বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৯ অপরাহ্ন

মসজিদ: ইসলামী সমাজের প্রাণকেন্দ্র 

-ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান* 


(৩য় কিস্তি) 
[নভেম্বর’২৩ এর পর] 



৬- মসজিদ ফাতাওয়ার ঘর ও বিচার বিভাগের আদালত

ইসলামী শরী‘আতের মসজিদের অবস্থান অনেক ঊর্ধ্বে। কেননা এই মসজিদ হল অজানা মানুষের জ্ঞানের প্রদীপ এবং রাষ্ট্রীয় বিচার বিভাগের আদালতগৃহ। আল্লাহর রাসূল (ﷺ) তাঁর ছাহাবীদের সাথে মসজিদে বসতেন এবং তারা তাঁকে জিজ্ঞাসা করতেন, তিনি তাদের উত্তর দিতেন। মসজিদে তাঁর ফাতাওয়া প্রদান এবং বিচারের ফয়সালা করার বিষয়টি অত্যন্ত সুপরিচিত। ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর ‘আছ-ছহীহ’ গ্রন্থে অধ্যায় নির্বাচন করেছেন যে,  بَابُ مَنْ قَضَى وَلَاعَنَ فِى الْمَسْجِدِ ‘যে ব্যক্তি মসজিদে বিচার করে এবং অভিশাপ দেয়’। তারপর তিনি বললেন, ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) নবী (ﷺ)-এর মিম্বারের নিকটে লি‘আন[১] করিয়েছিলেন। মারওয়ান যায়দ ইব্‌নু ছাবিত (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর উপর নবী (ﷺ)-এর মিম্বারের কাছে শপথ করার রায় দিয়েছিলেন। শুরায়হ, শা‘বী, ইয়াহইয়া ইবনু ইয়ামামার মসজিদে বিচারকার্য পরিচালনা করেছেন। হাসান (রাহিমাহুল্লাহ) ও যুরারাহ ইবনু আওফা (রাহিমাহুল্লাহ) মসজিদের বাহিরের চত্বরে বিচার করতেন।[২]

অতঃপর ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) باب مَنْ حَكَمَ فِى الْمَسْجِدِ حَتَّى إِذَا أَتَى عَلَى حَدٍّ أَمَرَ أَنْ يُخْرَجَ مِنَ الْمَسْجِدِ فَيُقَامَ ‘যে লোক মসজিদে বিচার করে। অবশেষে যখন ‘হদ’ কার্যকর করার সময় হয়, তখন সাজাপ্রাপ্তকে মাসজিদ থেকে বের করে দণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেয়’ শীর্ষক পরবর্তী অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন। এরপর উক্ত অনুচ্ছেদের অধীনে নিম্নের হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত,

أَتَى رَجُلٌ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ وَهْوَ فِى الْمَسْجِدِ فَنَادَاهُ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّىْ زَنَيْتُ. فَأَعْرَضَ عَنْهُ. فَلَمَّا شَهِدَ عَلَى نَفْسِهِ أَرْبَعًا قَالَ ্রأَبِكَ جُنُوْنٌগ্ধ. قَالَ لَا. قَالَ ্রاذْهَبُوْا بِهِ فَارْجُمُوْهُগ্ধ.

‘এক লোক রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কাছে এল। তখন তিনি ছিলেন মসজিদে। লোকটি নবী (ﷺ)-কে ডেকে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আমি যিনা করে ফেলেছি। তিনি তাঁর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিলেন। এভাবে সে যখন নিজের সম্পর্কে চারবার সাক্ষ্য দিল, তখন তিনি বললেন, তুমি কি পাগল? লোকটি বলল, না। তখন তিনি বললেন, একে রজম কর’।[৩]

ছাহাবায়ে কিরাম, তাঁর পরে সৎপথে পরিচালিত খলীফাগণ মসজিদে ফাতাওয়া ও বিচার জারি করতেন। আর এইভাবেই মসজিদ ছিল ফাতাওয়া দেয়ার ঘর এবং বিচার বিভাগের আদালত। মূলত মসজিদ ছিল বিরোধকারীদের মধ্যে পারস্পরিক সংশোধনের স্থান। কা‘ব ইবনু মালেক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত,

أَنَّهُ تَقَاضَى ابْنَ أَبِيْ حَدْرَدٍ دَيْنًا لَهُ عَلَيْهِ فِيْ عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ فِي الْمَسْجِدِ فَارْتَفَعَتْ أَصْوَاتُهُمَا حَتَّى سَمِعَهَا رَسُوْلَ اللهِ ﷺ وَهُوَ فِيْ بَيْتِهِ فَخَرَجَ إِلَيْهِمَا رَسُوْلَ اللهِ ﷺ حَتَّى كَشَفَ سِجْفَ حُجْرَتِهِ وَنَادَى كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ قَالَ يَا كَعْبُ قَالَ لَبَّيْكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَأَشَارَ بِيَدِهِ أَنْ ضَعِ الشَّطْرَ مِنْ دَيْنِكَ قَالَ كَعْبٌ قَدْ فَعَلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ قُمْ فَاقْضِهِ.

