দু‘আ ও যিকর : আল্লাহর অনুগ্রহ ও প্রশান্তি লাভের মাধ্যম
-আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম*
(৪র্থ কিস্তি)
দু‘আর আদব ও কবুলের শর্তসমূহ
দু‘আ একটি ইবাদত। আর দু‘আর কিছু আদব বা শিষ্টাচার এবং কবুলের শর্তসমূহ রয়েছে। যা দু‘আ কবুলের সহায়ক। সালাফগণ দু‘আর কিছু আদব ও কবুলের শর্তসমূহ উল্লেখ করেছেন। নি¤েœ তা পেশ করা হল।
১. দু‘আ করার পূর্বে আল্লাহর প্রশংসা এবং নবী (ﷺ)-এর উপর দরূদ পাঠ করা[১]
ফুযালাহ ইবনু ওবাইদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বসে ছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল এবং ছালাত আদায় করল। অতঃপর সে বলল, হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন, আমাকে দয়া করুন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, হে ছালাত আদায়কারী! দু‘আতে তাড়াতাড়ি করলে। যখন তুমি ছালাত আদায় করবে অতঃপর দু‘আর জন্য বসবে, তখন আল্লাহর প্রশংসা করবে, যার যোগ্য একমাত্র তিনিই। অতঃপর আমার উপর দরূদ পাঠ করবে, তারপর দু‘আ করবে। রাবী বলেন, এরপর এক ব্যক্তি এসে ছালাত আদায় করল। অতঃপর আল্লাহর প্রশংসা করল এবং নবী করীম (ﷺ)-এর উপর দরূদ পাঠ করল। তখন নবী করীম (ﷺ) তাকে বললেন, أَيُّهَا الْمُصَلِّي ادْعُ تُجَبْ ‘হে ছালাত আদায়কারী! আল্লাহর নিকট কিছু প্রার্থনা কর, তা কবুল করা হবে’।[২]
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, একদা আমি ছালাত আদায় করছিলাম। আর নবী করীম (ﷺ), আবূ বকর এবং ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) তাঁর সাথে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আমি যখন দু‘আ করতে বসলাম, তখন আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা দিয়ে শুরু করলাম। অতঃপর নবী করীম (ﷺ)-এর উপর দরূদ পাঠ করলাম। তারপর আমার নিজের জন্য দু‘আ করলাম। নবী করীম (ﷺ) বললেন, سَلْ تُعْطَهُ سَلْ تُعْطَهُ ‘প্রার্থনা কর, তোমাকে দেয়া হবে। প্রার্থনা কর, তোমাকে দেয়া হবে।[৩]
সা‘দ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, মাছওয়ালা নবী ইউনুস (আলাইহিস সালাম)-এর দু‘আ হল এই যে, যখন তিনি মাছের পেট থেকে তাঁর প্রভুর নিকট দু‘আ করেছিলেন, لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّيْ كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِيْنَ ‘আপনি ব্যতীত কোন সত্য মা‘বূদ নেই, আপনি পবিত্র আর আমি অত্যাচারী অপরাধী’। যখন কোন মুসলিমই কোন ব্যাপারে এই দু‘আ করবে, তখন নিশ্চয় তার দু‘আ কবুল হবে।[৪]
যেকোন দু‘আর ক্ষেত্রে সর্বোত্তম হল আল্লাহর প্রশংসা এবং নবী (ﷺ)-এর উপর দরূদ পাঠ করে দু‘আ করা। কেননা তা দু‘আ কবুলের অত্যন্ত নিকটবর্তী।
২. পাপ ও অপরাধ স্বীকার করা[৫]
সাইয়্যেদুল ইস্তেগফারের মধ্যে যা স্পষ্ট রয়েছে। কেউ যখন নিজের অপরাধ ও পাপ স্বীকার করে আল্লাহর নিকট নত হয়, তখন আল্লাহ তা‘আলা খুশি ও আনন্দিত হোন।
শাদ্দাদ ইবনু আওস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, সাইয়েদুল ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করার শ্রেষ্ঠ দু‘আ হল তোমার (সকাল-সন্ধ্যায়) এরূপ বলা-
