মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ১১:১৫ অপরাহ্ন

কুরবানীর মাসায়েল

-ইবাদুল্লাহ বিন আব্বাস*




ভূমিকা

কুরবানী আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি প্রকৃষ্ট মাধ্যম। এতে ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এর সুন্নাত আদায়ের সাথে সাথে প্রিয় রাসূল মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাতও পালন করা হয়। কেননা তিনি নিজে কুরবানী করেছেন এবং তাঁর উম্মতের জন্য অনুসরণীয় আদর্শ হিসাবে অবশিষ্ট রেখে গেছেন। ফলে ক্বিয়ামত পর্যন্ত কুরবানীর বিধান বলবৎ থাকবে ইনশাআল্লাহ। এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য অত্যধিক। তাই এর হুকুম-আহকাম সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান থাকা প্রত্যেক মুসলিমের একান্ত দায়িত্ব। কিন্তু জ্ঞানের স্বল্পতা, গোঁড়ামি, বাপ-দাদার অজুহাত ও মাযহাবী চেতনার কারণে এ সম্পর্কে মুসলিমদের মধ্যে যথেষ্ট ভুল ধারণা রয়েছে।

মাসআলা-১ : কুরবানী করা ওয়াজিব, না-কি সুন্নাত?

বিবরণ : অনেকে মনে করেন যে, কুরবানীর বিধান পবিত্র কুরআনের সূরা মায়েদার ২৭ নং  আয়াত ও সূরা ছাফ্ফাতের ১০৮ নং আয়াত দ্বারা সাব্যস্ত হওয়ায় এটা পালন করা ফরয। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর নির্দেশে মদীনায় হিজরত করার পরে কিছু দিনের মধ্যে কুরবানী করার আদেশ প্রাপ্ত হন। এ হুকুম আসার পর তিনি দশ বছর বেঁচে ছিলেন এবং প্রত্যেক বছরেই তিনি কুরবানী করেন। যেমনটি আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দশ বছর মদীনায় অবস্থান করেন এবং কুরবানী করেন।[১] কোন ছহীহ হাদীছ দ্বারা কুরবানী ওয়াজিব প্রমাণিত না হলেও রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সর্বদা কৃত আমল দ্বারা কেউ কেউ মনে করেন তা ওয়াজিব। যেমন- ‘আল-হিদায়া’ গ্রন্থকার ইমাম আবু হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ)-এর উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, প্রত্যেক স্বাধীন, ধনী ও ঘরে অবস্থানকারী মুসলিমের উপর কুরবানী ওয়াজিব।[২]

পর্যালোচনা

ইসলামী শরী‘আতের কোন বিধান মানব মস্তিষ্কপ্রসূত বাণী, অভিমত, যুক্তি অথবা কোন যঈফ-জাল হাদীছ দ্বারা সাব্যস্ত হয় না। যে হাদীছের ভিত্তিতে কুরবানীকে ওয়াজিব দাবী করা হয় সেটা বিশুদ্ধ নয়। কেননা আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, كُتِبَ عَلَيَّ النَّحْرُ وَلَمْ يُكْتَبْ عَلَيْكُمْ ‘আমার উপর কুরবানীকে ফরয করা হয়েছে, কিন্তু তোমাদের উপর ফরয করা হয়নি’।[৩] হাদীছটি যঈফ।[৪] এছাড়া মদীনায় রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দশ বছর কুরবানী করেছেন মর্মে হাদীছটিও যঈফ।[৫]

