দ্বীন মানেই হচ্ছে শুভকামনা
-খত্বীব : শাইখ ড. আলী বিন আব্দুর রহমান হুযায়ফী
-অনুবাদ : হারুনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী*
[গত ১২ রবিউল আখের ১৪৪২ হি. মোতাবেক ২৭ নভেম্বর, ২০২০ তারিখের মসজিদে নববী, মদীনাতুল মুনাওয়ারা’-এর জুমু‘আর খুত্ববার বঙ্গানুবাদ]
প্রথম খুত্ববাহ
হাম্দ ও ছানার পর সম্মানিত খত্বীব ছাহেব বলেন, আপনারা সৎকর্ম সম্পাদন করে আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যমে এবং হারাম কাজ পরিহার করার মাধ্যমে তাঁর তাক্বওয়া অবলম্বন করুন। মূলত মুত্তাক্বীরাই সফলকাম আর প্রবৃত্তির অনুসারী ও সীমালঙ্ঘনকারীরাই ক্ষতিগ্রস্ত!
হে মুসলিমগণ! চূড়ান্ত হিসাবের সম্মুখীন হওয়ার পূর্বেই নিজেদের হিসাব নিজেরাই গ্রহণ করুন। গাফলতি থেকে অন্তরকে সজাগ রাখুন এবং নিজেদেরকে যাবতীয় হারাম বস্তু থেকে সংযত রাখুন। মৃত্যু ঘনিয়ে আসা ও আয়ু ফুরিয়ে যাবার পূর্বে এবং আমলের পথ বন্ধ হওয়ার আগেই তওবা করতে সচেষ্ট হোন। কেননা আপনারা দেখতে পাচ্ছেন যে, বছর ও দিনসমূহ কত দ্রুত অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে! জীবনের পরে তো মৃত্যু অবধারিত। আর মৃত্যুর পরে হয় সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের আবাস নতুবা যন্ত্রণাদায়ক আযাবের নিবাসে থাকতে হবে। আপনারা আরো জানেন যে, এই দুনিয়া হচ্ছে ধ্বংসশীল; অতএব চিরস্থায়ী পরকালের জন্য আমল করুন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
بَلۡ تُؤۡثِرُوۡنَ الۡحَیٰوۃَ الدُّنۡیَا-وَ الۡاٰخِرَۃُ خَیۡرٌ وَّ اَبۡقٰی
‘বরং তোমরা পার্থিব জীবনকেই প্রাধান্য দিয়ে থাক। অথচ পরকালই অধিক মঙ্গলজনক ও স্থায়ী’ (সূরা আল-‘আলা : ১৬-১৭)।
হে মুসলিমগণ! আপনারা আপনাদের রবের কিতাবের দিকে অগ্রসর হোন। কেননা এটাতেই সম্মান, সুখ ও কল্যাণ নিহিত রয়েছে। এতেই রয়েছে মৃত্যুর পর সৌভাগ্য। এতেই রয়েছে সুরক্ষা ও নাজাত এমন সব ফেতনা থেকে, যেগুলো ক্বিয়ামত যত নিকটবর্তী হতে থাকবে ততই বৃদ্ধি পাবে। শুরুতে সন্দেহজনক হলেও শেষে তা সুস্পষ্ট হয়ে যাবে। তবে তা থেকে রেহাই পাবে তারাই, যারা আল-কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরবে এবং মুসলিমদের দলভুক্ত থাকবে। অতএব আপনারা আল্লাহর কিতাবের প্রতি মনোনিবেশ করুন, তদনুযায়ী আমল করুন এবং রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সেসব সুন্নাতকে পূর্ণভাবে আয়ত্ত করুন, যেগুলো দ্বারা দ্বীনের বিধি-বিধান কায়েম হয়, আক্বীদা বিশুদ্ধ হয় এবং ইবাদতে পূর্ণতা আসে। বিশেষ করে ইসলামী বিধি-বিধান সম্বলিত ফযীলতপূর্ণ হাদীছসমূহকে ভাল করে আয়ত্ত করতে ও সুন্দরভাবে আমল করার লক্ষ্যে সেগুলোর অর্থ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করুন। এটাই সালাফে সালেহীনের রীতি ছিল, যাদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَ السّٰبِقُوۡنَ الۡاَوَّلُوۡنَ مِنَ الۡمُہٰجِرِیۡنَ وَ الۡاَنۡصَارِ وَ الَّذِیۡنَ اتَّبَعُوۡہُمۡ بِاِحۡسَانٍ ۙ رَّضِیَ اللّٰہُ عَنۡہُمۡ وَ رَضُوۡا عَنۡہُ وَ اَعَدَّ لَہُمۡ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ تَحۡتَہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَاۤ اَبَدًا ؕ ذٰلِکَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ
‘আর মুহাজির ও আনছারদের মধ্যে যারা প্রথম অগ্রগামী এবং যারা ইহসানের সাথে তাদের অনুসরণ করে আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন। আর তিনি তাদের জন্য তৈরি করেছেন জান্নাত, যার নিচে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে। এ তো মহাসাফল্য’ (সূরা আত-তওবাহ : ১০০)।
এখানে বহু মর্মার্থবোধক একটি হাদীছ উল্লেখ করতে চাই, যা সব সময়ের জন্য প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপর আমল করা যরূরী এবং যতদিন দেহে প্রাণ আছে ততদিনই সব নারী-পুরুষের এর উপর অবিচল থাকা আবশ্যক। সেটা হল- তামীম আদ-দারী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। যেখানে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
اَلدِّيْنُ النَّصِيْحَةُ قُلْنَا لِمَنْ قَالَ لِلهِ وَلِكِتَابِهِ وَلِرَسُوْلِهِ وَلِأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِيْنَ وَعَامَّتِهِمْ
‘দ্বীন মানেই হচ্ছে শুভকামনা। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, কার জন্য হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তিনি বললেন, আল্লাহ, তাঁর কিতাব, তাঁর রাসূল, মুসলিম নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ সকল মুসলিমের জন্য’।[১]
উক্ত হাদীছটি মহা গুরুত্বপূর্ণ একটি বর্ণনা। ইমাম আবূ দাঊদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
اَلْفِقْهُ يَدُوْرُ عَلَى خَمْسَةِ أَحَادِيْثِ اَلْحَلَالُ بَيِّنٌ وَالْحَرَامُ بيِّنٌ وَقَوْلُهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا ضَرَرَ وَلَا ضِرَارَ وَقَوْلُهُ إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَاتِ وَقَوْلُهُ الدِّيْنُ النَّصِيْحَةُ وَقَوْلُهُ وَمَا نَهَيْتُكُمْ عَنْهُ فَاجْتَنِبُوْهُ وَمَا أَمَرْتُكُمْ بِهِ فَائتُوْا مِنْهُ مَا اسْتَطَعْتُمْ
‘ফেক্বহী বিষয়সমূহ পাঁচটি হাদীছ কেন্দ্রিক সীমাবদ্ধ। ১. হালাল স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট। ২. অন্য কারো ক্ষতি করা যাবে না এবং নিজের ক্ষতি করতেও সমর্থন দেয়া যাবে না। ৩. আমলসমূহ নিয়তের উপর নির্ভরশীল। ৪. দ্বীন মানেই হচ্ছে শুভকামনা। ৪. আমি যা থেকে তোমাদেরকে সতর্ক করেছি তোমরা তা পরিহার করে চল, আর যা করতে নির্দেশ দিয়েছি তা তোমরা সাধ্যমত পালন কর’।[২]
ইমাম হাফেয আবূ নু‘অঈম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, هذا حديْثٌ له شأن ذكر محمدُ بنُ أسلم الطوسي أنَّه أحدُ أرباع الدي ‘উক্ত হাদীছটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। মুহাম্মাদ ইবনু আসলাম আত-তূসী উল্লেখ করেছেন যে, এই হাদীছটি দ্বীনের এক চতুর্থাংশ’।[৩]
