সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০১:২৬ অপরাহ্ন

বিদ‘আত পরিচিতি

-মুহাম্মাদ বযলুর রহমান*


(৫ম কিস্তি)

[নভেম্বর ২০২০ সংখ্যার পর]


বিদ‘আত প্রকাশের অঞ্চলসমূহ


বিদ‘আত প্রকাশের দিক থেকে ইসলামী অঞ্চলগুলো কয়েক ভাগে বিভক্ত। শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (৬৬১-৭২৮ হি./১২৬৩-১৩২৮ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ছাহাবীগণ মোট পাঁচটি শহরে বসবাস করতেন। এ সমস্ত দেশ থেকে ঈমানের আলো বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। শহর পাঁচটি হল- মক্কা, মদীনা, বছরা, কূফা ও শাম। সাথে সাথে এ সকল দেশ থেকে কুরআন, হাদীছ, ফিক্‌হ ও ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা বিস্তার লাভ করে।

পরবর্তীতে মদীনা মুনাওয়ারা ব্যতীত বাকী ৪টি স্থান থেকেই বড় বড় বিদ‘আতগুলোর প্রকাশ ঘটে। কূফা নগরী থেকে বের হয়েছে শী‘আ ও মুরজিয়াদের বিদ‘আতী কথা ও মতবাদগুলো এবং তা অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। বছরা শহর থেকে ক্বাদারিয়া, মু‘তাযিলাদের বিদ‘আতসহ বিভিন্ন ধরণের ভ্রান্ত ‘ইবাদতের আবির্ভাব হয়ে অন্যান্য দেশে বিস্তার লাভ করে। সিরিয়া থেকে বের হয় ‘আহলে বাইত’ তথা নবী পরিবারের প্রতি ঘৃণা ও তাঁদের সম্মানে কালীমা লেপনকারীদের বিদ‘আতী কথা-বার্তা। অতঃপর তাবি‘ঈনদের শেষ যামানায় ওমর ইবনু ‘আব্দিল ‘আযীয (রাহিমাহুল্লাহ)-এর মৃত্যুর পরে খোরাসানে হিশাম ইবনু ‘আব্দিল মালিক (রাহিমাহুল্লাহ)-এর খেলাফতকালে জাহমিয়াদের উৎপত্তি হয়। এটি হল সর্বনিকৃষ্ট বিদ‘আত।

যে দেশ রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শহর মদীনা থেকে যত দূরে অবস্থিত, সেখানকার বিদ‘আতও তত ভয়াবহ ও জঘন্য। ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর শাহাদতবরণের পরপরই বের হয়েছে খারিজী সম্প্রদায় ও তাদের বিদ‘আতী মতবাদগুলো। তবে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শহর মদীনা এ সমস্ত বিদ‘আত থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। যদিও কোন কোন লোক মদীনাতে অবস্থান করেও গোপনে কিছু কিছু বিদ‘আতী ‘আক্বীদাহ পোষণ করত। কিন্তু তারা অপমানিত অবস্থায় মদীনাবাসীদের সাথে বসবাস করত। মদীনাতে তাদের সামাজিক কোন প্রভাব ও মূল্য ছিল না। একদল ক্বাদারিয়া মতবাদের লোক মদীনাতে লাঞ্ছিত অবস্থায় বসবাস করত। অপরদিকে কূফায় শী‘আ ও মুরজিয়া, বছরায় মু‘তাযিলা ও বিদ‘আতী নিয়মে ‘ইবাদতকারীদের দল এবং সিরিয়ায় নাসবিয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা প্রকাশ্যে বিদ‘আতের চর্চা করতে থাকে।[১] যেমনটি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

عَلَى أَنْقَابِ الْمَدِيْنَةِ مَلَائِكَةٌ لَا يَدْخُلُهَا الطَّاعُوْنُ وَلَا الدَّجَّالُ

‘মদীনার দ্বারসমূহে ফিরিশতাগণ পাহারায় রয়েছেন। সুতরাং তাতে মহামারী এবং দাজ্জাল প্রবেশ করতে পারবে না’।[২] ইমাম মালিক (রাহিমাহুল্লাহ)-এর সময়কাল পর্যন্ত মদীনাতে ‘ইলম ও ঈমানের শিক্ষা বর্তমান ছিল। সম্মানিত তিন যুগে মদীনাতে বিদ‘আতের নাম-নিশানা ছিল না। দ্বীনের মৌলিক বিশ্বাসে আঘাতকারী কোন বিদ‘আতও বের হয়নি। যেমনটি অন্যান্য শহর থেকে বের হয়েছে।[৩]

