রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৭:২৩ পূর্বাহ্ন

ছহীহ আক্বীদার গুরুত্ব

-খত্বীব : শায়খ ড. আব্দুর রহমান বিন আব্দুল আযীয আস-সুদাইস

-অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী


[গত ১৬ মুহাররম ১৪৪২ হি. মোতাবেক ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ তারিখের ‘বায়তুল হারাম, মক্কা আল-মুকাররমা’-এর জুম‘আর খুত্ববাহর বঙ্গানুবাদ]

আল্লাহ রব্বুল আলামীনের প্রশংসা এবং শেষ নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর ছালাত ও সালামের পর মুহতারাম শায়খ বলেন,

হে আল্লাহর বান্দারা! আপনারা আপনাদের রব আল্লাহকে ভয় করুন এবং তাঁরই ইবাদত করুন। একমাত্র তাঁরই আনুগত্য করুন। তাঁর তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করুন। তিনি ছাড়া কোন সত্য মা‘বূদ নেই। তিনি ছাড়া কোন রব নেই।

হে মুসলিমগণ! নতুন বছর শুরু হয়েছে আল-হামদুলিল্লাহ। সুতরাং এই নতুন বছর খালেছ তাওবার সাথে শুরু করুন। জীবনে যত গুনাহখাতা, ভুলভ্রান্তি হয়েছে সেগুলো থেকে খালেছ অন্তরে তওবা করুন। সবসময় সৎ আমলের জন্য সতেষ্ট হোন। বেশি বেশি নেকীর কাজে আত্মনিয়োগ করুন, যাতে আল্লাহ রব্বুল আলামীন সন্তুষ্ট হবেন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ شَهْرُ اللهِ الْمُحَرَّمُ

‘সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ছিয়াম হচ্ছে রামাযান মাসের পরে আল্লাহর মুহাররম মাসের ছিয়াম’।[১] অতএব জীবন থেকে কতগুলো সময় ও বছর কেটে গেছে, সেগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন।

হে তাওহীদী উম্মাহ! বছরের শুরুতে প্রতিটি মানুষকে যে বিষয়টি স্মরণ করানো উচিত, সেটা হল- আল্লাহ তা‘আলার তাওহীদ। যিনি ‘আল্লামুল গুয়ূব তথা গায়েবের সকল খবর রাখেন। এছাড়া মানুষকে উপদেশ দেয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও এই তাওহীদ। এই বহুমুখী ফিতনার যুগে এটা আরো বেশী যরূরী। যদি ছহীহ আক্বীদা থেকে মানুষ বিভ্রান্তির স্বীকার হয়, তাহলে সে তাওহীদ খুঁজে পাবে না। আর দ্বীনি ইসলাম খালেছ তাওহীদী আক্বীদা নিয়ে এসেছে। যাতে করে প্রতিটি মানুষকে মানুষের গোলামী থেকে, গায়রুল্লাহর গোলামী থেকে, আল্লাহ ছাড়া অন্যের গোলামী থেকে রবের গোলামীর দিকে স্বাধীন করে নিয়ে যেতে পারে এবং মানুষকে যথাযথ সম্মানের সুউচ্চ স্থানে পৌঁছাতে পারে। এই তাওহীদের মাধ্যমে মানুষ শিরক, বহুমুখী পাপাচার, কুসংস্কারের নাপাকী থেকে পবিত্র হতে পারে। সুতরাং এই ছহীহ আক্বীদার ক্ষেত্রে কোন রকমের সমঝোতা অথবা কোন রকমের Consider করা কোনমতেই চলবে না। যতই ষড়যন্ত্র হোক না কেন কিংবা যতই চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হৌন না কেন? এই ঈমান ও তাওহীদের কারণেই সালাফে ছালেহীন সম্মানিত হয়েছেন এবং সাহায্যপ্রাপ্ত হয়েছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন,  وَ کَانَ حَقًّا عَلَیۡنَا  نَصۡرُ  الۡمُؤۡمِنِیۡنَ  ‘মুমিনদের সাহায্য করা আমাদের উপর আবশ্যক’ (সূরা আর-রূম : ৪৭)। 

হে ঈমানী ভ্রাতৃমণ্ডলী! আল্লাহ রব্বুল আলামীন সমস্ত মানুষকে একনিষ্ঠ করে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু শয়তান তাদেরকে দ্বীন থেকে বিভ্রান্ত করেছে এবং তাদের জন্য বক্র পথ ও ভ্রষ্টতার পথকে সুসজ্জিত করে পেশ করেছে। এই মর্মে হাদীছে কুদসীসে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

