মীলাদুন্নবী ও আমাদের অবস্থান
-ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
অন্ধকারাচ্ছন্ন, বিপদ সঙ্কুল ও দুর্গম কণ্টকাকীর্ণ পাপাচারের পথ পদদলিত করে মানবজাতি যেন সত্য-সঠিক, সরল-সোজা নাজাতের পথে পরিচালিত হয়, সেজন্য এ ধরণী পরে যুগে যুগে মহান আল্লাহ অসংখ্য নবী ও রাসূল প্রেরণ করেছেন। তাঁরা কালে কালে পার্থক্য করে দিয়েছেন ন্যায়-অন্যায়, সত্য-মিথ্যা, ভাল-মন্দ, ঠিক-বেঠিক ইত্যাকার বিষয়ের মধ্যে। এতদসত্ত্বেও মানুষ গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিয়ে হক্ব পথ থেকে দূরে ছিটকে পড়েছে। কালের আবর্তে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় হাস্য-বদনে আলিঙ্গন করেছে অন্যায়-অসত্যকে। ইসলামী আচার-অনুষ্ঠান, সভ্যতা-সংস্কৃতিকে বাদ দিয়ে গ্রহণ করেছে বিভিন্ন নবাবিষ্কৃত ইসলাম পরিপন্থী অনুষ্ঠানকে। সেসব অনুষ্ঠানকে আবার পুণ্য জ্ঞান করে মহা সমারোহে ও অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করে থাকে। একটি বারের জন্য ভেবেও দেখে না অনুষ্ঠানটি দলীলের মানদ-ে টিকবে কি-না। মীলাদ বা ঈদে মীলাদুন্নবী ঠিক এমনই একটি অনুষ্ঠান, যা মুসলিম সমাজে আসন গেঁড়ে বসেছে। বক্ষমাণ প্রবন্ধে মীলাদুন্নবী উৎসব সম্পর্কে আলোচনা করার প্রয়াস পাব ইনশাআল্লাহ।
মীলাদুন্নবীর পরিচয়
আরবী ميلاد (মীলাদ) বা مولد (মাওলিদ) অর্থ হল وقت الولادة তথা জন্মের সময় বা জন্মকাল।[১] মাওলিদ শব্দের অর্থ হল জন্মদিন, জন্মস্থান বা জন্মোৎসব। সুতরাং ঈদে মীলাদুন্নবীর অর্থ দাঁড়ায় ‘নবীর জন্মমুহূর্ত’ বা ‘নবীর জন্ম দিনের আনন্দোৎসব’। বর্তমানে ১২ রবীউল আউয়ালকে শেষনবীর জন্মদিন ধরে কিছু সুবিধাবাদী আলেমের পৃষ্ঠপোষকতায় ওয়ায-নছীহত, যিক্র-আযকার ও ক্বিয়াম করে পরিশেষে মিষ্টি মুখ করে অনুষ্ঠান ত্যাগ করা হয়। এটাই মীলাদুন্নবী সংক্ষিপ্ত পরিচয়।
মহানবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্ম ও মৃত্যু দিবস
পবিত্র কুরআনে মহানবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্মদিন, বার, তারিখ ও সময় সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি। বিধায় এক্ষেত্রে আমাদেরকে হাদীছ ও বিদ্বানগণের উক্তি বিশ্লেষণ করতে হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্ম বার সোমবার এতে কোন দ্বিমত নেই। আবু ক্বাতাদাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সোমবারের দিন ছিয়াম পালন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ذَاكَ يَوْمٌ وُلِدْتُ فِيهِ وَيَوْمٌ بُعِثْتُ أَوْ أُنْزِلَ عَلَىَّ فِيهِ ‘এই দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছি, এই দিনেই আমি নবুঅত পেয়েছি এবং এই দিনেই আমার উপর কুরআন নাযিল করা হয়েছে’।[২]
ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্ম তারিখ নিয়ে যথেষ্ট মতানৈক্য রয়েছে। কেউ বলেছেন, রবীউল আউয়ালের ২ তারিখ, কেউ বলেন, ৮ তারিখ, কারো মতে, ১০ তারিখ আবার কারো মতে, ১২ তারিখ। তবে তাঁর মৃত্যু রবীউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ এতে কারো কোন দ্বিমত নেই।[৩]
সুতরাং একথা পরিষ্কার যে, মহানবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্ম ও মৃত্যু উভয়ই সোমবারে হয়। তবে তাঁর জন্ম তারিখ নিয়ে বিভিন্ন মত পাওয়া যায়। যেমন-
