প্রতিবেশীর হক্ব আদায়ের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
- ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর*
(২য় কিস্তি)
৪. প্রতিবেশীর সাথে সদ্ব্যবহারে আয়ু বৃদ্ধি হয়
আমরা প্রত্যেকে দীর্ঘ জীবন পাওয়ার প্রত্যাশা করে থাকি। হাদীছে এসেছে-
عَنْ عَائِشَةَرَضِىَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ النَّبِىَّ ﷺ قَالَ وَصِلَةُ الرَّحِمِ وَحُسْنُ الْخُلُقِ وَحُسْنُ الْجِوَارِ يَعْمُرَانِ الدِّيَارَ وَيَزِيدَانِ فِى الأَعْمَارِ
আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) কর্তৃক বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখা, সুন্দর চরিত্র অবলম্বন করা এবং প্রতিবেশীর সাথে সদ্ব্যবহার রাখায় দেশ আবাদ হয় এবং আয়ু বৃদ্ধি পায়’।[১]
কতিপয় সৎ কর্মের দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা মানুষের হায়াত বাড়িয়ে দেন। ফলে সে দীর্ঘ জীবন লাভ করে। যেসব কর্মে আয়ু বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়, তন্মধ্যে একটি হল- প্রতিবেশীর সাথে সদ্ব্যবহার। প্রতিবেশীর সাথে উত্তম আচরণের মাধ্যমে আল্লাহ ঐ ব্যক্তির উপার্জন বাড়িয়ে দেন এবং তাকে দীর্ঘ জীবন দান করেন। রিযিক্ব ও আয়ু বাড়াতে চাইলে প্রতিবেশীর সাথে সর্বোত্তম ব্যবহার করা প্রয়োজন।
৫. প্রতিবেশীই ব্যক্তির ভালো-মন্দের নির্বাচক
প্রতিবেশীর মাধ্যমে একজন ব্যক্তির ভালো-মন্দ যাচাই করা যায়। প্রতিবেশী মানুষের ভালো-মন্দ নির্ণয়ের মাপকাঠি সমতুল্য। তাই প্রতিবেশীর সাথে সর্বোত্তম আচরণ করা উচিত।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ خَيْرُ الْأَصْحَابِ عِنْدَ اللهِ خَيْرُهُمْ لِصَاحِبِهِ وَخَيْرُ الْجِيْرَانِ عِنْدَ اللهِ خَيْرُهُمْ لِجَارِهِ
আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে ঐ সঙ্গী-সাথী উত্তম, যে নিজের সঙ্গী-সাথীর কাছে উত্তম। আর আল্লাহর কাছে ঐ প্রতিবেশী উত্তম, যে নিজের প্রতিবেশীর কাছে উত্তম’।[২]
عَنِ ابْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَجُلٌ لِنَبِيِ اللهِ ﷺ يَا رَسُوْلَ اللهِ كَيْفَ لِيْ أَنْ أَعْلَمَ إِذَا أَحْسَنْتُ أَوْ إِذَا أَسَأْتُ؟ فَقَالَ النَّبِيُّ ﷺ إِذَا سَمِعْتَ جِيْرَانَكَ يَقُوْلُوْنَ قَدْ أَحْسَنْتَ فَقَدْ أَحْسَنْتَ وَإِذَا سَمِعْتَهُمْ يَقُوْلُوْنَ قَدْ أَسَأْتَ فقد أَسَأْتَ
ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আমি কিভাবে জানতে পারব যে, আমি যা করেছি তা ভাল করেছি বা খারাপ করেছি? তিনি বললেন, যখন তোমার প্রতিবেশীদেরকে বলতে শুনবে যে, তুমি ভাল করেছ, তখন তুমি (বুঝতে পারবে যে) অবশ্যই ভাল কাজ করছ। আর যখন তাদেরকে বলতে শুনবে যে, তুমি খারাপ কাজ করেছ, তখন তুমি (বুঝবে যে,) নিশ্চয় খারাপ কাজই করেছ’।[৩]
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِىَّ ﷺ قَالَ مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَمُوتُ فَيَشْهَدُ لَهُ ثَلاَثَةُ أَهْلِ أَبْيَاتٍ مِنْ جِيرَانِهِ الأَدْنَيْنَ بِخَيْرٍ إِلاَّ قَالَ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى قَدْ قَبِلْتُ شَهَادَةَ عِبَادِى عَلَى مَا عَلِمُوا وَغَفَرْتُ لَهُ مَا أَعْلَمُ
আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘যখন কোনো মুসলিম বান্দা মারা যায় এবং তার জন্য নিকটবর্তী তিন ঘর প্রতিবেশী ভালো হওয়ার সাক্ষ্য দেয়, তখন মহান আল্লাহ বলেন, আমি আমার বান্দার সাক্ষ্য সেই বিষয়ে গ্রহণ করলাম, যে বিষয় তারা জানে এবং যে বিষয় আমি জানি (ওরা জানে না), সে বিষয়েও তাকে ক্ষমা করে দিলাম’।[৪]