إِنِّيْ خَلَقْتُ عِبَادِيْ حُنَفَاءَ كُلَّهُمْ وَإِنَّ كُلَّ مَا أَنْحَلْتُ عِبَادِيْ فَهُوَ لَهُمْ حَلَالٌ وَإِنَّ الشَّيَاطِيْنَ أَتَتْهُمْ فَاجْتَالَتْهُمْ عَنْ دِيْنِهِمْ وَحَرَّمَتْ عَلَيْهِمُ الَّذِيْ أَحْلَلْتُ لَهُمْ وَأَمَرَتْهُمْ أَنْ يُشْرِكُوْا بِيْ مَا لَمْ أُنْزِلْ بِهِ سُلْطَانًا

‘আমি আমার বান্দাদের সকলকে একনিষ্ঠ করে সৃষ্টি করেছি। কিন্তু তাদের কাছে শয়তান এসেছে। অতঃপর শয়তান তাদের দ্বীনের শিকড় থেকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে। আমি তাদের জন্য যা হালাল করেছিলাম তা শয়তান হারাম করেছে। আর আমি তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলাম যে, শিরকের কোন দলীল-প্রমাণ আমি নাযিল করিনি। সুতরাং তারা যেন শিরকে লিপ্ত না হয়’।[২]

অতএব সত্য দ্বীন ও ছহীহ আক্বীদা মানুষকে অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। যার মাধ্যমে তাওহীদের ঝা-া সুউচ্চ হবে। যা হবে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার একত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। যেমন, তাঁর রুবূবিয়্যাতের ক্ষেত্রে, ইবাদত বন্দেগী-উলূহিয়্যাতের ক্ষেত্রে, আল্লাহ তা‘আলার সুন্দর সুন্দর নাম এবং সুউচ্চ গুণাবলীর ক্ষেত্রে, একমাত্র তাঁর আনুগত্যের ক্ষেত্রে এবং অন্য কোন মানুষের পথ-মতকে বাদ দিয়ে কেবল আল্লাহর নাযিলকৃত শরী‘আত থেকে বিচার গ্রহণের ক্ষেত্রে আল্লাহকে একক গণ্য করবে।

হে ছহীহ আক্বীদার উম্মাহ!  মুসলিমগণ তাদের ইসলাম ও তাওহীদকে সুরক্ষিত রাখবে এবং আক্বীদা বিশুদ্ধ রাখবে। তাদের ইয়াকীন হবে মযবুত। তারা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার উপরই ভরসা করবে এবং বিভিন্ন রকম ভ্রান্ত ধারণা, ভ্রম ও কুসংস্কার ইত্যাদি থেকে নিজেদেরকে সুরক্ষিত রাখবে। সাথে সাথে তাওহীদকে যেসব কথা ও কাজ বিনষ্ট করে বা ক্ষতিসাধন করে, ছহীহ আক্বীদাকে নষ্ট করে সেসব থেকে আল্লাহ তা‘আলা নিষেধ করেছেন। যেমন মৃতদের ও  ওলী-আওলিয়ার অসীলা নেয়া। কবরে গিয়ে কবর থেকে তার্বারুক হাসিল করা। মাযার ও কবরের উপর ঘর নির্মাণ করা, গম্ভুজ নির্মাণ করা। বহু মানুষ এ কবরের উদ্দেশ্যে সফর করে থাকে এবং সেখানে গিয়ে তাদের কাছে আরজি পেশ করে থাকে, যাতে করে বালা-মুছিবত দূর হয়। মনসকামনা পূরণ হয়। রোগের আরোগ্য লাভ হয়। এছাড়া বিশ্বাস করে যে, তারা তাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে পৌঁছতে পারবে এবং তাদের মনের কামনা-বাসনা পূরণ হবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে যে, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সৃষ্টিকুলের প্রয়োজন মিটাচ্ছেন না। তিনি তাঁর রহমতের দরজাকে বন্ধ রেখেছেন। অথচ তারা যা কিছু করে বা বলে এবং তাদের সকল শিরকী-কুফুরী আচার-আচরণ ও কথা থেকে আল্লাহ তা‘আলা অনেক সুউচ্চ ও সুমহান। স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলাই সবকিছুর দেয়ার একমাত্র মালিক। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ لِلّٰہِ الۡاَسۡمَآءُ الۡحُسۡنٰی فَادۡعُوۡہُ بِہَا وَ ذَرُوا الَّذِیۡنَ یُلۡحِدُوۡنَ فِیۡۤ  اَسۡمَآئِہٖ  سَیُجۡزَوۡنَ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ

‘আর আল্লাহর অসংখ্য সুন্দর সুন্দর ও ভাল নাম রয়েছে, সুতরাং তোমরা তাঁকে সেসব নামেই ডাকবে, আর তাদেরকে বর্জন কর যারা তাঁর নাম বিকৃত করে, সত্বরই তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের প্রতিফল দেয়া হবে’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ১৮০)। এছাড়া শরী‘আতসম্মত অসীলা হবে মানুষের নেক আমল, ঈমান, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ভালবাসা। আল্লাহ তা‘আলা এই মর্মে ইরশাদ করছেন,

اَلَّذِیۡنَ یَقُوۡلُوۡنَ رَبَّنَاۤ اِنَّنَاۤ اٰمَنَّا فَاغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوۡبَنَا وَ قِنَا عَذَابَ النَّارِ

‘যারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা ঈমান আনয়ন করেছি। সুতরাং আমাদের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দিন এবং জাহান্নামের আযাব থেকে আমাদেরকে রক্ষা করেন’ (সূরা আলে ইমরান : ১৬)। সুতরাং আল্লাহর কাছেই দরখাস্ত করতে হবে, তাঁর কাছেই আশা রাখতে হবে। তাঁর কাছেই আশ্রয় নিতে হবে। কারণ তিনিই সবকিছু জানেন, সর্বশক্তিমান এবং তিনি অমুখাপেক্ষী। এ অধিকার আল্লাহ রব্বুল আলামীন ছাড়া কারো নেই। কোন ফেরেশতারও ক্ষমতা নেই, চাই সে আল্লাহ তা‘আলার যতই নিকটবর্তী ফেরেশতা হোক না কেন? এমনকি আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত কোন নবী-রাসূলেরও ক্ষমতা নেই। কোন নেক ওলী-আওলিয়াদেরও নেই।

অতএব ছালাত আদায় করবে একমাত্র আল্লাহর জন্য। দু‘আ করবে একমাত্র আল্লাহর কাছে। যব্হ করবে, মানত করবে একমাত্র আল্লাহর জন্য। সাহায্য কামনা করবে একমাত্র আল্লাহর কাছে। পানাহ চাইবে, আশ্রয় কামনা করবে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার নিকটে। কসম করবে একমাত্র আল্লাহর, ভরসা রাখবে একমাত্র আল্লাহর উপর, আশা রাখবে একমাত্র আল্লাহর কাছে। ভয় করবে একমাত্র আল্লাহকে। কারণ মানুষের প্রয়োজন আল্লাহ ছাড়া কেউ মিটাতে পারে না। মানুষের রোগ আল্লাহ ছাড়া কেউ আরোগ্য দিতে পারে না। কেউ যদি মনে করে আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া অন্য কেউ উপকার বা অপকার করতে পারে অসাধারণ ক্ষেত্রে অথবা রোগের আরোগ্য দান করতে পারে অথবা মনসকামনা পূরণ করতে পারে। তাহলে সেই ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলা সম্পর্কে চরম মিথ্যারোপ করল এবং সেই ব্যক্তি পথভ্রষ্ট হয়ে আল্লাহর দ্বীন থেকে অনেক দূরে চলে গেল।

অনুরূপভাবে যারা আল্লাহ তা‘আলা এবং তাঁর মাঝে মাধ্যম গ্রহণ করে থাকে, তাদের কাছে আহ্বান করে থাকে, তাদের কাছে যাঞ্ছা করে থাকে, তাদেরকে সুপারিশকারী মনে করে, তাহলে তারা সবাই আল্লাহর সাথে শিরক করে এবং এরা শিরককারী। অতঃপর তিনি এ সম্পর্কে কয়েকটি আয়াত উল্লেখ করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ یَعۡبُدُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مَا لَا یَضُرُّہُمۡ وَ لَا یَنۡفَعُہُمۡ وَ یَقُوۡلُوۡنَ ہٰۤؤُلَآءِ شُفَعَآؤُنَا عِنۡدَ اللّٰہِ قُلۡ اَتُنَبِّـُٔوۡنَ اللّٰہَ بِمَا  لَا یَعۡلَمُ فِی السَّمٰوٰتِ وَ لَا فِی الۡاَرۡضِ سُبۡحٰنَہٗ  وَ  تَعٰلٰی عَمَّا یُشۡرِکُوۡنَ

