ফিতনার সময় রাসূূলুল্লাহ (ﷺ)-এর মানহাজ
- খত্বীব : শায়খ ড. হুসাইন বিন আব্দুল আজীজ আলে শায়খ
- অনুবাদ : হারুনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী*
[গত ২৪ জুমা. উলা ১৪৪৫ হি. মোতাবেক ৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখের ‘মসজিদে নববী, মদীনাতুল মুনাওয়ারা’-এর জুমু‘আর খুত্ববার বঙ্গানুবাদ]
আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর ছালাত ও সালামের পরে সম্মানিত খত্বীব বলেছেন, আল্লাহর বান্দাগণ! আপনারা আল্লাহর তাক্বওয়া অবলম্বন করুন এবং তাঁরই আনুগত্য করুন। তাহলে আপনারা সফলতা, সৌভাগ্য, বিজয়, নে‘মত ও নিরাপত্তা লাভ করতে পারবেন। মহান আল্লাহ বলেন,الۡمُؤۡمِنُوۡنَ اَفۡلَحَ قَدۡ ‘অবশ্যই সফলকাম হয়েছে মুমিনগণ’ (সূরা আল-মুমিনুন : ১)।
মুসলিমগণ আজ বিভিন্ন উৎস থেকে উদগত নানা ধরণের ফিতনার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। এমন সব ফিতনা যার ভয়াবহতা বিশাল, ক্ষতি বিস্তৃত এবং উপকরণ ও কৌশল ভিন্ন ভিন্ন। লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আযীম!
ফিতনার দুর্ভোগ ও ভয়াবহতা থেকে একজন মুসলিম যে সুদৃঢ় স্তম্ভে ঠাঁই গ্রহণ করবে তাহল সৃষ্টিকর্তার নিকট আশ্রয়গ্রহণ, তাঁর রজ্জুকে মজবুতভাবে ধারণ ও আনুগত্যের বাস্তবায়ন এবং তাঁর শরী‘আতকে দৃঢ়ভাবে মেনে চলা। মহান আল্লাহ বলেন, وَ اسۡتَعِیۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَ الصَّلٰوۃِ ‘আর তোমরা ধৈর্য ও ছালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ৪৫)। তিনি আরো বলেন, فَفِرُّوۡۤا اِلَی اللّٰہِ ‘অতএব তোমরা আল্লাহর দিকে ধাবিত হও’ (সূরা আয-যারিয়াত : ৫০)।
এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নবী (ﷺ)-এর দিক-নির্দেশনা ও শাশ্বত অছীয়ত এসেছে, যিনি ছিলেন তার উম্মতের মুক্তির ব্যাপারে উদগ্রীব। তিনি বলেন, اَلْعِبَادَةُ فِى الْهَرْجِ كَهِجْرَةٍ إِلَىَّ ‘হারজ' তথা ফিতনা-দুর্যোগের সময় ইবাদত করা আমার নিকট হিজরতের সমতুল্য’।[১] হাদীছে উল্লেখিত ‘হারজ’ দ্বারা উদ্দেশ্য হল, যুদ্ধ-বিগ্রহের দিন, ভয় ও শঙ্কার সময় এবং যখন মানুষের বিষয়গুলো এমন সব কষ্ট-ক্লেশের সাথে মিশে যায় যা তারা তাদের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভয় পেয়ে থাকে; ফলে তাদের বিষয়গুলো উত্তমরূপে পরিচালিত হয় না। বরং তারা জটিল ও চরম অস্থির অবস্থায় থাকে। এমন মূহুর্তে তাদের নাজাতের একমাত্র উপায় হল তাদের রবের নিকট আশ্রয়গ্রহণ ও প্রত্যাবর্তন এবং শরী‘আত অনুযায়ী আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশ অনুসারে তাদের জীবন, কর্ম ও দৃষ্টিভঙ্গি পরিচালনা করা।
