অমিয় বাণী
-ইউনুস বিন আহসান*
عَنِ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ أَنْ تَكُوْنَ لَهُ خَبِيْئَةٌ مِنْ عَمَلٍ صَالِحٍ فَلْيَفْعَلْ.
১). যুবায়ের ইবনুল ‘আওয়াম (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার নেক আমল গোপন রাখতে সক্ষম সে যেন তা গোপন রাখে’।[১]
-----
عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ رَحِمَهُ الله قَالَ قَالَ لِيْ أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَعْمَلْ لِغَيْرِ اللهِ فَيَكِلَكَ اللهُ إِلَى مَنْ عَمِلْتَ لَهُ.
২). আবুল ‘আলিয়া (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাকে মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এক ছাহাবী বলেছেন, ‘তুমি আল্লাহ ছাড়া আর কারো জন্য কোন আমল কর না। যদি কর তবে তোমার অভিভাবক তাকেই বানানো হবে যার জন্য তুমি আমল করবে’।[২]
-----
قَالَ عَلَيُّ بْنُ أَبِيْ طَالِبٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ لَا يَقِلُّ عَمَلٌ مَع تَقْوَى وَكَيْفَ يَقِلُّ مَا يُتَقَبَّلْ.
৩). ‘আলী ইবনু আবী ত্বালিব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘তাক্বওয়ার সাথে যে আমল করা হয় তাকে সামান্য বলা যায় না। আর কবুলকৃত আমলকে কি সামান্য বলা সম্ভব’! [৩]
------
عَنْ يَحْيَى رَحِمَهُ الله قَالَ سَمِعْتُ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ مَنْ عَمِلَ عَمَلًا كَسَاهُ اللهُ رِدَاءَهُ إِنْ خَيْرًا فَخَيْرًا وَإِنْ شَرًّا فَشَرًّا.
৪). ইয়াহ্ইয়া (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ঊছমান ইবনু ‘আফ্ফান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোন আমল করবে আল্লাহ তা‘আলা তাকে তার চাদর পরিধান করাবেন। যদি সে ভাল আমল করে তবে ভাল চাদর, আর যদি খারাপ আমল করে তবে খারাপ চাদর পরিধান করাবেন’।[৪]
------
عَنْ عَلِيِّ بْنِ الْفُضَيْلِ بْنِ عَيَّاضٍ رَحِمَهُ الله أَنَّهُ قَالَ مَا أَحْلَى كَلَامُ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَا بُنَيَّ وَ تَدْرِيْ لِمَا حَلَى؟ لَا يَا أَبَتِ قَالَ لِأَنَّهُمْ أَرَادُوْا بِهِ اللهَ تَبَارَكَ وَ تَعَالَى.
৫). ‘আলী ইবনু ফুযায়ল ইবনু ‘আয়ায (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত, একদা তিনি বললেন, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ছাহাবীগণের কথা কতই মিষ্টি! ফুযায়ল বললেন, হে বৎস! তুমি কি জান তা কেন এত মিষ্টি? তিনি বললেন, না, হে আমার পিতা। তিনি বললেন, তাদের কথা এত মিষ্টি হওয়ার কারণ হল- তাঁরা তাঁদের সকল কথায় আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি কামনা করেন।[৫]
------
سُئِلَ حَمْدُوْنَ الْقَصَّارَ مَا بَالَ كَلَامِ السَّلَفِ أَنْفَعُ مِنْ كَلَامِنَا قَالَ لِأَنَّهُمْ تَكَلَّمُوْا لِعِزِّ الْإِسْلَامِ وَرِضَا الرَّحْمَنِ وَ نَحْنُ نَتَكَلَّمُ لِعِزِّ النَّفْسِ وَ طَلَبِ الدُّنْيَا وَرِضَا الْخَلْقِ.