বিদ‘আতের কারণসমূহ


ইসলামী শরী‘আতে বিদ‘আতের কোন মূল্য নেই। মানুষের ‘আমলের পরিমাণ যতই বেশী হোক না কেন সেটা যদি শরী‘আতের দলীল নির্ভর না হয়, তাহলে আল্লাহর নিকট তার কোন দাম নেই। অথচ বর্তমানে এরকম দলীলবিহীন অসংখ্য ‘আমল সমাজে প্রচলিত রয়েছে। যা মুসলিমদের ‘আমলসমূহকে বিনষ্ট করছে। শরী‘আতের প্রতিটি অঙ্গনে বিদ‘আত এমনভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে যে, বিদ‘আতকেই মানুষ সুন্নাত মনে করছে আর সুন্নাতকেই বিদ‘আত মনে করছে। অথচ এতে কোন সন্দেহ নেই যে, নিঃশর্তভাবে আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাতের পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে অনুসরণই বিদ‘আত ও সকল প্রকার গোমরাহী থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়। আব্দুল্লাহ‌ ইবনু মাস‘ঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,

خَطَّ لَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا خَطًّا ثُمَّ قَالَ هَذَا سَبِيْلُ اللهِ ثُمَّ خَطَّ خُطُوْطًا عَنْ يَمِيْنِهِ وَعَنْ شِمَالِهِ ثُمَّ قَالَ هَذِهِ سُبُلٌ عَلَى كُلِّ سَبِيْلٍ مِنْهَا شَيْطَانٌ يَدْعُوْ إِلَيْهِ ثُمَّ تَلَا (وَ  اَنَّ  ہٰذَا صِرَاطِیۡ مُسۡتَقِیۡمًا فَاتَّبِعُوۡہُ وَ لَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ  فَتَفَرَّقَ  بِکُمۡ عَنۡ سَبِیۡلِہٖ).

‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সামনে মাটিতে একটি রেখা টানলেন। সে রেখার উপর হাত রেখে বললেন, এটি হল আল্লাহর পথ। অতঃপর সে রেখার ডানে ও বামে আরো অনেকগুলো রেখা অঙ্কন করে বললেন, এ সবগুলোই পথ। তবে এ সব পথের মাথায় একটি করে শয়তান দাঁড়িয়ে আছে। সে সদাসর্বদা মানুষকে ঐ পথের দিকে আহ্বান করছে। একথা বলার পর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরআনের এই আয়াতটি পাঠ করেন

وَ  اَنَّ  ہٰذَا صِرَاطِیۡ مُسۡتَقِیۡمًا فَاتَّبِعُوۡہُ وَ لَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ  فَتَفَرَّقَ  بِکُمۡ عَنۡ سَبِیۡلِہٖ

‘এটিই আমার সঠিক পথ। সুতরাং তোমরা এই সঠিক পথের অনুসরণ কর। অন্যান্য পথের অনুসরণ কর না। তাহলে সে সব পথ তোমাদেরকে আল্লাহর সঠিক পথ হতে বিপদগামী করে দিবে’ (সূরাহ আল-আন‘আম : ১৫৩)।[৪]

সুতরাং যে ব্যক্তি আল-কুরআন ও সুন্নাতের পথ থেকে বিমুখ হয়, তাকে বিদ‘আতী ও ভ্রান্ত পথগুলো নিজের দিকে টেনে নেয়। যার ফলে তার কষ্টার্জিত ‘আমল যেমন বিনষ্ট হয়, তেমনি আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শাফা‘আত থেকে বঞ্চিত হয়। তাই এমন কিছু বিষয় রয়েছে, যে সকল কারণে মুসলিম সমাজে বিদ‘আত নামক মরণব্যাধি ছড়িয়ে পড়েছে।[৫] নিম্নে সে কারণগুলো সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করা হল,

(ক) দ্বীনের আহকাম সম্পর্কে অজ্ঞতা (الجهل بأحكام الدين)


দ্বীনের আহকাম সম্পর্কে অজ্ঞতা বিদ‘আত সৃষ্টির অন্যতম প্রথম কারণ। কেননা এটি মানব জীবনের সবচেয়ে বড় অভিশাপ। ঈমান আনয়ন ও সৎ ‘আমলের পূর্বে আবশ্যিক পূর্বশর্ত হল এ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা। কুরআনুল কারীমে তাওহীদ, ঈমান, ছালাত, ছাওম, যাকাত, হজ্জ প্রভৃতি ইসলামী বিধি-বিধান বর্ণনার পূর্বে সর্বপ্রথম জ্ঞান অর্জন করার নির্দেশ এসেছে (সূরাহ আল-‘আলাক : ১-৫; সূরাহ আয-যুমার : ৯)।[৬] কিন্তু সময় যতই অতিবাহিত হয়েছে এবং মানুষ যখনই নবুওয়াতের সংস্পর্শ থেকে দূরে অবস্থান করেছে, তখনই ইসলাম সম্পর্কে মানুষের জ্ঞানের কমতি দেখা দিয়েছে এবং মানুষ অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছে।[৭] হাদীছে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