‘একদা তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর আমলে মসজিদের মধ্যে ইবনু আবী হাদরাদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) নামের ব্যক্তির নিকট স্বীয় প্রাপ্য ঋণের তাগাদা করলেন। তখন উভয়ের শব্দ উঁচু হয়ে গেল। এমনকি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদের আওয়াজ শুনতে পান, তখন তিনি তাঁর গৃহে ছিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর ঘরের পর্দা উঠিয়ে তাদের দিকে বের হয়ে আসলেন এবং কা‘ব ইবনু মালেক (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে ডাকলেন। তিনি বলেন, হে কা‘ব! তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আমি উপস্থিত আছি। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর হাতের ইশারায় তাঁকে তার প্রাপ্য ঋণের অর্ধভাগ ক্ষমা করে দিতে বললেন। কা‘ব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আমি তাই করে দিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঋণী ব্যক্তিকে বললেন, যাও, অবশিষ্ট ঋণ পরিশোধ করে দাও’।[৪]

৭- মসজিদ অভাবীদের আশ্রয় কেন্দ্র

আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-এর সময়ে মসজিদ অভাবী লোকদের আশ্রয়স্থল ছিল। সেখানে ‘আছ-ছাফ্ফাহ’ নামক একটি জায়গা ছিল, যেখানে দরিদ্রদের মধ্যে যাদের বাসস্থান নেই এমন লোকেরা বাস করত। আবূ ক্বিলাবাহ (রাহিমাহুল্লাহ) আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণনা করেন, ‘উক্বাইল গোত্রের কতিপয় ব্যক্তি নবী (ﷺ)-এর কাছে আসলেন এবং ছুফ্‌ফায় অবস্থান করলেন। ‘আব্দুর রহমান ইব‌নু আবূ বকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ছুফ্‌ফাবাসীগণ ছিলেন দরিদ্র।[৫] আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ছুফ্ফাবাসীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। তিনি মসজিদে নববীতে অবস্থান করতেন।[৬] আনছারগণ আহলুছ ছুফফার জন্য আগুন জ্বালাতেন, কাঠ বিক্রি করতেন এবং খাদ্য ক্রয় করতেন।[৭]

আল্লাহর রাসূল (ﷺ) তাঁর মসজিদে অভাবী লোকদের আশ্রয় দিতেন। তাঁর ছাহাবীদেরকে মসজিদে একত্রিত করতেন এবং তাদেরকে ব্যয় করার জন্য অনুরোধ করতেন।[৮] এইভাবে, ছাহাবীগণের মধ্যে যেসকল যুবক অবিবাহিত ছিল এবং তাদের কোন পরিবার ছিল না, তারা মসজিদে ঘুমাতেন। আর এ বিষয়টি রাসূল (ﷺ) অনুমোদন করতেন।[৯] এমনকি কারো বাড়ীতে কোন সমস্যা হলে তারা মসজিদে এসে অবস্থান করতেন। যেমন একদা আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ও তার পরিবারের মধ্যে রাগের কারণে বাড়িতে অস্বস্তি বোধ করায় তিনি মসজিদে গিয়ে শুয়েছিলেন।[১০] এতদ্ব্যতীত জনৈক এক মহিলা মসজিদের আঙ্গিনায় অবস্থান করতেন।[১১]

মসজিদে নববী বায়তুল্লাহর পরে সর্বশ্রেষ্ঠ মসজিদ হওয়া সত্ত্বেও সেখানে অভাবী, পুরুষ ও মহিলাদের ভ্রমণকারী, বাসিন্দাদের জন্য আশ্রয়স্থল এবং বন্দীদের অবস্থানস্থল ছিল। এমনিক আল্লাহর রাসূল (ﷺ) স্বয়ং তাঁর একজন সঙ্গীর জন্য মসজিদে একটি তাঁবু স্থাপন করেছিলেন, যে তাঁর সাথে একটি যুদ্ধে আহত হয়েছিল, যাতে তিনি শীঘ্রই তাঁর কাছে ফিরে আসেন এবং তাঁর তত্ত্বাবধান করেন। ‘আয়িশাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, ‘খন্দকের যুদ্ধে সা‘দ (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর হাতের শিরা যখম হযেছিল। নবী (ﷺ) মসজিদে (তাঁর জন্য) একটা তাঁবু স্থাপন করলেন, যাতে নিকট হতে তাঁর দেখাশুনা করতে পারেন। মসজিদে বনূ গিফারেরও একটা তাঁবু ছিল। সা‘দ (ﷺ)-এর প্রচুর রক্ত তাঁদের দিকে প্রবাহিত হওয়ায় তারা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, হে তাঁবুর লোকেরা! তোমাদের তাঁবু হতে আমাদের দিকে কী প্রবাহিত হচ্ছে? তখন দেখা গেল যে, সা‘দের যখম হতে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। অবশেষে এতেই তিনি মারা গেলেন’।[১২]

