প্রিয় নবী (ﷺ)-এর প্রশংসনীয় গুণাবলী
খত্বীব : শায়খ ড. আব্দুর রহমান বিন আব্দুল আযীয আস-সুদাইস-অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী*
[১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪২ হি. মোতাবেক ৩০ অক্টোবর, ২০২০ তারিখের ‘বায়তুল হারাম, মক্কা আল-মুকাররমা’-এর জুমু‘আর খুত্ববাহর বঙ্গানুবাদ]
আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা, তাঁর কাছে সাহায্য ও তাঁর তাওহীদের সাক্ষ্য প্রদান করে এবং রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুঅত ও রিসালাতের সাক্ষ্য প্রদান করে সম্মানিত শায়খ বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। অতঃপর তিনি বলেন, হে আল্লাহর বান্দারা! আল্লাহকে তাঁর একত্বের অঙ্গীকার, সম্মান এবং ভালবাসার সাথে ভয় করুন। যারা সত্যিকার আল্লাহভীরু, তারাই সঠিক পথের পথিক। আল্লাহ রব্বুল আলামীন তাদেরকে সবসময় সুউচ্চ মর্যাদা প্রদান করেন এবং তারাই সফল। মহান আল্লাহ বলেন,
وَ مَنۡ یُّطِعِ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ وَ یَخۡشَ اللّٰہَ وَ یَتَّقۡہِ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡفَآئِزُوۡنَ
‘যারা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আনুগত্য করে এবং আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর অবাধ্যতা হতে সাবধান থাকে তারাই সফলকাম’ (সূরা আন-নূর : ৫২)।
হে মুসলিমগণ! মানবজীবনের বিভিন্ন অবস্থা রয়েছে। কখনো উঁচু, কখনো নিচু, কখনো উত্থান, কখনো পতন। এতে ইসলামী শরী‘আহ মানবজাতির জন্য সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে। আর ইসলামী শরী‘আহর মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে মানবজাতির চরিত্র গঠন, চারিত্রিক উন্নতি সাধন এবং আত্মার পরিশুদ্ধি। যা প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কথা ও কাজের মাধ্যমে সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
হে মুমিনগণ! ১৪০০ বছর পূর্বে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রিসালাত, নবুঅত এসেছে। তার এ নবুঅত, রিসালাত সারা বিশ^কে সুগন্ধিময় করেছে এবং তার প্রজ্ঞাপূর্ণ আদর্শ, কথা এবং কাজের মাধ্যমে সুস্পষ্ট হয়েছে। আল্লাহ রব্বুল আলামীন নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশংসনীয় বহুমুখী গুণাবলীর দ্বারা সম্মানিত করেছেন। তাঁকে মনোনীত করেছেন শ্রেষ্ঠ রাসূল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ رَفَعۡنَا لَکَ ذِکۡرَکَ ‘আর আমরা আপনার জন্য আপনার চর্চা (খ্যাতি)-কে সুউচ্চ করেছি’ (সূরা আলাম নাশরাহ : ৪)।
প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রশংসনীয় গুণাবলী কল্যাণে পরিপূর্ণ। প্রকাশ্যে বা গোপনে সকল গুণাবলী নেক, সৎ এবং ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত। তিনি (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেমন চারিত্রিক দিক থেকে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন তেমন সৃষ্টিগত দিক থেকেও। সৃষ্টিগত দিক থেকে তিনি অত্যন্ত সুন্দর, সুবর্ণ এবং উজ্জ্বল চেহারার অধিকারী ছিলেন। তিনি সুন্দর মানুষ ছিলেন। তাঁর চক্ষুতে যে কালো অংশ সেটা অত্যন্ত কালো এবং সাদা অংশ অত্যন্ত সাদা যা সৌন্দর্যের প্রমাণ বহন করে। তাঁর কথাগুলো ছিল অত্যন্ত আকর্ষণীয়। মাথার চুল ছিল কালো যা অনেক সুন্দর। তিনি যখন নীরব থাকতেন, তখন তার