اَللّٰهُمَّ أَنْتَ رَبِّىْ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِىْ وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلٰی عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَااسْتَطَعْتُ أَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّمَا صَنَعْتُ أَبُوْءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَىَّ وَأَبُوْءُ بِذَنْبِىْ فَاغْفِرْلِى فَإِنَّهُ لَايَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلَّا أَنْتَ
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনি আমার প্রতিপালক, আপনি ছাড়া সত্য কোন মা‘বূদ নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি আপনার বান্দা। আমি আমার সাধ্যমত আপনার প্রতিশ্রুতিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হতে আপনার নিকট পরিত্রাণ চাচ্ছি। আমি আপনার অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমার পাপও স্বীকার করছি। অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। নিশ্চয় আপনি ব্যতীত কেউ ক্ষমাকারী নেই’। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইয়াক্বীনের সাথে উক্ত দু‘আ দিনে পাঠ করবে এবং সন্ধ্যার পূর্বে মারা যাবে, সে জান্নাতীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। আর যে ব্যক্তি ইয়াক্বীনের সাথে উক্ত দু‘আ রাতে পাঠ করবে এবং সকাল হওয়ার আগে মারা যাবে, সেও জান্নাতীদের অন্তর্ভুক্ত হবে’।[৬]
৩. মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সম্পাদিত নেক আমল পেশ করে দু‘আ করা[৭]
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
فَاِذَا فَرَغۡتَ فَانۡصَبۡ - وَ اِلٰی رَبِّکَ فَارۡغَبۡ
‘অতএব যখনই (ছালাত হতে) অবসর পাও (দু‘আ) সাধনা করো এবং তোমার প্রতিপালকের প্রতি মনোযোগ দাও’ (সূরা আলাম নাশরাহ, আয়াত : ৭-৮)।
প্রতিটি মুসলিমের উচিত, ছালাত থেকে অবসর গ্রহণ করার পর দু‘আয় মনোযোগ দেয়া এবং নিজের চাহিদা পেশ করে দু‘আ করা। আর যখন কেউ নেক আমল করার পর দু‘আ করে, মহান আল্লাহ তা কবুল করেন। হাদীছে এসেছে, ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, নবী করীম (ﷺ) বলেছেন, একদা তিন ব্যক্তি পথ চলছিল, এমন সময় তারা বৃষ্টির কবলে পড়ল এবং একটি পর্বতের গুহায় আশ্রয় নিল। তৎক্ষণাৎ পর্বত হতে একখানা প্রকা- পাথর এসে গুহার মুখে পতিত হওয়ায় তাদের গুহার পথ বন্ধ হয়ে গেল। তখন তাদের একজন আরেকজনকে বলল, তোমরা নিজেদের এমন কোন নেক কাজকে স্মরণ কর, যা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার উদ্দেশ্যেই করেছ। অতঃপর এর মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার কাছে প্রার্থনা কর, আশা করা যায় তিনি এই বিপদ দূর করে দিবেন।
অতঃপর তাদের একজন বলল, হে আল্লাহ! আমার অতি বৃদ্ধ পিতা-মাতা ছিল এবং আমার ছোট-ছোট কয়েকটি সন্তানও ছিল। আমি তাদের জন্য মেষ চরাতাম, আর যখন সন্ধ্যায় তাদের কাছে ফিরে আসতাম, তখন তাদের জন্য দুধ দোহন করে আনতাম। কিন্তু আমি আমার সন্তানদেরকে পান করানোর আগেই প্রথমে আমার পিতা-মাতাকে পান করাতাম। একদিন চারণ বৃক্ষ আমাকে দূরে নিয়ে গেল। ফলে ঘরে পৌঁছাতে সন্ধ্যা হয়ে গেল, তখন আমি তাদেরকে ঘুমন্ত অবস্থায় পেলাম। অতঃপর আমি প্রতিদিনের মত আজও দুধ দোহন করলাম এবং দুধের পাত্র নিয়ে তাদের কাছে আসলাম এবং পাত্র হাতে তাদের শিয়রের কাছে দাঁড়িয়ে রইলাম। তাদেরকে