৮- মসজিদ অশ্বারোহী প্রশিক্ষণের ক্ষেত্র

মসজিদ হল সৈন্য বাহিনী প্রস্তুতের কেন্দ্র। রাসূল (ﷺ)-এর যুগে মসজিদুন নববীতে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য ছাহাবীদেরকে অশ্বারোহী প্রশিক্ষণের ক্ষেত্র ছিল। জিহাদের সৈন্যবাহিনী মসজিদ থেকে রওয়ানা দিতেন, সেখানে তারা নিজেদের সাজিয়ে নিতেন। এমনকি সেখানে ইসলামের সৈন্যবাহিনীকে অস্ত্র প্রশিক্ষণের প্রদান করা হত। সুতরাং মসজিদ শুধু ইবাদতগাহ ছিল এমনটি নয়, বরং সৈন্যবাহিনী প্রশিক্ষণকেন্দ্রের জন্য বিখ্যাত ছিল। তৎকালীন যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে মসজিদ প্রাঙ্গনে ছেলেরা খেলাধুলা করত। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, এক সময় আবিসিনীয় লোকেরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সামনে যুদ্ধাস্ত্রের সাহায্যে খেলাধূলা করছিল। এমন সময় ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) সেখানে আসলেন। তিনি (এ দৃশ্য দেখে) প্রস্তর খণ্ড তুলে তাদের প্রতি নিক্ষেপ করতে উদ্যত হলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে বললেন, এদেরকে খেলতে দাও হে উমার!।[১৩] ‘আয়িশাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন,

رَأَيْتُ النَّبِىَّ ﷺ يَسْتُرُنِىْ بِرِدَائِهِ، وَأَنَا أَنْظُرُ إِلَى الْحَبَشَةِ يَلْعَبُوْنَ فِى الْمَسْجِدِ، حَتَّى أَكُوْنَ أَنَا الَّذِىْ أَسْأَمُ، فَاقْدُرُوْا قَدْرَ الْجَارِيَةِ الْحَدِيْثَةِ السِّنِّ الْحَرِيْصَةِ عَلَى اللَّهْوِ.

‘আমি একদিন হাবশীদের খেলা দেখছিলাম। তারা মসজিদের আঙ্গিনায় খেলা খেলছিল। আমি খেলা দেখে ক্লান্ত না হওয়া পর্যন্ত দেখছিলাম। তখন নবী (ﷺ) তাঁর চাদর দিয়ে আমাকে আড়াল করে রেখেছিলেন। তোমরা অনুমান কর যে, অল্পবয়স্কা মেয়েরা খেলাধূলা দেখতে কী পরিমান আগ্রহী!’।[১৪] ইবনু হাজার আল-‘আসকালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘বর্শা দিয়ে খেলা একটি বিমূর্ত খেলা নয়, বরং এর সাথে যুদ্ধের জায়গায় সাহসিকতার প্রশিক্ষণ দেয়া এবং শত্রুর জন্য প্রস্তুতি নেয়া জড়িত’। মুহাল্লাব (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘মসজিদ হলো মুসলিমদের নির্দেশিত বিষয়ের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই যে কাজই দ্বীন ও এর জনগণের উপকার করে, সেখানে তা করা জায়েয’।[১৫]