ব্যক্তিত্বে ভদ্রতা, মর্যাদা সুস্পষ্ট হয়ে উঠত। যখন কথা বলতেন, তখন যেন তার চেহারা উজ্জ্বল হয়ে উঠত। দূর থেকে দেখুন বা কাছে থেকে দেখুন তিনি ছিলেন অত্যন্ত সুন্দর মানুষ এবং বড়ই মিষ্টভাষী। তিনি কখনো অপ্রয়োজনীয় কোন কথা বলতেন না। তাঁর দাড়ি ছিল অত্যন্ত ঘন এবং দু’ কাঁধের মধ্যস্থল ছিল প্রশস্ত। যা শারীরিক গঠনের দিক থেকে দেখতে অনেক সুন্দর ছিল। তার দু’ হাত এবং পা ছিল মোটা এবং গোশতে পরিপূর্ণ। তিনি খুব বেশি লম্বাও কিংবা খুব খাটোও ছিলেন না। তিনি ছিলেন মাঝারি সাইজের। তাঁর চুলগুলো ছিল লম্বা লম্বা এবং ভমরুলের চুল ছিল না। তিনি যখন কথা বলতেন মনে হত তাঁর কথা থেকে নূর ঝরছে। হাদীছে এসেছে,
আবূ ইসহাক (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, বারাআ (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে জিজ্ঞেস করা হল, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চেহারা মুবারক কি তলোয়ারের মত ছিল? তিনি বললেন না, বরং চাঁদের ন্যায় ছিল।[১] তিনি আরো বলেছেন,
كَانَ النَّبِىُّ مَرْبُوْعًا بَعِيْدَ مَا بَيْنَ الْمَنْكِبَيْنِ لَهُ شَعَرٌ يَبْلُغُ شَحْمَةَ أُذُنِهِ
‘নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাঝারি গড়নের ছিলেন। তাঁর উভয় কাঁধের মধ্যস্থল প্রশস্ত ছিল। তাঁর মাথার চুল দু’ কানের লতি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল’।[২] আলী ইবনু আবূ তালেব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,
كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْسَ بِالطَّوِيْلِ وَلَا بِالْقَصِيْرِ ضَخْمُ الرَّأْسِ وَالْلِّحْيَةِ شَثْنُ الْكَفَّيْنِ وَالْقَدَمَيْنِ مُشْرَبًا حُمْرَةً ضَخْمَ الْكَرَادِيْسِ طَوِيْلَ المَسْرُبَةِ إِذَا مَشَى تَكَفَّأَ تَكَفُّأً كَأَنَّمَا يَنْحَطُّ مِنْ صَبَبٍ لَمْ أَرَ قَبْلَهُ وَلَا بَعْدَهُ مِثْلَهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লম্বাও ছিলেন না এবং খাটোও ছিলেন না। তাঁর মাথা ছিল বড় এবং দাড়ি ছিল ঘন। হস্তদ্বয় এবং উভয় পায়ের তালু ছিল পুরু। তাঁর গায়ের রং ছিল দুধে আলতা। হাড়ের জোড়াসমূহ ছিল মোটা, বক্ষের উপর হতে নাভি পর্যন্ত পশমের সরু একটি রেখা ছিল। চলার সময় সম্মুখের দিক ঝুঁকে চলতেন, যেন তিনি কোন উচ্চস্থান হতে নীচের দিকে নামছেন। তাঁর পূর্বে বা পরে তাঁর মত সুগঠন ও সুন্দর কোন মানুষকে আমি দেখিনি।[৩] জাবির ইবনু সামুরাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘আমি চাঁদনী রাত্রে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখলাম। অতঃপর একবার রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দিকে তাকাতাম আর একবার চাঁদের দিকে তাকাতাম। সেই সময় তিনি লাল বর্ণের পোশাক পরিহিত অবস্থায় ছিলেন। তখন তাঁকে আমার নিকট চাঁদের চেয়ে অধিক সুন্দর মনে হল’।[৪] আল্লাহু আকবার! আল্লাহ রব্বুল আলামীন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ সার্বিক প্রশংসনীয় গুণাবলী দান করেছিলেন।
হে মুসলিম ভাইগণ! রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাচনভঙ্গি ছিল সুন্দর। তিনি বিনা প্রয়োজনে কথা বলতেন না। আল্লাহকে স্মরণ করে কথা আরম্ভ করতেন এবং আল্লাহর কাছে দু‘আ করে কথা শেষ করতেন। তিনি অল্প কথা বলতেন। তাকে অল্প কথায় ব্যাপক অর্থ ব্যক্ত করার যোগ্যতা দেয়া হয়েছিল। তার কথাগুলো ছিল সুস্পষ্ট এবং তিনি ছিলেন স্পষ্টভাষী। আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন,