কারো মতে ২, ৮, ১০ ও ১৩ই রবীউল আউয়াল।[৪]
মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা-তে জাবির ও ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) বলেন, ১৮ই রবীউল আউয়াল।[৫]
ইবনু ইসহাক্ব বলেন, রবীউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ সোমবার হস্তি বছরে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জন্মগ্রহণ করেন।[৬]
আবার কারো মতে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় বিখ্যাত বনু হাশেম বংশে ৯ই রবীউল আউয়াল (ফীলের বছর) সোমবার ছুবহে ছাদিক্বের সময় জন্মগ্রহণ করেন। ইংরেজী পঞ্জিকা মতে, তারিখটি ছিল ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২০ এপ্রিল। উক্ত বছরটি ছিল বাদশাহ নওশের-এর সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার চল্লিশতম বছর। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মুহাম্মাদ সুলায়মান ছাহেব এবং মুহাম্মাদ পাশা ফাল্কীর অনুসন্ধান লব্ধ সঠিক মত এটাই।[৭]
আল্লামা হুমাইদী, ইমাম ইবনু হাযম, ইমাম ইবনু তাইমিয়াহ, ইবনুল ক্বাইয়িম, ইবনু কাছীর, ইবনু হাজার আসক্বালানী, বদরুদ্দীন আইনী প্রমুখের মতে, ৯ই রবীউল আউয়াল সোমবার রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্ম দিন।[৮] ৯ই রবীউল আউয়াল মতটিই বেশী গ্রহণযোগ্য।[৯] অতএব মহানবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যু দিবস ১২ই রবীউল আউয়াল সোমবার।[১০] দুর্ভাগ্য যে, আমরা চরম বেদনাদায়ক ১২ই রবীউল আউয়াল রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যু দিবসেই তাঁর জন্মবার্ষিকী বা ঈদে মীলাদুন্নবী উদযাপন করছি।
মীলাদুন্নবী অনুষ্ঠানের চিত্র
উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আলিমদের একটি বিশেষ অংশ ঈদে মীলাদুন্নবী অনুষ্ঠানে যান এবং ইসলাম সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখে না এমন অজ্ঞ মানুষদেরকে সমবেত করে মহানবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবন চরিত সহ কিছু জাল, মিথ্যা, বানাওয়াট ও ভিত্তিহীন কেচ্ছা-কাহিনী সুরেলা কণ্ঠে বিভিন্ন অঙ্গ-ভঙ্গিতে প্রকাশ করে থাকেন। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে উক্ত তথাকথিত ওয়ায়েয সহ উপস্থিত সকলে ক্বিয়াম তথা মহানবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সম্মানার্থে দাঁড়িয়ে বিদ‘আতী দরূদ পাঠ করতে থাকেন। এ পর্যায়ে অনেকে আবার মাদকাসক্ত ব্যক্তির ন্যায় টালমাটাল করে শরীর দুলিয়ে দুলিয়ে পাগলের মত সেসব দরূদ আওড়াতে থাকেন। আলোকসজ্জাসহ বিভিন্ন সাজে অনুষ্ঠানটিকে উৎসব মুখর করে তোলা হয়। সবশেষে জিলাপি বিলানোর হিড়িক পড়ে যায়। এভাবে বক্তা ছাহেব উপস্থিত সকলকে বিদ‘আতের সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে সত্যকে পাথর চাপ দেন। অতঃপর পেট পুরে জিলাপি খেয়ে আর বাড়ীর জন্য পকেট ভর্তি টাকা নিয়ে মহা আনন্দে বাড়ীর পথে রওয়ানা হন।
সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হল, যেসব পেটপূজারী হুযুর মীলাদ মাহফিলের ওয়ায-নছীহত করেন, খোঁজ নিয়ে দেখা যাবে জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি তাদের বাড়ীতে ঈদে মীলাদুন্নবী অনুষ্ঠান পালন তো দূরের কথা, মীলাদের গন্ধ পর্যন্ত পাওয়া যাবে না। কিন্তু তারাই আবার অন্যের বাড়ীতে মহা ধুমধামে মীলাদুন্নবী উদ্যাপন করেন। আসলেই পরের খেয়ে অন্যের সম্পত্তিতে মাতব্বরী করা মজারই ব্যাপার। এইতো বিচিত্র উৎসব ঈদে মীলাদুন্নবীর হাল-হকীকত।
মীলাদের আবিষ্কারক
ক্রসেড বিজেতা মিসরের সুলতান ছালাহুদ্দীন আইয়ূবী (৫৩২-৫৮৯) কর্তৃক নিয়োজিত ইরাকের ‘এরবল’ এলাকার গভর্ণর আবু সাঈদ মুযাফফরুদ্দীন কুকুবুরী সর্বপ্রথম ৬০৪ হিজরী মতান্তরে ৬২৫ হিজরীতে মীলাদের প্রচলন ঘটান।[১১] মীলাদুন্নবী অনুষ্ঠানে তিনি নিজে নাচে অংশ নিতেন এবং আলিমদের চাপ দিয়ে মীলাদের পক্ষে জাল হাদীছ ও মিথ্যা গল্প লিখতে বাধ্য করতেন।[১২]
আলেমদের সহযোগিতা
আবিষ্কৃত এই মীলাদ অনুষ্ঠানের সমর্থনে তৎকালীন আলেম সমাজের মধ্যে সর্বপ্রথম যিনি এগিয়ে আসেন, তিনি হলেন আবুল খাত্ত্বাব ওমর বিন দেহিইয়াহ (৫৪৪-৬৩৩ হি.)। তিনি ‘আত-তানভীর ফী মাওলিদিস সিরাজিল মুনীর’ নামে একটি বই লেখেন এবং সেখানে বহু জাল ও বানাওয়াট হাদীছ জমা করেন। অতঃপর বইটি ৬২৬ হিজরীতে গভর্ণর কুকুবুরীর নিকট পেশ করলে তিনি খুশি হয়ে তাকে সঙ্গে সঙ্গে এক হাযার স্বর্ণমুদ্রা বখশীশ দেন।[১৩] পর্যায়ক্রমে আলেমদের একটি বহর একই পথে তথা বিনা পুঁজির এ ব্যবসায় পা বাড়ালেন।
কেন মীলাদুন্নবী থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক
ঈদে মীলাদুন্নবী মহানবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর বহু পরে সৃষ্ট নতুন অনুষ্ঠান মাত্র। যার কোন পূর্ব দৃষ্টান্ত নেই। ঈদে মীলাদুন্নবী বিদ‘আত হওয়ার কারণ সমূহ নিন্মে উল্লেখ করা হল:
দ্বীনের মধ্যে নতুন আবিষ্কার
এটি দ্বীনের মধ্যে নতুন আবিষ্কার। মহানবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মীলাদ বা ঈদে মীলাদুন্নবী উৎসব পালন করেননি এবং করতেও বলেননি। চার খলীফাসহ জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত দশজন ছাহাবী (রাযিয়াল্লাহু আনহুম)-এর কেউ এ অনুষ্ঠান পালন করেননি। লক্ষাধিক ছাহাবীর কোন একজনও এ অনুষ্ঠান পালন করেননি। পরবর্তী যুগের তাবেঈ ও তাবে তাবেঈগণ পালন করেননি। মুহাদ্দিছকুল শিরোমণি ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম সহ হাদীছ গ্রন্থ সংকলনকারী মুহাদ্দিছগণও পালন করেননি। এমনকি চার মাযহাবের ইমামগণের কোন একজনও এ অনুষ্ঠান পালন করেননি। তাঁরা কেউ পালন করেছেন মর্মে কোন প্রমাণ অদ্যাবধি পাওয়া যায়নি। বরং এটি মহানবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর প্রায় ৫৯৪ বছর পর ৬০৪ হিজরীতে আবিষ্কৃত হয়। যা নিঃসন্দেহে বিদ‘আত। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, مَنْ أَحْدَثَ فِىْ أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ ‘যে ব্যক্তি আমাদের এ দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু সৃষ্টি করবে, যা তার মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত’।[১৪] অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, مَنْ عَمِلَ عَمَلًا لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ ‘কেউ যদি এমন কোন আমল করে, যার প্রতি আমার নির্দেশ নেই, তা প্রত্যাখ্যাত’।[১৫]