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মসজিদটিকে ঘোড়দৌড়ের জন্য একটি জায়গা বানিয়েছিলেন এবং তিনি প্রতিযোগীদের মধ্যে একজন তরুণ সঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন। এছাড়া ঘোড়দৌড়ের সময় কীভাবে তার ঘোড়াটি তার সাথে লাফ দিয়েছিল সেটিও তিনি অত্যন্ত উৎসাহের সাথে বর্ণনা করেছেন। ইব্‌নু ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, ‘নবী (ﷺ) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অশ্বের জন্য হাফ্‌য়া থেকে ছানিয়্যাতুল বিদা পর্যন্ত এবং প্রশিক্ষণহীন অশ্বের জন্য ছানিয়্যা থেকে বনূ যুরায়কের মসজিদ পর্যন্ত দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন’। ইব্‌নু ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) আরো বলেন, ‘আমি উক্ত প্রতিযোগিতার একজন প্রতিযোগী ছিলাম’। সুফিয়ান (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘হাফ্‌য়া থেকে ছানিয়্যাতুল বিদার দূরত্ব পাঁচ কিংবা ছয় মাইল এবং সানিয়্যা থেকে বনূ যুরায়কের মসজিদের দূরত্ব এক মাইল’।[১৬] এমনকি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মসজিদে যুদ্ধের অস্ত্র সংরক্ষণের জন্য অস্ত্র ছাদাক্বাহ করার অনুমোদন দিয়েছিলেন। জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘জনৈক ব্যক্তি মসজিদের মধ্যে তীর বিতরণ করছিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে মসজিদ অতিক্রমকালে তীরের ফলা ধরে রাখার নির্দেশ দিলেন’।[১৭]

৯- মসজিদ হল পারস্পরিক পরামর্শ গ্রহণ ও খলীফার প্রতি আনুগত্য করার সাধারণ অঙ্গীকারের স্থল

ইসলামী শরী‘আতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল পারস্পরিক পরামর্শ গ্রহণ করা। আর মসজিদ হল এই পারস্পরিক পরামর্শ গ্রহণের সবচেয়ে উত্তম স্থান।[১৮] কেননা সেখানে সহজেই সকলকে আহ্বান করা যায়, সেখানে উপস্থিত হওয়াটা অনেক সহজ হয় এবং পরামর্শ বৈঠকে সকলের অংশগ্রহণ করা সম্ভব হয়। এক কথায় বলা যায় যে, মসজিদ হল মুসলিমদের জাতীয় সংসদ। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যে কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পারস্পরিক পরামর্শের জন্য মসজিদেই বৈঠক করতেন। তন্মধ্যে ইফকের ঘটনা অন্যতম। তিনি এ বিষয়ে মসজিদেই আলোচনা সভার আয়োজন করেছিলেন। ‘আয়িশাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) (মসজিদে) লোকদের (সামনে) খুত‌বাহ দিলেন। আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করলেন। এরপর তিনি বললেন, যারা আমার স্ত্রীর অপবাদ রটিয়ে বেড়াচ্ছে, তাদের সম্পর্কে তোমরা আমাকে কী পরামর্শ দাও। আমি আমার পরিবারের কারো মধ্যে কখনো খারাপ কিছু দেখিনি...’।[১৯]

রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বেশিরভাগ উপদেশ এবং তাঁর পরে তাঁর উত্তরসূরীরা মসজিদেই পরামর্শ বৈঠক করতেন। কারণ এটি তাদের ইবাদতের পাশাপাশি বৈঠকস্থল ছিল। উল্লেখ্য, রাসূলুল্লøাহ (ﷺ) ও পরবর্তীতে ছাহাবীগণের অনেক পরামর্শ বৈঠকের নির্দিষ্ট স্থানের বিবরণ বর্ণিত হয়নি; তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মসজিদ ব্যতীত কোন বৈঠকই হয়নি। যেমন ইসলামের প্রথম খলীফা আবূ বকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) যখন মৃত্যু রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েন, তখন তিনি একটি চুক্তি লিখেছিলেন, যেখানে ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে খলীফা নিযুক্ত করা হয়েছিল। অতঃপর তিনি সবাইকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, ‘আমি যাকে তোমাদের উপর নিযুক্ত করেছি তোমরা কি তাতে সন্তুষ্ট হবে? আমি তোমাদের উপর কোন আত্মীয়কে নিযুক্ত করিনি এবং আমি ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে তোমাদের উপর নিযুক্ত করেছি। সুতরাং তোমরা তার কথা শোন এবং আনুগত্য কর। কারণ আল্লাহর কসম! মতামতের প্রচেষ্টা থেকে আমি রেহাই পাচ্ছি না। তখন উপস্থিত সকলেই বলল, আমরা শুনেছি এবং মেনে নিয়েছি’।[২০] উক্ত ঘটনাটি কোন্ স্থানে হয়েছিল তা উক্ত ঘটনায় উল্লেখ নেই। কিন্তু এটা জানা বিষয় যে, আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর জন্য মসজিদে নববীর একটি দরজা ছিল। আর অনুমিত হয় যে, তিনি মসজিদের ঐ স্থান হতেই লোকদের উপর তার তত্ত্বাবধান করতেন। অনুরূপভাবে, মসজিদে খলীফার কাছে আনুগত্যের সাধারণ অঙ্গীকার দেয়া হয়েছিল, যার মধ্যে আবূ বাকর আছ-ছিদ্দীক (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর কাছে কিছু ছাহাবীর আনুগত্যের পর সাধারণ অঙ্গীকারটি মসজিদে সংঘটিত হয়েছিল।[২১]