مَا كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْرُدُ سَرْدَكُمْ هَذَا وَلَكِنَّهُ كَانَ يَتَكَلَّمُ بِكَلَامٍ بَيْنَهُ فَصْلٌ يَحْفَظُهُ مَنْ جَلَسَ إِلَيْهِ
‘তোমরা যেভাবে অনর্গল বিরতিহীন কথার্বাতা বল রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুরূপভাবে কথা বলতেন না। বরং তিনি প্রতিটি বাক্যকে পৃথক পৃথকভাবে বলতেন। ফলে যে ব্যক্তি তাঁর নিকট বসত সে তা স্মরণ রাখতে পারত’।[৫]
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সহচরদের সাথে মুচকি হাসতেন। আব্দুল্লাহ ইবনুল হারেস ইবনু জাযয়ি (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,مَا رَأَيْتُ أَحَدًا أَكْثَرَ تَبَسُّمًا مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চাইতে অধিক মুচকি হাসির মানুষ কাউকে দেখিনি।[৬] তিনি আরো বলেছেন, مَا كَانَ ضَحِكَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَّا تَبَسُّمًا ‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুচকি হাসি হাসতেন’।[৭] মুচকি হাসি হল প্রশংসনীয় হাসি। পক্ষান্তরে বেশি হাসা বা অট্টহাসি প্রশংসনীয় নয় এবং তা ভদ্রতার পরিচয়ও নয়। আর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনো ওরকম হাসতেন না। জারীর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,مَا حَجَبَنِي النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُنْذُ أَسْلَمْتُ وَلَا رَآنِيْ إِلَّا تَبَسَّمَ ‘আমি যখন থেকে ইসলাম গ্রহণ করেছি, তখন থেকে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তাঁর নিকট আসতে বাধা প্রদান করেননি। আর তিনি যখনই আমাকে দেখতেন মৃদুভাবে মুচকি হাসি হাসতেন’।[৮] আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, একদা ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি আমাদের সাথে কৌতুকময় কথাবার্তা বলেন। তিনি বললেন, إِنِّيْ لَا أَقُوْلُ إِلَّا حَقًّا ‘হ্যাঁ, তবে আমি যা বলি সত্যই বলি’।[৯]
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অত্যন্ত নমনীয় ব্যক্তি ছিলেন। আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলছেন, ‘একদা জনৈক মহিলা নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসল এবং বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনার কাছে আমার একটু বিশেষ প্রয়োজন আছে। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, يَا أُمَّ فُلَانٍ اجْلِسِىْ فِىْ أَىِّ نَوَاحِى السِّكَكِ شِئْتِ أَجْلِسْ إِلَيْكِ ‘হে অমুকের মা! তুমি যে কোন জায়গায় বসে কথা বলতে পার। তুমি যেখানে বসতে চাও, আমি তোমার প্রয়োজনে সেখানেই বসব’। ঐ মহিলা বসে গেল। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সাথে বসে গেলেন। অতঃপর মহিলা তার প্রয়োজন পূর্ণ করল।[১০] আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলছেন, كَانَ يَعُوْدُ الْمَرِيْضَ وَيَتَّبِعُ الْجِنَازَةَ وَيُجِيْبُ دَعْوَةِ الْمَمْلُوْكِ وَيَرْكَبُ الْحِمَارَ ‘তিনি রোগীর সেবা শুশ্রুষা করতেন, জানাযার অনুসরণ করতেন, দাস-গোলামদের দাওয়াত কবুল করতেন এবং গাধায় সওয়ার হতেন’।[১১] এগুলো ছিল তাঁর নমনীয়তা, বিনয়ী হওয়ার বাস্তব প্রমাণ। বনূ কুরাইযার যুদ্ধের দিনে ইহুদীদের সাথে যে যুদ্ধ ছিল, সেদিন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি গাধার পিঠে সওয়ার ছিলেন। গাধার লাগাম ও পিঠে বসার আসন ছিল খেজুর গাছের ছালের।[১২]
