রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ১০:৩৪ অপরাহ্ন

ফাযায়েলে তাওহীদ

মূল : শায়খ আব্দুল্লাহ ইবনু ছালিহ আল-উবাইলান
অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ*


(৫ম কিস্তি)

আল্লাহকে ভয় করার ফযীলত, কেননা তা সকল নিরাপত্তার চাবিকাঠি :

মহান আল্লাহ বলেন, وَ یَبۡقٰی وَجۡہُ رَبِّکَ ذُو الۡجَلٰلِ وَ الۡاِکۡرَامِ ‘আর থেকে যাবে শুধু মহামহিম ও মহানুভব আপনার রবের চেহারা’ (সূরা আর-রহমান : ২৭)। মহান আল্লাহ বলেন,

اِنَّمَا ذٰلِکُمُ الشَّیۡطٰنُ یُخَوِّفُ اَوۡلِیَآءَہٗ ۪ فَلَا تَخَافُوۡہُمۡ وَ خَافُوۡنِ اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ

‘সে তো শয়তান। সে তার বন্ধুদের ভয় দেখায়। তোমরা তাদেরকে ভয় করো না, বরং আমাকে ভয় কর, যদি তোমরা মুমিন হও’ (সূরা আলে ইমরান : ১৭৫)। তিনি আরো বলেন, اِنَّ الَّذِیۡنَ یَخۡشَوۡنَ رَبَّہُمۡ بِالۡغَیۡبِ لَہُمۡ مَّغۡفِرَۃٌ وَّ اَجۡرٌ کَبِیۡرٌ ‘নিশ্চয় যারা তাদের রবকে না দেখেই ভয় করে, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও বড় দান’ (সূরা আল-মূলক : ১২)।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ الَّذِیۡنَ یُؤۡتُوۡنَ مَاۤ اٰتَوۡا وَّ قُلُوۡبُہُمۡ وَجِلَۃٌ اَنَّہُمۡ اِلٰی رَبِّہِمۡ رٰجِعُوۡنَ ‘আর যারা যা দান করে তা ভীত-কম্পিত হৃদয়ে করে থাকে। এজন্য যে, তারা তাদের রবের দিকে প্রত্যাবর্তনশীল’ (সূরা আল-মুমিনূন : ৬০)। মহান আল্লাহ বলেন,

وَ اَنۡذِرۡ بِہِ الَّذِیۡنَ یَخَافُوۡنَ اَنۡ یُّحۡشَرُوۡۤا اِلٰی رَبِّہِمۡ لَیۡسَ لَہُمۡ مِّنۡ دُوۡنِہٖ وَلِیٌّ وَّ لَا شَفِیۡعٌ لَّعَلَّہُمۡ یَتَّقُوۡنَ

‘আর এ দ্বারা তুমি তাদেরকে সতর্ক কর, যারা ভয় করে যে, তাদেরকে তাদের রবের দিকে সমবেত করা হবে, (এ অবস্থায় যে) তিনি ব্যতীত তাদের জন্য থাকবে না কোন সাহায্যকারী আর না সুপারিশকারী। হয়ত তারা তাক্বওয়া অবলম্বন করবে’ (সূরা আল-আন‘আম : ৫১)। মহান আল্লাহ বলেন, وَ الَّذِیۡنَ یَصِلُوۡنَ مَاۤ اَمَرَ اللّٰہُ بِہٖۤ اَنۡ یُّوۡصَلَ وَ یَخۡشَوۡنَ رَبَّہُمۡ وَ یَخَافُوۡنَ سُوۡٓءَ الۡحِسَابِ. ‘আর আল্লাহ যে সম্পর্ক অটুট রাখার নির্দেশ দিয়েছেন, যারা তা অটুট রাখে এবং তাদের রবকে ভয় করে, আর মন্দ হিসাবের আশঙ্কা করে’ (সূরা রা‘দ : ২১)।

মহান আল্লাহ বলেন,

اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ یَدۡعُوۡنَ یَبۡتَغُوۡنَ اِلٰی رَبِّہِمُ الۡوَسِیۡلَۃَ اَیُّہُمۡ اَقۡرَبُ وَ یَرۡجُوۡنَ رَحۡمَتَہٗ وَ یَخَافُوۡنَ عَذَابَہٗ ؕ اِنَّ عَذَابَ رَبِّکَ کَانَ مَحۡذُوۡرًا

‘তারা যাদেরকে ডাকে, তারা নিজেরাই তো তাদের রবের কাছে নৈকট্যের মাধ্যমে অনুসন্ধান করে যে, তাদের মধ্যে কে তাঁর নিকটতর। আর তারা তাঁর রহমতের আশা করে এবং তাঁর আযাবকে ভয় করে। নিশ্চয় আপনার রবের আযাব ভীতিকর’ (সূরা বানী ইসরাঈল : ৫৭)। মহান আল্লাহ বলেন, مَا لَکُمۡ لَا تَرۡجُوۡنَ لِلّٰہِ وَقَارًا ‘তোমাদের কী হল তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের পরোয়া করছ না?’ (সূরা নূহ : ১৩)। মহান আল্লাহ বলেন,

قَالَ رَجُلٰنِ مِنَ الَّذِیۡنَ یَخَافُوۡنَ اَنۡعَمَ اللّٰہُ عَلَیۡہِمَا ادۡخُلُوۡا عَلَیۡہِمُ الۡبَابَ ۚ فَاِذَا دَخَلۡتُمُوۡہُ فَاِنَّکُمۡ غٰلِبُوۡنَ ۬ۚ وَ عَلَی اللّٰہِ فَتَوَکَّلُوۡۤا اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ

‘যারা ভয় করে, তাদের মধ্য হতে এমন দু’ব্যক্তি বলল, যাদের উপর আল্লাহ নিয়ামত দিয়েছেন, ‘তোমরা তাদের নিকট দরজা দিয়ে প্রবেশ কর। যখন সেখানে প্রবেশ করবে, তখন নিশ্চয় জয়ী হবে। আর আল্লাহর উপরই তাওয়াক্কুল কর, যদি তোমরা মুমিন হও’ (সূরা আল-মায়েদাহ : ২৩)।
——

عَنْ حُذَيْفَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ كَانَ رَجُلٌ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ يُسِيءُ الظَّنَّ بِعَمَلِهِ فَقَالَ لِأَهْلِهِ إِذَا أَنَا مُتُّ فَخُذُوْنِيْ فَذَرُّوْنِيْ فِي البَحْرِ فِيْ يَوْمٍ صَائِفٍ فَفَعَلُوْا بِهِ فَجَمَعَهُ اللهُ ثُمَّ قَالَ مَا حَمَلَكَ عَلَى الَّذِيْ صَنَعْتَ؟ قَالَ مَا حَمَلَنِي إِلَّا مَخَافَتُكَ، فَغَفَرَ لَهُ

(৪৩). হুযাইফা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমাদের পূর্বের উম্মাতের এক লোক ছিল, যে তার আমল সম্পর্কে আশংকা পোষণ করত। সে তার পরিবারের লোকদের বলল, আমি মারা গেলে তখন তোমরা আমাকে জ্বালিয়ে দিয়ে অতঃপর প্রচণ্ড গরমের দিনে আমার ছাই সমুদ্রে ছিটিয়ে দেবে। তারা সে অনুযায়ী কাজ করল। অতঃপর আল্লাহ সেই ছাই জমা করে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমাকে এ কাজে কিসে প্ররোচিত করলো? সে বলল, একমাত্র আপনার ভয়ই আমাকে এ কাজ করতে বাধ্য করেছে। তখন আল্লাহ তাকে মাফ করে দিলেন।[১]
——

عَنِ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ كَانَ يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَوْ تَعْلَمُوْنَ مَا أَعْلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيْلًا وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيْرًا

(৪৪). আবু হুরাইরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তবে তোমরা খুব কমই হাসতে এবং খুব বেশি কাঁদতে।[২]

عَنْ أَنَسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ ثَلَاثٌ مُهْلِكَاتٌ وَثَلَاثٌ مُنْجِيَاتٌ شُحٌّ مُطَاعٌ وَهَوًى مُتَّبَعٌ وَإِعْجَابُ الْمَرْءِ بِنَفْسِهِ وَثَلَاثٌ مُنْجِيَاتٌ خَشْيَةُ اللهِ فِي السِّرِّ وَالْعَلَانِيَةِ وَالْقَصْدُ فِي الْفَقْرِ وَالْغِنَى وَالْعَدْلُ فِي الْغَضَبِ وَالرِّضَا

আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তিনটি ধ্বংসকারী এবং মুক্তিদানকারী বিষয় রয়েছে। (ধ্বংসাত্বক তিনটি বিষয় হল) কৃপণ, প্রবৃত্তি পূজারী ও মানুষকে নিজের মতের দিকে আহ্বানকারী। আর মুক্তিদানকারী তিনটি বিষয় হল, গোপনে প্রকাশ্যে সর্বদা আল্লাহকে ভয় করা, দরিদ্রতা ও ধনাঢ্যতায় মিতব্যয়ী হওয়া, রাগ ও ও সন্তুষ্টি সর্বাবস্থায় ন্যায়-ইনছাফ প্রতিষ্ঠা করা।[৩]
——

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللهُ فِيْ ظِلِّهِ يَوْمَ لَا ظِلَّ إِلَّا ظِلُّهُ الإِمَامُ العَادِلُ وَشَابٌّ نَشَأَ فِيْ عِبَادَةِ رَبِّهِ وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ فِي المَسَاجِدِ وَرَجُلَانِ تَحَابَّا فِي اللهِ اجْتَمَعَا عَلَيْهِ وَتَفَرَّقَا عَلَيْهِ وَرَجُلٌ طَلَبَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ إِنِّيْ أَخَافُ اللهَ وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ أَخْفَى حَتَّى لَا تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِيْنُهُ وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللهَ خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ

(৪৬). আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে দিন আল্লাহর (রহমতের) ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না, সেদিন সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিজের (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দিবেন। (১) ন্যায়পরায়ণ শাসক, (২) সে যুবক যার জীবন গড়ে উঠেছে তার প্রতিপালকের ইবাদতের মধ্যে, (৩) সে ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে, (৪) সে দু’ ব্যক্তি যারা পরস্পরকে ভালবাসে আল্লাহর ওয়াস্তে, একত্র হয় আল্লাহর জন্য এবং পৃথকও হয় আল্লাহর জন্য, (৫) সে ব্যক্তি যাকে কোনো উচ্চ বংশীয় রূপসী নারী আহবান জানায়, কিন্তু সে এ বলে প্রত্যাখ্যান করে যে, ‘আমি আল্লাহকে ভয় করি’, (৬) সে ব্যক্তি যে এমন গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত যা খরচ করে বাম হাত তা জানে না, (৭) সে ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহর যিকির করে, ফলে তার দু’চোখ দিয়ে অশ্রুধারা বইতে থাকে’।[৪]
——