একইভাবে মসজিদেই ‘উছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর নিকট থেকে লোকেরা মিম্বারে তাঁর কাছে আনুগত্যের অঙ্গীকার করেছিল যখন আব্দুর রহমান ইবনু আওফ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাদের তাঁর কাছে আনুগত্যের শপথ নেয়ার জন্য তাদের আহ্বান করেছিলেন। আর তিনি ছিলেন সেই ছয়জনের একজন যাদেরকে ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) খলীফার বিষয়ে পরামর্শের জন্য দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন।[২২] বরং বলা যায় যে, রাসূল (রাযিয়াল্লাহু আনহু) এবং তাঁর সঠিক পথপ্রদর্শক খলীফাগণ এবং যারা তাদের অনুসরণ করেছিলেন, তাদের জন্য মসজিদ ছাড়া জাতিকে পথ দেখানোর কোন স্থান ছিল না। শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘মসজিদ হলো ইমাম ও জাতির মসজিদ। নবী কারীম (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাঁর বরকতময় মসজিদটি তাক্বওয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। এতে ছালাত, কুরআনের তেলাওয়াত, যিকির, ইলম শিক্ষা, খুতবাহ, রাজনীতি, ব্যানার এবং ব্যানার ধারণ, প্রশাসকদের নির্দেশনা প্রদান, অফিসারদের পরিচয় করিয়ে দেয়া। এতে মুসলিমরা তাদের ধর্ম ও তাদের জগতের বিষয়ে যা তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সেইসাথে মক্কা, তায়েফ, ইয়ামানের দেশ এবং বিশ্বের বিভিন্ন শহর ও অঞ্চল থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ একত্রিত জড়ো হয়। কারণ তাদের একটি সমাবেশ রয়েছে তথা হজ্জ, যেখানে তারা প্রার্থনা করে। যেমন নবী (ﷺ) বলেছেন, বনী ইসরাঈলরা নবীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। যতবার একজন নবী চলে যায়, ততবার আরেকজন নবী তার স্থলাভিষিক্ত হন। তবে আমার পরে কোন নবী নেই এবং শীঘ্রই খলীফাগণ হবেন, তাদেরকে তোরাম চিন অথবা অস্বীকার কর। ছাহাবীগণ বললেন, এমতাবস্তায় আমাদের উপর নির্দেশ কী? তিনি বললেন, তোমরা প্রথমেই তাদের নিকট বায়‘আত করবে এবং আল্লাহ নিকট সাহায্য প্রার্থনা করবে। খলীফা এবং আমীররা তাদের বাড়িতে থাকেন যেমন অন্যান্য মুসলিম তাদের বাড়িতে বাস করে। তবে জামে‘ মসজিদের ইমাম মসজিদেই অবস্থান করে’।[২৩]

১০- মসজিদ প্রতিনিধিদল এবং তাদের সাথে আলোচনার সদর দপ্তর

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রতিনিধি দল ও তাদের সাথে আলোচনার জন্য মসজিদ ছিল হেডকোয়াটারের মত। মক্কা বিজয়, ছাক্বীফ গোত্রের ইসলাম গ্রহণ এবং তাবূক থেকে ফিরে আসার পরে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট প্রতিনিধি দল আগমনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।[২৪] মসজিদ ব্যতীত তাদের গ্রহণ করার আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-এর কোন জায়গা ছিল না। তাই তিনি মসজিদের সমস্ত প্রতিনিধির গ্রহণ করেছিলেন।

যিমাম ইবনু সা‘লাবা একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে নবী (ﷺ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য আসেন। তিনি মসজিদে প্রবেশ করেছিলেন এবং তাঁর কাছ থেকে ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো শিখেছিলেন।[২৫] অনুরূপভাবে বিখ্যাত দানবীর হাতেম তাঈ তার প্রতিনিধি দল নিয়ে রাসূল (ﷺ)-এর নিকট এসেছিলেন। তখন তিনি তাঁর মসজিদে অবস্থান করছিলেন। হাতেম তাঈ বলেন, আমি তাকে সালাম দেই। তখন তিনি বললেন, লোকটি কে? আমি বললাম, হাতিম তাঈ। তিনি তাঁর বাড়ীতে হাতিম তাঈ ও তার প্রতিনিধি দলকে আপ্যায়ন করেছিলেন।[২৬] একইভাবে কিন্দাহ প্রতিনিধি দল এসেছিল, যারা মুসলিম ছিল। কিন্তু তাদের পরনে রেশমি পোশাক ছিল। এই কারণে রাসূল (ﷺ) তাদেরকে নিন্দা জ্ঞাপন করেছিলেন এবং তারা তার সামনে দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করেছিল।[২৭] জারীর ইবনু আব্দুল্লাহ আল-বাজালী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) নবী (ﷺ)-এর নিকট যখন আগমন করেন, তখন তিনি (মসজিদে) খুতবাহ দিচ্ছিলেন।[২৮] হারিছ ইবনুল হাসান আল-বাকরী রাসূল (ﷺ)-এর নিকটে আগমন সম্পর্কে বলেন, ‘আমি মদীনায় আসলাম। তখন মসজিদে তাঁর (রাসূল (ﷺ)-এর) নিকটে লোকজনে পরিপূর্ণ ছিল’।[২৯]

