সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০৪:৪৭ অপরাহ্ন
উত্তর : প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিকে ইসলামী পরিভাষায় বাইয়ে সালাম বা সালাফ বলা হয়। সালাম শব্দের অর্থ অগ্রিম কেনা-বেচা। ‘বাইয়ে সালাম বা সালাফ’ ক্রয়-বিক্রয়ের এমন একটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে বিক্রেতা পণ্যদ্রব্যের অগ্রিম মূল্য নিয়ে এই দায়িত্ব গ্রহণ করে যে, সে ভবিষ্যতের কোন একটি নির্ধারিত তারিখে নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের পণ্যদ্রব্য ক্রেতাকে সরবরাহ করবে। এখানে মূল্য নগদ কিন্তু পণ্য পরিশোধে বিলম্বিত হয় (ফাতাওয়া নূরুন আলাদ-দারব, ৯/১৪৯ পৃ.)। হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, واتفق العلماء على مشروعيته ‘আলেমগণের সর্বসম্মতিক্রমে বাইয়ে সালাম জায়েয’ (ফাৎহুল বারী, ৭/৭৬ পৃ.)। আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূল (ﷺ) যখন মদীনায় আসেন তখন মদীনাবাসী ফলে বা খেজুরে এক, দুই ও তিন বছরের মেয়াদে সালাম (অর্থাৎ অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয়) করতেন। রাসূল (ﷺ) বললেন, কোন ব্যক্তি সালাম (অর্থাৎ অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয়) করলে, সে যেন নির্ধারিত পরিমাপে এবং নির্দিষ্ট ওজনে এবং নির্দিষ্ট মেয়াদে অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয় করে’ (ছহীহ বুখারী, হা/২২৩৯,; ছহীহ মুসলিম, হা/১৬০৪)।

উক্ত হাদীছে রাসূল (ﷺ) বিশেষ কয়েকটি শর্তে বাইয়ে সালাম চুক্তির অনুমতি দিয়েছেন। যেমন (১) বাইয়ে সালাম জায়েয হওয়ার জন্য যরূরী হল, ক্রেতা চুক্তির সময়ই বিক্রেতাকে সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করবে। কারণ চুক্তির সময় ক্রেতা যদি সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ না করে, তাহলে তা ঋণের বিনিময়ে ঋণ বিক্রির সাদৃশ্য হয়ে যাবে। যা করতে রাসূল (ﷺ) নিষেধ করেছেন (আল-মুগনী, ৪/৩৭; আশ-শারহুল মুমতি‘, ৮/৪৪৪; কুয়েতি ফিকাহ বিশ্বকোষ, ৯/১৭৬ পৃ.)। (২) বাইয়ে সালাম শুধু সেই সব পণ্য দ্রব্যে জায়েয হবে, যে সব পণ্য দ্রব্যের কোয়ালিটি বা গুণগত মান, পরিমাণ, পরিমাপ ও সংখ্যা পূর্বেই পরিপূর্ণরূপে নির্ধারণ করা সম্ভব। (৩) যে পণ্য দ্রব্যে সালাম করার ইচ্ছা পোষণ করবে, তার ধরন এবং গুণগত মান সুস্পষ্টভাবে নির্দিষ্ট করে নেয়াও অপিরহার্য। যাতে সেই পণ্যদ্রব্যে এমন কোন অস্পষ্টতা বিদ্যমান না থাকে যা পরবর্তীতে কলহ-কোন্দলের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ প্রসঙ্গে সম্ভাব্য সকল বিষয় বিশদভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। (৪) কোন রকম অস্পষ্টতা ব্যতীত বিক্রিতব্য পণ্য দ্রব্যের পরিমাণ, পরিমাপ ও সংখ্যাও নির্দিষ্ট করে নেয়া অপরিহার্য। (৫) বিক্রিতব্য জিনিস পরিশোধের তারিখ এবং স্থানও চুক্তিতে নির্ধারণ করে নেয়া অপরিহার্য।