এটাই হচ্ছে আমাদের নবীর মানহাজ, যা ফিতনার সময়ের ইবাদতকে বিশাল মর্যাদা দেয়। কেননা ফিতনার কারণে মানুষের মাঝে শত্রুতা, যুলুম, মিথ্যা ও ঝগড়া-বিবাদের প্রাদুর্ভাব ঘটে; যা আল্লাহর দ্বীনে নিষিদ্ধ। বরং অনেকেই তখন সত্য মানহাজ থেকে বিচ্যুত হয়ে ভিন্ন কিছুতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তাই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদেরকে দীক্ষা দিয়েছেন যে, হিজরত হয় নিজের মাতৃভূমি, দেশ এবং এর প্রতি আক্সক্ষাকে আল্লাহর জন্য ত্যাগ করার উপর ভিত্তি করে। এমনিভাবে আল্লাহর ইবাদতের প্রতি মনোনিবেশ এবং সামগ্রিকভাবে তা প্রতিপালন মুসলিমদেরকে এমন দিকে পরিচালিত করে যা সরল পথ ও সঠিক মানহাজ থেকে পদস্খলন, ভ্রান্তি ও বিচ্যুতি হতে রক্ষা করে।
বিদ্বানগণ বলেন, ফিতনার সময় মানুষেরা আল্লাহর বিধান ও শরী‘আত হতে দূরে সরে প্রবৃত্তি, নিজস্ব চিন্তাধারা ও পসন্দের দিকে ফিরে যায়। কাজেই যে ব্যক্তি এ অবস্থা থেকে আল্লাহর ইবাদতের দিকে প্রত্যাবর্তন করে ও তাঁর অভিমুখী হয় সে হিজরতকারীর ন্যায়।
যে কেউ বর্তমান ইসলামী বিশ্বের দিকে তাকালে দেখতে পাবে যে, যখনই কোন মুছীবত আপতিত হয় ও ফেতনার উদ্ভব ঘটে তখনই কিছু লোক পাওয়া যায় যারা মুসলিমদের ঐক্য বিনষ্ট ও অন্যকে অপবাদ দেয়ার চেষ্টায় লিপ্ত থাকে; যা আল্লাহর রুজ্জুকে আঁকড়ে ধরা এবং বিভক্তি ও মতবিরোধ পরিহারে আগ্রহী থাকার আল্লাহ প্রদত্ত শারঈ মানহাজের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
কাজেই হে মুসলিম! আপনি আল্লাহকে ভয় করুন এবং আপনার অজান্তেই শয়তান ও শত্রুর মুখপাত্র হওয়া থেকে সতর্ক হোন। বস্তুত শত্রুরা সবচেয়ে বেশি যে বিষয়গুলোকে ভয় করে তাহল : আল্লাহর কিতাবকে মুসলিমদের আঁকড়ে ধরা, তাদের একতাবদ্ধতা, মতৈক্য, ভালকাজে পারস্পরিক সহযোগিতা, রবের আনুগত্যে অবিচলতা, দ্বীনের সঠিক মানহাজ গ্রহণ, সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ফিতনা ও মুছীবতের মোকাবেলা, সর্বদা আল্লাহর ভয় নিয়ে সাধনা করা, দায়িত্বপরায়ণ হওয়া এবং মুসলিম উম্মতের স্বার্থ বাস্তবায়ন করা।
সুতরাং হে মুসলিমগণ! আপনারা নিজেদেরকে সেসব কাজে সম্পৃক্ত রাখুন যা আপনাদের দ্বীন ও দুনিয়াবী স্বার্থ রক্ষা করবে এবং তা সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় অবলম্বন ও সরঞ্জাম প্রস্তুত করুন। আর সর্বশ্রেষ্ঠ অবলম্বন হল আল্লাহর শরী‘আতের উপর অবিচল থাকা এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সুন্নাতের আলোকে জীবন পরিচালনা করা। আপনারা দ্বীন, আক্বীদা, দ্বীনি সম্প্রীতি এবং আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুমিনদের সাথে বন্ধুত্বের উপর পারস্পরিক ফলপ্রসূ সহযোগিতা ও অকৃত্রিম ভ্রাতৃত্বের ইবাদত বাস্তবায়ন করুন। আল্লাহ বলেন,
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا لَقِیۡتُمۡ فِئَۃً فَاثۡبُتُوۡا وَ اذۡکُرُوا اللّٰہَ کَثِیۡرًا لَّعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ . وَ اَطِیۡعُوا اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ وَ لَا تَنَازَعُوۡا فَتَفۡشَلُوۡا وَ تَذۡہَبَ رِیۡحُکُمۡ وَ اصۡبِرُوۡا ؕ اِنَّ اللّٰہَ مَعَ الصّٰبِرِیۡنَ .
‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন কোন দলের সম্মুখীন হবে, তখন অবিচল থাক এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। আর তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর এবং নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করবে না, করলে তোমরা সাহস হারাবে এবং তোমাদের শক্তি বিলুপ্ত হবে। আর তোমরা ধৈর্য ধারণ কর; নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন’ (সূরা আল-আনফাল : ৪৫-৪৬)।
আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,
بَادِرُوْا بِالْأَعْمَالِ فِتَنًا كَقِطَعِ اللَّيْلِ الْمُظْلِمِ يُصْبِحُ الرَّجُلُ مُؤْمِنًا وَيُمْسِيْ كَافِرًا وَيُمْسِيْ مُؤْمِنًا وَيُصْبِحُ كَافِرًا يَبِيْعُ دِيْنَهُ بِعَرَضٍ مِّنَ الدُّنْيَا
‘রাতের গভীর অন্ধকারের ন্যায় ফিতনা আসার আগেই তোমরা নেক আমলের প্রতি অগ্রসর হও। সে সময় সকালে একজন মুমিন হলে বিকালে কাফির হয়ে যাবে। বিকালে মুমিন হলে সকালে কাফির হয়ে যাবে। দুনিয়ার সামগ্রীর বিনিময়ে সে তার দ্বীন বিক্রি করে বসবে’।[২]
সুতরাং হে মুসলিমগণ! আপনারা সকল ধরণের ফিতনার মোকাবিলা করুন আল্লাহর একনিষ্ঠ আনুগত্য এবং এসব ঐশ্বরিক নির্দেশনা মজবুতভাবে ধারণ করার মাধ্যমে। তাহলে আপনারা ফিতনার দুর্বিপাক এবং বিপদের তীব্র প্রবাহ থেকে মুক্ত থাকবেন। বিশেষত বর্তমান যুগে; যখন শত্রুরা সকল ধরণের ষড়যন্ত্র, ফাসাদ সৃষ্টির নানা উপায় এবং অন্যায় উপকরণের মাধ্যমে ইসলাম ও মুসলিমদের ক্ষতি সাধনের প্রচেষ্টা করছে। আর এ থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হল, মুসলিমদের পাপাচারের পথ ছেড়ে আনুগত্যের পথে ফিরে আসা এবং নিষিদ্ধ বিষয় থেকে দূরে থাকা। আল্লাহ বলেন,
وَ اِنۡ تُصِبۡکُمۡ سَیِّئَۃٌ یَّفۡرَحُوۡا بِہَا ؕ وَ اِنۡ تَصۡبِرُوۡا وَ تَتَّقُوۡا لَا یَضُرُّکُمۡ کَیۡدُہُمۡ شَیۡـًٔا ؕ اِنَّ اللّٰہَ بِمَا یَعۡمَلُوۡنَ مُحِیۡطٌ.
‘তোমরা যদি ধৈর্য ধারণ কর এবং মুত্তাক্বী হও তবে তাদের ষড়যন্ত্র তোমাদের কিছুই ক্ষতি করতে পারবে না। তারা যা করে নিশ্চয় আল্লাহ তা পরিবেষ্টন করে রয়েছেন’ (সূরা আলে ইমরান : ১২০)।
সুতরাং দ্বীনকে মজবুতভাবে ধারণ ও রবের শরী‘আতের বিধান বাস্তবায়ন ব্যতীত মুসলিমদের সম্মান, বিজয়, শক্তি, স্থিতিশীলতা, শান্তি ও নিরাপত্তার কোন পথ নেই। মহান আল্লাহ বলেন, وَ لَا تَہِنُوۡا وَ لَا تَحۡزَنُوۡا وَ اَنۡتُمُ الۡاَعۡلَوۡنَ اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ‘তোমরা হীনবল হয়ো না এবং চিন্তিতও হয়ো না; তোমরাই বিজয়ী হবে যদি তোমরা মুমিন হও’ (সূরা আলে ইমরান : ১৩৯)। তিনি আরো বলেন, یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنۡ تَنۡصُرُوا اللّٰہَ یَنۡصُرۡکُمۡ وَ یُثَبِّتۡ اَقۡدَامَکُمۡ ‘হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, তবে তিনি তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের অবস্থান সুদৃঢ় করবেন’ (সূরা মুহাম্মাদ : ৭)।
দ্বিতীয় খুত্ববা
আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর ছালাত ও সালামের পরে সম্মানিত খত্বীব বলেছেন, আল্লাহর বান্দাগণ! সকল ফিতনা থেকে মুক্তির উপায় হল দ্বীন দ্বারা দুনিয়া সংশোধন করা এবং বিশ্বপ্রতিপালকের বিধান অনুযায়ী পৃথিবী আবাদ করা। মহান আল্লাহ বলেন, وَ الَّذِیۡنَ جَاہَدُوۡا فِیۡنَا لَنَہۡدِیَنَّہُمۡ سُبُلَنَا ؕ وَ اِنَّ اللّٰہَ لَمَعَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ‘আর যারা আমার পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, তাদেরকে আমি অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আর নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সাথে আছেন’ (সূরা আল-আনকাবুত : ৬৯)।