১১- মসজিদ ও রাষ্ট্রের সাধারণ নীতির ঘোষণাকেন্দ্র

সমাজ ও রাষ্ট্রীয় নিয়ম-কানুন কিংবা কোন আইন ঘোষণাকেন্দ্র ছিল মসজিদ। মসজিদ থেকেই শরী‘আতের বিধানাবলী ঘোষণা করা হত। আল্লাহর রাসূল (ﷺ) তাঁর ছাহাবীদেরকে আল-কুরআন ও সুন্নাহতে যা কিছু নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন তার সবই ঘোষণা করছিলেন। যেমন দুনিয়াবী বিষয়ে জায়েয-নাজায়েয, হালাল-হারাম, মুবাহ, মাকরূহ ইত্যাদি অথবা আখিরাতের সাথে সম্পর্কিত খবরাখবর। হুযায়ফা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদের মাঝে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিলেন এবং তখন হতে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে তার সমস্ত কিছু বর্ণনা করলেন। তাঁর সেই ভাষণটি যারা স্মরণে রাখতে পারে তারা স্মরণে রেখেছে আর যারা ভুলে যাওয়ার তারা ভুলে গেছে।[৩০] আবূ যায়দ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,

صَلَّى بِنَا رَسُوْلُ اللهِ ﷺ الْفَجْرَ وَصَعِدَ الْمِنْبَرَ فَخَطَبَنَا حَتَّى حَضَرَتِ الظُّهْرُ فَنَزَلَ فَصَلَّى ثُمَّ صَعِدَ الْمِنْبَرَ فَخَطَبَنَا حَتَّى حَضَرَتِ الْعَصْرُ ثُمَّ نَزَلَ فَصَلَّى ثُمَّ صَعِدَ الْمِنْبَرَ فَخَطَبَنَا حَتَّى غَرَبَتِ الشَّمْسُ فَأَخْبَرَنَا بِمَا كَانَ وَبِمَا هُوَ كَائِنٌ فَأَعْلَمُنَا أَحْفَظُنَا.

‘একদিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে নিয়ে ফজরের ছালাত আদায় করলেন। তারপর মিম্বারে আরোহণ করে ভাষণ দিলেন। পরিশেষে যোহরের ছালাতের সময় উপস্থিত হলে তিনি মিম্বার হতে নেমে ছালাত আদায় করলেন। তারপর পুনরায় মিম্বারে উঠে তিনি ভাষণ দিলেন। এবার আছরের ছালাতের ওয়াক্ত হলে তিনি মিম্বার থেকে নেমে ছালাত আদায় করে পুনরায় মিম্বারে উঠলেন এবং আমাদেরকে লক্ষ্য করে খুতবাহ দিলেন, এমনকি সূর্যাস্ত হয়ে গেল, এ ভাষণে তিনি আমাদেরকে পূর্বে যা ঘটেছে এবং ভবিষ্যতে যা ঘটবে ইত্যকার সম্বন্ধে সংবাদ দিলেন। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, যে লোক এ কথাগুলো সর্বাধিক মনে রেখেছেন আমাদের মধ্যে এ সম্বন্ধে তিনিই সবচেয়ে বেশি জানেন’।[৩১]

উক্ত হাদীছ দু’টিতে অদৃশ্য, অতীত এবং ভবিষ্যতের খবরে রয়েছে। তবে এটি অবশ্যই রাসূল (ﷺ) ও তাঁর ছাহাবীদের দ্বারা বর্ণিত হতে হবে। যার উদ্দেশ্য মূলত মানুষের দ্বীন ও দুনিয়ার সংশোধন। অতঃপর আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) রাসূল (ﷺ)-এর মিম্বারে সাধারণ জনগণের নিকট থেকে আনুগত্যের অঙ্গীকার নিয়েছিলেন এবং তিনি তাঁর খুতবায় জনগণের কাছে সাধারণ নীতি ঘোষণা করেছিলেন। আর এ ঘোষণা ছিল মসজিদ থেকেই।[৩২]