فَإِنَّهُ مَنْ يَعِشْ مِنْكُمْ بَعْدِي فَسَيَرَى اخْتِلَافًا كَثِيْرًا فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِيْ وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الْمَهْدِيِّيْنَ الرَّاشِدِيْنَ تَمَسَّكُوْا بِهَا وَعَضُّوْا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُوْرِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ

‘আমার পরে তোমাদের মধ্য থেকে যারা জীবিত থাকবে, তারা অনেক মতবিরোধ দেখতে পাবে। সুতরাং তোমরা আমার সুন্নাত এবং খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরবে। তোমরা দ্বীনের মাঝে নতুন বিষয় আবিষ্কার করা থেকে বিরত থাকবে। কেননা প্রত্যেক নতুন বিষয়ই বিদ‘আত। আর প্রতিটি বিদ‘আতের পরিণাম গোমরাহী বা ভ্রষ্টতা’।[৮]

দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞতা এতই বৃদ্ধি পাবে যে, ‘আলিমদেরকে মৃত্যুবরণের মাধ্যমে ‘ইলম উঠিয়ে নেয়া হবে। যেমন,

إِنَّ اللهَ لَا يَقْبِضُ الْعِلْمَ انْتِزَاعًا يَنْتَزِعُهُ مِنَ الْعِبَادِ وَلَكِنْ يَقْبِضُ الْعِلْمَ بِقَبْضِ الْعُلَمَاءِ حَتَّى إِذَا لَمْ يُبْقِ عَالِمًا اتَّخَذَ النَّاسُ رُءُوْسًا جُهَّالًا فَسُئِلُوا فَأَفْتَوْا بِغَيْرِ عِلْمٍ فَضَلُّوْا وَأَضَلُّوْا

‘আল্লাহ মানুষের অন্তর থেকে দ্বীনি ‘ইলমকে টেনে বের করে নিবেন না। কিন্তু ‘ইলমকে উঠিয়ে নিবেন ‘আলিমদেরকে উঠিয়ে নেয়ার মাধ্যমে। শেষ পর্যন্ত যখন কোন ‘আলিম জীবিত থাকবেন না, মানুষেরা তখন মূর্খ লোকদেরকে নিজেদের নেতা নির্বাচন করবে। তাদেরকে দ্বীনের কোন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে বিনা ‘ইলমেই তারা ফৎওয়াবাজীতে লিপ্ত হবে। ফলে তারা নিজেরা পথভ্রষ্ট হওয়ার সাথে সাথে মানুষদেরকেও পথভ্রষ্ট করবে’।[৯]

অতএব দ্বীনের সঠিক ‘ইলম ও বিজ্ঞ ‘আলিম ব্যতীত বিদ‘আতের মুকাবিলা করার মত কোন শক্তি নেই। যখন ‘ইলম ও ‘আলিমগণ উঠে যাবেন, তখন বিদ‘আত ও বিদ‘আতীদের পক্ষে সুযোগ সৃষ্টি হবে।[১০] এজন্য আল্লাহ তা‘আলা জ্ঞান অর্জন করতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং বিনা ‘ইলমে অনুমাননির্ভর কথা বলতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন,

قُلۡ  اِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّیَ الۡفَوَاحِشَ مَا ظَہَرَ  مِنۡہَا وَ  مَا بَطَنَ وَ الۡاِثۡمَ وَ الۡبَغۡیَ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ وَ اَنۡ تُشۡرِکُوۡا بِاللّٰہِ مَا لَمۡ یُنَزِّلۡ بِہٖ سُلۡطٰنًا وَّ اَنۡ تَقُوۡلُوۡا عَلَی  اللّٰہِ  مَا لَا  تَعۡلَمُوۡنَ

‘(হে মুহম্মাদ!) আপনি বলুন, আমার প্রতিপালক প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য অশ্লীলতা, পাপকাজ, অসংগত-বিরোধিতাও বাড়াবাড়ি এবং আল্লাহর সথে কোন কিছুকে শরীক করা, যার পক্ষে আল্লাহ কোন দলীল-প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি আর আল্লাহ সম্বন্ধে এমন কিছু বলা যে সম্বন্ধে তোমাদের কোন জ্ঞান নেই; তা হারাম করেছেন’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ৩৩)। অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন,

