রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৬:৪৪ পূর্বাহ্ন

চিকিৎসাশাস্ত্র এবং ডাক্তারের গুরুত্ব ও মর্যাদা

-খত্বীব : শাইখ ড. সালাহ আল বুদাইর
-অনুবাদ : হারুনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী*


[০১ সফর ১৪৪২ হি. মোতাবেক ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ তারিখের ‘মসজিদে নববী, মদীনাতুল মুনাওয়ারা’-এর জুমু‘আর খুত্ববাহর বঙ্গানুবাদ]

মহান আল্লাহর প্রশংসা এবং শেষ নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর ছালাত ও সালামের পর মুহতারাম শায়খ বলেন, হে মুসলিমগণ! চিকিৎসা বিদ্যা হচ্ছে একটি অতি উপকারী ও ব্যাপক প্রভাবশালী বিদ্যা। এ বিদ্যায় দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তি সমাজে সম্মানিত ও মর্যাদাসম্পন্ন হয়ে থাকেন, অথচ এই পর্যায়ে পৌঁছতে তাকে অনেক কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। একজন মেডিকেলের ছাত্রকে ধীরে ধীরে বিচক্ষণতার সাথে সামনে অগ্রসর হতে হয়। অবশেষে সে এমন সম্মানজনক অবস্থানে পৌঁছে যা কেবল কঠোর পরিশ্রমী, প্রত্যয়ী ও ধৈর্যশীল ব্যক্তিরাই অর্জন করতে পারে।

ইমাম শাফেয়ী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, বিদ্যা দু’রকমের। ১. ধর্মীয় বিদ্যা ও ২. চিকিৎসা বিদ্যা। রাবী’ বিন সুলাইমান (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘হালাল ও হারাম সম্পর্কিত জ্ঞানের পরে চিকিৎসা বিদ্যার চেয়ে অধিক মর্যাদাসম্পন্ন জ্ঞান রয়েছে বলে আমার জানা নেই’।

কেউ কেউ বলেছেন, ‘এমন দেশে বসবাস কর না যেখানে তোমাকে সুরক্ষা দেয়ার মত শাসক নেই, সুমিষ্ট তৃপ্তিদায়ক পানি নেই, সঠিক ফৎওয়া দেয়ার মত যোগ্যতাসম্পন্ন আলেম নেই এবং সুচিকিৎসা দেয়ার মত ডাক্তারও নেই’।

ইসলাম চিকিৎসা বিদ্যাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। এ সম্পর্কে জানতে পড়ুন, ছহীহ বুখারীর ‘চিকিৎসা অধ্যায়’, ছহীহ মুসলিমের ‘চিকিৎসা, রোগ ও ঝাঁড়ফুক অধ্যায়’, সুনানে আবূ দাঊদের ‘চিকিৎসা অধ্যায়’, সুনানে তিরমিযীর ‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চিকিৎসা অধ্যায়’, এবং সুনানে নাসাঈ ও সুনানে ইবনে মাজার ‘চিকিৎসা অধ্যায়’।

বর্ণিত হয়েছে যে, ইবনে মাসুয়াহ নামক জনৈক ডাক্তার যখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এই হাদীছটি পাঠ করেছেন, রাসূলুল্লাহ বলেছেন,  

مَا مَلَأَ آدَمِيٌّ وِعَاءً شَرًّا مِّنْ بَطْنٍ بِحَسْبِ ابْنِ آدَمَ أُكُلَاتٌ يُقِمْنَ صُلْبَهُ فَإِنْ كَانَ لَا مَحَالَةَ فَثُلُثٌ طَعَامٌ وَثُلُثٌ شَرَابٌ وَثُلُثٌ لِنَفَسِهِ

‘কোন ব্যক্তি তার উদর অপেক্ষা মন্দ কোন পাত্রকে ভর্তি করেনি। আদম সন্তানের জন্য এই পরিমাণ কয়েক লোকমাই যথেষ্ট, যা দ্বারা সে নিজের কোমরকে সোজা রাখতে পারে। যদি এর অধিক খাওয়ার প্রয়োজন মনে করে তবে এক-তৃতীয়াংশ খাদ্য, আরেক তৃতীয়াংশ পানীয় এবং তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য খালি রাখবে।[১] তখন তিনি বলেন, ‘মানুষ যদি এই হাদীছ মোতাবেক আমল করত তাহলে তারা রোগ-ব্যাধি হতে নিরাপদ থাকত এবং বিভিন্ন হাসপাতাল ও ফার্মেসি বন্ধ হয়ে যেত।

