মসজিদ: ইসলামী সমাজের প্রাণকেন্দ্র
ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান*
(৮ম কিস্তি)
২- মসজিদ কেন্দ্রিক বিদ‘আতী কর্মকাণ্ডসমূহ
শরী‘আতে নতুন কোন রীতি-নীতি সংযোজিত হলে সেটা বিদ‘আত হয়। যা গর্হিত অপরাধ। মূলত বিদ‘আত মুমিনের আমল বিনষ্টকারী এক ভয়ংকর মারণাস্ত্র। এটি জঘন্য অপরাধ ও ঈমান বিধ্বংসী এক মারাত্মক ব্যাধি। আল্লাহর ঘর মসজিদে বিদ‘আতী কর্মকাণ্ড সংঘটিত হওয়া জঘন্য অপরাধ। অনেক মসজিদে শিরক ও বিদ‘আত মিশ্রিত প্রচারপত্র ও লিফলেট ও দামী তাসবীহ ঝুলতে দেখা যায়। অথচ সাহাবায়ে কিরাম মসজিদে বিদ‘আতী কর্মকাণ্ড হওয়াকে গুরুতর অপরাধ মনে করতেন। মুজাহিদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
عَنْ مُجَاهِدٍ قَالَ كُنْتُ مَعَ ابْنِ عُمَرَ فَثَوَّبَ رَجُلٌ فِى الظُّهْرِ أَوِ الْعَصْرِ قَالَ اخْرُجْ بِنَا فَإِنَّ هَذِهِ بِدْعَةٌ.
‘আমি একদা ইবনু ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-এর সাথে ছিলাম। যোহর কিংবা আছরের আযানের পর জনৈক ব্যক্তি মানুষকে ডাকাডাকি করছে। তখন ইবনু ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, তোমরা আমাকে এই মসজিদ থেকে বের করে নাও। কারণ এটা বিদ‘আত’।[১]
বিদ‘আতের ঘৃণায় তিনি উক্ত মসজিদে ছালাত আদায় না করে বেরিয়ে আসেন। বর্তমানে মসজিদগুলোতে সকাল-সন্ধ্যায় বিদ‘আতী যিকিরের মজলিস বসানো হচ্ছে, গোল হয়ে বসে মিথ্যা ও বানোয়াট কাহিনী বর্ণনা করা হচ্ছে, তাসবীহ দানা দ্বারা তাসবীহ জপা হচ্ছে। অথচ শরী‘আত বিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ছাহাবীগণ ছিলেন খড়গহস্ত।[২]
عَنِ الصَّلْتِ بْنِ بُهْرَامٍ قَالَ مَرَّ ابْنُ مَسْعُوْدٍ بِامْرَأَةٍ مَعَهَا تَسْبِيْحٌ تُسَبِّحُ بِهِ فَقَطَعَهُ وَأَلْقَاهُ ثُمَّ مَرَّ بِرَجُلٍ يُسَبِّحُ بِحَصَى فَضَرَبَهُ بِرِجْلِهِ ثُمَّ قَالَ لَقَدْ سَبَقْتُمْ! رَكِبْتُمْ بِدْعَةً ظُلْمًا! وَلَقَدْ غَلَبْتُمْ أَصْحَابَ مُحَمَّدٍ عِلْمًا!
সাল্ত ইবনু বুহরাম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) এক মহিলার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তার কাছে দানা ছিল। তা দ্বারা সেই মহিলা তাসবীহ গণনা করছিল। ইবনু মাস‘ঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) সেগুলো কেড়ে নিলেন এবং দূরে নিক্ষেপ করলেন। অতঃপর একজন লোকের নিকট দিয়ে অতিক্রম করলেন, যে পাথর কংকর দ্বারা তাসবীহ গণনা করছিল। ইবনু মাস‘ঊদ তাকে নিজের পা দ্বারা লাথি মারলেন। তারপর বললেন, তোমরা অগ্রগামী হয়েছ! আর অন্ধকার বিদ‘আতের উপর আরোহণ করেছ! তোমরাই কি মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর ছাহাবী হিসাবে ‘ইলমের দিক থেকে বিজয়ী হয়েছ! [৩]
বিদ‘আতে পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। যেমন বিদ‘আত শরী‘আতকে অসম্পূর্ণ প্রমাণ করে[৪], বিদ‘আত শরী‘আতকে হত্যা করে[৫], বিদ‘আতীদের কোন ‘আমল আল্লাহ কবুল করবেন না[৬], বিদ‘আতীরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর শাফা‘আত পাবে না এবং কাওছারের পানিও পান করতে পারবে না[৭], বিদ‘আতকারী জাহান্নামী[৮], রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাথে সম্পর্কচ্ছেদ হবে[৯] ইত্যাদি। উল্লেখ্য, মসজিদ কেন্দ্রিক আরো অনেক বিদ‘আত সমাজে প্রচলিত রয়েছে। কলেবর বৃদ্ধির আশঙ্কায় কতিপয় বিদ‘আত নিম্নে তুলে ধরা হলো:
তিন মসজিদ ব্যতীত অধিক নেকীর আশায় অন্য কোন মসজিদে সফর করা
অধিক ছাওয়াবের আশায় বিভিন্ন মসজিদে ভ্রমণ করা বিদ‘আত। যা অসংখ্য মানুষ করে থাকে। মসজিদে বরকত বা মৃত ব্যক্তির ফয়েয পাওয়ার আশায় এমনটি করে থাকে। অথচ হাদীছে পরিষ্কারভাবে নিষেধ করা হয়েছে। আবূ হুরাইরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,
لَا تُشَدُّ الرِّحَالُ إِلَّا إِلَى ثَلَاثَةِ مَسَاجِدَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَمَسْجِدِ الرَّسُوْلِﷺ وَمَسْجِدِ الْأَقْصَى.
