উত্তর : কাজের উপর নির্ভর করে ডিজিটাল স্কিল বা ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট-এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা কখনো বৈধ আবার কখনো অবৈধ। একজন মুসলিমের জন্য বৈধ কাজে ব্যবহৃত ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট বা ডিজাইনের কাজ করা জায়েয। পরন্তু হারাম কাজে ব্যবহৃত ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট বা ডিজাইনের কাজ করা থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব। যেমন ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইট, অ্যালকোহল, সিনেমা, বিপরীত লিঙ্গের চ্যাটিং ওয়েবসাইট ইত্যাদি। দু’টি শর্ত সাপেক্ষে ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট বা ডিজাইনের কাজ করা এবং তার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা বৈধ। যথা (১) ঐ ওয়েবসাইট বা কোম্পানির কাজগুলো যেন বৈধ এবং শরী‘আতসম্মত কাজে ব্যবহৃত হয় এবং এর কাজগুলো যেন নিষিদ্ধ বা হারাম কাজে ব্যবহৃত না হয়। (২) এমন কাজ যেটা হারামের সঙ্গে সম্পর্কিত আপনি তেমন কোন কাজ করবেন না (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১৬৯৯৫৫, ১২১২৫৯, ১০৫৩২৫)। কেননা তা অন্যায়, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ও পাপাচারে সহযোগিতা করার অন্তর্ভুক্ত। আর এ সকল কাজে সহযোগিতা করতে আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশনা প্রদান করেছেন’ (সূরা আল-মায়িদাহ: ২)। উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এখানে আল্লাহ তা‘আলা মুমিন ব্যক্তিদেরকে ভালো কাজে সহযোগিতা করতে আদেশ করেছেন, এবং অন্যায়, অসৎ ও হারাম কাজে সাহায্য, সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন (তাফসীর ইবনে কাছীর, ২/১২; তাফসীরে কুরতুবী, ৬/৪৬-৪৭ পৃ)।
দ্বিতীয়তঃ ওয়েবসাইট বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের তলব অনুযায়ী শরী‘আত সম্মত কাজ করা জায়েয। এ জগতে এমন হাজার হাজার কাজ আছে, সেগুলো থেকে যদি আপনি কিছু শর্ত সাপেক্ষে হালাল কর্মের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করেন তাহলে নিঃসন্দেহে তা হালাল (ছহীহ বুখারী, হা/২০৭২; ইবনু মাজাহ, ২১৩৮; আহমাদ, হা/১৬৭২৯, ১৫৭৩৯)।
তৃতীয়তঃ হারাম ও অশ্লীল বিজ্ঞাপন প্রচার করা এবং তা প্রচার করে অর্থ উপার্জন করা উভয়-ই হারাম। কেননা তা অন্যায়, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ও পাপাচারে সহযোগিতা করার অন্তর্ভুক্ত (সূরা আল-মায়িদাহ: ২)। ইমাম ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এখানে আল্লাহ তা‘আলা মুমিন ব্যক্তিদেরকে ভালো কাজে সহযোগিতা করতে আদেশ করেছেন এবং অন্যায়, অসৎ ও হারাম কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন (তাফসীর ইবনু কাছীর, ২/১২; তাফসীরে কুরতুবী, ৬/৪৬-৪৭ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-২৬৭১৭৩)।
চতুর্থতঃ সর্বদা হালাল-হারামের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে এবং হারাম ও সন্দেহপূর্ণ বিষয় থেকে দূরে থাতে হবে (ছহীহ বুখারী, হা/৫২; ছহীহ মুসলিম, হা/৩৯৮৬)। এমনকি রাসূল (ﷺ) সন্দেহপূর্ণ বিষয় ছেড়ে দিয়ে যাতে সন্দেহের সম্ভাবনা নেই তা গ্রহণ করার আদেশ করেছেন। কেননা সত্য হল শান্তি ও স্বস্তি এবং মিথ্যা হল দ্বিধা-সন্দেহ’ (তিরমিযী, হা/২৫১৮, সনদ ছহীহ)।
প্রশ্নকারী : মুরাদ পারভেজ, আত্রাই, নওগাঁ।