ইমাম ইবনু হাযম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, কুরবানী ওয়াজিব নয়। এটি কোন ছাহাবী থেকে ছহীহ সনদে বর্ণিত হয়নি।[৬] ইমাম তিরমিযী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আহলে ইলম বা কুরআন-হাদীছের জ্ঞানীদের আমল ছিল এই যে, কুরবানী ওয়াজিব নয় বরং নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাতের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত।[৭] ইমাম মালিক (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, الأضحية سنة وليست بواجبة ‘কুরবানী করা সুন্নাত, ওয়াজিব নয়’।[৮] ইমাম শাফেঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, الضَّحَايَا سُنَّةٌ لَا أُحِبُّ تَرْكَهَا ‘কুরবানী সুন্নাত’, এই সুন্নাত ত্যাগ করা আমি পসন্দ করি না’।[৯] হানাফী মাযহারেব ইমাম আবু ইউসুফ, মালিকী মাযহাবের ইমাম আশহাব এবং অধিকাংশ আলিমের মতে, তা সুন্নাতে মুওয়াক্কাদা।[১০]

ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম (৬৯১-৭৫১ হি) বলেন, إنه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لم يكن يَدَعُ الأُضحية ‘নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনো কুরবানী করা থেকে নিবৃত্ত হননি’।[১১] উক্ত বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, কুরবানী করা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত, ফরয বা ওয়াজিব নয়।

এছাড়া কুরবানী করা যে ওয়াজিব নয়, তা জানানোর জন্য আবুবকর ছিদ্দীক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ও ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) নিয়মিত কুরবানী করতেন না, মাঝে মাঝে পরিত্যাগ করতেন।[১২] আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা), আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা), বেলাল (রাযিয়াল্লাহু আনহু), আবু মাসঊদ আনছারী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) প্রমুখ বড় বড় ছাহাবী থেকেও অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।[১৩] তবে কুরবানী একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। কারণ সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ কুরবানী না করে, তাহলে শরী‘আতের দৃষ্টিতে তার জন্য কঠোর হুমকি রয়েছে। আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি কুরবানী করল না, সে যেন আমাদের (মুসলিমদের) ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়।[১৪]

মাসআলা-২ : সফর অবস্থায় কুরবানী করা প্রসঙ্গ।

বিবরণ : মুসাফির সফরে থাকাকালীন কুরবানী দেয়ার মত অর্থ থাকলে সে কুরবানীর সুন্নাত পালনের চেষ্টা করবে।

পর্যালোচনা

মাযহাব চতুষ্টয়ের মধ্যে কেবল হানাফী ফিক্বহের ফাৎওয়া হল- মুসাফিরের উপর কুরবানী নেই এবং যার উপর যাকাত ফরয নয়, তার উপরে কুরবানীও নেই। প্রমাণ স্বরূপ ‘আল-হিদায়াহ’ গ্রন্থে হাদীছ পেশ করা হয়েছে যে, আবুবকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ও ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) মুসাফির অবস্থায় কুরবানী করেননি। আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত আছে যে, ফক্বীর ও মুসাফিরের উপর কুরবানী নেই।[১৫]

ইমাম নাযীর হুসাইন দেহলভী (মৃত ১৯০২ খ্রি.) বলেন, কুরবানী দেয়া ব্যক্তিকে যাকাত দেয়া ব্যক্তির সাথে, মুক্বীম হওয়ার এবং মুসাফির না হওয়ার শর্তের ব্যাপারে হাদীছে কোন দলীল পাওয়া যায় না। বরং মুসাফিরের কুরবানী করার ব্যাপারে হাদীছে ফিক্বহের বিপরীতে দলীল পাওয়া যায়। যেমন ইমাম বুখারী (১৯৪-২৫৬ হি.) মুসাফিরের কুরবানী করার ব্যাপারে একটি অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন এবং ঐ অনুচ্ছেদের অধীনে একটি হাদীছও উল্লেখ করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা সফরে কুরবানী করেছিলেন।[১৬]

ইমাম ইবনু হাযম (মৃ. ৪৫৬ হি.) বলেন, কুরবানীর ব্যাপারে মুক্বীম ও মুসাফিরের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। তাই রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীছের বিপরীতে যদি কেউ আমল করে, তা কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ কুরবানী করা সুন্নাত, আর এ সুন্নাত থেকে বিরত থাকা বৈধ হবে নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বিরত থাকার হাদীছ না পাওয়া যাবে।[১৭]

সফরে কুরবানীকে হালকা করণার্থে একটি গরুতে সাতজনে কুরবানী করা যায়। জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,

نَحَرْنَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْحُدَيْبِيَةِ الْبَدَنَةَ عَنْ سَبْعَةٍ وَّالْبَقَرَةَ عَنْ سَبْعَةٍ.

