বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০৫ অপরাহ্ন

অমিয় বাণী

-ইউনুস বিন আহসান*



قَالَ أَحْمَدُ بْنُ أَبِي الْحَوَارِيِّ مَنْ أَحَبَّ أَنْ يُعْرَفَ بِشَيْءٍ مِنَ الْخَيْرِ أَوْ يُذْكَرَ بِهِ فَقَدْ أَشْرَكَ فِيْ عِبَادَتِهِ لِأَنَّ مَنْ عَبَدَ عَلَى الْمَحَبَّةِ لَا يُحِبُّ أَنْ يَرَى خِدْمَتَهُ سِوَى مَخْدُوْمِهِ

১). আহমাদ ইবনু আবুল হাওয়ারী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, যে ব্যক্তি পসন্দ করে যে, তার কোন সৎ আমলের কথা মানুষ জানুক অথবা তার কৃত আমলের কথা উল্লেখ (করে তার প্রশংসা) করুক। তবে সে তার ইবাদতে শিরক করল। কেননা যে ব্যক্তি মহব্বতের সাথে কোন ইবাদত করে, সে চায় না যে, তার ঐ খেদমত যাকে খেদমত করা হয়েছে সে ছাড়া আর কেউ দেখুক।[১]
-----

عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عِيْسَى قَالَ كَانَ ابْنُ الْمُبَارَكِ كَثِيْرُ الْإِخْتِلَافِ إِلَى طَرْسُوْسَ وَكَانَ يَنْزِلُ الرَقَةَ فِيْ خَانٍ فَكَانَ شَابٌّ يَخْتَلِفُ إِلَيْهِ وَيَقُوْمُ بِحَوَائِجِهِ وَيَسْمَعُ مِنْهُ الْحَدِيْثَ فَقَدِمَ عَبْدُ اللهِ مَرَّةً فَلَمْ يَرَهُ فَخَرَجَ فِي النَّفِيْرِ مُسْتَعْجِلًا فَلَمَّا رَجَعَ سَأَلَ عَنِ الشَّابِّ فَقَالَ مَحْبُوْسٌ عَلَى عَشَرَةِ آلَافِ دِرْهَمٍ فَاسْتَدَلَّ عَلَى الْغَرِيْمِ وَوَزَنَ لَهُ عَشَرَةَ آلَافٍ وَحَلَّفَهُ أَلَّا يُخْبِرَ أَحَدًا مَا عَاشَ فَأُخْرِجَ الرَّجُلُ وَسَارَ ابْنُ الْمُبَارَكِ فَلَحِقَهُ الْفَتَى عَلَى مَرْحَلَتَيْنِ مِن الرَقَةِ فَقَالَ لِيْ يَا فَتًى أَيْنَ كُنْتَ؟ لَمْ أَرَكَ قَالَ يَا أَبَا عَبْدِالرَّحْمَنِ كُنْتُ مَحْبُوْسًا بِدَيْنٍ قَالَ وَكَيْفَ خُلِّصْتَ؟ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ فَقَضَى دَيْنِيْ وَلَمْ أَدْرِ قَالَ فَاحْمَدِ اللهَ وَلَمْ يَعْلَمِ الرَّجُلُ إِلَّا بَعْدَ مَوْتِ عَبْدِ اللهِ