হে মুসলিম উম্মাহ! রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সর্বোত্তম চরিত্রের বিশাল সাগরের এই সামান্যতম কিছু উদাহরণ আপনাদের সামনে পেশ করলাম। যে ব্যক্তি তাঁর এ মিষ্টি পানির নহর থেকে উপকৃত ও লাভবান হবে, সে অবশ্যই ইহকাল ও পরকালে নিরাপদ থাকবে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যাদের স্বচক্ষে দেখার সৌভাগ্য হয়নি, তাদের জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উত্তম চরিত্র এবং প্রশংসনীয় গুণাবলী গভীরভাবে অধ্যয়নে রয়েছে মনের সান্ত¦না ও খোরাক। অতঃপর আমরা যদি তাঁর এ উত্তম চরিত্রের বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে তাঁর সাথেই অবস্থান করার নামান্তর যদিও সত্যিকার অর্থে তাঁর সঙ্গ আমরা পাইনি।
হে আল্লাহর বান্দারা! আল্লাহকে ভয় করুন এবং প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উত্তম চরিত্রের অনুসরণ করুন। সেটাই সত্যিকার অর্থে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ভালবাসার পরিচয়। সেটাই তাঁর রিসালাত এবং ভালবাসার বাস্তব প্রমাণের মুখ্য উদ্দেশ্য। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ভালবাসা শুধু মৌখিক দাবী, বাহ্যিক কিছু কার্যক্রম, কিছু আনুষ্ঠানিকতা, সমাবেশ এবং মাহফিল করার নাম নয়। মাহফিলে নবীর জীবনী থেকে কিছু কিচ্ছা-কাহিনী বর্ণনা করা, মিলাদুন্নবী পালন করা, তাঁর প্রশংসামূলক কিছু কথাবার্তা বলা এবং কবিতা বলার নাম ভালবাসা নয়। এ জন্য কবি বলেছেন,
حب الرسول تمسك بشريعة غراء في الإعلان والإسرار حب الرسول تعلق بصفاته وتخلق بخلائق الأطهار
‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সত্যিকার ভালবাসা হচ্ছে প্রকাশ্য ও গোপনে তাঁর উজ্জ্বল শরী‘আতকে আঁকড়ে ধরা। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সত্যিকার ভালবাসার প্রমাণ হচ্ছে তার গুণাবলীর সাথে সম্পৃক্ত হওয়া এবং তাঁর পবিত্র স্বভাব বা পবিত্র চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া।[১৩] এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা যা আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
قُلۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تُحِبُّوۡنَ اللّٰہَ فَاتَّبِعُوۡنِیۡ یُحۡبِبۡکُمُ اللّٰہُ وَ یَغۡفِرۡ لَکُمۡ ذُنُوۡبَکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ
‘[(হে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)!] আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস তবে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন ও তোমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করবেন এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল’ (সূরা আলে ‘ইমরান : ৩১)। আল্লাহ তা‘আলা কুরআন ও সুন্নাহতে বরকত দান করুন। এবং তিনি যে আয়াত ও হিকমত নাযিল করেছেন তা দ্বারা আমাদেরকে উপকৃত করুন (আমীন!!)।
ছানী খুত্ববাহ
দ্বিতীয় খুত্ববাহতে সম্মানিত খত্বীব আল্লাহ রব্বুল আলামীনের প্রশংসা, তাঁর তাওহীদের সাক্ষ্য এবং রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুঅত ও তাঁর রিসালাতের সাক্ষ্য দিয়ে বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আল্লাহ তা‘আলা সম্মানিত করেছেন। তিনি তাঁর জন্য মাক্বামে মাহমুদ (সুউচ্চ প্রশংসনীয় স্থান) রেখেছেন। সেই সর্বোত্তম মর্যাদার স্থানে শুধু তিনিই পৌঁছাবেন, আর কেউ পৌঁছাবে না। তিনি তাঁর জন্য হাউযে কাউছার রেখেছেন। সেখান থেকে তিনি উম্মাতকে পানি পান করাবেন এবং তার হাতে থাকবে প্রশংসার পতাকা।
