বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৩ অপরাহ্ন
 অমিয় বাণী
-হাফেয আবূ তাহের বিন মজিবুর রহমান*


١. عَنْ قَيْسٍ قَالَ كَانَ عَمْرُو بْنُ الْعَاصِ يَسِيْرُ مَعَ نَفَرٍ مِنْ أَصْحَابِهِ فَمَرَّ عَلَى بَغْلٍ مَيِّتٍ قَدِ انْتَفَخَ فَقَالَ وَاللهِ لَأَنْ يَأْكُلَ أَحَدُكُمْ هَذَا حَتَّى يَمْلَأَ بَطْنَهُ خَيْرٌ مِنْ أَنْ يَأْكُلَ لَحْمَ مُسْلِمٍ.

১. ক্বায়েস (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত, আমর ইবনুল ‘আছ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তার কতক সঙ্গীসহ সফর করছিলেন। তিনি একটি মৃত খচ্চরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন, যা ফুলে উঠেছিল। তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ! তোমাদের কেউ যদি তা পেট পুরে আহারও করে তবুও সেটা তার কোন মুসলিমের গোশত খাওয়ার চেয়ে উত্তম (অর্থাৎ মৃত খচ্চরের গোশত খাওয়া গীবত করার চেয়ে উত্তম)।[১]

২. قال علي بن الحسين য "إياكم والغيبة فإنها إدام كلاب الناس.

২. আলী ইবনু হুসাইন (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, তুমি গীবত থেকে বেঁচে থাক। কারণ তা মানবরূপী কুকুরদের তরকারী।[২]

৩. قالَ عُمَرُ بْنُ الخَطّابِ য عَلَيْكُمْ بِذِكْرِ اللهِ فَإنَّهُ شِفَاءٌ وإيّاكُمْ وذِكْرَ النّاسِ فَإنَّهُ داءٌ.

৩. উমার ইবনু খাত্তাব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, তোমরা আল্লাহ‌র যিকির করো কারণ তা শিফা (আরোগ্য) স্বরূপ এবং তোমরা গীবত করা থেকে বেঁচে থাক। কেননা তা ব্যাধি স্বরূপ।[৩]

৪. كان وهيب بن الورد رحمه الله تعالى يقول والله لترك الغيبة عندي أحب إليَّ من التصدق بجبل من ذهب.

৪. ওয়াহীব ইবনু ওয়ারদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলতেন, আল্লাহ‌র কসম! গীবত পরিত্যাগ করা আমার নিকটে অধিক প্রিয় স্বর্ণের পাহাড় ছাদাক্বাহ করার চেয়ে।[৪]

৫. عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ‏‏ إِذَا أَرَدْتَ أَنْ تَذْكُرَ عُيُوبَ صَاحِبِكَ فَاذْكُرْ عُيُوبَ نَفْسِكَ‏.

৫. ইবন আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, তুমি যখন তোমার সঙ্গীর দোষচর্চা করতে ইচ্ছা করবে তখন তোমার নিজের দোষ-ত্রুটি স্মরণ কর।[৫]

৬. قال ابن المبارك رحمه الله لو كنت مغتابًا أحدًا لاغتبت والديَّ لأنَّهما أحق بحسناتي.

৬. ইবনুল মুবারক (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, যদি আমি কারো গীবত করতাম তাহলে অবশ্যই আমি আমার পিতা-মাতার গীবত করতাম কারণ তারাই আমার নেকি পাওয়ার বেশি হক্বদার।[৬]

٧. محمد بن إسماعيل رحمه الله قال سمعت أبا عاصم يقول ما اغتبت أحدا منذ علمت أن الغيبة تضر بأهلها. 

৭. মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাইল (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি আবূ আছিম (রাহিমাহুল্লাহ)-কে বলতে শুনেছি তিনি বলেন, যেদিন থেকে আমি জেনেছি গীবত করলে তার পরিবারের ক্ষতি হয় সেদিন থেকে আমি কারো গীবত করিনি।[৭]

৮. قالَ البُخارِيُّ  سَمِعْتُ أبا عاصِمٍ يَقُولُ مَنذُ عَقَلْتُ أنَّ الغِيبَةَ حَرامٌ ما اغْتَبْتُ أحَدًا قَطْ.

৮. ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি আবূ আছিম (রাহিমাহুল্লাহ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, যেদিন থেকে আমি জেনেছি গীবত করা হারাম সেদিন থেকে আমি কারো গীবত করিনি।[৮]

৯. عن الضحاك بن مخلد الشيباني قال: ما اغتبت أحدا منذ علمت أن الغيبة كبيرة.

৯. যাহ্হাক আশ-শায়বানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি যেদিন থেকে জেনেছি গীবত করা কাবীরা গুনাহ সেদিন থেকে আর কারো গীবত করিনি।[৯]

১০. عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ يُبْصِرُ أَحْدُكُمُ الْقَذَاةَ فِيْ عَيْنِ أَخِيْهِ وَيَنْسَى الْجِذْعَ فِيْ عَيْنِهِ.

১০. আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, তোমাদের কোন ব্যক্তি অন্যের চোখে ক্ষুদ্র-কুটা দেখতে পায়, কিন্তু নিজের চোখে গাছের শিকড়, বড় কাঠ খ- দেখতে পায় না। অর্থাৎ অন্যের দোষ-ত্রুটি দেখতে পাই ও গীবত করে বেড়ায়, অথচ নিজের হাজার দোষ-ত্রুটি চোখে পড়ে না।[১০]



* দাওরায়ে হাদীছ, মাদরাসা মুহাম্মাদীয়া আরাবিয়্যাহ, উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা; শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আল-ইসলামিয়্যাহ, খড়খড়ি, রাজশাহী।

[১]. আল-আদাবুল মুফরাদ, হা/৭৪১; ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৮৩৮।

[২]. তাফসীরে কুরতুবী, ১৬তম খ-, পৃ. ৩৩৬; ইহইয়াউ ঊলূমিদ দ্বীন, ৩য় খ-, পৃ. ১৪৩।

[৩]. যাম্মুল গীবাতি ওয়ান নামীমাহ, পৃ. ৬৬।

[৪]. আল-‘ইলামু বিহুরমাতি আহলিল ‘ইলম ওয়াল ইসলাম, ১ম খ-, পৃ. ৭০।

[৫]. আল-গীবাহ আন-নামীমাহ, পৃ. ৫২।

[৬]. আল-গীবাহ, পৃ. ২৪।

[৭]. আত-তারীখুল কাবীর, হা/৩০৩৮।

[৮]. কিতাবু মিন আখবারিস সালাফিছ ছালিহ, পৃ. ৩৯৩; সিয়ারু ‘আলামিন নুবালা, ৯ম খ-, পৃ. ৪৮২।

[৯]. আবুশ শায়খ, আত-তাওবীখ, পৃ. ৮৩।

[১০]. আল-গীবাহ ওয়ান নামীমাহ, পৃ. ৫৭; ছহীহ আত-তারগীব, হা/৩৩৩৬।




প্রসঙ্গসমূহ »: অমিয় বাণী

ফেসবুক পেজ