২). মুহাম্মাদ ইবনু ঈসা হতে (রাহিমাহুল্লাহ) বর্ণিত, তিনি বলেন, ইবনুল মুবারক বার বার ‘ত্বারসূস’ নামক স্থানে যেতেন। যাওয়ার সময় তিনি রাক্বাহ নামক স্থানের সরাইখানায় যাত্রা বিরতি দিতেন। এসময় একজন যুবক তাঁর কাছে বিভিন্ন প্রয়োজন নিয়ে আসতেন এবং তাঁর কাছ থেকে হাদীছ শুনতেন। একবার আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক ‘রাক্বাহ’-তে গেলেন কিন্তু ঐ যুবককে দেখতে পেলেন না। এসময় তিনি ব্যস্ত থাকায় তিনি দ্রুত তার কাফেলার সাথে মিলিত হলেন। অতঃপর যখন তিনি (যুদ্ধ) থেকে ফিরে আললেন, তখন লোকদের কাছে ঐ যুবক সম্পর্কে জানতে চাইলেন। একজন লোক বলল, দশ হাজার দেরহাম ঋণের কারণে তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে।
অতঃপর তিনি ঋণ দাতার সন্ধান চাইলেন। (তাকে খুঁজে বের করে) দশ হাজার দেরহাম পরিশোধ করে দিলেন এবং তাকে শপথ করালেন যে, তিনি যতদিন জীবিত আছেন ততদিন যেন কাউকে এ কথা না বলে। অতঃপর লোকটিকে মুক্ত করে দেয়া হল আর ইবনুল মুবারক চলে গেলেন। অতঃপর যুবক ‘রিক্বাহ’-এর পরবর্তী যাত্রা বিরতিস্থলে ইবনুল মুবারকের সাথে সাক্ষাৎ করলেন। ফলে তিনি আমাকে বললেন, হে যুবক! তুমি কোথায় ছিলে তোমাকে দেখতে পাচ্ছিলাম না? সে বলল, হে আবূ আব্দুর রহমান! আমি ঋণী হওয়ার কারণে বন্দি ছিলাম। তিনি বললেন, তুমি মুক্ত হলে কীভাবে? সে বলল, একজন লোক এসে আমার ঋণ পরিশোধ করে আমাকে মুক্ত করে দিয়েছেন অথচ সে কে? আমি তা জানি না। তিনি বললেন, তবে তুমি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় কর। আর আব্দুল্লাহ ইবনু মুবারকের মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত সে জানতেই পারেনি (যে, তাকে আব্দুল্লাহ ইবনু মুবারকই ঋণ পরিশোধ করে মুক্ত করেছিলেন)।[২]
-----

عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ مُطَرِّفٍ قَالَ حَدَّثَنَا أَبُوْ حَازِمٍ قَالَ لَا يُحْسِنُ عَبْدٌ فِيْمَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ اللهِ تَعَالَى إِلَّا أَحْسَنَ اللهُ فِيْمَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْعِبَادِ وَلَا يُعَوِّرُ فِيْمَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ اللهِ تَعَالَى إِلَّا عَوَّرَ اللهُ فِيْمَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْعِبَادِ وَلَمُصَانَعَةُ وَجْهٍ وَاحِدٍ أَيْسَرُ مِنْ مُصَانَعَةِ الْوُجُوْهِ كُلِّهَا إِنَّكَ إِذَا صَانَعْتَ اللهَ مَالَتِ الْوُجُوْهُ كُلُّهَا إِلَيْكَ وَإِذَا أَفْسَدْتَ مَا بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ شَنَأَتْكَ الْوُجُوْهُ كُلُّهَا

৩). মুহাম্মাদ ইবনু মুত্বার্রিফ (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ হাযেম আমাদেরকে বলেছেন, কোন বান্দা যদি তার ও আল্লাহর মাঝের সম্পর্ক সুন্দর করে, আল্লাহও তার ও বান্দার মাঝের সম্পর্ক সুন্দর করেন। আর কেউ যদি তার ও আল্লাহর মাঝের সম্পর্ক নষ্ট করে আল্লাহও তাঁর ও বান্দার মাঝের সম্পর্ক নষ্ট করে দিবেন। আর মাত্র একজনের (আল্লাহর) প্রশংসা করে সহানুভূতি অর্জন করা, সকল (মানুষের) তোষামোদ করে সহানুভূতি অর্জনের চেয়ে অধিক সহজ। নিশ্চয় তুমি যদি আল্লাহর সহানুভূতি অর্জন করতে সক্ষম হও, তবে সকলেই তোমার দিকে ঝুঁকে পড়বে। আর তুমি যদি তোমার ও আল্লাহর মাঝের সম্পর্ক নষ্ট কর, তবে সকলেই তোমাকে ঘৃণা করবে।[৩]


*শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, ডাঙ্গীপাড়া, রাজশাহী।

[১]. হুলইয়াতুল আওলিয়া, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ২৫৪।
[২]. সিয়ারু ‘আলামিন নুবালা, ৮ম খণ্ড, পৃ. ২৮৬; তারীখে বাগদাদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৫৯।
[৩]. ছিফাতুছ ছাফওয়াহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৫৭।




প্রসঙ্গসমূহ »: জীবন কথা

ফেসবুক পেজ