ঘুম হতে জাগানো ভাল মনে করলাম না। আর তাদের আগে বাচ্চাদেরকে দুধ পান করানোও ভাল মনে করলাম না। অথচ বাচ্চাগুলো আমার পায়ের কাছে ক্ষুধার তাড়ণায় কাঁদছিল। অবশেষে ভোর পর্যন্ত আমার ও তাদের অবস্থা এভাবেই বিদ্যমান ছিল। অতএব হে আল্লাহ! যদি আপনি জানেন যে, এই কাজটি আমি একমাত্র আপনার সন্তুষ্টির জন্য করেছিলাম, তাহলে এর আমাদের জন্য এতটুকু পথ করে দাও যেন আকাশ দেখতে পাই। তখন আল্লাহ তা‘আলা পাথরটিকে এই পরিমাণ সরিয়ে দিলেন যে, তারা আকাশ দেখতে পেল।
দ্বিতীয় জন বলল, আমার এক চাচাতো বোন ছিল, তাকে আমি অত্যধিক ভালবাসতাম যতটা পুরুষেরা মহিলাদেরকে ভালবাসতে পারে। আমি তাকে উপভোগ করতে চেয়েছিলাম। সে তা অস্বীকার করল, যে পর্যন্ত আমি তাকে একশ’ দীনার প্রদান না করি। অতঃপর আমি চেষ্টা করতে লাগলাম, অবশেষে একশ’ দীনার সংগ্রহ করে তার সাথে সাক্ষাৎ করলাম। তারপর যখন আমি তার দু’পায়ের মধ্যখানে বসলাম, তখন সে বলল, হে আল্লাহ্র বান্দা! আল্লাহকে ভয় কর, মোহর খুলো না। তখন সাথে সাথে আমি তাকে ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম। হে আল্লাহ! আপনি জানেন, এই কাজ আমি একমাত্র আপনার সন্তুটির জন্যই করেছি, তাহলে আমাদের জন্য পথ মুক্ত করে দিন। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্য পাথরটি আরো কিছু সরিয়ে দিলেন।
তৃতীয় জন বলল, হে আল্লাহ! আমি এক ব্যক্তিকে এক ‘র্ফাক’ তথা ষোল (১৬) রতলের সমপরিমাণ চাউলের বিনিময়ে মজুর নিয়োগ করেছিলাম। যখন সে কাজ সম্পাদন করল, তখন বলল, আমাকে আমার প্রাপ্র্য দিয়ে দাও। আমি তার পাওনা তাকে পেশ করলাম। সে তাকে অবহেলা করে ফেলে চলে গেল। অবশেষে আমি তাকে চাষাবাদে লাগালাম এবং তা দ্বারা অনেকগুলো গরু ও রাখাল যোগাড় করলাম। এরপর একদা সে আমার কাছে আসল এবং বলল, আল্লাহ তা‘আয়ালাকে ভয় কর, আমার উপর অবিচার করো না। আমাকে আমার পাওনা দিয়ে দাও। আমি বললাম, এই গরুগুলো এবং তার রাখালসমূহ নিয়ে যাও। সে বলল, আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় কর, আমার সাথে উপহাস করো না। তখন আমি বললাম, আমি তোমার সাথে উপহাস করছি না। ঐ গরুগুলো ও তার রাখালসমূহ নিয়ে যাও। অতঃপর সে ঐগুলো নিয়ে চলে গেল। হে আল্লাহ! আপনি যদি জানেন যে, এই কাজটি আমি আপনার সন্তুষ্টির জন্যই করেছিলাম, তবে এখনও যতখানি বাকী আছে তা খুলে দিন। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা পাথরটি সরিয়ে অবশিষ্ট অংশ উম্মুক্ত করে দিলেন।[৮]
৪. বিনয়, নম্রতা ও ভয়-ভীতি নিয়ে বারবার দু‘আ করা[৯]
দু‘আ করা এবং তা কবুল হওয়ার জন্য দু‘আকারীকে অবশ্যই বিনয়ী, নম্র এবং ভয়-ভীতি নিয়ে বারবার দু‘আ করতে হবে। বারবার মহান আল্লাহর নিকট কাকুতি, মিনতি করতে হবে। কোন অসন্তোষ, বিরক্তি, বিরাগ এবং অস্বস্তি পেশ করা যাবে না। মহান আল্লাহ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে নির্দেশ দিয়ে বলেন, وَ اذۡکُرۡ رَّبَّکَ فِیۡ نَفۡسِکَ تَضَرُّعًا وَّ خِیۡفَۃً وَّ دُوۡنَ الۡجَہۡرِ مِنَ الۡقَوۡلِ بِالۡغُدُوِّ وَ الۡاٰصَالِ ‘আপনার প্রতিপালককে মনে মনে বিনয় নম্র ও ভয়-ভীতি সহকারে অনুচ্চস্বরে সকাল ও সন্ধ্যায় স্মরণ করবেন’ (সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত : ২০৫)।