ক্বিয়াম প্রথা
মীলাদুন্নবী অনুষ্ঠানে যিক্র-আযকারের এক পর্যায়ে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে হাযির জেনে তাঁর সম্মানে উপস্থিত সকলে ক্বিয়াম করে বা দাঁড়িয়ে যায়, যা সম্পূর্ণ ইসলাম পরিপন্থী কাজ। এভাবে দাঁড়িয়ে কাউকে সম্মান দেখানো ইসলামে হারাম। ছাহাবায়ে কিরামের নিকট রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অপেক্ষা কোন ব্যক্তিই অধিক প্রিয় ছিল না। অথচ তাঁরা কখনো রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখে দাঁড়াতেন না। কারণ তাঁরা জানতেন যে, তিনি এরূপ দাঁড়ানোকে ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখেন’।[১৬] অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জাহান্নামের হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَتَمَثَّلَ لَهُ الرِّجَالُ قِيَامًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ ‘যে ব্যক্তি নিজের সম্মানে অন্যকে মূর্তির ন্যায় তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পসন্দ করে, সে যেন জাহান্নামে তার বাসস্থান নির্ধারণ করে নেয়’।[১৭]
বিধর্মীদের অনুকরণ
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। অন্য কোন জাতি বা ধর্ম থেকে কোন সভ্যতা বা সংস্কৃতি ধার করে পালন করার সুযোগ ইসলামে নেই। জন্ম বা মৃত্যু দিবস পালন করা নিছক বিধর্মীদের কাজ। যেমন- শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন উপলক্ষে জন্মাষ্টমীতে হিন্দুরা তার জন্মদিবস পালন করে।[১৮] খ্রিস্টানরা অনুমানের উপর ভিত্তি করে ২৫ ডিসেম্বরকে যীশুর জন্মদিবস ধরে নিয়ে ‘বড় দিন’ পালন করে।[১৯] ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, মিশরের ফির‘আউন জন্মোৎসব পালন করত। আর ফির‘আউন ছিল ইহুদী।[২০]
তাহলে বুঝা গেল, জন্ম বা মৃত্যু দিবস উদ্যাপন করা স্রেফ ইহুদী-খ্রিস্টান-হিন্দু তথা বিধর্মীদের কাজ। মুসলিমরা তাদের বিরোধিতা করবে এটিই ইসলামের বিধান। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, وَ مَنۡ یَّتَوَلَّہُمۡ مِّنۡکُمۡ فَاِنَّہٗ مِنۡہُمۡ ‘তোমাদের মধ্য হতে যে অন্যদের সাদৃশ্য গ্রহণ করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে’ (সূরা আল-মায়িদাহ : ৫১)। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ ‘যে ব্যক্তি অন্য কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য রাখে, সে ঐ জাতিরই অন্তর্ভুক্ত হবে’।[২১] সুতরাং মীলাদুন্নবী উৎসবে যেহেতু বিধর্মীদের ছোঁয়া আছে, তাই এটা ত্যাগ করে তওবা করা অপরিহার্য।
প্রশংসায় অতিরঞ্জন
অধিকাংশ মীলাদ অনুষ্ঠানে দেখা যায়, প্রশংসার ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা হয়। এমনকি তারা মহানবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর গুণাগুণ বর্ণনা করতে গিয়ে নানা ভ্রান্ত আক্বীদামূলক কথা বর্ণনা করে, যা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। মহানবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
لَا تُطْرُوْنِي كَمَا أَطْرَتْ النَّصَارَى ابْنَ مَرْيَمَ فَإِنَّمَا أَنَا عَبْدُهُ فَقُوْلُوْا عَبْدُ اللهِ وَرَسُوْلُهُ