‘তিনটি মসজিদ ছাড়া ভ্রমণ করা নিষিদ্ধ। মসজিদুল হারাম, মসজিদে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং মসজিদুল আক্বছা’।[১০] অতএব বড় মসজিদের দোহাই দিয়ে বেশী নেকী অর্জনের জন্য এবং বরকতের আশায় উক্ত তিন মসজিদ ব্যতীত পৃথিবীর আর কোন মসজিদে যাওয়া যাবে না। বর্তমানে যার প্রবণতা বেশী দেখা যাচ্ছে।
ইট-বালি-সিমেন্ট ও টাইলস দ্বারা মিম্বর তৈরি করা ও তিন স্তরের বেশী স্তর বানানো
অধিকাংশ মসজিদে মূল্যবান পাথর বা টাইলস দ্বারা মিম্বার তৈরি করা হয়েছে। যা বিদ‘আত। অথচ সুন্নাহ হল কাঠ দ্বারা মিম্বার তৈরি করা এবং মিম্বারের তিনটি স্তর হওয়া। হাদীছে এসেছে,
أَرْسَلَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِلَى فُلَانَةَ امْرَأَةٍ مِنْ الْأَنْصَارِ قَدْ سَمَّاهَا سَهْلٌ مُرِي غُلَامَكِ النَّجَّارَ أَنْ يَعْمَلَ لِيْ أَعْوَادًا أَجْلِسُ عَلَيْهِنَّ إِذَا كَلَّمْتُ النَّاسَ فَأَمَرَتْهُ فَعَمِلَهَا مِنْ طَرْفَاءِ الْغَابَةِ ثُمَّ جَاءَ بِهَا فَأَرْسَلَتْ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ ৎ فَأَمَرَ بِهَا فَوُضِعَتْ هَا هُنَا.
‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) জনৈক আনছারী মহিলার নিকট লোক পাঠান। তার নাম সাহল। এই মর্মে যে, তুমি তোমার কাঠমিস্ত্রী গোলামকে নির্দেশ দাও। সে যেন আমার জন্য একটি কাঠের আসন তৈরি করে। যার উপর বসে আমি জনগণের সাথে কথা বলব। ঐ মহিলা তার গোলামকে উক্ত মর্মে নির্দেশ দিলে সে গাবার ঝাউ কাঠ দিয়ে তা তৈরি করে নিয়ে আসে। অতঃপর মহিলা তা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট পাঠিয়ে দেয়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে এই স্থানে স্থাপন করার নির্দেশ দেন’।[১১] অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, فَعَمِلَ هَذِهِ الثَّلاَثَ الدَّرَجَاتِ مِنْ طَرْفَاءِ الْغَابَةِ ‘অতঃপর সে গাবার ঝাউ গাছ থেকে তিনস্তর বিশিষ্ট মিম্বর তৈরি করেছিল’।[১২] এছাড়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একদা মিম্বরের তিন স্তরে উঠে তিনবার ‘আমীন’ বলেছিলেন মর্মেও সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।[১৩] অতএব মিম্বর তিন স্তরের বেশী করা সুন্নাতের বরখেলাফ।[১৪] অনুরূপ ইট, পাথর ও টাইলস দ্বারা তৈরি মিম্বারও সুন্নাতের পরিপন্থী। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কাঠ দ্বারা মিম্বার তৈরি করার জন্য বলেছিলেন। ইমাম বুখারীও সেদিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন।[১৫]
মসজিদে প্রবেশ করে সরাসরি বসে পড়া
সমাজের অধিকাংশ মানুষ মসজিদে প্রবেশ করেই সরাসরি বসে পড়ে। অথচ এই অভ্যাস সুন্নাতের সরাসরি বিরোধী এবং মসজিদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার শামিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এটাকে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। আবূ কাতাদা আস-সুলামী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يَجْلِسَ ‘যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করবে, তখন সে যেন বসার পূর্বে দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করে’।[১৬] অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, আবূ কাতাদা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,
دَخَلْتُ الْمَسْجِدَ وَرَسُوْلُ اللهِ ﷺ جَالِسٌ بَيْنَ ظَهْرَانَىِ النَّاسِ قَالَ فَجَلَسْتُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَرْكَعَ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ تَجْلِسَ قَالَ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ رَأَيْتُكَ جَالِسًا وَالنَّاسُ جُلُوْسٌ قَالَ فَإِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلَا يَجْلِسْ حَتَّى يَرْكَعَ رَكْعَتَيْنِ.
