অমিয় বাণী
-ইউনুস বিন আহসান*
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يُوْسُفَ الْبَاقِلَّانِيُّ قَالَ سَمِعْتُ أَبِيْ يَقُوْلُ سَمِعْتُ رَجُلًا يَسْأَلُ أَبَا نَصْرٍ بِشْرَ بْنَ الْحَارِثِ أَنْ يُحَدِّثَهُ فَأَبَى عَلَيْهِ فَجَعَلَ يُرَغِّبُهُ وَيُكَلِّمُهُ وَهُوَ يَأْبَى عَلَيْهِ قَالَ فَلَمَّا أَيِسَ مِنْهُ قَالَ لَهُ يَا أَبَا نَصْرٍ مَا تَقُوْلُ لِلهِ غَدًا إِذَا لَقِيْتَهُ وَسَأَلَكَ لِمَ لَا تُحَدِّثُ؟ قَالَ فَقَالَ لَهُ بِشْرٌ أَقُوْلُ يَا رَبِّ كَانَتْ نَفْسِيْ تَشْتَهِيْ أَنْ تُحَدِّثَ فَامْتَنَعْتُ مِنْ أَنْ أُحَدِّثَ ولَمْ أُعْطِهَا شَهْوَتَهَا
(১) মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ আল-বাক্বিল্লানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি আমার বাবাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘আমি এক ব্যক্তিকে শুনলাম, সে আবূ নাছর বিশর বিন হারিছকে লক্ষ্য করে হাদীছ বর্ণনার আবেদন করছে। আর তিনি তাকে হাদীছ শুনাতে অস্বীকার করছেন। ফলে ঐ ব্যক্তি বার বার তার সাথে কথা বলছে এবং হাদীছ শুনতে চাচ্ছে, আর তিনি অস্বীকার করেই চলেছেন। যখন লোকটি আবূ নাছরের কাছ থেকে নিরাশ হয়ে গেল, তখন বলল, হে আবূ নাছর! ‘কাল (ক্বিয়ামতের দিন) আপনি যখন আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবেন, আর আল্লাহ আপনাকে জিজ্ঞেস করবেন যে, তুমি কেন হাদীছ বর্ণনা করনি? তখন আপনি কী জবাব দিবেন’? রাবী বলেন, তখন বিশর তাকে বললেন, ‘আমি বলব, হে আমার প্রতিপালক! আমার মন হাদীছ বর্ণনা করতে চাচ্ছিল; কিন্তু আমিই নিজেকে হাদীছ বর্ণনায় বাধা দিয়েছি। আমি আমার মনের চাহিদাকে প্রাধান্য দিইনি’।[১]
------
عَنْ مُطَرِّفِ بْنِ الشِّخِّيْرِ قَالَ مَنْ صَفَا عَمَلُهُ صَفَا لَهُ اللِّسَانُ الصَّالِحُ وَمَنْ خَلَطَ خُلِطَ لَهُ
(২) মুত্বাররিফ ইবনু শিখ্খীর (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, ‘যার আমল হবে নিষ্কলুষ, তার জন্য তার জিহ্বাও হবে কল্যাণকর। আর যার আমল হবে (ভালো-মন্দে) মিশ্রিত, তার জন্য (জিহ্বাতেও ভালো-মন্দের) মিশ্রণ ঘটিয়ে দেয়া হবে’।[২]
------
عَنْ بِشْرِ بْنِ الْحَارِثِ قَالَ سَمِعْتُ فُضَيْلَ بْنَ عِيَاضٍ يَقُوْلُ لَأَنْ آكُلَ الدُّنْيَا بِالطَّبْلِ وَالْمِزْمَارِ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ آكُلُهَا بِدِيْنِيْ
(৩) বিশর ইবনুল হারিছ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি ফুযায়ল ইবনু ঈয়ায (রাহিমাহুল্লাহ)-কে বলতে শুনেছি, আমার কাছে, দ্বীনের বিনিময়ে দুনিয়া ভক্ষণের চেয়ে গান-বাজনার দ্বারা তা ভক্ষণ অধিক শ্রেয়।[৩] অর্থাৎ গান-বাজনার মাধ্যমে টাকা উপার্জন যতটা খারাপ ধর্ম ব্যবসা তার চেয়ে অধিক খারাপ।
------
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِيْ عَائِشَةَ قَالَ لَا تَكُنْ ذَا وَجْهَيْنِ وَذَا لِسَانَيْنِ تُظْهِرُ لِلنَّاسِ أَنَّكَ تُحِبُّ اللهَ وَيَحْمَدُوْنَكَ وَقَلْبُكَ فَاجِرٌ