হে আল্লাহর বান্দারা! আল্লাহকে ভয় করুন এবং সৃষ্টির সেরা প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উত্তম চরিত্রের অনুসরণ করুন। তবেই সম্মান ফিরে আসবে, আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য নেমে আসবে এবং আল্লাহর পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবেন।
হে ঈমানদারগণ! রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে উম্মাতের সম্পর্ক এবং ভালবাসা বিশেষ বিশেষ কিছু সময়ের সাথে সম্পৃক্ত নয় যে, আমরা কিছু কিছু সময়গুলোতে তাঁকে (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্মরণ করব এবং তাঁর নামে কিছু অনুষ্ঠান করব। এটা তাঁর সাথে আমাদের যে সম্পর্ক, সেই সম্পর্কের বাস্তব এবং ভালবাসার প্রমাণ না। বরং আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক জীবন থেকে শুরু করে মরণ পর্যন্ত সবসময় এবং প্রতিটি অবস্থায় থাকবে। প্রতিটি মুহূর্তে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমাদের আক্বীদা, ইবাদত-বন্দেগীর সম্পর্ক রয়েছে। আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর তরীকায় আমল করছি। আমরা তাই বিশ্বাস করি? যা তিনি (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিশ্বাস করতে বলেছেন। আমরা কী অবাস্তব মনে করি এবং ভ্রান্ত আক্বীদা বলি? যেগুলো রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেননি এবং যেগুলো মানুষ তাদের খেয়ালখুশির ধারণা অনুসারে বিশ্বাস রাখে। আমরা সেই চরিত্রই গঠন করি? যা তিনি গঠন করতে বলেছেন। আমরা সেই দু‘আই পড়ি, যিকির-আযকার করি? যা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শিখিয়েছেন।
সম্মানিত খত্বীব বলেছেন যে, আমি এই মক্কাতুল মুকাররমা মাসজিদুল হারামের কল্যাণ, হক্ব প্রচার এবং শান্তির সম্মানিত মেম্বার থেকে সারা বিশ^বাসীর উদ্দেশ্যে বিশে^র সমস্ত মানুষকে আন্তরিক দাওয়াত দিচ্ছি যে, আপনারা নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উত্তম চরিত্রে নিজেদেরকে সুসজ্জিত করুন। যিনি সার্বিক শান্তির দিকে আহ্বানকারী ছিলেন এবং তিনি পরস্পর মায়া-মমতার দিকে আহ্বান করেছেন।
বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী যারাই রয়েছে তাদের সাথে ভাল আচরণ করবেন, তাদের উপর মায়া-মমতা করবেন, সবার জন্য শান্তি কামনা করবেন। কারো সাথে খারাপ আচরণ করবেন না। কাউকে নিয়ে উপহাস করবেন না, ব্যঙ্গ করবেন না। কারও সম্পর্কে কটু কথা বলবেন না। বিশেষ করে যারা নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি যেমন নবী-রাসূলগণ। আল্লাহ রব্বুল আলামীন যাদের পবিত্রতার ঘোষণা করেছেন এবং যাদের সকলের সত্যবাদী হওয়ার সাক্ষ্য প্রদানের ব্যাপারে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
(لَا نُفَرِّقُ بَیۡنَ اَحَدٍ مِّنۡ رُّسُلِہٖ) আমরা তাঁর রাসূলগণের মধ্যে কাউকেও পার্থক্য করি না (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৮৫)। আমরা মুসলিম উম্মাহ সকল নবী-রাসূলগণের প্রতি শ্রদ্ধা সম্মান প্রদর্শন করি।
