উত্তর : উক্ত দাবী সঠিক। ফের‘আউনের লাশ ক্বিয়ামত পর্যন্ত অক্ষত থাকবে এই ব্যাখ্যা সঠিক নয়। আল্লাহ বলেন, ‘আমরা আজ তোমরা দেহকে সংরক্ষণ করব, যাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হয়ে থাকো’ (সূরা ইউনুস ৯২)। উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
أَيْ نُلْقِيكَ عَلَى نَجْوَةٍ مِنَ الْأَرْضِ. وَذَلِكَ أَنَّ بَنِي إِسْرَائِيلَ لَمْ يُصَدِّقُوا أَنَّ فِرْعَوْنَ غَرِقَ.
‘অর্থাৎ আমরা তোমার দেহকে যমীনের উঁচু স্থানে নিক্ষেপ করব। এর কারণ হল, বানী ইসরাঈলের লোকেরা বিশ্বাস করেনি যে, ফের‘আউন ডুবে মরেছে’ (তাফসীরে কুরতুবী ৮/৩৭৯ পৃ.)। ইমাম ইবনে কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
لِتَكُونَ لِبَنِي إِسْرَائِيلَ دَلِيلًا عَلَى مَوْتِكَ وَهَلَاكِكَ.
‘তোমার মৃত্যু ও ধ্বংস যেন বানী ইসরাঈলদের জন্য প্রমাণ হিসাবে কাজ করে’ (তাফসীরে ইবনে কাছীর ৪/২৯৪ পৃ.)। প্রায় সব মুফাসসিরের বক্তব্য একই।
স্পষ্ট হল যে, এটা বানী ইসরাঈলদের জন্য নিদর্শন ছিল। কারণ তাদের মধ্যে যারা ফেরাউনের মৃত্যুকে অস্বীকার করেছিল তাদের জন্য আল্লাহ ফেরাঊনের মৃত দেহকে সাগরের তীরে উপস্থাপন করেছিলেন। ক্বিয়ামত পর্যন্ত রাখার জন্য নয়। কারণ আয়াতে এমনটি বলা হয়নি। ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) স্পষ্ট করে বলেন,
فَلَمَّا رَأَتْهُ بَنُو إِسْرَائِيلَ قَالُوا نَعَمْ! يَا مُوسَى هَذَا فِرْعَوْنُ وَقَدْ غَرِقَ، فَخَرَجَ الشَّكُّ مِنْ قُلُوبِهِمْ وَابْتَلَعَ الْبَحْرُ فِرْعَوْنَ كَمَا كَانَ
বানী ইসরাইলের লোকেরা যখন ফেরাউনের মৃত লাশ দেখল, তখন তারা বলল, হে মূসা (আলাইহিস সালাম) এটা ফের‘আউন ডুবে মরেছে। এভাবে তাদের অন্তর থেকে যখন সন্দেহ দূর হয়ে গেল, তখন সাগর আবার ফেরাউনকে গিলে ফেলল (তাফসীরে কুরতুবী ৮/৩৮০ পৃ.)। শাইখ ফাওযান বলেন, যারা ধারণা করে ফেরাউনের লাশ এখনো মিশরে আছে তারা মূর্খ। ফেরাউনের মৃত দেহ ক্ষণিকের জন্য যমীনের উপর তুলার উদ্দেশ্যে ছিল ফেরাউনের মৃত্যু সম্পর্কে বনী ইসরাইলের লোকেদের বিশ্বাস করানো। লাশ দেখার পর তারা বিশ্বাস করে নিয়েছে আর উদ্দেশ্যেও পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে (আল-মুন্তাক্বা ১/২১৩ পৃ.)।
ইমাম মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল-উছায়মীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
هم الذين يقولون إن فرعون صاحب موسى موجود في الأهرامات، هذا كذب وكلام لا أصل له.
যারা বলেন, ফের‘আউনের লাশ এখনো পিরামিডে আছে, এটা তাদের মিথ্যাচার; এটা এমন কথা যার কোন ভিত্তি নেই (লিক্বাউল বাব আল-মাফতূহ ১৮৩/২৫)।
প্রশ্নকারী : আব্দুল্লাহ তাহসীন, রংপুর।