(৪) মুহাম্মাদ ইবনু আবূ আয়েশা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘তুমি দু’চেহারা ও দু’মুখো হয়ো না। তুমি মানুষের কাছে প্রকাশ কর যে, তুমি আল্লাহকে ভালোবাস। ফলে লোকেরা তোমার প্রশংসা করে, অথচ তোমার অন্তর পঙ্কিলতায় পূর্ণ’।[৪]
-----
عَنْ مُجَاهِدٍ فِيْ قَوْلِهِ "إِنَّمَا نُطْعِمُكُمْ لِوَجْهِ اللّٰهِ" [الإنسان : ৯] قَالَ لَمْ يَقُوْلُوْا حِيْنَ أَطْعَمُوْهُمْ لِوَجْهِ اللهِ وَلَكِنْ عَلِمَهُ اللهُ مِنْ قُلُوْبِهِمْ فَأَثْنَى عَلَيْهِمْ لِيَرْغَبَ فِيْهِ رَاغِبٌ
(৫) মুজাহিদ (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত, আল্লাহ তা‘আলার বাণী ‘তারা বলে, আমরা তো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই তোমাদেরকে খাদ্য দান করি’-এর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘তারা খাওয়ানোর সময় মুখে বলত না যে, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা যেহেতু তাদের অন্তরের কথা জানেন, তাই তিনি তাদের প্রশংসা করেছেন। যাতে যারা উৎসাহী হওয়ার তারা এ ব্যাপারে (খাদ্য দানের প্রতি) উৎসাহী হয়’।[৫]
------
عَنْ حُسَيْنِ بْنِ الرَّبِيْعِ قَالَ سَمِعْتُ فُضَيْلَ بْنَ عِيَاضٍ يَقُوْلُ وَيْلٌ لِمَنْ لَيْسَ لِلهِ
(৬) হুসাইন ইবনু রাবী‘ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি ফুযায়ল ইবনু ঈয়াযকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘দুর্ভোগ! তার জন্য যে আল্লাহর জন্য নয়’।[৬] অর্থাৎ যে তার সকল কাজ আল্লাহর ওয়াস্তে করে না।
--------
عَنْ يُوْنُسَ بْنِ عُبَيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ الْفُضَيْلَ بْنَ عِيَاضٍ يَقُوْلُ خَيْبَةٌ لَكَ إِنْ كُنْتَ تَرَى أَنَّكَ تَعْرِفُهُ وَأَنْتَ تَعْمَلُ لِغَيْرِهِ
(৭) ইউনুস ইবনু ঊবায়দ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি ফুযায়ল ইবনু ঈয়াযকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘দুর্ভোগ! তোমার জন্য যদি তুমি মনে কর, তুমি তাঁকে (আল্লাহকে) চিনেছ, অথচ তুমি আমল কর অন্যের জন্য’।[৭]
-------
(৮) মুহাম্মাদ ইবনু আব্দে রাব্বিহি (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি ফুযায়লকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘মানুষের জন্য কোন আমল ত্যাগ করা হল রিয়া। আবার মানুষের জন্য কোন আমল বাস্তবায়ন করা শিরক। আর ইখলাছ হল, আল্লাহ তোমাকে এ উভয় প্রকার আমল থেকে রক্ষা করুন’।[৮]
*শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, ডাঙ্গীপাড়া, রাজশাহী।
[১]. হিলইয়াতুল আওলিয়া, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ২৪।
[২]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৬৫২৪।
[৩]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৬৫৩০।
[৪]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৬৫৫০।
[৫]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৬৪৯৪।
[৬]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৬৪৯১।
[৭]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৬৪৯২।
[৮]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৬৪৬৯।
প্রসঙ্গসমূহ »:
বিবিধ