প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য সর্বদা এই হাদীছ অনুযায়ী আমল করা যরূরী। মর্মে একটি প্রমাণ হচ্ছে যে, বৈধ ওযর ও কারণ বিদ্যমান থাকার কারণে আল্লাহ তা‘আলা কিছু কিছু ইবাদত কোন কোন ব্যক্তির উপর রহিত করেছেন। কিন্তু ওযর থাকুক বা নাই থাকুক কোন অবস্থাতেই নছিহত বা শুভকামনাকে রহিত করেননি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
لَیۡسَ عَلَی الضُّعَفَآءِ وَ لَا عَلَی الۡمَرۡضٰی وَ لَا عَلَی الَّذِیۡنَ لَا یَجِدُوۡنَ مَا یُنۡفِقُوۡنَ حَرَجٌ اِذَا نَصَحُوۡا لِلّٰہِ وَ رَسُوۡلِہٖ ؕ مَا عَلَی الۡمُحۡسِنِیۡنَ مِنۡ سَبِیۡلٍ ؕ وَ اللّٰہُ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ
‘যারা দুর্বল, পীড়িত এবং অর্থ সাহায্যে অসমর্থ তাদের কোন অপরাধ নেই যদি তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের হিতাকাক্সক্ষী হয়। মুহসিনদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন পথ নেই! আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’ (সূরা আত-তাওবাহ : ৯১)।
উক্ত আয়াতে সুস্পষ্ট হল যে, কোন মুসলিমের এক পলকের জন্য হলেও হিতাকাক্সক্ষা, নছিহত বা শুভকামনা বর্জন করার কোন ওযর আল্লাহ গ্রহণ করেন না। ছাহাবায়ে কেরাম হিতাকাক্সক্ষার মর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেননি; যেহেতু সহমত পোষণ, সম্পৃক্ত থাকা ও বিধি-বিধানকে আঁকড়ে ধরার মাধ্যমে সর্বজনীন এই দ্বীনের সঠিক ভাবার্থ তারা জানতেন- যার সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে ইসলাম, ঈমান ও ইহসানের স্তরসমূহ। বরং তারা জিজ্ঞেস করলেন, সেটা কার জন্য, কারা এটার প্রকৃত যোগ্য?
নছীহত বা হিতাকাক্সক্ষার মূল অর্থ হচ্ছে কোন বস্তুকে দোষ-ত্রুটি, আবর্জনা ও পঙ্কিলতা হতে মুক্ত করা। আর আল্লাহর জন্য হিতাকাক্সক্ষা বলতে, তাঁকে ভালোবাসা, তাঁর প্রতি বিনয়াবনত হওয়া এবং তাঁর সন্তুষ্টি ও প্রতিদানের আশায় এবং ক্রোধ ও শাস্তির ভয়ে তাঁর শরী‘আতের বিধি-বিধানের সামনে আত্মসমর্পন করা। তিনি বলেন,
اِنَّمَا یُؤۡمِنُ بِاٰیٰتِنَا الَّذِیۡنَ اِذَا ذُکِّرُوۡا بِہَا خَرُّوۡا سُجَّدًا وَّ سَبَّحُوۡا بِحَمۡدِ رَبِّہِمۡ وَ ہُمۡ لَا یَسۡتَکۡبِرُوۡنَ- تَتَجَافٰی جُنُوۡبُہُمۡ عَنِ الۡمَضَاجِعِ یَدۡعُوۡنَ رَبَّہُمۡ خَوۡفًا وَّ طَمَعًا ۫ وَّ مِمَّا رَزَقۡنٰہُمۡ یُنۡفِقُوۡنَ
‘শুধু তারাই আমাদের আয়াতসমূহের উপর ঈমান আনে, যারা সেটার দ্বারা উপদেশপ্রাপ্ত হলে সেজদায় লুটিয়ে পড়ে এবং তাদের রবের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, আর তারা অহংকার করে না। তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা হতে দূরে থাকে, তারা তাদের রবকে ডাকে আশঙ্কা ও আশা নিয়ে এবং আমরা তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে তারা ব্যয় করে’ (সূরা আস-সাজদাহ : ১৫-১৬)। তিনি আরো বলেন,
وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَشَدُّ حُبًّا لِّلّٰہِ
‘আর যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহকে সর্বাধিক ভালোবাসে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৬৫)।
