রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৮:২৯ পূর্বাহ্ন

ক্রোধ সংবরণ করার গুরুত্ব

- খত্বীব : শায়খ সালাহ বিন মুহাম্মাদ আল-বুদাইর
- অনুবাদ : হারুনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী*



[গত ০৩ শা‘বান ১৪৪৪ হি. মোতাবেক ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ তারিখের ‘মসজিদে নববী, মদীনাতুল মুনাওয়ারা’-এর জুমু‘আর খুত্ববার বঙ্গানুবাদ]

আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর ছালাত ও সালামের পরে সম্মানিত খত্বীব বলেছেন, হে মুসলিমগণ! উত্তম চরিত্র এবং সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের অন্যতম হল, ক্রোধ নিবারণ ও রাগ সংবরণ করা। ক্রোধ নিবারণের অর্থ হল, রাগকে দমিয়ে রাখা, পেটের মধ্যে চেপে রাখা এবং তা প্রকাশ ও বাস্তবায়ন না করা। আল্লাহ তা‘আলা ক্রোধ নিবারণকারীদের প্রশংসা করে বলেন, وَ الۡکٰظِمِیۡنَ الۡغَیۡظَ وَ الۡعَافِیۡنَ عَنِ النَّاسِ ؕ وَ اللّٰہُ یُحِبُّ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ‘যারা ক্রোধ সংবরণকারী এবং মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল; আর আল্লাহ মুহসিনদেরকে ভালোবাসেন’ (সূরা আলে ইমরান : ১৩৪)। মহান আল্লাহ আরো বলেন, اِنَّ الَّذِیۡنَ اتَّقَوۡا اِذَا مَسَّہُمۡ طٰٓئِفٌ مِّنَ الشَّیۡطٰنِ تَذَکَّرُوۡا فَاِذَا ہُمۡ مُّبۡصِرُوۡنَ ‘নিশ্চয় যারা তাক্বওয়া অবলম্বন করেছে, তাদেরকে শয়তান যখন কুমন্ত্রণা দেয় তখন তারা আল্লাহকে স্মরণ করে এবং সাথে সাথেই তাদের চোখ খুলে যায়’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ২০১)।

সাঈদ বিন জুবাইর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,هُوَ الرَّجُلُ يَغْضَبُ الْغَضْبَةَ فَيَذْكُرُ اللهَ تَعَالَى فَيَكْظِمُ الغَيْظَ ‘আয়াতে ঐ ব্যক্তির কথা বলা হয়েছে যে রাগান্বিত হয়, অতঃপর আল্লাহকে স্মরণ করে রাগ সংবরণ করে’।[১] জনৈক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার গলায় প্রতিধ্বনিত রাগের সংবরণ করা আমার নিকট অধিক প্রিয় আমার চরিত্রে কোন ত্রুটি থাকার চেয়ে’ ৷

মহানুভব, ক্রোধ সংবরণকারী ও মার্জনাকারী ব্যক্তিই মানুষের মাঝে সবচেয়ে জ্ঞানী ও ন¤্র-ভদ্র ব্যক্তি। বিবেকবান লোকেরাই ক্রোধ সংবরণ করেন, কেননা তারা এর চেয়ে পরিণামে উপকারী ও সুস্বাদু কোন ডোজ দেখেননি । ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,

مَا تَجَرَّعَ عَبْدٌ جَرْعَةً أَفْضَلَ عِنْدَ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ مِنْ جَرْعَةِ غَيْظٍ يَكْظِمُهَا ابْتِغَاءَ وَجْهِ اللهِ تَعَالَى.

‘মহান আল্লাহর দৃষ্টিতে কোন বান্দা রাগের ঢোকের চেয়ে উত্তম ঢোক গিলে না, যা সে আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির জন্য গিলে থাকে’।[২]

সাহল বিন মুয়ায বিন আনাস জুহানী তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, নবী (ﷺ) বলেছেন,

مَنْ كَظَمَ غَيْظَهُ وَهُوَ يَقْدِرُ عَلَى أَنْ يَنْتَصِرَ دَعَاهُ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى عَلَى رُءُوْسِ الْخَلَائِقِ حَتَّى يُخَيِّرَهُ فِيْ حُوْرِ الْعِينِ أَيَّتَهُنَّ شَاءَ.