‘আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে হুদায়বিয়ার সন্ধির সফরে ছিলাম। (এমতাবস্থায় কুরবানীর ঈদ উপস্থিত হলে একটি গরুতে সাতজন ও একটি উটে সাতজন শরীক হয়ে কুরবানী করি’।[১৮] উক্ত হাদীছে প্রমাণিত হয় যে, সফরে থাকাবস্থাতেও রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাথীগণ সাতজন শরীক হয়ে কুরবানী করেছেন, কিন্তু তা বর্জন করেননি।

মাসআলা-৩ : মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী করা প্রসঙ্গ।

বিবরণ : মৃত পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের পক্ষ থেকে তার ওয়ারিশগণ কুরবানী করতে পারবে কি?

পর্যালোচনা

মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী করার কোন ছহীহ হাদীছ নেই। তবে আবূ দাঊদে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ।[১৯] হাদীছটি হল- হানাশ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

رَأَيْتُ عَلِيًّا يُضَحِّى بِكَبْشَيْنِ فَقُلْتُ مَا هَذَا فَقَالَ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْصَانِىْ أَنْ أُضَحِّىَ عَنْهُ فَأَنَا أُضَحِّى عَنْهُ.

‘আমি আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে দু’টি দুম্বা কুরবানী করতে দেখে জিজ্ঞেস করলাম, এটা কী ব্যাপার? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার পক্ষ থেকে আমাকে কুরবানী করার অছিয়ত করে গেছেন, তাই আমি তাঁর পক্ষ থেকে ঐ কুরবানী করছি’।[২০]  উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় আল্লামা আব্দুর রহমান মুবারকপুরী (মৃ. ১৩৫৩ হি.) বলেন,

لَمْ أَجِدْ فِي التَّضْحِيَةِ عَنِ الْمَيِّتِ مُنْفَرِدًا حَدِيْثًا مَرْفُوْعًا صَحِيْحًا وَأَمَّا حَدِيْثُ عَلِيٍّ الْمَذْكُوْرُ فِيْ هَذَا الْبَابِ فَضَعِيْفٌ. فَإِذَا ضَحَّى الرَّجُلُ عَنِ الْمَيِّتِ مُنْفَرِدًا فَالِاحْتِيَاطُ أَنْ يَّتَصَدَّقَ بِهَا كُلِّهَا وَاللهُ تَعَالَى أَعْلَمُ.

‘মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী দেয়ার ব্যাপারে আমি কোন ছহীহ মারফু‘ হাদীছ পাইনি। উল্লেখিত আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ। তবে কোন ব্যক্তি যদি মৃত ব্যক্তির নামে কুরবানী প্রদান করে, তাহলে উক্ত পশুর সমস্ত গোশত সম্পূর্ণটাই ছাদাক্বাহ করে দিতে হবে। এ বিষয়ে আল্লাহই সর্বাধিক জ্ঞাত’।[২১] তিনি আরো বলেন, أُحِبُّ أَنْ يَّتَصَدَّقَ عَنْهُ وَلَا يُضَحِّيَ ‘আমি মৃত ব্যক্তির জন্য ছাদাক্বাহ করা পসন্দ করি, কুরবানী করা নয়’।[২২]

মাসআলা-৪ : কুরবানীর চাঁদ উদিত হওয়ার পরে চুল, নখ ইত্যাদি কর্তন করা প্রসঙ্গ।

বিবরণ : বর্তমানে অনেক ব্যক্তিকে দেখা যায় যে, যিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখার পরেও তারা নখ, চুল, গোঁফ ইত্যাদি কেটে থাকে। পাশাপাশি কুরবানী করতে অক্ষম ব্যক্তিগণ যদি কুরবানীর নিয়তে চুল, নখ ইত্যাদি কর্তন করা থেকে বিরত থাকে এবং ঈদুল আযহার ছালাতের পরে এসে কর্তন করে, তাহলে সে পূর্ণাঙ্গ কুরবানীর নেকী পেয়ে যাবে। বিষয়টির ব্যাপারে শরী‘আতের সিদ্ধান্ত কী?