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন কোন ব্যাপারে দু‘আ করতেন, তখন বারবার দু‘আ করতেন। যেমন হাদীছে এসেছে, আয়িশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, লাবীদ ইবনু আ‘সাম নামে বানূ যুরায়ক সম্প্রদায়ের এক ইয়াহুদী রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে যাদু করল। তিনি বলেন, এ যাদুর কারণে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর স্মরণ হত যে কোন (পার্থিব) কাজ তিনি করছেন, অথচ (প্রকৃতভাবে) তিনি করেননি। (আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন), حَتَّى إِذَا كَانَ ذَاتَ يَوْمٍ أَوْ ذَاتَ لَيْلَةٍ دَعَا رَسُوْلُ اللهِ ﷺ ثُمَّ دَعَا ثُمَّ دَعَا ‘পরিশেষে একদিনে কিংবা এক রাত্রে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দু‘আ করলেন; আবার দু‘আ করলেন, আবার দু‘আ করলেন’।[১০] আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,
مَنْ سَأَلَ اللهَ الْجَنَّةَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ قَالَتِ الْجَنَّةُ اللهم أَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ وَمَنِ اسْتَجَارَ مِنَ النَّارِ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ قَالَتِ النَّارُ اللهم أَجِرْهُ مِنَ النَّارِ
‘যে ব্যক্তি তিনবার আল্লাহর নিকট জান্নাত চায়, তখন জান্নাত বলে, হে আল্লাহ! তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান। আর যে তিনবার জাহান্নাম হতে নিরাপত্তা চায়, তখন জাহান্নাম বলে, হে আল্লাহ! তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিন’।[১১]
৫. বিপদাপদ ও দুঃখের পূর্বেই সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য ও প্রাচুর্যের সময় বেশি বেশি দু‘আ করা[১২]
সৎকর্মশীলদের অভ্যাস হল সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য ও প্রাচুর্যের সময় তারা বেশি বেশি দু‘আ করে। কিন্তু যারা সৎকর্মশীল না, তারা শুধু বিপদাপদ ও দুঃখের সময় দু‘আ করে। যখন বিপদ কেটে যায়, তখন তারা আল্লাহকে ভুলে যায়। অধিকাংশ মানুষের স্বভাব এমনটাই। আল্লাহ সকলকেই হিফাযত করুন। মহান আল্লাহর মানুষের এ প্রবণতা উল্লেখ করে বলেন,
وَ اِذَا مَسَّ الۡاِنۡسَانَ الضُّرُّ دَعَانَا لِجَنۡۢبِہٖۤ اَوۡ قَاعِدًا اَوۡ قَآئِمًا ۚ فَلَمَّا کَشَفۡنَا عَنۡہُ ضُرَّہٗ مَرَّ کَاَنۡ لَّمۡ یَدۡعُنَاۤ اِلٰی ضُرٍّ مَّسَّہٗ ؕ کَذٰلِکَ زُیِّنَ لِلۡمُسۡرِفِیۡنَ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ
‘আর যখন মানুষকে কোন ক্লেশ-কষ্ট স্পর্শ করে তখন আমাদেরকে ডাকতে থাকে শুয়ে, বসে এবং দাঁড়িয়েও, অতঃপর যখন আমরা সেই কষ্ট ওর থেকে দূর করে দেই তখন সে নিজের পূর্ব অবস্থায় ফিরে আসে, যে কষ্ট তাকে স্পর্শ করেছিল তা মোচন করার জন্য সে যেন আমাদেরকে কখনো ডাকেইনি। এই সীমালংঙ্ঘনকারীদের কার্যকলাপ তাদের কাছে এইরূপই চাকচিক্যময় মনে হয়’ (সূরা ইউনুস, আয়াত : ১২)। মহান আল্লাহ বলেন,
وَ اِذَا مَسَّ الۡاِنۡسَانَ ضُرٌّ دَعَا رَبَّہٗ مُنِیۡبًا اِلَیۡہِ ثُمَّ اِذَا خَوَّلَہٗ نِعۡمَۃً مِّنۡہُ نَسِیَ مَا کَانَ یَدۡعُوۡۤا اِلَیۡہِ مِنۡ قَبۡلُ وَ جَعَلَ لِلّٰہِ اَنۡدَادًا لِّیُضِلَّ عَنۡ سَبِیۡلِہٖ