উল্লেখ্য, টাকার বিনিময়ে টাকা বেশি নেয়া যাবে না। এটা সুস্পষ্ট সূদ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা বহুগুণ বৃদ্ধি করে চক্রবৃদ্ধি হারে সূদ খাবে না। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফল হও’ (সূরা আলে ইমরান: ১৩০)। আবূ সাঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘দীনারের বিনিময়ে দীনার ও দিরহামের বিনিময়ে দিরহাম সমান সমান হওয়া চাই। আর যে বেশি দিবে বা বেশি নিবে সে সূদের লেন-দেন করল’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১৫৯৬)। আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, ‘আমরা রাসূল (ﷺ)-এর যুগে খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করতাম। তখন তিনি আমাদের নিকট এ মর্মে আদেশ দিয়ে লোক পাঠাতেন যে, এ মাল বিক্রয় করার পূর্বেই যেন ক্রয়ের স্থান হতে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বরং নিজেদের ঘরে তুলে নেয়ার আগেই বিক্রয় করলে তাদেরকে শাস্তি দেয়া হত’ (ছহীহ বুখারী, হা/২১৩৭; ছহীহ মুসলিম, হা/১৫২৭)। অন্যত্র বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করবে সে তা নিজ আয়ত্বে নেয়ার পূর্বে বিক্রয় করতে পারবে না’ (ছহীহ বুখারী, হা/২১৩৬; ছহীহ মুসলিম, হা/১৫২৫; আল-বাহরুর রায়িক, ৬/১৬৫)।


প্রশ্নকারী : আব্দুল মালেক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।





প্রশ্ন (৩) : আমার এলাকার জনৈক ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতও আদায় করেন আবার মসজিদের বাইরে গিয়ে গীবতও করেন। তার ছালাত হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১) : জনৈক আলেম বলেন, মিশরের জাদুঘরে ফের‘আউনের লাশ বলে যা রাখা হয়েছে, সেটা ফেরাউনের লাশ নয়। উক্ত দাবী কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১) : কেউ না জেনে বিদ‘আতী প্রতিষ্ঠানে বা বিদ‘আতী কাজে দান করলে করণীয় কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৫) : সর্বশেষ মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তি কবরে কতদিন থাকবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৭): সিজারিয়ান পদ্ধতিতে বাচ্চা প্রসবের পরে প্রসবোত্তর সময় তথা বাচ্চা প্রসবের ৪০ দিন পর্যন্ত ঐ মহিলার কি ছালাত আদায় করতে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৭) : ‘একবার আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ইটের তৈরি একটি মিম্বারে উঠে আমাদের উদ্দেশ্যে খুত্ববাহ প্রদান করলেন। তাঁর সাথে একটা তলোয়ার ছিল, যার মাঝে একটি ছহীফা ঝুলছিল’ (ছহীহ বুখারী, হা/৭৩০০)। উক্ত হাদীছে পাকা ইটের তৈরি মিম্বার বলতে আসলে কী বুঝানো হয়েছে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৩) : আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) একবার দাবা খেলায় রত কিছু মানুষের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বললেন, এই মুর্তিগুলো কী, যাদের সামনে তোমরা বসে আছ? এগুলো স্পর্শ করার চেয়ে জলন্ত অঙ্গার নির্বাপিত হওয়া পর্যন্ত তাতে হাতে রেখে দেয়া ভাল (সুনানে কুবরা, বায়হাক্বী, ১০/২১২)। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-কে দাবা খেলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, সেটা ‘নারদ’ (নামক খেলা) থেকে নিকৃষ্ট (সুনানে কুবরা, বায়হাক্বী, ১০/২১২)। ইমাম আবু হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ)-এর ছাত্র ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু হাসান (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘দাবা খেলা, পাশা খেলা এবং এ জাতীয় খেলাগুলোতে কোন কল্যাণ নেই’। উপরিউক্ত দলীলের আলোকে লুডু, তাস, ক্যারাম ইত্যাদি খেলাকেও হারাম বলা হয়। প্রশ্ন হল, ছাহাবী বা তাবেঈ কি কোন জিনিস হারাম করতে পারেন? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২১) : প্রচলিত আছে যে, মাগরিবের আযানের সময় শুয়ে থাকা যাবে না। এর কোন দলীল আছে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৪) : কোন রোগের কারণে চিকিৎসক যদি অল্প পরিমাণে মদ্যপান বা অন্য কোন হারাম বস্তু খাওয়ার নির্দেশনা দেয়, তবে তা গ্রহণ করা জায়েয হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৫) : আল্লাহর নাম ও গুণাবলী তথা আসমা ওয়াছা ছিফাত জানার গুরুত্ব এবং ফজিলত কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৫) : মেয়ের বিয়ের পরে পিতা তাকে শাসন করতে পারবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১২) : রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কতজন ছাহাবী বিবাহ করেননি বা সংসার করেননি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