‘প্রয়োগের ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি তার ক্রোধ সংবরণ করবে আল্লাহ তা‘আলা তাকে ক্বিয়ামতের দিন সকল মানুষের সম্মুক্ষে ডাকবেন এবং যে কোন হুরকে সে চায় তাকে গ্রহণের এখতিয়ার দিবেন’।[৩]

মুয়াবিয়া (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ক্রোধের ঢোক গলধঃকরণ অপেক্ষা অধিক সুস্বাদু কোন বস্তু আস্বাদন করিনি। আর যে সহনশীলতাকে নির্বুদ্ধিতা ভাবে আমি তাকে পরাস্ত করি।

হে মুসলিমগণ! রাগ হল ধ্বংসকারী, বিবেক-বুদ্ধি বিনাশকারী। যখন রাগ আসে তখনই অবক্ষয় বিস্তার লাভ করে। রাগ হল পরিতাপের বীজ, সকল অকল্যাণের চাবিকাঠি, পাপের সূচনাকারী, শত্রুতার উদ্দীপক, ঝগড়া-বিভেদ প্রজ্জ্বলনকারী এবং কাবীরা গুনাহ ও ধ্বংসাত্মক পাপের দিকে পরিচালনাকারী।

রাগের উত্তালতা ও বিস্ফোরণ অসংখ্য রক্তপ্রবাহ, স্ত্রী তালাক্ব, আত্মীয়ের সাথে শত্রুতা, বন্ধুদের সাথে দূরত্ব ও সহকর্মীদের সাথে কুটচালের দিকে নিয়ে গেছে। ককর্ষতার অন্ধকার নির্মলতার আলোকে ঢেকে দেয়, বিশ্বাসঘাতকতার ধূলিকণা বিশ্বস্ততার সৌন্দর্যকে আড়াল করে এবং উচ্চাভিলাষের তরবারী ভালোবাসা, বন্ধুত্ব ও ভাতৃত্বের রশিকে কর্তন করে।

সুতরাং প্রজ্জ্বলনকারী রাগ থেকে সতর্ক থাকুন যা অন্তরে লুকায়িত থাকে ছাইয়ের নিচে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ লুকিয়ে থাকার ন্যায়। চরম রাগ কথাকে এলোমেলো করে, দলীলকে অকার্যকর করে, মেধাকে বিক্ষিপ্ত করে, বিবেককে আচ্ছাদিত করে এবং দুনিয়া ও আখেরাতকে ভুলিয়ে দেয়। আর ক্রোধ যার উপর প্রভাব বিস্তার করে তার চেহারায় দৃষ্টিপাত করা অসম্ভব হয় এবং সে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। হাদীছে এসেছে,

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَجُلًا قَالَ لِلنَّبِىِّ ﷺ أَوْصِنِىْ قَالَ لَا تَغْضَبْ. فَرَدَّدَ مِرَارًا ، قَالَ لَا تَغْضَبْ.

আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী (ﷺ)-কে বললেন, আমাকে উপদেশ দিন। তিনি বললেন, তুমি রাগ করবে না। লোকটি কয়েকবার একই কথা পুনরাবৃত্তি করল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)ও প্রত্যেক বারই বললেন, তুমি রাগ করো না।[৪] অন্য বর্ণনায় এসেছে, লোকটি বলেন,

فَفَكَّرْتُ حِيْنَ قَالَ النَّبِىُّ ﷺ مَا قَالَ فَإِذَا الْغَضَبُ يَجْمَعُ الشَّرَّ كُلَّهُ.

‘আমি নবী (ﷺ)-এর কথাটি নিয়ে চিন্তা করে দেখলাম যে, রাগ সকল অকল্যাণের মূল’।[৫]

ইবনু আব্দুল বার (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এটি অল্প শব্দযুক্ত বাক্য যার অর্থ গভীর ও উপকারিতা ব্যাপক। আর যে তার রাগকে সংবরণ ও প্রতিহত করবে, সে শয়তানকে লাঞ্ছিত করবে এবং তার ব্যক্তিত্ব ও দ্বীন নিরাপদ থাকবে’।

ইবনুল মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)-কে বলা হল, এক কথায় আমাদেরকে উত্তম চরিত্রের বর্ণনা দিন। তিনি বললেন, ‘রাগ পরিহার করা’।

যারা সাওয়াবের আশায় রাগের সময় ক্ষমা করে দেয়, সহ্য করে ও ধৈর্য ধারণ করে, আল্লাহ তা‘আলা তাদের প্রশংসা করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, وَ الَّذِیۡنَ یَجۡتَنِبُوۡنَ کَبٰٓئِرَ الۡاِثۡمِ وَ الۡفَوَاحِشَ وَ اِذَا مَا غَضِبُوۡا ہُمۡ یَغۡفِرُوۡنَ ‘আর যারা কবীরা গোনাহ ও অশ্লীল কাজ থেকে বেঁচে থাকে এবং যখন রাগান্বিত হয় তখন তারা ক্ষমা করে দেয়’ (সূরা আশ-শূরা : ৩৭)।