আরবরা বলে থাকেন যে, ‘সর্বোত্তম খাবার যা সকালে গ্রহণ করা হয়, আর সর্বোত্তম ডিনার যা রাতের অন্ধকার নেমে আসার আগেই গ্রহণ করা হয়’।

একজন অভিজ্ঞ ও বিচক্ষণ ডাক্তারই গোপন রোগ নির্ণয় করতে পারেন ও রুগ্ন চোখের ছানি দূর করতে পারেন। আল্লাহ তা‘আলা ডাক্তার কর্তৃক অস্ত্রোপাচারকে করেছেন রহমত স্বরূপ, ব্যান্ডেজ, সার্জারী ব্যবস্থা ও দেহের ভাঙ্গা, ফাটা ও ক্ষত স্থানের সেলাই ও জোড়া লাগানোর প্রক্রিয়াকে করেছেন দয়া, নাজাত ও উপশমের মাধ্যম স্বরূপ, আর ঔষধকে করেছেন আরোগ্য লাভের উপকরণ।

সহনশীলতা, ধৈর্য ও বন্ধুত্বতা হচ্ছে ডাক্তারের বৈশিষ্ট্য; কেননা সে রোগীর প্রতি কোমল, যত্নশীল ও সান্তনা প্রদানকারী, আর আল্লাহই তার আরোগ্য ও সুস্থতা দানকারী। আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কোন ভাবেই ডাক্তাররা সবাই মিলে চেষ্টা করলেও রোগীকে সুস্থ করে তুলতে পারবে না। কেননা তিনিই একমাত্র আরোগ্যদাতা, যিনি রোগ দিয়ে পরীক্ষা করেন, ঔষধের ব্যবস্থা করে সাহায্য করেন এবং সুস্থতা দিয়ে দয়া করেন।

যেহেতু সুস্থতা একটি মৌলিক নে‘মত যা রোগীরা আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া শুধু ডাক্তারের মাধ্যমে লাভ করতে পারে না, তাই ইব্রাহীম (আলাইহিস সালাম) বলেছিলেন, وَ اِذَا مَرِضۡتُ  فَہُوَ  یَشۡفِیۡنِ ‘আর আমি যখন অসুস্থ হই, তখন তিনিই (আল্লাহ) আমাকে সুস্থ করে তুলেন’ (সূরা আশ-শু‘আরা : ৮০)।

সুহাইব ইবনু সিনান আল-রুমী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত একটি ঘটনায় উল্লেখ হয়েছে যে, ‘এক যুবক আল্লাহর হুকুমে জন্মান্ধ ও কুষ্ঠরোগীকে সুস্থ করে তুলত এবং মানুষের সব রোগের চিকিৎসা করত। বাদশার নিকটস্ত একজন অন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সে এই যুবকের খবর পেয়ে তার কাছে প্রচুর উপঢৌকন নিয়ে হাজির হল এবং তাকে বলল, তুমি যদি আমাকে আরোগ্য দান করতে পার তবে এসব মাল-উপহার সামগ্রী তোমার জন্য। এ কথা শুনে যুবক বলল, আমি তো কাউকে আরোগ্য দিতে পারি না। আরোগ্য তো দেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। আপনি যদি আল্লাহর উপর ঈমান আনেন তবে আমি আল্লাহর কাছে দু‘আ করব, তিনি আপনাকে আরোগ্য দান করবেন। তারপর সে আল্লাহর উপর ঈমান আনল, আল্লাহ তাকে সুস্থ করে দিলেন, সে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেল।[২]

কবি বলেন, ‘আমি আরোগ্য লাভের জন্য কোন ডাক্তারকে ডাকি না ... কিন্তু হে বৃষ্টি বর্ষণকারী আমি তো আপনাকেই ডাকি’। ডাক্তার ও নার্সদের অনেক অবদান রয়েছে যা ভাষায় পূর্ণরুপে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তাইতো কবি বলেন, ‘জেনে রাখুন ! আপনার অবদানের প্রতিদান দেয়া যায় না ... সাগর থেকে মুক্তা তুলে সাগরকে কি প্রতিদান দেয়া যায়?’