৬). হামদূন আল-ক্বাছ্ছার (রাহিমাহুল্লাহ)-কে জিজ্ঞেস করা হল, সালাফদের কথাগুলো আমাদের কথার তুলনায় এত অধিক উপকারী হয় কেন? তিনি বললেন, ‘কেননা তাঁরা ইসলামের মর্যাদার কথা বলতেন ও দয়াময়ের সন্তুষ্টি কামনা করতেন। আর আমরা আমাদের নিজেদের মর্যাদার কথা বলি, দুনিয়াবী ভোগ-সামগ্রী উপার্জনের কথা বলি ও জনগণের সন্তুষ্টি কামনা করি’।[৬]
------
قَالَ ابْنُ أَبِي الدَّرْدَاءِ رَحِمَهُ الله رَأَيْتُ حُذَيْفَةَ الْمَرْعَشِيَّ عِنْدَ جَعْفَرٍ يَقُوْلُ لَهُ يَا عَبْدَ اللهِ لَيْسَ يَنْبَغِيْ لِلْمُؤْمِنِ أَنْ يَشْغَلَهُ عَنِ اللهِ شَيْءٌ لَا فَقْرٌ وَلَا غِنًى وَلَا صِحَّةٌ وَلَا مَرَضٌ فَقَالَ لَهُ حُذَيْفَةُ لَيْتَ لَا تَكُوْنُ فِيْنَا خِصْلَتَانِ قَالَ مَا هُمَا؟ قَالَ لَا نُنَابِذُ اللهَ فِي السَّرَّاءِ وَلَا نَحْمِلُ بِدِيْنِنَا.
৭). ইবনু আবিদ্দারদা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি হুযায়ফা আল-মার‘আশীকে জা‘ফর এর নিকট দেখলাম। জা‘ফর তাকে বললেন, হে আল্লাহর বান্দা! মুমিনের জন্য এটা শোভনীয় নয় যে, তাকে কোন কিছু আল্লাহ থেকে বিমুখ করে রাখবে। না দারিদ্র্য, না ধনাঢ্যতা, না সুস্থতা আর না কোন অসুস্থতা। হুযায়ফা তাকে বললেন, আমাদের মাঝে যদি দু’টি বৈশিষ্ট্য না থাকত! তিনি বললেন, সে দু’টি কী কী? হুযায়ফা বললেন, সুখের সময় আমরা যদি আল্লাহ তা‘আলাকে ভুলে না যেতাম ও কোন বিষয়ে দ্বীনের উপর আক্রমণ না করতাম![৭]
------
عَنْ خَالِدِ بْنِ دُرَيْكٍ رَحِمَهُ الله قَالَ كَانَتْ فِي ابْنِ مُحَيْرِيْزٍ خَصْلَتَانِ مَا كَانَتَا فِيْ أَحَدٍ مِمَّنْ أَدْرَكْتُ مِنْ هَذِهِ الْأُمَّةِ كَانَ أَبْعَدَ النَّاسِ أَنْ يَسْكُتَ عَنْ حَقٍّ بَعْدَ أَنْ يَتَبَيَّنَ لَهُ حَتَّى يَتَكَلَّمَ فِيْهِ غَضِبَ مَنْ غَضِبَ وَرَضِيَ مَنْ رَضِيَ وَكَانَ مِنْ أَحْرَصِ النَّاسِ أَنْ يَتَكَلَّمَ مِنْ نَفْسِهِ أَحْسَنَ مَا عِنْدَهُ
৮). খালেদ ইবনু দুরায়েক (রাহিমাহুল্লাহ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইবনু মুহাইরীযের মাঝে এমন দু’টি বৈশিষ্ট্য ছিল, যা আমি এই উম্মতের যত মানুষ পেয়েছি তাদের কারো মাঝে পাইনি। হক্ব তার কাছে স্পষ্ট হয়ে গেলে তিনি তা বলতে ছাড়তেন না। কেউ রেগে গেলে তিনিও রাগ করতেন আর কেউ তার উপর সন্তুষ্ট থাকলে তিনিও সন্তুষ্ট থাকতেন। আর তিনি মানুষজনের সাথে উত্তম ভাষায় কথা বলার ব্যাপারে অধিক আগ্রহী ছিলেন।[৮]
* শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, ডাঙ্গীপাড়া, রাজশাহী।
তথ্যসূত্র :
[১]. মুসনাদে ইবনুল জা‘দ, হা/৬৮২, পৃ. ১১৩; আবূ দাঊদ, আয-যুহ্দ, হা/১১৯।
[২]. মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা, ৭ম খণ্ড, পৃ. ২০৭।
[৩]. ইবনু আবিদ দুনিয়া, আল-ইখলাছ, পৃ. ৪; কানযুল ‘ঊম্মাল, হা/৮৪৯৭; হিলইয়াতুল আওলিয়া, ১০ম খণ্ড, পৃ. ৩৮৮।
[৪]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৫৯।
[৫]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/১৭০৮।
[৬]. ছিফাতুছ ছাফওয়াহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ১২২।
[৭]. হিলইয়াতুল আওলিয়া, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৪৮২।
[৮]. হিলইয়াতুল আওলিয়া, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩২৮।