হে মুসলিমগণ! যে ব্যক্তি তার রাগের আনুগত্য করে সে তার আদবকে নষ্ট করে দেয়। আর দ্রুত রাগান্বিত হওয়া স্বল্প বুদ্ধিসম্পন্ন আহাম্মকের বৈশিষ্ট্য। আর আহাম্মক যখন রেগে যায় তখন সে গজগজ করে, টগবগ করে, আঘাত করে, চপেটাঘাত করে, খোঁচা মারে, জখম করে, গুইসাপের মত ফুলে উঠে ও টুকরা টুকরা করে। তার সাথে কথা বললে ক্ষিপ্ত হয়, নাড়া দিলে বিস্ফোরিত হয়, আলোচনা করলে জ্বলে উঠে আর বিরোধিতা করলে তার রাগের পাল উড়িয়ে দেয়, অহংকার ও ঔদ্ধ্যতা প্রকাশ করে। এটা তার অজ্ঞতা ও অদূরদর্শিতার প্রমাণ। আর এটা প্রত্যেক রাগী, মূর্খ ও হঠকারীর বৈশিষ্ট্য। আপনি দেখবেন হৃদয়গুলো তার থেকে পলায়নকারী এবং অন্তরগুলো তার হিংসাকর্ম থেকে দূরে অবস্থানকারী। প্রকৃত পক্ষে শক্তিশালী তো সে ব্যক্তি নয়, যে অস্থির ও তাড়াহুড়াকারী, যে তার সহপাঠীকে পরাস্ত করতে পারে ও তার ভাইদের পরাভূত করতে পারে। বরং শক্তিশালী হল সেই ব্যক্তি, যে সহনশীল ও ক্ষমাকারী, কোন কথায় তাকে উত্তেজিত করতে পারে না।

আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, لَيْسَ الشَّدِيْدُ بِالصُّرَعَةِ إِنَّمَا الشَّدِيْدُ الَّذِىْ يَمْلِكُ نَفْسَهُ عِنْدَ الْغَضَبِ ‘প্রকৃত বীর সে নয়, যে কাউকে কুস্তিতে হারিয়ে দেয়। বরং সেই আসল বীর, যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে’।[৬]

হাসান বছরী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ابن آدم كلّما غضبت وثبت، ويوشك أنّ تثب وثبةً فتقع في النّار ‘হে আদম সন্তান! তুমি তো রাগান্বিত হলেই লাফালাফি কর, হতে পারে তুমি এমন এক লাফ দিবে যার মাধ্যমে জাহান্নামে পতিত হবে’।[৭]

হে মুসলিমগণ! সহনশীলতা হল ক্রোধের পথে একটি বাঁধা এবং এটি কোমল বাহন যা তার আরোহীকে গৌরবের শীর্ষে পৌঁছে দেয় ও উচ্চমানের প্রশংসার অধিকারী করে। আর যে ব্যক্তি ক্ষমাকে লোকসান এবং ক্রোধকে লাভজনক মনে করল; সে মূলত ভুল অনুমান করল। কেননা সহনশীলতা ও ক্ষমা প্রদর্শনের স্বাদ প্রতিশোধের স্বাদ অপেক্ষা অধিক উৎকৃষ্ট। সহনশীলতা ও ক্ষমা প্রদর্শনের স্বাদের সাথে প্রশংসনীয় পরিণতি যুক্ত হয়, পক্ষান্তরে প্রতিশোধ গ্রহণের স্বাদের সাথে অনুশোচনার অপমান যুক্ত হয়।

আমর ইবনুল আহতাম (রাহিমাহুল্লাহ)-কে জিজ্ঞাসা করা হল, মানুষের মাঝে সবচেয়ে সাহসী ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, مَنْ رَدَّ جَهْلَهُ بِحِلْمِهِ ‘যে ব্যক্তি সহনশীলতার মাধ্যমে তার অজ্ঞতার প্রতিকার করে’।[৮]

যে ব্যক্তি ক্রোধের দাবানল প্রজ্জ্বলিত হওয়ার পর সহনশীলতার মাধ্যমে তাকে দমন করল, ধৈর্যের মাধ্যমে পরাজিত করল এবং অবিচলতার মাধ্যমে পরাভূত করল; সে তার সবচেয়ে শক্তিশালী শত্রু এবং মন্দ প্রতিপক্ষকে দমন করল। সুতরাং আপনারা রাগের কারণ ও হেতুসমূহ পরিহার করুন। আপনারা রসিকতায় বাড়াবাড়ি করবেন না, কেননা রসিকতা হল ক্রোধের পটভূমি এবং আপনারা অন্তরকে আনন্দিত করার পরিবর্তে অপবাদ, গীবত ও বিদ্রুপের মাধ্যমে সুপ্ত হিংসা-বিদ্বেষকে জাগিয়ে তুলবেন না। কেননা এগুলো শয়তানের পক্ষ থেকে ধীরে ধীরে পাকড়াও এর ফন্দি এবং প্রবৃত্তির প্রবঞ্চনা।

খালেদ ইবনু সাফওয়ান (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ এমনও আছে, যে তার বন্ধুকে পাথরের চেয়ে তীব্রভাবে আঘাত করে ও হাঁড়িতে ফুটন্ত পানির চেয়েও গরম পানি ঢালে, অতঃপর বলে যে, আমি তোমার সাথে রসিকতা করছিলাম’!

