উত্তর : ইসলামের শিষ্টাচার হল মানুষ যখন টয়লেট বা গোসলখানায় প্রবেশ করবে, তখন তাদের প্রতিপালককে স্মরণ করবে এভাবে যে, প্রবেশের পূর্বে বলবে, اَللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ ‘হে আল্লাহ! তোমার নিকট নাপাক নর-নারী জিন-শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি’ (ছহীহ বুখারী, হা/১৪২, ৬৩২২)। প্রবেশ করার পর মুখে যিকির পাঠ করবে না বরং প্রবেশ করার সাথে সাথে যিকির পাঠ করা করা বাদ দিয়ে নীরবতা অবলম্বন করবে (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৫/৯৩ পৃ.)। ইমাম ইবনুল মুনযির (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, প্রখ্যাত তাবিঈ ইকরিমাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, لا يذكر الله وهو على الخلاء بلسانه ولكن بقلبه ‘টয়লেটে থাকাবস্থায় মুখে উচ্চারণ করে যিকির করবে না, তবে মনে মনে করতে পারে’ (আল-আওসাত্ব, ১/৩৪১ পৃ.)।
শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘টয়লেটের মধ্যে ওযূ করলে মনে মনে ‘বিসমিল্লাহ’ বলবে, মুখে উচ্চারণ করে বলবে না। কেননা ওযূ ও গোসলে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা ওয়াজিব হওয়ার বিষয়টি শক্তিশালী নয়। ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ওযূতে বিসমিল্লাহ্ বলার ব্যাপারে নবী (ﷺ) থেকে বিশুদ্ধ কোন হাদীছ বর্ণিত হয়নি’। এ জন্য আল-মুগনী গ্রন্থের লেখক ইমাম ইবনু কুদামা (রাহিমাহুল্লাহ) এই মতের সমর্থন করে বলেন, ‘ওযূর সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলা ওয়াজিব নয়’ (ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম, পবিত্রতা অধ্যায়, প্রশ্ন নং-১৩০)।
যদিও শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘সর্বত্র ও সর্বদা মনে মনে আল্লাহর যিকির করা শরী‘আত সম্মত। গোসলখানা হতে পারে কিংবা অন্য জায়গায়। নিঃসন্দেহে গোসলখানা, টয়লেট বা এ জাতীয় জায়গায় মুখে উচ্চারণ করে আল্লাহর যিকির করা অপসন্দনীয়, তবে যদি গোসলখানা ব্যতীত বাহিরে কোথাও ওযূ করার ব্যবস্থা না থাকে, সেক্ষেত্রে ওযূর পূর্বে বিসমিল্লাহ পড়তে হবে। কেননা কিছু আহলে ইলম্ বা বিদ্বানের নিকটে ওযূর পূর্বে বিসমিল্লাহ পড়া ওয়াজিব। আর জামহূরের নিকটে সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনু বায, ৫/৪০৮ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : অলীউযযামান, বাসাবো, ঢাকা।