‘মানুষকে যখন দুঃখ-দৈন্য স্পর্শ করে তখন সে একনিষ্ঠভাবে তার প্রতিপালকে ডাকে। পরে যখন (তিনি) তার প্রতি তাঁর পক্ষ থেকে অনুগ্রহ করেন তখন সে ভুলে যায় তার পূর্বে যার জন্য সে ডেকেছিল তাঁকে এবং সে আল্লাহর সমকক্ষ দাঁড় করায়, অপরকে তাঁর পথ হতে বিভ্রান্ত করবার জন্য’ (সূরা আয-যুমার, আয়াত : ৮)। মহান আল্লাহ বলেন,
فَاِذَا مَسَّ الۡاِنۡسَانَ ضُرٌّ دَعَانَا ۫ ثُمَّ اِذَا خَوَّلۡنٰہُ نِعۡمَۃً مِّنَّا ۙ قَالَ اِنَّمَاۤ اُوۡتِیۡتُہٗ عَلٰی عِلۡمٍ ؕ بَلۡ ہِیَ فِتۡنَۃٌ
‘মানুষকে দুঃখ-কষ্ট স্পর্শ করলে সে আমাদেরকে ডাকে; অতঃপর যখন আমরা তার প্রতি অনুগ্রহ প্রদান করি আমাদের পক্ষ থেকে তখন সে বলে, আমাকে তো এটা দেয়া হয়েছে আমার জ্ঞানের বিনিময়ে। বস্তুতঃ এটা এক পরীক্ষা’ (সূরা আয-যুমার, আয়াত : ৪৯)। মহান আল্লাহ বলেন,
وَ اِذَاۤ اَنۡعَمۡنَا عَلَی الۡاِنۡسَانِ اَعۡرَضَ وَ نَاٰ بِجَانِبِہٖ ۚ وَ اِذَا مَسَّہُ الشَّرُّ فَذُوۡ دُعَآءٍ عَرِیۡضٍ
‘যখন আমরা মানুষকে নে‘মত প্রদান করি তখন সে অহংকারবশত মুখ ফিরিয়ে নেয় ও দূরে সরে যায় এবং তাকে অনিষ্ট স্পর্শ করলে সে তখন দীর্ঘ প্রার্থনায় রত হয়ে যায়’ (সূরা হা-মীম-আসসাজদাহ, আয়াত : ৫১)। মহান আল্লাহ বলেন,
وَ اِذَا مَسَّکُمُ الضُّرُّ فِی الۡبَحۡرِ ضَلَّ مَنۡ تَدۡعُوۡنَ اِلَّاۤ اِیَّاہُ ۚ فَلَمَّا نَجّٰىکُمۡ اِلَی الۡبَرِّ اَعۡرَضۡتُمۡ ؕ وَ کَانَ الۡاِنۡسَانُ کَفُوۡرًا
‘সমুদ্রে যখন তোমাদেরকে বিপদ স্পর্শ করে তখন শুধু তিনি ছাড়া অপর যাদেরকে তোমরা আহ্বান করে থাকো তারা তোমাদের মন হতে সরে যায়; অতঃপর তিনি যখন স্থলে ভিড়িয়ে তোমাদেরকে উদ্ধার করেন তখন তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও; মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ’ (সূরা বানী ইসরাঈল, আয়াত : ৬৭)। মহান আল্লাহ বলেন,
وَ اِذَا غَشِیَہُمۡ مَّوۡجٌ کَالظُّلَلِ دَعَوُا اللّٰہَ مُخۡلِصِیۡنَ لَہُ الدِّیۡنَ ۬ۚ فَلَمَّا نَجّٰہُمۡ اِلَی الۡبَرِّ فَمِنۡہُمۡ مُّقۡتَصِدٌ ؕ وَ مَا یَجۡحَدُ بِاٰیٰتِنَاۤ اِلَّا کُلُّ خَتَّارٍ کَفُوۡرٍ
‘যখন তরঙ্গ তাদেরকে আচ্ছন্ন করে মেঘাচ্ছায়ার মত তখন তারা আল্লাহকে ডাকে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে। কিন্তু যখন তিনি তাদেরকে উদ্ধার করে স্থলে পৌঁছান তখন তাদের কেউ কেউ মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান করে। আর বিশ্বাসঘাতক, অকৃতজ্ঞ ব্যক্তিই তাঁর নিদর্শনাবলী অস্বীকার করে’ (সূরা লোক্বমান, আয়াত : ৩২)।
প্রতিটি মুসলিমের উচিত, সুখের সময় সর্বদা বেশি বেশি দু‘আ করা। আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَّسْتَجِيْبَ اللهُ لَهُ عِنْدَ الشَّدَائِدِ فَلْيُكْثِرِ الدُّعَاءَ فِي الرَّخَاءِ ‘যে ব্যক্তি ভালোবাসে যে, দুঃখের সময় আল্লাহ তার দু‘আ কবুল করবেন, সে যেন সুখের সময় অধিকহারে দু‘আ করে।[১৩]
৬. ক্বিবলামুখী হয়ে দু‘আ করা[১৪]