অতএব আপনারা ডাক্তার ও নার্সদের সম্মান রক্ষা করুন, তাদের অবদান ও ত্যাগের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। তারা সকলে একাত্ম হয়ে, নিঃস্বার্থভাবে মানুষের জীবন রক্ষার্থে ও করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা হতে নিরাপদ রাখতে নিশ্ছিদ্র সুরক্ষিত দূর্গের ন্যায় অবদান রেখে চলেছেন।

হে মুসলিমগণ! চিকিৎসা গ্রহণ করা মুস্তাহাব, তবে যদি কোন রোগের চিকিৎসা না করালে মৃত্যুর আশংকা থাকে সেই অবস্থায় চিকিৎসা গ্রহণ করা ওয়াজিব। উসামা বিন শারীক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, تَدَاوَوْا فَإِنَّ اللهَ لَمْ يَضَعْ دَاءً إِلَّا وَضَعَ لَهُ شِفَاءً غَيْرَ دَاءٍ وَاحِدِ الْهَرَمِ ‘হে আল্লাহর বান্দাগণ! চিকিৎসা কর। কেননা আল্লাহ তা‘আলা এমন কোন রোগ সৃষ্টি করেননি, যার ঔষধ তিনি সৃষ্টি করেননি। কেবল একটি রোগ ব্যতীত, সেটা হল বার্ধক্য’।[৩]

আর যখন চুড়ান্ত ফায়সালা চলে আসবে ও নির্ধারিত আয়ু ফুরিয়ে যাবে, তখন ঔষধ ও চিকিৎসা সবই ব্যর্থ হয়ে যাবে।

জনৈক কবি বলেন, ‘আমাদের পূর্বে কত মানুষ তার প্রিয়জনকে হারিয়েছে, মৃত্যু চিকিৎসকদের ব্যর্থ করেছে। আর কতক রোগী সুস্থ হয়ে রোগমুক্ত হয়েছে, অথচ তার চিকিৎসক মৃত্যুবরণ করেছে’।

আরেকজন কবি বলেন, ‘আপনাকে ডাক্তার বলে, আমার কাছে তোমার রোগের ঔষধ রয়েছে, যখন সে আপনার কব্জি ও হাত ধরে পরীক্ষা করে। ডাক্তার যদি এমন কোন ঔষধ সম্পর্কে জানত যা মৃত্যুকে প্রতিহত করে, তবে সেও মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করত না’।

অসুস্থ হলে আমরা ঔষধ সেবন করি কিন্তু কোন ঔষধ কি মৃত্যুরোগ থেকে আরোগ্য দেয়? আমরা ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হই, কিন্তু ডাক্তার কি ভাগ্যের লিখন আগ-পিছ করতে পারে ? আমাদের প্রত্যেকের নফসের হিসাব নেয়া হবে, আর আমাদের সকলের জীবনের অবসান ঘটবে।

হে মুসলিমগণ! একজন ডাক্তারের উচিত রোগীকে সাহস যোগানো, সুস্থতার আশা দেয়া, তার সাথে কোমল আচরণ করা, মন ভাল রাখার চেষ্টা করা, আনন্দ দেয়া এবং তার ভয় ও আশংকা দূর করে অন্তরে প্রশান্তি জাগানো।  তাইতো বলা হয়ে থাকে যে, ‘ডাক্তারের কোমল ও ভাল আচরণ রোগ অর্ধেক সারিয়ে  দেয়, আর তার হাসিমুখ রোগীর ব্যথা কমিয়ে দেয়। ফলে এটা অজানা নয় যে, ডাক্তার কর্তৃক রোগীর মনে আনন্দ সঞ্চার করার ব্যাপক প্রভাব ও উপকারিতা রয়েছে।