আল্লাহর প্রতি হিতাকাক্সক্ষার সর্বোত্তম নমুনা হল, ইখলাছের সাথে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাত ও নির্দেশনা মেনে একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা, যার কোন শরীক নেই। দু‘আ করা, সাহায্য চাওয়া, উদ্ধার কামনা করা ও ভরসা করা ইত্যাদি সকল ইবাদত একমাত্র মহান রব আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করা। আল্লাহ বলেন, قُلۡ اِنَّمَاۤ اَدۡعُوۡا رَبِّیۡ وَ لَاۤ اُشۡرِکُ بِہٖۤ اَحَدًا ‘(হে নবী!) আপনি বলুন, আমি কেবল আমার রবকেই ডাকি। আর তাঁর সাথে কোন অংশীদার স্থাপন করি না’ (সূরা আল-জিন : ২০)।
একমাত্র মহান রব আল্লাহই ইবাদতের যোগ্য। কেননা তিনি পূর্ণ গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্যের অধিকারী এবং যাবতীয় দোষ-ত্রুটি ও অপূর্ণতা হতে পবিত্র ও মুক্ত। তাছাড়া যেহেতু সকল সৃষ্টির উপর তাঁর দয়া ও অনুগ্রহ রয়েছে এবং সকল বান্দারা তাঁরই মুখাপেক্ষী। ফলে তাঁর ইবাদত করা নে‘মত লাভের কারণ এবং উভয় জগতে বালা-মছিবত দূর করার উপায়।
আল্লাহর প্রতি হিতাকাক্সক্ষার অন্যতম উদাহরণ হল- আল্লাহর জন্য সেসব নাম ও গুণাবলী কোনরূপ পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সাদৃশ্য ও ধরন বর্ণনা না করে অনুরূপ সাব্যস্ত করা, যা তিনি স্বীয় কিতাবে নিজের জন্য সাব্যস্ত করেছেন অথবা যা তাঁর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর জন্য সাব্যস্ত করে গেছেন; যেগুলোর উপর সালাফে সালেহীন বিশ্বাসী ছিলেন।
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য হিতাকাক্সক্ষা বলতে বুঝায়, তাঁকে মহব্বত ও সম্মান করা, তাঁর সুন্নাতের কদর করা, তিনি যা করতে বলেছেন তা পালন করা ও যা নিষেধ করেছেন তা পরিহার করা, তাঁর শরী‘আত ও নির্দেশনা মোতাবেক আল্লাহর ইবাদত করা, তিনি যেসব সংবাদ দিয়েছেন তা বিশ্বাস করা, তাঁর সুন্নাতের প্রচার করা এবং তাঁর দ্বীনের দিকে মানুষকে আহ্বান করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
قُلۡ اَطِیۡعُوا اللّٰہَ وَ اَطِیۡعُوا الرَّسُوۡلَ ۚ فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَاِنَّمَا عَلَیۡہِ مَا حُمِّلَ وَ عَلَیۡکُمۡ مَّا حُمِّلۡتُمۡ ؕ وَ اِنۡ تُطِیۡعُوۡہُ تَہۡتَدُوۡا ؕ وَ مَا عَلَی الرَّسُوۡلِ اِلَّا الۡبَلٰغُ الۡمُبِیۡنُ
‘(হে নবী!) আপনি বলুন, তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর। তারপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে তার উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য তিনিই দায়ী এবং তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য তোমরাই দায়ী; তবে তোমরা তার আনুগত্য করলে সৎপথ পাবে। মূলত রাসূলের দায়িত্ব শুধু স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া’ (সূরা আন-নূর : ৫৪)।
আল্লাহর কিতাবের প্রতি হিতাকাক্সক্ষা বলতে বুঝায়, কুরআনকে সম্মান করা ও ভালোবাসা, তা নিজে শিখা ও অপরকে শিখানোর প্রচেষ্টা করা, এর বিধানগুলো সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান লাভ করা, বিশুদ্ধভাবে তেলাওয়াত করা, এর মাঝে বর্ণিত আদেশ-নিষেধগুলো মেনে চলা, নিয়মিত তেলাওয়াত চর্চা ও মুখস্থ করা, সঠিকভাবে এর অর্থসহ তাফসীর ও মর্ম জানা, গবেষণা করা এবং এর নির্দেশিত পন্থায় নিজেকে অলংকৃত করা। সেই সাথে যারা কুরআন ও সুন্নাহর বিষয়ে পথভ্রষ্ট তাদেরকে খ-ন করা এবং তাদের ভ্রান্ত মতবাদের প্রতিবাদ করা ও জনগণকে সতর্ক করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