আর যে ব্যক্তি তার জীবনকে রবের তাক্বওয়া দ্বারা পরিবেষ্টন করে রাখবে, তিনি তার জন্য সকল সংকীর্ণতা থেকে উত্তরণ এবং সকল বিপদ ও ফিতনা থেকে মুক্তির পথ বের করে দিবেন। আর তার জন্য নির্ধারণ করবেন উত্তম পরিণতি। মহান আল্লাহ বলেন, وَ مَنۡ یَّتَّقِ اللّٰہَ یَجۡعَلۡ لَّہٗ مَخۡرَجًا ‘আর যে কেউ আল্লাহর তাক্বওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ তার জন্য (উত্তরণের) পথ করে দেবেন’ (সূরা আত-ত্বলাক : ০২)।
জেনে রাখুন যে, অন্যতম শ্রেষ্ঠ আমল হল রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর বেশি বেশি দরূদ পাঠ করা। হে আল্লাহ! ছালাত ও সালাম বর্ষণ করুন তাঁর উপর ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর যতক্ষণ দিন ও রাতের আবর্তন চলমান থাকে। এমন ছালাত যার মাধ্যমে আমাদের দুশ্চিন্তা ও বিপদাপদ দূরীভূত হয় এবং আমাদের পাপ মোচন হয়।
হে আল্লাহ! আপনি হেদায়াতপ্রাপ্ত খলীফাগণের প্রতি সন্তুষ্ট হোন। সমস্ত ছাহাবী ও ক্বিয়ামত অবধি যারা তাদের অনুসরণ করবে তাদের সকলের প্রতিও সন্তুষ্ট হোন।
হে আল্লাহ! মুমিন নর-নারীদেরকে ক্ষমা করুন, তাদের যাবতীয় বিষয় সহজ করে দিন এবং তাদের দুশ্চিন্তা ও বিপদাপদ দূর করুন।
হে আল্লাহ ! আপনি আমাদেরকে ও তাদেরকে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য ফিতনার অনিষ্ট থেকে রক্ষা করুন।
হে আল্লাহ! মুমিনদেরকে হেফাযত করুন এবং তাদের জন্য সাহায্যকারী ও সহায়তাকারী হয়ে যান।
হে আল্লাহ! আপনি অত্যাচারী ইয়াহুদীদেরকে পাকড়াও করুন, তাদের উপর আপনার বাহিনীকে কর্তৃত্ববান করুন এবং তাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করুন; কেননা তারা যুলুম করেছে, সীমালঙ্ঘন করেছে, বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে এবং ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।
হে আল্লাহ! আপনি গাজা ও সকল দেশের মুসলিমদের জন্য সাহায্যকারী হোন। আপনি তাদের উপরে এমন রহমত নাযিল করুন যা দ্বারা তাদের অবস্থা সংশোধিত হবে এবং তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে আপনার সাহায্য অবতীর্ণ করুন।
হে আল্লাহ! আপনি শত্রুদের ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে দিন এবং তাদের চক্রান্তের মাঝে তাদের ধ্বংস নির্ধারণ করুন। হে পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়!
হে আল্লাহ! আপনি খাদেমুল হারামাইন ও তার নায়েবকে তাওফীক্ব দান করুন এবং তাদের দ্বারা মুসলিমদের অবস্থা সংশোধন করে দিন। হে আল্লাহ! আমাদের দেশে বৃষ্টি বর্ষণ করুন, আমাদের যমীনকে সিক্ত করুন এবং সমগ্র মুসলিম ভূখণ্ডকে প্রভূত কল্যাণ ও উপকারিতা দ্বারা ব্যাপৃত করুন। আপনার প্রশংসার সাথে আমরা আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত ভাল কর্ম করার এবং খারাপ কর্ম থেকে বিরত থাকার সামর্থ নেই। আপনি ব্যতীত সত্য কোন ইলাহ নেই; আপনি কতইনা পবিত্র ও মহান, নিশ্চয়ই আমরা যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছি।
পরিশেষে খত্বীব মহোদয় আল্লাহর প্রশংসা এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর দরূদ পাঠ করেন। মুসলিম উম্মাহ ও ইসলামের জন্য দু‘আ চাওয়ার মাধ্যমে খুত্ববা সমাপ্ত করেন।
* পি-এইচ.ডি গবেষক, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব এবং বাংলা আলোচক ও জুমু‘আর খুৎবার লাইভ অনুবাদক, মসজিদে নববী।
[১]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৯৪৮।
[২]. ছহীহ মুসলিম, হা/১১৮; মিশকাত, হা/৫৩৮৩।
প্রসঙ্গসমূহ »:
খুত্ববাতুল হারামাইন