‘তোমরা আমার প্রশংসায় বাড়াবাড়ি কর না, যেমন খ্রিস্টানরা মারইয়ামের পুত্র ঈসা (আলাইহিস সালাম) সম্পর্কে বাড়াবাড়ি করেছে। আমি তো একজন বান্দা। বরং তোমরা বল আমি আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল’।[২২]
সময় ও সম্পদের অপচয়
মীলাদুন্নবী অনুষ্ঠানকে জাঁকজমকপূর্ণ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন রকম সাজ-সজ্জা, আলোকসজ্জা, রঙ্গিন কাগজ, মোমবাতি, পটকা ফুটানো সহ ননা রকম কাজ দেশব্যাপী কোটি কোটি টাকা নষ্ট করা হয়। সময়েরও অপচয় করা হয়। ঈদে মীলাদুন্নবী উপলক্ষে সারা দেশে সরকারী ছুটি থাকায় সব ধরনের অফিস-আদালত, মিল-কলকারখানা বন্ধ থাকে। ফলে সেখানে কোটি কোটি টাকার ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদ- ভেঙ্গে পড়ে। সব মিলিয়ে বলা যায়, ঈদে মীলাদুন্নবী উদ্যাপনে বিপুল পরিমাণে অপচয় ও ক্ষতি সাধিত হয়। অথচ মহান আল্লাহ অপচয়কারীকে পসন্দ করেন না (সূরা বানী ইসরাঈল : ২৬-২৭)।
জাল বা বানাওয়াট হাদীছের প্রচার
মীলাদুন্নবী অনুষ্ঠানে মীলাদপ্রেমী মৌলভীরা মানুষকে আকৃষ্ট করার নিমিত্তে এবং স্বীয় হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ভক্তির আতিশয্যে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রশংসায় অগণিত জাল বা বানাওয়াট হাদীছ বর্ণনা করে উপস্থিত শ্রোতাম-লীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ইসলাম সম্পর্কে অনভিজ্ঞ শ্রোতারাও বানাওয়াট হাদীছের আমলের দিকে ক্ষুধার্তের ন্যায় তাকিয়ে থাকে। ফলশ্রুতিতে সমাজে বানাওয়াট হাদীছের ব্যাপক প্রচলন ঘটে। অথচ ইসলাম এ ব্যাপারে কঠোরভাবে হুঁশিয়ার করেছে। যেমন নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, مَنْ كَذَبَ عَلَىَّ مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করবে, সে যেন তার বাসস্থান জাহান্নামে প্রস্তুত করে নেয়’।[২৩] অন্যত্র তিনি বলেছেন, مَنْ حَدَّثَ عَنِّىْ بِحَدِيْثٍ يُرَى أَنَّهُ كَذِبٌ فَهُوَ أَحَدُ الْكَاذِبِيْنَ ‘যে ব্যক্তি আমার পক্ষ হতে এমন কথা বলে, যা সম্পর্কে সে জানে যে তা মিথ্যা, তবে সে মিথ্যুকদের একজন’।[২৪]
মনীষীদের দৃষ্টিতে মীলাদুন্নবী
ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) মীলাদুন্নবী প্রবর্তনকারীদের সম্পর্কে বলেন, ‘তারা কাফের ও ফাসেক্ব’।[২৫]
আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘বর্তমানে প্রচলিত (মীলাদ) ৬০০ হিজরীতে এরবলের সুলতানের যুগে চালু হয়। শরী‘আতে মুহাম্মাদীতে এর কোন অস্তিত্ব নেই; বরং এই বিদ‘আত সম্পর্কে এমন কোন কিতাব নেই, যা হাফিয ও মুহাদ্দিছগণের হাতে নেবার উপযুক্ত’।[২৬]
হাফিয আবু বকর বাগদাদী হানাফী ওরফে ইবনু নক্বতা বলেন, ‘মীলাদ মাহফিল সালাফ হতে প্রমাণিত নয় এবং ঐ সকল কাজকর্মে মোটেও কোন মঙ্গল নেই’।[২৭]
ইবনু হাজার ‘আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ইসলামের সম্মানিত প্রথম তিন যুগের সালাফে ছালেহীনের কোন একজনও মীলাদ পালন করেননি’।[২৮]
হানাফী আলেম তাজুদ্দীন ফাক্বেহীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আমি পবিত্র কুরআন ও হাদীছে মীলাদ মাহফিলের কোন প্রমাণ পাইনি। এ মীলাদ একান্তই নব্য প্রসূত বিদ‘আত এবং পেট পূজার জন্যই এটা আবিষ্কৃত হয়েছে’।[২৯]