কথায় বলে, মানুষকে চেনা যায়- বাড়ির পাশে বাড়ি হলে অথবা জমির পাশে জমি হলে। যে ব্যক্তি প্রতিবেশীর কাছে উত্তম সে আল্লাহর নিকটও উত্তম। প্রতিবেশীর মাধ্যমেই ব্যক্তির ভালো-খারাপ বিষয় ফুটে উঠে। আড়ালে স্বেচ্ছায় প্রতিবেশী কারো সুনাম করলে ঐ ব্যক্তিই আসলেই ভালো। পক্ষান্তরে প্রতিবেশী কারো বদনাম করলে সেই আসলেই খারাপ মানুষ। এমনকি মৃত্যুর পর নিকটতম তিন ঘর প্রতিবেশী তার ভালো হওয়ার সাক্ষ্য দিলে, আল্লাহ তা‘আলা তাকে ক্ষমা করে দেন। প্রতিবেশীর সাফাই গাওয়া আল্লাহ নিকটেও গ্রহণীয়। বিধায় প্রতিবেশীর সাথে ভালো আচরণ করতে হবে। তাদেরকে কোনোভাবে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৬. প্রতিবেশীকে হাদিয়া দেয়ার গুরুত্ব
সুসম্পর্ক বজায় রাখার অন্যতম কৌশল পারস্পরিক উপহার বিনিময়। উপঢৌকন আদান-প্রদানের মাধ্যমে সম্পর্কের উন্নয়ন হয়। তাই ইসলামে প্রতিবেশীকে হাদিয়া প্রদান করতে উৎসাহ দেয়া হয়েছে।
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ يَا نِسَاءَ الْمُسْلِمَاتِ لاَ تَحْقِرَنَّ جَارَةٌ لِجَارَتِهَا وَلَوْ فِرْسِنَ شَاةٍ
আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘হে মুসলিম মহিলাগণ! কোনো প্রতিবেশীকে তুচ্ছ মনে করো না। এমনকি ছাগলের পায়ের ক্ষুর হলেও প্রতিবেশীর নিকট পাঠাতে তুচ্ছ ভাববে না’।[৫] আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কখনো ছাগল যবহ করলে তার কিছু অংশ খাদীজা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর বান্ধবীদের কাছে অবশ্যই পাঠাতেন’।[৬]
عَنْ عَائِشَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهَا قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ ﷺ إِنَّ لِيْ جَارَيْنِ فَإِلَى أَيِّهِمَا أُهْدِي قَالَ إِلَى أَقْرَبِهِمَا مِنْكِ بَابًا
আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আমার দু’টি প্রতিবেশী আছে। তাদের মধ্যে কাকে আমি হাদিয়া প্রদান করব? তিনি বললেন, ‘উভয়ের মধ্যে যার বাড়ী তোমার বেশি কাছে তাকে’।[৭]
عَنْ أَبِيْ ذَرٍّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَا أَبَا ذَرٍّ إِذَا طَبَخْتَ مَرَقَةً فَأَكْثِرْ مَاءَهَا وَتَعَاهَدْ جِيْرَانَكَ
আবূ যার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘হে আবূ যার! যখন তুমি তরকারী রান্না করো, তখন একটু বেশি পানি দিয়ে ঝোল বেশি করো এবং তোমার প্রতিবেশীর হক্ব পৌঁছে দাও’।[৮]
প্রতিবেশীকে হাদিয়া দেয়ার মাধ্যমে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। সামান্য হলেও তাদের মাঝে কিছু পাঠানো উচিৎ। ভালো তরকারি রান্না হলে তার কিছু অংশ প্রতিবেশীদের দেয়া বাঞ্ছনীয়। এমনকি প্রয়োজনে তরকারিতে পানি বেশি দিয়ে ঝোল হলেও হাদিয়া দেয়া উত্তম। প্রতিবেশীকে নূন্যতম কিছু হলেও মাঝে মধ্যে উপঢৌকন হিসাবে দেয়া ভালো। এর মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় হবে। সামাজিক জীবনে শান্তি ফিরে আসবে।
প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়ার ভয়াবহ পরিণাম
প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়ার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। যা নিম্নে পেশ করা হলো
১. প্রতিবেশীর সাথে দুর্ব্যবহারকারী মুমিন নয়
প্রতিবেশীর সাথে দুর্ব্যবহার করলে ঈমান হ্রাস পেয়ে যায়। তাদের সাথে উত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে ঈমান তাজা হয়। তাদের সাথে অন্যায় আচরণ করা নিন্দনীয় স্বভাবের অন্তর্ভুক্ত।
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلاَ يُؤْذِ جَارَهُ وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ
আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে। অনুরূপ যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে অথবা চুপ থাকে’।[৯]
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَرَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ وَاللهِ لاَ يُؤْمِنُ وَاللهِ لاَ يُؤْمِنُ وَاللهِ لاَ يُؤْمِنُ قَالُوْا وَمَا ذَاكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ الْجَارُ لاَ يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ
আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়, আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়, আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! সেই ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, যার অন্যায় থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না’।[১০]
যে ব্যক্তি প্রকৃত ঈমানদার হতে চায়, তার দ্বারা যেন তার প্রতিবেশী কোনো প্রকার কষ্ট না পায়। প্রতিবেশী তার দ্বারা নির্যাতিত হলে সে পূর্ণ মুমিন হতে পারবে না। প্রতিবেশী নিরাপদে না থাকলে সে প্রকৃত মুমিন নয়।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ لَيْسَ الْمُؤْمِنُ بِالَّذِيْ يَشْبَعُ وَجَارُهُ جَائِعٌ إِلَى جَنْبِهِ
আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, ঐ ব্যক্তি মুমিন নয়, যে উদর পূর্ণ করে খায় আর তার পার্শ্বেই তার প্রতিবেশী অভুক্ত থাকে’।[১১]
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍرَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَا آمَنَ بِي مَنْ بَاتَ شَبْعَانَ وَجَارُهُ جَائِعٌ إِلَى جَنْبِهِ وَهُوَ يَعْلَمُ بِهِ
আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘সে আমার প্রতি ঈমান আনেনি, যে ব্যক্তি পরিতৃপ্ত হয়ে রাত্রিযাপন করে, কিন্তু তার পাশে তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে অথচ এ কথা সে জানে’।[১২]
কোনো ব্যক্তি পেট পুরে তৃপ্তি সহকারে আহার করে অথচ তার প্রতিবেশী অনাহারে রয়েছে, সে পূর্ণ মুমিন নয়। তার অজান্তে হয়ে গেলে ভিন্ন কথা। তবে সর্বাবস্থায় প্রতিবেশীর দিকে খেয়াল রাখা যরূুরী। প্রতিবেশীকে ক্ষুর্ধাত রেখে নিজে তৃপ্তি সহকারে খাওয়া বৈধ নয়।
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ اتَّقِ الْمَحَارِمَ تَكُنْ أَعْبَدَ النَّاسِ وَارْضَ بِمَا قَسَمَ اللهُ لَكَ تَكُنْ أَغْنَى النَّاسِ وَأَحْسِنْ إِلَى جَارِكَ تَكُنْ مُؤْمِناً وَأَحِبَّ لِلنَّاسِ مَا تُحِبُّ لِنَفْسِكَ تَكُنْ مُسْلِماً وَلاَ تُكْثِرِ الضَّحِكَ فَإِنَّ كَثْرَةَ الضَّحِكِ تُمِيتُ الْقَلْبَ
আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘নিষিদ্ধ ও হারাম জিনিস থেকে বেঁচে থাকো, তাহলে তুমি মানুষের মধ্যে সব চেয়ে বড় আবেদ (ইবাদতকারী) হবে। আল্লাহ যা তোমাকে দিয়েছেন, তাতেই পরিতুষ্ট থাকো, তবে তুমিই মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধনী হবে। প্রতিবেশীর প্রতি অনুগ্রহ করো, তাহলে তুমি একজন (খাঁটি) মুমিন বিবেচিত হবে। মানুষের জন্য তাই পছন্দ করো, যা তুমি নিজের জন্য পসন্দ করো, তাহলে তুমি একজন (খাঁটি) মুসলিম গণ্য হবে। আর খুব বেশি হাসবে না, কারণ অধিক হাসি অন্তরকে মেরে ফেলে’।[১৩]
عَنْ أَنَسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ وَالَّذِى نَفْسِى بِيَدِهِ لاَ يُؤْمِنُ عَبْدٌ حَتَّى يُحِبَّ لِجَارِهِ أَوْ قَالَ لأَخِيهِ مَا يُحِبُّ لِنَفْسِهِ
আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! কোনো বান্দা ততক্ষণ পর্যন্ত (পূর্ণ) মুমিন হতে পারে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তার প্রতিবেশী অথবা (কোনো) ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ করেছে, যা সে নিজের জন্য করে থাকে’।[১৪]
নিজের জন্য যা পছন্দ করবে প্রতিবেশীর জন্য তাই পছন্দ করা উচিত। প্রতিবেশীর সাথে সকল বিষয়ে বিনম্র আচরণ করলে খাঁটি মুমিন হওয়া যায়।
(আগামী সংখ্যায় সমাপ্য)
* পরিচালক, ইয়াসিন আলী সালাফী কমপ্লেক্স, রাজশাহী।
তথ্যসূত্র :
[১]. মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫২৯৮; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৭৯৬৯; ছহীহুল জামে‘, হা/৩৭৬৭; ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৫২৪; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/৫১৯, সনদ ছহীহ।