وَ لَا تَقۡفُ مَا لَیۡسَ لَکَ بِہٖ عِلۡمٌ  اِنَّ السَّمۡعَ وَ الۡبَصَرَ وَ الۡفُؤَادَ  کُلُّ  اُولٰٓئِکَ کَانَ  عَنۡہُ  مَسۡـُٔوۡلًا

‘যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই সে বিষয়ের পিছে পড় না। (অনুমান দ্বারা) নিশ্চিত কর্ণ, চক্ষু, হৃদয় ওদের প্রত্যেকের নিকট কৈফিয়ত তলব করা হবে’ (সূরাহ বানী ইসরাঈল : ৩৬)। এ বিষয়ে শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (৬৬১-৭২৮ হি./১২৬৩-১৩২৮ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

فَمَنْ دَعَا إلَى الْعِلْمِ دُوْنَ الْعَمَلِ الْمَأْمُوْرِ بِهِ كَانَ مُضِلًّا وَمَنْ دَعَا إلَى الْعَمَلِ دُوْنَ الْعِلْمِ كَانَ مُضِلًّا وَأَضَلُّ مِنْهُمَا مَنْ سَلَكَ فِي الْعِلْمِ طَرِيْقَ أَهْلِ الْبِدَعِ؛ فَيَتَّبِعَ أُمُوْرًا تُخَالِفُ الْكِتَابَ وَالسُّنَّةَ يَظُنُّهَا عُلُوْمًا وَهِيَ جَهَالَاتٌ. وَكَذَلِكَ مَنْ سَلَكَ فِي الْعِبَادَةِ طَرِيْقَ أَهْلِ الْبِدَعِ. فَيَعْمَلُ أَعْمَالًا تُخَالِفُ الْأَعْمَالَ الْمَشْرُوْعَةَ يَظُنُّهَا عِبَادَاتٍ وَهِيَ ضَلَالَاتٌ

‘যে ব্যক্তি ‘আমল ব্যতীত ‘ইলমের দিকে আহ্বান করে সে পথভ্রষ্ট। আর যে ব্যক্তি ‘ইলম বিহীন ‘আমলের দিকে আহ্বান করে সেও পথভ্রষ্ট। এদের চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট সে ব্যক্তি, যে বিদ‘আতীদের পথে ‘ইলম অন্বেষণ করে। ফলে সে আল-কুরআন ও সুন্নাহ বহির্ভূত কর্মের অনুসরণ করে এবং ধারণা করে যে, এটা ‘ইলম, অথচ সেটা অজ্ঞতা। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি বিদ‘আতীদের পন্থায় ‘ইবাদত করে সে ইসলামী শরী‘আত বহির্ভূত ‘আমল করে এবং ধারণা করে যে, সে ‘ইবাদত করছে অথচ সেটা ভ্রষ্টতা’।[১১]

এই অজ্ঞতার রোগ ছিল ইহুদী-খ্রিষ্টানদের। তিনি আরো বলেন, أَنَّ الْيَهُوْدَ عَرَفُوا الْحَقَّ وَلَمْ يَعْمَلُوْا بِهِ وَالنَّصَارَى عَبَدُوا اللهَ بِغَيْرِ عِلْمٍ ‘ইহুদীরা সত্যটা জানত কিন্তু তার প্রতি ‘আমল করত না এবং খ্রিষ্টানরা বিনা ‘ইলমে আল্লাহর ‘ইবাদত করত’।[১২]

অজ্ঞতা এমন এক অমানিশার অন্ধকার, যার মাধ্যমে পথিক নিজেও সঠিক পথের দিশা পায় না এবং অন্যকেও সত্য পথে পরিচালিত করতে পারেন না। আন্দাজের উপর পথ চলে নিজেও নর্দমায় পতিত হয় এবং সাথীকেও নর্দমায় নিমজ্জিত করে। সুতরাং আল-কুরআন ও সুন্নাহর বিজ্ঞ একজন ‘আলিম নিজে যেমন ‘ছিরাতে মুস্তাকীম’ এর পথে পরিচালিত হয় অনুরূপভাবে অন্যকেও সে পথে আহ্বান করে। তবে যারা এ বিষয়ে অজ্ঞ তারা যেমন নিজে অনুমান করে কথা বলে ও তার উপর ‘আমল করে এবং সে পথেই মানুষদেরকে আহ্বান তরে। এভাবেই সে নিজেও পথভ্রষ্ট হয় এবং অন্যকেও পথভ্রষ্ট করে এবং ধ্বংস করে।