পর্যালোচনা

যিলহজ্জের চাঁদ উঠার পর থেকে কুরবানী দাতা ও তার পরিবারের সদস্যগণ চুল, নখ ইত্যাদি কাটতে পারবেন না। উম্মে সালামাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

إِذَا دَخَلَ الْعَشْرُ وَأَرَادَ بَعْضُكُمْ أَنْ يُّضَحِّيَ فَلَا يَمَسَّ مِنْ شَعْرِهِ وَبَشَرِهِ شَيْئًا. وَفِيْ رِوَايَةٍ فَلَا يَأْخُذَنَّ شَعْرًا وَلَا يَقْلِمَنَّ ظُفْرًا. وَفِيْ رِوَايَةٍ مَّنْ رَأَى هِلَالَ ذِي الْحِجَّةِ وَأَرَادَ أَنْ يُّضَحِّيَ فَلَا يَأْخُذْ مِنْ شَعْرِهِ وَلَا مِنْ أَظْفَارِهِ.

‘যখন যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ তারিখ শুরু হয়, আর তোমাদের মধ্যে কেউ কুরবানী করার ইচ্ছা করে, তখন সে যেন নিজের চুল বা শরীরের কোন অংশ স্পর্শ না করে। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, সে যেন চুল না কাটে এবং নখ না কাটে। অন্যত্র রয়েছে, যে ব্যক্তি যিলহজ্জের নতুন চাঁদ দেখে এবং কুরবানী করার ইচ্ছা করে, সে যেন নিজের চুল না ছাঁটাই করে এবং নখসমূহ না কাটে’।[২৩]

নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী উম্মে সালামাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

مَنْ كَانَ لَهُ ذِبْحٌ يَذْبَحُهُ فَإِذَا أُهِلَّ هِلَالُ ذِى الْحِجَّةِ فَلَا يَأْخُذَنَّ مِنْ شَعْرِهِ وَلَا مِنْ أَظْفَارِهِ شَيْئًا حَتّٰى يُضَحِّىَ

‘যার কুরবানীর পশু রয়েছে, সে যেন যিলহজ্জ মাসের নতুন চাঁদ উঠার পর থেকে কুরবানী করার পূর্ব পর্যন্ত তাঁর চুল ও নখ না কাটে’।[২৪]

এছাড়া কুরবানী করতে অক্ষম ব্যক্তির ফযীলত বর্ণনায় একটি হাদীছ পেশ করা হয়ে থাকে। কিন্তু তা নিতান্তই যঈফ।[২৫] হাদীছটি নি¤œরূপ : আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

أُمِرْتُ بِيَوْمِ الْأَضْحَى عِيْدًا جَعَلَهُ اللهُ لِهَذِهِ الْأُمَّةِ قَالَ لَهُ رَجُلٌ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَرَأَيْتَ إِنْ لَمْ أَجِدْ إِلَّا مَنِيْحَةً أُنْثَى أَفَأُضَحِّي بِهَا؟ قَالَ لَا وَلَكِنْ خُذْ مِنْ شَعْرِكَ وَأَظْفَارِكَ وَتَقُصُّ مِنْ شَارِبِكَ وَتَحْلِقُ عَانَتَكَ فَذَلِكَ تَمَامُ أُضْحِيَّتِكَ عِنْدَ اللهِ.