‘আমি একদা মসজিদের প্রবেশ করলাম। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) লোকদের মাঝে বসেছিলেন। আমি গিয়ে বসে গেলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে বললেন, বসার আগে দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? আমি বললাম, আপনাকে এবং জনগণকে বসে থাকতে দেখলাম তাই। তখন তিনি বললেন, তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করবে তখন যেন দুই রাক‘আত ছালাত আদায় না করা পর্যন্ত না বসে’।[১৭] এমনকি জুম‘আর দিনে খুৎবা অবস্থায় যদি কেউ মসজিদে প্রবেশ করে তবুও তাকে দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করে বসার কথা বলা হয়েছে।[১৮]
লাল বাতি জ্বললে সুন্নাতের নিয়ত করবেন না
দেশের অধিকাংশ মসজিদে লাল বাতি জ্বললে সুন্নাতের নিয়ত করবেন না কথাটি লেখা রয়েছে। অথচ উক্ত সতর্কতা মুছল্লীকে ছালাত ও তার নেকী থেকে বঞ্চিত করেছে। কারণ সুন্নাত ছালাত আদায়কালীন যদি ইকামত হয়ে যায়, তাহলে শরী‘আতেরর নির্দেশ হলো- সে ছালাত ছেড়ে দিবে এবং ফরজ সালাতে শরীক হবে। এতে করে সে উক্ত ছালাতের পূর্ণ নেকী পেয়ে যাবে। আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,
مَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كُتِبَتْ لَهُ حَسَنَةً وَمَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَعَمِلَهَا كُتِبَتْ لَهُ عَشْرًا إِلَى سَبْعِمِائَةِ ضِعْفٍ...
‘যে ব্যক্তি একটি ভাল কাজ করার ইচ্ছা করল কিন্তু তা করল না, তার জন্য একটি নেকী লিপিবদ্ধ করা হল। কিন্তু যে ব্যক্তি একটি ভাল কাজ করার ইচ্ছা করল এবং তা করে ফেলল তার জন্য দশ থেকে সাতশ’ গুণ নেকী লিপিবদ্ধ করা হল ...’।[১৯]
লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো- ফজরের দুই রাক‘আত সুন্নাতের সময় লাল বাতির গুরুত্ব থাকে না। তখন ফজরের জামা‘আত চললেও আগে সুন্নাত পড়া হয়। যা শরী‘আত বিরোধী। কেননা ছালাতের ইকামত হয়ে গেলে ছালাত ছেড়ে দিয়ে ফরয সালাতে অংশগ্রহণ করতে হবে। আবূ হুরাইরাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী করীম (ﷺ) বলেছেন, إِذَا أُقِيْمَتِ الصَّلَاةُ فَلَا صَلَاةَ إِلَّا الْمَكْتُوْبَةُ ‘যখন ছালাতের ইক্বামত দেয়া হবে, তখন ফরয ছালাত ছাড়া অন্য কোন ছালাত নেই’।[২০] প্রচলিত রয়েছে যেম ফজরের ছালাতের পরে সুন্নাত পড়া যাবে না হেতু এরূপ করে থাকে। অথচ ফরজ ছালাতের পরেও সুন্নাত পড়া যাবে।[২১]
মসজিদের কারুকার্য ও সাজসজ্জা করা
মসজিদ আল্লাহর ‘ইবাদতের জায়গা। এজন্য মসজিদ বেশী কারুকার্য ও সাজসজ্জা করা ঠিক নয়। এটা করা হলে মুছল্লীদের ছালাতের মনোযোগ আকৃষ্ট হতে পারে। তাই মসজিদের মিহরাব ও ক্বিবলার দিকের দেওয়ালের সাজসজ্জা একটি বিদ‘আতী কর্মকাণ্ড। ইবনুল হাজ্জ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘মসজিদের দেওয়াল ও খুঁটিগুলোতে বিশেষ করে ক্বিবলার দিকে দেয়াল ও খুঁটিগুলোতে কোন কিছু লাগানো বা লেখা, অনুরূপভাবে মিহরাব ও অন্যান্য স্থানে কা‘বা ঘরের ছবি বা পর্দার টুকরা বিশেষ লটকানো প্রভৃতি পরবর্তী যুগের উদ্ভাবন, যা বিদ‘আত। এ সব কাজের অস্তিত্ব ইসলামের প্রাথমিক কালে ছিল না’।[২২] ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) মসজিদে নববীর পুনঃনির্মানের সময় নির্মাতাদেরকে এ নির্দেশ দেন যে, أَكِنَّ النَّاسَ مِنَ الْمَطَرِ وَإِيَّاكَ أَنْ تُحَمِّرَ أَوْ تُصَفِّرَ فَتَفْتِنَ النَّاسَ ‘লোকেদেরকে বৃষ্টি থেকে বাঁচাবে; কিন্তু লাল কিংবা হলুদ রং দিয়ে মসজিদ সাজাবে না। কেননা এগুলো লোকদের মনোযোগ আকৃষ্ট করবে’।[২৩]
ইমাম মালিক (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, মসজিদে নববীতে যে সময় ক্বিবলা ও অন্যান্য দিকে সাজসজ্জা ও কারুকার্য করা হয়েছিল, তখন লোকেরা তা অপসন্দ করেছিল। কেননা তা ছালাতের সময় খুব সম্ভব মুছল্লীদের দৃষ্টি কাড়ে এবং তাতে তাদের ছালাতওে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ‘উমার ইবনু ‘আব্দিল ‘আযীয (রাহিমাহুল্লাহ) খালীফা হওয়ার বার এ কারুকার্য নষ্ট করতে চেয়েছিলেন। তখন তাকে বলা হল যে, তাঁর প্রচেষ্টা তা সরানোর ক্ষেত্রে খুব একটা কাজে আসবে না। তখন তিনি তাঁর এ উদ্যোগ সথেকে বিরত থাকেন’।[২৪] এছাড়া মসজিদে অতিরিক্ত সাজসজ্জা করা ধ্বংসের লক্ষণ ও ক্বিয়ামতের আলামত হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।[২৫]
মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণ করা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ঈমানী দায়িত্ব। তবে মসজিদের কারুকার্য ও সাজসজ্জা এবং পবিত্রতা ও সৌন্দর্য রক্ষা করা এক জিনিস নয়। কারুকার্য ও সাজসজ্জা করা ঠিক নয় কিন্তু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, পবিত্রতা রক্ষা ও তার প্রয়োজনীয় সৌন্দর্য রক্ষার করতে হবে। ইবনু রুশদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
وتحسين بناء المساجد وتحصينها مما يستحب وإنما الذي يكره تزويقها بالذهب وشبهه والكتابة في قبلتها.