‘তারা আল্লাহ ছাড়া এমন বস্তুসমূহেরও ইবাদত করে যারা তাদের কোন অপকারও করতে পারে না এবং তাদের কোন উপকারও করতে পারে না। আর তারা বলে, এরা হচ্ছে আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী। (হে নবী!) আপনি বলে দিন, তোমরা কি আল্লাহকে এমন বিষয়ের সংবাদ দিচ্ছ, যা তিনি অবগত নন, না আকাশসমূহে, আর না যমীনে? তিনি পবিত্র ও তাদের মুশরিকী কার্যকলাপ হতে অনেক ঊর্ধ্বে’ (সূরা ইউনুস : ১৮)। অন্যত্র তিনি বলেন,

وَ لَمۡ یَکُنۡ لَّہُمۡ مِّنۡ شُرَکَآئِہِمۡ شُفَعٰٓؤُا وَ کَانُوۡا بِشُرَکَآئِہِمۡ کٰفِرِیۡنَ- وَ یَوۡمَ تَقُوۡمُ السَّاعَۃُ  یَوۡمَئِذٍ یَّتَفَرَّقُوۡنَ

‘তাদের শরীকদের কেউ তাদের সুপারিশ করবে না এবং তারাই তাদের শরীকদেরকে অস্বীকার করবে। যেদিন ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে সেদিন মানুষ বিভক্ত হয়ে পড়বে’ (সূরা আর-রূম : ১৩-১৪)।

অতএব যাদেরকে সুপারিশকারী মনে করেছে, যাদেরকে পূজা করেছে, যাদের কাছে ধরনা দিয়েছে; তারা নিজেরও অপকার-উপকারের মালিক না, নিজের হায়াতের মালিক না, নিজের পুনরুত্থানের মালিক না। কেননা সবকিছুর মালিক কেবল আল্লাহ তা‘আলা। তিনি আরো বলেন,

اَمِ اتَّخَذُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ شُفَعَآءَ قُلۡ اَوَ لَوۡ کَانُوۡا  لَا یَمۡلِکُوۡنَ شَیۡئًا وَّ لَا یَعۡقِلُوۡنَ- قُلۡ  لِّلّٰہِ  الشَّفَاعَۃُ  جَمِیۡعًا لَہٗ  مُلۡکُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ثُمَّ  اِلَیۡہِ تُرۡجَعُوۡنَ

‘তারা কি আল্লাহ ছাড়া অপরকে শাফা‘আতকারী গ্রহণ করেছে? (হে নবী!) আপনি বলুন, যদিও তারা কোন ক্ষমতা রাখে না এবং তারা বুঝে না? (হে নবী!) আপনি বলুন, যাবতীয় শাফা‘আত আল্লাহরই ইখতিয়ারে আকাশম-লী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই, অতঃপর তারই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে’ (সূরা আয-যুমার : ৪৩-৪৪)। আল্লাহ আরো বলছেন,

قُلۡ  لِّلّٰہِ  الشَّفَاعَۃُ  جَمِیۡعًا  لَہٗ  مُلۡکُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ

‘(হে নবী!) আপনি বলুন, যাবতীয় শাফা‘আত আল্লাহরই ইখতিয়ারে আকাশম-লী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই’ (সূরা আয-যুমার : ৪৪)।

যাদেরকে এরা আহ্বান করছে, যাদের কাছে কিছু আশা রাখছে। এরা যদিও কোন কিছুর মালিক না এবং কিছু উপলব্ধিও করে না। এরা জানেও না যে, তাদের সম্পর্কে কী করা হচ্ছে। যেখানে এ উম্মাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি, আল্লাহ তা‘আলার কাছে সবচেয়ে বড় সম্মানিত ব্যক্তিত্ব, সর্বশেষ নবী, খাত্বামুন নাবীয়্যিন তাকে তিনি বলছেন,

قُلۡ لَّاۤ  اَمۡلِکُ  لِنَفۡسِیۡ  نَفۡعًا وَّ لَا  ضَرًّا  اِلَّا مَا شَآءَ اللّٰہُ

‘(হে নবী!) আপনি বলুন, আমি আমার জন্য অপকার-উপকারের মালিক না। তবে আল্লাহ যা চান তাই হয়’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ১৮৮)। তিনি আরো বলেন,