‘আমি কুরবানীর দিনকে ঈদের দিন হিসাবে পালন করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি। আল্লাহ তা‘আলা এ দিনটিকে এ উম্মতের জন্য ঈদের দিন ধার্য করেছেন। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ্র রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! মাদী ‘মানীহা’ ব্যতীত যদি অন্য কোন পশু না পাই, তবে কী দ্বারা কুরবানী করব? উত্তরে তিনি বললেন, না, বরং তুমি কুরবানীর দিনে তোমার চুল ও নখ কাটবে, তোমার গোঁফ খাটো করবে এবং নাভীর নীচের কেশ মু-ন করবে। এটাই আল্লাহ তা‘আলার নিকট তোমার পূর্ণ কুরবানী’।[২৬] উক্ত হাদীছ আমলযোগ্য নয়।

মাসআলা-৬ : কুরবানীর প্রাণী ও তার প্রকৃতি প্রসঙ্গ।

পর্যালোচনা

সাধারণত তিন প্রকার প্রাণী দ্বারা কুরবানী বৈধ। যথা : (১) উট (২) গরু এবং (৩) ছাগল। তবে দুম্বা ও ভেড়া ছাগলের মধ্যে গণ্য। উক্ত প্রাণীর প্রত্যেকটির নর ও মাদি যেকোন ধরনের পশু কুরবানী করা বৈধ। এগুলোর বাইরে অন্য পশু দিয়ে কুরবানী করার প্রমাণ রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও ছাহাবায়ে কেরাম থেকে পাওয়া যায় না। তবে অনেক বিদ্বান মহিষকে গরুর অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয বলেছেন।[২৭]

মহান আল্লাহ বলেন, وَ مَنۡ یُّعَظِّمۡ شَعَآئِرَ  اللّٰہِ  ‘যে আল্লাহর নিদর্শনসমূহকে সম্মান করবে’-আয়াতের شَعَآئِرَ-এর ব্যাখ্যায় ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, استسمانها واستحسانها ‘মোটা তাজা ও পসন্দনীয় জন্তু’।[২৮] বিশিষ্ট ছাহাবী আবু সাঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করে বলেন,

كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اللهِ يُضَحِّى بِكَبْشٍ أَقْرَنَ فَحِيْلٍ يَنْظُرُ فِىْ سَوَادٍ وَيَأْكُلُ فِىْ سَوَادٍ وَيَمْشِىْ فِىْ سَوَادٍ.

‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন শিং বিশিষ্ট মোটাতাজা দুম্বা কুরবানী করেছেন, যার চোখ, মুখ, পা ও কপাল কালো বর্ণের ছিল’।[২৯] অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুসিন্নাহ তথা দুধ দাঁত পড়ে গেছে এমন পশু ব্যতীত কুরবানী করতে নিষেধ করেছেন।[৩০]

মাসআলা-৭ : একই পশুতে কুরবানী ও আক্বীক্বা প্রসঙ্গ।

বিবরণ : বর্তমানে কুরবানীর পশুর সাথে আক্বীক্বা করার প্রচলন দেখা যায়। প্রকৃতপক্ষে শরী‘আতে এর কোন অনুমতি আছে কি?

পর্যালোচনা

কুরবানীর সাথে আক্বীক্বা করার কোন দলীল নেই। তাই এটা জায়েয নয়। কেউ দিলে তা শরী‘আত সম্মত হবে না। আর আক্বীক্বা সাত দিনে করাই সুন্নাত।[৩১] পরবর্তীতে আক্বীক্বা করার ব্যাপারে কোন ছহীহ দলীল পাওয়া যায় না। অনুরূপভাবে কুরবানী ও আক্বীক্বা দু’টি পৃথক ইবাদত। কুরবানীর পশুতে আক্বীক্বার নিয়ত করা শরী‘আত সম্মত নয়। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বা ছাহাবায়ে কেরামের যুগে এ ধরনের আমলের অস্তিত্ব ছিল না।[৩২]

মাসআলা-৮ : মহিলাদের কুরবানীর পশু যবেহ করা প্রসঙ্গ।

বিবরণ : কোন পশু যবেহ কিংবা কুরবানীর সময় এলে সমাজে একটি কথা শুনা যায়  যে, মহিলারা কোন পশু যবেহ কিংবা কুরবানী করতে পারে না। এটা শুধু পুরুষের কাজ। আসলে বিষয়টির সত্যতা কতটুকু?