[২]. তিরমিযী, হা/১৯৪৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৬৫৬৬; আল-আদাবুল মুফরাদ, হা/১১৫; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৫১৮; ছহীহ ইবনু খুযায়মাহ, হা/২৫৩৯; দারেমী, হা/২৪৩৭; ছহীহ আত-তারগীব, হা/২৫৬৮; মিশকাত, হা/৪৯৮৭, সনদ ছহীহ।
[৩]. ইবনু মাজাহ, হা/৪২২৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৮০৮; ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল আওসাত্ব, হা/২৯৮২; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৫২৬; মুসনাদে আবু আওয়ানাহ, হা/৬৪৬৯; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১৩২৭; মিশকাত, হা/৪৯৮৮, সনদ ছহীহ।
[৪]. মুসনাদে আহমাদ, হা/৯২৮৪; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হা/৩৯৬১; ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৩৫১৬, সনদ হাসান।
[৫]. ছহীহ বুখারী, হা/৬০১৭; ছহীহ মুসলিম, হা/১০৩০; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৫৮১; ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর, হা/৫৬২; বুলুগুল মারাম, হা/৯৩৭; ছহীহুল জামে‘, হা/৭৯৮৯; মিশকাত, হা/১৮৯২।
[৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৬০০৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৩৫৫।
[৭]. ছহীহ বুখারী, হা/৬০২০; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫৪৬২; মুসতাদরাকে হাকেম, হা/৭৩০৯; ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর, হা/১০১৯; মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক, হা/১৪৪০১; মিশকাত, হা/১৯৩৬।
[৮]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৬২৫; ইবনু মাজাহ, হা/৩৩৬২; দারেমী, হা/২০৭৯; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৫১৪; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৯০৯২; বুলুগুল মারাম, হা/১৪৬৪; মিশকাত, হা/১৯৩৭।
[৯]. ছহীহ বুখারী, হা/৬০১৮; ছহীহ মুসলিম, হা/৪৭; আবুদাউদ, হা/৫১৫৪; তিরমিযী, হা/২৫০০; মুওয়াত্ত্বা মালেক, হা/৩৪৩৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৬১৫; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৫১৬; ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল আওসাত্ব, হা/৩০৫৮; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৪৯১২; মিশকাত, হা/৪২৪৩।
[১০]. ছহীহ বুখারী, হা/৬০১৬; ছহীহ মুসলিম, হা/৪৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৮৬৫; ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর, হা/৪৮৭; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৯০৮৭; ছহীহ আত-তারগীব, হা/২৫৫০; মিশকাত, হা/৪৯৬২।
[১১]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৫৬৬০; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হা/২৬৯৯; ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৫৬৩; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১৪৯; মিশকাত, হা/৪৯৯১, সনদ হাসান।
[১২]. ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর, হা/৭৫১; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হা/১৩৫৫৪; ছহীহুল জামে‘, হা/৫৫০৫; ছহীহ আত-তারগীব, হা/২৫৬১, সনদ হাসান।
[১৩]. তিরমিযী, হা/২৩০৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/৮০৮১; ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল আওসাত্ব, হা/৭০৫৪; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৯০৯৬; ছহীহুল জামে‘, হা/৪৫৮০; ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৫৬৭; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/৯৩০; মিশকাত, হা/৫১৭১, সনদ হাসান।
[১৪]. ছহীহ মুসলিম, হা/৪৫; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হা/১৯৬৭; ছহীহুল জামে‘, হা/৭০৮৬; ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৫৫৩।