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ إِذَا تَحَدَّثَ عَبْدِيْ بِأَنْ يَعْمَلَ حَسَنَةً فَأَنَا أَكْتُبُهَا لَهُ حَسَنَةً مَا لَمْ يَعْمَلْ فَإِذَا عَمِلَهَا فَأَنَا أَكْتُبُهَا بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا وَإِذَا تَحَدَّثَ بِأَنْ يَعْمَلَ سَيِّئَةً فَأَنَا أَغْفِرُهَا لَهُ مَا لَمْ يَعْمَلْهَا فَإِذَا عَمِلَهَا فَأَنَا أَكْتُبُهَا لَهُ بِمِثْلِهَا وَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَتِ الْملَائِكَةُ رَبِّ ذَاكَ عَبْدُكَ يُرِيدُ أَنْ يَعْمَلَ سَيِّئَةً وَهُوَ أَبْصَرُ بِهِ فَقَالَ ارْقُبُوْهُ فَإِنْ عَمِلَهَا فَاكْتُبُوهَا لَهُ بِمِثْلِهَا وَإِنْ تَرَكَهَا فَاكْتُبُوْهَا لَهُ حَسَنَةً إِنَّمَا تَرَكَهَا مِنْ جَرَّايَ

(৪৭). আবু হুরায়রাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, যখন আমার কোন বান্দা মনে মনে কোন ভাল কাজ করার কল্পনা করে, তখন সে কাজ না করতেই আমি তার জন্যে একটি ছাওয়াব লিখে রাখি। আর যদি সে কাজটি সম্পন্ন করে তখন তার দশগুণ নেকী লিখে রাখি। আর যদি সে অন্তরে অন্তরে কোন মন্দ কাজ করার কল্পনা করে, তখন সে কাজ না করা পর্যন্ত তাকে ক্ষমা করে দেই। আর যদি সে কাজটি করে ফেলে তখন একটি মাত্র গুনাহ লিখে রাখি। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেন, ফেরেশতারা বলেন- হে প্রভু! তোমার অমুক বান্দা একটি মন্দ কাজ করার ইচ্ছা করেছে অথচ তিনি স্বচক্ষে তা দেখেন, তখন তিনি তাদেরকে (ফেরেশতাদেরকে) বলেন, তাকে পাহারা দাও। (অর্থাৎ দেখ সে কি করে)। যদি সে এ কাজটি করে, তা হলে একটি গুনাহ লিখ। কেননা সে আমার ভয়েই তা বর্জন করেছে’।[৫]
——

আল্লাহর প্রতি আশা-আকাঙ্ক্ষা রাখার ফযীলত, নিশ্চয় তা আল্লাহর প্রতি ভাল ধারণা পোষণের চাবিকাঠি :

মহান আল্লাহ বলেন,

وَ عَلَی الثَّلٰثَۃِ الَّذِیۡنَ خُلِّفُوۡا حَتّٰۤی اِذَا ضَاقَتۡ عَلَیۡہِمُ الۡاَرۡضُ بِمَا رَحُبَتۡ وَ ضَاقَتۡ عَلَیۡہِمۡ اَنۡفُسُہُمۡ وَ ظَنُّوۡۤا اَنۡ لَّا مَلۡجَاَ مِنَ اللّٰہِ اِلَّاۤ اِلَیۡہِ ثُمَّ تَابَ عَلَیۡہِمۡ لِیَتُوۡبُوۡا اِنَّ اللّٰہَ ہُوَ التَّوَّابُ الرَّحِیۡمُ

‘এবং সে তিন জনের (তওবা কবুল করলেন), যাদের বিষয়টি স্থগিত রাখা হয়েছিল। এমনকি পৃথিবী প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বেও তাদের জন্য সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছিল এবং তাদের নিকট তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। আর তারা নিশ্চিত বুঝেছিল যে, আল্লাহর আযাব থেকে কোন আশ্রয়স্থল নেই। অতঃপর তিনি তাদের তওবার তাওফীক দিলেন, যাতে তারা তওবা করে। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, দয়ালু’ (সূরা আত-তওবাহ : ১১৮)। মহান আল্লাহ বলেন, فَمَا ظَنُّکُمۡ بِرَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ‘তাহলে সকল সৃষ্টির রব সম্পর্কে তোমাদের ধারণা কী?’ (সূরা আছ-ছাফ্ফাত : ৮৭)। মহান আল্লাহ বলেন,

وَ یُعَذِّبَ الۡمُنٰفِقِیۡنَ وَ الۡمُنٰفِقٰتِ وَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ وَ الۡمُشۡرِکٰتِ الظَّآنِّیۡنَ بِاللّٰہِ ظَنَّ السَّوۡءِ عَلَیۡہِمۡ دَآئِرَۃُ السَّوۡءِ وَ غَضِبَ اللّٰہُ عَلَیۡہِمۡ وَ لَعَنَہُمۡ وَ اَعَدَّ لَہُمۡ جَہَنَّمَ وَ سَآءَتۡ مَصِیۡرًا

‘আর যেন তিনি শাস্তি দিতে পারেন মুনাফিক নারী-পুরুষ, ও মুশরিক নারী-পুরুষকে যারা আল্লাহ সম্পর্কে মন্দ ধারণা পোষণ করে; তাদের ওপরই অনিষ্টতা আপতিত হয়। আর আল্লাহ তাদের উপর রাগ করেছেন এবং তাদেরকে লানত দিয়েছেন, আর তাদের জন্য প্রস্তুত করেছেন জাহান্নাম; এবং গন্তব্য হিসাবে তা কতই না নিকৃষ্ট’ (সূরা আল-ফাত্হ : ৬)। মহান আল্লাহ বলেন,

وَ لَا تُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ بَعۡدَ اِصۡلَاحِہَا وَ ادۡعُوۡہُ خَوۡفًا وَّ طَمَعًا اِنَّ رَحۡمَتَ اللّٰہِ قَرِیۡبٌ مِّنَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ

‘আর তোমরা যমীনে ফাসাদ করো না তার সংশোধনের পর এবং তাঁকে ডাক ভয় ও আশা নিয়ে। নিশ্চয় আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ৫৬)। মহান আল্লাহ বলেন,

یٰبَنِیَّ اذۡہَبُوۡا فَتَحَسَّسُوۡا مِنۡ یُّوۡسُفَ وَ اَخِیۡہِ وَ لَا تَایۡـَٔسُوۡا مِنۡ رَّوۡحِ اللّٰہِ اِنَّہٗ لَا یَایۡـَٔسُ مِنۡ رَّوۡحِ اللّٰہِ اِلَّا الۡقَوۡمُ الۡکٰفِرُوۡنَ

‘হে আমার ছেলেরা! তোমরা যাও এবং ইউসুফ ও তার ভাইয়ের খোঁজ খবর নাও। আর তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। কেননা কাফির কওম ব্যতীত কেউই আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয় না’ (সূরা ইউসুফ : ৮৭)। মহান আল্লাহ বলেন, وَ مَا یَذۡکُرُوۡنَ اِلَّاۤ اَنۡ یَّشَآءَ اللّٰہُ ہُوَ اَہۡلُ التَّقۡوٰی وَ اَہۡلُ الۡمَغۡفِرَۃِ ‘আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কেউ উপদেশ গ্রহণ করতে পারে না। তিনিই ভয়ের যোগ্য এবং ক্ষমার অধিকারী’ (সূরা আল-মুদ্দাছছির : ৫৬)। মহান আল্লাহ বলেন,

اَلَّذِیۡنَ یَحۡمِلُوۡنَ الۡعَرۡشَ وَ مَنۡ حَوۡلَہٗ یُسَبِّحُوۡنَ بِحَمۡدِ رَبِّہِمۡ وَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِہٖ وَ یَسۡتَغۡفِرُوۡنَ لِلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡارَبَّنَا وَسِعۡتَ کُلَّ شَیۡءٍ رَّحۡمَۃً وَّ عِلۡمًا فَاغۡفِرۡ لِلَّذِیۡنَ تَابُوۡا وَ اتَّبَعُوۡا سَبِیۡلَکَ وَ قِہِمۡ عَذَابَ الۡجَحِیۡمِ

‘যারা আরশকে ধারণ করে এবং যারা এর চারপাশে রয়েছে, তারা তাদের রবের প্রশংসাসহ তাসবীহ পাঠ করে এবং তাঁর প্রতি ঈমান রাখে। আর মুমিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে বলে যে, ‘হে আমাদের রব, আপনি রহমত ও জ্ঞান দ্বারা সব কিছুকে পরিব্যপ্ত করে রেখেছেন। অতএব যারা তাওবা করে এবং আপনার পথ অনুসরণ করে আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন। আর জাহান্নামের আযাব থেকে আপনি তাদের রক্ষা করুন’ (সূরা আল-মুমিন : ৭)। মহান আল্লাহ বলেন,

وَ اکۡتُبۡ لَنَا فِیۡ ہٰذِہِ الدُّنۡیَا حَسَنَۃً وَّ فِی الۡاٰخِرَۃِ اِنَّا ہُدۡنَاۤ اِلَیۡکَ قَالَ عَذَابِیۡۤ اُصِیۡبُ بِہٖ مَنۡ اَشَآءُ وَ رَحۡمَتِیۡ وَسِعَتۡ کُلَّ شَیۡءٍ فَسَاَکۡتُبُہَا لِلَّذِیۡنَ یَتَّقُوۡنَ وَ یُؤۡتُوۡنَ الزَّکٰوۃَ وَ الَّذِیۡنَ ہُمۡ بِاٰیٰتِنَا یُؤۡمِنُوۡنَ

‘আর আমাদের জন্য এ দুনিয়াতে ও আখিরাতে কল্যাণ লিখে দিন। নিশ্চয় আমরা আপনার দিকে প্রত্যাবর্তন করেছি।’ তিনি বললেন, ‘আমি যাকে চাই তাকে আমার আযাব দেই। আর আমার রহমত সব বস্তুকে পরিব্যাপ্ত করেছে। সুতরাং আমি তা লিখে দেব তাদের জন্য যারা তাক্বওয়া অবলম্বন করে এবং যাকাত প্রদান করে। আর যারা আমার আয়াতসমূহের প্রতি ঈমান আনে’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ১৫৬)।
——

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ اللهُ تَعَالَى أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِيْ بِيْ وَأَنَا مَعَهُ إِذَا ذَكَرَنِيْ فَإِنْ ذَكَرَنِيْ فِيْ نَفْسِهِ ذَكَرْتُهُ فِيْ نَفْسِيْ وَإِنْ ذَكَرَنِيْ فِيْ مَلَإٍ ذَكَرْتُهُ فِيْ مَلَإٍ خَيْرٍ مِنْهُمْ وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَيَّ بِشِبْرٍ تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ ذِرَاعًا وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَيَّ ذِرَاعًا تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ بَاعًا وَإِنْ أَتَانِي يَمْشِيْ أَتَيْتُهُ هَرْوَلَةً

(৪৮). আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘আমি সে রকমই, যে রকম বান্দা আমার প্রতি ধারণা রাখে। আমি বান্দার সঙ্গে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে। যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে; আমিও তাকে নিজে স্মরণ করি। আর যদি সে জন-সমাবেশে আমাকে স্মরণ করে, তবে আমিও তাদের চেয়ে উত্তম সমাবেশে তাকে স্মরণ করি। যদি সে আমার দিকে এক বিঘত এগিয়ে আসে, তবে আমি তার দিকে এক হাত এগিয়ে যাই, যদি সে আমার দিকে এক হাত অগ্রসর হয়; আমি তার দিকে দু’ হাত এগিয়ে যাই। আর সে যদি আমার দিকে হেঁটে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাই’।[৬]
——