পর্যালোচনা

কুরবানীর পশু যবেহ করার জন্য নারী-পুরুষের মাঝে কোন পার্থক্য বা শর্তারোপ করা হয়নি। যবেহ করা কাজটি সাহসের ব্যাপার। কোন নারী যদি কুরবানীর পশু যবেহ করার সাহস রাখে, তাহল সে করতে পারবে। ইমাম বুখারী (১৯৪-২৫৬ হি.) ইবনু রাফি‘ থেকে বর্ণনা করেছেন যে, ছাহাবী আবু মূসা আল-আশ‘আরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাঁর মেয়েদেরকে নিজ হাতে তাদের কুরবানীর পশু যবেহ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।[৩৩] উক্ত হাদীছ প্রমাণ করে মেয়েরাও নিজ হাতে কুরবানী করতে পারে।

মাসআলা-৯ : ঈদুল আযহা তথা কুরবানীর দিনে খানা খাওয়ার সময় প্রসঙ্গ।

বিবরণ : বর্তমানে অনেকে ঈদুল আযহার ছালাতের পূর্বে পানাহার না করাকে ছিয়াম মনে করেন। এটা কতটুকু শরী‘আত সম্মত?

পর্যালোচনা

রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈদুল ফিতরের দিন কয়েকটি বিজোড় খেজুর খেয়ে ঈদগাহে বের হতেন এবং ঈদুল আযহার দিনে ছালাত আদায় না করা পর্যন্ত কিছুই খেতেন না।[৩৪] তিনি কুরবানীর পশুর কলিজা দিয়ে খানা খেতেন।[৩৫] আর কুরবানীর পশুর কলিজা দিয়ে খাবার শুরু করাই হল রাসূহুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাত। ছাহাবীগণও এই আদর্শের অনুসরণ ও অনুকরণ করেছেন। এটা ছিয়াম নয়।

উপসংহার

আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে কুরবানীর সকল মাসআলা-মাসায়েল বিশুদ্ধভাবে জানা ও সে অনুযায়ী পালন করার তাওফীক্ব দান করুন-আমীন!!