قُلۡ  اِنِّیۡ  لَاۤ  اَمۡلِکُ لَکُمۡ ضَرًّا وَّ لَا رَشَدًا- قُلۡ  اِنِّیۡ   لَنۡ یُّجِیۡرَنِیۡ  مِنَ  اللّٰہِ  اَحَدٌ ۬ۙ وَّ لَنۡ  اَجِدَ  مِنۡ  دُوۡنِہٖ   مُلۡتَحَدًا 

‘(হে নবী!) আপনি বলুন, আমি তোমাদের অনিষ্টের ও পথ প্রদর্শনের ক্ষমতা রাখি না। (হে নবী!) আপনি বলুন, আল্লাহ এর শাস্তি হতে কেউই আমাকে রক্ষা করতে পারবে না এবং আল্লাহ ব্যতীত আমি কোন আশ্রয়ও পাব না’ (সূরা আল-জিন : ২১-২২)। তিনি আরো ইরশাদ করেছেন,

وَ اِنۡ یَّمۡسَسۡکَ اللّٰہُ بِضُرٍّ فَلَا کَاشِفَ لَہٗۤ  اِلَّا ہُوَ وَ اِنۡ یُّرِدۡکَ بِخَیۡرٍ فَلَا رَآدَّ لِفَضۡلِہٖ

‘যদি আল্লাহ তোমাকে কোন কষ্টে নিপতিত করেন, তবে তিনি ছাড়া কেউ তা মোচনকারী নেই, আর যদি তিনি তোমার প্রতি কোন কল্যাণ চান, তবে তাঁর অনুগ্রহের কোন অপসারণকারী নেই’ (সূরা ইউনুস : ১০৭)। যেখানে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ এবং আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় ব্যক্তি, মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসবের মালিক না, তাহলে অন্যরা কী করে এসব কছুর মালিক হতে পারে?

হে মুসলিম ভাই! মনে রাখবেন, যেসব আক্বীদার বিষয় সম্পর্কে সতর্কীকরণ উদ্দেশ্য তার একটি হচ্ছে ‘আল-অলা ওয়াল বারা’ তথা বন্ধুত্ব এবং বৈরীতা। যেমন এটি একটি আক্বীদার বিষয়, তেমনই এটা যে অন্তরের বিষয়, ভালবাসা এবং বৈরীতা, সেটাকেও জানতে হবে। মানুষের সাথে বা অমুসলিমদের সাথে, কাফের-মুশরিকের সাথে, বিধর্মীদের সাথে সদ্ব্যবহার, সদাচারণের ক্ষেত্রে ব্যক্তি জীবনে বা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যে আচরণ রয়েছে সেগুলোকে একাকার করে দিলে হবে না, কেননা দু’টি ভিন্ন বিষয়। যা শরী‘আতের সুস্পষ্ট একটি বিষয়। আল্লাহ তা‘আলা কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করছেন,

یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ  اِنَّا خَلَقۡنٰکُمۡ  مِّنۡ ذَکَرٍ وَّ اُنۡثٰی وَ جَعَلۡنٰکُمۡ شُعُوۡبًا وَّ قَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوۡا

‘হে মানবসকল! নিশ্চয় তোমাদেরকে আমি একজন পুরুষ এবং নারী হতে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বহু জাতি ও গোষ্ঠীতে আমি বিভক্ত করেছি, যাতে করে পরস্পর পরিচিতি লাভ করতে পারো’ (সূরা আল-হুজুরাত : ১৩)।

সুতরাং অমুসলিমের সাথে বন্ধুত্ব-ভালবাসা থাকবে না, এটি শরী‘আত সম্মত বিষয়। এর মানে এই নয় যে, তাদের সাথে আমরা ভালো আচরণ করব না। বন্ধুত্ব না রাখার সাথে সাথে তাদের অন্তরকে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য তাদের সাথে আমরা ভাল আচরণ করব। যাতে করে তারা দ্বীনে ইসলামে প্রবেশ করে, তাদের অন্তরকে দ্বীনের দিকে ফিরে আসে। সুতরাং একজন মুসলিম, সে সদাচারণ করবে, যাতে করে যে কোন মানুষকে দ্বীনী ইসলামের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করছেন,

لَا یَنۡہٰىکُمُ اللّٰہُ  عَنِ الَّذِیۡنَ لَمۡ یُقَاتِلُوۡکُمۡ فِی الدِّیۡنِ وَ لَمۡ  یُخۡرِجُوۡکُمۡ  مِّنۡ  دِیَارِکُمۡ  اَنۡ  تَبَرُّوۡہُمۡ وَ تُقۡسِطُوۡۤا اِلَیۡہِمۡ اِنَّ  اللّٰہَ یُحِبُّ الۡمُقۡسِطِیۡنَ