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيِّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَبْلَ مَوْتِهِ بِثَلَاثَةِ أَيَّامٍ يَقُوْلُ لَا يَمُوْتَنَّ أَحَدُكُمْ إِلَّا وَهُوَ يُحْسِنُ الظَّنَّ بِاللهِ عَزَّ وَجَلَّ

(৪৯). জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর তিন দিন আগে তাঁকে আমি এ কথা বলতে শুনেছি যে, তোমাদের সকলেই যেন আল্লাহর প্রতি উত্তম ধারণা পোষণ করা অবস্থায় মারা যায়।[৭]
——

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَوْ يَعْلَمُ الْمُؤْمِنُ مَا عِنْدَ اللهِ مِنَ الْعُقُوْبَةِ مَا طَمِعَ بِجَنَّتِهِ أَحَدٌ وَلَوْ يَعْلَمُ الْكَافِرُ مَا عِنْدَ اللهِ مِنَ الرَّحْمَةِ مَا قَنَطَ مِنْ جَنَّتِهِ أَحَدٌ

(৫০). আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহর কাছে যে কি পরিমাণ শাস্তি রয়েছে, ঈমানদারগণ যদি তা জানত তবে কেউ তাঁর কাছে জান্নাতের প্রত্যাশা করত না। এমনিভাবে আল্লাহর কাছে যে পরিমাণ দয়া আছে, কাফের যদি তা জানত তবে কেউ তার জান্নাত থেকে নিরাশ হত না।[৮]
——

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ إِنَّ اللهَ خَلَقَ الرَّحْمَةَ يَوْمَ خَلَقَهَا مِائَةَ رَحْمَةٍ فَأَمْسَكَ عِنْدَهُ تِسْعًا وَتِسْعِيْنَ رَحْمَةً وَأَرْسَلَ فِيْ خَلْقِهِ كُلِّهِمْ رَحْمَةً وَاحِدَةً فَلَوْ يَعْلَمُ الكَافِرُ بِكُلِّ الَّذِيْ عِنْدَ اللهِ مِنَ الرَّحْمَةِ لَمْ يَيْئَسْ مِنَ الجَنَّةِ وَلَوْ يَعْلَمُ المُؤْمِنُ بِكُلِّ الَّذِيْ عِنْدَ اللهِ مِنَ العَذَابِ لَمْ يَأْمَنْ مِنَ النَّارِ

(৫১). আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি। ‘আল্লাহ যেদিন রহমত সৃষ্টি করেন সেদিন একশটি রহমত সৃষ্টি করেছেন। নিরানব্বইটি তাঁর কাছে রেখে দিয়েছেন এবং একটি রহমত সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে পাঠিয়ে দিয়েছেন। যদি কাফির আল্লাহর কাছে সুরক্ষিত রহমত সম্পর্কে জানে, তাহলে সে জান্নাত লাভে নিরাশ হবে না। আর মুমিন যদি আল্লাহর কাছে যে শাস্তি আছে সে সম্পর্কে জানে তা হলে সে জাহান্নাম থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে করবে না’।[৯]
——

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ اللهَ لَمَّا قَضَى الخَلْقَ كَتَبَ عِنْدَهُ فَوْقَ عَرْشِهِ إِنَّ رَحْمَتِيْ سَبَقَتْ غَضَبِيْ

(৫২). আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ যখন সৃষ্টির কাজ শেষ করলেন, তখন তিনি তাঁর কিতাব লাওহে মাহফূযে লিখেন, যা আরশের উপর তাঁর নিকট আছে। নিশ্চয় আমার রহমত আমার ক্রোধের উপর প্রবল’।[১০]
——

عَنْ أَنَسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ عَلَى شَابٍّ وَهُوَ فِي المَوْتِ فَقَالَ كَيْفَ تَجِدُكَ؟ قَالَ وَاللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّيْ أَرْجُو اللهَ وَإِنِّيْ أَخَافُ ذُنُوْبِيْ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَجْتَمِعَانِ فِيْ قَلْبِ عَبْدٍ فِيْ مِثْلِ هَذَا المَوْطِنِ إِلَّا أَعْطَاهُ اللهُ مَا يَرْجُوْ وَآمَنَهُ مِمَّا يَخَافُ

(৫৩). আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক যুবকের নিকট গেলেন। তখন সে মুমূর্ষু অবস্থায় ছিল। তিনি বললেন, তোমার কেমন অনুভব হচ্ছে? যুবকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আল্লাহর শপথ, আল্লাহ তা‘আলার রহমতের আশা করছি, কিন্তু আবার ভয়ও পাচ্ছি আমার গুনাহগুলোর কারণে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যে বান্দার হৃদয়ে এরকম সময়ে এরূপ দুই বিপরীত জিনিস একত্র হয়, আল্লাহ তা‘আলা অবশ্যই তাঁর কাঙ্ক্ষিত জিনিস তাকে দান করেন এবং তাকে তার বিপদাশংকা হতে নিরাপদ রাখেন।[১১]
——

আল্লাহর প্রতি ভরসা করার ফযীলত, নিশ্চয় তা সকল শক্তির চাবিকাঠি :

মহান আল্লাহ বলেন, قُلۡ ہُوَ الرَّحۡمٰنُ اٰمَنَّا بِہٖ وَ عَلَیۡہِ تَوَکَّلۡنَا فَسَتَعۡلَمُوۡنَ مَنۡ ہُوَ فِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ‘(হে নবী!) আপনি বলুন, তিনিই পরম করুণাময়। আমরা তাঁর প্রতি ঈমান এনেছি এবং তাঁর উপর তাওয়াক্কুল করেছি। কাজেই তোমরা শীঘ্রই জানতে পারবে কে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে?’ (সূরা আল-মুলক : ২৯)। মহান আল্লাহ বলেন,