সুতরাং এই অজ্ঞতার ভয়াবহতা থেকে মুক্তির উপায় হলো, না জানা বিষয়গুলো জানলেওয়ালা ‘আলিমদের নিকট থেকে দলীলসহ জেনে নেয়। মহান আল্লাহ বলেন,

فَسۡـَٔلُوۡۤا اَہۡلَ الذِّکۡرِ  اِنۡ کُنۡتُمۡ  لَا  تَعۡلَمُوۡنَ- بِالۡبَیِّنٰتِ وَ الزُّبُرِ

‘তোমরা যদি না জান তবে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর। স্পষ্ট নিদর্শন ও প্রমাণ সহকারে’ (সূরা আন-নাহল : ৪৩)। হাদীছে এসেছে, জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

خَرَجْنَا فِىْ سَفَرٍ فَأَصَابَ رَجُلًا مِنَّا حَجَرٌ فَشَجَّهُ فِىْ رَأْسِهِ ثُمَّ احْتَلَمَ فَسَأَلَ أَصْحَابَهُ فَقَالَ هَلْ تَجِدُوْنَ لِىْ رُخْصَةً فِى التَّيَمُّمِ فَقَالُوْا مَا نَجِدُ لَكَ رُخْصَةً وَأَنْتَ تَقْدِرُ عَلَى الْمَاءِ فَاغْتَسَلَ فَمَاتَ فَلَمَّا قَدِمْنَا عَلَى النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُخْبِرَ بِذَلِكَ فَقَالَ قَتَلُوْهُ قَتَلَهُمُ اللهُ أَلَّا سَأَلُوْا إِذْ لَمْ يَعْلَمُوْا فَإِنَّمَا شِفَاءُ الْعِىِّ السُّؤَالُ إِنَّمَا كَانَ يَكْفِيْهِ أَنْ يَتَيَمَّمَ وَيَعْصِرَ. أَوْ يَعْصِبَ. شَكَّ مُوْسَى عَلَى جُرْحِهِ خِرْقَةً ثُمَّ يَمْسَحَ عَلَيْهَا وَيَغْسِلَ سَائِرَ جَسَدِهِ

‘একদা আমরা কোন এক সফরে বের হলে আমাদের মধ্যকার একজনের মাথা পাথরের আঘাতে ফেটে যায়। ঐ অবস্থায় তার স্বপ্নদোষ হলে সে সাথীদের জিজ্ঞেস করল, তোমরা কি আমার জন্য তায়াম্মুমের সুযোগ গ্রহণের অনুমতি পাও? তারা বলল, যেহেতু তুমি পানি ব্যবহার করতে সক্ষম, তাই তোমাকে তায়াম্মুম করার সুযোগ দেয়া যায় না। অতএব সে গোসল করল। ফলে সে মৃত্যুবরণ করল। আমরা নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসলে তাঁকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি বললেন, এরা অন্যায়ভাবে তাকে হত্যা করেছে। আল্লাহ এদের ধ্বংস করুন। তাদের যখন (সমাধান) জানা ছিল না, তারা কেন জিজ্ঞেস করে তা জেনে নিল না। কারণ অজ্ঞতার প্রতিষেধক হচ্ছে জিজ্ঞেস করা। ঐ লোকটির জন্য তায়াম্মুম করাই যথেষ্ট ছিল। আর যখমের স্থানে ব্যান্ডেজ করে তার উপর মাসাহ করে শরীরের অন্যান্য স্থান ধুয়ে ফেললেই যথেষ্ট হত’।[১৩]

উপরিউক্ত আলোচনায় প্রস্ফুটিত হয়েছে যে, মুসলিম সমাজে বিদ‘আত প্রকাশিত হওয়ার অন্যতম কারণ হল দ্বীনি বিধানসমূহের ব্যাপারে মানুষের অজ্ঞতা বা মূর্খতা। সুতরাং প্রত্যেক মুসলিমকে আল-কুরআন ও সুন্নাহভিত্তিক ‘ইলম অর্জন করা যরূরী কর্তব্য।

(খ) প্রবৃত্তির অনুসরণ (إتباع الهوي)