‘দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে স্বদেশ হতে বহিষ্কার করেনি তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায় বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করে না। আল্লাহ তো ন্যায়পরায়ণদেরকে ভালবাসেন’ (সূরা আল-মুমতাহিনা : ৮)। অন্যত্র তিনি বলেন, لَکُمۡ  دِیۡنُکُمۡ  وَلِیَ  دِیۡنِ ‘তোমাদের দ্বীন, তোমাদের জন্য এবং আমার দ্বীন আমার জন্য’ (সূরা আল-কাফিরূন : ৬)। তিনি আরো ইরশাদ করছেন, لَاۤ اِکۡرَاہَ فِی الدِّیۡنِ ‘দ্বীনের ক্ষেত্রে কোন জবরদস্তি নেই’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৫৬)। অতএব অন্তরকে ফেরাতে হবে। জবরদস্তি দ্বীনের ক্ষেত্রে চলবে না। তিনি আরো বলেন, وَ قُوۡلُوۡا لِلنَّاسِ حُسۡنًا ‘প্রতিটি মানুষকে ভাল কথা বল বা ভাল আচরণ কর’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ৮৩)। হাদীছে এসেছে, আসমা বিনতে আবূ বকর (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন,

قَدِمَتْ عَلَىَّ أُمِّىْ وَهْىَ مُشْرِكَةٌ فِىْ عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ فَاسْتَفْتَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قُلْتُ إِنَّ أُمِّىْ قَدِمَتْ وَهْىَ رَاغِبَةٌ أَفَأَصِلُ أُمِّى قَالَ نَعَمْ صِلِىْ أُمَّكِ

‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে আমার মা মুশরিক অবস্থায় আমার নিকট এলেন। আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললাম, তিনি আমার প্রতি খুবই আকৃষ্ট, এমতাবস্থায় আমি কি তার সঙ্গে সদাচরণ করব? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তুমি তোমার মায়ের সঙ্গে সদাচরণ কর’।[৩]

উক্ত হাদীছে স্পষ্ট হল যে, যারা ইসলামকে ভালবাসে না, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে ভালবাসে না, আল্লাহকে ভালবাসে না কিংবা বিদ্বেষী হওয়া সত্ত্বেও তার সাথে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন।

অনুরূপভাবে পার্থিব ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুশরিক মহিলার মশক থেকে পানি নিয়ে ওযূ করেছেন, ইহুদীর কাছে ধার নিয়েছেন, লেনদেন করেছেন এবং তার কাছে বর্ম বন্ধক রেখেছেন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বারের ইহুদীদেরকে জমি আধি দিয়েছেন এই চুক্তিতে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অর্ধেক নিবেন, আর তারা তাদের পরিশ্রমের বিনিময়ে অর্ধেক নিবে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতিবেশী মদীনায় এক ইহুদীর সাথে সদ্ব্যবহার করেছেন। তার ছেলেকে দেখতে গেছেন। পরবর্তীতে সেই ছেলেটি ইসলাম গ্রহণ করেছে। এরকম বহু ঘটনা রয়েছে। সুতরাং আমাদেরকে দলীলের ভিত্তিতে ছহীহ আক্বীদা গ্রহণ করতে হবে বা দ্বীন বুঝতে হবে আবেগের ভিত্তিতে নয়।

হে মুসলিম উম্মাহ! ছহীহ আক্বীদার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে জামা‘আতকে আঁকড়ে ধরা তথা ঐক্য। আর মুসলিম শাসকের কথা শুনা ও আনুগত্য করা। এর বিপরীতে খারেজী ও বিভিন্ন চরমপন্থীদল। যারা বিভ্রান্তির স্বীকার, যারা সহিংসতাকে প্রাধান্য দিয়েছে। এরা ঐক্যবদ্ধ থাকা ও মুসলিম শাসকের আনুগত্য করাকে বিরোধিতা করেছে। এরা মুসলিম শাসকদের কাফের বলে আখ্যায়িত করে থাকে এবং মুসলিম শাসকদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করে। এরা মানুষের রক্তপাতকে হালাল মনে করে, বোমাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ে বিশ্বাসী। এরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা সোস্যাল মিডিয়াতে খুবই সোচ্চার। সুতরাং তাদের ক্ষেত্রে আমাদের সর্তক সাবধান হওয়া প্রয়োজন। যাতে করে তারা আমাদেরকে ও আমাদের কচিকাচাদেরকে বিভ্রান্ত করতে না পারে। অতএব মুসলিম উম্মাহর জন্য আবশ্যক হচ্ছে তারা আক্বীদার বিশুদ্ধতার গুরুত্ব দেবে এবং ছহীহ আক্বীদার পরিপন্থী বিষয়গুলো থেকে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখবে।