* খতীব, বকচর টাউন আহলেহাদীছ জামে মসজিদ, যশোর।

তথ্যসূত্র :
[১]. তিরমিযী, হা/১৫০৭, ১ম খ-, পৃ. ১৮২; মিশকাত, হা/১৪৭৫, পৃ. ১২৯।
[২]. আবুল হাসান আলী ইবনু আবুবকর আল-মারগিনানী, আল-হিদায়াহ (দিল্লী ছাপা, তাবি), ৪র্থ খ-, পৃ. ৪৪৩।
[৩]. মুসনাদে আহমাদ, হা/২৯২০; দারাকুৎনী, হা/৪৮১৩; ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর, হা/১১৮০২; বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা, হা/১৯০৩১; মিশকাত, হা/৫৭৭৫।
[৪]. সিলসিলাতুল আহাদীছিয যঈফাহ ওয়াল মাওযূ‘আহ, ৬ষ্ঠ খ-, পৃ. ৪৯৩, হা/২৯৩৭-এর আলোচনা দ্র.; বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : ফাৎহুল বারী শারহু ছহীহিল বুখারী, ১০ম খ-, পৃ. ৩-৪।
[৫]. যঈফ তিরমিযী, হা/১৫০৭।
[৬]. لَا يَصِحُّ عَنْ أَحَدٍ مِنَ الصَّحَابَةِ أَنَّهَا وَاجِبَةٌ-ফাৎহুল বারী শারহু ছহীহিল বুখারী, ১০ম খ-, পৃ. ৩।
[৭]. তিরমিযী, ১ম খ-, পৃ. ১৮২; ফাৎহুল বারী শারহু ছহীহিল বুখারী, ১০ম খ-, পৃ. ৩।
[৮]. তিরমিযী (ইফাবা অনুবাদ), পৃ. ৮০, ১৩নং রেওয়াত দ্র.; মুওয়াত্বা ইমাম মালিক, পৃ. ১৮৯।
[৯]. আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু ইদরীস আশ-শাফেঈ, আল-উম্ম (বৈরূত : দারুল মা‘আরিফাহ, ১৪১০ হি./১৯৯০ খ্রি.), ২য় খ-, পৃ. ২৪৩।
[১০]. ফাৎহুল বারী শারহু ছহীহিল বুখারী, ১০ম খ-, পৃ. ৩।
[১১]. মুহাম্মাদ ইবনু আবুবকর শামসুদ্দীন ইবনে ক্বাইয়িম আল-জাওযিয়াহ, যাদুল মা‘আদ ফী হাদই খায়রিল ইবাদ (বৈরূত : মুওয়াস্সাসাতুর রিসালাহ, ২৭ তম সংস্করণ ১৪১৫ হি./১৯৯৪ খ্রি.), ২য় খ-, পৃ. ৩১৭।
[১২]. ইরওয়াউল গালীল, হা/১১৩৯, ৪র্থ খ-, পৃ. ৩৫৪।
[১৩]. মির‘আতুল মাফাতীহ শারহু মিশকাতিল মাফাতীহ, ৫ম খ-, পৃ. ৭২-৭৩; তাফসীর ইবনু কাছীর, ৩য় খ-, পৃ. ২৩৪; তাফসীরে কুরতুবী, ১৫তম খ-, পৃ. ১০৮-১০৯।
[১৪]. ইবনু মাজাহ, হা/২৫৩২; মির‘আতুল মাফাতীহ শারহু মিশকাতিল মাছাবীহ (প্রকাশনা- বেনারস), ৫ম খ-, পৃ. ৭২; শাওকানী, নায়লুল আওত্বার, ৬ষ্ঠ খ-, পৃ. ২২৭।
[১৫]. আল-হিদায়াহ, ৪র্থ খ-, পৃ. ৩৪৫।
[১৬]. ইমাম সৈয়দ নাযীর হুসাইন দেহলভী, ফাতাওয়া নাবীবিয়্যাহ (দিল্লী ছাপা, তাবি), ২য় খ-, পৃ. ৪৫৩।
[১৭]. ইমাম আলী ইবনে আহমাদ ইবনে হাযম, আল-মুহাল্লা মুনীরিয়্যাহ (মিসরী ছাপা, ১৩৪৯ হি.), ৭ম খ-, পৃ. ৩৭৫।
[১৮]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৩১৮; মিশকাত, হা/২৬৩৬।
[১৯]. যঈফ আবু দাঊদ, হা/২৭৯০; মিশকাত, হা/১৬৪২।
[২০]. আবু দাঊদ, হা/২৭৯০; মিশকাত, হা/১৬৪২, পৃ. ১২৮; বায়হাক্বী, ৯ম খ-, পৃ. ২৮৮।
[২১]. আল্লামা আব্দুর রহমান মুবারকপুরী, তুহফাতুল আহওয়াযী শারহ জামেঊত তিরমিযী (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ইলমিয়াহ, তাবি), ৫ম খ-, পৃ. ৬৬; শায়খ ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী, মির‘আতুল মাফাতীহ শারহ মিশকাতুল মাছাবীহ (বানারাস, হিন্দ : আল-জামে‘আহ আস-সালাফিয়াহ, ৩য় সংস্করণ ১৪০৪ হি./১৯৮৪ খ্রি.), ৫ম খ-, পৃ. ৯৫।