‘সুন্দর ও মজবুত করে মসজিদ নির্মাণ করা মুস্তাহাব; মাকরূহ হলো স্বর্ণ বা এ জাতীয় কোন বস্তুর সাহায্যে সাজসজ্জা করা ও ক্বিবলায় কিছু লিপিবদ্ধ করা’।[২৬] এছাড়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নির্দেশনা তো রয়েছেই।[২৭] উল্লেখ্য, খলীফা ওয়ালীদ ইবনু ‘আব্দিল মালিক (রাহিমাহুল্লাহ) মসজিদ সুসজ্জিত করণের প্রথা চালু করেন। তিনিই সর্বপ্রথম দামিষ্কের জামি‘ মসজিদকে অলংকৃত ও সুসজ্জিত করেন। বর্ণিত আছে যে, তিনি প্রায় বার লক্ষ দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) এর অলঙ্করণ ও সাজসজ্জার কাজে ব্যয় করেন।[২৮]
আযানের পূর্বে ও পরে কিছু বলা
সমাজে প্রলক্ষিত হয় যে, আযানের পূর্বে অনেক মসজিদে ‘বিসমিল্লাহ’, কুরআনের আয়াত পড়া, ইসলামী গযল বলা, বিভিন্ন দু‘আ পড়া, মানুষকে ডাকাডাকি করা, ফজরের আযানের পূর্বে ‘আস-ছালাতু খায়রুম মিনান্নাঊম’ বলে থাকে। অথচ উপর্যুক্ত কাজগুলো করা সম্পূর্ণ শরী‘আত বিরোধী। অনুরূপ রামাযান মাসে সাহারীর সময় আযান না দিয়ে সাইরেন বাজানো, ডাকাডাকি করা, ঢাক পেটানো, দলধরে চিৎকার করা ইত্যাদি জাহেলী রীতি।[২৯] বরং সুন্নাত অনুযায়ী সাহারীর জন্য আযান দিতে হবে।[৩০] আযান দেয়ার পূর্বে কোনকিছু বলা বা দু‘আ পড়ার কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। আযানের পর মাইকে উচ্চকণ্ঠে দু‘আ পড়াও ঠিক নয়।[৩১] অনুরূপ আযানের পর মসজিদে আসার জন্য পুনরায় ডাকা যাবে না। যেমন বহু মসজিদে চালু আছে। এটা স্পষ্ট বিদ‘আত।[৩২]
অনুরূপভাবে আযানের আগে ও পরে আযানের শব্দাবলীর সাথে মিলিয়ে উচ্চৈঃস্বরে দরূদ পড়া বিদ‘আত। এ রীতি রাসূলুল্লাহ (ﷺ), ছাহাবায়ে কিরাম (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) ও তাবি‘ তাবিঈগণ (রাহিমাহুমুল্লাহ) থেকে প্রাপ্ত আযানের রীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী ও বিদ‘আত। ইমাম শা‘রানী (রাহিমাহুল্লাহ) বর্ণনা করেছেন যে, ‘মুওয়াযযিনরা আযান দেয়ার সময় যে ছালাত ও সালাম পড়ে তা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও খুলাফায়ে রাশিদুন (রাযিয়াল্লাহু আনহুম)-এর যুগে ছিল না; বরং মিসরে রাফিযীদের আমলে ছিল’।[৩৩] ইবনু হাজার আল-হায়সামী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, বর্তমানে প্রচলিত রীতিতে যেভাবে মুওয়াযযিনরা আযানের পরে ছালাত ও সালাম পাঠ করে থাকেন, সে প্রসেঙ্গ আমাদের মাশায়িখ থেকে ফাতওয়া জিজ্ঞেস করা হলে তাঁরা বলেন যে, الأصل سنة والكيفية بدعة ‘মূল কাজটি সুন্নাত, তবে তার আদায়ের ধরনটি বিদ‘আত’।[৩৪] অন্যত্র আযানের আগে ও পরে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর দরূদ পড়া কিংবা محمد رسول الله বলা প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘এ দু’টি কাজের কোনটিই উল্লিখিত স্থানে সুন্নাত নয়। অতএব যে ব্যক্তি এ দু’টি কাজের মধ্যে যে কোন একটি পালন করবে এবং এ বিশ্বাস পোষণ করবে যে, এ স্থানে এভাবে বলা সুন্নাত, তাহলে তাকে নিষেধ ও বারণ করতে হবে। কেননা এটা প্রকারন্তরে কোন দলীল ছাড়া বিধান জারি করার নামান্তর। আর যে ব্যক্তি কোন দলীল ছাড়া শরী‘আতে কোন বিষয় প্রবর্তন করবে, তাকে ধমক দান করা এবং তাকে তার কাজ থেকে বারণ করা প্রয়োজন’।[৩৫]
অতএব আযানের আগে ও পরে এরূপ অতিরিক্ত ছালাত ও সালামের সংযোজন নব উদ্ভাবিত বিদ‘আত। ছাহাবীগণ এরূপ বিদ‘আতকে কঠোরভাবে মোকাবেলা করেছেন। যেমন নিম্নের হাদীছে তার প্রমাণ মেলে,
عَنْ نَافِعٍ أَنَّ رَجُلًا عَطَسَ إِلَى جَنْبِ ابْن عُمَرَ فَقَالَ الْحَمْدُ لِلهِ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ ﷺ قَالَ ابْنُ عُمَرَ وَأَنَا أَقُوْلُ الْحَمْدُ لِلهِ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ ﷺ وَلَيْسَ هَكَذَا عَلَّمَنَا رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أَنْ نَقُوْلَ الْحَمْدُ لِلهِ عَلَى كُلِّ حَالٍ.