আর তার সাথে সাথে আমি প্রায় ১৮০ কোটি মুসলিমের পক্ষ থেকে তাদের প্রতিনিধি হিসাবে কঠোর ভাষায় তাদের নিন্দা জানাচ্ছি এবং শক্ত ভাষায় প্রতিবাদ করছি, যারা নবী-রাসূলগণের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করে। বিশেষ করে যিনি শেষ নবী, হেদায়াতের এবং রহমতের নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে অথবা অন্য কোন নবী সম্পর্কে ব্যঙ্গ চিত্র এবং খারাপ আচরণ করা হচ্ছে এক রকমের সন্ত্রাস। এটি এমন একটি অপরাধ যা ঘৃণ্য বর্ণবাদকে ইন্ধন যোগায়, চরমপন্থাকে বৃদ্ধি করে। এটি কখনো বাকস্বাধীনতা নয়। আপনি কারো অবমাননা করবেন এবং কাউকে নিয়ে উপহাস করবেন। বিশেষ করে পবিত্র ব্যক্তিত্ব যারা। ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের সম্পর্কে আপনি সীমালঙ্ঘন করবেন আর বলবেন যে, সেটি বাকস্বাধীনতা। না কখনো না। বরং সেটা আদব কায়দার সীমালঙ্ঘন করা এবং মানুষের সাথে সদাচরণের পরিপন্থি বিষয়। যেটি একেবারে বর্জিত বস্তু এবং গর্হিত কাজ।
বাকস্বাধীনতার একটা সীমানা রয়েছে। বাকস্বাধীনতার ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদেরকে মানবিক মূল্যবোধের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। যাতে থাকবে অন্যের অনুভূতির সম্মান প্রদর্শন করা। যদি এখান থেকে বাকস্বাধীনতা এগিয়ে চলে যায়, সীমালঙ্ঘন করে। তাহলে সেটি আর সত্যিকার স্বাধীনতা থাকে না। সেটি চরিত্রহীনতা। এ রকম খারাপ আচরণ কল্যাণ বয়ে আনবে না। বরং চরমপন্থি যে চিন্তা-চেতনা রয়েছে তাদের ইন্ধন যোগাবে, সহযোগিতা করবে এবং মানবসমাজে ঘৃণা ছড়াবে।
ইসলামের এরকম আচরণের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। ইসলামের সাথে সন্ত্রাসকে জড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। অথচ ইসলাম যাবতীয় সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেকে একেবারে সম্পর্কহীন। ইসলামের সাথে সন্ত্রাসের কোন সম্পর্ক নেই। ইসলাম হচ্ছে সহনশীলতা, পরস্পর মায়া-মমতা এবং ঐক্য-সংহতির দ্বীন। যাতে কোন রকমের সন্ত্রাস, চরমপন্থা এবং ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড এবং কাউকে নিয়ে উপহাস করার অবকাশ নেই। যাতে নবী-রাসূলগণের মাঝে কোন পার্থক্য করা হয় না।
পাশাপাশি আমি আমাদের মুসলিম ভাইবোনদেরকে আহ্বান করব আবেগী না হওয়ার, নিজের আবেগকে আয়ত্বে রাখার, কোন রকমের উস্কানীতে না আসার জন্য এবং এমন কিছু না করার, যার পরিণতি প্রশংসনীয় নয়। নবুঅত এবং রিসালাত সম্পর্কে এবং আল্লাহ রব্বুল আলামীন যাদের নবুঅত এবং রিসালাত দিয়ে সম্মানিত করেছেন আম্বিয়া-রাসূলগণ। তাদের সম্পর্কে কেউ যদি জবান-দারাজী করে, সীমালঙ্ঘন করে আল্লাহ রব্বুল আলামীন তাদের অনিষ্ট থেকে অবশ্যই রক্ষা করবেন। মহান আল্লাহ বলেন, وَ اللّٰہُ یَعۡصِمُکَ مِنَ النَّاسِ ‘আর আল্লাহ আপনাকে মানুষ (অর্থাৎ কাফির) হতে সংরক্ষিত রাখবেন’ (সূরা আল-মায়িদা : ৬৭)। সুতরাং মুসলিমদেরকে শান্ত হওয়া উচিত এবং এই রকমের পরিস্থিতিতে তাদের চক্ষু শীতল হওয়া উচিত। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদর্শ নিয়ে যারাই খারাপ আচরণ করে তারাই ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