قَالَ رَبِّ السِّجۡنُ اَحَبُّ اِلَیَّ مِمَّا یَدۡعُوۡنَنِیۡۤ اِلَیۡہِ وَ اِلَّا تَصۡرِفۡ عَنِّیۡ کَیۡدَہُنَّ اَصۡبُ اِلَیۡہِنَّ وَ اَکُنۡ مِّنَ الۡجٰہِلِیۡنَ

‘সে (ইউসুফ) বলল, হে আমার রব! তারা আমাকে যে কাজের প্রতি আহ্বান করছে তা থেকে কারাগারই আমার নিকট অধিক প্রিয়। আর যদি আপনি আমার থেকে তাদের চক্রান্ত প্রতিহত না করেন তবে আমি তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ব এবং আমি মুর্খদের অন্তর্ভুক্ত হব’ (সূরা ইউসুফ : ৩৩)। মহান আল্লাহ বলেন,

اِنِّیۡ تَوَکَّلۡتُ عَلَی اللّٰہِ رَبِّیۡ وَ رَبِّکُمۡ مَا مِنۡ دَآبَّۃٍ اِلَّا ہُوَ اٰخِذٌۢ بِنَاصِیَتِہَا اِنَّ رَبِّیۡ عَلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ

‘আমি অবশ্যই তাওয়াক্কুল করেছি আমার রব ও তোমাদের রব আল্লাহর উপর, প্রতিটি বিচরণশীল প্রাণীরই তিনি নিয়ন্ত্রণকারী। নিশ্চয় আমার রব সরল পথে আছেন’ (সূরা হূদ : ৫৬)। মহান আল্লাহ বলেন,

وَ لَئِنۡ سَاَلۡتَہُمۡ مَّنۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ لَیَقُوۡلُنَّ اللّٰہُ قُلۡ اَفَرَءَیۡتُمۡ مَّا تَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اِنۡ اَرَادَنِیَ اللّٰہُ بِضُرٍّ ہَلۡ ہُنَّ کٰشِفٰتُ ضُرِّہٖۤ اَوۡ اَرَادَنِیۡ بِرَحۡمَۃٍ ہَلۡ ہُنَّ مُمۡسِکٰتُ رَحۡمَتِہٖ قُلۡ حَسۡبِیَ اللّٰہُ عَلَیۡہِ یَتَوَکَّلُ الۡمُتَوَکِّلُوۡنَ

‘আর তুমি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর, কে আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছে? তারা অবশ্যই বলবে ‘আল্লাহ’। বল, তোমরা কি ভেবে দেখেছ- আল্লাহ আমার কোন ক্ষতি চাইলে তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের ডাক তারা কি সেই ক্ষতি দূর করতে পারবে? অথবা তিনি আমাকে রহমত করতে চাইলে তারা সেই রহমত প্রতিরোধ করতে পারবে? বল, আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। তাওয়াক্কুলকারীগণ তাঁর উপরই তাওয়াক্কুল করে’ (সূরা আয-যুমার : ৩৮)। মহান আল্লাহ বলেন, وَ قَالَ مُوۡسٰی یٰقَوۡمِ اِنۡ کُنۡتُمۡ اٰمَنۡتُمۡ بِاللّٰہِ فَعَلَیۡہِ تَوَکَّلُوۡۤا اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّسۡلِمِیۡنَ ‘এবং মূসা বলল, হে আমার কওম, তোমরা যদি আল্লাহকে বিশ্বাস কর, তবে তাঁরই উপর তাওয়াক্কুল কর, যদি তোমরা মুসলিম হয়ে থাক’ (সূরা ইউনুস : ৮৪)। মহান আল্লাহ বলেন,

فَبِمَا رَحۡمَۃٍ مِّنَ اللّٰہِ لِنۡتَ لَہُمۡ وَ لَوۡ کُنۡتَ فَظًّا غَلِیۡظَ الۡقَلۡبِ لَانۡفَضُّوۡا مِنۡ حَوۡلِکَ فَاعۡفُ عَنۡہُمۡ وَ اسۡتَغۡفِرۡ لَہُمۡ وَ شَاوِرۡہُمۡ فِی الۡاَمۡرِ فَاِذَا عَزَمۡتَ فَتَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰہِ اِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ الۡمُتَوَکِّلِیۡنَ

‘অতঃপর আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতের কারণে তুমি তাদের জন্য নম্র হয়েছিলে। আর যদি তুমি কঠোর স্বভাবের, কঠিন হৃদয়সম্পন্ন হতে, তবে তারা তোমার আশপাশ থেকে সরে পড়ত। সুতরাং তাদেরকে ক্ষমা কর এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর। আর কাজে-কর্মে তাদের সাথে পরার্মশ কর। অতঃপর যখন সংকল্প করবে তখন আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করবে। নিশ্চয় আল্লাহ তাওয়াক্কুলকারীদেরকে ভালবাসেন’ (সূরা আলে ‘ইমরান : ১৫৯)। মহান আল্লাহ বলেন,

وَّ یَرۡزُقۡہُ مِنۡ حَیۡثُ لَا یَحۡتَسِبُ وَ مَنۡ یَّتَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰہِ فَہُوَ حَسۡبُہٗ اِنَّ اللّٰہَ بَالِغُ اَمۡرِہٖ قَدۡ جَعَلَ اللّٰہُ لِکُلِّ شَیۡءٍ قَدۡرًا