পক্ষান্তরে কঠোর, নির্দয় ও কর্কশভাষী ডাক্তার যখন রোগীর পাশ দিয়ে গমন করে তখন মনে হয় যেন প্রবল বাতাস এসে আতঙ্ক তৈরি করে মনের আশাকে তছনছ করে দিয়ে গেল। যে ব্যক্তি সান্ত¦না ও প্রাথমিক উপদেশমুলক কিছু না বলেই রোগীকে প্রথমেই ভয় দেখায়, সে মূলত মাটিকে আরো কর্দমাক্ত করে তুলে এবং রোগীর অসূখ আরো বাড়িয়ে দেয়।

ডাক্তারের উচিত ধৈর্যশীল হওয়া, রোগীর অধিকার রক্ষায় যত্নশীল হওয়া, আক্রান্ত ব্যক্তিদের সান্তনা দেয়া; বিশেষ করে যারা বেশি দুর্বল, অসুস্থ এবং বড় ধরনের পরীক্ষায় পড়েছেন তাদের প্রতি।

অতএব হে ডাক্তারগণ! আপনারা রোগীদের হাত ধরে তাদের বেদনার্ত সঙ্কীর্ণ হৃদয়কে প্রশস্ত ও প্রশান্তময় করুন। একজন ডাক্তারের উচিত অসুস্থ ব্যক্তিকে নিজের স্থলে স্থলাভিষিক্ত করা। ফলে সে তার সম্মান ও গোপনীয়তা রক্ষা করবে, তার দোষ গোপন রাখবে, সে যে রোগে আক্রান্ত তা প্রকাশ করলে যদি তার ক্ষতি হওয়ার আশংকা থাকে তবে তা প্রকাশ করবে না এবং একান্তই চিকিৎসার জন্য যরূরী না হলে তার লজ্জাস্থান উম্মুক্ত করবে না। ডাক্তারের উচিত রোগ নির্ণয়, পরীক্ষা নিরীক্ষা ও প্রেসক্রিপশন করার সময় আন্তরিকতার সাথে সতর্কতাবলম্বন করা এবং কোন কিছু অস্পষ্ট মনে হলে পরামর্শ করা। তাড়াহুড়া পরিত্যাগ করা এবং যে ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নেয়া।

অজ্ঞ, মুর্খ, অনভিজ্ঞ ও প্র্যাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা নেই এমন ব্যক্তিদের মাধ্যমে ঔষধ ও চিকিৎসা সেবা দেয়া হারাম। যখনই কোন ব্যক্তি ভূয়া ডাক্তার সেজে রোগীকে ঔষধ ও চিকিৎসা দিতে যাবে, তখনই সে যেন জনগণকে ধোকা দিল এবং তার মুর্খতা দিয়ে তাদের উপর প্রাণহানী করতে আক্রমণ করল এবং ভুল চিকিৎসা দিয়ে সে যেন ইচ্ছা করেই ক্ষতি করতে চাইছে। এমতাবস্থায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শাস্তি ও জরিমানার আওতায় আনা আবশ্যক। হাদীছে এসেছে, আমর বিন শুয়াইব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,مَنْ تَطَبَّبَ وَلَمْ يُعْلَمْ مِنْهُ طِبٌّ قَبْلَ ذَلِكَ فَهُوَ ضَامِنٌ ‘যে ব্যক্তি লোকের চিকিৎসা করল, অথচ সে চিকিৎসক হিসাবে পরিচিত নয়, তাহলে (রোগীর কোন ক্ষতি হলে) সে দায়ী থাকবে’।[৪] রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেন, مَنْ تَطَبَّبَ وَلَمْ يَكُنْ بِالطِّبِّ مَعْرُوْفًا فَأَصَابَ نَفْسًا فَمَا دُوْنَهَا فَهُوَ ضَامِنٌ ‘যে ব্যক্তি পরিচিত চিকিৎসক না হয়েও লোকের চিকিৎসা করতে গিয়ে রোগীর প্রাণহানী ঘটাবে বা কোন ক্ষতি করবে, তাহলে সে ঐ ক্ষতির জন্য দায়ী হবে।[৫]