হে মুসলিমগণ! তর্ক-বিতর্ক ক্রোধ উদ্রেককারী, সুতরাং যখনই তর্ক শুনবে তখনই থেমে যাবে। আবূ উমামা আল-বাহেলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,

أَنَا زَعِيْمٌ بِبَيْتٍ فِىْ رَبَضِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْمِرَاءَ وَإِنْ كَانَ مُحِقًّا وَبِبَيْتٍ فِىْ وَسَطِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْكَذِبَ وَإِنْ كَانَ مَازِحًا وَبِبَيْتٍ فِىْ أَعْلَى الْجَنَّةِ لِمَنْ حَسَّنَ خُلُقَهُ.

‘আমি সে ব্যক্তির জন্য জান্নাতের বেষ্টনীর মধ্যে একটি ঘরের যিম্মাদার, যে হক্বের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা সত্ত্বেও ঝগড়া পরিহার করে। আর যে ব্যক্তি হাসি-তামাসার মধ্যেও মিথ্যা বলে না, আমি তার জন্য জান্নাতের মধ্যবর্তী স্থানে একটি ঘরের যিম্মাদার হব। আর যে ব্যক্তি উত্তম চরিত্রের অধিকারী, তার জন্য আমি জান্নাতের উচ্চতম স্থানে একটি ঘরের যিম্মাদার’।[৯]

আর কলহ-বিবাদ দ্বীনকে নিশ্চিহ্ন করে দেয় এবং মানুষের অন্তরে বিদ্বেষ সৃষ্টি করে। সুতরাং আপনারা তার নিকটবর্তী হবেন না এবং উপহাস, বিদ্রুপ, দোষারোপ, পরস্পরে কলহ, ঝগড়া, বিবাদ, বিরোধিতা, বৈপরীত্য, যুলুম, গীবত, চোগলখোরী, গালি-গালাজ, শত্রুতা, অবৈধভাবে মানুষের সম্পদ ভক্ষণ, অধিকার বঞ্চিত করা, অন্যের সম্পদ হ্রাস করা এবং মাপে কম দেয়া থেকে বিরত থাকুন। কেননা ঐ সমস্ত কর্মসমূহ মানুষের মাঝে অনিষ্ট, হিংসা এবং ক্রোধকে উস্কে দেয়। আর যখন রাগ এসে পড়ে তখন ফেতনা চক্কর দেয়, শয়তান উপস্থিত হয়, চক্ষুসমূহ অন্ধ হয়ে যায় এবং ভ্রাতৃত্বের বন্ধন, ভালোবাসা ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়।

ক্রোধ ও শত্রুতার অগ্নিশিখাকে নির্বাপিত করুন ধীরস্থিরতা, সহিষ্ণুতা এবং সহনশীলতার মাধ্যমে, তার শিখাকে প্রশমন করুন জবাবদিহিতা ও অভিযুক্তকরণ থেকে মুক্ত থাকার মাধ্যমে, ক্রোধের প্রতিবিধান করুন যিকিরের মাধ্যমে ও তাকে প্রশমিত করুন ধৈর্যের মাধ্যমে এবং তার মূলোৎপাটন করুন মৌনতা ও নীরবতার মাধ্যমে। নীরবতার মাঝে রয়েছে নির্বুদ্ধিতা ও বুদ্ধির চপলতার উপেক্ষা, রাগের প্রশমন এবং বিবাদের পরিসমাপ্তি। আর নিরব ব্যক্তি কখনো লজ্জিত হয় না। পক্ষান্তরে ঝগড়াটে রাগী ব্যক্তি যে ক্রোধে, রোষে ও ক্ষোভে ফুঁসতে থাকে এবং মন্দ কথা বলে; সে নিরাপদ থাকতে পারে না ।

ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,  وَإِذَا غَضِبَ أَحَدُكُمْ فَلْيَسْكُتْ ‘তোমাদের কারো রাগের উদ্রেক হলে সে যেন নিরবতা অবলম্বন করে’।[১০]

মুয়াররেক আল-ইজলী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, مَا تَكَلَّمْتُ بِشَيْءٍ فِي الْغَضَبِ نَدِمْتُ عَلَيْهِ فِي الرِّضَا ‘ক্রোধের অবস্থায় আমি যে কথাই বলেছি, তার জন্য স্বাভাবিক অবস্থায় আমি লজ্জিত হয়েছি’।[১১]

ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘যখন কষ্টদায়ক কোন কথা শ্রবণ করবে, তখন তোমার মাথা অবনত করে দাও, যেন তা তোমাকে অতিক্রম করে চলে যায়’।[১২]

ঝগড়ার মেঘমালা দেখা দিলে স্বামী-স্ত্রীর জন্য করণীয় হল, পারস্পরিক সৌহার্দ্যের মাধ্যমে বিবাদ বন্ধ করা এবং নম্রতা প্রদর্শনের মাধ্যমে দীর্ঘ সম্পর্ককে রক্ষা করা এবং ঝগড়া-বিবাদকে দীর্ঘায়িত না করা।

হে মুসলিমগণ! ক্রোধের নির্বুদ্ধিতা যাকে প্ররোচিত করবে, সে যেন বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চায়; কেননা ক্রোধ হল শয়তানের বিপথগামিতার হাতিয়ার। কাজেই যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করবে তার ক্রোধ প্রশমিত হবে এবং বন্ধনগুলো খুলে যাবে।

আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,إِذَا غَضِبَ الرَّجُلُ فَقَالَ أَعُوْذُ بِاللهِ سَكَنَ غَضَبُهُ ‘তোমাদের কেউ যখন রাগান্বিত হয়ে ‘আঊযু বিল্লাহ’ পাঠ করবে, তখন তার রাগ প্রশমিত হয়ে যাবে’।[১৩]

ইবনে আদী তাঁর আল-কামেল গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। সুলায়মান বিন সুরাদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা নবী (ﷺ)-এর সামনে দু’ব্যক্তি পরস্পরকে গাল-মন্দ করতে লাগল, আমরা তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর পাশে বসা ছিলাম। তন্মধ্যে একজন তার সাথীকে খুব রাগতস্বরে গালমন্দ করছিল। এতে তার মুখম-ল বিবর্ণ হয়ে গিয়েছিল। এটা দেখে নবী (ﷺ) বললেন, إِنِّيْ لَأَعْلَمُ كَلِمَةً لَوْ قَالَهَا ذَهَبَ عَنْهُ مَا يَجِدُ لَوْ قَالَ أَعُوْذُ باللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ ‘আমি এমন একটি বাক্য জানি, যদি সে তা পড়ে তাহলে তার রাগ চলে যাবে। সেটা হলো ‘আঊযু বিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজীম’।[১৪]

যার মাঝে রাগ সংক্রমিত হয়েছে সে যেন বসে পড়ে। কেননা আবূ যার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) কর্তৃক বর্ণিত হাদীছে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, إِذَا غَضِبَ أَحَدُكُمْ وَهُوَ قَائِمٌ فَلْيَجْلِسْ فَإِنْ ذَهَبَ عَنْهُ الْغَضَبُ وَإِلَّا فَلْيَضْطَجِعْ ‘তোমাদের কারো যদি দাঁড়ানো অবস্থায় রাগের উদ্রেক হয়, তাহলে সে যেন বসে পড়ে। এতে যদি রাগ দূর হয় তো ভাল, অন্যথায় সে যেন শুয়ে পড়ে’।[১৫]  

কেননা বসার মাঝে ফেতনা দীর্ঘায়িত হওয়ার পরিসমাপ্তি রয়েছে। তাই যখন সে বসে পড়ে তখন রাগের তীব্রতা বিনষ্ট হয়। পক্ষান্তরে দাঁড়ানো ব্যক্তি নড়াচড়া, আক্রমণ এবং ঝাঁপিয়ে পড়ার অবস্থায় থাকে। কখনো কখনো তার থেকে প্রতিশোধ স্পৃহা প্রকাশ পেতে পারে, যার ফলে সে লজ্জিত হবে। আর বসে থাকা ব্যক্তি এ অবস্থা থেকে দূরে অবস্থানকারী এবং শোয়া ব্যক্তি উভয়ের থেকে আরো দূরে অবস্থানকারী।

দ্বিতীয় খুত্ববাহ

আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর ছালাত ও সালামের পরে সম্মানিত খত্বীব বলেছেন,

হে মুসলিমগণ! ইলমের সাথে সহনশীলতা এবং সামর্থ্যের সাথে ক্ষমার মাঝে সমন্বয়ের চেয়ে উত্তম কিছু নেই। আর এ সামর্থ্যই ব্যক্তির ক্রোধকে দুরীভূত করে। কাজেই আপনার যখন শক্তি-সামর্থ্য থাকে তখন দয়া করুন, আর বিজয়ী হলে সদাচরণ করুন এবং কোন দায়িত্ব গ্রহণ করলে কোমল আচরণ করুন। আর যে ব্যক্তি ক্রোধ দেখিয়ে চলে এবং ক্রোধের শিকার ব্যক্তির উপর প্রতিশোধ গ্রহণ করে, সে তো তার রাগ মিটালো ও হক গ্রহণ করল। সুতরাং তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা আবশ্যক নয় এবং মানুষের মাঝে এরূপ ব্যক্তির আলোচনা প্রশংসনীয় হয় না।