দু‘আ করার সর্বোত্তম দিক হল ক্বিবলামুখী হয়ে দু‘আ করা। মানুষের উচিত যখন দু‘আ করবে, সে যেন ক্বিবলামুখী হয়ে দু‘আ করে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ক্বিবলার দিকে মুখ করে দু‘আ করতেন। হাদীছে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-এর হাদীছে এসেছে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যেখানে ছালাত আদায় করতেন, সেখানে কুরাইশ কাফিরগণ তাঁর পিঠের উপর উটের নাড়ী চাপিয়ে দিয়ে তাঁকে কষ্ট দিয়েছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদের বিরুদ্ধে দু‘আ করেছিলেন। আব্দুল্লাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, اسْتَقْبَلَ النَّبِىُّ ﷺ الْكَعْبَةَ فَدَعَا عَلَى نَفَرٍ مِنْ قُرَيْشٍ ‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কা‘বার দিকে মুখ করে কুরাইশের কতিপয় লোকের বিরুদ্ধে দু‘আ করেন’।[১৫] আব্দুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,
خَرَجَ النَّبِىُّ ﷺ إِلَى هَذَا الْمُصَلَّى يَسْتَسْقِىْ فَدَعَا وَاسْتَسْقَىْ ثُمَّ اسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ وَقَلَبَ رِدَاءَهُ
‘একবার নবী (ﷺ) ইসতিসক্বার (বৃষ্টির) ছালাতের জন্য ঈদগাহে গমন করলেন এবং বৃষ্টির জন্য দু‘আ করলেন। অতঃপর ক্বিবলার দিকে মুখ করে নিজের চাদরখানা উল্টিয়ে গায়ে দিলেন।[১৬] তবে ক্বিবলামুখী না হয়েও দু‘আ করা যায়।[১৭]
৭. পবিত্র অবস্থায় দু‘আ করা[১৮]
দু‘আর অন্যতম আদব হল দু‘আকারীর উচিত পবিত্র অবস্থায় দু‘আ করা। যখন সে মহান আল্লাহকে আহ্বান করছে, তখন যেন সে উত্তম অবস্থায় থাকে। ওযূর মাধ্যমে বাহ্যিক পবিত্রতা এবং তাওবাহ ও ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে আত্মিক পবিত্রতাই হল পবিত্র অবস্থা। আর এটাই হল আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম। ওযূ করে দু‘আ করা মুস্তাহাব। আর এ ক্ষেত্রে অনেক হাদীছ রয়েছে। আবূ মূসা আল-আশ‘আরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণিত আবূ আমির এর শাহাদাতের কাহিনী এবং নবী (ﷺ)-এর নিকট ক্ষমা প্রার্থনার হাদীছে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট যখন আবূ আমিরের মৃত্যু এবং তিনি যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করেছেন এ সংবাদ যখন পৌঁছল তখন নবী (ﷺ) পানি আনিয়ে ওযূ করলেন। তারপর উভয় হাত তুলে তাঁর জন্য দু‘আ করলেন এবং বললেন, اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِعُبَيْدٍ أَبِىْ عَامِرٍ ‘হে আল্লাহ! ঊবাইদ আবূ ‘আমিরকে ক্ষমা করো’।[১৯]
৮. মিসওয়াক করা[২০]
দু‘আ করার পূর্বে মেসওয়াক করে মুখ পরিষ্কার করা দু‘আ করার অন্যতম আদব। দু‘আ করা মুখের ইবাদত। আর ইবাদতের পূর্বে মেসওয়াক করা সুন্নাত। মেসওয়াকে রয়েছে পবিত্রতা ও আল্লাহর সন্তষ্টি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, اَلسِّوَاكُ مَطْهَرَةٌ لِلْفَمِ مَرْضَاةٌ لِلرَّبِّ ‘মেসওয়াকে রয়েছে মুখের পবিত্রতা এবং আল্লাহর সন্তষ্টি’।[২১] তাছাড়া কুরআনেও অনেক দু‘আ রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,
إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا تَسَوَّكَ ثُمَّ قَامَ يُصَلِّي قَامَ الْمَلَكُ خَلْفَهُ فَتَسَمَّعَ لِقِرَاءَتِهِ فَيَدْنُوْ مِنْهُ أَوْ كَلِمَةً نَحْوَهَا حَتَّى يَضَعَ فَاهُ عَلَى فِيْهِ فَمَا يَخْرُجُ مِنْ فِيْهِ شَيْءٌ مِنَ الْقُرْآنِ إِلَّا صَارَ فِيْ جَوْفِ الْمَلَكِ فَطَهِّرُوْا أَفْوَاهَكُمْ لِلْقُرْآنِ