আশরাফ আলী থানভী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘মীলাদ অনুষ্ঠান শরী‘আতে একেবারেই নাজায়েয গুনাহের কাজ’।[৩০] তিনি আরো বলেন, ‘প্রচলিত মীলাদ ও ক্বিয়াম বিদ‘আত’।[৩১]
মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘বর্তমানে মীলাদ সুন্নাতের ব্যবস্থা নয়, সুন্নাত মোতাবিক ব্যবস্থাও এটি নয়। বরং তা সুস্পষ্টরূপে বিদ‘আত’।[৩২]
মাওলানা রশীদ আহমাদ গাংগোহী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘প্রচলিত ধরনের মীলাদ অনুষ্ঠান বিদ‘আত এবং মাকরূহ’।[৩৩]
শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিছ দেহলভী বলেন, ‘কোন নবীর জন্ম ও মৃত্যু দিবসকে ঈদ উৎসবে পরিণত করা বৈধ নয়’।[৩৪]
মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহিল কাফী আল-কুরাইশী (রাহিমাহুল্লাহ)
বলেন, ‘মীলাদ শরীফের সাহায্যে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য দ্বাদশী পালন খ্রিস্টমাসের অনুকরণ মাত্র’।[৩৫]
মীলাদুন্নবী উদ্যাপনের পরিণাম
মীলাদ এবং ঈদে মীলাদুন্নবী পালন করা প্রকাশ্য বিদ‘আত। আর বিদ‘আতের শেষ পরিণাম খুবই ভয়াবহ। জাবের (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّ خَيْرَ الأُمُوْرِ كِتَابُ اللهِ وَخَيْرَ الْهَدْىِ هَدْىُ مُحَمَّدٍ وَشَرَّ الأُمُوْرِ مُحْدَثَاتُهَا وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ
‘অতঃপর নিশ্চয় সর্বশ্রেষ্ঠ বাণী হচ্ছে আল্লাহর বাণী এবং সর্বোত্তম হেদায়াত হচ্ছে মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হেদায়াত। সর্বনিকৃষ্ট বিষয় হচ্ছে দ্বীনের মধ্যে নতুন সৃষ্টি করা এবং প্রত্যেক নতুন সৃষ্টিই বিদ‘আত তথা ভ্রষ্টতা’।[৩৬] অন্য বর্ণনায় আছে, وَكُلُّ ضَلَالَةٍ فِى النَّارِ ‘এবং প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম’।[৩৭]
উপসংহার
কিছু কায়েমী স্বার্থবাদী আলেমের প্রতারণার মরণ ফাঁদে আটকা পড়ে সরলমনা মুসলিমরা আজ মীলাদুন্নবী অনুষ্ঠান নিয়ে মহা ব্যস্ত। অথচ ইসলামের মূলনীতিতে মীলাদ ও মীলাদুন্নবী উদযাপন করা বিদ‘আত। এরপরেও এ পাপের অথৈ সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে কোটি কোটি মানুষ। বেশী সংখ্যক স্বার্থান্বেষী আলেমের স্বতঃস্ফূর্ত ভূমিকা, পূর্ব পুরুষের অন্ধ অনুকরণ এবং ধর্মীয় গোঁড়ামির কারণেই মূলত এ বিদ‘আতী অনুষ্ঠানটি সমাজের বুকে আজও বিদ্যমান।
হে মুসলিম সমাজ! আর কতদিন থাকবে তাক্বলীদের অন্ধকূপে আবদ্ধ? মাযহাবী গোঁড়ামির কি অবসান ঘটবে না? আর কতদিন জাহেলী সমাজের মত পূর্ব পুরুষের দোহাই দিবে? আর কতকাল পরে বিদ‘আতকে ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করে প্রফুল্লচিত্তে ছহীহ সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরবে? বিদ‘আতের শেষ পরিণাম জাহান্নামের বীভৎস চিত্র তোমার কর্ণকুহরে এখনো কি পৌঁছেনি? তবে কেন এত দেরী করছ সত্যকে স্বাগত জানিয়ে আলিঙ্গন করতে? কোন সময় হঠাৎ মালাকুল মওত তোমার আত্মা নিয়ে ঊর্ধ্বগগনে প্রস্থান করবে তা কি তুমি ভেবে দেখেছ? হায় আফসোস! কবে কাটবে তোমার তন্দ্রা ঘোর? তোমার এ তাক্বলীদী গোঁড়ামির শেষ কোথায়…? মহান আল্লাহ আমাদেরকে মীলাদুন্নবী পালনের নোংরা বিদ‘আত থেকে বেঁচে থাকার তাওফীক্ব দান করুন-আমীন!!
* শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, ডাঙ্গীপাড়া, রাজশাহী।
তথ্যসূত্র :
[১]. ড. ইবরাহীম আনীস ও তার সাথীগণ, আল-মু‘জামুল ওয়াসীত্ব (বৈরূত : দারুল ফিক্র, তাবি), ২য় খণ্ড, পৃ. ১০৫৬; আবুল ফযল মাওলানা আব্দুল হাফিয বালয়াবী, মিছবাহুল লুগাত (ঢাকা : হামিদিয়া লাইব্রেরী, তাবি), পৃ. ৯৬৬; আল-ক্বামূসুল মুহীত্ব, নওল কিশোর ছাপা, ১ম খণ্ড, পৃ. ২১৫।
[২]. ছহীহ মুসলিম, হা/১১৬২; মিশকাত, হা/২০৪৫।
[৩]. আবু যাকারিয়া মহীউদ্দীন ইয়াহইয়া ইবনু শারফ আন-নববী (বৈরূত : দারু ইহইয়াইত তুরাছিল ‘আরাবিয়্যাহ, ২য় সংস্করণ, ১৩৯২ হি.), ১৫তম খণ্ড, পৃ. ১০০।
[৪]. ছিফাতুছ ছাফ্ওয়াহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৪; সীরাতে সাইয়েদুল আম্বিয়া, পৃ. ১১৭, গৃহীত : হাফেয মুহাম্মাদ আইয়ুব, মীলাদ, শবেবরাত ও মীলাদুন্নবী কেন বিদ‘আত (ঢাকা : তাওহীদ পাবলিশার্স, ১ম প্রকাশ, অক্টোবর ২০০০ খ্রি.), পৃ. ১৯। পরবর্তীতে এই উৎসটি ‘মীলাদুন্নবী কেন বিদ‘আত’ নামে ব্যবহৃত হবে।
[৫]. ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ (কায়রো : দারুর রাইয়ান লিত তুরাছ, ১ম প্রকাশ : ১৪০৮ হি./১৯৮৮ খ্রি.), ১ম খণ্ড, পৃ. ২৪২।
[৬]. ইবনু হিশাম, আস-সীরাতুন নাবাবিয়্যাহ (বৈরূত : দারুল মা‘আরেফা, তাবি), ১ম খণ্ড, পৃ. ১৫৮।
[৭]. ছফিউর রহমান মুবারকপুরী, আর-রাহীকুল মাখতূম (রিয়ায : দারুস সালাম, ১৪১৪ হি./১৯৯৪ খ্রি,), পৃ. ৫৪; ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, মীলাদ প্রসঙ্গ (রাজশাহী : হাদীছ ফাউণ্ডেশন বাংলাদেশ, ৫ম সংস্করণ, ২০০০), পৃ. ৭; মীলাদুন্নবী কেন বিদ‘আত, পৃ. ২০।
[৮]. মীলাদুন্নবী কেন বিদ‘আত, পৃ. ২০।
[৯]. আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাব মতে, ৮ হতে ১২ই রবীউল আউয়ালের মধ্যে ৯ তারিখ ব্যতীত সোমবার ছিল না। অতএব রাসূল (ছা.)-এর সঠিক জন্ম দিবস ৯ই রবীউল আউয়াল সোমবার, ১২ই রবীউল আউয়াল বৃহস্পতিবার নয়। দ্র. মীলাদ প্রসঙ্গ, পৃ. ৭; মোস্তফা চরিত, পৃ. ২২৫।
[১০]. মীলাদ প্রসঙ্গ, পৃ. ৭।