আপনাদেরকে যেন স্বীয় ক্ষমতা, লম্বা হাত ও দীর্ঘকায় দেহ প্ররোচিত না করে ক্রোধের সময় অত্যাচার করতে এবং নারী, গৃহকর্মী, অসহায়, মিসকীনদেরকে নির্যাতন করতে এবং তাদেরকে গালিগালাজ করা, অপবাদ দেয়া, দুর্ব্যবহার ও অবজ্ঞা করতে। বরং আপনাদের উপর আল্লাহর অসীম ক্ষমতাকে স্মরণ করুন। কেননা নারী, গৃহকর্মী, অসহায়দের উপর আপনাদের ক্ষমতার চেয়ে মহান আল্লাহর ক্ষমতা আপনাদের উপর অনেক বেশী। হাদীছে এসেছে,

قَالَ أَبُوْ مَسْعُوْدٍ الْبَدْرِيُّ كُنْتُ أَضْرِبُ غُلَامًا لِيْ بِالسَّوْطِ فَسَمِعْتُ صَوْتًا مِنْ خَلْفِيْ ্রاعْلَمْ أَبَا مَسْعُوْدٍগ্ধ فَلَمْ أَفْهَمِ الصَّوْتَ مِنَ الْغَضَبِ قَالَ فَلَمَّا دَنَا مِنِّيْ إِذَا هُوَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ فَإِذَا هُوَ يَقُوْلُ ্রاعْلَمْ أَبَا مَسْعُوْدٍ اعْلَمْ أَبَا مَسْعُوْدٍগ্ধ قَالَ فَأَلْقَيْتُ السَّوْطَ مِنْ يَدِيْ فَقَالَ ্রاعْلَمْ أَبَا مَسْعُوْدٍ أَنَّ اللهَ أَقْدَرُ عَلَيْكَ مِنْكَ عَلَى هَذَا الْغُلَامِগ্ধ قَالَ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ ﷺ هُوَ حُرٌّ لِوَجْهِ اللهِ فَقَالَ أَمَا لَوْ لَمْ تَفْعَلْ لَلَفَحَتْكَ النَّارُ أَوْلَمَسَّتْكَ النَّارُ.

আবূ মাসউদ আনসারী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার এক ক্রীতদাসকে বেত্রাঘাত করছিলাম। হঠাৎ আমার পিছন দিক থেকে একটি আওয়ায শুনলাম, হে আবূ মাসউদ! জেনে রেখ! হে আবূ মাসউদ! জেনে রেখ! রাগের কারণে আওয়াজ কার তা স্পষ্ট বুঝতে পারলাম না। যখন তিনি আমার নিকটে এলেন- হঠাৎ দেখতে পেলাম, তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)। তাঁর ভয়ে আমার হাত থেকে বেতটি পড়ে গেল। তিনি বললেন, হে আবূ মাসউদ! জেনে রেখ! তুমি তার ওপর যেরূপ ক্ষমতাবান, আল্লাহ তা‘আলা অবশ্যই তোমার উপর এর চেয়ে অধিক ক্ষমতাবান। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আমি তাকে আল্লাহর জন্য মুক্ত করে দিলাম। এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, যদি তুমি তা না করতে তাহলে অবশ্যই (জাহান্নামের) আগুন তোমাকে ঝলসে দিত। কিংবা তিনি বললেন, আগুন তোমাকে অবশ্যই স্পর্শ করত।[১৬]  

হে মুসলিমগণ! জন্মভূমি সবুজ পাতাবিশিষ্ট একটি বৃক্ষের ন্যায়, যার ফল হল নিরাপত্তা, প্রশান্তি, শান্তি ও স্থিতিশীলতা। রাজকীয় সঊদী আরব ইসলাম ও শান্তির দেশ। এতে রয়েছে পবিত্র মক্কা মুকাররমা যা ইবরাহীম ন-এর স্মৃতি বিজড়িত, আমাদের নবী মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর মাতৃভূমি। এ শহরটি নিরাপদ শহর, আল্লাহ তা‘আলা সেখানে দ্বীনের যে নিদর্শনসমূহ রেখেছেন তা পূর্ণ নিরাপদ। এখানে রয়েছে পবিত্র কা‘বা, মুযদালিফা ও বরকতময় ‘আরাফার ময়দান।