‘এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিযক দিবেন যা সে কল্পনাও করতে পারবে না। আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে আল্লাহ তার জন্যে যথেষ্ট। আল্লাহ তাঁর উদ্দেশ্য পূর্ণ করবেনই। নিশ্চয় আল্লাহ প্রত্যেক জিনিসের জন্য একটি সময়-সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন’ (সূরা আত-ত্বালাক : ৩)। মহান আল্লাহ বলেন,

اَلَّذِیۡنَ قَالَ لَہُمُ النَّاسُ اِنَّ النَّاسَ قَدۡ جَمَعُوۡا لَکُمۡ فَاخۡشَوۡہُمۡ فَزَادَہُمۡ اِیۡمَانًا وَّ قَالُوۡا حَسۡبُنَا اللّٰہُ وَ نِعۡمَ الۡوَکِیۡلُ

‘যাদেরকে মানুষেরা বলেছিল যে, নিশ্চয় লোকেরা তোমাদের বিরুদ্ধে একত্র হয়েছে। সুতরাং তাদেরকে ভয় কর। কিন্তু তা তাদের ঈমান বাড়িয়ে দিয়েছিল এবং তারা বলেছিল, আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক’ (আলে ইমরান ১৭৩)।

মহান আল্লাহ বলেন, رَبُّ الۡمَشۡرِقِ وَ الۡمَغۡرِبِ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ فَاتَّخِذۡہُ وَکِیۡلًا ‘তিনি পূর্ব ও পশ্চিমের রব, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। সুতরাং তাঁকেই তুমি কার্য সম্পাদনকারী রূপে গ্রহণ কর’ (সূরা আল-মুয্যাম্মিল : ৯)। মহান আল্লাহ বলেন,

اَلَمۡ یَرَوۡا اِلَی الطَّیۡرِ مُسَخَّرٰتٍ فِیۡ جَوِّ السَّمَآءِ مَا یُمۡسِکُہُنَّ اِلَّا اللّٰہُ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یُّؤۡمِنُوۡنَ

‘তারা কি আকাশে (উড়ন্ত অবস্থায়) নিয়োজিত পাখিগুলোর দিকে তাকায় না, আল্লাহ ছাড়া কেউ তাদেরকে ধরে রাখে না। নিশ্চয় তাতে নিদর্শনাবলী রয়েছে, সেই কওমের জন্য যারা বিশ্বাস করে’ (সূরা আন-নাহল : ৭৯)।
——

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّهُ لَيْسَ شَيْءٌ يُقَرِّبُكُمْ مِنَ الْجَنَّةِ وَيُبَاعِدُكُمْ مِنَ النَّارِ إِلَّا قَدْ أَمَرْتُكُمْ بِهِ وَلَيْسَ شَيْءٌ يُقَرِّبُكُمْ مِنَ النَّارِ وَيُبَاعِدُكُمْ مِنَ الْجَنَّةِ إِلَّا قَدْ نَهَيْتُكُمْ عَنْهُ وَأَنَّ الرُّوحَ الْأَمِينَ نَفَثَ فِي رُوعِيَ أَنَّهُ لَنْ تَمُوتَ نَفْسٌ حَتَّى تَسْتَوْفِيَ رِزْقَهَا فَاتَّقُوا اللهَ وَأَجْمِلُوا فِي الطَّلَبِ وَلَا يَحْمِلَنَّكُمُ اسْتِبْطَاءُ الرِّزْقِ أَنْ تَطْلُبُوهُ بِمَعَاصِي اللهِ فَإِنَّهُ لَا يُدْرَكُ مَا عِنْدَ اللهِ إِلَّا بِطَاعَتِهِ

(৫৪). ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, হে লোক সকল! এমন কোন জিনিস নেই, যা তোমাদেরকে জান্নাতের নিকটবর্তী করতে পারে এবং জাহান্নাম হতে দূরে রাখতে পারে তা ব্যতীত, যা আমি তোমাদেরকে আদেশ করেছি। আর এমন কোন বস্তু নেই, যা তোমাদেরকে জাহান্নামের নিকটবর্তী করতে পারে এবং জান্নাত হতে দূরে রাখতে পারে তা ব্যতীত, যা আমি তোমাদেরকে নিষেধ করেছি। রুহুল আমীনের তথা জিবরীল আমার অন্তরে এই কথা ঢেলে দিয়েছেন যে, কোন দেহ তার রিয্ক পরিপূর্ণভাবে ভোগ না করা পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করবে না। সাবধান! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সম্পদ উপার্জনে উত্তম নীতি অবলম্বন কর। কাক্সিক্ষত রিযিক পৌঁছার বিলম্বতা যেন তোমাদেরকে আল্লাহর নাফরমানীর পথে তা অন্বেষণ উদ্বুদ্ধ না করে। কেননা আল্লাহ্র কাছে যা নির্ধারিত রিযিক আছে তা আল্লাহ্র আনুগত্য ব্যতীত অর্জন করা যায় না’।[১২]
——

عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَوْ أَنَّكُمْ كُنْتُمْ تَوَكَّلُوْنَ عَلَى اللهِ حَقَّ تَوَكُّلِهِ لَرُزِقْتُمْ كَمَا تُرْزَقُ الطَّيْرُ تَغْدُوْ خِمَاصًا وَتَرُوْحُ بِطَانًا

(৫৫). ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা যদি প্রকৃতভাবেই আল্লাহ তা’আলার উপর নির্ভরশীল হতে তাহলে পাখিদের যেভাবে রিযিক দেয়া হয়, সেভাবে তোমাদেরকেও রিযিক দেয়া হত। এরা সকালবেলা খালি পেটে বের হয় এবং সন্ধ্যা বেলায় ভরা পেটে ফিরে আসে।[১৩]
——

