উত্তর : গবেষণায় দেখা গেছে, সুপারি, চুন, জর্দা দিয়ে পান খেলে মুখে ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রায় দশ গুণ (৯.৯ গুণ) এবং জর্দা ছাড়া শুধু চুন, সুপারি, খয়ের দিয়ে পান খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রায় আট গুণ (৮.৪ গুণ) বেড়ে যায়। এ ছাড়া ‘সালমোনেলা’ নামে ব্যাক্টেরিয়া বা জীবাণু পানপাতায় বাসা বাঁধে। এই জীবাণু পেটের নানাবিধ রোগের জন্য দায়ী। গবেষকরা জানাচ্ছেন, চুনে রয়েছে প্যারা অ্যালোন ফেনল, যা মুখে ঘা (আলসার) সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের ঘা ধীরে ধীরে ক্যান্সারে রূপান্তরিত হতে পারে। এছাড়া কাঁচা সুপারিতে রয়েছে উচ্চমাত্রার সাইকোঅ্যাকটিভ এলকালয়েড, যা শরীরে প্রচণ্ড উত্তেজনার সৃষ্টি করে। সুপারি খেলে বেড়ে যেতে পারে হাঁপানির সমস্যা, হাইপারটেনশন বা রক্তচাপ। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু পান পাতা তেমন ক্ষতিকর না হলেও পান খাওয়ার আনুষঙ্গিক উপাদানগুলো মুখে ক্যান্সারের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। আল্লাহ তা‘আলা বান্দাকে ক্ষতির মধ্যে ফেলতে নিষেধ করেছেন (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৯৫)। অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘নিজের কোন অনিষ্টতা বা ক্ষতি এবং পরস্পরে কারোর ক্ষতি করা যাবে না’ (ইবনু মাজাহ, হা/২৩৪০, ২৩৪১: সনদ ছহীহ, ছহীহুল জামে‘, হা/৭৫১৭; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২৫০)। আর এটা অর্থেরও অপচয়। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। আর শয়তান তার রবের প্রতি খুবই অকৃতজ্ঞ’ (সূরা বানী ইসরাঈল : ২৭)। অন্যত্র বলেন, ‘এবং খাও, পান কর ও অপচয় কর না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদেরকে পসন্দ করেন না’ (সূরা আল-‘আরাফ : ৩১)। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘আল্লাহ তোমাদের তিনটি কাজ অপসন্দ করেন। যথা : (১) অনর্থক কথাবার্তা, (২) সম্পদ নষ্ট করা এবং (৩) অত্যধিক সওয়াল করা’ (ছহীহ বুখারী, হা/১৪৭৭; ছহীহ মুসলিম, হা/৫৯৩)। অনর্থক জিনিস বর্জন করা ইসলামের সৌন্দর্য : নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘কোন ব্যক্তির ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হল অনর্থক জিনিস ত্যাগ করা’ (তিরমিযী, হা/২৩১৭; ইবনু মাজাহ, হা/৩৯৭৬; মিশকাত, হা/৪৮৩৯, সনদ ছহীহ)। (ঘ) প্রত্যেক খাদ্যের মধ্যে দু’টি গুণের কমপক্ষে একটি অবশ্যই থাকে। গুণ দু’টি হল : পুষ্টির জোগান ও ক্ষুধা নিবারণ। কিন্তু পান পুষ্টিও সরবারহ করে না ক্ষুধাও নিবারণ করে না। যা জাহান্নামের খাদ্যের বৈশিষ্ট্য সমূহের অন্যতম (সূরা আল-গাশিয়াহ : ৪-৭)।
প্রশ্নকারী : জেরিন আক্তার, সরিষাবাড়ি, জামালপুর।