মুসলিম সমাজে বিদ‘আত প্রচলন হওয়ার দ্বিতীয় কারণ হল প্রবৃত্তির অনুসরণ করা। প্রবৃত্তি মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু। এটা মানুষকে পশুত্বের স্তরে নামিয়ে দেয়। প্রবৃত্তির অনুসরণকারী হিতাহিত জ্ঞানহীন হয়ে পড়ে। আল-কুরআন ও সুন্নাহর অকাট্য দলীল তার কাছে মূল্যহীন। ‘আলিমগণ যদি প্রবৃত্তির অনুসারী হয় তাহলে ক্ষতিটা বেশী হয়। কেননা কোন ‘আলিম যদি কোন স্বার্থে আল-কুরআন ও সুন্নাহ পরিপন্থী জানা সত্ত্বেও কোন কাজ করে থাকে, তাহলে তার ভক্ত বা অনুসারীরা ধারণা করে যে, এ কাজ আল-কুরআন ও সুন্নাত সম্মত না হয়ে যায় না। এভাবেই গোটা সমাজে বিদ‘আত প্রকাশ পায়। এছাড়া অনেক ভ- ‘আলিম ও জাহিল পীর নিজেদের স্বার্থে কিংবা নিজেদের প্রভাব-প্রতিপত্তি ধরে রাখার জন্য সমাজে যে সব বিদ‘আত শিকড় গেড়ে বসেছে সেগুলো যেমন নিজেরা পালন করছে তেমনি সেগুলোকে শরী‘আতসম্মত করার জন্য ভিত্তিহীন ও দুর্বল বর্ণনাগুলো পেশ করছে। মূলত তারা কুরআন-হাদীছ  ও ছাহাবায়ে কিরামের ‘আমলের চেয়ে অলি-আওলিয়া, পীর-ফকীর এবং বুযুর্গানে দীনের উক্তি, ঘটনা ও স্বপ্নকে অধিক প্রাধান্য দিয়ে থাকে। ‘আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

وَهَل أفْسَدَ الدِّينَ إِلَّا المُلوكُ ... وَأحبارُ سُوءٍ وَرُهْبَانُها

‘দ্বীনের যা কিছু নষ্ট হয়েছে তা রাজা-বাদশা, অসৎ ‘আলিম ও দরবেশরাই করেছে’।[১৪] এ সমস্ত কারণে ইসলামী শরী‘আতে প্রবৃত্তির অনুসরণ করাকে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। এ প্রসেঙ্গ মহান আল্লাহ বলেন.

اَفَرَءَیۡتَ مَنِ اتَّخَذَ  اِلٰـہَہٗ  ہَوٰىہُ وَ اَضَلَّہُ  اللّٰہُ  عَلٰی  عِلۡمٍ  وَّ خَتَمَ عَلٰی سَمۡعِہٖ وَ قَلۡبِہٖ وَ جَعَلَ عَلٰی بَصَرِہٖ  غِشٰوَۃً  فَمَنۡ یَّہۡدِیۡہِ  مِنۡۢ  بَعۡدِ اللّٰہِ  اَفَلَا  تَذَکَّرُوۡنَ

‘তুমি কি লক্ষ্য করেছ তাকে, যে তার প্রবৃত্তিকে নিজের মা‘বূদ বানিয়ে নিয়েছে? আল্লাহ জেনে শুনেই তাকে বিভ্রান্ত করেছেন এবং তার কর্ণ ও হৃদয়ে মোহর মেরে দিয়েছেন এবং তার চক্ষুর উপর রেখেছেন আবরণ। অতএব আল্লাহর পর কে তাকে হিদায়াত করবে? তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না’? (সূরা আল-জাছিয়া : ২৩)।

এটাই স্বাভাবিক যে, কোন লোক যখন আল্লাহর কিতাব ও রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাত থেকে বিমুখ হবে, তখন সে নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণে লিপ্ত হবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন

فَاِنۡ لَّمۡ یَسۡتَجِیۡبُوۡا لَکَ فَاعۡلَمۡ  اَنَّمَا یَتَّبِعُوۡنَ  اَہۡوَآءَہُمۡ وَ مَنۡ اَضَلُّ  مِمَّنِ اتَّبَعَ ہَوٰىہُ بِغَیۡرِ ہُدًی مِّنَ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ  لَا  یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ

‘অতঃপর যদি তারা আপনার আহ্বানে সাড়া না দেয়, তাহলে জানবে যে, তারা শুধু নিজেদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে। আল্লাহর পথ-নির্দেশ অগ্রাহ্য করে যে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে সে ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত আর কে? আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে পথ-নির্দেশ করেন না’ (সূরাহ আল-ক্বাছাছ : ৫০)। হাদীছেও রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

