ফাযায়েলে আমল : আহার ও অন্যান্য প্রসঙ্গ
-মূল : শায়খ আব্দুল্লাহ ইবনু ছালিহ আল-‘উবাইলান
-অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ*
(২য় কিস্তি)
একত্রে খাবার গ্রহণের ফযীলত
মহান আল্লাহ বলেন,
وَ جَعَلَ فِیۡہَا رَوَاسِیَ مِنۡ فَوۡقِہَا وَ بٰرَکَ فِیۡہَا وَ قَدَّرَ فِیۡہَاۤ اَقۡوَاتَہَا فِیۡۤ اَرۡبَعَۃِ اَیَّامٍ سَوَآءً لِّلسَّآئِلِیۡنَ.
‘আর তার উপরিভাগে তিনি দৃঢ় পর্বতমালা স্থাপন করেছেন এবং তাতে বরকত দিয়েছেন আর তাতে চারদিনে প্রার্থনাকারীদের জন্য সমভাবে খাদ্য নিরূপণ করে দিয়েছেন’ (সূরা হা-মীম আস-সাজদাহ : ১০)। মহান আল্লাহ বলেন,
فَلَمَّا جَاوَزَا قَالَ لِفَتٰىہُ اٰتِنَا غَدَآءَنَا لَقَدۡ لَقِیۡنَا مِنۡ سَفَرِنَا ہٰذَا نَصَبًا.
‘অতঃপর যখন তারা অগ্রসর হল তখন সে তার যুবককে বলল, আমাদের সকালের খাবার নিয়ে আস। আমাদের এই সফরে আমরা অনেক ক্লান্তির মুখোমুখি হয়েছি’ (সূরা আল-কাহ্ফ : ৬২)।
১১. عَنْ وَحْشِيِّ بْنِ حَرْبٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ جَدِّهِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ ﷺ إِنَّا نَأْكُلُ وَلَا نَشْبَعُ قَالَ تَجْتَمِعُوْنَ عَلَى طَعَامِكُمْ أَوْ تَتَفَرَّقُوْنَ؟ قَالُوْا نَتَفَرَّقُ قَالَ اجْتَمِعُوْا عَلَى طَعَامِكُمْ وَاذْكُرُوا اسْمَ اللهِ يُبَارِكْ لَكُمْ فِيْهِ.
১১. ওয়াহশী ইবনু হারব তাঁর পিতার সুত্রে দাদা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণনা করে বলেন, একদা ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) আমরা খানাপিনা করি কিন্তু আমরা পরিতৃপ্ত হই না। তিনি বললেন, তোমরা কি একসাথে খাও নাকি পৃথক পৃথকভাবে খাও? তারা বললেন, পৃথকভাবে। তিনি বললেন, তোমরা খাওয়ার সময় একসাথে খাবে এবং আল্লাহর নাম নিবে, তাহলে তোমাদের খানার মধ্যে বরকত আসবে।[১]
১২. وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ طَعَامُ الاِثْنَيْنِ كَافِي الثَّلَاثَةِ وَطَعَامُ الثَّلَاثَةِ كَافِي الْأَرْبَعَةِ.
১২. আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, দু’জনের খাবার তিনজনের জন্য যথেষ্ট এবং তিনজনের খাবার চারজনের জন্য যথেষ্ট।[২]
১৩. وَعَنْ جَابِرٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ طَعَامُ الْوَاحِدِ يَكْفِي الْاِثْنَيْنِ وَطَعَامُ الْاِثْنَيْنِ يَكْفِي الْأَرْبَعَةَ وَطَعَامُ الْأَرْبَعَةِ يَكْفِي الثَّمَانِيَةَ.
১৩. জাবের (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, একজনের খাবার দুইজনের জন্য যথেষ্ট, দুইজনের খাবার চারজনের জন যথেষ্ট এবং চারজনের খাবার আটজনের জন্য যথেষ্ট।[৩] ছামুরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) কর্তৃক বর্ণিত হাদীছে এসেছে,
قَالَ دُوْنَ قَوْلِهِ وَطَعَامُ الْأَرْبَعَةِ يَكْفِي الثَّمَانِيَةَ وَزَادَ فِيْ آخِرِهِ وَيَدُ اللهِ عَلَى الْجَمَاعَةِ.
রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কথা ‘আর চারজনের খাবার আটজনের জন্য যথেষ্ট’ এর সাথে শেষে আরো অতিরিক্ত যে কথা বলেছেন তা হল, আর আল্লাহ তা‘আলার হাত সব সময় জামা‘আতবদ্ধদের উপরে থাকে।[৪]
বরকতের আশায় ধোয়ার আগে হাত চেটে খাওয়ার ফযীলত
মহান আল্লাহ বলেন,
فَلَمَّا فَصَلَ طَالُوۡتُ بِالۡجُنُوۡدِ قَالَ اِنَّ اللّٰہَ مُبۡتَلِیۡکُمۡ بِنَہَرٍ فَمَنۡ شَرِبَ مِنۡہُ فَلَیۡسَ مِنِّیۡ وَ مَنۡ لَّمۡ یَطۡعَمۡہُ فَاِنَّہٗ مِنِّیۡۤ اِلَّا مَنِ اغۡتَرَفَ غُرۡفَۃًۢ بِیَدِہٖ.
‘অতঃপর যখন তালুত সৈন্যবাহিনী নিয়ে বের হল, বলল, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে একটি নদী দ্বারা পরীক্ষা করবেন। অতএব যে তা হতে পান করবে, সে আমার দলভুক্ত নয়। আর যে তা খাবে না, তাহলে নিশ্চয় সে আমার দলভুক্ত’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৪৯)। মহান আল্লাহ বলেন,
اِنَّ الۡمُبَذِّرِیۡنَ کَانُوۡۤا اِخۡوَانَ الشَّیٰطِیۡنِ وَ کَانَ الشَّیۡطٰنُ لِرَبِّہٖ کَفُوۡرًا.
‘নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। আর শয়তান তার রবের প্রতি খুবই অকৃতজ্ঞ’ (সূরা বনী ইসরাইল : ২৭)।
১৪. عَنْ جَابِرٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ أَمَرَ بِلَعْقِ الْأَصَابِعِ وَالصَّفْحَةِ وَقَالَ إِنَّكُمْ لَا تَدْرُوْنَ فِيْ أَيِّ طَعَامِكُمُ الْبَرَكَةُ؟
১৪. জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী করীম (ﷺ) আঙ্গুল ও খাদ্যপাত্র চেটে খেতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং বলেছেন, তোমাদের খাদ্যের কোন অংশটির মধ্যে বরকত রয়েছে, সে বিষয়ে তোমরা অবগত নও।[৫]
১৫. وَعَنْ جَابِرٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ إِذَا وَقَعَتْ لُقْمَةُ أَحَدِكُمْ فَلْيَأْخُذْهَا فَلْيُمِطْ مَا كَانَ بِهَا مِنْ أَذًى وَلْيَأْكُلْهَا وَلَا يَدَعْهَا لِلشَّيْطَانِ وَلَا يَمْسَحْ يَدَهُ بِالْمِنْدِيْلِ حَتَّى يَلْعَقَ أَصَابِعَهُ فَإِنَّهُ لَا يَدْرِيْ فِيْ أَيِّ طَعَامِهِ الْبَرَكَةُ.
১৫. জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের কারো লুকমা পড়ে গেলে সে যেন তা তুলে নেয়। অতঃপর তাতে যে ময়লা লেগেছে তা যেন দূর করে এবং খাদ্যটুকু খেয়ে ফেলে। শয়তানের জন্য যেন তা ফেলে না রাখে। আর তার আঙ্গুল চেটে না খাওয়া পর্যন্ত সে যেন তার হাত রুমাল দিয়ে মুছে না ফেলে। কেননা সে জানে না খাদ্যের কোন অংশে বরকত আছে।[৬]
১৬. وَعَنْ جَابِرٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ إِنَّ الشَّيْطَانَ لَيَحْضُرُ أَحَدَكُمْ عِنْدَ كُلِّ شَيْءٍ مِنْ شَأْنِهِ حَتَّى يَحْضُرَهُ عِنْدَ طَعَامِهِ فَإِذَا سَقَطَتْ لُقْمَةُ أَحَدِكُمْ فَلْيَأْخُذْهَا فَلْيُمِطْ مَا كَانَ بِهَا مِنْ أَذًى ثُمَّ لِيَأْكُلْهَا وَلَا يَدَعْهَا لِلشَّيْطَانِ فَإِذَا فَرَغَ فَلْيَلْعَقْ أَصَابِعَهُ فَإِنَّهُ لَا يَدْرِيْ فِيْ أَيِّ طَعَامِهِ الْبَرَكَةُ.