কোন ভূয়া ডাক্তার বা অনভিজ্ঞ ডাক্তারের জন্য জায়েয নয় যে, সে রোগীর অপারেশন, সার্জারী বা অস্ত্রোপচার করবে। যদি সে এমনটি করে থাকে তাহলে সে যেন গুনাহ, অপরাধ ও জুলুম করল এবং এক্ষেত্রে সকল ভুলের দায়ভার তার উপর বর্তাবে। কোন পেশাদার ডাক্তার যদি নজীরবিহীন কোন ভূল করেন, অথবা দায়িত্বহীনতা বা অবহেলার কারনে রোগীর ক্ষতি করেন, তাহলে তিনিও সেজন্য দায়ী হবেন।

ইমাম খাত্তাবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,لا أعلم خلافا في أن المعالج إذا تعدى فتلف المريض كان ضامنا والمتعاطي علما أو عملا لا يعرفه متعد فإذا تولد من فعله التلف ضمن الدية ‘এ ব্যাপারে কোন দ্বিমত আছে বলে আমার জানা নেই যে, ডাক্তারের অবহেলায় রোগী মারা গেলে ডাক্তারই দায়ী হবে। আর ভূয়া ডাক্তারের হস্তক্ষেপের ফলে যদি কোন ক্ষতি হয় হয়, তাহলে সে-ই ক্ষতিপূরণের জন্য দায়ী হবে’।[৬]

জনৈক কবি বলেন, ‘মুর্খ ডাক্তার মৃত্যু ডেকে আনে, আতঙ্কের বীজ বপণ করে আর ধ্বংস বিস্তার করে। যখন ভূলের কারনে ক্ষতস্থানে পচন ধরে, তখন মূলত চিকিৎসায় ডাক্তারের অবহেলা প্রকাশ পায়’।

অযথা অপ্রয়োজনীয় ঔষধ রোগীর জন্য প্রেসক্রিপশন করা ডাক্তারের জন্য একেবারেই হারাম। অনুরূপভাবে রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে শুধুমাত্র অনুমান ও ধারণা করে রোগীর গায়ে স্যালাইন, ইনজেকশন বা এ জাতীয় কিছু পুশ করাও হারাম। ধারণা ও সন্দেহের ভিত্তিতে কখনো সুচিকিৎসা হয় না। মনে রাখতে হবে যে, যেকোন উপায়ে রোগ সরানো উদ্দেশ্য নয়, বরং নিরাপদ উপায়ে রোগ নিরাময় করা উদ্দেশ্য। যাতে অন্য কোন রোগ তৈরি না হয় বা তার চেয়েও মারাত্মক কিছু না ঘটে।

রোগীকে বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় চেকআপ, টেষ্ট ও পরীক্ষার বিড়ম্বনায় ফেলা একেবারেই হারাম, যেগুলো সাধারণত ব্যবসার জন্য ও রোগীর কাছ থেকে পয়সা খাওয়ার জন্য করা হয়। নিকৃষ্টতম সম্পদ সেগুলোই, যে সম্পদগুলো শুধুই অসুস্থ ও রোগীদের ব্যথা-বেদনার সুযোগে অর্জিত হয়!

অনেক ডাক্তার ও ফার্মাসিষ্ট রয়েছেন যারা সমান কার্যকরী সূলভ মূল্যের বিকল্প উপযুক্ত ঔষধ থাকা সত্ত্বেও রোগীকে উচ্চ মূল্যের ঔষধ দেন। তারা এমনটি করেন ঔষধ কোম্পানীর প্রচার ও বিনিময়ে তাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উপহার ও ডিসকাউন্ট পাওয়ার জন্য! ফলে তারা রোগীর স্বার্থ বিবেচনায় না এনে শুধু নিজের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। এহেন ঘৃণ্য কাজ তারাই করে যাদের অন্তরে মানুষের প্রতি দয়ামায়া ও আল্লাহর ভয় নেই, আমানতদারিতা ও শপথ রক্ষার তাগাদা নেই। অথবা যাদের অন্তর হতে ঐ দায়িত্ববোধ উঠে যাচ্ছে তারাই এমন করতে পারে! আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন বক্তব্য খুব কমই দিয়েছেন যেখানে তিনি এ কথা বলেননি যে, لَا إِيْمَانَ لِمَنْ لَا أَمَانَةَ لَهُ وَلَا دِيْنَ لِمَنْ لَا عَهْدَ لَهُ  ‘যার আমানতদারী নেই, তার ঈমান নেই এবং যার অঙ্গীকার ঠিক নেই, তার দ্বীন নেই।[৭]