(ইনশাআল্লাহ চলবে)


* শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আল-ইসলামিয়্যাহ, খড়খড়ি, রাজশাহী।

[১]. স্বামী বা স্ত্রীর একে অপরের প্রতি যিনার অভিযোগ উত্থাপন করলে শরী‘আতসম্মত বিধান মুতাবিক উভয়কে যে কসম করানো হয় তাকে ‘লি‘আন’ বলে।

[২]. ছহীহুল বুখারী, পৃ. ১১৫০ ‘কিতাবুল আহকাম’-৯৩, অনুচ্ছদ-১৮।

[৩]. ছহীহুল বুখারী, হাদীছ নং-৭১৬৭; ছহীহ মুসিলম, হা/১৬৯১; মিশকাত, হা/৩৫৬০।

[৪]. ছহীহ বুখারী, পৃ. ২৮৬, হাদীস নং ২৪১৮।

[৫]. ছহীহুল বুখারী, পৃ. ৯১, ‘সালাত’ অধ্যায়-৮, ‘মসজিদে পুরুষদের নিদ্রা যাওয়া’ অনুচ্ছেদ-৫৮।

[৬]. ছহীহুল বুখারী, পৃ. ১০৪৩, হাদীছ নং-৬৪৫২; আহমাদ ইবনু হাম্বল আবূ আব্দিল্লাহ আশ-শায়বানী, আল-মুসনাদ, ২য় খণ্ড (কায়রো: মুওয়াসসাসাতু কুর্তুবা, তাবি), পৃ. ৫১৫, হাদীছ নং-১০৬৯০।

[৭]. ইমাম মুসলিম, আছ-ছাহীহ, ৩য় খণ্ড, পৃ. ১৫১১, হাদীছ নং-৬৭৭।

[৮]. ইমাম মুসলিম, আছ-ছহীহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৭০৪, হাদীছ নং-১০১৭; মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল্লাহ আল-খাতীব আত-তিবরীযী, মিশকাতুল মাসাবীহ, ১ম খণ্ড (বৈরূত: আল-মাকতাবুল ইসলামী, ৩য় সংস্করণ, ১৪০৫ হি./১৯৮৫ খ্রি.), পৃ. ৪৫, হাদীছ নং-২১০।

[৯]. ছহীহুল বুখারী, পৃ. ৬০৮, হাদীছ নং-৩৭৩৮-৩৭৩৯।

[১০]. ছহীহুল বুখারী, পৃ. ৯১, হাদীছ নং-৪৪১; আল-মুসতাদরাকু ‘আলাস সাহীহাইন, ৩য় খণ্ড, পৃ. ১৫১, হাদীছ নং-৪৬৭৯।

[১১]. ছহীহুল বুখারী, পৃ. ৬২০, হাদীছ নং-৩৮৩৫; মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক ইবনু খুযাইমাহ আবূ বকর আস-সালামী আন-নাইসাপুরী, সহীহ ইবনু খুযাইমাহ, ২য় খণ্ড (বৈরূত: আল-মাকতাবুল ইসলামী, ১৩৯০ হি./১৯৭০ খ্রি.), পৃ. ২৮৬, হাদীছ নং-১৩৩২।

[১২]. ছহীহুল বুখারী, পৃ. ৯৫, হাদীছ নং-৪৬৩।

[১৩]. ইমাম মুসলিম, আছ-ছহীহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৬১০, হাদীছ নং-৮৯৩; মুহাম্মাদ ইবনু হিব্বান ইবনু আহমাদ আবূ হাতিম আত-তামীমী, ছহীহ ইবনু হিব্বান,  ১৩শ খণ্ড (বৈরূত: মুওয়াসসাসাতুর রিসালাহ, ২য় সংস্করণ, ১৪১৪ হি./১৯৯৩ খ্রি.), পৃ. ১৭৬, হাদীছ নং-৫৮৬৭।

[১৪]. ছহীহুল বুখারী, পৃ. ৮৭৫, হাদীছ নং-৫২৩৬; ইমাম নাসাঈ, আস-সুনান, ৩য় খণ্ড, পৃ. ১৯৫, হাদীছ নং-১৫৯৫।

[১৫]. আহমাদ ইবনু আলী ইবনু হাজার আবুল ফাযল আল-‘আসকালানী আশ-শাফিঈ, ফাৎহুল বারী শারহু সহীহিল বুখারী, ১ম খণ্ড (বৈরূত: দারুল মা‘আরিফাহ, ১৩৭৯ হি.), পৃ. ৫৪৯।