১৬. জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, শয়তান তোমাদের প্রতিটি কাজে উপস্থিত হয়। এমনকি তোমাদের কারো আহারের সময়ও সে উপস্থিত হয়। সুতরাং তোমাদের কারো যদি লুকমা পড়ে যায়, তবে সে যেন সেটা উঠিয়ে লেগে যাওয়া ময়লা দূর করে তা খেয়ে ফেলে। শয়তানের জন্য যেন তা রেখে না দেয়। আহার শেষে সে যেন তার আঙ্গুলগুলো চেটে খায়। কেননা সে জানে না, তার খাদ্যের কোন অংশে বরকত আছে।[৭] অন্য বর্ণনায় এসেছে,
فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يَرْصُدُ النَّاسَ أَوِ الْإِنْسَانَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ حَتَّى عِنْدَ مَطْعَمِهِ أَوْ طَعَامِهِ وَلَا يَرْفَعُ الصَّحْفَةَ حَتَّى يَلْعَقَهَا أَوْ يُلْعِقَهَا فَإِنَّ آخِرَ الطَّعَامِ الْبَرَكَةُ.
‘কেননা শয়তান মানুষের প্রতিটি কাজে ওঁত-পেতে থাকে। এমনকি তার খাবার ঘর ও আহারের সময়ও সে ওঁত-পেতে থাকে। সুতরাং চেটে না খেয়ে অথবা অন্যের দ্বারা চেটে না নিয়ে কেউ যেন বাসন থেকে না উঠে, কেননা তার খাদ্যের শেষ অংশের মধ্যে বরকত রয়েছে’।[৮]
১৭. وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ إِذَا أَكَلَ أَحَدُكُمْ فَلْيَلْعَقْ أَصَابِعَهُ فَإِنَّهُ لَا يَدْرِيْ فِيْ أَيَّتِهِنَّ الْبَرَكَةُ.
১৭. আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের কেউ যদি আহার করে, সে যেন তার আঙ্গুলগুলো চেটে খায়। কেননা সে জানে না খাদ্যের কোন অংশে বরকত আছে।[৯]
১৮. وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِذَا أَكَلَ أَحَدُكُمْ طَعَامًا فَلَا يَمْسَحْ أَصَابِعَهُ حَتَّى يَلْعَقَهَا أَوْ يُلْعِقَهَا.
১৮. আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ কোন খাবার খায়, তখন সে যেন তার আঙ্গুল চেটে খাওয়া অথবা অন্যের দ্বারা তা চেটে না নেয়া পর্যন্ত না মুছে।[১০]
আহারের পর ‘আল-হামদুল্লিাহ’ বলার ফযীলত
মহান আল্লাহ বলেন,
اَلتَّآئِبُوۡنَ الۡعٰبِدُوۡنَ الۡحٰمِدُوۡنَ السَّآئِحُوۡنَ الرّٰکِعُوۡنَ السّٰجِدُوۡنَ الۡاٰمِرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ النَّاہُوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَ الۡحٰفِظُوۡنَ لِحُدُوۡدِ اللّٰہِ وَ بَشِّرِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ.
‘তারা তাওবাকারী, ইবাদতকারী, আল্লাহর প্রশংসাকারী, ছিয়াম পালনকারী, রুকূকারী, সিজদাহকারী, সৎকাজের আদেশদাতা, অসৎকাজের নিষেধকারী এবং আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা হেফাযতকারী। আর মুমিনদেরকে তুমি সুসংবাদ দাও’ (সূরা আত-তওবাহ : ১১২)। মহান আল্লাহ বলেন,
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُلُوۡا مِنۡ طَیِّبٰتِ مَا رَزَقۡنٰکُمۡ وَ اشۡکُرُوۡا لِلّٰہِ اِنۡ کُنۡتُمۡ اِیَّاہُ تَعۡبُدُوۡنَ.
‘হে মুমিনগণ! আহার কর আমি তোমাদেরকে যে হালাল রিযিক দিয়েছি তা থেকে এবং আল্লাহর জন্য শোকর কর, যদি তোমরা তাঁরই ইবাদত কর’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৭২)। মহান আল্লাহ বলেন,
ہُوَ الۡحَیُّ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ فَادۡعُوۡہُ مُخۡلِصِیۡنَ لَہُ الدِّیۡنَ اَلۡحَمۡدُ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ.
‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই। সুতরাং তোমরা দ্বীনকে তাঁর জন্য একনিষ্ঠ করে তাঁকে ডাক। সকল প্রশংসা আল্লাহর যিনি জগতসমূহের রব’ (সূরা আল-মুমিন : ৬৫)। মহান আল্লাহ বলেন,
مَا یَفۡعَلُ اللّٰہُ بِعَذَابِکُمۡ اِنۡ شَکَرۡتُمۡ وَ اٰمَنۡتُمۡ وَ کَانَ اللّٰہُ شَاکِرًا عَلِیۡمًا.
‘যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর এবং ঈমান আন তাহলে তোমাদেরকে আযাব দিয়ে আল্লাহ কী করবেন? আল্লাহ হচ্ছেন পুরস্কার দানকারী, সর্বজ্ঞ’ (সূরা আন-নিসা : ১৪৭)। মহান আল্লাহ বলেন,
اِنَّا ہَدَیۡنٰہُ السَّبِیۡلَ اِمَّا شَاکِرًا وَّ اِمَّا کَفُوۡرًا.