[২২]. মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী, মিরক্বাতুল মাফাতীহ শারহ মিশকাতুল মাছাবীহ (বৈরূত : দারুল ফিকর, ১৪২২ হি./২০০২ খ্রি.), ৩য় খ-, পৃ. ১০৮৪।
[২৩]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৯৭৭; তিরমিযী, হা/১৫২৩, সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/১৪৫৯।
[২৪]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৯৭৭; আবু দাঊদ, হা/২৭৯১; ইবনু হিব্বান, হা/৫৯১৭।
[২৫]. যঈফ আবু দাঊদ, হা/২৭৮৯; যঈফ নাসাঈ, হা/৪৩৬৫।
[২৬]. আবুদাঊদ, হা/২৭৮৯; নাসঈ, হা/৪৩৬৫; মিশকাত, হা/১৪৭৯; যঈফ আবু দাঊদ, হা/২৭৮৯; যঈফ নাসাঈ, হা/৪৩৬৫।
[২৭]. সূরা আন‘আম ১৪৪-৪৫; মির‘আতুল মাফাতীহ শারহু মিশকাতিল মাছাবীহ, ৫ম খ-, পৃঃ ৮১।
[২৮]. তাফসীর ইবনু কাছীর, ৫ম খ-, পৃঃ ৪২১; তাফসীরে সা‘আদী, পৃঃ ৫৩৮; তাফসীরে ত্বাবারী, ১৮ম খ-, পৃঃ ৬২১।
[২৯]. আবু দাঊদ, হা/২৭৯৬; মিশকাত, হা/১৪৬৬, সনদ ছহীহ।
[৩০]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৯৬৩।
[৩১]. তিরমিযী, হা/১৫২২; মিশকাত, হা/৪১৫৩, সনদ ছহীহ।
[৩২]. ইমাম শাওকানী, নায়লুল আওত্বার, ৬ষ্ঠ খ-, পৃ. ২৬৮, ‘আক্বীক্বা’ অধ্যায়; মির‘আতুল মাফাতীহ শারহু মিশকাতিল মাছাবীহ, ২য় খন্ড, পৃ. ৩৫১ও ৫ম খ-, পৃ. ৭৫।
[৩৩]. বুখারী, পৃ. ৮৩৩; ফাৎহুল বারী শারহু ছহীহিল বুখারী, ১ম খ-, পৃ. ১৯।
[৩৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৯৫৩; মিশকাত, হা/১৪৩৩; তিরমিযী, হা/৫৪২; মিশকাত, হা/১৪৪০, সনদ ছহীহ।
[৩৫]. মির‘আতুল মাফাতীহ শারহু মিশকাতিল মাছাবীহ, ৫ম খ-, পৃ. ৪৫।




প্রসঙ্গসমূহ »: বিধি-বিধান কুরবানী
ইসলামী শিষ্টাচার - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী
ইমাম মাহদী, দাজ্জাল ও ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আগমন সংশয় নিরসন (১০ম কিস্তি) - হাসিবুর রহমান বুখারী
ইসলামী শিষ্টাচার (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী
পরবর্তীদের তুলনায় সালাফদের ইলমী শ্রেষ্ঠত্ব (৫ম কিস্তি) - অনুবাদ : আযহার বিন আব্দুল মান্নান
ইসলামে পর্দার বিধান (২য় কিস্তি) - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
ইসলামের দৃষ্টিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা (৪র্থ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আযীযুর রহমান
ছালাতে একাগ্রতা অর্জনের ৩৩ উপায় - আব্দুল হাকীম বিন আব্দুল হাফীজ
তাওহীদ প্রতিষ্ঠার উপায় (শেষ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
বাউল মতবাদ - গোলাম রহমান
শরী‘আত অনুসরণের মূলনীতি - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
বিদ‘আত পরিচিতি (২০তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ক্যারিয়ার : শিক্ষক নিবন্ধনের প্রস্তুতির ধরন ও বিষয়াবলী - ড. মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ

ফেসবুক পেজ