[১১]. মীলাদ প্রসঙ্গ, পৃ. ৫; ইসলামিক ফাউণ্ডেশন পত্রিকা, পৃ. ১৮-১৯; মুহাম্মাদ বিন জামীল যাইনু, অনুবাদ : ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মাদ মুজীবুর রহমান, মুক্তিপ্রাপ্ত দলের পথ নির্দেশিকা (ঢাকা : রিভাইভ্যাল অব ইসলামিক হেরিটেজ সোসাইটি কুয়েত, বাংলাদেশ অফিস, অক্টোবর ২০০৩ খ্রি.), পৃ. ৭৮।
[১২]. মীলাদ প্রসঙ্গ, পৃ. ৬।
[১৩]. মীলাদুন্নবী কেন বিদ‘আত, পৃ. ১৭; মীলাদ প্রসঙ্গ, পৃ. ৬; ইসলামিক ফাউণ্ডেশন পত্রিকা, ৪২ বর্ষ, ৪র্থ সংখ্যা, এপ্রিল-জুন ২০০৩ ইং, পৃ. ১০।
[১৪]. ছহীহ বুখারী, হা/২৬৯৭; মিশকাত, হা/১৪০।
[১৫]. ছহীহ বুখারী, হা/২০; ছহীহ মুসলিম, হা/১৭১৮।
[১৬]. তিরমিযী, হা/২৭৫৪; মিশকাত, হা/৪৬৯৮।
[১৭]. তিরমিযী, হা/২৭৫৫; আবূ দাঊদ, হা/৫২২৯; মিশকাত, হা/৪৬৯৯, সনদ ছহীহ।
[১৮]. তদেব।
[১৯]. মীলাদুন্নবী কেন বিদ‘আত, পৃ. ১৬; মীলাদ প্রসঙ্গ, পৃ. ৯।
[২০]. মীলাদুন্নবী কেন বিদ‘আত, পৃ. ১৬।
[২১]. আবূ দাঊদ, হা/৪০৩১; মিশকাত, হা/৪৩৪৭, সনদ হাসান।
[২২]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৪৪৫; মিশকাত, হা/৪৮৯৭ ।
[২৩]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৪৬১; মিশকাত, হা/১৯৮।
[২৪]. মুসলিম, মুক্বাদ্দামাহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৬; মিশকাত, হা/১৯৯।
[২৫]. মুক্তিপ্রাপ্ত দলের পথ নির্দেশিকা, পৃ. ৭৮।
[২৬]. আল-আরফুশ শাযী ও আল-জামে তিরমিযী, পৃ. ২৩২, গৃহীত : মীলাদুন্নবী কেন বিদ‘আত, পৃ. ২৫।
[২৭]. মীলাদুন্নবী কেন বিদ‘আত, পৃ. ২৫।
[২৮]. ইসলামিক ফাউণ্ডেশন পত্রিকা, এপ্রিল-জুন ২০০৩, পৃ. ১১।
[২৯]. মাদখুল ফাআওয়ায়ে মাত্তারিয়া, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৭৯, গৃহীত : মীলাদুন্নবী কেন বিদ‘আত, পৃ. ২৫-২৬।
[৩০]. তদেব।
[৩১]. প্রাগুক্ত, পৃ. ২৬।
[৩২]. মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম, সুন্নাত ও বিদ‘আত (ঢাকা : খায়রুন প্রকাশনী, ৮ম প্রকাশ, নভেম্বর ১৯৯৮ খ্রি.), পৃ. ২২৬।
[৩৩]. ফাতাওয়ায়ে রাশেদীয়া, পৃ. ৪১৫, গৃহীত : সুন্নাত ও বিদ‘আত, পৃ. ২২৯।
[৩৪]. মীলাদুন্নবী কেন বিদ‘আত, পৃ. ২৭।
[৩৫]. তদেব।
[৩৬]. ছহীহ মুসলিম, হা/৮৬৭; মিশকাত, হা/১৪১ ও ১৬৫।
[৩৭]. নাসাঈ, হা/১৫৭৮, সনদ ছহীহ।
প্রসঙ্গসমূহ »:
শিরক, বিদ‘আত ও কুসংস্কার