‘অবশ্যই আমি তাকে পথ প্রদর্শন করেছি, হয় সে কৃতজ্ঞ অথবা অকৃতজ্ঞ’ (সূরা আদ-দাহর : ৩)।
১৯. عَنْ مُعَاذِ بْنِ أَنَسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ مَنْ أَكَلَ طَعَامًا ثُمَّ قَالَ الحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ أَطْعَمَنِيْ هَذَا الطَّعَامَ وَرَزَقَنِيْهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِنِّيْ وَلَا قُوَّةٍ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ.
১৯. মু‘আয ইবনু আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, কেউ যদি কোন খাবার খায়। অতঃপর এই দু‘আ পাঠ করে الحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ أَطْعَمَنِيْ هَذَا الطَّعَامَ وَرَزَقَنِيْهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِنِّيْ وَلَا قُوَّةٍ অর্থাৎ ‘সমস্ত প্রশংসা ঐ আল্লাহর জন্য, যিনি আমাকে এই খাবার খাইয়েছেন এবং এটা রিযিক হিসাবে ব্যবস্থা করে দিয়েছেন আমার শক্তি ও চেষ্টা ছাড়াই’ তবে তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।[১১]
২০. وَعَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ إِنَّ اللهَ لَيَرْضَى عَنِ الْعَبْدِ أَنْ يَّأكُلَ الْأَكْلَةَ فَيَحْمَدَهُ عَلَيْهِ أَوْ يَشْرَبَ الشَّرْبَةَ فَيَحْمَدَهُ عَلَيْهَا.
২০. আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সেই বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হন, যে এক লোকমা খাদ্য খেয়ে তাঁর প্রশংসা করে অথবা এক ঢোক পানি পান করে তাঁর শুকরিয়া আদায় করে।[১২]
২১. وَعَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لَيْسَ أَحَدٌ أَحَبَّ إِلَيْهِ الْمَدْحُ مِنَ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ مِنْ أَجْلِ ذَلِكَ مَدَحَ نَفْسَهُ وَلَيْسَ أَحَدٌ أَغْيَرَ مِنَ اللهِ مِنْ أَجْلِ ذَلِكَ حَرَّمَ الْفَوَاحِشَ وَلَيْسَ أَحَدٌ أَحَبَّ إِلَيْهِ الْعُذْرُ مِنَ اللهِ مِنْ أَجْلِ ذَلِكَ أَنْزَلَ الْكِتَابَ وَأَرْسَلَ الرُّسُلَ.
২১. আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহর চেয়ে অধিক আত্মপ্রশংসা পসন্দকারী কেউ নেই। এ জন্যই তিনি নিজে নিজের প্রশংসা করেছেন। অনুরূপভাবে আল্লাহর তুলনায় অধিক আত্ম-মর্যাদাবোধ সম্পন্ন কেউ নেই। এ কারণেই তিনি সমস্ত অশ্লীলতাকে হারাম করেছেন। আল্লাহর তুলনায় অধিক পরিমাণে ওযর গ্রহণকারী আর কোন সত্তা নেই। এ কারণেই তিনি কিতাব নাযিল করেছেন এবং রাসূল প্রেরণ করেছেন।[১৩]
* পিএইচ.ডি গবেষক, আরবী বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
[১]. আবূ দাঊদ, হা/৩৭৬৪; ইবনু মাজাহ, হা/৩২৮৬, সনদ হাসান।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৩৯২; ছহীহ মুসলিম, হা/২০৫৮।
[৩]. ছহীহ মুসলিম, হা/২০৫৯।
[৪]. মুসনাদে বাযযার, হা/৪৫৯০, সনদ হাসান।
[৫]. ছহীহ মুসলিম, হা/২০৩৩।
[৬]. ছহীহ মুসলিম, হা/২০৩৩।
[৭]. ছহীহ মুসলিম, হা/২০৩৩।
[৮]. ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৫২৫৩; সনদ ছহীহ লি-গাইরিহী, সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১৪০৪।
[৯]. ছহীহ মুসলিম, হা/২০৩৫।
[১০]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৪৫৬।
[১১]. তিরমিযী, হা/৩৪৫৮; আবূ দাঊদ, হা/৪০২৩; ইবনু মাজাহ, হা/৩২৮৫, সনদ হাসান।
[১২]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৭৩৪।
[১৩]. ছহীহ বুখারী, হা/৫২২০; ছহীহ মুসলিম, হা/২৭৬০।
প্রসঙ্গসমূহ »:
আমল