ثَلَاثٌ مُهْلِكَاتٌ شُحٌّ مُطَاعٌ وَهَوًى مُتَّبَعٌ وَإِعْجَابُ الْمَرْءِ بِنَفْسِهِ

‘তিনটি জিনিস ধ্বংস সাধনকারী। (১) লোভের দাস হওয়া, (২) প্রবৃত্তি পূজারী হওয়া এবং (৩) আত্ম অহংকারী হওয়া’।[১৫] সুতরাং প্রবৃত্তির অনুসরণ বিদ‘আতের পথকে উন্মুক্ত করে দেয়।[১৬]

(চলবে ইনশাআল্লাহ)


* পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

তথ্যসূত্র : 
[১]. মাজমূ‘ঊল ফাতাওয়া, ২০ তম খণ্ড, পৃ. ৩০০-৩০৩; ড. ছালিহ ফাওযান আল-ফাওযান, আল-ইরশাদু ইলা ছহীহিল ই‘তিক্বাদি ওয়ার রাদ্দি ‘আলা আহলিশ শিরকি ওয়াল ইলহাদ (রিয়াদ : মাহমূজাতু লিল জামি‘আহ, ১৪১১ হি./১৯৯০ খ্রি.), পৃ. ২৪৭-২৪৮।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/১৮৮০; ছহীহ মুসলিম, হা/১৩৭৯; মিশকাত, হা/২৭৪১।
[৩]. মাজমূ‘ঊল ফাতাওয়া, ২০ তম খণ্ড, পৃ. ৩০৩; আল-ইরশাদু ইলা ছহীহিল ই‘তিক্বাদি ওয়ার রাদ্দি ‘আলা আহলিশ শিরকি ওয়াল ইলহাদ, পৃ. ২৪৮।
[৪]. মুসনাদে আহমাদ, হা/৪১৪২; দারিমী, হা/২০২; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৬; সুলাইমান ইবনু দাঊদ আবূ দাঊদ আত-ত্বায়ালিসী, মুসনাদু আবী দাঊদ আত-ত্বায়ালিসী (বৈরূত : দারুল মা‘আরিফাহ, তা.বি.), পৃ. ৩৩, হা/২৪৪; মিশকাতুল মাছাবীহ, হা/১৬৬, সনদ হাসান।
[৫]. আল-ইরশাদু ইলা ছহীহিল ই‘তিক্বাদি ওয়ার রাদ্দি ‘আলা আহলিশ শিরকি ওয়াল ইলহাদ, পৃ. ২৪৮-২৪৯; আল-বিদ‘আতু : তা‘রীফুহা ওয়া আনওয়া‘উহা ওয়া আহকামুহা, পৃ. ১৮-১৯; ‘আলী ইবনু হুসাইন ইবনু ‘আলী ইবনু ‘আব্দিল হামীদ, ‘ইলমু উছূলুল বিদ‘ই : দিরাসাতুন তাকমীলিয়্যাতুন মুহিম্মাতুন ফী ‘ইলমি উছূলিল ফিক্বহ (সঊদী আরব : দারুর রাইয়াহ, ১ম সংস্করণ, ১৪১২ হি./১৯৯২ খ্রি.), পৃ. ৪৩।
[৬]. ইবনু মাজাহ, হা/২২৪; মুসনাদু আবী ই‘আলা, হা/২৮৩৭; ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল আওসাত্ব, হা/৯; আবূ বাকর আহমাদ ইবনু হুসাইন আল-বায়হাকী, শু‘আবুল ঈমান, ২য় খণ্ড (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, ১ম সংস্করণ ১৪১০ হি.), পৃ. ২৫৩, হা/১৬৬৫; সুলাইমান ইবনু আহমাদ ইবনু আইয়ূব আবুল কাসিম আত-তাবারানী, মুসনাদুশ শামিয়ীন, ৩য় খণ্ড (বৈরূত : মুওয়াস্সাসাতুর রিসালাহ, ১ম সংস্করণ ১৪০৫ হি./১৯৮৪ খ্রি.), পৃ. ২০২, হা/২০৮৪; মিশকাতুল মাছাবীহ, হা/২১৮।
[৭]. আল-ইরশাদু ইলা ছহীহিল ই‘তিক্বাদি ওয়ার রাদ্দি ‘আলা আহলিশ শিরকি ওয়াল ইলহাদ, পৃ. ২৪৯; আল-বিদ‘আতু : তা‘রীফুহা ওয়া আনওয়া‘উহা ওয়া আহকামুহা, পৃ. ১৯।
[৮]. আবূ দাঊদ, হা/৪৬০৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭১৮৪; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৫; মিশকাতুল মাছাবীহ, হা/১৬৫, সনদ ছহীহ।
[৯]. ছহীহুল বুখারী, হা/১০০; ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৭৩; তিরমিযী, হা/২৬৫২; ইবনু মাজাহ, হা/৫২; মুসনাদে আহমাদ, হা/৬৫১১; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৪৫৭১; দারিমী, হা/২৩৯।