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِذَا خَرَجَ الرَّجُلُ مِنْ بَابِ بَيْتِهِ أَوْ مِنْ بَابِ دَارِهِ كَانَ مَعَهُ مَلَكَانِ مُوَكَّلَانِ بِهِ فَإِذَا قَالَ بِسْمِ اللَّهِ قَالَا هُدِيتَ وَإِذَا قَالَ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ قَالَا وُقِيتَ وَإِذَا قَالَ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ قَالَا كُفِيتَ قَالَ فَيَلْقَاهُ قَرِينَاهُ فَيَقُولَانِ مَاذَا تُرِيدَانِ مِنْ رَجُلٍ قَدْ هُدِيَ وَكُفِيَ وَوُقِيَ؟

(৫৬). আবূ হুরায়রাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যখন কোন লোক তার ঘরের বা বাড়ির দরজা দিয়ে বাইরে বের হয়, তখন দু’জন ফেরেশতাকে তার সঙ্গী হিসাবে তার জন্য নিযুক্ত করা হয়। অতঃপর যখন সে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে তখন ফেরেশতাদ্বয় বলেন, তোমাকে হেদায়াত দান করা হয়েছে। যখন সে বলে আল্লাহ ব্যতীত ক্ষতি রোধ করার বা কল্যাণ লাভ করার শক্তি কারো নাই, তখন ফেরেশতাদ্বয় বলেন, তোমাকে রক্ষা করা হয়েছে। যখন সে বলে, আমি আল্লাহর উপর ভরসা করলাম, তখন তারা বলেন, তোমার জন্য (আল্লাহ) যথেষ্ট হয়েছেন। অতঃপর তার সাথে তার জন্য নিযুক্ত দু’ সাথী সাক্ষাত করে। তখন ফেরেশতাদ্বয় বলেন, এমন ব্যক্তির ব্যাপারে তোমরা কী করতে চাও, যাকে হেদায়াত দান করা হয়েছে, যাকে রক্ষা করা হয়েছে এবং যার জন্য আল্লাহ যথেষ্ট হয়েছেন’।[১৪]
——

عَنْ جَعْفَرِ بْنِ عَمْرِو بْنِ أُمَيَّةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ قَالَ رَجُلٌ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُرْسِلُ نَاقَتِي وَأَتَوَكَّلُ؟ قَالَ اعْقِلْهَا وَتَوَكَّلْ

(৫৭). জা‘ফার ইবনু আমর ইবনু উমাইয়া (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, কোন একজন লোক বললো, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি কি উটের বাঁধন খুলে রেখে আল্লাহ তা‘আলার উপর ভরসা করবো? তিনি বললেন, তুমি সেটা বেঁধে রেখে (আল্লাহ তা‘আলার উপর) ভরসা করবে’।[১৫]

(চলবে ইনশাআল্লাহ)

* এম.ফিল গবেষক, আরবী বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

তথ্যসূত্র :
[১]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৪৮০।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৪৮৫।
[৩]. মুসনাদে বাযযার, হা/৬৪৯১; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৭৩১; হিলইয়াতুল আওলিয়া, ২য় খ-, পৃ. ৩৪৩, হাদীছটি হাসান।
[৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৬০; ছহীহ মুসলিম, হা/১০৩১।
[৫]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৪৯১; ছহীহ মুসলিম, হা/১২৯; এখানে মুসলিমের শব্দে বর্ণিত হয়েছে।
[৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৭৪০৫; ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৭৫।
[৭]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৮৭৭।
[৮]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৭৫৫।
[৯]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৪৬৯।
[১০]. ছহীহ বুখারী, হা/৩১৯৪; ছহীহ মুসলিম, হা/২৭৫১।
[১১]. তিরমিযী, হা/৯৮৩; ইবনে মাজাহ, হা/৪২৬১, সনদ হাসান।
[১২]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/১০৩৭৬; মিশকাতুল মাছাবীহ, হা/৫৩০০।
[১৩]. তিরমিযী, হা/২৩৪৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৭৩; ইবনে মাজাহ, হা/৪১৬৪; ছহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৭৩০।
[১৪]. ইবনে মাজাহ হা/৩৮৮৬; আলবানী হাদীছটিকে যঈফ বলেছেন, যঈফুল জামে‘ হা/৪৭৪।
[১৫]. তিরমিযী হা/২৫১৭; ছহীহ ইবনে হিব্বান হা/৭৩১; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/১১৫৯।




প্রসঙ্গসমূহ »: আমল আত্মশুদ্ধি
ফাযায়েলে আমল : কুরআন তেলাওয়াতের ফযীলত - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
ফাযায়েলে আমল : ফাযায়েলে জিহাদ (৩য় কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
ফাযায়েলে আমল : ফাযায়েলে জিহাদ - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
ফাযায়েলে আমল : ক্রয়-বিক্রয়ের ফযীলত (৩য় কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
ফাযায়েলে হজ্জ ও ওমরাহ - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
ফাযায়েলে আমল : ফাযায়েলে ত্বাহারাত (৯ম কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
ফাযায়েলে আমল : ফাযায়েলে ছালাত (১৫তম কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
ফাযায়েলে আমল : ফাযায়েলে তাওহীদ - আল-ইখলাছ ডেস্ক
ফাযায়েলে আমল : ফাযায়েলে তাওহীদ (৩য় কিস্তি) - আল-ইখলাছ ডেস্ক
ফাযায়েলে আমল : ফাযায়েলে তাওহীদ (৫ম কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
ফাযায়েলে আমল : ফাযায়েলে তাওহীদ - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
ফাযায়েলে আমল : ক্রয়-বিক্রয়ের ফযীলত (৪র্থ কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ

ফেসবুক পেজ