নাফি‘ (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি ইবনু ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-এর কাছে হাঁচি দিল, অতঃপর ‘আল-হামদুলিলল্লাহ ওয়াস-সালামু আলা রাসূলিল্লাহ’ বলল। তখন ইবনু ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বললেন, আমিও বলছি, ‘আল-হামদুলিলল্লাহ ওয়াস-সালামু আলা রাসূলিল্লাহ’। তবে এরূপ ঠিক নয়। বরং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন যে, আমরা যেন বলি, ‘আল-হামদুলিল্লাহি আলা কুল্লি হাল’।[৩৬] উক্ত হাদীছে স্পষ্ট হলো যে, ইবনু ‘উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর দরূদ পাঠের মত ফযীলতপূর্ণ আমলকে বরদাশত করলেন না। কারণ হাঁচির পর আল্লাহর প্রশংসা করতে হয় দরূদ পড়তে হয় না।
‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্’-এর জবাবে ‘সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বলা
সমাজে আযানের ক্ষেত্রেও মানুষ তাদের প্রবৃত্তির অনুসারী হয়ে বিভিন্ন নিয়ম-কানূন অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে। যেমন আযানের জাওয়াবের ক্ষেত্রে সঠিক না দিয়ে মনগড়া জাওয়াব দিয়ে থাকে। যা বিদ‘আত হিসাবে গণ্য হবে। কেননা এমনটি বলার ব্যাপারে কোন স্পষ্ট দলীল পাওয়া যায় না। অথচ নিয়ম হলো- মুয়াযযিন যা বলবেন, উত্তরে তাই বলতে হবে। শুধু ‘হায়্যইয়া ‘আলাস সালাহ’ ও ‘হায়্যইয়া ‘আলাল ফালাহ’ ব্যতীত, যা রাসূল (ﷺ) নির্দেশ করেছেন।[৩৭] অনুরূপভাবে ‘আস-ছালাতু খায়রুম মিনান নাঊম’-এর জবাবে ‘ছাদাক্বতা ওয়া বারারতা’ বলা বলার কোন দলীল নেই।[৩৮] আবার কেউ কেউ ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ’ শুনে শাহাদাত আঙ্গুলে চুম্বন করে ও চোখ মাসাহ করে থাকে। অথচ উক্ত আমলও শরী‘আত সম্মত নয়। কারণ এর পক্ষে কোন দলীল নেই। যে বর্ণনাগুলো এসেছে, তা জাল বা মিথ্যা।[৩৯]
আযানের দু‘আয় বাড়তি অংশ যোগ করা
আযানের দু‘আর পর অধিকাংশ স্থানে وَالدَّرَجَةَ الرَّفِيَّةَ এবং إِنَّكَ لَا تُخْلِفُ الْمِيْعَادِ শব্দগুলো যোগ করে পড়তে দেখা যায়। এমনকি ইমাম গাযযালী (রাহিমাহুল্লাহ) আযানের দু‘আয় উক্ত বাড়তি যুক্ত করে বর্ণনা করেছেন।[৪০] কিন্তু এ মর্মে কোন ছহীহ কিংবা কোন যঈফ হাদীস বর্ণিত হয়নি। অথচ দু‘আ একটি নির্দিষ্ট ‘ইবাদত। এর সাথে বাড়তি অংশ যোগ করার অধিকার কারো নেই। মানব রচিত কথা রাসূল (ﷺ)-এর নামে চালিয়ে দিলে এর পরিণাম হবে জাহান্নাম।[৪১] আযানের দু‘আয় যোগকৃত বাড়তি অংশগুলো হলো:
১. ‘ইন্নাকা লা তুখলিফুল মিয়াদ’, বায়হাকীতে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু হাদীছটি ছহীহ নয়। আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, وَهِىَ شَاذَّةٌ لِأَنَّهَا لَمْ تَرِدْ فِىْ جَمِيْعِ طُرُقِ الْحَدِيْثِ عَنْ عَلِىِّ بْنِ عَيَّاشٍ ‘এটা অপরিচিত হিসাবে যঈফ। কারণ ‘আলী ইবনু ‘আইয়াশ থেকে কোন সূত্রেই বর্ণিত হয়নি’।[৪২]
২. অতঃপর উক্ত বাক্যের পূর্বে ‘ওয়ারযুক্বনা শাফা‘আতাহু ইয়াওমাল ক্বিয়ামাহ’ যোগ করার কোন প্রমাণ নেই।
৩. অনুরূপভাবে ইবনুস সুন্নীর বর্ণিত ‘ওয়াদ দারাজাতার রাফি‘আহ’ বাক্যটিও প্রমাণিত নয়। এটাও বানোয়াট ও অতিরিক্ত সংযোজিত।[৪৩] ইবনু হাজার ‘আসকালানী ও আল্লামা সাখাভী বলেন, উক্ত অংশ কোন হাদীছে বর্ণিত হয়নি।[৪৪]
৪. আবার কিছু কিছু গ্রন্থে ‘ইয়া আরহামার রাহিমীন’ যোগ করার কথাও বলা হয়েছে। অথচ এটাও সহীহ দলীলের উপর নির্ভরশীল নয়। ইবনু হাজার ‘আসকালানী বলেন, فِىْ آخِرِهِ يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ وَلَيْسَتْ أَيْضًا فِىْ شَئْ ٍمِنْ طُرُقِهِ ‘শেষে ‘ইয়া আরহামুর রাহিমীন’ যোগ করারও কোন হাদীস বর্ণিত হয়নি’।[৪৫]