হে মুসলিমগণ! আপনার ঐ সকল দাজ্জাল ক্লিনিক ব্যবসায়ীদের থেকে সতর্ক থাকুন, যারা লাইসেন্সবিহীন বিভিন্ন নকল ক্লিনিক খুলে চিকিৎসা সেবার নামে রোগীদের আহবান জানায় এবং তারা বিভিন্ন রোগের সঠিক চিকিৎসা করতে পারে মর্মে দাবী করে এবং নকল সামগ্রী বিক্রি করে!

আমরা মুসলিমদেরকে সতর্ক করছি, তারা যেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকা অপরিচিত লোকের চিকিৎসার প্রেসক্রিপশন ও ঔষধের বিবরণে বিশ্বাস না করেন। মূলত তারা এই মাধ্যমগুলোতে ধোকা বিক্রি করছে, রোগীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে, মানুষের সুস্থতা ও নিরাপত্তার ক্ষতি করছে, আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এবং ঘৃণার দেয়াল তৈরি করছে। পৃথিবীতে বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী এ সকল জালেমদের ধোকায় পড়া হতে আপনারা সতর্ক থাকুন, যারা মানুষের জীবনকে ঝুঁকিতে রাখে। অথচ ইসলাম এসেছে মানুষের জানের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং এর উপর সীমালংঘন নিষিদ্ধ করতে।

হে মুসলিমগণ! আল্লাহ তা‘আলা কুরআনের মাধ্যমে গণকদের প্রপাগান্ডাকে বাতিল করেছেন। অতএব আপনারা গণক, প্রতারক, জ্যোতির্বিদ ও যাদুকরদের প্রতারণা হতে সতর্ক থাকুন, যারা অদৃশ্য ও গুপ্ত খবর জানে বলে দাবী করে। দাজ্জাল কবিরাজ থেকেও সতর্ক থাকুন যারা শরী‘আতসম্মত ঝাড়ফুঁক ছেড়ে নোংরা বিদ‘আতী কথাবার্তা ও কাজ সংযোজন করে ঝাড়ফুঁক করে। ছদ্মবেশী মিথ্যুক ও প্রতারক কবিরাজ থেকেও সতর্ক থাকুন যারা যাদু, জিনে ধরা ও মৃগী রোগীদের গলায় দড়ি বেঁধে, শরীরে হুল ফুটিয়ে, গিট্টা দিয়ে, মন্ত্র পড়ে ও ভেলকি দেখিয়ে চিকিৎসার দাবী করে এবং বিভিন্ন তাবিজ, পাথর, কড়ি, ফিতা ইত্যাদি বিক্রি করে বেড়ায়। তারা বিভিন্ন শিরকী কথাবর্তা দিয়ে তাবিজ ও গলায় ঝুলানোর বিভিন্ন উপকরন তৈরি করে এবং নানা রকম কুসংস্কার প্রচার করে বেড়ায়। আর এভাবেই তারা ধোঁকার বস্তু বিক্রি করে বেড়ায় যেগুলোতে গন্ডমূর্খ এবং দুর্বল ঈমান ও আক্বীদার মানুষ ছাড়া কেউ প্রতারিত হয় না। ইমরান বিন হুসাইন (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,  

لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَطَيَّرَ أَوْ تُطُيِّرَ لَهُ أَوْ تَكَهَّنَ أَوْ تُكُهِّنَ لَهُ أَوْ سَحَرَ أَوْ سُحِرَ لَهُ وَمَنْ عَقَدَ عُقْدَةً وَمَنْ أَتَى كَاهِنًا فَصَدَّقَهُ بِمَا يَقُوْلُ فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

