ শারঈ ওয়া খাত্বারিল ইবতিদা‘ (জেদ্দা : ১৪১০ হি.), ২১-২৪।




সুন্নাতের রূপরেখা (৩য় কিস্তি) - মাইনুল ইসলাম মঈন
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (১৪তম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
মাযহাবী গোঁড়ামি ও তার কুপ্রভাব (৪র্থ কিস্তি) - অনুবাদ : রিদওয়ান ওবাইদ
কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা (৪র্থ কিস্তি) - অনুবাদ : হাফীযুর রহমান বিন দিলজার হোসাইন
পরবর্তীদের তুলনায় সালাফদের ইলমী শ্রেষ্ঠত্ব (৪র্থ কিস্তি) - অনুবাদ : আযহার বিন আব্দুল মান্নান
পরবর্তীদের তুলনায় সালাফদের জ্ঞানের শ্রেষ্ঠত্ব - অনুবাদ : আযহার বিন আব্দুল মান্নান
দু‘আ ও যিকর : আল্লাহর অনুগ্রহ ও প্রশান্তি লাভের মাধ্যম (৩য় কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
আল-কুরআনের ব্যাপারে অমুসলিমদের মিথ্যা অভিযোগ ও তার খণ্ডন - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামে ইসলাম শিক্ষার আবশ্যকতা - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
সূদ-ঘুষ ও অবৈধ ব্যবসা (৩য় কিস্তি) - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (১৫তম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (৭ম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম

ফেসবুক পেজ