তবে আযানের পর দরূদে ইবরাহীম পড়ে[৪৬] নিম্নের দু‘আ পাঠ করতে হবে।
اللهُمَّ رَبَّ هٰذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيْلَةَ وَالْفَضِيْلَةَ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَّحْمُوْدًا الَّذِىْ وَعَدْتَهُ.
‘হে আল্লাহ! আপনিই এই পরিপূর্ণ আহ্বান ও প্রতিষ্ঠিত ছালাতের প্রভু। আপনি মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে দান করুন ‘অসীলা’ (নামক জান্নাতের সম্মানিত স্থান) ও মর্যাদা এবং তাঁকে পৌঁছে দিন প্রশংসিত স্থান ‘মাকামে মাহমূদে’ যার ওয়াদা আপনি করেছেন’। রাসূল (ﷺ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আযান শুনে উক্ত দু‘আ পাঠ করবে, তার জন্য ক্বিয়ামতের দিন আমার শাফা‘আত ওয়াজিব হয়ে যাবে’।[৪৭]
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
* শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আল-ইসলামিয়্যাহ, খড়খড়ি, রাজশাহী।
[১]. ইমাম আবূ দাঊদ, আস-সুনান, ১ম খণ্ড, পৃ. ২০৩, হাদীছ নং-৫৩৮।
[২]. ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্দির রহমান আবূ মুহাম্মাদ আদ-দারিমী, সুনানুদ দারিমী, ১ম খণ্ড (বৈরূত: দারুল কিতাবিল ‘আরাবী, ১ম সংস্করণ, ১৪০৭ হি.), পৃ. ৭৯, হাদীছ নং-২০৯।
[৩]. আবূ ‘আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু ওয়াযাহ ইবনু বাযী‘ আল-কুরতুবী, আল-বিদাঊ ওয়ান নুহা আনহা (কায়রো: মাকতাবাতুবনি তাইমিয়্যাহ, ১ম সংস্করণ, ১৪১৬ হি.), পৃ. ৪০, আসার নং-২১।
[৪]. সূরাহ আল-আ‘রাফ : ৩৩; মুহাম্মাদ ইবনু খালীফাহ ইবনু ‘আলী আত-তামীমী, হুকূকুন নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামা ‘আলা উম্মাতিহি ফী জাউইল কিতাবি ওয়াস সুন্নাহ, ১ম খণ্ড (রিয়াদ : আজওয়াউস সালাফ, ১ম সংস্করণ ১৪১৮ হি./১৯৯৭ খ্রি.), পৃ. ২১৪, ২য় খণ্ড, পৃ. ৪৭৭, ৭৬৯।
[৫]. সুনানুদ দারিমী, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫৮, হাদীছ সংখ্যা-৯৯।
[৬]. ইমাম আহমাদ, আল-মুসনাদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১২৬, হাদীছ সংখ্যা-১০৩৭।
[৭]. ইমাম মুসলিম, আস-সাহীহ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১৭৯৩, হাদীছ সংখ্যা-২২৯০-২২৯১।
[৮]. ইমাম নাসাঈ, আস-সুনান, ৩য় খণ্ড, পৃ. ১৮৮, হাদীছ সংখ্যা-১৫৭৮।
[৯]. ইমাম আহমাদ, আল-মুসনাদ, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২৮৫, হাদীছ সংখ্যা-১৪০৭৭; সহীহ ইবনু হিব্বান, ২য় খণ্ড, পৃ. ২০, হাদীছ সংখ্যা-৩১৭।
[১০]. সহীহুল বুখারী, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৯৮, হাদীছ সংখ্যা-১১৩২; সহীহ মুসলিম, ২য় খণ্ড, পৃ. ১০১৪, হাদীছ সংখ্যা-১৩৯৭; সুনানু আবী দাঊদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৬২০, হাদীছ সংখ্যা-২০৩৩; মিশকাতুল মাসাবীহ,১ম খণ্ড, পৃ. ১৫৩, হাদীছ সংখ্যা-৬৯৩।
[১১]. সহীহুল বুখারী. ১ম খণ্ড, পৃ. ৩১০, হাদীছ সংখ্যা-৮৭৫; মিশকাতুল মাসাবীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৪৫, হাদীছ সংখ্যা-১১১৩।
[১২]. সহীহ ইবনি খুযাইমাহ, ৩য় খণ্ড, পৃ. ১২, হাদীছ সংখ্যা-১৫২১।
[১৩]. আল-মুস্তাদরাক ‘আলাস সহীহাইন, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১৭০, হাদীছ সংখ্যা-৭২৫৬।