এ দেশটিতে রয়েছে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর শহর মদীনা মুনাওয়ারা; যেটা তার অবস্থান, হিজরত, মেহরাব, মিম্বার, কবর ও দাফনের স্থান। সেখানে রয়েছে তার ও পূর্ব পুরুষদের নিদর্শনাবলী ।

এটি গৌরবময় ও মর্যাদাপূর্ণ দেশ, যা তাক্বওয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত, ইসলামের মাধ্যমে আবাদকৃত ও শরী‘আত দ্বারা পরিচালিত। যা ইনসাফের মাধ্যমে আলোকিত, ভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে উন্নত এবং হক্বের মাধ্যমে বিজয়ী।

বস্তুত সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে সাফল্যের দ্বার উন্মোচিত হয়। যার পরিকল্পনা তাকে অগ্রগামী করতে পারে না, অপারগতা তাকে পিছিয়ে দেয়। তিন শতাব্দী পূর্বে এই বরকতময় ভূখ-ে ইনসাফভিত্তিক শাসনের সূচনা হয়েছিল স্থপতি ইমাম মুহাম্মাদ বিন সঊদ (রাহিমাহুল্লাহ)-এর হাত ধরে। ফলে তিনি তাওহীদ, সুদৃঢ় পরিকল্পনা ও দূরদর্শিতার মাধ্যমে জনগণকে যুদ্ধ থেকে শান্তি, ভয় থেকে নিরাপত্তা, অজ্ঞতা থেকে জ্ঞানের আলো এবং বিভক্তি ও মতানৈক্যের লাঞ্ছনা থেকে একতা ও সাম্যের মর্যাদার দিকে পরিচালিত করেন। অতঃপর তার সন্তান ও দৌহিত্রগণও রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। অবশেষে মহান আল্লাহ মুসলিমদের শাসক বাদশা আব্দুল আযীয বিন আব্দুর রহমান আলে সঊদকে মনোনীত করেন। ফলে শাসনকার্যে তার বিচক্ষণতা, শূরা-পরামর্শ গ্রহণে তার দূরদর্শিতা, ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়তা এবং দানে কোমলতা ও সহানুভূতি ফুটে উঠে। ফলশ্রুতিতে তিনি বিচক্ষণতা, তীক্ষণতা ও শরী‘আত বাস্তবায়নের দিক থেকে বাদশাদের মধ্যে হয়ে উঠেন অন্যতম শ্রেষ্ঠ শাসক। আল্লাহ তার উপর রহম করুন। তার রাজত্ব ও প্রজাদের উপর আল্লাহ তা‘আলা অঢেল বরকত দান করেছেন।

অতঃপর পরবর্তীতে তার পদাঙ্ক অনুসরণকারী তার নেককার সন্তানগণ দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন; ফলে রাজকীয় সঊদি আরব তার নিরাপত্তা, সংহতি, ঐক্য এবং নেতৃত্ব ও জনগণের মাঝে সুসম্পর্কের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছে।

সুতরাং মহান আল্লাহ আপনাদেরকে যা দান করেছেন ও উপহার দিয়েছেন তার প্রেক্ষিতে আপনারা তার প্রশংসা করুন এবং আপনাদের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার হেফাযত করুন। বিশৃঙ্খলার আওয়াজ এবং তার দিকে আহ্বানকারী ও তার সমর্থকদের থেকে সাবধান থাকুন। গুজবের ধ্বনি এবং দলাদলি ও অনৈক্যের দিকে আহ্বানকারীদের থেকে সতর্ক থাকুন। আপনাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ও দেশের প্রতি লক্ষ্য করুন তাদের অবস্থা কেমন হয়েছে -যখন তাদের ঐক্য বিনষ্ট হয়েছে, অভিপ্রায় পরস্পরবিরোধী হয়েছে, মতান্তর ঘটেছে, চলার পথ ভিন্ন হয়েছে, বাকশক্তি নিঃশেষ হয়েছে, ঐক্যের রজ্জু অস্থির হয়েছে, শাসনদ- বিদীর্ণ হয়েছে এবং বিভেদ তাদের মাঝে পাকাপোক্ত হয়েছে। আর তারা এমন অবস্থায় উপনীত হয়েছে যে, কোন সমন্বয়কারী তাদেরকে একত্র করতে পারে না এবং প্রতিরোধকারী হেকমত তাদেরকে অকল্যাণ থেকে বাঁধা প্রদান করতে পারে না। ফলে তাদের দেশ ধ্বংস হয়েছে, নিরাপত্তা মরীচিকায় এবং সেখানে তাদের জীবনযাপন শাস্তিতে পরিণত হয়েছে। তাদের জনগণ এমন দলে-উপদলে বিভক্ত হয়েছে; যারা অস্ত্র ব্যতীত আলোচনা করে না এবং প্রাণহানী করে গর্ব করে। সুতরাং আপনারা শিক্ষা গ্রহণ করুন; কেননা সৌভাগ্যবান সেই ব্যক্তি যে অন্যের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে এবং দুর্ভাগ্যবান সেই ব্যক্তি যে নিজের দ্বারা শিক্ষা গ্রহণ করে ।

