উত্তর : আধুনিক যুগের ব্রাশ ও টুথপেস্ট মেসওয়াকের বিকল্প হবে। একদা শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ)-কে প্রশ্ন করা হয় যে, ‘মুখের পরিচ্ছন্নতা অর্জনের নিয়তে ব্রাশ এবং টুথপেস্ট ব্যবহার করলে কি হাদীছে বর্ণিত মেসওয়াকের ছওয়াব পাওয়া যাবে?’ উত্তরে তিনি বলেন,
نعم؛ استعمال الفرشاة والمعجون يغني عن السواك ، بل وأشد منه تنظيفاً وتطهيراً ، فإذا فعله الإنسان حصلت به السنة ؛ لأنه ليس العبرة بالأداة ، العبرة بالفعل والنتيجة ، والفرشاة والمعجون يحصل بها نتيجة أكبر من السواك المجرد
‘হ্যাঁ, ব্রাশ এবং টুথপেস্ট ব্যবহার করলে মেসওয়াক ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। বরং এতে আরো ভালোভাবে মুখের পরিছন্নতা অর্জিত হয়। সুতরাং কেউ তা ব্যবহার করলে সুন্নত আদায় হয়ে যাবে। কেননা উপকরণ নয়, বরং কাজ ও ফলাফলটাই মূল ধর্তব্য বিষয়। আর (এটা স্বতঃসিদ্ধ যে), শুধু মেসওয়াকের তুলনায় টুথপেস্ট ও ব্রাশ ব্যবহারে (মুখের পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে) আরো ভালো ফলাফল অর্জিত হয়’ (নূরুন আলাদ র্দাব, ক্যাসেট নং-১/১১৬)। সঊদী আরবের অন্যতম বিখ্যাত আলেম শায়খ হাতিয়া সালেম বলেন,
إذا نظرنا إلى الغرض من استعمال السواك ، وهو كما في الحديث : (مطهرة للفم مرضاة للرب) فأي شيء طهَّر الفم فإنه يؤدي المهمة ، ولكن ما كان عليه السلف فهو أولى وأصح طبياً
‘আমরা যদি মেসওয়াক ব্যবহারের উদ্দেশ্যের দিকে তাকাই তাহলে হাদীছে যেমনটি এসেছে, ‘মেসওয়াকের মাধ্যমে মুখের পরিচ্ছন্নতা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়’। অতএব যে জিনিস দ্বারা মুখের পরিচ্ছন্নতা অর্জিত হবে সেটা দ্বারাই উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হবে। তবে আমাদের সালাফ বা পূর্বসূরীগণ যা ব্যবহার করতেন, সেটা বেশি উত্তম এবং স্বাস্থ্যসম্মত’ (শারহু বুলূগিল মারাম, ৫/১৩ পৃ.)।
সুতরাং মেসওয়াক সহজে বহনযোগ্য, তা যেকোন সময় যেকোন জায়গায় ব্যবহার করা যায়। পক্ষান্তরে ব্রাশ ও টুথপেস্ট সব জায়গায় ব্যবহার করা সম্ভব নয়। তাছাড়া ব্রাশ ও টুথপেস্ট ব্যয় সাপেক্ষ। আর ভালো মানের ব্রাশ বা টুথপেস্ট না হলে অনেক সময় দাঁত ও মুখ গহব্বরে ক্ষয়ক্ষতিরও সম্ভাবনা থাকে। যাহোক, ব্রাশ ও টুথপেস্ট দ্বারা যেহেতু ভালোভাবে মুখের পরিচ্ছন্নতা অর্জিত হয় সেহেতু তা মেসওয়াকের বিকল্প হিসাবে গণ্য হবে এবং এর দ্বারা মেসওয়াকের ফযীলত অর্জিত হবে ইনশাআল্লাহ। তবে মেসওয়াক ব্যবহার করা অধিক উত্তম এবং স্বাস্থ্যের জন্যও অধিক উপযোগী।
প্রশ্নকারী : আলাউদ্দীন, চুয়াডাঙ্গা।