[১৪]. মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী, আস-সিলসিলা আস-সহীহাহ, ১ম খণ্ড (রিয়াদ : মাকতাবাতুল মা‘আরিফ, তা.বি.), পৃ. ৬৫৫, হাদীছ সংখ্যা-৩৩৫।
[১৫]. সহীহুল বুখারী, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৭২।
[১৬]. সহীহুল বুখারী, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৭০, হাদীছ সংখ্যা-৪৩৩; সহীহ মুসলিম, ১ম খণ্ড, পৃ. ৪৯৫, হাদীছ সংখ্যা-৭১৪; মিশকাতুল মাসাবীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৫৫, হাদীছ সংখ্যা-৭০৪।
[১৭]. মুসনাদুল ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৩০৫, হাদীছ সংখ্যা-২২৬৫৪; সহীহ মুসলিম, ১ম খণ্ড, পৃ. ৪৯৫, হাদীছ সংখ্যা-৭১৪।
[১৮]. মুসনাদুল ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৩০৮, হাদীছ সংখ্যা-১৪৩৪৮; সহীহুল বুখারী, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩১৫, হাদীছ সংখ্যা-৮৮৯।
[১৯]. সহীহ মুসলিম, ১ম খণ্ড, পৃ. ১১৮, হাদীছ সংখ্যা-১৩০; মিশকাতুল মাসাবীহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩৪, হাদীছ সংখ্যা-২৩৭৪।
[২০]. সহীহ মুসলিম, ১ম খণ্ড, পৃ. ৪৯৩, হাদীছ সংখ্যা-৭১০; সুনানু আবী দাঊদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৪০৫, হাদীছ সংখ্যা-১২৬৬; মিশকাতুল মাসাবীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৩৩, হাদীছ সংখ্যা-১০৫৮।
[২১]. সুনানু আবী দাঊদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৪০৬, হাদীছ সংখ্যা-১২৬৭; মিশকাতুল মাসাবীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ২২৯, হাদীছ সংখ্যা-১০৪৪।
[২২]. ইবনুল হাজ্জ, মাদখাল, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩০৮।
[২৩]. সহীহুল বুখারী, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৭১, ‘সালাত’ অধ্যায়, ‘মসজিদ তৈরি করা’ অনুচ্ছেদ-২৯।
[২৪]. ইমাম মালিক ইবনু আনাস, আল-মুদাওয়ানাতুল কুবরা, ১ম খণ্ড (বৈরুত : দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, তা.বি.), পৃ. ১৯৭ ।
[২৫]. ইবনু আবী দাঊদ, আল-মাসাহিফ, ২য় খণ্ড (বৈরুত : দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, ১৯৯৫ খ্রি.), পৃ. ১১০।
[২৬]. আবুল ওয়ালীদ মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনু রুশদ আল-কুরতুবী, আল-বায়ানু ওয়াত তাহসীল ওয়াশ শারহু ওয়াত তাওজীহ ওয়াত তা‘লীলী লিমাসাইলিল মুসতাখরিজাহ, ১৮শ খণ্ড (বৈরুত : দারুল গুরাবিল ইসলামী, ২য় সংস্করণ ১৪০৮ হি./১৯৮৮ খ্রি.), পৃ. ৪৭৫; শামসুদ্দীন আবূ ‘আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু ‘আব্দির রহমান আত-তারাবিলিসী আল-মাগরিবী, মাওয়াহিবুল জালীল লি শারহি মুখতাসারিল খালীল, ২য় খণ্ড (বৈরুত : দারু ‘আলিমিল কুতুব, ১৪২৩ হি./২০০৩ খ্রি.), পৃ. ২৬৩।
[২৭]. সুনানু আবী দাঊদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৭৮, হাদীছ সংখ্যা-৪৫৫; সুনানুত তিরমিযী,২য় খণ্ড, পৃ. ৪৮৯, হাদীছ সংখ্যা-৫৯৪।
[২৮]. ইবনু ‘আবিদীন, রাদ্দুল মুহতার, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৮।
[২৯]. ইবনু হাজার আল-‘আসকালানী, ফাতহুল বারী শারহু সহীহিল বুখারী, ২য় খণ্ড, পৃ. ১০৪; মুহাম্মাদ ইবনু ‘আব্দিল বাকী ইবনু ইউসুফ আয-যারকানী, শারহুয যারকানী ‘আলা মুওয়াত্তা ইমাম মালিক, ১ম খণ্ড (মিসর : মাকতাবাতুস সাখাফাহ আদ-দীনিয়্যাহ, ১ম সংস্করণ ১৪২৪ হি./২০০৩ খ্রি.), পৃ. ২৯২।
[৩০]. সহীহুল বুখারী, ২য় খণ্ড, পৃ. ৬৭৭, হাদীছ সংখ্যা-১৮১৯; সহীহ মুসলিম, ২য় খণ্ড, পৃ. ৭৬৮, হাদীছ সংখ্যা-১০৯২; মিশকাতুল মাসাবীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৫০, হাদীছ সংখ্যা-৬৮০।