اِنَّ ہٰذَا الۡقُرۡاٰنَ یَہۡدِیۡ لِلَّتِیۡ ہِیَ اَقۡوَمُ ‘নিশ্চয় এ কুরআন হেদায়াত করে সে পথের দিকে, যা সুদৃঢ়’ (সূরা বানী ইসরাঈল : ৯)।
আর মুসলিম নেতৃবৃন্দের জন্য হিতাকাক্সক্ষা বলতে বুঝায়, তাদের কল্যাণ চাওয়া, তাদের ন্যায়পরায়ণতাকে ভালোবাসা, তাদের সফলতায় আনন্দিত হওয়া, তাদেরকে ধোঁকা না দেয়া, তাদের খেয়ানত না করা, তাদের বিরুদ্ধে গিয়ে বিক্ষোভ না করা, তাদেরকে ন্যায়সংগত বিষয়ে সহযোগিতা করা, অন্যায় ছাড়া ভাল কাজে তাদের আনুগত্য করা এবং তাদের সফলতার জন্য ও বিভিন্ন সিদ্ধান্তে সঠিকতার জন্য আল্লাহর কাছে তাওফীক্ব কামনা করে দু‘আ করা। আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
إِنَّ اللهَ يَرْضَى لَكُمْ ثَلَاثًا وَيَكْرَهُ لَكُمْ ثَلَاثًا فَيَرْضَى لَكُمْ أَنْ تَعْبُدُوْهُ وَلَا تُشْرِكُوْا بِهِ شَيْئًا وَأَنْ تَعْتَصِمُوْا بِحَبْلِ اللهِ جَمِيْعًا وَلَا تَفَرَّقُوا وَيَكْرَهُ لَكُمْ قِيْلَ وَقَالَ وَكَثْرَةَ السُّؤَالِ وَإِضَاعَةِ الْمَالِ
‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের জন্য তিনটি বিষয়কে পসন্দ করেন এবং তিনটি বিষয়কে অপসন্দ করেন। তোমাদের জন্য যে তিনটি বিষয় পসন্দ করেন, তা হচ্ছে- আল্লাহর ইবাদত করা, তার সাথে কোন কিছুর শরীক না করা এবং সকলে মিলে আল্লাহর রজ্জুকে ধারণ করা ও বিভক্ত না হওয়া। আর তোমাদের জন্য যে তিনটি বিষয় অপসন্দ করেন, তা হচ্ছে- সমালোচনা করা, অহেতুক বেশি বেশি প্রশ্ন করা এবং মাল নষ্ট করা’।[৪] আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, وَإِنَّ مَا تَكْرَهُوْنَ فِي الطَّاعَةِ وَالْجَمَاعَةِ خَيْرٌ مِمَّا تُحِبُّوْنَ ‘জামা‘আতবদ্ধ থাকার বিষয়ে তোমরা যা অপসন্দ করছ, তার চেয়ে সেটাই কল্যাণকর যা তোমরা বিভক্ত হয়ে ভাল মনে করছ’।[৫]
শুভকামনাতেই রয়েছে হৃদয়ের প্রশান্তি ও সুরক্ষা। যুবাইর ইবনু মুত্বঈম (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদে খাইফে খুত্ববাহ দেয়ার সময় বলেছেন,
ثَلَاثٌ لَا يُغَلُّ عَلَيْهِنَّ قَلْبُ مُسْلِمٍ إِخْلَاصُ الْعَمَلِ لِلهِ وَمُنَاصَحَةُ أَئِمَّةِ الْمُسْلِمِيْنَ وَلُزُوْمِ جَمَاعَتِهِمْ
‘তিনটি বিষয়ে মুমিনের অন্তর প্রতারণা করতে পারে না: একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য আমল করা, নেতৃবর্গের জন্য শুভকামনা করা এবং মুসলিম জামা‘আতকে আঁকড়ে থাকা’।[৬] মা‘ক্বাল ইবনু ইয়াছার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
مَا مِنْ عَبْدٍ اسْتَرْعَاهُ اللهُ رَعِيَّةً فَلَمْ يَحُطْهَا بِنَصِيْحَةٍ إِلَّا لَمْ يَجِدْ رَائِحَةَ الْجَنَّةِ
‘যে বান্দাকে আল্লাহ তা‘আলা সাধারণের উপর দায়িত্বশীল করেছেন, অতঃপর সে [শাসক] তার হিতাকাক্সিক্ষতার সাথে তাদের অধিকারসমূহ রক্ষা করল না, সে ব্যক্তি জান্নাতের সুগন্ধি পাবে না অর্থাৎ জান্নাতে প্রবেশ করবে না’।[৭]