[১০]. আল-ইরশাদু ইলা সহীহিল ই‘তিকাদি ওয়ার রাদ্দি ‘আলা আহলিশ শিরকি ওয়াল ইলহাদ, পৃ. ২৪৯; আল-বিদ‘আতু : তা‘রীফুহা ওয়া আনওয়া‘উহা ওয়া আহকামুহা, পৃ. ২০।
[১১]. মাজমূ‘ঊল ফাতাওয়া, ১১তম খণ্ড, পৃ. ২৭; তাক্বীউদ্দীন আহমাদ ইবনু ‘আব্দিল হালীম ইবনু তাইমিয়্যাহ, মাজমূ‘আতুর রাসাইল ওয়াল মাসাইল, ১ম খণ্ড (জিদ্দাহ : লিজান্নাতিত তুরাছিল ‘আরাবী, তা.বি.), পৃ. ২১৯।
[১২]. মাজমূ‘ঊল ফাতাওয়া, ১১তম খণ্ড, পৃ. ২৭; মাজমূ‘আতুর রাসাইল ওয়াল মাসাইল, ১ম খণ্ড, পৃ. ২১৯।
[১৩]. আবূ দাঊদ, হা/৩৩৬; আবূ বাকর আহমাদ ইবনুল হুসাইন ইবনু ‘আলী আল-বায়হাকী, আস-সুনানুল কুবরা, ১ম খণ্ড (হায়দারাবাদ : মাজলিসু দাইরাতিল মা‘আরিফ আন-নিজামিয়্যাহ আল-কাইনাহ, ১ম সংস্করণ ১৩৪৪ হি.), পৃ. ২২৭, হা/১১১৫।
[১৪]. তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১৩৮; আল-জামি‘ঊ লি আহাকিমল কুরআন, ৮ম খণ্ড, পৃ. ১২০; মুহাম্মাদ আলী আস-ছাবূনী, ছাফওয়াতুত তাফাসীর, ১ম খণ্ড (কায়রো : দারুছ ছাবূনী, ১ম সংস্করণ, ১৪১৭ হি./১৯৯৭ খ্রি.), পৃ. ৩২৫; মুহাম্মাদ জামালুদ্দীন ইবনু মুহাম্মাদ সাঈদ আল-কাসিমী, মাহাসিনুত তা’বীল, ৫ম খণ্ড (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, ১ম সংস্করণ, ১৪১৮ হি.), পৃ. ৪০১।
[১৫]. বায়হাকী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৭৪৫; ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল আওসাত্ব, হা/৫৪৫২, সনদ হাসান।
[১৬]. আল-ইরশাদু ইলা সহীহিল ই‘তিকাদি ওয়ার রাদ্দি ‘আলা আহলিশ শিরকি ওয়াল ইলহাদ, পৃ. ২৪৯; আল-বিদ‘আতু : তা‘রীফুহা ওয়া আনওয়া‘উহা ওয়া আহকামুহা, পৃ. ২০।




কেমন ছিল রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রামাযানের দিনগুলো? - শরীফ বিন আব্দুস সামাদ
হজ্জ ও ওমরার সঠিক পদ্ধতি (২য় কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
হজ্জ মুসলিম উম্মাহর বিশ্ব সম্মেলন - প্রফেসর ড. মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম
সালাফী মানহাজ অনুসরণের মর্যাদা - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ফাযায়েলে কুরআন (২য় কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
দলাদলির কুপ্রভাব : উত্তরণের উপায় - শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
ভ্রান্ত ফের্কাসমূহের ঈমান বনাম আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের ঈমান : একটি পর্যালোচনা (শেষ কিস্তি) - ড. আব্দুল্লাহিল কাফী বিন লুৎফর রহমান মাদানী
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ (৭ম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
ইসলামী পুনর্জাগরণের মূলনীতি - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ব্যভিচার ও ধর্ষণ: সমাধান কোন্ পথে
আল-কুরআন সম্পর্কে অমুসলিম মনীষীদের মূল্যায়ন - রাফিউল ইসলাম
কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা (৩য় কিস্তি) - অনুবাদ : হাফীযুর রহমান বিন দিলজার হোসাইন

ফেসবুক পেজ