হে বান্দারা! আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করুন এবং আক্বীদার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মাধ্যমে দ্বীন ও দুনিয়াকে আলোকিত করার চেষ্টা করুন। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন,

مَنۡ عَمِلَ صَالِحًا مِّنۡ ذَکَرٍ اَوۡ اُنۡثٰی وَ ہُوَ مُؤۡمِنٌ فَلَنُحۡیِیَنَّہٗ  حَیٰوۃً  طَیِّبَۃً  وَ لَنَجۡزِیَنَّہُمۡ اَجۡرَہُمۡ بِاَحۡسَنِ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ

‘যে ব্যক্তি ভাল কাজ করল তাওহীদ ভিত্তিক যদি কেউ ভাল কাজ করে; সে নর হোক বা নারী হোক, তাহলে অবশ্যই তাকে আমরা শান্তির জীবন দান করব এবং অবশ্যই অবশ্যই আমি তাদের কৃতকর্মের সবচেয়ে উত্তম প্রতিদান দান করব’ (সূরা আন-নাহল : ৯৭)।

ছানী খুত্ববাহ  

দ্বিতীয় খুত্বাবাতে মুহতারাম শাইখ বলেন, প্রকাশ্যে ও গোপনে সর্বাবস্থায় আল্লাহকে ভয় করুন। আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা, গুণগান ও শুকরিয়া আদায় করুন এজন্য যে, তিনি আপনাদেরকে এ সুন্দর দ্বীন দিয়েছেন। যাতে করে আল্লাহর সন্তুষ্টি পর্যন্ত পৌঁছতে পারেন।

দ্বীনের আরেকটি মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের উপর অটল থাকা’। যেখানে রয়েছে সার্বিক নিরাপত্তা। যদি সকল ধরনের গোমরাহী ও বিচ্ছিন্নতা থেকে নিরাপদ থাকতে হয়, তাহলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আক্বীদাকে আঁকড়ে ধরতে হবে। আর মনে রাখতে হবে যে, এই ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত’-এর আক্বীদার ভিত্তিতেই ঐক্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করতে হবে। এর মাধ্যমে আমাদের জীবনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে পৌঁছতে হবে। আমাদের জীবনে যেসব লক্ষ্য-উদ্দেশ্যগুলো রয়েছে তার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য, একটি বড় সমস্যা হচ্ছে পালিস্টাইন সমস্যা ও মসজিদে আক্বছার সমস্যা, যা ইহুদীদের কবলে রয়েছে। সেটি হচ্ছে ইসলামের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা কখনো ভোলার নয়। যতই ফিতনা ফাসাদ থাক না কেন? আমাদের এ বিষয়টি ভুলে গেলে চলবে না। মনে রাখতে হবে যে, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ওয়াদা পূরণ করবেন এবং তিনি তাঁর নূরকে পূর্ণতা দান করবেন। আর মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহ তা‘আলা সাহায্য করবেন, কিন্তু মুসলিম উম্মাহকে এ সাহায্য নেয়ার জন্য দাঁড়াতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করছেন,

اَلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ لَمۡ یَلۡبِسُوۡۤا اِیۡمَانَہُمۡ بِظُلۡمٍ  اُولٰٓئِکَ لَہُمُ الۡاَمۡنُ وَ ہُمۡ مُّہۡتَدُوۡنَ

‘যারা ঈমান নিয়ে আসল এবং তাদের ঈমানের সাথে যুলুমের সংমিশ্রণ ঘটালো না, তাদের জন্য রয়েছে সার্বিক নিরাপত্তা এবং তারাই হচ্ছে হেদায়াতপ্রাপ্ত’ (সূরা আল-আন‘আম : ৮২)।