[১৬]. ছহীহুল বুখারী, পৃ. ৪৭০, হাদীছ নং-২৮৬৮।

[১৭]. ইমাম মুসলিম, আছ-ছাহীহ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ২০১৮, হাদীছ নং-২৬১৪; সুলাইমান ইবনু আশ‘আছ আবূ দাঊদ আস-সিজিস্তানী, আস-সুনান, ২য় খণ্ড (বৈরূত: দারুল ফিকর, তাবি), পৃ. ৩৬, হাদীছ নং-২৫৮৬।

[১৮]. ড. আব্দুল্লাহ আব্দুর রাযযাক সাঊদ আস-সাঈদ, রিসালাতুল মাসাজিদ (আম্মান: দারুয যিয়া, ১ম সংস্করণ, ১৪১২ হি./১৯৯২ খ্রি.), পৃ. ২৭-২৮।

[১৯]. ছহীহুল বুখারী, পৃ. ১১৮০, হাদীছ নং-৭৩৭০।

[২০]. ঈযযুদ্দীন আবুল আছীর আশ-শায়বানী, আল-কামিল ফিত তারীখ, ২য় খণ্ড (বৈরূত: দারুল কিতাবিল ‘আরাবী, ১ম সংস্করণ, ১৪১৭ হি./১৯৯৭ খ্রি.), পৃ. ২৬৭ ।

[২১]. ছহীহুল বুখারী, পৃ. ১১৫৮-১১৫৯, হাদীছ নং-৭২১৯ ।

[২২]. ছহীহুল বুখারী, পৃ. ১১৫৭, হাদীছ নং-৭২০৭ ।

[২৩]. তাকীউদ্দীন আবুল আব্বাস আহমাদ ইবনু আব্দুল হালীম ইবনু তাইমিয়্যাহ, মাজমূঊল ফাতাওয়া, ৩৫শ খণ্ড, (দারুল ওয়াফাহ, ৩য় সংস্করণ, ১৪২৬ হি./২০০৫ খ্রি.), পৃ. ৩৯-৪০।

[২৪]. আবুল ফিদা ইসাম‘ঈল ইবনু কাছীর আদ-দিমাস্কী, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিয়াহাহ, ৫ম খণ্ড (দারু ইহইয়াইত তুরাছিল ‘আরাবী, ১ম সংস্করণ, ১৪০৮ হি./১৯৮৮ খ্রি.), পৃ. ৪০।

[২৫]. প্রাগুক্ত, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৬০।

[২৬]. প্রাগুক্ত, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৬৩-৬৮।

[২৭]. প্রাগুক্ত, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৭৩।

[২৮]. প্রাগুক্ত, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৭৭।

[২৯]. প্রাগুক্ত, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৮।

[৩০]. ইমাম মুসলিম, আস-সাহীহ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ২২১৬, হাদীছ নং-২৮৯১; ইমাম আবূ দাঊদ, আস-সুনান, ২য় খণ্ড, পৃ. ৪৯৫, হাদীছ নং-৪২৪০।

[৩১]. ইমাম মুসলিম, আস-সাহীহ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ২২১৭, হাদীছ নং-২৮৯১।

[৩২]. আল-বিদায়াহ ওয়ান নিয়াহাহ, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩৩৩।




প্রসঙ্গসমূহ »: মসজিদ
বিদায় হজ্জের ভাষণ : তাৎপর্য ও মূল্যায়ন (শেষ কিস্তি) - অধ্যাপক মো. আকবার হোসেন
ইমাম মাহদী, দাজ্জাল ও ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আগমন সংশয় নিরসন (২য় কিস্তি) - হাসিবুর রহমান বুখারী
ইসলামী পুনর্জাগরণের মূলনীতি (৪র্থ কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
তাক্বওয়াই মুক্তির সোপান - আব্দুর রশীদ
ছালাতের সঠিক সময় ও বিভ্রান্তি নিরসন (৬ষ্ঠ কিস্তি) - মাইনুল ইসলাম মঈন
সচ্চরিত্রই মানব উন্নতির চাবিকাঠি - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
আধুনিক যুগে দাওয়াতী কাজের পদ্ধতি (৩য় কিস্তি) - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী
বিদ‘আত পরিচিত (২১তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
সালাফী জামা‘আত বনাম ভ্রান্তদল সমূহ - আল-ইখলাছ ডেস্ক
আল-কুরআন এক জীবন্ত মু‘জিযা - আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইউনুস
ইখলাছই পরকালের জীবনতরী (৬ষ্ঠ কিস্তি) - আব্দুল গাফফার মাদানী
মূর্তিপূজার ইতিহাস - অধ্যাপক মো. আকবার হোসেন

ফেসবুক পেজ