[৩১]. মুসনাদুল ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৪১৭, হাদীছ সংখ্যা-১৯৭৬০; সহীহুল বুখারী, ৩য় খণ্ড, পৃ. ১০৯১, হাদীছ সংখ্যা-২৮৩০; মিশকাতুল মাসাবীহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৯, হাদীছ সংখ্যা-২৩০৩।
[৩২]. সুনানু আবী দাঊদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ২০৩, হাদীছ সংখ্যা-৫৩৮।
[৩৩]. শায়খ আলী মাহফূয, আল-ইবদা‘ ফী মাযাররিল ইবতিযা‘, পৃ. ২৭০।
[৩৪]. ইবনু হাজার আল-হায়সামী, আল-ফাতাওয়াউল ফিকহিয়্যাহ আল-কুবরা, ১ম খণ্ড (বৈরুত : দারুল ফিকর, তা.বি.), পৃ. ১৩১।
[৩৫]. আল-ফাতাওয়াউল ফিকহিয়্যাহ আল-কুবরা, ১ম খণ্ড (বৈরুত : দারুল ফিকর, তা.বি.), পৃ. ১৩১।
[৩৬]. সুনানুত তিরমীযী, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৮১, হাদীছ সংখ্যা-২৭৩৮; মিশকাতুল মাসাবীহ, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২৭, হাদীছ সংখ্যা-৪৭৪৪।
[৩৭]. সহীহ মুসলিম, ১ম খণ্ড, পৃ.২৮৮, হাদীছ সংখ্যা-৩৮৩; সুনানু আবী দাঊদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৯৯, হাদীছ সংখ্যা-৫২২।
[৩৮]. মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী, ইরওয়াউল গালীল ফী তাখরীজি আহাদীনিস মানারিস সাবীল, ১ম খণ্ড (বৈরুত : আল-মাকতাবুল ইসলামী, ২য় সংস্করণ ১৪০৫ হি./১৯৮৫ খ্রি.), পৃ ২৫৯।
[৩৯]. ইসমা‘ঈল বিন মুহাম্মাদ আল-জার্রাহী, কাশফুল খাফা, ২য় খণ্ড (প্রকাশস্থান বিহীন : দারু ইহইয়াইত তুরাসিল ‘আরাবী, তা.বি.), পৃ. ২০৬; মুহাম্মাদ ইবনু ‘আলী ইবনু মুহাম্মাদ আশ-শাওকানী, আল-ফাওয়াইদুল মাজমূ‘আহ ফিল আহাদীসিল মাওযূ‘আহ (প্রকাশস্থান : প্রকাশক, সংস্করণ ও সাল বিহীন), পৃ. ২০।
[৪০]. মুহাম্মাদ ইবনু মুহাম্মাদ আল-গাযযালী আবূ হামিদ, ইহইয়াউ ঊলূমিদ দ্বীন, ১ম খণ্ড (বৈরুত : দারুল মা‘আরিফাহ, তা.বি.), পৃ. ১৪৬।
[৪১]. সহীহুল বুখারী, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫২, হাদীছ সংখ্যা-১০৯।
[৪২]. আলবানী, ইরওয়াউল গালীল ফী তাখরীজি আহাদীসি মানারিস সাবীল, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৬১, হাদীছ সংখ্যা-২৪৩-এর আলোচনা দ্র.।
[৪৩]. ইরওয়াউল গালীল ফী তাখরীজি আহাদীসি মানারিস সাবীল, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৬১, হাদীছ সংখ্যা-২৪৩-এর আলোচনা দ্র.।
[৪৪]. আল্লামা সাখাভী, আল-মাকাসিদুল হাসানাহ, পৃ. ২১২; ইবনু হাজার আল-‘আসকালানী, আত-তালখীসুল হাবীর ফী তাখরীজি আহাদীসির রাফি‘ঈল কাবীর, ১ম খণ্ড (বৈরুত : দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, ১ম সংষ্করণ ১৪১৯ হি./১৯৮৯ খ্রি.), পৃ. ৫১৮; ইরওয়াউল গালীল ফী তাখরীজি আহাদীসি মানারিস সাবীল, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৬১।
[৪৫]. আত-তালখীসুল হাবীর ফী তাখরীজি আহাদীসির রাফি‘ঈল কাবীর, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫১৮-৫১৯।
[৪৬]. সহীহ মুসলিম, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৮৮, হাদীছ সংখ্যা-৩৮৪; সুনানু আবী দাঊদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৯৯, হাদীছ সংখ্যা-৫২৩; মিশকাতুল মাসাবীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৪৫, হাদীছ সংখ্যা-৬৫৭।
[৪৭]. সহীহুল বুখারী, ১ম খণ্ড, পৃ. ২২২, হাদীছ সংখ্যা-৫৮৯; মিশকাতুল মাসাবীহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩২৪, হাদীছ সংখ্যা-৬৫৯।
প্রসঙ্গসমূহ »:
মসজিদ