’সেসব লোক আমার উম্মাতের অন্তর্ভূক্ত নয় যারা ভাগ্য নির্ধারনের জন্য পাখি উড়ায় বা যাদের জন্য উড়ানো হয়, যারা গণকের নিকট যায় বা যাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়, যারা যাদু করে বা যাদু করানো হয় এবং যারা গিট্রা লাগিয়ে যাদু করে। আর যে ব্যক্তি গণকের কাছে এসে তার কথায় বিশ্বাস করল, সে যেন মুহাম্মদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর যা নাযিল করা হয়েছে তা অস্বীকার করল’।[৮]  

যারা এরকম প্রতারকদের কাছে আসা যাওয়া করে তারাও এদের পাপের ভাগিদার হবে। কেননা এরা তাদের দলকে ভারি করেছে, তাদের মিথ্যাচারকে প্রচার করেছে। অতএব এ ধরণের ভণ্ডদের আস্তানা সম্পর্কে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নিরাপত্তা সংস্থাকে অবহিত করা সকলের জন্য আবশ্যক এবং তাদের বিষয়ে নীরবতা পালন ও চুপ থাকা হারাম। জনৈক কবি বলেন, ‘শারীরিকভাবে আমরা অসুস্থ হব এটা আমাদের কাছে তুচ্ছ ব্যাপার ... তবে আমাদের সম্মান ও বিবেক নিরাপদ রাখতে হবে’।

ছানী খুত্ববাহ

দ্বিতীয় খুত্ববাহতে সম্মানিত খত্বীব মহান আল্লাহর প্রশংসা এবং রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি ছালাত ও সালামের পরে বলেছেন,

হে মুসলিমগণ! বালা মুছীবত সৃষ্টিকুলকেই আক্রান্ত করে। কেউ কেউ বলেন, যতদিন তুমি এ ভুবনে থাকবে, ততদিন দুঃখ কষ্ট ও রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে আশ্চর্য হয়ো না।

অতএব সে ব্যক্তির মত হবেন না, যে বিপদে পড়লে হতাশ ও আতঙ্কিত হয়ে পড়ে, হাল ছেড়ে দেয় ও আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ে যায়। বরং নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এই উক্তিটি স্মরণ করুন। তিনি বলেন,

إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا سَبَقَتْ لَهُ مِنَ اللهِ مَنْزِلَةٌ لَا يَبْلُغْهَا بِعَمَلِهِ ابْتَلَاهُ اللهُ فِىْ جَسَدِهِ أَوْ فِىْ وَلَدِهِ ثُمَّ صَبَرَهُ عَلَى ذَلِكَ حَتَّى يَبْلُغَهُ الْمَنْزِلَةَ الَّتِى سَبَقَتْ لَهُ مِنَ اللهِ تَعَالَى

‘যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য এমন মর্যাদা নির্ধারণ করা থাকে, যা সে আমল দ্বারা পাওয়ার যোগ্যতা রাখে না। তখন আল্লাহ তাকে তার শরীর, সন্তান-সন্ততি প্রভৃতিতে বিপদাপদ দিয়ে পরীক্ষা করেন এবং তাকে ঐ বিপদের উপর ধৈর্যধারণের ক্ষমতা দেন। ফলে সে আল্লাহর নির্ধারণকৃত ঐ স্থান ও মর্যাদায় পৌঁছে যায়’।[৯]

জনৈক সালাফ বলেছেন, ‘যদি দুনিয়াবী বালা-মুছীবত না থাকত, তাহলে তো আমাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন নিঃস্ব অবস্থায় হাজির হতে হত’। কাইস ইবনু আব্বাদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘কিছু সময়ের কষ্ট ও ব্যাধি, কিছু সময়ের গুনাহ মিটিয়ে দেয়।