ছহীহ আক্বীদার জ্ঞান অর্জন করা এবং দ্বীন সম্পর্কে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, আমরা আরবী বছর ও শিক্ষা বছরের শুরুতেই পদার্পণ করেছি। এই করোনা মহামারীর সময়ে আমাদের ছেলেমেয়েরা যেভাবে অনলাইনে স্কুল, মাদরাসা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস শুরু করেছে এজন্য তাদেরকে শুকরিয়া জানাই। এর মাধ্যমে আমাদেরকে ছহীহ আক্বীদা শিখতে হবে, ছহীহ আক্বীদার প্রচার-প্রসার করতে হবে। এই করোনা অবস্থাতেও শিক্ষা শুরু করা হয়েছে এতে শিক্ষার গুরুত্ব কতটুকু সেটা আমাদেরকে অনুধাবন করতে হবে। বিশেষ করে অনলাইনে বর্তমানে যুগে শিক্ষার গুরুত্ব। এক্ষেত্রে আমাদের সর্বস্তরের পরস্পর সহযোগিতা আবশ্যক। সুতরাং সহযোগিতা থাকতে হবে ছেলে-মেয়েদের, পরিবার এবং পরিবারের অভিভাবক পক্ষ থেকে এবং শিক্ষাঙ্গনের পক্ষ থেকে। তাই ছেলে-মেয়ে, ছাত্র-ছাত্রী, পিতা-মাতা এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরকে বলব, আমরা আপনাদেরকে নিয়ে গর্ব করি এজন্য যে, আপনারা ছেলেমেয়েরকে দ্বীন-দুনিয়ার শিক্ষার দেয়ার জন্য সার্বিকভাবে প্রচেষ্টা করছেন। আল্লাহ তা‘আলা আপনাদের মেহনতের উত্তম প্রতিদান দান করুন এবং আরো বেশি করে কাজে আঞ্জাম দেয়ার তাওফীক দান করুন। সাথে সাথে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে আল্লাহ তা‘আলা যেন সার্বিক অনিষ্ট থেকে নিরাপদ রাখুন। দ্বীন-দুনিয়ার ক্ষেত্রে, দ্বীনের খেদমতের ক্ষেত্রে, দেশের খেদমতের ক্ষেত্রে সকলকে তাওফীক দান করুন এবং সকলকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।

আমাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে যেভাবে দিক-নির্দেশনা আসছে আল্লাহ তা‘আলা যেন সেইভাবে আমাদেরকে কাজ করার তাওফীক দান করেন। শুকরিয়া আদায় করি, যারা শিক্ষাঙ্গণের সাথে জড়িত এবং দু‘আ করি, আল্লাহ তা‘আলা যেন তাদেরকে জাযায়ে খায়ের দান করেন, তিনি যেন উপকারী জ্ঞান আমাদের সকলকে দান করেন এবং নেক আমলের তাওফীক দান করেন। কুরআন-সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার তাওফীক দান করেন। সালাফে ছালাহীনের মানহাজকে আঁকড়ে ধরার তাওফীক দান করেন। পরিশেষে আল্লাহ রব্বুল আলামীন এই উম্মতের বালা-মুছিবত, বিপদাপদকে যেন দূর করে দেন। ছালাত ও সালাম সর্বশেষ রাসূল, আমাদের প্রিয় রাসূল, সৃষ্টির সেরা মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর।

তথ্যসূত্র :
[১]. ছহীহ মুসলিম, হা/১১৬৩; আবূ দাঊদ, হা/২৪২৯।
[২]. ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৬৫৪; সনদ হাসান, ছহীহুল জামে‘, হা/২৬৩৭।
[৩]. ছহীহ বুখারী, হা/২৬২০; মিশকাত, হা/৪৯১৩।




দ্বীনি ইলম অর্জনের গুরুত্ব - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী
কোমল ও নম্র আচরণ - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী
আল্লাহর অস্তিত্বে দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করা - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী
প্রিয় নবী (ﷺ)-এর প্রশংসনীয় গুণাবলী - অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
দ্বীন রক্ষায় আলেমদের অবদান - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী
প্রজ্ঞাপূর্ণ উপদেশসমূহ - অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
তাক্বওয়া ও তার বহিঃপ্রকাশ - অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
সদাচরণ-ই হচ্ছে দ্বীন - অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
যৌন হয়রানির ভয়াবহতা ও প্রতিকার - অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
ফিতনার সময় রাসূূলুল্লাহ (ﷺ)-এর মানহাজ - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী
যালিমের পতন ও মযলুমের বিজয় অবধারিত - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী
ইসলামী শরী‘আহর সৌন্দর্য - অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী

ফেসবুক পেজ