মানুষের মাঝে সবচেয়ে খবীস ঐ ব্যক্তি যে তার দেশকে ধ্বংসের পায়তারা করে, তার নিরাপত্তা বিঘিœত ও শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করে এবং তার নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।

পরিশেষে খত্বীব মহোদয় আল্লাহর প্রশংসা এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর দরূদ পাঠ করেন। মুসলিম উম্মাহ ও ইসলামের জন্য দু‘আ চাওয়ার মাধ্যমে খুত্ববা সমাপ্ত করেন।



* পি-এইচ.ডি গবেষক, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব এবং বাংলা আলোচক ও জুমু‘আর খুৎবার লাইভ অনুবাদক, মসজিদে নববী।

[১]. ইমাম বাগাভী, মা‘আলিমুত তানযীল বৈরূত : দারুল ইহইয়াইত তুরাছ, ১৪২০ হি.), ২য় খ-, পৃ. ২৬২।

[২]. মুসনাদে আহমাদ, হা/৬১১৪, সনদ ছহীহ।

[৩]. মুসনাদে আহমাদ, হা/১৫৬১৯; আবূ দাঊদ, হা/৪৭৭৭; তিরমিযী, হা/২০২১, সনদ হাসান।

[৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৬১১৬।

[৫]. মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩২১৯, সনদ ছহীহ।

[৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৬১১৪; ছহীহ মুসলিম, হা/২৬০৯।

[৭]. ইসমাঈল ইবনু মুহাম্মাদ ইবনুল ফযল ইবনু আলী আল-কুরশী, আত-তারগীব ওয়াত তারহীব (কায়রো : দারুল হাদীছ, ১৪১৪ হি.), হা/২২৬৭।

[৮]. ইবনু আবিদ দুনয়া, আল-হিলমু বৈরূত : মুওয়াসসাসাতুল কুতুবিছ ছিক্বাফিয়াতু, ১৪১৩ হি.), ১ম খ-, পৃ. ৩৩, হা/২২।

[৯]. আবূ দাঊদ, হা/৪৮০০, সনদ হাসান।

[১০]. আদাবুল মুফরাদ, হা/২৪৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/২১৩৬; সনদ ছহীহ।

[১১]. আবূ নাঈম আল-আছবাহানী, হিলইয়াতুল আওলিয়া ওয়া ত্ববাক্বাতুল আছফিয়াই (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, ১৪০৯ হি.), ২য় খ-, পৃ. ২৩৫।

[১২]. মুহাম্মাদ ইবনু আব্দির রহমান আল-বাগদাদী, আল-মুখাল্লিছিয়াত, (ওযারাতুল আওক্বাফ ওয়াশ শুয়ূনিল ইসলামিয়্যাহ, ১৪২৯ হি.), ৪র্থ খ-, পৃ. ৪৬।

[১৩]. ছুহাইব আব্দুল জাব্বার, আল-জামিঊছ ছহীহ লিল সুনানি ওয়াল মাসানীদ, ৮ম খ-, পৃ. ৪৬৭।

[১৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৩২৮২; ছহীহ মুসলিম, হা/২৬১০।

[১৫]. আবূ দাঊদ, হা/৪৭৮২; মুসনাদে আহমাদ, হা/২১৩৪৮, সনদ ছহীহ।

[১৬]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৬৫৯।




ছহীহ আক্বীদার গুরুত্ব - অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
দ্বীনি ইলম অর্জনের গুরুত্ব - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী
কোমল ও নম্র আচরণ - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী
অন্যকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকুন - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী
আত্মীয়তার সম্পর্ক অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী
শয়তানের চক্রান্ত এবং তার প্রতিকার - অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
প্রিয় নবী (ﷺ)-এর প্রশংসনীয় গুণাবলী - অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
ইসলামী শরী‘আহর সৌন্দর্য - অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
যৌন হয়রানির ভয়াবহতা ও প্রতিকার - অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
প্রতারণা করা ও ধোঁকা দেয়া হারাম - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী
নেক কাজে অটলতা - অনুবাদ : শায়খ মতিউর রহমান মাদানী
চিকিৎসাশাস্ত্র এবং ডাক্তারের গুরুত্ব ও মর্যাদা - অনুবাদ : হারূনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী

ফেসবুক পেজ