কোন মুমিন বান্দা যেন দুনিয়াতেই শাস্তি কামনা না করে। বরং আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও নিরাপত্তা চাইবে। আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক রুগ্ন ব্যক্তিকে দেখতে গেলেন, যে পাখির বাচ্চার মত দুর্বল হয়ে পড়েছিল। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি আল্লাহর নিকট কোন বিষয়ে দু‘আ করেছিলে অথবা তা তাঁর নিকট চেয়েছিলে? সে বলল হ্যাঁ, আমি বলতাম, ‘হে আল্লাহ! আমাকে আপনি আখেরাতে যে শাস্তি দিবেন তা আগেভাগে দুনিয়াতেই দান করুন। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সুবহানাল্লাহ্! তা তুমি দুনিয়াতেও সহ্য করতে পারবে না এবং আখেরাতেও সহ্য করতে পারবে না। তুমি এরূপ বলনি কেন, اَللّٰهُمَّ آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَّفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَّقِنَا عَذَابَ النَّارِ ‘হে আল্লাহ! আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান করুন ও আখেরাতে কল্যাণ দান করুন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব হতে বাঁচান’। আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, পরে সে এরূপ দু‘আ করল এবং আল্লাহ তা‘আলা তাকে আরোগ্য দান করলেন।[১০]

জনৈক কবি বলেন, ‘আমি অসুস্থ হলেও আমার ধৈর্য্য অসুস্থ হয়নি ... আমি জ্বরাক্রান্ত হলেও আমার মনোবল দুর্বল হয়নি। আমি সুস্থ থাকলেও চিরস্থায়ী হব না, কিন্তু ... এক ব্যাধি হতে মুক্ত হয়ে অপর ব্যাধি (মৃত্যু) দিকে এগিয়ে যাচ্ছি’।

পরিশেষে খত্বীব আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর দরূদ পাঠ করেন। সকল মুসলিমের জন্য দু‘আ ও ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে খুত্ববাহ সমাপ্ত করেন।


* পি-এইচ.ডি গবেষক, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব এবং বাংলা আলোচক ও জুমু‘আর খুৎবার লাইভ অনুবাদক, মসজিদে নববী।

তথ্যসূত্র : 
[১]. তিরমিযী, হা/২৩৮০; ইবনু মাজাহ, হা/৩৩৪৯; সনদ ছহীহ।
[২]. ছহীহ মুসলিম, হা/৩০০৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩৯৭৬।
[৩]. মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৪৭৭; আবূ দাঊদ, হা/৩৮৫৫; তিরমিযী, হা/২০৩৮।
[৪]. আবূ দাঊদ, হা/৪৫৮৬; নাসাঈ, হা/৪৮৩০; ইবনু মাজাহ, হা/৩৪৬৬; সনদ হাসান।
[৫]. দারাকুৎনি, হা/৩৪৩৯; বুলুগুল মারাম, হা/১১৮৪; হাকিম এ হাদীছেরে সনদকে ছহীহ বলেছেন।
[৬]. সুবুলুস সালাম, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২৫০; আওনুল মা‘বূদ, ১২তম খণ্ড, পৃ. ২১৫।
[৭]. শু‘আবুল ঈমান, হা/৪০৪৫; সনদ ছহীহ, ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৩০০৪।
[৮]. মুসনাদুল বাযযার, হা/৩৫৭৮; ত্বাবারাণী, মু‘জামুল কাবীর, হা/১৪৭৭০।
[৯]. আবূ দাঊদ, হা/৩০৯০; ছহীহ তারগীব ওয়া তারহীব, হা/৩৪০৯।
[১০]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৮৮।




প্রসঙ্গসমূহ »: চিকিৎসা
কোমল ও নম্র আচরণ - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী
প্রজ্ঞাপূর্ণ উপদেশসমূহ - অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
প্রিয় নবী (ﷺ)-এর প্রশংসনীয় গুণাবলী - অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
আল্লাহর অস্তিত্বে দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করা - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী
যৌন হয়রানির ভয়াবহতা ও প্রতিকার - অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
হৃদয়ের আমলসমূহ ও তার সুস্থতা - অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
দ্বীন রক্ষায় আলেমদের অবদান - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী
সর্বত্রই আল্লাহকে ভয় করুন - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী
অন্যকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকুন - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী
নেক কাজে অটলতা - অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
দ্বীনি ইলম অর্জনের গুরুত্ব - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী
ক্রোধ সংবরণ করার গুরুত্ব - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী

ফেসবুক পেজ