‘নিশ্চয় বান্দা যখন মেসওয়াক করে অতঃপর ছালাতে দাঁড়ায়, তখন একজন ফেরেশতা এসে তার পিছনে দাঁড়িয়ে কুরআন তেলাওয়াত শুনতে থাকেন ও নিকটবর্তী হন এবং অনুরূপ বাক্য শুনতে থাকেন। এমনকি তিনি তাঁর মুখ মুছল্লীর মুখের উপরে রাখেন। অতঃপর যখনই সে কোন আয়াত তেলাওয়াত করে তখন তা ফেরেশতার পেটে চলে যায়। অতএব তোমরা কুরআনের জন্য তোমাদের মুখকে পবিত্র কর’।[২২] আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, إِنَّ أَفْوَاهَكُمْ طُرُقٌ لِلْقُرْآنِ فَطَيِّبُوْهَا بِالسِّوَاكِ ‘তোমাদের মুখ হল কুরআনের রাস্তা। অতএব তোমরা মেসওয়াক করে তা পবিত্র ও সুগন্ধিযুক্ত কর’।[২৩]
৯. হাত তুলে দু‘আ করা[২৪]
হাত তুলে দু‘আ করা দু‘আ কবুলের অন্যতম আদব। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বিশেষ বিশেষ সময় হাত তুলে দু‘আ করতেন। আবূ মূসা আল-আশ‘আরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উভয় হাত তুলে দু‘আ করলেন, اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِعُبَيْدٍ أَبِىْ عَامِرٍ ‘হে আল্লাহ! ঊবাইদ আবূ ‘আমিরকে ক্ষমা করো’। আমি তখন তাঁর বগলের শুভ্রতা দেখলাম।[২৫] ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, নবী (ﷺ) দু’ খানা হাত উঠিয়ে দু‘আ করেছেন, اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَبْرَأُ إِلَيْكَ مِمَّا صَنَعَ خَالِدٌ ‘হে আল্লাহ! খালিদ যা করেছে আমি তা থেকে অস্তুষ্টি প্রকাশ করছি’।[২৬]
সালমান ফারিসী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী করীম (ﷺ) বলেন, إِنَّ اللهَ تَعَالَى حَيٌّ كَرِيْمٌ يَسْتَحْيِيْ إَذَا رَفَعَ الرَّجُلُ إِلَيْهِ يَدَيْهِ أَنْ يَرُدَّهُمَا صَفْرًا خَائِبَتَيْنِ ‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা লজ্জাশীল ও মহান দাতা। তাঁর কোন বান্দা তাঁর নিকট দুই হাত উঠালে তা খালি ফিরিয়ে দিতে তিনি লজ্জাবোধ করেন’।[২৭]
ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেছেন, আল্লাহর নিকট কিছু চাওয়ার নিয়ম হল, তুমি তোমার দুই হাত তোমার কাঁধ পর্যন্ত অথবা তার কাছাকাছি উঠাবে, ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনার নিয়ম হল, তুমি তোমার একটি আঙ্গুল (শাহাদত অঙ্গুলী) দ্বারা ইশারা করবে এবং ফরিয়াদ করার নিয়ম হল, তুমি তোমার পূর্ণ হাত প্রসারিত করবে। অপর এক বর্ণনায় আছে, তিনি বলেছেন, ফরিয়াদ করা হল এরূপ, অতঃপর তিনি তাঁর দুই হাত উপরের দিকে উঠালেন এবং হাতের ভিতর দিককে তাঁর চেহারার দিকে রাখলেন।[২৮]
১০. দৃঢ়তা ও আগ্রহ নিয়ে দু‘আ করা[২৯]
দু‘আতে দৃঢ়তা অবলম্বন করা এবং আগ্রহ নিয়ে দু‘আ করা দু‘আর অন্যতম আদব। আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,إِذَا دَعَا أَحَدُكُمْ فَلْيَعْزِمْ فِى الدُّعَاءِ وَلَا يَقُلِ اَللّٰهُمَّ إِنْ شِئْتَ فَأَعْطِنِىْ فَإِنَّ اللهَ لَا مُسْتَكْرِهَ لَهُ ‘তোমাদের কেউ যখন দু‘আ করে সে যেন দৃঢ়তা প্রকাশের সাথে দু‘আ করে। আর যেন না বলে, ‘হে আল্লাহ! যদি তুমি ইচ্ছা কর তবে আমাকে দান কর। কেননা মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর জন্য কোন বাধ্যকারী নেই’।[৩০] রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আরো বলেছেন,
إِذَا دَعَا أَحَدُكُمْ فَلَا يَقُلِ اللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِىْ إِنْ شِئْتَ وَلَكِنْ لِيَعْزِمِ الْمَسْأَلَةَ وَلْيُعَظِّمِ الرَّغْبَةَ فَإِنَّ اللهَ لَا يَتَعَاظَمُهُ شَىْءٌ أَعْطَاهُ