আর সাধারণ সকল মুসলিমের জন্য হিতাকাক্সক্ষা বলতে বুঝায়, তাদেরকে কল্যাণের দিকে পথ-নির্দেশনা দেয়া, ধর্মীয় বিষয়ে তাদেরকে যথাযথ শিক্ষা প্রদান করা, তাদের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখা, প্রয়োজন মেটানো, তাদের সাথে প্রতারণা ও ধোঁকা না দেয়া, তাদের প্রতি হিংসা-প্রতিহিংসা চরিতার্থ না করা এবং অন্যায়ভাবে কোন অপবাদ আরোপ না করা। শুভকামনা ও হিতাকাক্সক্ষা পোষণ করা নবী-রাসূলদের বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
لَقَدۡ جَآءَکُمۡ رَسُوۡلٌ مِّنۡ اَنۡفُسِکُمۡ عَزِیۡزٌ عَلَیۡہِ مَا عَنِتُّمۡ حَرِیۡصٌ عَلَیۡکُمۡ بِالۡمُؤۡمِنِیۡنَ رَءُوۡفٌ رَّحِیۡمٌ
‘অবশ্যই তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য হতেই একজন রাসূল এসেছেন, তোমাদের যে দুঃখ-কষ্ট হয়ে থাকে তা তার জন্য বড়ই বেদনাদায়ক। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি তিনি করুণাশীল ও অতি দয়ালু’ (সূরা আত-তওবাহ : ১২৮)।
নূহ (আলাইহিস সালাম) -এর উক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, اُبَلِّغُکُمۡ رِسٰلٰتِ رَبِّیۡ وَ اَنۡصَحُ لَکُمۡ ‘আমি তোমাদের কাছে আমার রবের রিসালাত পৌঁছে দিচ্ছি এবং তোমাদের কল্যাণ কামনা করছি’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ৬২)। হুদ (আলাইহিস সালাম)-এর উক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, اُبَلِّغُکُمۡ رِسٰلٰتِ رَبِّیۡ وَ اَنَا لَکُمۡ نَاصِحٌ اَمِیۡنٌ ‘আমি তোমাদের কাছে আমার রবের রিসালাত পৌঁছে দিয়েছি এবং আমি তোমাদের একজন বিশ্বস্ত হিতাকাক্সক্ষী’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ৬৮)। ছালেহ (আলাইহিস সালাম)-এর উক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, لَقَدۡ اَبۡلَغۡتُکُمۡ رِسَالَۃَ رَبِّیۡ وَ نَصَحۡتُ لَکُمۡ ‘আমি তো আমার রবের রিসালাত তোমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলাম এবং তোমাদের কল্যাণ কামনা করেছিলাম’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ৭৯)।
কল্যাণ কামনা করা মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সূরা ইয়াসীনে আল্লাহ তা‘আলা জনৈক মুমিন বান্দার উক্তি উল্লেখ করে বলেন,
قَالَ یٰقَوۡمِ اتَّبِعُوا الۡمُرۡسَلِیۡنَ- اتَّبِعُوۡا مَنۡ لَّا یَسۡـَٔلُکُمۡ اَجۡرًا وَّ ہُمۡ مُّہۡتَدُوۡنَ-وَ مَا لِیَ لَاۤ اَعۡبُدُ الَّذِیۡ فَطَرَنِیۡ وَ اِلَیۡہِ تُرۡجَعُوۡنَ- ءَاَتَّخِذُ مِنۡ دُوۡنِہٖۤ اٰلِہَۃً اِنۡ یُّرِدۡنِ الرَّحۡمٰنُ بِضُرٍّ لَّا تُغۡنِ عَنِّیۡ شَفَاعَتُہُمۡ شَیۡئًا وَّ لَا یُنۡقِذُوۡنِ- اِنِّیۡۤ اِذًا لَّفِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ- اِنِّیۡۤ اٰمَنۡتُ بِرَبِّکُمۡ فَاسۡمَعُوۡنِ- قِیۡلَ ادۡخُلِ الۡجَنَّۃَ ؕ قَالَ یٰلَیۡتَ قَوۡمِیۡ یَعۡلَمُوۡنَ