মহান আল্লাহ বলেন,اِلَّا تَنۡصُرُوۡہُ فَقَدۡ نَصَرَہُ اللّٰہُ ‘যদি তোমরা তাঁকে [নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে] সাহায্য না কর, তবে আল্লাহই সাহায্য করেছেন বা করবেন’ (সূরা আত-তাওবা : ৪০)। মহান আল্লাহ বলেন, اِنَّا کَفَیۡنٰکَ الۡمُسۡتَہۡزِءِیۡنَ ‘বিদ্রুপকারীদের বিরুদ্ধে আমরাই আপনার জন্য যথেষ্ট’ (সূরা হিজর : ৯৫)। মহান আল্লাহ বলেন, وَ اللّٰہُ غَالِبٌ عَلٰۤی اَمۡرِہٖ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ‘আল্লাহ তাঁর কাজের ব্যাপারে পূর্ণ কর্তৃত্বশীল; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটা অবগত নয়’ (সূরা ইউসুফ : ২১)। মহান আল্লাহ প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি বেশি বেশি ছালাত ও সালাম পেশ করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
اِنَّ اللّٰہَ وَ مَلٰٓئِکَتَہٗ یُصَلُّوۡنَ عَلَی النَّبِیِّ ؕ یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا صَلُّوۡا عَلَیۡہِ وَ سَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا
‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাম-লী নবীর উপর দরূদ প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ তোমরাও তাঁর উপর দরূদ ও সালাম পেশ কর’ (সূরা আল-আহযাব : ৫৬)। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, مَنْ صَلَّى عَلَيَّ وَاحِدَةً صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ عَشْرًا ‘যে আমার প্রতি একবার দরূদ পাঠ করে, আল্লাহ তার প্রতি দশবার রহমত বর্ষণ করেন’।[১৪] রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেন,مَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلَاةً وَاحِدَةً صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ عَشْرَ صَلَوَاتٍ وَحُطَّتْ عَنْهُ عَشْرُ خَطِيْئَاتٍ وَرُفِعَتْ لَهُ عَشْرُ دَرَجَاتٍ ‘যে আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করে আল্লাহ তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করেন। তার দশটি গুনাহ মাফ করেন এবং দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করেন।[১৫]
পরিশেষে খত্বীব আল্লাহর প্রশংসা এবং রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর দরূদ পাঠ করেন। ছাহাবীদের মর্যাদা বর্ণনা করেন বিশেষ করে আনছার, মুহাজির এবং চার খলিফার। সকল মুসলিম ও ইসলামের জন্য কল্যাণের এবং নিরাপত্তার দু‘আ চাওয়ার মাধ্যমে খুত্ববাহ সমাপ্ত করেন।
* সম্মানিত দাঈ, দাম্মাম ইসলামিক কালচারাল সেন্টার, বাংলা বিভাগ, সঊদী আরব।
তথ্যসূত্র :
[১]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৫৫২।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৫৫১; ছহীহ মুসলিম, হা/২৩৩৭।
[৩]. তিরমিযী, হা/১৭৫৪; মুসতাদরাক হাকিম, হা/৪১৯৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৬৮৪।
[৪]. তিরমিযী, হা/২৮১১; দারেমী, হা/৫৭; জাবির ইবনু সামুরাহ বর্ণিত সনদ যঈফ। তবে বারা‘আ বর্ণিত সনদ ছহীহ।
[৫]. তিরমিযী, হা/৩৬৩৯; সনদ হাসান।
[৬]. তিরমিযী, হা/৩৬৪১; মিশকাত, হা/৫৮২৯; সনদ ছহীহ।
[৭]. তিরমিযী, হা/৩৬৪২; সনদ ছহীহ।
[৮]. ছহীহ বুখারী, হা/৩০৩৫; ছহীহ মুসলিম, হা/২৪৭৫।
[৯]. তিরমিযী, হা/১৯৯০; মিশকাত, হা/৪৮৮৫; সনদ ছহীহ।
[১০]. মুসনাদে আহমাদ, হা/১২২১৮; আবূ দাঊদ, হা/৪৮১৮; সনদ ছহীহ।
[১১]. মুসতাদরাক হাকিম, হা/৩৭৩৪; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২১১২; সনদ ছহীহ।
[১২]. সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২১১২; সনদ ছহীহ।
[১৩]. সালমান ইবনু ফাহাদ ইবনু আব্দুল্লাহ, দুরূসু লিশ শায়খি সালমান, ৪৩তম খণ্ড, পৃ. ১৬।
[১৪]. ছহীহ মুসলিম, হা/৪০৮।
[১৫]. নাসাঈ, হা/১২৯৭।
প্রসঙ্গসমূহ »:
জীবন কথা