‘তোমাদের কেউ যেন দু‘আর সময় না বলে, হে আল্লাহ! আপনি যদি চান আমাকে মাফ করুন। কিন্তু সে যেন দৃঢ়তার সাথে দু‘আ করে। সে যেন আগ্রহ নিয়ে দু‘আ করে। কেননা আল্লাহ তা‘আলা তাকে যা দান করেন তা আল্লাহ তা‘আলার নিকট তেমন কোন বিশাল জিনিস নয়’।[৩১]
(ইনশাআল্লাহ আগামী সংখ্যায় সমাপ্য)
* পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
তথ্যসসূত্র :
[১]. সঊদ ইবনু মুহাম্মাদ আল-ঊকাইলী, আল-ই‘তিদায়ু ফিদ দু‘আয়ি (রিয়াদ : দারু কুনূয, ১৪৩১ হি.), পৃ. ২৪।
[২]. তিরমিযী, হা/৩৪৭৬; আবূ দাঊদ, হা/১৪৮১; নাসাঈ, হা/১২৮৪; ছহীহ ইবনু খুযায়মাহ, হা/৭০৯; মিশকাত, হা/৯৩০, সনদ ছহীহ।
[৩]. তিরমিযী, হা/৫৯৩; মিশকাত, হা/৯৩১, সনদ ছহীহ।
[৪]. মুসনাদে আহমাদ, হা/১৪৬২; তিরমিযী, হা/৩৫০৫; মিশকাত, হা/২২৯২, সনদ ছহীহ।
[৫]. আল-ই‘তিদায়ু ফিদ দু‘আয়ি, পৃ. ২৫।
[৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৩০৬; ‘দু‘আসমূহ’ অধ্যায়; ‘শ্রেষ্ঠতম ইস্তিগফার আল্লাহর বাণী’ অনুচ্ছেদ; আবূ দাঊদ, হা/৫০৭০; তিরমিযী, হা/৩৩৯৩; ইবনু মাজাহ, হা/৩৮৭২; মিশকাত, হা/২৩৩৫।
[৭]. আল-ই‘তিদায়ু ফিদ দু‘আয়ি, পৃ. ২৬।
[৮]. ছহীহ বুখারী, হা/২২১৫; ছহীহ মুসলিম, হা/২৭৪৩; মিশকাত, হা/৪৯৩৮।
[৯]. আল-ই‘তিদায়ু ফিদ দু‘আয়ি, পৃ. ২৭।
[১০]. ছহীহ মুসলিম, হা/২১৮৯; ইবনু মাজাহ, হা/৩৫৪৫।
[১১]. তিরমিযী, হা/২৫৭২; নাসাঈ, হা/৫৫২১; মিশকাত, হা/২৪৭৮; সনদ ছহীহ।
[১২]. আল-ই‘তিদায়ু ফিদ দু‘আয়ি, পৃ. ২৭।
[১৩]. তিরমিযী, হা/৩৩৮২; মিশকাত, হা/২২৪০, সনদ হাসান।
[১৪]. আল-ই‘তিদায়ু ফিদ দু‘আয়ি, পৃ. ২৯।
[১৫]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৯৬০।
[১৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৩৪৩; ছহীহ মুসলিম, হা/২৪৮৯; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৭১৯৮।
[১৭]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৩৪২।
[১৮]. আল-ই‘তিদায়ু ফিদ দু‘আয়ি, পৃ. ৩০।
[১৯]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৩৮৩; ছহীহ মুসলিম, হা/২৪৮৯; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৭১৯৮।
[২০]. আল-ই‘তিদায়ু ফিদ দু‘আয়ি, পৃ. ৩০।
[২১]. ছহীহ বুখারী, ‘ছিয়াম’ অধ্যায়, ‘অনুচ্ছেদ-২৭; মুসনাদুশ শাফেয়ী, হা/৪১; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪২৪৯; নাসাঈ, হা/৫; দারেমী, হা/৬৮৪।
[২২]. মুসনাদুল বায্যার, হা/৬০৩, সনদ ছহীহ; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১২১৩।
[২৩]. ইবনু মাজাহ, হা/২৯১, সনদ ছহীহ।
[২৪]. আল-ই‘তিদায়ু ফিদ দু‘আয়ি, পৃ. ৩০।
[২৫]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৩৮৩; ছহীহ মুসলিম, হা/২৪৮৯; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৭১৯৮।
[২৬]. ছহীহ বুখারী, ‘দু‘আ’ অধ্যায়, ‘দু‘আর সময় দু’ খানা হাত উঠানো’ অনুচ্ছেদ।
[২৭]. তিরমিযী, হা/৩৫৫৬; সনদ ছহীহ।
[২৮]. আবূ দাঊদ, হা/১৪৮৯ ও ১৪৯০; সনদ ছহীহ।
[২৯]. আল-ই‘তিদায়ু ফিদ দু‘আয়ি, পৃ. ৩১।
[৩০]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৭৮; আদাবুল মুফরাদ, হা/৬০৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/১১৯৯৯।
[৩১]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৭৯; মিশকাত, হা/২২২৬।