‘সে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা রাসূলদের অনুসরণ কর। অনুসরণ কর তাদের যারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চায় না এবং তারা সৎপথ প্রাপ্ত। আমার কী হয়েছে যে, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং যাঁর নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে আমি তাঁর ইবাদত করব না? আমি কি তাঁর পরিবর্তে অন্য মা‘বূদ গ্রহণ করব? দয়াময় (আল্লাহ) আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাইলে তাদের শাফা‘আত আমার কোন কাজে আসবে না এবং তারা আমাকে উদ্ধার করতেও পারবে না। আমি অবশ্যই তখন স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে পড়ব। নিশ্চয় আমি তোমাদের প্রতিপালকের উপর ঈমান এনেছি অতএব তোমরা আমার কথা শ্রবণ কর। বলা হল- জান্নাতে প্রবেশ কর। সে বলল, হায়! আমার সম্প্রদায় যদি জানত’ (সূরা ইয়াসীন : ২০-২৬)। ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, نصح قومه في حياته وبعد مماته ‘লোকটি জীবদ্দশাতে স্বীয় জাতির কল্যাণ কামনা করেছে এবং মৃত্যুর পরও তাই করেছে’।[৮]
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘মুমিনগণ তো পরস্পর ভাই ভাই; কাজেই তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে আপস মীমাংসা করে দাও। আর আল্লাহর তাক্বওয়া অবলম্বন কর, যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও’ (সূরা আল-হুজুরাত : ১০)। তিনি আরো বলেন, وَ اعۡتَصِمُوۡا بِحَبۡلِ اللّٰہِ جَمِیۡعًا وَّ لَا تَفَرَّقُوۡا ‘আর তোমরা সকলে আল্লাহর রশি দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না’ (সূরা আলে ‘ইমরান : ১০৩)।
দ্বিতীয় খুত্ববাহ
হামদ ও ছানার পর সম্মানিত খত্বীব বলেন, আপনারা প্রকাশ্যে ও গোপণে সর্বাবস্থায় আল্লাহর তাক্বওয়া অবলম্বন করুন। তাক্বওয়ার মাধ্যমেই উচ্চ মর্যাদা লাভ করবেন এবং উভয়কালে ধন্য হবেন। হে আল্লাহর বান্দাগণ! আপনারা আল্লাহ তা‘আলার এই বাণীটি গভীরভাবে চিন্তা করুন,
وَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتُ بَعۡضُہُمۡ اَوۡلِیَآءُ بَعۡضٍ ۘ یَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ یَنۡہَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَ یُقِیۡمُوۡنَ الصَّلٰوۃَ وَ یُؤۡتُوۡنَ الزَّکٰوۃَ وَ یُطِیۡعُوۡنَ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ ؕ اُولٰٓئِکَ سَیَرۡحَمُہُمُ اللّٰہُ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَزِیۡزٌ حَکِیۡمٌ
‘আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী একে অপরের বন্ধু, তারা সৎকাজের আদেশ দেয় ও অসৎকাজে নিষেধ করে, ছালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। অচিরেই আল্লাহ তাদেরকে দয়া করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়’ (সূরা আত-তাওবাহ : ৭১)।
এই আয়াতে পারস্পরিক কল্যাণ কামনা, সহযোগিতা, হিতাকাক্সক্ষীতা, দায়িত্ববোধ, ভ্রাতৃত্ব, সহমর্মিতা ও মমত্ববোধের উপদেশ রয়েছে। হাদীছে এসেছে, জারীর ইবনু আব্দুল্লাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন,
بَايَعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى إِقَامِ الصَّلَاةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَالنُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ
‘আমি রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে বায়‘আত গ্রহণ করেছি ছালাত কায়েম করার, যাকাত প্রদান করার এবং প্রত্যেক মুসলিমের মঙ্গল কামনা করার উপর’।[৯] আবূ বকর আল-মুযানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
ما فاق أبوْ بكر رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أصحاب رسول الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بصومٍ ولا صلاةٍ ولكن بشيء كان في قلبه قال الذي كان في قلبه الحبُّ لله عز وجل والنصيحة في خلقه
‘বেশি বেশি ছালাত ছিয়াম পালন করে আবূ বকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ছাহাবীদের মধ্যে অধিক মর্যাদাবান হননি। বরং এমন একটি কারণে যা তার অন্তরে বদ্ধমূল ছিল। (ইবনু ‘উলাইয়া) বলেন, ‘তার অন্তর পরিপূর্ণ ছিল আল্লাহর প্রতি মহব্বত ও তাঁর সৃষ্টির প্রতি হিতাকাক্সক্ষা দ্বারা’।[১০]
হাকীম বিন আবূ ইয়াযীদ তার পিতা হতে বর্ণনা করেন যে, রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, إِذَا اسْتَنْصَحَ رَجُلٌ أَخَاهُ فَلْيَنْصَحْ لَهُ ‘তোমাদের কেউ যখন তার কোন ভাইয়ের কাছে নছিহত বা সুপরামর্শ কামনা করে, তখন সে যেন অবশ্যই তাকে নছিহত প্রদান করে’।[১১]
পরিশেষে খত্বীব মহোদয় আল্লাহর প্রশংসা এবং রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর দরূদ পাঠ করেন। অতঃপর ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ ও নিরপত্তার জন্য দু‘আ প্রার্থনার মাধ্যমে জুমু‘আর খুত্ববাহ সমাপ্ত করেন।
* পি-এইচ.ডি গবেষক, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব এবং বাংলা আলোচক ও জুমু‘আর খুৎবার লাইভ অনুবাদক, মসজিদে নববী।
তথ্যসূত্র :
[১]. ছহীহ মুসলিম, হা/৫৫; আবূ দাঊদ, হা/৪৯৪৪; মিশকাত, হা/৪৯৬৬।
[২]. ইবনু রজব আল-হাম্বালী, জামি‘ঊল ঊলূম ওয়াল হিকাম (বৈরূত : দারুল মা‘আরিফাহ, ১ম সংস্করণ, ১৪০৮ হি.), পৃ. ১০।
[৩]. প্রাগুক্ত, পৃ. ৭৭।
[৪]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৭১৫।
[৫]. মুসতাদরাকু আলাছ ছহীহাইন, হা/৮৬৬৩; ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর, হা/৮৯৭১, সনদ ছহীহ।
[৬]. ইবনু মাজাহ, হা/৩০৫৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৭৮৪; মুসতাদরাকু আলাছ ছহীহাইন, হা/২৯৬, সনদ ছহীহ।
[৭]. ছহীহ বুখারী, হা/৭১৫০; ছহীহ মুসলিম, হা/১৪২; মিশকাত, হা/৩৬৮৭।
[৮]. ইবনু কাছীর, তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম (দাই ত্বাইয়েবা, ২য় সংস্করণ, ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.), ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৫৭২।
[৯]. ছহীহ বুখারী, হা/৫২৪; ছহীহ মুসলিম, হা/৫৬; মিশকাত, হা/৪৯৬৭।
[১০]. ইবনু রজব, জামি‘ঊল ‘ঊলূম ওয়াল হিকাম, পৃ. ৮১।
[১১]. ছহীহ বুখারী, ‘ব্যবসা-বাণিজ্য’ অধ্যায়-৩৪, অনুচ্ছেদ-৬৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৩০৮।